গত ১৮ মার্চ গাজা উপত্যকার আল শিফা হাসপাতালকে ঘিরে আবারও অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের দাবি, হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা হাসপাতালটি ব্যবহার করছেন। সেই অভিযানে আটক হওয়াদের দৃশ্য দাবিতে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আল শিফা হাসপাতালে অভিযানের পর আটককৃতদের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো আল শিফা হাসপাতালের নয় বরং ভিন্ন স্থানের পুরোনো ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইনস্টাগ্রামে গত ০৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত পোস্টে থাকা ১০ টি ছবির মধ্যে প্রথম এবং সর্বশেষ ছবি দুইটির সাথে আলোচিত দুইটি ছবির মিল রয়েছে।
উক্ত পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, জাবালিয়া ডাম্প-৩ নামক স্থানে বেসামরিক নাগরিকদের সাথে ঝামেলার দৃশ্য এটি। কাছাকাছি থাকা ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল- এমন একটি হাসপাতাল যা দেখে হাসপাতাল ভাবলে ভুল হবে।
অর্থাৎ, ছবিগুলো ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের এবং পূর্বের ঘটনার।
আমাদের অনুসন্ধানে উত্তর গাজার শিক্ষা বিভাগের ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট খুঁজে (আর্কাইভ) পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভবনের সাথে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ছবিতে থাকা একটি ভবনের নকশার মিল পাওয়া যায়।
ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, উক্ত ভবনটি কুয়েত গার্লস সেকেন্ডারি স্কুলের ভবন।
গুগল ম্যাপে যাচাই করে দেখা যায়, ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ও কুয়েত গার্লস সেকেন্ডারি স্কুলের দূরত্ব ২০০ মিটারের কাছাকাছি।
মূলত, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকার আল শিফা হাসপাতালকে ঘিরে আবারও অভিযান শুরু করে। পরবর্তীতে সেই অভিযানে আটককৃতদের দৃশ্য দাবিতে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিগুলো আল শিফা হাসপাতালের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ও তার পাশ্ববর্তী এলাকার প্রচারিত ছবিগুলো সম্প্রতি আল শিফা হাসপাতালে অভিযানের পূর্ব থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে।
সুতরাং, ভিন্ন ঘটনা এবং স্থানের দুইটি ছবিকে সম্প্রতি আল শিফা হাসপাতালে অভিযানে আটককৃতদের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তকর।
তথ্যসূত্র
- Gold Films- Instagram Post
- Directorate of Education, North Gaza- Facebook Post
- Rumor Scanner’s Own Analysis