Home Blog Page 386

রিশাদকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কোনো লাইভ করেননি শাহরুখ খান

সম্প্রতি, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে রিশাদ হোসেনের পারফরমেন্স দেখে শাহরুখ খান তাকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার জন্যে লাইভে এসে তাকে অনুরোধ করেছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

আইপিএলে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও ‍দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত উক্ত দাবির ভিডিওই দেখা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৩ হাজার ৭১৪ বার। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ৩১ হাজার ৯২৫ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ২৩৭ বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশি ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার জন্যে লাইভে এসে শাহরুখ খানের অনুরোধ করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, করোনাকালীন সময়ে জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলোতে প্রচারিত একটি ভিডিওর কিছু অংশের সাথে রিশাদ হোসেনের কিছু ছবি যুক্ত করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটির শুরুতে শাহরুখ খানকে হাত জোড় করে ‘আমি সব মানুষের কাছে আবেদন করছি…পরবর্তী দশ দিন’ শীর্ষক কথা বলতে শোনা যায়। পরবর্তীতে ভিডিওটির উপস্থাপককে দাবি করেন, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজে রিশাদ হোসেনের ব্যাটিং পারফরমেন্স দেখে লাইভে এসে তাকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার জন্যে অনুরোধ জানান শাহরুখ খান। এসময় তিনি রিশাদকে উদ্দেশ্য করে ‘রিশাদের এমন ব্যাটিং সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আন্দ্রে রাসেল, নারিনদের মতই খেলার স্টাইল তার। বাংলাদেশিদের মধ্যে হার্ড হিটার ব্যাটিংয়ে আমি তাকেই এগিয়ে রাখবো।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন বলেও দাবি করেন ভিডিওটির উপস্থাপক। 

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটির শুরুতে দেখানো শাহরুখ খানের ক্লিপটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বলিউড তারকা শাহরুখ খানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ২০ মার্চ Let’s get together and fight this #WarAgainstVirus. শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর শুরুতে দেখানো শাহরুখ খানের ক্লিপের সাথে ‍উক্ত ক্লিপের শুরুর অংশের হুবহু মিল রয়েছে। দুটো ভিডিওতেই তাকে একই স্থানে একই পোশাকে হাত জোড় করে দর্শকদের উদ্দেশ্যে কথা বলতে দেখা যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পাশাপাশি ভিডিওটি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, মূলত করোনাকালীন সময়ে জনসাধারণকে সচেতনতার উদ্দেশ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে উক্ত ভিডিওটি তিনি প্রচার করেন। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সর্ম্পক নেই। 

পরবর্তীতে কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর মালিক শাহরুখ খান রিশাদকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেছেন কিনা জানতে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়েও গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ। উক্ত ম্যাচে ৫৮ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয়ের মাধ্যমে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে জয় লাভ করে বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে রিশাদ হোসেন মাত্র ১৮ বলে পাঁচটি চার এবং চারটি ছয় হাকিয়ে মোট ৪৮ রান করেন। দুর্দান্ত এই পারফরমেন্সে ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রসংশার জোয়াড়ে ভাসছেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, তার পারফরমেন্স দেখে শাহরুখ খান তাকে আইপিএলে নিজের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সে নেওয়ার জন্যে লাইভে এসে তাকে অনুরোধ করেছেন দাবিতে ‘যেকোনো মূল্যে রিশাদকে আমার দলে খেলতে হবে! রিশাদের ব্যাটিং দেখে লাইভে এসে শারুখ খানের অনুরোধ’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, করোনাকালীন সময়ে জনসাধারণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে শাহরুখ খান তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলোতে একটি ভিডিও প্রচার করেন। উক্ত ভিডিওর কিছু অংশের সাথে রিশাদ হোসেনের কিছু ছবি যুক্ত করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, বাংলাদেশি ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে আইপিএলে নিজের দলে নেওয়ার জন্যে শাহরুখ খান লাইভে এসে অনুরোধ জানিয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

তামিম, মিরাজ, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধের গুজব

সম্প্রতি, শেষরক্ষা হলোনা তামিমের, লাইভে ক্ষেপছে মাশরাফি! ফাঁদপেতে মিরাজ-মুশি-রিয়াদকে নিয়ে নিষিদ্ধ হলো তামিম- শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তামিম ইকবাল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কেউই ক্রিকেট থেকেই নিষিদ্ধ হননি এবং সম্প্রতি মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা তামিম ইকবালকে উদ্দেশ্য করে কোনো লাইভেও আসেননি বরং ভিন্ন ঘটনার পুরোনো দুইটি ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে আলোচিত দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওর শুরুতে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। মাশরাফিকে বলতে শোনা যায়, ক্রিকেট বোর্ডের সবার কোড অফ কন্ট্রাক্ট থাকা উচিত। সবাই আইনের আওতায় আসুক। সবাই যা মন চায় তা বলে যেতে পারবে এটা তো হতে পারে না। 

পরবর্তীতে তামিম ইকবাল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুকের সাথে একটি অনুষ্ঠানে কথা বলতে দেখা যায়।

তানভীর এ মিশুল বলেন, সাকিব ভাইকে নিয়ে একটা গ্রুপ বানাতে পারেন কোনো সমস্যা নাই। 

উত্তরে তামিম বলেন, আমিও…

এরপর তামিম, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের কয়েকটি ছবি ব্যবহার করে উপস্থাপককে মনগড়া কিছু কথা বলতে শোনা যায়। 

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা মাশরাফির বক্তব্য দেওয়ার এবং তামিম, মিরাজ, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহসহ তানভীর এ মিশুকের সাথে লাইভে এসে কথা বলার ভিডিও গুলোকে আলাদাভাবে যাচাই করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ভিডিও যাচাই-১ 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Ekattor Tv এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ “শুধু ক্রিকেটাররাই কথা বলতে পারবে না: মাশরাফি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

৫ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের প্রতিবেদনটির ৫৫ সেকেন্ড থেকে দেওয়া মাশরাফির বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা মাশরাফির বক্তব্যের সাদৃশ্য রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, উক্ত বক্তব্যটি মূলত ২০২১ সালে একাত্তর টেলিভিশনের খেলাধুলা বিষয়ক অনুষ্ঠান খেলাযোগ-এ মাশরাফির দেওয়া সাক্ষাৎকারের ঘটনায় ধারণকৃত। 

ভিডিওটিতে তাকে বিসিবি‘র কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা মন্তব্য করতে দেখা যায়। কোড অফ কন্ডাক্টের কারণে খেলোয়াড়রা বোর্ড নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে না পারলেও বোর্ডের কর্মকর্তারা খেলোয়াড়দের নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে যা তা মন্তব্য করেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডের সবার কোড অফ কন্ডাক্ট থাকা উচিত। সবাইকে আইনের আওতায় আসা উচিত। প্লেয়াররা শুধু কথা বলতে পারবে না আর সবাই যা মন চায় তাই বলে যাবে এটা তো হতে পারে না।’

অর্থাৎ, মাশরাফির বক্তব্য দেওয়ার ভিডিওটি ০৩ বছর আগের। 

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে তামিম ইকবাল এর ফেসবুক পেজে গত ২০ মার্চ “দল নিয়ে আমাদের মধ্যে আসলে কী হয়েছে, সব বলবো আজকের লাইভে।” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়।  

উক্ত ভিডিওটির ৭ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে তানভীর এ মিশুকের দেওয়া বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা বক্তব্যের সাদৃশ্য রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, নগদ- এর ক্যাম্পেইনের বিষয়ে করা লাইভ এটি। 

তবে, এই লাইভে কোনো ক্রিকেটারের নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি। 

অনুসন্ধানের এ পর্যায়ে তামিম ইকবাল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন কিনা এবিষয়ে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, সম্প্রতি মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাকে তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে কিংবা কোনো গণমাধ্যমে ক্রিকেটারদের বিষয়ে লাইভে আসতে দেখা যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি তামিম ইকবাল এবং মেহেদী হাসান মিরাজের একটি কল রেকর্ড ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে তামিম ইকবাল মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুককে নিয়ে লাইভে এসে এটি নগদের ক্যাম্পেইনের অংশ বলে নিশ্চিত করেন। এরইমধ্যে “শেষরক্ষা হলোনা তামিমের, লাইভে ক্ষেপছে মাশরাফি! ফাঁদপেতে মিরাজ-মুশি-রিয়াদকে নিয়ে নিষিদ্ধ হলো তামিম- শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিগুলো মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ২০২১ সালে ভিন্ন প্রেক্ষিতে দেওয়া মাশরাফির বক্তব্যের সাথে সম্প্রতি নগদের ক্যাম্পেইনের বিষয়ে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ ও তানভীর এ মিশুককে নিয়ে তামিম ইকবালের করা লাইভ ভিডিওর কিছু অংশ যুক্ত করে  আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, তামিম ইকবাল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ক্রিকেট থেকেই নিষিদ্ধ এবং সম্প্রতি মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার তামিমকে উদ্দেশ্য করে লাইভে আসার দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উক্ত দাবিগুলোতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

পাখি সদৃশ ইগ্রেট ফুুলের ছবি দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ছবি প্রচার

সম্প্রতি, ‘পাখির মতো দেখতে এই ফুলটির নাম ইগ্রেট ফুল’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ইগ্রেট ফুুলের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পাখি সদৃশ ইগ্রেট ফুলের ছবি দাবিতে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রচারিত ছবিগুলো অর্কিড জাতীয় ইগ্রেট ফুলের নয়। ছবিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।

মূলত, ইগ্রেট ফুলের ছবি দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাখি সদৃশ একটি ফুলের ছবি প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফুলের ছবির সাথে অর্কিড জাতীয় ইগ্রিট ফুলের গঠনগত কোনো মিল নেই। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ছবিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে আলোচিত ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

ঢাবিতে ইফতার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি

গত ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কর্মচারীদের আবাসিক ভবন বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের মসজিদে ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শীর্ষক সেমিনার করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকারের অভিযোগ তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আইন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী। এর প্রেক্ষিতে দেওয়া প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমানের একটি চিঠি এবং এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে দাবি করা হচ্ছে, ঢাবিতে ইফতার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। 

ঢাবিতে ইফতার

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পোস্ট দেখুন ফেস দ্য পিপল

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজসহ আরো কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাবিতে ইফতার অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি বরং গত ১৩ মার্চ যে অনুষ্ঠানে আলোচিত ঘটনাটি ঘটে তার প্রেক্ষিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না নেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে দেওয়া প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমানের একটি চিঠিটি খুঁজে বের করেছি আমরা। গত ১৫ মার্চের এই নোটিশের বরাত দিয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যমের (, , , , ) খবরে দাবি করা হয়, ১৩ মার্চ যে অনুষ্ঠানে আলোচিত ঘটনাটি ঘটে তার প্রেক্ষিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না নেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

রিউমর স্ক্যানারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর মো. আশিকুল হক আমাদের কাছে চিঠিটির একটি কপি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে একই তথ্যই উল্লেখ রয়েছে। 

Image: Rumor Scanner’s own source

অর্থাৎ, চিঠিতে ইফতার নিষিদ্ধের কোনো তথ্য উল্লেখ নেই। কিন্তু এ সংক্রান্ত সংবাদ এবং নিউজের ফটোকার্ড প্রচার করে ফেসবুকে উক্ত দাবিই করা হচ্ছে। 

রিউমর স্ক্যানার টিম তবু ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে দেখার চেষ্টা করেছে এই চিঠি প্রকাশ পরবর্তী সময়ে ঢাবিতে ইফতার আয়োজনে কোনো বাধা ছিল কিনা। 

আমরা যাচাই করে দেখেছি, গতকাল ২২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিয়াকান্দি স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, ২১ মার্চ দর্শন বিভাগের ১৫ তম ব্যাচ, ১৯ মার্চ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকে এক খন্ড কলারোয়া সোনাই’ (প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন), ১৮ মার্চ ঢাবি মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এসোসিয়েশন, ১৭ মার্চ আনোয়ারার স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, ১৬ মার্চ মার্কেটিং বিভাগের ১২ তম ব্যাচ, একইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক্স আর্মি ক্যাডেটস এসোসিয়েশন, ১৫ মার্চ লাইসিয়াম (রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিবার, বঙ্গবন্ধু হল এর ইফতার আয়োজনের তথ্য ফেসবুকেই পাওয়া যাচ্ছে। 

তাছাড়া, গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের আলোচনাসম্পর্কিত অনুষ্ঠান আয়োজনে কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটি অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে প্রক্টর কার্যালয় থেকে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। রমজানের অনুষ্ঠান আয়োজনে ‘নিষেধাজ্ঞা’ শব্দটির উল্লেখ ওই বিজ্ঞপ্তির কোথাও নেই।”

Collected from Facebook

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আসছে। কতিপয় রাজনৈতিক সংগঠনের অনুসারীরা পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দু-একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছেন, যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতিনীতি লঙ্ঘিত ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে।

মূলত, গত ১৩ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের মসজিদে ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শীর্ষক সেমিনারে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে দেওয়া প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমানের একটি চিঠি এবং এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ঢাবিতে ইফতার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, উক্ত চিঠিতে ঢাবিতে ইফতার অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো নিষেধাজ্ঞার বিষয় উল্লেখ নেই। বরং এটা উল্লেখ করা হয়েছে যে, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য ১৩ মার্চের অনুষ্ঠানের মতো কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি না নেওয়ার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। তাছাড়া, ঢাবিতে এই চিঠি প্রকাশ পরবর্তী সময়েও একাধিক ইফতার অনুষ্ঠান আয়োজনের তথ্য পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার৷ একইসাথে ঢাবির পক্ষ থেকেও আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগের চিঠির প্রেক্ষিতে সৃষ্ট বিভ্রান্তির বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। 

সুতরাং, রমজানে ঢাবিতে ইফতার আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে: যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

পুরুষ তার অন্ডকোষে আঘাত পেলে ৯০০ ডেল ব্যথা অনুভব করে না 

0

সম্প্রতি, “পুরুষ মানুষ তার অন্ডকোষে আঘাত পেলে প্রায় ৯০০ ডেল পর্যন্ত ব্যাথা অনুভব করে যা, প্রায় ১৬০ টি সন্তান জন্ম দেওয়া, ও ৩২০০ টি হাড়া ভাঙ্গার সমান।” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হচ্ছে। 

অন্ডকোষে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুরুষ তার অন্ডকোষে ব্যাথা পেলে প্রায় ৯০০ ডেল পর্যন্ত ব্যথা অনুভব করে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে ডেল নামক ব্যথা পরিমাপের কোনো এককই নেই। 

মূলত, কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক তথ্যসূত্র ছাড়াই “পুরুষ তার অন্ডকোষে আঘাত পেলে প্রায় ৯০০ ডেল ব্যথা অনুভব করে” শীর্ষক দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে যেখানে ডেল নামক ব্যথা পরিমাপের কোনো এককই নেই। অন্যদিকে গবেষণা প্রতিবেদন ও বিশেষজ্ঞ মত জানাচ্ছে, অন্ডকোষ বা দেহের কোনো অংশেরই ব্যথা পরিমাপের কোনো বস্তুনিষ্ঠ উপায় নেই। রোগী ভেদে এই ব্যথা ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার হতে পারে।

উল্লেখ্য, পূর্বে পুরুষ তার অন্ডকোষে আঘাত পেলে প্রায় ৯০০ ডেল ব্যথা অনুভব করে দাবিটির পরিবর্তে ৯০০০ ডেল ব্যথা অনুভব করে দাবিতে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে একটি ফ্যাক্ট ফাইল প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

আরবদের এই নাচের ভিডিওতে হরে কৃষ্ণ গান যুক্ত ছিল না

সম্প্রতি, জয় সনাতন ধর্মের জয় শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে যাতে দেখা যায়, কোনো একটি অনুষ্ঠানে আরব বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত অবস্থায় কিছু লোক ঢোল ও ডফ জাতীয় বাদ্য বাজিয়ে এবং নেচে “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে” শীর্ষক গান গাইছেন।

আরবদের

উক্ত ভিডিও সম্বলিত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ব্যক্তিরা “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে” শীর্ষক কোনো গানে নাচ করেননি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মূল ভিডিওতে হরি কৃষ্ণ শীর্ষক অডিও যুক্ত করে উক্ত দাবি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আলোচিত ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে rakrel নামক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এই ভিডিওটিতে হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে” শীর্ষক গান শোনা যায়নি। ভিডিওটিতে ঢোল এবং ডফের শব্দের সাথে আরবি গানই শোনা যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া অনুসন্ধানে RRR নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২২ ফেব্রুয়ারি “Traditional Arabic Dance #with Music” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি আরব বিশ্বের একটি গানের নাচের ভিডিও।

মূলত, আরব বিশ্বের মানুষের ঢোল ও ডফ জাতীয় বাদ্য বাজিয়ে নাচার একটি ভিডিও গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান। সম্প্রতি এই ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় পরিবর্তন করে “হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে” শীর্ষক গান যুক্ত করে আরব বিশ্বের মানুষ উক্ত গানে নাচ করছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, আরবদের ঢোল ও ডফ জাতীয় বাদ্য বাজিয়ে নাচার ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় পরিবর্তন করে “হরে কৃষ্ণ হরে” শীর্ষক গান যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে; যা এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ছাত্রীর সঙ্গে জবির বহিষ্কৃত শিক্ষকের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের এই স্ক্রিনশটগুলো ভুয়া

সম্প্রতি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পাচ্ছেন বলে দুই শিক্ষকের নামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী।

এ ঘটনার পর একজন নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের কথোপকথন দাবিতে কিছু হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে ভাইরাল এই স্ক্রিনশটগুলো নিয়ে মূলধারার গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রচার হয়।

হোয়াটসঅ্যাপ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন আজকের পত্রিকা, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এবং শেয়ার নিউজ২৪। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রীর সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের আপত্তিকর হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের স্ক্রিনশটগুলো আসল নয় বরং  ‘Fake Chat – Whats Prank Mock’ নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে এই ভুয়া স্ক্রিনশটগুলো তৈরি করা হয়েছে।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানের জানা যায়, ‘জাবিয়ানস – JnU’ins’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ২১ মার্চ বিকেল ৪টা ২৮ মিনিটে আলোচ্য কথোপকথনের স্ক্রিনশট যুক্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) করা হয়। এরপর থেকে ইন্টারনেটে স্ক্রিনশটগুলো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

Screenshot: Facebook.

স্ক্রিনশটগুলো ভাইরাল হওয়ার পরবর্তী সময় এর সত্যতা জানতে চেয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের কাছে অসংখ্য ফ্যাক্ট-চেক অনুরোধ আসতে থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে কাজ শুরু করি আমরা।

ভাইরাল স্ক্রিনশটগুলোর প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে একটি অসংগতি আমাদের নজরে পড়ে।

হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলোতে একটি বাংলালিংক নম্বর (01936156054) দেখা যাচ্ছে। সাধারণত, মোবাইলে কোনো নম্বর সেভ না করা থাকলে কিংবা কোনো কন্টাক্ট যদি হোয়াটসঅ্যাপে সিঙ্ক না হয়ে থাকে, তাহলে শুধু নম্বরটি দেখা যায়। এক্ষেত্রে, হোয়াটসঅ্যাপে নম্বরের আগে সাধারণত আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোড বা কান্ট্রি কোড দেখানো হয়, যদি বাংলাদেশি নম্বরের সাথে কথোপকথন হয় তবে এই কান্ট্রি কোড হবে +৮৮০। তবে, ভাইরাল স্ক্রিনশটগুলোতে এই কান্ট্রি কোড দেখা যাচ্ছে না।

Image Comparison: Rumor Scanner.

উক্ত অসংগতি পাওয়ার পর রিউমর স্ক্যানারের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ দল স্ক্রিনশটগুলো আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ শুরু করে। পর্যবেক্ষণে উপরিউক্ত অসংগতিটি ছাড়াও আরও ৯টি অসংগতি খুঁজে পাওয়া যায়। নিচে সেসব অসংগতিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-

১। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সাধারণত ১২ ঘণ্টা ফরম্যাটের ঘড়ি ব্যবহারে অভ্যস্ত, যেখানে দিনের প্রথমার্ধ এবং দ্বিতীয়ার্ধ নির্দেশ করতে যথাক্রমে AM (Ante Meridiem – মধ্যাহ্নের পূর্বে) এবং PM (Post Meridiem – মধ্যাহ্নের পরে) ব্যবহার করা হয়। মোবাইল ফোনের সেটিংসে ১২ ঘণ্টা ফরম্যাটে সময় সেট করার ফলে ফোনের অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে এই ফরম্যাটেই সময় দেখানো হয়, যার ফলে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের পাশেও AM এবং PM দেখা যায়। তবে কথোপকথনের ভাইরাল স্ক্রিনশটে মেসেজের পাশে AM অথবা PM এর উল্লেখ দেখা যায়নি। 

Image Comparison: Rumor Scanner. 

এই অনুপস্থিতি বিশ্লেষণ করলে একটি ধারণা তৈরি হতে পারে যে, সম্ভবত স্ক্রিনশট নেওয়া মোবাইলে ২৪ ঘণ্টা ফরম্যাটের ঘড়ি ব্যবহৃত হয়েছে, যার ফলে AM বা PM প্রদর্শিত হয়নি। তবে, কল হিস্টোরি সংক্রান্ত অন্য একটি স্ক্রিনশটেই AM ও PM দেখা গেছে। একই অ্যাপে দুই ফর্মেটের সময় দেখানোর কোনো সুযোগ নেই, যার ফলে স্ক্রিনশটগুলো ভুয়া বলে প্রতীয়মান হয়।

২। সাধারণত মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত না থাকা কোনো নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে কল আসলে সেই ফোন নম্বরের নিচে ব্যবহারকারীর নাম প্রদর্শিত হয়। তবে ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলোতে এমনটি দেখা যায়নি। 

Image Comparison: Rumor Scanner.

৩। কথোপকথনের স্ক্রিনশটগুলো ১৩ অক্টোবর ২০২৩ এর। সাধারণত হোয়াটসঅ্যাপে যখন আমরা পুরোনো কথোপকথনের দিকে যাই, তখন নিচের ডান কোণে একটি ডাবল তীরের বাটন দেখা যায়। এই বাটনে ক্লিক করে দ্রুত সাম্প্রতিক কথোপকথনে ফিরে আসা যায়। তবে, ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলোতে এই বাটনটি দেখা যায়নি। এই বাটনকে “ফাস্ট স্ক্রোল বাটন” বা “কুইক স্ক্রোল টু বটম” বাটন বলা হয়।

Image Comparison: Rumor Scanner. 

৪। হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো ইমোজি প্রদর্শনের জন্য নিজস্ব বিশেষ ফন্ট ব্যবহার করে। আলোচ্য কথোপকথনের স্ক্রিনশটগুলোতে থাকা ইমোজিগুলোর সাথে হোয়াটসঅ্যাপের ইমোজির পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। এর একটি সম্ভাব্য কারণ হল ফেক  কথোপকথন তৈরির জন্য ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনগুলো। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো সাধারণত মূল অ্যাপ্লিকেশনের ইমোজি ফন্টগুলো সঠিকভাবে অনুকরণ করতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে এমন পার্থক্য তৈরি হয়। 

Image Comparison: Rumor Scanner.

৫। ভাইরাল স্ক্রিনশট ও আসল হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে কিছু গঠনগত পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। ১৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখের এই কথোপোকথনগুলোতে তারিখটি ওপরের এলাইনমেন্টের থেকে বেশ নিচে অবস্থান করছে, যেখানে হোয়াটসঅ্যাপে তারিখ সাধারণত উপরের এলাইনমেন্টের সাথে খুব সামান্য দূরত্বে থাকে।

Image Comparison: Rumor Scanner. 

৬। স্ক্রিনশটগুলোতে WhatsApp-এর ব্র্যান্ডিংয়ে একটি ত্রুটি লক্ষ্য করা গেছে। WhatsApp-এর ইংরেজি বানানে ‘WhatsApp’ শব্দের মধ্যে ‘A’ অক্ষরটি বড় হাতের অক্ষরে (Uppercase) লেখা হয়। তবে, ভাইরাল হওয়া সেই স্ক্রিনশটগুলোতে ‘WhatsApp’ শব্দের মধ্যবর্তী ‘A’ অক্ষরটি ছোট হাতের অক্ষরে (lowercase)লেখা হয়েছে, যা মূল ব্র্যান্ডের বানানের সাথে মেলে না। ফেক কথোপকথন তৈরির অ্যাপগুলো প্রাথমিকভাবে নিজেদের অ্যাপের নাম দিয়ে দেয়, যা ব্যবহারকারী পরে পরিবর্তন করতে পারে। এই ঘটনায় স্ক্রিনশট তৈরি করতে গিয়ে WhatsApp-এর ‘A’ অক্ষরটি ভুলভাবে ছোট হাতের অক্ষরে লেখা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। 

Image Comparison: Rumor Scanner.

৭। কল হিস্টরি সংক্রান্ত স্ক্রিনশটটিতে একটি কলের সময় দেখানো হচ্ছে “7:6 PM”। সাধারণত, সময় প্রদর্শনে ঘণ্টার পরে মিনিট হিসেবে দুই অঙ্কের সংখ্যা ব্যবহৃত হয়, যেমন “7:06 PM”। অবশ্য একই স্ক্রিনশটের অন্য একটি কলের ক্ষেত্রে সময় “11:09 AM” হিসেবে সঠিকভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে। এই ধরণের অসঙ্গতি সাধারণত ফেক স্ক্রিনশট জেনারেটর অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সময় ভুল ইনপুট প্রদানের ফলে ঘটে থাকতে পারে।

Image Comparison: Rumor Scanner. 

৮। কল হিস্টোরি সংক্রান্ত স্ক্রিনশটে প্রতিটি কল অ্যাক্টিভিটির মধ্যে একটি বিশেষ চিহ্ন (সমতল দাগ) দেখা যাচ্ছে, যা হোয়াটসঅ্যাপের বর্তমান ইউজার ইন্টারফেসের সাথে মেলে না। হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো নিয়মিত তাদের ইউজার ইন্টারফেস পরিবর্তন করে থাকে, কিন্তু ফেক কথোপকথন তৈরির অ্যাপ্লিকেশনগুলো এসব পরিবর্তনের সাথে তাল মিলাতে পারে না। এর ফলে এই ধরণের অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে প্রায়ই পুরোনো ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে এই স্ক্রিনশটগুলো এমন ফেক কথোপকথন তৈরির অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে তৈরি বলেই প্রতীয়মান হয়।

Image Comparison: Rumor Scanner. 

৯। কল হিস্টোরি সংক্রান্ত স্ক্রিনশটে ১০ জানুয়ারি তারিখে দুটি কলের রেকর্ড দেখা যাচ্ছে, যেখানে একটি কল রাত ৯:৩৪ PM এ এবং অন্যটি রাত ১:১৪ AM এ করা হয়েছে। তবে স্ক্রিনশটে রাত ৯:৩৪ PM এর কল রেকর্ডটি রাত ১:১৪ AM এর কল রেকর্ডের ওপরে দেখানো হয়েছে, যা সময়ের ক্রম অনুসারে অসঙ্গত। এমন পরিস্থিতি সাধারণত ফেক কথোপকথন তৈরির অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা হলে তৈরি হতে পারে। যেখানে ইনপুট দেওয়ার ক্রম অনুসারে স্ক্রিনশটে ডেটা সাজানো হয়। এই অ্যাপগুলোতে সর্বশেষ দেওয়া ইনপুট সবার ওপরে প্রদর্শিত হয় এবং প্রথমে দেওয়া ইনপুট নিচের দিকে চলে যায়। ফলস্বরূপ যদি কেউ প্রথমে রাত ১:১৪ AM এ করা কলের ইনপুট দিয়ে তারপর রাত ৯:৩৪ PM এ করা কলের ইনপুট দেয়, তাহলে স্ক্রিনশটে রাত ৯:৩৪ এর কল রেকর্ডটি রাত ১:১৪ এর কল রেকর্ডের ওপরে দেখানো হবে।

Image Comparison: Rumor Scanner.

পর্যবেক্ষণের এই পর্যায়ে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় যে ভাইরাল কথোপকথনের স্ক্রিনশটগুলো আসলে ভুয়া এবং এগুলো ভুয়া হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন তৈরির জন্য ডিজাইন করা একটি অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তীতে, এই স্ক্রিনশটগুলো তৈরির জন্য ব্যবহৃত অ্যাপ্লিকেশনটি শনাক্ত করতে অনুসন্ধান শুরু করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া অন্তত পাঁচটি সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশন পরীক্ষা করার পর, ‘Fake Chat – Whats Prank Mock’ নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন এই ভাইরাল চ্যাটগুলো তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। একই অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে রিউমর স্ক্যানার টিম ভাইরাল কল হিস্টোরির স্ক্রিনশটের একটি অনুরূপ সংস্করণ তৈরি করে, যা অরিজিনালের সাথে হুবহু মিলে যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner.

এই বিষয়ে অনুসন্ধান চলাকালীন ২১ মার্চ রাত ১১:২০ নাগাদ ‘জাবিয়ানস – JnU’ins’  নামের ফেসবুক পেজ থেকে আলোচ্য স্ক্রিনশট নিয়ে করা সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর রাত ১২:১৭ মিনিটে এই বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনায় ও নেটিজেনদের সচেতনের উদ্দেশ্যে রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি ফ্যাক্টচেক ব্যানার পোস্ট করা হয়। এই পোস্টের কিছু সময় পর থেকে ‘জাবিয়ানস – JnU’ins’ নামের পেজটি আর ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

মূলত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে তারই বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন। এরই মধ্যে আবু শাহেদ ইমন এবং এক নারী শিক্ষার্থীর মধ্যেকার কথোপকথনের বেশ কিছু স্ক্রিনশট ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই স্ক্রিনশটগুলো ‘Fake Chat – Whats Prank Mock’ নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। আমাদের অনুসন্ধানে ভাইরাল স্ক্রিনশটগুলোতে কান্ট্রি কোড ছাড়া নম্বর প্রদর্শন, টেক্সট টাইমের পাশে AM/PM না থাকা, হোয়াটসঅ্যাপের ইমোজি ফন্টে পার্থক্য, কল টাইম অর্ডারে AM এর পূর্বে PM প্রদর্শন, ‘কুইক স্ক্রোল টু বটম’ বাটনের অনুপস্থিতি, প্রতি কল অ্যাক্টিভিটির নিচে দাগ থাকাসহ অন্তত ১০টি অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, গতকাল ২১ মার্চ বিকালে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করার অভিযোগে উক্ত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। 

সুতরাং, ছাত্রীর সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের আপত্তিকর হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন দাবিতে ইন্টারনেটে ভাইরাল এই স্ক্রিনশটগুলো এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনীর বরাতে প্রচারিত রক্তে গ্লুকোজ বা ডায়াবেটিস পরীক্ষা সংক্রান্ত রেড অ্যালার্টটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বরাতে গ্লুকোজ বা ডায়াবেটিস পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি রেড এলার্ট সম্বলিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ডায়াবেটিস পরীক্ষা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

টিকটকে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ

যা দাবি করা হচ্ছে

ফেসবুক প্রচারিত পোস্টগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে “রেড এলার্ট! সকালের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, যদি আপনার বাসায় অপরিচিত কেউ এসে বলে যে আমরা মেডিকেল কলেজ থেকে এসেছি। আপনার রক্তের গ্লুকোজ বা ডায়াবেটিস আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখব, কোন ফি লাগবে না। ভুলেও পরীক্ষাটা করতে দিবেন না। শীঘ্রই ৯৯৯ কল দিবেন কিংবা পুলিশকে অবহিত করবেন। কারণ তারা আইএস জঙ্গি। তারা আপনার রক্তে এইচ আইভি এইডস ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে দিবে। বন্ধু এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছে এটা শেয়ার করুন।জনসচেতনতায়: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী”

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বরাতে ফেসবুকে ‘রেড এলার্ট’ শীর্ষক মেডিকেল শিক্ষার্থী পরিচয়ে কেউ বাসায় এসে রক্তের গ্লুকোজ বা ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে চাইলে তা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ২০১৮ সাল থেকেই বিভিন্ন সূত্র উল্লেখ করে উক্ত দাবিটি ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।

মূলত, মেডিকেল শিক্ষার্থী পরিচয়ে কেউ বাসায় এসে রক্তের গ্লুকোজ বা ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে চাইলে তা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি বাংলাদেশ পুলিশ, স্কাউটসহ বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বরাতেও একই তথ্য প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর আগে চলতি বছরের জুনে একই দাবিতে বাংলাদেশ স্কাউটসের সূত্রে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই ধরনের কোনো রেড এলার্ট দেননি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।

ফেসবুকের কমেন্টে @ [4:0] কমেন্ট করে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা যাচাই করা যায় না

সম্প্রতি, “ফেসবুকের কমেন্টে @ [4:0] কমেন্ট করার পর Mark Zuckerberg লেখা আসলে বুঝতে হবে ফেসবুক আইডিটি এখনো নিরাপদ আছে” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

কমেন্টে @ [4:0]

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য দাবিতে প্রচার হয়ে আসা ফেসবুকের কোনো পোস্টের কমেন্টে @[4:0] লিখলে সেটি যদি পরিবর্তন হয়ে মার্ক জাকারবার্গের নাম প্রদর্শন করলে উক্ত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট কখনো হ্যাক হয়নি বুঝে নিতে হবে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এমন কোনো বক্তব্য দেয়নি। তাছাড়া, @[4:0] জাকারবার্গের আইডি নাম্বার যার সাথে অন্যান্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকের সম্পর্ক নেই।

মূলত, গেল কয়েক বছর ধরেই ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেসবুকের কোনো পোস্টের কমেন্টে @[4:0] লিখলে সেটি যদি পরিবর্তন হয়ে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নাম প্রদর্শন করে তাহলে বুঝে নিতে হবে উক্ত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট কখনো হ্যাক হয়নি। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এমন কোনো বক্তব্যই দেয়নি। তাছাড়া, @[4:0] জাকারবার্গের আইডি নম্বর যার সাথে অন্যান্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকের কোনো সম্পর্ক নেই। এমন নাম্বার ফেসবুকের সকল অ্যাকাউন্টেরই রয়েছে। এমনকি হ্যাক হওয়ার পর ফিরে পেয়েছে এমন একটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও বিষয়টি যাচাই করে উক্ত দাবিটি মিথ্যা বলে প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

রমজান উপলক্ষে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেটের অফারটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “মাহে রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল অ-পারেটরে পাবেন ৩০ জিবি ইন্টারনেট সম্পূর্ণ ফ্রী” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

৩০ জিবি ফ্রি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহে রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল সিমের গ্রাহকদের ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফার দেওয়ার দাবি সংক্রান্ত লিংকটি ভুয়া এবং উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে ৩০ জিবি ইন্টারনেট পাওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল অপারেটরে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফার সংক্রান্ত লিংকটিতে ঢুকার পর “অফারটি নিতে আপনাকে যা যা করতে হবে!” শীর্ষক লেখার নিচে ‘এখানে ক্লিক করুন’ নামের একটি অপশন দেখা যায়।

Screenshot: bestjob24com-45439557.hubspotpagebuilder.com/30gbfree
Screenshot: Footballers Lives

উক্ত বাটনটিতে ক্লিক করার কিছুক্ষণ পর সেখানে মোবাইল নাম্বার প্রদানের একটি ফাঁকা ঘর আসে।

Screenshot: Cloud Seven

পরবর্তীতে ভিন্ন এক ওয়েবসাইটে ওটিপি দিতে বলা হয়। তবে সকল ধাপ সমূহ অনুসরণ করার পরেও ৩০ জিবি ইন্টারনেট পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল গ্রাহকদের ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট দেওয়ার অফারটি ভুয়া।

মূলত, রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল অপারেটরে বিনামূল্যে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, কোনো সিম অপারেটরের পক্ষ থেকে এমন কোনো বোনাস ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ওয়েবসাইটটি নিজেদের প্রচারণার স্বার্থে রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল অপারেটরে বিনামূল্যে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এই লিংকটি ছড়াচ্ছে। 

উল্লেখ্য, এ ধরণের স্ক্যাম লিংকের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া আইডি হ্যাক, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অনলাইন নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করার নজির রয়েছে।  

প্রসঙ্গত, পূর্বেও নববর্ষ উপলক্ষ্যে বিনামূল্যে ৫০ জিবি ইন্টারনেটের অফার, দারাজের নাম ব্যবহারে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট এবং হোয়াটসঅ্যাপের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট শীর্ষক একাধিক মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল সিম গ্রাহকদের ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট প্রদানের দাবিতে যে লিংকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis