Home Blog Page 618

সৌদি আরবের ২০৩৪ বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামের নকশা দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি, সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে সামনে রেখে দেশটির স্টেডিয়ামগুলোর ডিজাইন প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিতে একাধিক ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

স্টেডিয়ামের নকশা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য কোনো ধরণের স্টেডিয়ামের ডিজাইন প্রকাশ করেনি বরং  কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি কিছু স্টেডিয়ামের নকশার ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে, বিশ্বকাপের আয়োজক হতে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ফিফা। এই সময়সীমার শেষদিনে এসে ফুটবল অস্ট্রেলিয়া তাদের বিড প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এতে করে ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য একমাত্র প্রার্থী এখন সৌদি আরব। 

এ সংক্রান্ত খবরটি গণমাধ্যমে এলেও 

সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে স্টেডিয়ামের নকশা প্রকাশ করেছে শীর্ষক কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম। 

পরবর্তীতে ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে omdertimes নামক একটি আরবি ভাষার ওয়েব পোর্টালে গত ৭ নভেম্বরে প্রকাশিত কিছু ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। লক্ষ্য করে দেখা যায়, ছবি গুলোতে ‘@ibrahima5118’ নামক টিকটক অ্যাকাউন্টের ওয়াটার মার্ক দেওয়া আছে।

Screenshot from omdertimes

পরবর্তীতে উক্ত ওয়াটারমার্ক এর সূত্র ধরে এবং প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে ‘ibrahima5118’ নামক টিকটক অ্যাকাউন্টটি খুঁজে পাওয়া যায় এবং চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে প্রকাশিত স্লাইড ভিডিওতে থাকা ছবিগুলোর সাথে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবি গুলোর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে থাকা ক্যাপশন থেকে জানা যাচ্ছে,  এই ছবি গুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমতার সাহায্যে তৈরি করা। 

Screenshot from Google Lens

এছাড়া বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ছবি শনাক্তকরণ ওয়েবসাইট Is It Ai এ ছবিটির ব্যাপারে জানতে চাইলে ওয়েবসাইটটি ছবিটি প্রায় ৭০% কৃত্রিম হিসেবে চিহ্নিত করে।

Screenshot from isitai.com

এছাড়া, ২০৩৪ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য ফিফা বিশ্বকাপের মাঠের নকশা প্রকাশ হওয়ার তথ্য বা চিত্র দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, অস্ট্রেলিয়া আগ্রহ প্রকাশ না করায় সৌদি আরব বর্তমানে ২০৩৪ সালের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে একক প্রার্থী। দেশটির বিশ্বকাপ আয়োজনের খবরের মধ্যেই একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি বিশ্বকাপের একাধিক মাঠের নকশার ছবি পোস্ট করা হয়। উক্ত ছবিগুলো ব্যবহার করে ইন্টারনেটে সৌদি আরবে ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ স্টেডিয়ামগুলোর ডিজাইন প্রকাশ করেছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে যা সঠিক নয়। 

উল্লেখ্য, ফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ এশিয়া অথবা ওশেনিয়া মহাদেশের যেকোনো দেশের জন্য চূড়ান্ত করেছিলো। তবে অস্ট্রেলিয়া আগ্রহ প্রকাশ না করায় সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ সম্ভাব্য আয়োজক দেশ হিসেবে প্রার্থী হয়।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও একাধিক ঘটনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমতার সাহায্যে তৈরি ছবি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এখানে:

সুতরাং, সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনকে সামনে রেখে দেশটির স্টেডিয়ামগুলোর ডিজাইন প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি কিছু ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন চাইলো। সংলাপ ডেকে ফেঁসে গেল সিইসি– শীর্ষক ক্যাপশনে এবং সেনাবাহিনীর হতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

সেনাবাহিনীর

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগও চায়নি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ৮ মিনিট ৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে দুইটি ভিডিওর খণ্ডাংশ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে চ্যানেলটির উপস্থাপক আলোচিত ভিডিওটির উদ্দেশ্যে দুটি ভিডিও দেখানো হয়৷ 

ভিডিও যাচাই-১

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ভিডিওতে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা’র লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে এটিএন বাংলা’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ৪ নভেম্বর “ফেরেশতা ছাড়া কোনো পোলিং এজেন্ট টিকবেনা’! ইসির বৈঠকে শেষে আর যা বললেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, নিবন্ধিত দলগুলোর সাথে ইসির বৈঠকের পর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের প্রেস ব্রিফিংয়ের ভিডিও এটি।

 Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, আলোচিত ভিডিওটিতে হুবহু এই ভিডিওর সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিও যাচাই-২

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা দ্বিতীয় ভিডিওটিতেও বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা’র লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে এটিএন বাংলা’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ নভেম্বর “বিএনপির মাজা ভাঙ্গা নিয়ে কি বললেন ভিপি নূর” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 
উক্ত ভিডিও এবং গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ৩ নভেম্বর (শুক্রবার) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে ২৮ অক্টোবরের সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিল-পূর্ব অনুষ্ঠানে গণ অধিকার পরিষদ নেতা নুরুল হক নুর এ কথা বলেন

এছাড়া, ভিডিওতে থাকা তথ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির দাবির কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার যে ভিডিও ক্লিপগুলো যুক্ত করা হয়েছে সেগুলোতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া বিষয়ক কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এরই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি “সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলো সিইসি” শীর্ষক থাম্বনেইল এবং শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।  এছাড়া, নির্ভরযোগ্য কোনো  সূত্রেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া সংক্রান্ত দাবিগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে বলেনি

সম্প্রতি, ‘তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে বললো যুক্তরাষ্ট্র।বিপদে প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে বলেনি বরং কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই এবং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ইন্টারনেটে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবিটির সূত্রের খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে অনুসন্ধানে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বলেছে এমন কোনো তথ্য  খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ওয়েবসাইটেও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বলেছে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ৬ নভেম্বরে “Department Press Briefing – November 6, 2023” শীর্ষক প্রকাশিত প্রেস ব্রিফিং শিরোনামে প্রকাশিত প্রেস ব্রিফিং এ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from state.gov

বেদান্ত প্যাটেলকে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক অবস্থা এবং এই মূহুর্তে যুক্তরাষ্ট্র কি বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবে কিনা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছা আছে কিনা এমন প্রশ্ন করেন।

প্রশ্নের জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন ‘এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। এটি আমরা আগেও বলেছি, আপনার বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে আমরা এটি পুনরুল্লেখ করেছি। একটি দলের বিপরীতে আমরা আলাদা করে কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। এই মুহূর্তে আমাদের ফোকাস হচ্ছে আগামী জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা।

বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক যুগান্তর এর ওয়েবসাইটে ৯ নভেম্বর “বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গত ৮ নভেম্বররের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এর আরও একটি বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী বিএনপির পক্ষে প্রশ্ন করলে বেদান্ত প্যাটেল স্পষ্ট করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার ও বিরোধী দলসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করছে ওয়াশিংটন।”

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের কথা বলে আসছে।

তবে উক্ত দুই প্রেস ব্রিফিং এ কোথাও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে হবে এমন তথ্য বলেনি।

মূলত, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে বলেছে দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যক্তির আলাপচারিতা এবং বক্তব্যে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়া এবং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জড়িয়ে ইন্টারনেটে একাধিক ভুল তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
এমন প্রতিবেদন দেখুন এখানে:

সুতরাং, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দিতে হবে এমন কোনো বিবৃতি যুক্তরাষ্ট্র দেয়নি এবং উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নেপালের ২০১৫ সালের ভূমিকম্পটি ১১.৫ মাত্রার ছিল না 

0

সম্প্রতি, ভূমিকম্পের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, উক্ত ভূমিকম্পটি ১১.৫ মাত্রার ছিল। 

 ভূমিকম্প

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে যে ভূমিকম্পের দৃশ্য দেখানো হয়েছে সেটি ১১.৫ মাত্রার ছিল না বরং ২০১৫ সালে নেপালের কাঠমান্ডুতে সংঘটিত ৭.৮ মাত্রার মাত্রার ভূমিকম্পের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম দেখেছে, এই ভিডিওর বিষয়ে পূর্বেও আমাদের ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করা হয়েছিল।  “নেপালে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, এটি ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল নেপালে আঘাত হানা শক্তিশালী  ভূমিকম্পের দৃশ্য।

উক্ত তথ্যর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জাতিসংঘের ইউএন ক্রনিকল নামক ম্যাগাজিনের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের মে মাসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উক্ত ভূমিকম্পের বিষয়ে তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়৷ জাতিসংঘ বলছে, ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল নেপালে যে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে সেটি ৭.৮ মাত্রার ছিল।  

Screenshot: UN

আরও অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও একই তথ্য উল্লেখ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ 

এছাড়া, মার্কিন সরকারের ভূতত্ত্ব জরিপকারি প্রতিষ্ঠান U.S.Geological Survey (USGS) এর ওয়েবসাইট থেকেও একই তথ্যই মিলেছে। 

আমাদের অধিকতর অনুসন্ধানে, নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো নেপালের ভূমিকম্পটি ৭.৮ মাত্রার বলে জানা গেলেও কতিপয় গণমাধ্যমে এই ভূমিকম্পকে ৭.৯ মাত্রার বলেও উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে কোনো সূত্রেই এই ভূমিকম্প ১১.৫ মাত্রার বলে  উল্লেখ পাওয় যায়নি। 

তাছাড়া, ১১.৫ বা কাছাকাছি মাত্রার ভূমিকম্প সর্বশেষ কবে হয়েছিল এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অনুসন্ধান করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ‘EARTH OBSERVATORY OF SINGAPORE ‘ নামক ওয়েবসাইটে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক ভূমিকম্প বিষয়ক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৬০ সালে চিলিতে ৯.৫ মাত্রায় একটি ভূমিকম্প হয়েছিল এবং এটাকেই এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে অধিক মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে ধরা হয়। 

Source: EOS/Rachel Siao

মূলত, সম্প্রতি ভূমিকম্পের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, উক্ত ভূমিকম্পটি ১১.৫ মাত্রার ছিল। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, ২০১৫ সালে নেপালের এই ভূমিকম্পটি ৭.৮ মাত্রার ছিল। তাছাড়া এখন পর্যন্ত ১১.৫ বা কাছাকাছি মাত্রার সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্পটি ৯.৫ মাত্রার ছিল বলে জানা গেছে, যা ১৯৬০ সালে চিলিতে হয়েছিল।

সুতরাং, নেপালে ২০১৫ সালে ৭.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্পকে ১১.৫ মাত্রার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে ; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রবিবার থেকে সারাদেশে তিন মাসের হরতালের ঘোষণার দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, সারাদেশে টানা ৩ মাসের হরতাল ঘোষণা, সকালেই পুলিশের উপর জামায়াতের হামলা– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে। 

 তিন মাসের

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রবিবার থেকে সারাদেশে তিন মাসের হরতালের ঘোষণার দাবিটি সত্য নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ছবি ও সংবাদের স্ক্রিনশট যুক্ত করে উক্ত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ১১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভিডিওটির শুরুতে একজন উপস্থাপন বক্তব্য উপস্থাপন করছেন। পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদের অনলাইন সংস্করণের স্ক্রিনশট সংযুক্ত করে উপস্থাপকের বর্ণনায় ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

ভিডিওটির শুরুতে কালবেলায় গত ২ নভেম্বর “রোববার থেকে আসছে টানা অবরোধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখা যায়। 

এরপর একই তারিখে নয়া দিগন্তে “বিভিন্ন স্পটে জামায়াতের রেলপথ ও সড়কপথ অবরোধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখা যায়। 

একই তারিখে যুগান্তরে “অবরোধের শেষ দিনে রাজধানীতে বাসে আগুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখা যায়।

 গত ১ নভেম্বর যুগান্তরে “তফশিল চূড়ান্তে আগামী সপ্তাহে বসছে ইসি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখা যায়। 

২ নভেম্বর যুগান্তরে “গাজায় শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের হামলা, নিহত ১৯৫” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখা যায়। 

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত সংবাদগুলো হুবহু পাঠ করে শোনাচ্ছেন উপস্থাপক। 

এছাড়া, আলোচিত ভিডিওটিতে রবিবার থেকে তিনমাসের হরতাল সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

পাশাপাশি, প্রচারিত দাবিটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্যান্য গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, গত ২৯ অক্টোবর সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি পালনের পর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দেয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। অবরোধের শেষদিন ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দলটির পক্ষ থেকে নতুন করে ৫ ও ৬ নভেম্বর ৪৮ ঘন্টা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচী পালনের ডাক দেওয়া হয়। এরইমধ্যে রবিবার থেকে সারাদেশে তিনমাসের হরতাল ঘোষণা– শীর্ষক একটি তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত দাবিটি সত্য নয় বরং ভিন্ন কয়েকটি ছবি ও কয়েকটি সংবাদের স্ক্রিনশট ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

সুতরাং, রবিবার থেকে সারাদেশে তিনমাসের হরতাল ঘোষণার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গাজীপুরে অগ্নিকাণ্ডের শিকার পোশাক কারখানাটির মালিক চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল নয়

গত ৩০ অক্টোবর গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কতিপয় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, পোশাক কারখানাটির মালিক চিত্রনায়ক ও ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল। 

অগ্নিকাণ্ডের

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের কিছু প্রতিবেদন দেখুন এসএ টিভি (ফেসবুক), কালবেলা (ফেসবুক), বাংলা ইনসাইডার, সময়ের কণ্ঠস্বর, ক্যাম্পাস টাইম.প্রেস (ফেসবুক)।

কতিপয় গণমাধ্যম উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করে পরবর্তীতে সংশোধন করেছে। পূর্বের সংস্করণটির আর্কাইভ পাওয়া যায়নি। এমন কিছু গণমাধ্যম হচ্ছে প্রথম আলো, চ্যানেল২৪, ঢাকা মেইল, রাইজিং বিডি, বায়ান্ন টিভি।

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ অন্যান্য কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এবিএম ফ্যাশন লিমিটেডের মালিক অনন্ত জলিল নয় বরং পোশাক কারখানাটি অনন্ত কোম্পানিজ নামে ভিন্ন একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিকানাধীন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে অনন্ত জলিলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ৩০ অক্টোবর প্রকাশিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) নজরে আসে আমাদের।  

অনন্ত পোস্টে লিখেছেন, ” গাজীপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় অনন্ত জলিলের কারখানায় আগুন, প্রথম আলোর এই নিউজটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আমার কোন ফ্যাক্টরি নেই। আমার দুটি গ্রুপ অফ কোম্পানী, একটি এ জে আই গ্রুপ এবং  আরেকটি এ বি গ্রুপ, দুটিই  সাভারের হেমায়েতপুরে  অবস্থিত।

অনন্ত লিখেছেন, “জাগো নিউজ সঠিক নিউজটি করেছেন। তারা সঠিক  ইনফরমেশনটি দিয়েছেন।”

Screenshot: Facebook

অনন্ত জলিলের পোস্টের সূত্র ধরে জাগোনিউজ২৪ এর প্রতিবেদনটি খুঁজে বের করেছি আমরা। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, “গাজীপুরের কোনাবাড়িতে এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় আগুন দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে কারখানার গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেন তারা।” তবে কারখানাটির মালিকের বিষয়ে প্রতিবেদনে কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

আমরা পরবর্তী অনুসন্ধানে নেমে ফেসবুকে কোনাবাড়ীর একটি গ্রুপে অগ্নিকাণ্ডের শিকার হওয়া এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটির লে-অফ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি (আর্কাইভ) খুঁজে পেয়েছি। এবিএম ফ্যাশনের মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা সারাহ নাফিসা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কারখানাটি ৩০ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

Screenshot: Facebook

বিজ্ঞপ্তিতে কারখানাটির মূল প্রতিষ্ঠান হিসেবে Ananta Companies এবং ওয়েবসাইটের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে https://www.ananta.com.bd/।

ওয়েবসাইটটি থেকে জানা যাচ্ছে, অনন্ত কোম্পানিজের অধীনে এবিএম ফ্যাশন ছাড়াও আরও ছয়টি কারখানা রয়েছে যেগুলোর মধ্যে আশুলিয়ায় তিনটি, টঙ্গীতে দুইটি এবং যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে একটির অবস্থান রয়েছে। 

Screenshot: Ananta Companies

এই ব্যবসায়ী গ্রুপটির বোর্ড অফ ডিরেক্টরের তালিকায় চেয়ারম্যান হিসেবে আমিনুল হক খান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে ইনামুল হক খান এবং ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে সাজেদুল করিমের নাম উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ, এই তালিকায় অনন্ত জলিল নেই৷ 

Screenshot: Ananta Companies

অর্থাৎ, এবিএম ফ্যাশন বা অনন্ত কোম্পানিজের সাথে অনন্ত জলিলের সংশ্লিষ্টতা মিলছে না। 

অন্যদিকে, অনন্ত জলিলের মালিকানাধীন AJI Group এর ওয়েবসাইটে গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে অনন্ত জলিলের নামই উল্লেখ রয়েছে। এই গ্রুপের অধীনে তিনটি কারখানার তথ্য রয়েছে। তিনটি কারখানাই সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত।

এই ওয়েবসাইটেরই কোম্পানি প্রোফাইল থেকে পাওয়া তথ্যমতে, অনন্ত জলিলের এবি গ্রুপের অধীনে আরো দুইটি কারখানা রয়েছে যাদের অবস্থানও সাভারেই৷

Screenshot: AJI Group

অর্থাৎ, গাজীপুরে অনন্ত জলিলের মালিকানাধীন কোনো কারখানা নেই। 

মূলত, গত ৩০ অক্টোবর গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় আগুন দেওয়ার ঘটনায় গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়, পোশাক কারখানাটির মালিক চিত্রনায়ক ও ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কারখানাটির মালিক অনন্ত জলিল নয়। গাজীপুরে তার কোনো কারখানাই নেই৷ প্রকৃতপক্ষে, পোশাক কারখানাটি অনন্ত কোম্পানিজ নামে ভিন্ন একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিকানাধীন যার চেয়ারম্যান আমিনুল হক খান। 

সুতরাং, গাজীপুরে এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড নামে অনন্ত কোম্পানিজ নামে একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিকানাধীন কারখানায় আগুন লাগার ঘটনাকে চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের পোশাক কারখানায় আগুন লেগেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, ভোটচুরির নির্বাচন করতে দিবোনা সেনাবাহিনীর হুংকার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে হুমকি- শীর্ষক ক্যাপশনে এবং ভোটচুরির নির্বাচন করতে দিবো না: সেনাবেহিনী- শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এমন কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও এবং ছবি সংযুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির শুরুতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিওর খণ্ডাংশ এবং ছবি দেখানো হয়। পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি সম্পর্কে পাঁচটি ভিডিও দেখানো হয়। কিন্তু এতে কোথাও জরুরি অবস্থা জারি কিংবা সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় আসা বিষয়ক কোনো দৃশ্য কিংবা তথ্য দেওয়া হয়নি। 

ভিডিও যাচাই ১

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা প্রথম ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে কানাডা থেকে পরিচালিত Nagorik TV নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১০ অক্টোবর “জেক সালিভানের সাথে অসফল মিটিং ও অনিশ্চিত রাজনৈতিক গন্তব্য” শীর্ষক শিরোনামে একটি টকশো ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

১ ঘন্টা ৪৪ মিনিট ৬ সেকেন্ডের টকশোটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এখানে সেনাবাহিনী নির্বাচন করতে দিবে না শীর্ষক কোনো আলোচনা হয়নি।

Video Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা অংশটির সাথে উক্ত ভিডিওর ১ ঘন্টা ৩ মিনিটের অংশটির হুবহু মিল রয়েছে।

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে একজন সংবাদ পাঠিকাকে সংবাদ পাঠ করতে শোনা যায়। সেই ভিডিওটিতে থাকা বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের লোগো’র সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ৮ অক্টোবর “এবার ঢাকা অচলের পরিকল্পনা বিএনপির, আসছে কঠোর আন্দোলন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এটি বিএনপি’র সরকার পতন আন্দোলন সংক্রান্ত কর্মসূচি নিয়ে করা একটি প্রতিবেদন।

ভিডিও যাচাই ৩

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা তৃতীয় ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Voice Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ অক্টোবর “বিএনপির বিষয়ে সিইসির এতো কঠিন সত্য বয়ান?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের বিবিসি বাংলায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকার নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।

উক্ত ভিডিওতে সেনাবাহিনীকে নিয়ে কোনো তথ্য উপস্থাপন করেননি তিনি।

ভিডিও যাচাই ৪

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা দৃশ্যটির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গাজীপুর মহানগর নামক একটি ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলার এশিয়ান হাইওয়েতে কেন্দ্র ঘোষিত অবরোধের ১ম দিনের কর্মসূচি পালনকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি সুলতান মাহমুদ, রুপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আরিফ বিল্লাহ ও দাউদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা তৌহিদ হাসানকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সোমবার (৬ নভেম্বর) আটককৃতদের আদালতে হাজির করা হয়।

এছাড়া কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বাংলা ট্রিবিউনে গত গত ৬ নভেম্বর “নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের ৪ নেতা আটক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

ভিডিও যাচাই ৫

আলোচিত ভিডিওরিতে সর্বশেষ বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ দেখা যায়। 

পরবর্তীতে তারেক রহমানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ৫ নভেম্বর “সারাদেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ সফল করায় জনগণকে ধন্যবাদ এবং সীমিত সামর্থের নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগের আহবান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপি’র চলমান কর্মসূচির জন্য নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। 

উপরোক্ত পাঁচটি ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে এটি স্পষ্ট যে, উক্ত ভিডিওগুলোতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীর বক্তব্য সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই।

এছাড়া, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কোনো বক্তব্য দেওয়া হলে বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটলে অবশ্যই সে সংবাদ দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হতো। কিন্তু উক্ত দাবিগুলোর বিষয়ে গুগলে কি ওয়ার্ড সার্চ করে কোনোপ্রকার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। 

মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এরই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ভোটচুরির নির্বাচন করতে দিব না- সেনাবাহিনী– শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনবাহিনীর পক্ষ থেকে এসংক্রান্ত কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি বা সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়নি। উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দেশে সেনাবাহিনীর জরুরি অবস্থা জারি দাবিতে ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, সেনাবাহিনীকে উদ্ধৃত করে আগামীতে ভোট চুরির নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গাজাকে সমর্থন জানিয়ে ইলন মাস্ক তার এক্স অ্যাকাউন্টে ভিডিও প্রকাশ করেনি

সম্প্রতি, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে গাজার পক্ষ নিয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক শীর্ষক একটি তথ্য গণমাধ্যমে ও ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ইলন মাস্ক

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন প্রতিবেদন দেখুন কালবেলা

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে ইলন মাস্কের গাজাকে সমর্থন জানিয়ে তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে কোনো ভিডিও পোস্ট দেয়নি বরং তার নামে তৈরি একটি নকল (প্যারডি) অ্যাকাউন্ট থেকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে গাজাকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টিকে ইলন মাস্কের সমর্থন দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলার প্রতিবেদনে ইলন মাস্কের এক্স অ্যাকাউন্ট (সাবেক টুইটার) দাবিতে উল্লিখিত এক্স অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot from X

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইলন মাস্কের টুইটার অ্যাকাউন্ট দাবিতে প্রচারিত এক্স অ্যাকাউন্টিতে ইলন মাস্কের নামের পাশে ইংরেজিতে ‘Parody’ লেখা, যা বাংলায় নকল বোঝায় এবং ইউজার নেমে @ElonMuskAOC লেখা।

এছাড়া কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধানে Elon Musk (Parody) নামক এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৭ জুলাই প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। সেই পোস্টে Elon Musk শীর্ষক নাম এবং @elonmusk ইউজার নেমসহ এক্স কর্তৃপক্ষ থেকে ভ্যারিফাইড ইলন মাস্কের আসল এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে করা একটি মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from X

মন্তব্যে ইলন মাস্ক লিখেন, অনেক মানুষ এই অ্যাকাউন্টটিকে আমার মনে করে (বাংলায় অনূদিত)।

Screenshot from X

ইলন মাস্কের করা সেই মন্তব্যে ইউটিউবার মি বিস্ট এই অ্যাকাউন্টটি ইলন মাস্কের কিনা তা জানতে মন্তব্য করলে ইলন মাস্ক ‘না’ সম্বোধন করেন।

Image Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, অনুসন্ধান করে ইন্টারনেটে এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইলন মাস্কের ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়া নিয়ে কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ৭ নভেম্বর স্পেস এক্স এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এর সত্ত্বাধিকারী ইলন মাস্কের নামে তৈরী Elon Musk (Parody) নামক নকল অ্যাকাউন্ট থেকে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ফিলিস্তিনি পতাকাসহ আন্দোলনকারীদের মিছিলের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। সম্প্রতি, সেই আন্দোলনের ভিডিও ইলন মাস্ক প্রকাশ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে গাজার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দাবিতে জাতীয় দৈনিক কালবেলার ওয়েবসাইটে একটি সংবাদ প্রতিবদন প্রকাশ করেছে।

উল্লেখ্য, চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সংঘাত ইস্যুতে একাধিক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার৷

সুতরাং, স্পেস এক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের সত্ত্বাধিকারী এলন মাস্ক ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে গাজার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দাবিটি মিথ্যা।

তথসসূত্র

ফিলিস্তিনি যোদ্ধার শেষ কথার ভিডিও দাবিতে ইরাকী শর্ট ফিল্মের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, যুদ্ধে শহীদ হওয়ার পূর্বে ফিলিস্তিনি যোদ্ধার শেষ কথা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনি যোদ্ধার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচারিত কিছু পোস্ট (আর্কাইভ), পোস্ট (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, যুদ্ধে শহীদ হওয়ার পূর্বে ফিলিস্তিনি যোদ্ধার শেষ কথা দাবিতে প্রচারিত ভিডিও সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ডায়ালিং নামের একটি ইরাকী শর্ট ফিল্মের অংশবিশেষ। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে بهاء الكاظمي নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট dailing – فيلم جاري الاتصال – اخراج بهاء الكاظمي  শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির শিরোনাম ইংরেজিতে অনুবাদ করলে এর অর্থ হয় Dailing – Connecting Movie – directed by Bahaa Al-Kazemi.

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওটির ১০ সেকেন্ড থেকে ৪০ সেকেন্ড এবং ১৪ মিনিট ১৮ সেকেন্ড থেকে ১৪ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের অংশটুকুর সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী ইংরেজি ভাষায় অনুবাদের মাধ্যমে জানা যায়, শর্ট ফিল্মটি মূলত একজন মায়ের সন্তান হারানোর গল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। যার সন্তান ইরাকী সেনাবাহিনীর হয়ে সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। এছাড়াও জানা যায়, শর্ট ফিল্মটি বাহা আল-কাজেমী নামের একজন পরিচালনা করেছেন এবং তার নির্মিত এই ফিল্মটি ২০১৫ সালে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও প্রদর্শন করা হয়েছে। 

Screenshot: Youtube

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যম Dubai International Film Festival এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর DIFF 2015 – Dialing শীর্ষক শিরোনামে Dialing ফিল্মটির একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি একটি ইরাকী শর্ট ফিল্মের কিছু অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় কাট করে তা জোড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে আকস্মিক এবং নজিরবিহীন মিসাইল হামলা চালায় হামাস। এরপর থেকেই ক্রমাগত দেশ দুটির মধ্যকার চলমান সংকট আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে শুরু করে। যা বর্তমানে যুদ্ধে রূপ লাভ করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি যুদ্ধে শহীদ হওয়ার পূর্বে ফিলিস্তিনি যোদ্ধার শেষ কথা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত Dialing নামের একটি ইরাকী শর্ট ফিল্মের কিছু অংশ কাট করে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও শর্ট ফিল্মটি ইরাকের সেনাবাহিনী এবং সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএসের মধ্যে চলমান সংকটকে ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এর সাথে ইসরায়েল কিংবা ফিলিস্তিনের কোনো সম্পর্ক নেই।

সুতরাং, ইরাকের একটি শর্ট ফিল্মের অংশকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে শহীদ হওয়ার পূর্বে ফিলিস্তিনি যোদ্ধার শেষ কথার ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র