Home Blog Page 524

শেখ হাসিনা ভারতকে ৫০টি আসন দেওয়ার দাবিতে আল জাজিরা কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি  

সম্প্রতি, কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে শেখ হাসিনা ও ভারতকে জড়িয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফেসবুকের এ সংক্রান্ত ভিডিও সম্বলিত পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতকে ৫০টি আসন দিয়েছেন।  

হাসিনা

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতকে ৫০টি আসন দিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে আল জাজিরা কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়া ভিন্ন একটি ভিডিও এবং আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের এ সংক্রান্ত একটি মন্তব্য সম্বলিত ভিডিও সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিও যাচাই ০১

আলোচিত ভিডিওটির প্রথম ক্লিপে বিএনপি’র সহ- আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Rumeen’s Voice নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ ডিসেম্বর “’আমি ভারতের প্রার্থী’; নিক্সন ‘ন্যাংটা করে মান্দার গাছে তুলবেন’ জাফরুল্লাহকে”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে দেওয়া রুমিন ফারহানার বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা রুমিন ফারহানার বক্তব্যের মিল রয়েছে।  

উক্ত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান জেলার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসের সঙ্গে ফোনালাপে বলেন, আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ 

প্রফেসর আব্দুল মান্নানের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রুমিন ফারহানা বক্তব্য দেন। তবে, এখানে রুমিন ফারহানা আল-জাজিরার সংবাদ প্রতিবেদন বা ভারতকে শেখ হাসিনা ৫০ টি আসন দেওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি।

পরবর্তীতে দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

“আমি ভারতের প্রার্থী, হারার জন্য আসিনি”- শীর্ষক তথ্যে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম।  দেখুন- বিবিসি, দেশ রূপান্তর এবং দৈনিক জনকণ্ঠ। 

ভিডিও যাচাই ০২ 

একই ভিডিওতে আরেকটি ক্লিপে সাংবাদিক কনক সারওয়ার এবং আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরকে কথা বলতে দেখা যায়। জুলকারনাইন সায়েরকে বলতে শোনা যায়, 

বাংলাদেশে কী হবে, কোন সরকার আসবে, কোন বিরোধীদলকে কীভাবে কী করতে হবে এটার মূল ডিসিশন আসে নয়া দিল্লি থেকে। এবারের ইলেকশনে কমপক্ষে প্রায় ৪০ জনের মতো ক্যান্ডিডেটকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা সিলেক্ট করে দিয়েছে এবং এদের কাছ থেকে তারা টাকা পয়সাও নিচ্ছে। 

আমরা ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কনক সারওয়ারের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ১২ ডিসেম্বর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত মূল ভিডিওটি খুঁজে পেয়েছি। “৪০ জনকে এম.পি নমিনেশন দিয়েছে ভারতের RAW-জুলকারনাইন” শিরোনামের এই ভিডিওতে আল জাজিরার সাংবাদিককে ভারতের পক্ষ থেকে অন্তত ৪০ জনকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ঠিক করে দেওয়ার কথা বললেও তিনি আলোচিত দাবি অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতকে ৫০টি আসন দিয়েছেন শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি। এমনকি আল জাজিরা এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশ করেছে বলেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। 

অধিকতর নিশ্চয়তার জন্য শেখ হাসিনা কর্তৃক ভারতকে আসন দেওয়া সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন আল জাজিরা প্রকাশ করেছে কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে আল-জাজিরার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করে এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, আলোচিত ভিডিওটিতে উল্লেখ করা আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সম্প্রতি মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নানের একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়৷ ফোনালাপে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী। আমি এখানে হারার জন্য আসিনি।’ পরবর্তীতে এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে ফেসবুকের কিছু পোস্টে দাবি করা হয়,  শেখ হাসিনা ভারতকে ৫০টি আসন দেওয়ার দাবিতে আল জাজিরা সংবাদ প্রকাশ করেছে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয় বরং আল জাজিরা এমন কোনো সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। তবে সংবাদমাধ্যমটির সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের একটি ওয়েবিনারে বলেছেন, এবারের ইলেকশনে কমপক্ষে প্রায় ৪০ জনের মতো ক্যান্ডিডেটকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা সিলেক্ট করে দিয়েছে এবং এদের কাছ থেকে তারা টাকা পয়সাও নিচ্ছে। 

সুতরাং, শেখ হাসিনা ভারতকে ৫০টি আসন দেওয়ার দাবিতে আল জাজিরা  সংবাদ প্রকাশ করেছে শীর্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

এটি সালেহ আহমেদ তাকরিমের ক্রিকেট খেলার ভিডিও নয়

0

২০২২ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ‘৪২তম বাদশাহ আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায়’ নিজ বিভাগে তৃতীয় স্থান অর্জন করে আলোচনায় আসে হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। সম্প্রতি ‘সালেহ আহমেদ তাকরিম যখন ক্রিকেট খেলে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

গত ১১ ডিসেম্বর Milad Vai নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) এখন অবধি ৪ লক্ষ ৩৫ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে। ৪ হাজার ৮০০ রিয়্যাক্ট পাওয়া এই রিল ভিডিওটি শেয়ার করেছেন ৩০ জন মানুষ।

সালেহ আহমেদ

একই ভিডিও ফেসবুকের আরো দুইটি পোস্টে দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকের একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবের একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্রিকেট খেলার ভিডিওটি হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমের নয় বরং পাকিস্তানের ভিন্ন এক কিশোরের ক্রিকেট খেলার ভিডিওকে তাকরিমের ক্রিকেট খেলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Jabir Ahmad Orakzai নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৫ জুন প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook. 

পরবর্তীতে উক্ত পেজটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এটি পাকিস্তান ভিত্তিক একটি ফেসবুক পেজ। পেজটিতে ক্রিকেট খেলা নিয়ে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা হয়। একই ক্রিকেট মাঠের একাধিক ভিডিও (, , ) খুঁজে পাওয়া যায় পেজটিতে। 

গত ২১ মে পেজটিতে প্রকাশিত ক্রিকেট খেলার ভিন্ন একটি ভিডিওতে একই কিশোরকে লক্ষ্য করা যায়। পোশাক ও জুতার মিল দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় এটিই হাফেজ তাকরিম দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি। ভিডিওটির একাংশে তার চেহারাও দেখা যায়। 

Image Comparison: Rumor Scanner.

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও থেকে নেওয়া স্থিরচিত্রের সাথে হাফেজ তাকরিমের ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায় এটি হাফেজ তাকরিম নয়। 

Image Comparison: Rumor Scanner

বিস্তারিত অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকার ব্যক্তির নাম ও পরিচয় না জানা গেলেও এটি নিশ্চিত যে ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিটি তাকরিম নয়। 

মূলত, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত ‘৪২তম বাদশাহ আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায়’ নিজ বিভাগে তৃতীয় স্থান অর্জন করে আলোচনায় আসে হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। এছাড়া ২০২৩ সালের এপ্রিলে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন তাকরিম। সম্প্রতি তাকরিমের ক্রিকেট খেলার দৃশ্য দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত দাবির বিপরীতে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্রিকেট খেলার ভিডিওটি তাকরিমের নয়, ভিডিওটি পাকিস্তানের ভিন্ন এক ব্যক্তির। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো একাধিক গুজব শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। একত্রে সেসব ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন এখানে

সুতরাং, পাকিস্তানের ভিন্ন এক ব্যক্তির ক্রিকেট খেলার ভিডিওকে হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিমের ক্রিকেট খেলার ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার ভুয়া দাবি প্রচার

সম্প্রতি, জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলেন হাসিনা, ডক্টর ইউনুস তত্ত্বাবধায়ক সরকার শীর্ষক শিরোনাম এবং ডক্টর ইউনুসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা, জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলেন হাসিনা শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা পদত্যাগ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় দেড় হাজার একশত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূসকেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ০১

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ৮ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওটির শুরুতে দেশিয় বেসরকারি ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এটিএন নিউজ এর সংবাদ আয়োজন নিউজ বুলেট এর একটি প্রতিবেদন লক্ষ্য করা যায়।

Screenshot: Youtube

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া ATN News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর “অতীতের ভুলের জন্য ক্ষম চাইলেন প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ এর তফসিল ঘোষণা করার দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কাজ করতে গিয়ে আমার বা আমার সহকর্মীদেরও ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। আমার নিজের ও দলের পক্ষ থেকে যদি ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য দেশবাসী আপদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি’।

অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রীর ২০১৮ সালে নির্বাচনী তফসিলে দেওয়া বক্তব্য পদত্যাগ করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ০২

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে, IBTV Digital নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩০ ডিসেম্বর “সংলাপে বস্তে রাজি বিএনপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, আগামী ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে সংকট নিরসনে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হওয়ার প্রেক্ষিতে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি- জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্যের প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূসও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হননি। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ার ভিডিও এবং গত ৩০ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান কর্তৃক আগামী ৭ই জানুয়ারি নির্বাচন বন্ধ করে সংলাপে বসার কথা জানানোর সংবাদ একত্রে যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করেছেন এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

হ্যাকার হামজা বেনদেলাজ ডলার হ্যাক করে আফ্রিকা ও ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করেননি এবং এ কারণে তার ফাঁসিও হয়নি 

0

সম্প্রতি, “ফাঁসির দড়ি গলায় পড়ার পরেও এমন হাঁসি মুখে থাকা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই সেই হামজা বেনদেলাজ, যিনি ২১৭ টি ব্যাংক থেকে ৪০ কোটি ডলার হ্যাক করেন এবং আফ্রিকা ও ফিলিস্তিনে অনাহারে অর্ধাহারে মরে যাওয়ার উপক্রম মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দেন। আদালতে তাঁর ফাঁসির রায় হলে অবশেষে হাসি মুখে ফাঁসিতে ঝুলে পড়েন” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

হ্যাকার হামজা

ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হ্যাকিংয়ের দায়ে হামজা বেনদেলাজ এর ফাঁসি হয়নি বরং তার ১৫ বছরের জেল হয়েছিলো। 

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বৃটিশ সংবাদমাধ্যম BBC তে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারিতে ‘Algerian ‘bank hacker’ wanted by FBI held in Thailand’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য মার্কিন ব্যাংক থেকে মিলিয়ন ডলার চুরি করার সন্দেহে এফবিআই কর্তৃক অভিযুক্ত আলজেরিয়ান কম্পিউটার হ্যাকার হামজা বেনদেলাজকে ব্যাংককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থাই পুলিশ হামজা বেনদেলাজকে যখন জিজ্ঞাসা করেছিল যে তিনি এই অর্থ দিয়ে কী করেছেন, তখন হামজা বেনদেলাজ বলেছেন যে তিনি এই অর্থ ভ্রমণ এবং বিলাসবহুল জীবনের জন্য ব্যয় করেছেন, যেমন ফার্স্ট ক্লাস ফ্লাইটে ভ্রমণ, বিলাসবহুল জায়গায় থাকা ইত্যাদি।” 

এছাড়া, থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম Bangkok Post সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও তার গ্রেফতার এর বিষয়টি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই তথ্য পাওয়া যায়। 

মূলত, আলজেরিয়ান হ্যাকার এবং ক্ষতিকর স্পাইআই ম্যালওয়ারের বিকাশকারী হামজা বেনদেলাজকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার একটি আদালত ১৫ বছরের জেল দেয়। তবে সম্প্রতি হামজা বেনদেলাজ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আফ্রিকা ও ফিলিস্তিনে অনাহারে ও অর্ধাহারে মরে যাওয়ার উপক্রম মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দেন শীর্ষক একটি ভিত্তিহীন দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভিন্ন দুইটি ছবি যুক্ত করে একই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

এটি হযরত আদম (আঃ) এর কবর মোবারকের ছবি নয় 

0

সম্প্রতি ‘হযরত আদম (আঃ) এর কবর মোবারক’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

আদম (আঃ) এর কবর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি হযরত আদম (আঃ) কবর মোবারকের নয়। প্রকৃতপক্ষে ওমানে অবস্থিত হযরত ইমরান এর কবর মোবারকের ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে Malik Naveed Awan নামের এক্স একাউন্টে (সাবেক টুইটার) ২০১৭ সালের ১১ মার্চে “Nabi Imran A.S tomb” শিরোনামে প্রকাশিত একটি টুইট থেকে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে গুগল ম্যাপস-এ কবরটির অবস্থান নিশ্চিতের পাশাপাশি ট্রাভেল কোম্পানি ‘ট্রিপ এডভাইজর’ এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। 

মূলত, আলোচিত কবরটি হযরত ইমরান এর যেটি ওমানের সালালাহ শহরে অবস্থিত। সাম্প্রতিক সময়ে হযরত ইমরান এর কবর মোবারকের আলোচিত ছবিকেই হযরত আদম (আঃ) এর কবর মোবারক দাবিতে ইন্টানেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ছবিটি হযরত আদম (আঃ) এর কবর মোবারক দাবি করা হলে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার গুজব

সম্প্রতি, “ নতুন করে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।। Bangladesh Election Update News।। BnP News Update” শীর্ষক শিরোনাম এবং “নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বাতিল হলো” শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল হয়নি এবং প্রধানমন্ত্রীও নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দেননি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরনো কয়েকটি ভিডিও এবং ছবি যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন যেখানে ভিডিওটির শুরুতেই একটি সংবাদ প্রতিবেদনের খণ্ডাংশ এবং কয়েকটি পুরনো ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে কয়েকটি ভিডিও দেখানো হয়। 

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে সেই নির্বাচনে সরকার গঠনের পর সেই সরকার ভেঙ্গে দিয়ে আবার সুষ্ঠু নির্বাচন করবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কথাটি বলেছেন। এখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে হবে কারন তিনি এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেছেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৭ জানুয়ারি যেন নির্বাচন না হয় সেই লক্ষ্যেই কাজ করছেন৷ সুতরাং ৭ তারিখ নির্বাচন না হওয়ার কিন্তু জোর দাবি রয়েছে..।”

সংবাদপাঠ অংশে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবিটি’র সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

প্রথম ও দ্বিতীয় ভিডিও যাচাই 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত প্রথম দুইটি ভিডিও ক্লিপই গত ২৮ ডিসেম্বর আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে আন্দোলনে থাকা বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর নির্বাচন বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলের বৈঠকের ঘটনায় এটিএন নিউজ ও কালবেলা’য় (,) প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে নেওয়া।

Video Comparison : Rumor Scanner 
Video Comparison : Rumor Scanner 

তৃতীয় ভিডিও যাচাই 

আলোচিত ভিডিওতে দেখানো তৃতীয় ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৯ ডিসেম্বর “বিএনপির রাজনীতি করার অধিকার বাংলাদেশে নেই :প্রধানমন্ত্রী। Sheikh Hasina । Barisal । Election 2024” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশকে আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison : Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনে গত ২৯ ডিসেম্বর বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

সর্বশেষ আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিও যুক্ত করা হয়। ভিডিওটির অনুসন্ধানে Surma Times নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ “শীঘ্রই আরও একটি নির্বাচন হবে। Sheikh Hasina।  Hasina Talks about Election” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর গণভবনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের খণ্ডাংশ বর্তমানে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোচিত দাবিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

এছাড়া, একটি দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরবর্তীতে যদি নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয় অর্থাৎ পূর্ব ঘোষিত তারিখে যদি নির্বাচন না হয় তাহলে সে বিষয়গুলো নিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ হওয়া স্বাভাবিক। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বাতিল কিংবা নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পায়নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে প্রচারিত দাবিগুলো মিথ্যা। 

মূলত, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে দফায় দফায় কর্মসূচি ঘোষণা করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে দলটি। অপরদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ উপলক্ষে ক্লান্তিহীন প্রচারণা চালাচ্ছে স্বতন্ত্র, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের মনোনীত প্রার্থীরা। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছে ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচন – বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল। উক্ত বৈঠকে আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন দলগুলো। এরই মধ্যে উক্ত ঘটনার একাধিক ভিডিও যুক্ত করে “ নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী ৭ তারিখ নির্বাচন বাতিল ” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও একাধিক ছবি ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি রোববার ভোটগ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষনে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নতুন নির্বাচনের ঘোষণা এবং আগামী ৭ তারিখ অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়গুলো মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি’র বৈঠক এবং ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে গুজব 

সম্প্রতি, ড.ইউনুসকে তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে বিএনপি’র বৈঠক, ৭ জানুয়ারিতে নির্বাচন করবে বিএনপি– শীর্ষক শিরোনামে এবং থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি বৈঠক করেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বিএনপি। 

ডক্টর ইউনূসকে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি কোনো বৈঠক করেনি এবং আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে বলে কোনো ঘোষণা দেয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, শুরুতে একটি সংবাদ প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে। এছাড়া, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আয়োজিত কারারুদ্ধ বাংলাদেশ, ডামি নির্বাচনের ফাঁদ ও ভোটাধিকার– শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তাদের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও দেখানো হয়। 

ভিডিও যাচাই- ১

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে একটি সংবাদ প্রতিবেদন দেখানো হয়। প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় “IBTV USA” শীর্ষক একটি লোগো রয়েছে। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে IBTV USA নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩০ ডিসেম্বর “সংলাপ হলে বসতে রাজি বিএনপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা সংবাদ প্রতিবেদনটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ৭ তারিখ অনেক দূরে আছে…আপনারা ভাবুন, চিন্তা করুন, আলোচনায় বসুন, সংলাপ করুন। এই হিংসাত্মক সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন। আপানাদের অনুরোধ এই কারণে যে, আপনারা সরকারে আছেন, কাজেই মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে দায়িত্ব সেটা কিন্তু সরকারের ওপর বর্তায়।

অর্থাৎ, উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি’র বৈঠক এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি’র অংশগ্রহণ করবে এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

ভিডিও যাচাই- ২

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে গণঅধিকার পরিষদের ব্যানারে দুই বক্তাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায় এবং ভিডিওতে BV71 শীর্ষক একটি লিখা দেখা যায়। এই BV71 এর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে BV71 নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩০ ডিসেম্বর “তোলপাড় শুরু! ড. ইউনূস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে যাচ্ছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে বক্তব্যদের দেওয়া বক্তব্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, শুরুতে বক্তা ডক্টর ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বক্তব্যে ডক্টর ইউনূসকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া, ৩৪ সেকেন্ড থেকে এক বক্তা বক্তব্য দেন। তিনি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দেওয়া ইস্তেহার নিয়ে সমালোচনা করেন। 

অর্থাৎ, এখানের দুই বক্তার কেউই ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি’র বৈঠক এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি’র অংশগ্রহণ করবে এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। 

ভিডিও যাচাই- ৩

আলোচিত ভিডিওটির এই অংশে গণঅধিকার পরিষদের ব্যানারে বক্তাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Ariful Islam নাম একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩০ ডিসেম্বর “কারারুদ্ধ বাংলাদেশ, ডামি নির্বাচনের ফাঁদ ও ভোটাধিকার- শীর্ষক আলোচনা সভা”- ক্যাপশনে একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। (আর্কাইভ)

উক্ত লাইভ ভিডিওটির শুরুর ৫ মিনিটের পর থেকে বক্তার দেওয়া বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা বক্তার বক্তব্যের মিল রয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

১৮ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ৫ মিনিটের পর থেকে বক্তা বর্তমান সরকার নিয়ে সমালোচনা করছেন এবং আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ভোট বর্জনের আহবান জানান। 

অর্থাৎ, এখানেও ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি’র বৈঠক এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি’র অংশগ্রহণ করবে এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি’র বৈঠক করার এবং আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বিএনপি শীর্ষক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। তবে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এসব ঘটনায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় “ড.ইউনুসকে তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে বিএনপি’র বৈঠক, ৭ জানুয়ারিতে নির্বাচন করবে বিএনপি” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে থাকা দাবিগুলো সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায়  ভিন্ন ঘটনার সংবাদ প্রতিবেদন এবং গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় ভিন্ন বিষয় নিয়ে নেতাদের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ডক্টর ইউনূসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দিতে বিএনপি’র বৈঠক এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে প্রচারিত দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আসন্ন নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য হচ্ছেনা শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি সিইসি

সম্প্রতি, ব্রেকিং নিউজ হিসেবে জানিয়ে ফেসবুকের কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য হচ্ছেনা। এর দায় শুধু নির্বাচন কমিশন নিবেনা, সরকারকেও নিতে হবে।

আসন্ন নির্বাচন

উক্ত দাবি উল্লেখ করে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিইসি হাবিবুল আউয়াল এই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য হচ্ছেনা শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং তিনি বলেছেন, যদি নির্বাচন অনিরপেক্ষ হয় বা নির্বাচন যদি খুব বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় সরকারের ওপরও সে দায় পড়বে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা’র ওয়েবসাইটে গত ১৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি খুঁজে পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটিকে দেওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সাক্ষাৎকারের ভিডিওটিও সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৩০ মিনিটের ভিডিওটি গত ১৭ ডিসেম্বর ধারণ করা হয়৷ 

Screenshot: VOA Bangla

আমরা পুরো ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি। ২৩ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় থেকে দেখা যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারি শতরূপা বড়ুয়া সিইসিকে জিজ্ঞেস করেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে পদত্যাগ করবেন কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে জনাব হাবিবুল আউয়াল বলেন, এসব ব্যাপারে আমি কোনো জবাব দেবো না৷ এটা খুব সঙ্গত প্রশ্ন নয়। আমরা আমাদের দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করে যাব। আমরা আশাবাদী সকলের প্রচেষ্টায় যে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে এই প্রত্যাশা আমাদের নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সেই চেষ্টাটা সেই প্রয়াস থাকবে। একইসাথে আমরা ঘুরে ঘুরে এই মেসেজটা দিয়ে যাচ্ছি, নির্বাচনটাকে যারা প্রত্যক্ষভাবে পরিচালনা করবেন তারা যেন দায়িত্বের সাথে এই দায়িত্বটা পালন করবেন। হ্যাঁ, তারা যদি দায়িত্বটা পালন না করার কারণে অনিয়ম হয়, তার কিছুটা দায়ভার তো আমাদের ওপর এসে পড়বে। কিন্তু সার্বিকভাবে বা এককভাবে নির্বাচন কমিশনকে দায়বদ্ধ করা যাবে না। এখানে সরকার একটা বড় জিনিস। সরকারের ওপর আমাদের অনেকাংশে নির্ভর করতে হচ্ছে। সরকারের যে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং তা বারংবার ব্যক্ত করা হয়েছে যে এবারের নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে। আমি বলছি না, এটা সরকারের কথা। আমাদের আইনে রয়েছে, সরকার আমাদের সহায়তা দিতে হবে এবং সরকারের এই সহায়তার মধ্যে আন্তরিকতা, সদিচ্ছা থাকতে হবে।.. 

একই প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, যদি নির্বাচন অনিরপেক্ষ হয় বা নির্বাচন যদি খুব বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় সরকারের ওপরও সে দায় পড়বে। সেজন্য এবার সরকার খুবই সচেতন। আমরাও সরকারের ওপর সে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছি।  

আমরা সিইসির পুরো সাক্ষাৎকারে আসন্ন নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য হচ্ছেনা শীর্ষক কোনো মন্তব্যের উল্লেখ পাইনি। তবে ছড়িয়ে পড়া এ সংক্রান্ত দাবিতে “এর দায় শুধু নির্বাচন কমিশন নিবেনা, সরকারকেও নিতে হবে।” শীর্ষক মন্তব্যের অস্তিত্ব পেয়েছি এভাবে যে, যদি নির্বাচন অনিরপেক্ষ হয় বা নির্বাচন যদি খুব বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় সরকারের ওপরও সে দায় পড়বে। 

মূলত, গত ১৭ ডিসেম্বর ভয়েস অফ আমেরিকাকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সাক্ষাৎকার দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সাক্ষাৎকার তিনি বলেন, যদি নির্বাচন অনিরপেক্ষ হয় বা নির্বাচন যদি খুব বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় সরকারের ওপরও সে দায় পড়বে। সিইসির এই বক্তব্যকে “এ নির্বাচন প্রতিদ্বন্তিতামূলক ও গ্রহনযোগ্য হচ্ছেনা. এ দায় শুধু নির্বাচন কমিশন নিবেনা” শীর্ষক মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম সিইসির পুরো সাক্ষাৎকার পর্যবেক্ষণ করে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পায়নি। 

সুতরাং, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ভয়েস অফ আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে “আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য হচ্ছেনা। এর দায় শুধু নির্বাচন কমিশন নিবেনা, সরকারকেও নিতে হবে।” শীর্ষক মন্তব্য করার দাবিটি বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সংসদ নির্বাচন স্থগিতের গুজব ইউটিউবে

গত ৩০ ডিসেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র নির্বাচন স্থগিত করলো রাষ্ট্রপতি, পুনরায় তফসিল ঘোষণা নির্দেশ  দিলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র রাষ্ট্রপতির নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করলো প্রধান নির্বাচন কমিশন’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির নির্দেশে

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৩১ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় দেড় হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।

পরবর্তীতে এই ভিডিওটি আরও একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। সেটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ছবি ও ভিডিও ক্লিপ নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন। উক্ত ভিডিওটিতে কোথাও রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক নির্বাচন স্থগিত করার কোনো দৃশ্য দেখানো হয়নি।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “অবশেষে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন স্থগিত করলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণের মাধ্যমে পুনরায় তফসিল ঘোষণার কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এদিকে নির্বাচন স্থগিত করায় বিপদে পড়লো আওয়ামী লীগ সরকার।”

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে একাধিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধান করেও উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠ এর অনলাইন সংস্করণে চলতি বছরের ১১ মার্চ ‘ইসি সব সময় ইভিএমে নির্বাচন করার পক্ষে : সিইসি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের একটি ছবির মিল পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘সময় টিভি’র ওয়েবসাইটে গত ৪ নভেম্বর ‘নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দলের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করে কমিশন: সিইসি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের অপর একটি ছবির মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, উক্ত ছবিটি’র সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণার তথ্যটি সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জড়িয়ে বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রচারিত হয়ে আসছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩০ ডিসেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র নির্বাচন স্থগিত করলো রাষ্ট্রপতি, পুনরায় তফসিল ঘোষণা নির্দেশ দিলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র রাষ্ট্রপতির নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করলো প্রধান নির্বাচন কমিশন’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত করার তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে গ্রেফতারের গুজব

সম্প্রতি, “আজ মধ্য রাত থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী মাঠে নেমেই জিএম কাদেরকে গ্রেফতার Bd latest news today” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

 জি এম কাদের

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হননি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সংবাদপাঠের ভিডিওর খণ্ডাংশ এবং ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই-১

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Jamuna TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর “‘নির্বাচনে সেনাবাহিনী নামানোর সাথে রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই’ | Home Minister | Election | Jamuna TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৯ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে মাঠে নেমেছে বিজিবি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের বরাত দিয়ে উক্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়, নির্বাচনে সেনাবাহিনী নামানোর সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই-২

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Jamuna TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর “এতদিন কেন গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেননি, জানালেন জি এম কাদের | GM KAder Campaign | Jamuna TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের জানিয়েছেন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার শর্তে নির্বাচনে এসেছে জাতীয় পার্টি। নির্বাচন সুষ্ঠ না হলে ভোট বর্জন করবে তার দল।

ভিডিও যাচাই-৩

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Ekattor TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর “জিএম কাদের আর লাঙ্গলের হাত থেকে ভোটাররা মুক্তি চায়’ | Third Gender Candidate | News | Ekattor TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী জি এম কাদেরের প্রতিপক্ষ হিসেবে এবার নির্বাচনে লড়ছেন তৃতীয় লিঙ্গের এক প্রার্থী।

ভিডিও যাচাই-৪

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Dr. Fayzul Huq Voice এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর “তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী রানীর কাছে হারের আশংকায় জিএম কাদের! পারবে কি রানীকে হারাতে জিএম কাদের!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison By Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে, ভিডিওর আলোচক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও তৃতীয় লিঙ্গের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, ভিডিওগুলো অপ্রাসঙ্গিকভাবে আলোচিত ভিডিওর সাথে জুড়ে দিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে সেনাবাহিনীর হাতে জি এম কাদেরের গ্রেফতারের দাবির সত্যতা জানা যায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে সশস্ত্র বাহিনী। নির্বাচনের মাঠে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে “আজ মধ্য রাত থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী মাঠে নেমেই জিএম কাদেরকে গ্রেফতার” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ভিডিওর খণ্ডাংশ যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবির ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাবসহ সব বাহিনী ২৯ ডিসেম্বর মাঠে নামবে। তারা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিন দায়িত্ব পালন করবে।

সুতরাং, সেনাবাহিনীর হাতে জি এম কাদের গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র