Home Blog Page 531

বিপিএলে লিটন শুধু দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেই আমরা খুশি শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি নাফিসা কামাল

0

অন্তত পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) ফ্রেঞ্চাইজি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক নাফিসা কামাল দলটির ক্রিকেটার লিটন কুমার দাসের ফর্ম নিয়ে একটি মন্তব্য করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ দাবি করা হচ্ছে, নাফিসা কামাল বলেছেন, “লিটন ব্যাটিং বোলিং না কর‍তে পারলেও সমস্যা নাই, লিটন শুধু দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেই আমরা খুশি।”

লিটন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নাফিসা কামাল লিটনের খেলা প্রসঙ্গে এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে দাবিটির সূত্রপাতের খোঁজে ফেসবুকে ম্যানুয়াল ফিল্টার সার্চ করে আমরা দেখেছি, গত পহেলা ফেব্রুয়ারি একাধিক ট্রল পেজ থেকে উক্ত দাবিটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সেদিন এ সংক্রান্ত দুইটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

Screenshot: Facebook 

পরবর্তীতে উক্ত মন্তব্যটি নাফিসা কামালের বাস্তব মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে ভাইরাল হতে শুরু করে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যুগান্তর’ এর অনলাইন সংস্করণে গত ১৯ জানুয়ারি ‘লিটন কেন অধিনায়ক? প্রশ্নে যা বললেন নাফিসা কামাল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে লিটন কুমার দাসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক হওয়ার বিষয়ে নাফিসা কামালের বক্তব্য পাওয়া যায়।  নাফিসার  কাছে লিটনের অধিনায়কত্ব পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, “আমি এটা জানি না। এটি ভালো বলতে পারবে দলের কোচ।”

এছাড়াও ক্রিকেট বিষয়ক গণমাধ্যম ক্রিকফ্রেঞ্জির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ জানুয়ারি ‘লিটন কেন অধিনায়ক এটা আমি জানিনা, কোচ বলতে পারবেন- নাফিসা কামাল। জানালেন কেন চান বিপিএলের লভ্যাংশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত নাফিসা কামালের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: YouTube

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করেও নাফিসা কামালকে লিটন কুমার দাসের খেলা প্রসঙ্গে আলোচিত মন্তব্যটি করতে দেখা যায়নি। 

বিপিএল শুরুর আগে এবং বিপিএল চলাকালীন নাফিসা কামাল একাধিক গণমাধ্যমকে (, , ) সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। কিন্তু এ সকল সাক্ষাৎকারেও লিটনকে নিয়ে নাফিসা কামালকে আলোচিত মন্তব্যটি করতে দেখা যায়নি।

মূলত, গত ১৯ জানুয়ারি দেশের ফ্রেঞ্চাইজি ক্রিকেট লীগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর দশম আসর শুরু হয়েছে। এবারের বিপিএলে চার বারের শিরোপা জয়ী দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওপেনার লিটন কুমার দাস। তবে তিনি এখন পর্যন্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারছেন না। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ, গ্রুপ ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে “লিটন ব্যাটিং বোলিং না কর‍তে পারলেও সমস্যা নাই, লিটন শুধু দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেই আমরা খুশি” শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বিপিএল ফ্রেঞ্চাইজি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক নাফিসা কামালের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উক্ত বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, নাফিসা কামাল লিটন কুমার দাসের খেলা প্রসঙ্গে এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

সুতরাং, “লিটন ব্যাটিং বোলিং না কর‍তে পারলেও সমস্যা নাই, লিটন শুধু দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেই আমরা খুশি” শীর্ষক একটি মন্তব্যকে বিপিএল ফ্রেঞ্চাইজি ‘কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স’ এর মালিক নাফিসা কামালের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে একই দাবি সম্বলিত পোস্ট আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে একটি টিকটক পোস্টকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

ভিডিওটি ফিলিস্তিনে নামাজের সময় বোমা হামলার নয়

গত বছরের (২০২৩) ০৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল- আকসা ফ্লাড’ নামে হামলা শুরু করে। এই হামলা কেন্দ্র করে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হয়, যা এখনো চলছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি ফিলিস্তিনে নামাজের সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

নামাজের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি এ সংক্রান্ত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি দেখা হয়েছে ২০ লক্ষ বারেরও বেশি। ভিডিওটিতে ৬৭ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে এবং প্রায় ৮২০০ এর বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা হয়েছে।

একই ভিডিও একই দাবিতে টিকটকে দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল এই ভিডিওটি ফিলিস্তিনের নয় বরং আফগানিস্তানে ২০২১ সালে ঈদের নামাজের রকেট হামলার ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা Reuters এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২০ জুলাইয়ে “Rockets land in Kabul during Eid prayers” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের একটি অংশের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে ঈদুল আজহার নামাজের সময় রকেট হামলা হয়। তবে কে বা কারা এই হামলায় জড়িত তা জানা যায়নি।

ব্রিটিশ ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম BBC এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২০ জুলাইয়ে প্রকাশিত এক ভিডিও থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

মূলত, ২০২১ সালের জুলাই মাসে আফগানিস্তানে ঈদুল আজহার নামাজের সময় রকেট হামলা হয়। তখন এই তথ্যের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। তবে সম্প্রতি সেই রকেট হামলার ভিডিও ফিলিস্তিনে নামাজের সময় বোমা হামলা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে ঈদের নামাজের সময় রকেট হামলার ভিডিওকে  ফিলিস্তিনে নামাজের সময় বোমা হামলার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

তামিম ইকবাল লাইভে এসে ম্যাক্সওয়েলকে প্রতারক বলেননি

0

সম্প্রতি, বিপিএলে ফরচুন বরিশালের ক্রিকেটার তামিম ইকবাল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন দাবিতে এই ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দাবি করা হচ্ছে, লাইভে এসে তামিম বলেছেন, “ম্যাক্সওয়েলের মতো প্রতারক ব্যাটসম্যান আমাদের দরকার নেই।”

ম্যাক্সওয়েল

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি এই ভিডিওটি দেখা হয়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার বারেরও বেশি। ভিডিওটিতে ২১ হাজার একশত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

একই ভিডিও ফেসবুকে দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তামিম ইকবাল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে প্রতারক আখ্যা দিয়ে লাইভে এসে কোনো মন্তব্য করেননি বরং তামিমের ফেসবুক পেজে পূর্বে ভিন্ন ঘটনায় প্রকাশিত ভিডিওর ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওতে প্রচারিত আলোচিত দাবি নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত ক্লিপগুলোর বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ০১

অনুসন্ধানে তামিম ইকবালের ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের পহেলা সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, তামিম ইকবাল টি২০ বিশ্বকাপ ২০২১ না খেলার বিষয়ে কথা বলেন। তবে এই ভিডিওতে তিনি গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

ভিডিও যাচাই ০২

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে  তামিমের একই ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ১৪ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে তামিম ইকবাল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের প্রথমবার বিশ্বকাপে জয়ী হওয়ায় অভিনন্দন জানান।

মূলত, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তামিম ইকবাল তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ভিডিও প্রকাশ করে সে বছরের টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ না খেলার বিষয়ে কথা বলেন। এছাড়া, ২০২২ সালে তার ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের প্রথমবার বিশ্বকাপে জয়ী হওয়ায় অভিনন্দন জানান তিনি। সম্প্রতি, এই ভিডিও ক্লিপগুলো ব্যবহার করে সেগুলো ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে একত্র করে তামিম ইকবাল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে প্রতারক বলেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনায় তামিম ইকবালের ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে তিনি  গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে প্রতারক বলেছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা কাজী পেয়ারার উদ্ভাবক নন

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ড. বদরুদ্দোজা পেয়ারার একটি জাত উদ্ভাবন করেন, যা তার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে ‘কাজী পেয়ারা’। 

কাজী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রয়াত কৃষিবিজ্ঞানী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা কাজী পেয়ারার উদ্ভাবক নন বরং কাজী পেয়ারার উদ্ভাবন বা নামকরণের কোনো কিছুর সাথেই তার জড়িত না থাকার বিষয়টি এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই তাঁর জীবদ্দশায় নিশ্চিত করেছিলেন। 

মূলত, গত বছরের ৩০ আগস্ট মারা যাওয়া বাংলাদেশের প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী, কৃষি সংগঠন ও ন্যাশনাল ইমেরিটাস সাইন্টিস্ট ড. কাজী এম বদরুদ্দোজাকে কাজী পেয়ারার উদ্ভাবক দাবি করে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট নজরে এসেছে রিউমর স্ক্যানার টিমের। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা কাজী পেয়ারার জনক বা উদ্ভাবক ছিলেন না। ১৯৮৪ সালে কাজী পেয়ারার জাতটি আবিষ্কারের পর ড. কাজী এম বদরুদ্দোজার সম্মানার্থে তার নামানুসারে সে সময়ের বিজ্ঞানীরা কাজী পেয়ারার নামকরণ করেন। তিনি নিজেও জীবদ্দশায় এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও তথ্যটি গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার।

বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের ওপর হামলার নির্দেশ দিয়ে রুমিন ফারহানা বক্তব্য দেননি

গত বছরের ডিসেম্বরে ‘মেসেঞ্জারে রুমিন ফারহানাকে যে বার্তা পাঠালো তারেক জিয়া’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে রুমিন ফারহানাকে বলতে শোনা যায়, “বিএনপি-জামায়াতের কর্মীকে হাত-ঠ্যাং ভেঙে দেবেন আপনারা। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।”

রুমিন ফারহানা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের ওপর হামলা নির্দেশ দিয়ে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা কোনো বক্তব্য দেননি বরং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণার সময়ে কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দেওয়া ‘বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের কোনও প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে হাত-পা ভেঙে দেবেন’ শীর্ষক বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বিষয়টির বর্ণনা দিতে গিয়ে উক্ত কথাগুলো বলেন।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ভিডিওতে প্রদর্শিত রুমিন ফারহানার বক্তব্যে কিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। এছাড়াও, ভিডিওটি’র সাথে কয়েকটি ফানি ক্লিপও যুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া ভিডিওটির ওপরের অংশে ‘বাংলা পলিটিক্স’ শীর্ষক একটি লোগো রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে। 

Screenshot: Facebook

এই লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Bangla Politix নামক ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর “মেসেঞ্জারে রুমিন ফারহানাকে যে বার্তা পাঠালো তারেক জিয়া” শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত ভিডিওটি নিয়ে প্রকাশিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি একটি কমেডি পেজ। বিভিন্ন সময়ে এই পেজটি থেকে কমেডিধর্মী বিভিন্ন পোস্ট প্রচার করতে দেখা যায়।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, এই পেজটি থেকে আলোচিত ভিডিওটি প্রথমে প্রচার হয় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় তা আসল ভেবে ছড়িয়ে পড়ে।

পরবর্তীতে রুমিন ফারহানার বক্তব্যের মূল ভিডিওর খোঁজে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে Rumeen’s Voice নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘নির্বাচনের মাঠে আ. লীগের মাস্তানি; রাজ্জাক-কাদের পাল্টাপাল্টি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Rumeen’s Voice YouTube

ভিডিওটি’র ৭ মিনিট ২৫ সেকেন্ড থেকে ৭ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র রুমিন ফারহানার বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

মূল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে রুমিন ফারহানা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কৌশলের বিষয়ে আলোচনা করেন। উক্ত ভিডিওটিতে তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণার সময়ে কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দেওয়া একটি বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি দেশীয় মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত এমপি বাহারের বিএনপির নেতাকর্মীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে বলা এক বক্তব্যের সমালোচনা করেন। এসময় তিনি উক্ত প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান।

পরবর্তীতে বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে গত ১৯ ডিসেম্বর ‘বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের কোনও প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে হাত-পা ভেঙে দেবেন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Bangla Tribune

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা সদরের ৬ নম্বর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের এক উঠান বৈঠকে কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দেওয়া একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। উক্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট। বিএনপি নির্বাচনে হেরে যাবে বলে নির্বাচনে আসেনি। কোনও বিএনপি-জামায়াতের কর্মীকে কোনও প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে তার হাত-ঠ্যাং (পা) ভেঙে দেবেন আপনারা। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। কোনও ভয়ের কারণ নেই। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে যাবে কুমিল্লার মানুষ।

মূলত, ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর Rumeen’s Voice নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কৌশলের বিষয়ে আলোচনার একটি ভিডিও প্রচারিত হয়। উক্ত ভিডিওটিতে তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণার সময়ে কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দেওয়া একটি বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি এমপি বাহারের ‘বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের কোনও প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে হাত-পা ভেঙে দেবেন’ শীর্ষক বক্তব্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে উক্ত কথাগুলো বলেন। পরবর্তীতে উক্ত অংশটি কেটে তাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় “মেসেঞ্জারে রুমিন ফারহানাকে যে বার্তা পাঠালো তারেক জিয়া” শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে ভিডিওটি’র খণ্ডাংশ বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, রুমিন ফারহানা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে রুমিন ফারহানার বক্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি মিথ্যা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, এমপি বাহারের বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্যে বলা বক্তব্যের বিষয়ে সমালোচনা করে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার বক্তব্যের খণ্ডিত অংশকে বিএনপি জামাতের কর্মীদের হাত-ঠ্যাং ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে তার (রুমিন) মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এমপি মন্ত্রীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচার 

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২২২টি সংসদীয় আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তবে গত ১৮ জানুয়ারি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে “এমপি মন্ত্রীদের ভিসায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। নতুন নির্বাচনের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের। Political Analysis” শীর্ষক শিরোনাম এবং “এমপি মন্ত্রীদের ভিসায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নতুন নির্বাচনের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

ভিসা নিষেধাজ্ঞা

ইউটিউবে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবের লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৮৪ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় ২ হাজার ৩০০ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এমপি মন্ত্রীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় নির্বাচনের দাবিও করেনি বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করা হয়না। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন ঘটনার একাধিক ছবি ও একটি ভিডিও ক্লিপের সাথে বানোয়াট দাবি যুক্ত করে আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

দাবিগুলো নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ উক্ত ভিডিওতে কলাম লেখক ডঃ জাহেদ উর রহমান এর একটি ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়। কিন্তু ভিডিওর কোথাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এমপি মন্ত্রীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা কিংবা পুনরায় নির্বাচনের দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য বা দৃশ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ডঃ জাহেদ উর রহমানের ভিডিওটির অনুসন্ধানে ‘Zahed’s Take’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৮ জানুয়ারি ‘আমেরিকা ইউরোপ কি চলে গেল সরকারের পক্ষে? Zahed’s Take। জাহেদ উর রহমান। Zahed Ur Rahman’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটিই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

ভিডিওতে ডঃ জাহেদ উর রহমান যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গণমাধ্যম প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন পাঠ করে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। 

পরবর্তীতে দাবিতে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এমপি মন্ত্রীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে অনুসন্ধানে কালবেলার ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর  “বাংলাদেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা শুরু করেছে আমেরিকা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার ওইদিন এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন বলে জানা যায়। তবে উক্ত বিবৃতিতে কোনো ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। 

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশের বিষয়ে অনুসন্ধানে দৈনিক যুগান্তরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর “যে কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না যুক্তরাষ্ট্র” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কেন ভিসা নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয় না- এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেন, ভিসানীতির আওতায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা যাদের দেওয়া হবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হয় না। কারণ কাউকে ভিসা না দেওয়াসহ যে কোনো ভিসা রেকর্ড মার্কিন আইন অনুযায়ী গোপনীয় তথ্য। তিনি আরও বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ ভালোভাবে পর্যালোচনা করার পর আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

বর্তমান সরকারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সম্পর্কের বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

চিঠিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারত্বের পরবর্তী অধ্যায় শুরুর পর্বে আমি বলতে চাই, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ আরও অনেক ইস্যুতে আমাদের প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করার ঐকান্তিক ইচ্ছা আমি তুলে ধরছি।’

জো বাইডেন বলেছেন, ‘সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের দীর্ঘ ও সফল ইতিহাস রয়েছে। আর আমাদের এই সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে দুই দেশের জনগণের শক্তিশালী সম্পর্ক।’

জো বাইডেন তাঁর চিঠিতে আরো লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সমর্থন এবং একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের প্রতি তাদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র দেখেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বেশিরভাগ আসনেই জয়লাভ করেছে।

বিবৃতি তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলের হাজারো সদস্যদের গ্রেপ্তার ও নির্বাচনের অনিয়মের খবরে উদ্বিগ্ন। অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত যে, এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি এবং সব দল এতে অংশ না নেওয়ায় আমরা হতাশ।”

পরবর্তীতে, গত ১৮ জানুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের অবস্থান পুনব্যক্ত করে বলেন,বিরোধী রাজনৈতিক হাজারো নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে তাঁরা এখনো উদ্বিগ্ন। তাঁরা অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে এই মত পোষণ করেন যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় তাঁরা দুঃখিত। নির্বাচনের সময় ও পরবর্তী সময়ে সংঘটিত সহিংসতার নিন্দা জানান তাঁরা।

তবে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এসব বক্তব্য-বিবৃতির কোথাও নির্বাচন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পুনরায় নির্বাচনের দাবি কিংবা এমপি মন্ত্রীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি সম্বলিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

মূলত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তাদেরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে প্রচার হয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি “এমপি মন্ত্রীদের ভিসায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নতুন নির্বাচনের দাবি যুক্তরাষ্ট্রের” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে একাধিকবার দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন অবধি এমপি মন্ত্রীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো তথ্য বা তালিকা প্রকাশ করেনি। এছাড়া, পুনরায় নির্বাচনের দাবিও জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এমপি মন্ত্রীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং দেশটি কর্তৃক পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গ্রেনেড নিক্ষেপের ভিডিওটি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নয় 

0

সম্প্রতি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গ্রেনেড নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

মিয়ানমারে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ফেসবুকে সর্বাধিক ভাইরাল হওয়া এ সংক্রান্ত ভিডিওটি প্রায় ২০ লাখ ৯০ হাজারের বেশি বার দেখা হয়েছে। এছাড়া, ৮ হাজার দুইশো এর উপরে পৃথক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে রিয়েক্টশন দেওয়া হয়েছে ও ৪৪৫ বার ভিডিওটি শেয়ার এবং ১৫৩ টি মন্তব্য করা হয়েছে। পাশাপাশি, ভাইরাল পোস্টটির মন্তব্যঘর ঘুরে পোস্টটির দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গ্রেনেড নিক্ষেপের এই ভিডিওটি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নয় বরং ভিডিওটি ২০১৯ সালে চীনা সৈন্যদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গ্রেনেড নিক্ষেপের দৃশ্য। 

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভিয়েতনাম ভিত্তিক গণমাধ্যম VN Express এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের পহেলা আগস্ট “Chinese recruits almost died while practicing grenade throwing” (ইংরেজি অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটিতে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। সেই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, এক চীনা সৈনিকের গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময়কার দৃশ্য এটি। প্রশিক্ষণের সময় নিক্ষেপ করা গ্রেনেডটি প্রশিক্ষণার্থীর পাশে পড়ে যায়। কিন্তু অফিসার প্রশিক্ষণার্থীকে তাৎক্ষণিক নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

অর্থাৎ, গ্রেনেড নিক্ষেপ করার ভিডিও মিয়ানমারের নয়। 

মূলত, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষ দিক থেকে মিয়ানমারের তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী একজোট হয়ে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আবারও মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে জান্তা বাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়৷ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গ্রেনেড নিক্ষেপের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গ্রেনেড নিক্ষেপের এই ভিডিওটি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নয় বরং ভিডিওটি ২০১৯ সালে চীনা সৈন্যদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গ্রেনেড নিক্ষেপের দৃশ্য। 

সুতরাং, চীনা সৈনিকের  গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রশিক্ষণের পুরোনো ভিডিওকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গ্রেনেড নিক্ষেপের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনীর সাথে বিজিবির সংঘর্ষ ও সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের গুজব

0

সম্প্রতি, “সেনাবাহিনীর সাথে বিজিবির তুমুল সংঘর্ষ গদি হারালো হাসিনা” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সেনাবাহিনীর সাথে বিজিবির সংঘর্ষের কোনো ঘটনা কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদচ্যুত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আলোচিত ভিডিওটি’র শিরোনাম এবং থাম্বনেইলে উল্লেখিত দাবিগুলোর সাথে ভিডিওটি’র বিস্তারিত অংশের মিল পাওয়া যায়নি। 

ভিডিওতে প্রচারিত আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ATN News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৭ মে “বান্দরবানের রুমায় মিয়ানমার সীমান্তে ২ সেনা সদস্য নিহত | ATN News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের মে মাসে বান্দরবানের রুমায় কুকিচিন ন্যাশনাল আর্মির হামলায় দুই সেনাসদস্য নিহত হন। এছাড়াও গুরুতর আহত হন দুই সেনাকর্মকর্তা। এটি সেসময় সেই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন।

অর্থাৎ, ভিডিওটি পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার। 

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Jamuna TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি “হঠাৎই দেশে ঢুকে পড়লো মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ; ঘটনা কী? | Border Unrest | Myanmar Crisis | Jamuna TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ০৪ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের ছোঁড়া গুলিতে ২ বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। মিয়ানমারের ভেতরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমার বর্ডার পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০ জন বর্ডার পুলিশ সদস্য সীমান্তে বিজিবি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। এটি সেই ঘটনারই একটি ভিডিও প্রতিবেদন। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবির ভিডিওতে এই ক্লিপটি অপ্রাসঙ্গিকভাবে যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই-৩

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে NEWS 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি “বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা, বিজিবিকে সহযোগিতা করবে পুলিশ | Myanmar border | News24” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, গত ০৪ ফেব্রুয়ারি তুমব্রু সীমান্তে মায়ানমারের দিক থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন দুই বাংলাদেশি। এটি সেই ঘটনারই একটি ভিডিও প্রতিবেদন।

অর্থাৎ, এই ভিডিও ফুটেজটিও অপ্রাসঙ্গিকভাবে আলোচিত ভিডিওর সাথে জুড়ে দিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, ২০২৩ সালের মে মাসে বান্দরবানের রুমায় কুকিচিন ন্যাশনাল আর্মি(কেএনএফ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর টহলদলের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় দুই সেনাসদস্য নিহত ও গুরুতর আহত হন দুই সেনাকর্মকর্তা। এছাড়া গত ০৪ ফেব্রুয়ারি তুমব্রু সীমান্তে মায়ানমারের দিক থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন দুই বাংলাদেশি। এসব পৃথক ঘটনায় একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনের ফুটেজ যুক্ত করে সম্প্রতি ‘সেনাবাহিনীর সাথে বিজিবির তুমুল সংঘর্ষ, নিহত ২, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, সেনাবাহিনীর সাথে বিজিবির সংঘর্ষে ২ ব্যক্তি নিহত এবং শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফেরাউনের পাসপোর্ট দাবিতে আর্টওয়ার্কের ছবি প্রচার 

0

সম্প্রতি, “ফেরাউনের পাসপোর্ট। ১৯৭৪ সালে উন্নত মানের ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ফেরাউনের মমিকে ফ্রান্সে নেওয়ার প্রয়োজন হলে এর জন্য পাসপোর্ট এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এটাই ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন ব্যাক্তির পাসপোর্ট হিসেবে গণ্য করা হয়।” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি পাসপোর্টের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেরাউন বা দ্বিতীয় রামসেস এর পাসপোর্ট দাবিতে প্রচারিত পাসপোর্টটি আসল নয় বরং ছবিটি একজন শিল্পীর তৈরি ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক।

মূলত, আলোচিত পাসপোর্টের ছবি Heritage Daily নামক একটি ওয়েবসাইটে ২০২০ সালে আর্টওয়ার্ক হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তীতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে নির্মিত এই পাসপোর্টের ছবি ফেরাউনের প্রকৃত/আসল পাসপোর্ট দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই তথ্যে আলোচিত পাসপোর্টের ছবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

৮ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক তাকবির দিবস’ ঘোষণা করার দাবিটি ভিত্তিহীন

0

সম্প্রতি, “৮ ফেব্রুয়ারি” আন্তর্জাতিক তাকবির দিবস ঘোষণা” শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

তাকবির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট কিছু দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ৮ ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক তাকবীর দিবস” ঘোষণা করা হয়নি বরং কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কলেজ প্রাঙ্গণে কর্ণাটকের মাণ্ড্য কলেজের বাণিজ্য শাখার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুসকান খান হিজাব পরিহিত অবস্থায় স্কুলে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে গেলে তাকে কতিপয় যুবক বাধা দেয় এবং তাকে ঘিরে জয় শ্রী রাম স্লোগান দেয়া হয় কিন্তু এতে ভীত না হয়ে মুসকান ভেতরে প্রবেশ করেন এবং প্রতিবাদে ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেন। সেসময়তার এই সাহসিকতার ভিডিও দ্রুতই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৮ ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক তাকবীর দিবস” ঘোষণার দাবি উঠে। সেসময় কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবি বিবর্তিত হয়ে ৮ ফেব্রুয়ারিকে “আন্তর্জাতিক তাকবীর দিবস” ঘোষণা করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি সেই তথ্যটিই পুনরায় ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে অনুসন্ধানে উক্ত দাবির কোনোরূপ সত্যতা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উক্ত বিষয়টি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

হালনাগাদ/ Update

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে একই দাবি সম্বলিত ভিডিও আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে কতিপয় টিকটক পোস্টকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।