Home Blog Page 385

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্রিজ ভেঙে ২৭ জন নিহতের তথ্যটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙ্গে বাস-ট্রাক খালে ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত তথ্যযুক্ত পোস্টের সাথে ব্রিজ ভাঙার দুইটি।ছবিসহ বেশ কয়েকটি ছবিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সম্প্রতি কোনো ব্রিজ ভাঙার ঘটনা ঘটেনি এবং ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন গুরুতর আহত হওয়ার তথ্যটিও মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সচেতনতামূলক পোস্টের কাল্পনিক দুর্ঘটনার দাবি বিকৃত হয়ে উক্ত দাবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

আলোচিত দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে Journalist Mahmud নামের একটি অ্যাকাউন্টের একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে।

পোস্টটিতে লেখা, 

“**ব্রেকিং নিউজ**

এই শোক সইবার নয়

নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙ্গে বাস-ট্রাক খালে, ২৭ জন নিহত। গুরুতর আহত আরো ৪৩ জনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। মা-বাবার চোখের সামনে সন্তানের আর সন্তানের সামনে মা-বাবার লাশ। স্বজনদের আহাজারিতে সয়লাব চারপাশ

এমন একটা সংবাদই হয়তো অপেক্ষা করছে নাসিরনগরবাসীর সামনে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো দ্রুত মেরামত করা না হলে যেকোনো মূহুর্তেই ঘটতে পারে এমন দূর্ঘটনা। তখন শোক প্রকাশ করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না। হাজার কোটি টাকা দিয়েও দূর্ঘটনায় নিহত কাউকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। আশা করছি কর্তৃপক্ষ দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ঝুঁকিমুক্ত চলাচল নিশ্চিত করবে।”

উক্ত স্ক্রিনশটের সূত্র ধরে Journalist Mahmud নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আলোচিত স্ক্রিনশটের পোস্টটি অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

তবে আলোচিত স্ক্রিনশটের পোস্টের বিষয়ে তার করা আরেকটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।  

উক্ত পোস্টে তিনি বলেন, অনেকেই আমার পূর্বের পোস্টটি দেখে বিভ্রান্ত হয়েছেন, যার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দূঃখ প্রকাশ করছি। লিখাটি সম্পূর্ণ না পড়েই বেশিরভাগ মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। পোস্টটির উদ্দেশ্য ছিল বড় কোনো দূর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন আমরা সমাধানের দিকটা খেয়াল করি।

উক্ত অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে আরও জানা যায়, 

মাহমুদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় সাংবাদিক। তিনি দৈনিক কালবেলার জেলার নাসিরনগর উপজেলা প্রতিনিধি। তার পুরো নাম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

অর্থাৎ, নাসিরনগরের স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ নিয়ে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কাল্পনিক দুর্ঘটনা উল্লেখ করে একটি সচেতনতামূলক পোস্ট করেন। পরবর্তীতে পোস্টটির আংশিক অংশ কপি পেস্ট হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিষয়টিকে অনেকেই সত্য মনে করেন। 

এছাড়া প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙে নিহত বা আহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত তথ্যের সাথে প্রচারিত কিছু ছবি পৃথকভাবে যাচাই করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ছবি যাচাই-১

পোস্টগুলোতে একটি ভাঙা ব্রিজের ছবি প্রচার করতে দেখা যায়। রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মানবজমিন এর ওয়েবসাইটে গত বছরের ০৭ মার্চ “সাজেক-দীঘিনালা রুটে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ০৭ মার্চ খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মাইনী নদীর ওপর বেইলি সেতু ভেঙে একটি পাথরবোঝাই ট্রাক খাদে পড়ে যায়৷ সেই ভাঙা সেতুর ছবি এটি। 

ছবি যাচাই-২

আলোচিত পোস্টে থাকা আরেকটি ব্রিজ ভাঙার ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দৈনিক জনকণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত বছরের ২২ আগস্ট “বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, চালক হেলপার নিহত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ২২ আগস্ট সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাগলা আউশকান্দি রাণীগঞ্জ সড়কের নলজোড় নদীর ওপরে নির্মিত কাটাগাং এলাকার বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে পড়ে চালক ও হেলপার দুজনেই নিহত হয়েছে। এটি সেই দুর্ঘটনারই একটি ছবি।

অর্থাৎ, এই ব্রিজ ভাঙার ছবিটিও পুরোনো ভিন্ন স্থানের৷ 

ছবি যাচাই-৩ 

আলোচিত পোস্টগুলোতে ফারায় সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্যাকেটে মোড়ানো লাশের ছবি দেখা যায়। উক্ত ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বাংলা টিভি এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৪ জুন “নওগাঁয় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ জুন সকাল ৮টায় নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের বাবলাতলী নামক এলাকায় ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ শিক্ষক নিহত হয়েছেন। সেই দুর্ঘটনায় নিহতদের ছবি এটি। 

ছবি যাচাই- ৪

আলোচিত পোস্টগুলোতে ফারায় সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্যাকেটে মোড়ানো আরেকটি লাশের সারির ছবি দেখা যায়। উক্ত ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সুরমা নিউজ এর ওয়েবসাইটে গত বছরের ০৭ জুন “নাজির বাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৫ জনের মধ্যে ৯ জনের পরিচয় শনাক্ত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ০৭ জুন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে বালুবাহী ট্রাক ও শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরও ১০ জন। সেই দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশের ছবি এটি। 

ছবি যাচাই-৫

আলোচিত পোস্টগুলোতে মানুষের সমাগমের একটি ছবি দেখা যায়। উক্ত ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বার্তা ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর “পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবি: ২৪ জনের লাশ উদ্ধার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে।

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই দুর্ঘটনায় নিহতদের ছবি এটি। 

মূলত, গত ২২ মার্চ শুক্রবার দৈনিক কালবেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগর উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ নিয়ে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি কাল্পনিক দুর্ঘটনার তথ্য উল্লেখ করে একটি সচেতনতামূলক পোস্ট করেন। পরবর্তীতে পোস্টটির আংশিক অংশ কপি পেস্ট হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি সত্য দাবিতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সমালোচনার মুখে মাহমুদ তার আলোচিত পোস্টটি সড়িয়ে ফেলেন এবং পূর্বের পোস্টে মানুষের বিভ্রান্তির বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন। পাশাপাশি আলোচিত পোস্টটি তিনি সচেতনতার উদ্দেশ্যেই দিয়েছিলেন বলে জানান। প্রকৃতপক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সম্প্রতি কোনো ব্রিজ ভাঙা বা অন্য কোনো দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন গুরুতর আহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সুতরাং, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ব্রিজ ভেঙ্গে বাস-ট্রাক খালে ২৭ জন নিহত ও ৪৩ জন গুরুতর আহত হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

তাহসানকে জড়িয়ে জুয়ার অ্যাপের ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচার

0

সম্প্রতি, জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

 জুয়ার অ্যাপের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সংগীত শিল্পী তাহসান খান জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি। বরং, ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুল-এর কমিউনিকেশন মাস্টারক্লাস নামের একটি কোর্সের ইন্টারভিউ বিষয়ক একটি ক্লাসের ভিডিওর কিছু অংশ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে মিরর ইমেজ তৈরি করে তার সাথে ভিন্ন অডিও এবং জুয়ার বিজ্ঞাপন যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে জুয়ার বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত তাহসান খানের ক্লিপটির কয়েকটি কী-ফ্রেস রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে 10 Minute School এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর Top 5 Questions Asked in Every Interview | Communication Masterclass | Tahsan Khan শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত তাহসান খানের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওর বেশকিছু অংশের হুবহু মিল রয়েছে। দুটো ভিডিওতেই তার পোশাক, বসার স্টাইল এবং সোফার মিল রয়েছে। অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ভিডিওটির মিরর ইমেজ তৈরি করেই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পাশাপাশি ভিডিওটি থেকে জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুল-এর কমিউনিকেশন মাস্টারক্লাস নামের একটি কোর্সের ইন্টারভিউ বিষয়ক একটি ক্লাসের ভিডিও। ভিডিওটিতে তাহসান খান যেকোনো ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রার্থীদের যে সাধারণ প্রশ্নগুলোর সম্মুখীন হতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

অর্থাৎ, তাহসান খানের সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ভিডিওর সাথে জুয়ার বিজ্ঞাপনের অডিও ও ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। যার সাথে তাহসান খানের কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই।

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা যায়

আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারকারী পেজটি (আর্কাইভ) পর্যালোচনা করে দেখা যায় এতে কিছু অনলাইন ভিত্তিক জুয়া খেলার প্রচারণামূলক পোস্ট রয়েছে। এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে দেখা যায়, পেজটি ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এই তিনটি দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি জানা যায় উক্ত পেজটি ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট তৈরি করা হয়েছে এবং পেজটির নাম এর পূর্বে দুবার পরিবর্তন করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook 

মূলত, ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুল তাদের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালে কমিউনিকেশন মাস্টারক্লাস নামের একটি কোর্সের সংগীত শিল্পী তাহসান খানের ইন্টারভিউ বিষয়ক একটি ক্লাসের ভিডিও প্রচার করে। সম্প্রতি উক্ত ভিডিওর কিছু অংশ কাট করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সেটির মিরর ইমেজ তৈরি করে তার সাথে ভিন্ন একটি অডিও ও জুয়ার অ্যাপের প্রচারণার ভিডিও যুক্ত করে দাবি করা হচ্ছে, তাহসান খান জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, তাহসান খান এমন কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি।

সুতরাং, তাহসান খান অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রকৃত তাপমাত্রা নয়, ব্রাজিলে হিট ইনডেক্সের নতুন রেকর্ড ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস

জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা সারা বিশ্বের মানুষের জন্যই চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। দেশে দেশে তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি আর অসময়ের প্রাকৃতিক দূর্যোগ হরহামেশাই দেখতে হচ্ছে মানুষকে৷ চলতি মাসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির খবর এসেছে গণমাধ্যমে। সম্প্রতি এমনই এক খবর প্রচার করতে গিয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যম দাবি করেছে, গত ১৭ মার্চ সকালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে সর্বোচ্চ ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। 

৬২.৩ ডিগ্রি

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন ডিবিসি নিউজ (ইউটিউব), এখন টিভি (ইউটিউব), যুগান্তর, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, জনকণ্ঠ, আমাদের সময়.কম, সংবাদ, নিউজবাংলা২৪, সংবাদ প্রকাশ, এবিনিউজ২৪, ঢাকা টাইমস২৪, বিজনেস বাংলাদেশ, একুশে সংবাদ, পিবিএ এজেন্সি, অর্থ সংবাদ, পদ্মা টাইমস২৪, ঢাকা রিপোর্ট২৪, ঢাকা টুডে, ভিন্ন বার্তা, ডেইলি পাঞ্জেরি, ঠিকানা নিউজ।  

তাছাড়া কতিপয় গণমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ব্রাজিলের ইতিহাসে এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডটি ছিল ৫৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত নভেম্বরে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন একাত্তর টিভি, সময় টিভি, কালবেলা, বাংলাভিশন, চ্যানেল২৪, এনটিভি, ভোরের কাগজ, দৈনিক সংগ্রাম, বণিক বার্তা, ঢাকা পোস্ট, বিবিএস বাংলা, বিডি২৪রিপোর্ট, অর্থসূচক, বাংলাদেশ বুলেটিন, মত ও পথ, ডেল্টা টাইমস, এমটিনিউজ২৪। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৭ মার্চ রিও ডি জেনিরোতে সর্বোচ্চ ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ডের এবং এটির আগে একদিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ৫৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার বিষয়টি সঠিক নয় বরং সেদিন সকালে হিট ইনডেক্স ছিল ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর্দ্রতা বিবেচনা করে তাপমাত্রা কেমন অনুভূত (ফিলস লাইক) হয় তার সূচককে ‘হিট ইনডেক্স’ বলা হয়। তাছাড়া, এটির পূর্বের রেকর্ড ছিল এর আগের দিনই (১৬ মার্চ), ৬০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদে দেশের একাধিক গণমাধ্যম কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সূত্র ব্যবহার করেছে। এর প্রেক্ষিতে আমরা আল জাজিরার ওয়েবসাইটে গত ১৮ মার্চ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি পড়ে দেখেছি। 

আল জাজিরা বলছে, গত ১৭ মার্চ স্থানীয় সময় সকাল ৯ টা ৫৫ মিনিটে রিও ডি জেনেরিওর হিট ইনডেক্স ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৪৪.১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছিল যা ২০১৪ সালে এই ধরণের রেকর্ড রাখার পর থেকে সর্বোচ্চ। পরদিনের প্রকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই প্রতিবেদনে আর্দ্রতা বিবেচনা করে তাপমাত্রা কেমন অনুভূত (ফিলস লাইক) হয় তার সূচককে  ‘হিট ইনডেক্স’ বলা হয়েছে। যার মানে দাঁড়ায়, এই হিট ইনডেক্স প্রকৃত তাপমাত্রা নয়।

আল জাজিরার দাবি, পূর্বের হিট ইনডেক্স রেকর্ড ছিল গত নভেম্বরে, ৫৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে গণমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত একটি ছবি যুক্ত করে ক্যাপশনে উল্লেখ করেছে, ওয়েস্টার্ন রিওতে হিট ইনডেক্সের নতুন রেকর্ডের একদিন আগেই গত ১৬ মার্চ হিট ইনডেক্স ছিল ৬০.১ ডিগ্রি। 

Screenshot collage: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, আল জাজিরা এক প্রতিবেদনেই পূর্বের রেকর্ড বিষয়ে দুই রকম তথ্য দিয়েছে। 

অধিকতর অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘ও গ্লোবো’র এক প্রতিবেদন থেকেও ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে থার্মাল সেনসেশন (হিট ইনডেক্স) হিসেবেই অভিহিত করার তথ্য জেনেছে।  

ও গ্লোবোও বলছে, রিও ডি জেনেরিওর পশ্চিমাঞ্চলে পরপর দুইদিন (১৬ ও ১৭ মার্চ) রেকর্ড হিট ইনডেক্সের (৬০.১ ও ৬২.৩) তথ্য মিলেছে। 

একই খবরে সিএনএনের ব্রাজিল সংস্করণের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রিও ডি জেনেরিওর পশ্চিমে অবস্থিত গুয়ারাতিবা অঞ্চলের হিট ইনডেক্স রেকর্ডের একটি তালিকা পাওয়া যাচ্ছে। এই তালিকা থেকেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, ১৭ মার্চের হিট ইনডেক্স বা থার্মাল সেনসেশনের নতুন রেকর্ড হওয়ার আগে সেখানে সর্বশেষ সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়েছিল এর আগের দিনই। 

Screenshot: CNN Brasil 

মূলত, সম্প্রতি দেশের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, গত ১৭ মার্চ সকালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে সর্বোচ্চ ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এবং ব্রাজিলের ইতিহাসে এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডটি ছিল ৫৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত নভেম্বরে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এই দুই দাবির পক্ষে সত্যতা মেলেনি। প্রকৃতপক্ষে, রিও ডি জেনেরিওতে সেদিন সকালে হিট ইনডেক্স ছিল ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর্দ্রতা বিবেচনা করে তাপমাত্রা কেমন অনুভূত (ফিলস লাইক) হয় তার সূচককে ‘হিট ইনডেক্স’ বলা হয়। এর মানে, এই হিট ইনডেক্স প্রকৃত তাপমাত্রা নয়। তাছাড়া, এটির পূর্বের রেকর্ড ছিল এর আগের দিনই (১৬ মার্চ) , গেল বছরের নভেম্বরে নয়৷ ১৬ মার্চ হিট ইনডেক্স ছিল ৬০.১ ডিগ্রি, যা গত নভেম্বরে ছিল ৫৯.৭ ডিগ্রি।

সুতরাং, ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে গত ১৭ মার্চের ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হিট ইনডেক্সকে (যা প্রকৃত তাপমাত্রা নয়) উক্ত স্থানের প্রকৃত তাপমাত্রা দাবি করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

কোচ হাথুরুসিংহেকে অপমান করে কোনো লাইভ করেননি তামিম ইকবাল

সম্প্রতি, শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর মুশফিকুর রহিম হেলমেট উদযাপন করতে গেলে কোচ হাথুরুসিংহে তাকে তা করতে বারণ করায় লাইভে এসে তামিম ইকবাল চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অপমান করেছেন দাবিতে ‘আমরা ম্যাচ জিতলে! সেলিব্রেশন করলে হাথুরুর জ্বলে কেনো? ওর সমস্যা কি? এবার হাথুরুকে চরম অপমান করলো তামিম’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

কোচ হাথুরুসিংহেকে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুশফিকুর রহিমকে হেলমেট উদযাপন করতে বারণ করায় লাইভে এসে তামিম ইকবাল চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অপমান করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপে তামিম খেলবেন না জানিয়ে তার ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা একটি ভিডিওর কিছু অংশের সাথে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটির শুরুতে তামিম ইকবালের একটি ভিডিও ক্লিপ দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে তাকে ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। আশা করি, সবাই ভালো আছেন। ছোট একটা এনাউন্সমেন্ট ছিল।’ শীর্ষক কথা বলতে শোনা যায়। পরবর্তীতে ভিডিওটির উপস্থাপক দাবি করেন, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ জয়ের পর মুশফিকুর রহিম অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ব্যঙ্গ করে ‘হেলমেট উদযাপন’ করতে গেলে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে হাত জোড় করে তাকে তা করতে বারণ করেন। যার প্রেক্ষিতে লাইভে এসে তামিম ইকবাল হাথুরুসিংহেকে আপমান করে ‘সিরিজ জয়ের পর হাথুরু আমাদের সেলিব্রেশন করতেও দেয় না। হাথুরু আমাদের টাকা খেয়ে শ্রীলঙ্কার পক্ষে কথা বলে। হাথুরু কি বাংলাদেশের কোচ নাকি শ্রীলঙ্কার তা বুঝতে পারছি না।  সেদিন শ্রীলঙ্কা যখন আমাদের হারিয়ে টাইমড আউট সেলিব্রেশন করলো তখন তো হাথুরুসিংহে কিছু বললো না তাহলে গতকাল বাংলাদেশ যখন সেলিব্রেশন করছিল তখন কেনো সমস্য হলো হাথুরুর? ম্যাচ জয়ের পর সেলিব্রেশন করবে এটাই স্বাভাবিক। হাথুরু বাঁধা দেওয়ার কে? ও আমাদের টাকা খেলে বেচে থাকে অথচ ভেতরে ভেতরে দেশের পক্ষ টেনে কথা বলে। দেশের প্রতি এত টান থাকলে দেশে ফিরে যাক। নিজেদের দেশের কোচ হোক। আমার মনে হয়না হাথুরু চান না আমরা শ্রীলঙ্কার সাথে জয় লাভ করি। ও একটা স্বার্থপর।’ শীর্ষক মন্তব্যগুলো করেছেন।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটির শুরুতে তামিম ইকবালের লাইভ ভিডিও দাবিতে দেখানো ক্লিপটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Tamim Iqbal এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর I will be unavailable for T20 World Cup – Tamim Iqbal শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর শুরুতে থেকে ৬ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর শুরুতে দেখানো তামিম ইকবালের ক্লিপটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটিতে কোথাও তামিম ইকবাল আলোচিত মন্তব্যগুলো করেননি। মূলত ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি অংশগ্রহণ করছেন না জানিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে তিনি উক্ত ভিডিওটি প্রচার করেন। পাশাপাশি ভিডিওটি বর্তমান সময়েরও নয় যা কারণে এটির সাথে সাম্প্রতিক বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজ কিংবা মুশফিকুর রহিমের হেলমেট সেলিব্রেশনেরও কোনো সম্পর্ক নেই।

পরবর্তীতে তামিম ইকবাল মুশফিকুর রহিমের হেলমেট সেলিব্রেশন ও তাতে হাথুরুসিংহের বারণ করা নিয়ে আলোচিত মন্তব্যগুলো করেছেন কিনা জানতে তামিম ইকবালের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল, গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ। উক্ত ম্যাচে ৪ উইকেটে জয়ের মাধ্যমে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে জয় লাভ করে বাংলাদেশ। সিরিজ জয়ের শিরোপা নিয়ে উদযাপনের সময় সবার মাঝে হেলমেট নিয়ে হাজির হন মুশফিকুর রহিম। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ব্যঙ্গ করে ‘হেলমেট উদযাপন’ করতে গেলে সেসময় হাত জোড় করে তাকে তা করতে বারণ করেন কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে। যার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, মুশফিকুর রহিমকে ‘হেলমেট উদযাপন’-এ বাঁধা দেওয়ায় তামিম ইকবাল লাইভে এসে হাথুরুসিংহেকে অপমান করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ঘটনায় তামিম ইকবাল কোনো লাইভ করেননি। পাশাপাশি তিনি কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহেকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যগুলোও করেননি। প্রকৃতপক্ষে, তামিম ইকবালের পুরোনো একটি ভিডিওর সাথে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজের কয়েকটি ছবি যুক্ত করে একটি ভিডিও তৈরি করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, মুশফিকুর রহিমের হেলমেট উদযাপনে বাঁধা দেওয়ায় লাইভে এসে তামিম ইকবালের কোচ হাথুরুসিংহেকে অপমান করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মেঘের কারণেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে দুর্ঘটনা ঘটে দাবিতে গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, কলোরোডা স্টেট ইউনিভার্সিটির স্যাটেলাইট ও মিটিওরোলজিস্ট স্টিভ মিলারের বক্তব্যের বরাত দিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলা ভিশনের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যের সমাধান হয়েছে।মেঘের কারণেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে

উক্ত দাবিতে বাংলা ভিশনের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে বাংলা ভিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে। 

একই দাবিতে বাংলা ভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে স্টিভ মিলার কোনো মন্তব্য করেননি বরং ২০১৬ সালে সায়েন্স টিভি চ্যানেলে স্টিভ মিলার সহ আরও একজন বিশেষজ্ঞের বারমুডা ট্রায়াংগেল নিয়ে দেওয়া বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে উক্ত তথ্যটি প্রচার করা হয়েছে। 

মূলত, ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল আমেরিকার সায়েন্স নামের একটি চ্যানেলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে একটি অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে দাবি করা হয়, মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার একটি স্যাটেলাইটে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের ষড়ভুজাকৃতির এমন কিছু মেঘ দেখা গিয়েছে, যা আরেকটি স্যাটেলাইটে উত্তর সাগরের উপরও দেখা গিয়েছে। এই ধরনের মেঘ  মাইক্রোবার্স্ট (microburst) নামক একটি প্রাকৃতিক ঘটনা, যা শক্তিশালী বাতাস তৈরি করে। অনুষ্ঠানটিতে আমন্ত্রিত দুইজন বিশেষজ্ঞ অতিথির এই মেঘ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সায়েন্সে চ্যানেলটি এক পর্যায়ে দাবি করে, বিজ্ঞানীরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল রহস্যের সমাধান খুঁজে পেয়েছেন। তবে রিউমর স্ক্যানারে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দুইজন অতিথিই পরবর্তীতে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জানান, তাদের বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে সায়েন্স চ্যানেলটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল রহস্যের সমাধান খুঁজে পাওয়ার দাবিতে প্রচার করেছে।  

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

এগুলো গাজার আল শিফা হাসপাতালের ছবি নয়

0

গত ১৮ মার্চ গাজা উপত্যকার আল শিফা হাসপাতালকে ঘিরে আবারও অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা হাসপাতালটি ব্যবহার করছেন। সেই অভিযানে আটক হওয়াদের দৃশ্য দাবিতে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এগুলো গাজার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আল শিফা হাসপাতালে অভিযানের পর আটককৃতদের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো আল শিফা হাসপাতালের নয় বরং ভিন্ন স্থানের পুরোনো ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইনস্টাগ্রামে গত ০৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত পোস্টে থাকা ১০ টি ছবির মধ্যে প্রথম এবং সর্বশেষ ছবি দুইটির সাথে আলোচিত দুইটি ছবির মিল রয়েছে।

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, জাবালিয়া ডাম্প-৩ নামক স্থানে বেসামরিক নাগরিকদের সাথে ঝামেলার দৃশ্য এটি। কাছাকাছি থাকা ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল- এমন একটি হাসপাতাল যা দেখে হাসপাতাল ভাবলে ভুল হবে।

অর্থাৎ, ছবিগুলো ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের এবং পূর্বের ঘটনার। 

আমাদের অনুসন্ধানে উত্তর গাজার শিক্ষা বিভাগের ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভবনের সাথে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ছবিতে থাকা একটি ভবনের নকশার মিল পাওয়া যায়।  

Image comparison: Rumor Scanner

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, উক্ত ভবনটি কুয়েত গার্লস সেকেন্ডারি স্কুলের ভবন। 

গুগল ম্যাপে যাচাই করে দেখা যায়, ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ও কুয়েত গার্লস সেকেন্ডারি স্কুলের দূরত্ব ২০০ মিটারের কাছাকাছি। 

মূলত, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকার আল শিফা হাসপাতালকে ঘিরে আবারও অভিযান শুরু করে। পরবর্তীতে সেই অভিযানে আটককৃতদের দৃশ্য দাবিতে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিগুলো আল শিফা হাসপাতালের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ও তার পাশ্ববর্তী এলাকার প্রচারিত ছবিগুলো সম্প্রতি আল শিফা হাসপাতালে অভিযানের পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। 

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনা এবং স্থানের দুইটি ছবিকে সম্প্রতি আল শিফা হাসপাতালে অভিযানে আটককৃতদের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তকর। 

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রিকেটার রিশাদকে বাড়ি-গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেননি

সম্প্রতি, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে রিশাদ হোসেনের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাড়ি-গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ইউটিউবে প্রচারিত উক্ত দাবির ভিডিওই দেখা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার বার। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি-গাড়ি উপহার দিতে চাওয়ার দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভার ভিডিওর কিছু অংশের সাথে ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার। এতে ভিডিওটির শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ভিডিও ক্লিপ দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে তাকে ‘আমাদের ছেলেরা…মানে ফিল্ডিং, বোলিং, ব্যাটিং সবকিছুতেই এবার তাদের ভালো একটা পারফরমেন্স ছিল’ শীর্ষক মন্তব্য করতে শোনা যায়। পরবর্তীতে ভিডিওটির উপস্থাপক দাবি করেন, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে রিশাদ হোসেনের পারফরমেন্সে মুগ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী ‘ছেলেটা সত্যি অসাধারণ খেলেছে। তরুণরা তো দেশের গর্ব। এই ছেলেটার পারফরমেন্সে আমি মুগ্ধ হয়েছি। তাই আমি তাকে পুরস্কৃত করতে চাই। শীঘ্রই আমি তাকে বাড়ি, গাড়ি উপহার দিবো।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন।

আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটির শুরুতে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও ক্লিপটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল SOMOY TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর আমাদের ছেলেরা বলিং, ফিল্ডিং, ব্যাটিং সব কিছুতেই ভালো করেছে | Sheikh Hasina শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube 

প্রতিবেদনটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর ৪২ সেকেন্ড থেকে ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও ক্লিপের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও জানা যায়, প্রতিবেদনটি ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায়কে কেন্দ্র করে। উক্ত সভায় নয়া দিল্লিতে হওয়া বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের জয়ে খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স নিয়ে প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।  

অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রীর পুরোনো একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে রিশাদ হোসেনের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে তার পারফরমেন্সের বাড়ি, গাড়ি উপহার দিতে চেয়েছেন কিনা জানতে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ। উক্ত ম্যাচে ৫৮ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয়ের মাধ্যমে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে জয় লাভ করে বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে রিশাদ হোসেন মাত্র ১৮ বলে পাঁচটি চার এবং চারটি ছয় হাকিয়ে মোট ৪৮ রান করেন। দুর্দান্ত এই পারফরমেন্সে ইন্টারনেট দুনিয়ায় প্রসংশার জোয়ারে ভাসছেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে রিশাদ হোসেনের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাড়ি ও গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোাচিত দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভার পুরোনো একটি ভিডিওর কিছু অংশের সাথে রিশাদ হোসেনের কিছু ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ক্রিকেটার রিশাদ হোসেনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাড়ি-গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন  দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গৌরী খানের ‘তরী’ রেস্তোরাঁয় দুজনের এক বেলা ভরপেট খেতে লাখ টাকা খরচ হওয়ার দাবিটি মিথ্যা

গত ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকা বান্দ্রায় ‘তরী’ নামের একটি রেস্তোরাঁ খুলেন শাহরুখ খানের স্ত্রী, প্রযোজক ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গৌরী খান। সম্প্রতি এই রেস্তোরাঁ নিয়ে কতিপয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের একাংশে দাবি করা হয়েছে, এই রেস্তোরাঁয় দুটো মানুষের ভরপেট খেতে পকেট থেকে লাখখানেক টাকা বেরিয়ে যাবে।

গৌরী খানের

এ দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন প্রথম আলো, বাংলা ইনসাইডার

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গৌরী খানের মালিকানাধীন তরী রেস্তোরাঁঁতে দুই ব্যক্তির ভরপেট খাওয়ার ব্যয় লাখ টাকা হওয়ার দাবিটি মিথ্যা। এই রেস্তোরাঁঁর তিনটি সর্বাধিক মূল্যবান খাবারের যোগফল এক লাখ টাকা অতিক্রম করে না এবং ভারতের দুইটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে এই রেস্তোরাঁয় দুই ব্যক্তির খাবারের ব্যয় মদসহ প্রায় ৫ হাজার রুপি।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্যসূত্র হিসেবে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এবং লাইফস্টাইল সংক্রান্ত প্ল্যাটফর্ম কার্লি টেলসের কথা উল্লেখ রয়েছে।

উক্ত বিষয়টি যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে হিন্দুস্তান টাইমসের ওয়েবসাইটে বাংলাইংরেজি ভাষায় যথাক্রম গত ১৫ ও ২২ ফেব্রুয়ারি গৌরী খানের রেস্তোরাঁ নিয়ে প্রকাশিত দুইটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিবেদনগুলোতে খাবারের মূল্য সংক্রান্ত আলোচ্য তথ্যটি পাওয়া যায়নি।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি কার্লি টেলসের ওয়েবসাইটে গৌরী খানের তরী রেস্তোরাঁ নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এই প্রতিবেদনেও খাবারের মূল্য সংক্রান্ত আলোচ্য পাওয়া যায়নি।

কার্লি টেলসের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তরী রেস্তোরাঁর একটি ভ্লগ ভিডিও প্রকাশিত হয়। প্রায় ৯ মিনিটের এই ভিডিওতেও আলোচ্য দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, কতিপয় গণমাধ্যম যে সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানাচ্ছে সেই সূত্রেই এসব তথ্য নেই। 

পরবর্তীতে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতের শীর্ষস্থানীয় ফুড ডেলিভারি সংস্থা জমেটোর ওয়েবসাইটে রেস্তোরাঁটির খাদ্য তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়।

গুগল ম্যাপেও রেস্তোরাঁটির একই খাদ্য তালিকা পাওয়া যায়। এই খাবারের তালিকা অনুযায়ী, সবচেয়ে উচ্চমূল্যের খাবার হলো ব্ল্যাক মিসো কড (Black Miso Cod), যার দাম হচ্ছে ৪৭০০ রুপি। এরপরের স্থানে রয়েছে ইয়াকিনিকু এনজেড ল্যাম্ব চপ (Yakiniku NZ Lamb Chop), যার মূল্য ৩৮০০ রুপি এবং ইয়াকিনিকু লবস্টার (Yakiniku Lobster), যার মূল্য ২৯০০ রুপি। তালিকায় থাকা সবচেয়ে দামি তিন খাবার মিলিয়েও ১২ হাজার রুপি অতিক্রম করে না। সুতরাং দুটো মানুষের ভরপেট খেতে লাখ টাকা খরচের কোনো সম্ভাবনাই নেই।

এছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই রেস্তোরাঁয় দুজন মানুষের খাওয়ার জন্য প্রায় ২,০০০ রুপি খরচ হতে পারে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই রেস্তোরাঁয় মদসহ দুজন মানুষের খাওয়ার জন্য প্রায় ৫ হাজার রুপি খরচ হতে পারে।

মূলত, গত ফেব্রুয়ারিতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় ‘তরী’ নামের একটি রেস্তোরাঁ খুলেন শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী খান। এই রেস্তোরাঁ নিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, এই রেস্তোরাঁয় দুটো মানুষের ভরপেট খেতে প্রায় লাখখানেক টাকা ব্যয় হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবিটি সত্য নয়। রেস্তোরাঁটির মূল্য তালিকা অনুযায়ী এর সবচেয়ে দামি খাবারের মূল্য ৪৭০০ রুপি। রেস্তোরাঁটির সবচেয়ে দামি তিনটি খাবার মিলিয়েও লাখ টাকার আশে পাশে যায় না।

সুতরাং, গৌরী খানের তরী রেস্তোরাঁয় ভরপেট খেতে দুজন মানুষের লাখ টাকা খরচ হয় দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দী হওয়ার গুজব

সম্প্রতি, ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “ব্রেকিং নিউজ হাসিনার বিরুদ্ধে পিটারের ভয়ংকর রিপোর্ট যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে কারাবন্দী হাসিনা” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কোনো রিপোর্ট প্রকাশ করেনি এবং যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দী হওয়ার দাবিটিও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিন্ন ঘটনার একাধিক ভিডিও ক্লিপের সাথে উক্ত দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দী থাকার কোনো দৃশ্য বা তথ্য প্রমাণ দেখা যায়নি। 

সাধারণত কোনো একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী হলে সেটি নিয়ে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে  সংবাদ হওয়া স্বাভাবিক। তবে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্ধী হওয়ার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি বরং আলোচিত দাবি প্রচারের পরবর্তী সময়ে অতীতের ন্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়মিত বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ও বৈঠকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।

সাম্প্রতিক সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনে দেখুন –

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ০১ 

আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত প্রথম ভিডিওটির অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে 1A নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ মার্চ “আমেরিকা বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেই – প্রফেসর হাসনাতের বিশ্লেষণ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশই আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওতে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাংলাদেশের সামনে সম্ভাবনার সঙ্গে আছে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ শীর্ষক নিবন্ধ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ প্রফেসরড.মোহা.হাছানাত আলীকে আলোচনা করতে দেখা যায়। তবে ভিডিওর কোথাও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো রিপোর্ট প্রকাশ হওয়া কিংবা এমন কোনো রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়নি। 

ভিডিও যাচাই ০২ 

দ্বিতীয় ভিডিওটির অনুসন্ধানে রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ মার্চ “পিটার হাসের নতুন তৎপরতা! পকেটে হোয়াইট হাউজের লাল কার্ড! কেউ আশায় বুক বাঁধছেন! অনেকে কাঁপছেন!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশই আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওতে গোলাম মাওলা রনিকে নয়া দিগন্তে পিটার হাসকে নিয়ে তার লিখা নিবন্ধ নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ, পুরো ভিডিওর কোথাও আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো দৃশ্য কিংবা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ১৫ মার্চ দৈনিক প্রথম আলোতে বাংলাদেশের সামনে যে সম্ভাবনা ও চ্যালেন্জ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেন। যেখানে তিনি বলেন, “প্রতিদিন এই দেশের সম্ভাবনা, জনগণের শক্তি ও সহনশীলতা এবং এর প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজ আমাকে মুগ্ধ করে। যেমনটা আমি গত বছর বলেছিলাম, বাংলাদেশ তার জন্মলগ্ন থেকে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। ভবিষ্যতের দিকে তাকালে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এক দিন এক দিন করে এগিয়ে আসে—এমন এক ভবিষ্যৎ আমি দেখতে পাই, আমি এই দেশের সামনে সম্ভাবনা দেখতে পাই। তবে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জও চোখে পড়ে।”

মূলত, গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই বছর পূর্ন হলো বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের। এ উপলক্ষ্যে তিনি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখেছেন। নিবন্ধটিতে তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। পিটার হাসের উক্ত নিবন্ধকে কেন্দ্র করে “ব্রেকিং নিউজ হাসিনার বিরুদ্ধে পিটারের ভয়ংকর রিপোর্ট যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে কারাবন্দী হাসিনা” শীর্ষক থাম্বনেইলে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে, আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের রিপোর্ট প্রকাশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দী হওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানির সংবাদটি মিথ্যা

সম্প্রতি, “দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানি” শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ দেশের একাধিক গণমাধ্যম সহ ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

৩০০ টন পেঁয়াজ

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন একুশে টিভি, নয়া দিগন্ত, ডেইলি সান, এসএ টিভি, দৈনিক বাংলা, নিউজ বাংলা২৪, বিজনেস ইনসাইডার, এবিনিউজ২৪, একুশে সংবাদ, আই নিউজ, তরঙ্গ নিউজ

উক্ত দাবিতে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) সংবাদ প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে তা সরিয়ে নেয়।

একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজের পোস্টসহ অন্যান্য পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করার তথ্যটি সঠিক নয়। হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ তথ্যটি ভুয়া বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

আজ (২৩ মার্চ) একাত্তর টেলিভিশনের হিলি স্থলবন্দরের সংবাদকর্মী এমডি সোহেল রানার একটি ফেসবুক পোস্ট (আর্কাইভ) রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে। যেখানে তিনি দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ সঠিক নয় বলে উল্লেখ করে। 

Screenshot : Facebook Post 

তার পোস্টের সূত্র ধরে উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো পড়ে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায় গণমাধ্যমগুলো উক্ত সংবাদের সূত্র হিসেবে হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপের নাম উল্লেখ করেছে। 

প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়, সোহরাব হোসেন প্রতাপ পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর মধ্যে উক্ত দাবিতে বাসস, নয়া দিগন্ত ও নিউজ বাংলা২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের লিংক গিয়ে সংবাদটি খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয় রিউমর স্ক্যানার টিম। অর্থাৎ গণমাধ্যমগুলো তাদের সংবাদটি সরিয়ে নেয়। যার দরুন সংবাদটির সত্যতা নিয়ে রিউমর স্ক্যানার টিমের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। 

পরবর্তীতে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এই সংবাদটি ভুয়া। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কোনো পেঁয়াজ আসেনি। এছাড়া সাংবাদিকরা আমার কাছ থেকে কোনো সাক্ষাৎকার নেননি।” 

মূলত, গত ২১ ও ২২ মার্চ দেশীয় একাধিক গণমাধ্যম সহ ইন্টারনেটে “দিনাজপুর স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে” শীর্ষক দাবিতে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে, ২০ মার্চ দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনোপেঁয়াজ আমদানি করা হয়নি। হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ বিষয়টি ভুয়া বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আরো ৩০০ মেট্রিক টন আলু আমদানি করা হয়েছে।

সুতরাং, ২০ মার্চ দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Md Sohel Rana : Facebook Post 
  • Statement of Sohrab Hossain Pratap Mallick, Public Relations Officer, Hilli Panama Port. 

হালনাগাদ/ Update

২৫ মার্চ ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে এসএ টিভি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই দাবি সম্বলিত প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত প্রতিবেদনটিকে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।