সম্প্রতি, দেশের আত্মনির্ভরশীল ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান Association for Social Advancement (আশা)’তে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে দাবিতে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হচ্ছে, সংস্থাটি ট্রেইনি হিসাবরক্ষক পদে ৫৪৭ জন এবং ফিল্ড অফিসার পদে ৭৩৩ জন নিয়োগ দিচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেসরকারি সংস্থা আশা ট্রেইনি হিসাবরক্ষক এবং ফিল্ড অফিসার পদে নিয়োগের জন্য সম্প্রতি এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি বরং এনজিওটির নাম ও লোগো ব্যবহার করে প্রচারিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিকে সংস্থাটির পক্ষ থেকে ভুয়া বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে বেসরকারি সংস্থা আশা’র নাম ও লোগো সম্বলিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত সূত্র ধরে আশা’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর তারিখে সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এমন কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে আশা’র ফেসবুক পেজে ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি সতর্কীকরণ পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির একটি ছবি প্রকাশ করে আশা তাদের ফেসবুক পোস্টে জানায়, “কিছু অসাধু লোক ও চক্র আশার নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কুটকৌশলে অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করে সাধারণ মানুষদের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। সংযুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞাপ্তটি যার একটি অংশমাত্র। এদের প্রতারণার ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য সর্বসাধারণকে সতর্ক করা যাচ্ছে।”
মূলত, দেশীয় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) আশা’র নাম ও লোগো ব্যবহার করে সংস্থাটিতে ট্রেইনি হিসাবরক্ষক এবং ফিল্ড অফিসার পদে কর্মী নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। আশা সম্প্রতি এরূপ কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি বলে সংস্থাটি তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এক সতর্কীকরণ পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ইন্টারনেটে বেসরকারি সংস্থা আশা’র নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, “আশা’য় কর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি” শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।
সম্প্রতি, এই মাত্র জামায়াত নেতা গ্রেফতার, ঢাকা ঘিরে ফেলছে জামাত শিবির মিনি কেয়ামত শুরু– শীর্ষক শিরোনামে এবং এই মাত্র জামায়াত নেতা ডক্টর মাসুদ গ্রেফতার, ঢাকা ঘিরে ফেলছে জামাত মিনি কেয়ামত শুরু– শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার করা হয়নি বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একজন লাইভ ভিডিও এটি। ভিডিওটিতে দেখা যা পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া লাইভ করা ব্যক্তির ভাষ্যমতে ঘটনাটি গত ০৫ জানুয়ারি বায়তুল মোকাররম এলাকার ঘটনা।
ভিডিও যাচাই
আলোচিত ভিডিওটিতে পুলিশ কর্তৃক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে দেখা যায়। ভিডিওতে উপস্থাপকের ভাষ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Musfiq R. Islam নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ০৫ জানুয়ারি “বায়ুতল মোকাররম থেকে সরাসরি ৫ জানুয়ারী ২০২৪ শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের প্রতিবাদ মিছিলে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা এবং অনেক নেতা করমি গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটিতে পুলিশ কর্তৃক একজনকে গ্রেফতার করতে দেখা যায়। যার সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির চেহারার হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison: Rumor Scanner
এছাড়া, Alokito protidin নামক একটি ফেসবুক পেজে একই তারিখে “বাইতুল মোকাররম মসজিদের আশপাশে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি। চারদিকে থমথমে অবস্থা, জনমনে আ_শং_কা। কি জানি কি হয়!!” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটিতেও আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা ব্যক্তিকেই গ্রেফতার হতে দেখা যায়।
তবে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির সাথে জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের চেহারার কোনো মিল নেই।
Image Comparison: Rumor Scanner
পাশাপাশি, দৈনিক ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলে ০৫ জানুয়ারি “বায়তুল মোকাররম থেকে তিনজন আটক” শীর্ষক শিরোনামে একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটি থেকে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে সেদিন জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার হননি। তবে তিনজন মুসুল্লিকে আটক করেছে পুলিশ।
মানবজমিনের ওয়েবসাইটে ০৬ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও তিনজন মুসুল্লি আটকের তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার হওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
এরপর, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ সাম্প্রতিক সময়ে গ্রেফতার হয়েছেন কি না সে বিষয় অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক মাধ্যমের বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তার গ্রেফতার হওয়ার দাবির একদিন পর অর্থাৎ ০৬ জানুয়ারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছেনে।
Screenshot: Dr. Md. Shafiul Islam Masud Facebook Post
মূলত, গত ০৫ জানুয়ারি জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে কিছুসংখ্যক মুসল্লি সরকারবিরোধী বক্তব্য ও ৭ তারিখের নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে উপস্থিত অনলাইন গণমাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করেন। ঐ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিন ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে উক্ত ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করা হয়, ঐ স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনাস্থলে জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ উপস্থিতই ছিলেন না এবং তাকে গ্রেফতারও করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ব্যক্তি গ্রেফতার হওয়ার ভিডিওতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, জামায়াতে ইসলামীর নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের একটি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের ভিডিওটি কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের নয় বরং ভিডিওটি কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালটের।
ভিডিওটির সত্যতা জানতে ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনলাইন পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ এ গত ৭ জানুয়ারি “চান্দিনায় তিন কেন্দ্রে নৌকায় সিল মারা ব্যালট জব্দ, পরে বাতিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে সাথে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৭ আসনের চান্দিনা উপজেলায় তিনটি ভোটকেন্দ্রে আগে থেকে নৌকায় সিল মারা ব্যালট জব্দ করা হয়। গত ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয়, মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে এসব ব্যালট জব্দ করা হয়।
জাতীয় দৈনিক দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ড এ গত ৭ জানুয়ারি “কুমিল্লার একাধিক কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের সিল মারা ব্যালট জব্দ, পরে বাতিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
Indication by Rumor Scanner
এছাড়া আসন দুইটির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক যাচাই করে ভাইরাল ভিডিওর ব্যালটে থাকা প্রতীকের সাথে কুমিল্লা-৭ আসনের প্রার্থীদের প্রতীকের হুবহু মিল এবং কুমিল্লা-১১ আসনের প্রার্থীদের প্রতীকের অমিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন- ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ব্যালটে গাছমা, মাছ, একতারা ও ডাব প্রতীকের ছবি দেখা গেলেও কুমিল্লা-১১ আসনের প্রার্থীদের এই প্রতীকগুলো ছিল না।
Comparison by Rumor Scanner
মূলত, গত ৭ জানুয়ারি সারাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট চলাকালে কয়েকটি আসনের বেশকয়েকটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারার অভিযোগ উঠে এবং নৌকায় সিল মারার ঘটনায় কয়েকটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। গণমাধ্যম সূত্রে কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের অন্তত তিনটি কেন্দ্রে নৌকার সিল মারা ব্যালটের অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায় এবং উক্ত ব্যালটগুলো বাতিল হওয়া কথা জানানো হয়। তবে কুমিল্লা-৭ আসনের একটি কেন্দ্রের নৌকায় সিল মারা ব্যালটের একটি ভিডিও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের ভোট জালিয়াতির প্রমাণের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।
প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারি দুপুরে ভোট চলাকালে কেন্দ্র দখল, জাল ভোট দেওয়া, এজেন্টদের জোরপূর্বক কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কুমিল্লা- ১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফুলকপি প্রতীকের মো. মিজানুর রহমান এবং কুমিল্লা- ৭ (চান্দিনা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের মুনতাকিম আশরাফ টিটু।
সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে ভোট কেন্দ্রে নৌকায় সিল মারা ব্যালটের ভিডিও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজারবার দেখা হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ০৫ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ মিলেনি। এছাড়া এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশকে হাতেনাতে ধরার দাবিটিও বানোয়াট বরং বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আইজিপির দেওয়া একটি বক্তব্য এবং আইজিপির দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজের একটি সমালোচনামূলক বক্তব্যের ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই-১
আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে কয়েকজনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায় এবং ভিডিওটিতে বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভি’র লোগো দেখা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে সময় টিভি’র ফেসবুক পেজে গত ০৫ জানুয়ারি “ভেতরে বাচ্চা আছে বলা যুবকও ট্রেন থেকে বের হতে পারেননি” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, গত ০৫ জানুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিডিও এটি।
অর্থাৎ, এখানে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে পুলিশের আগুন দেওয়া বা সেনাবাহিনী পুলিশকে হাতেনাতে ধরার দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
ভিডিও যাচাই- ২
এই অংশে একজন সাংবাদিককে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লাইভ করতে দেখা যায়। সেই লাইভে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য নেওয়া হয় এবং ভিডিওটিতে বেসরকারি টেলিভিশন দেশ টিভি’র লোগো দেখা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দেশ টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ জানুয়ারি “স্ত্রী-সন্তানের জন্য টান দিয়েও বের করা যায়নি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটিও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লাইভ দেশ টিভি ঘটনাস্থল থেকে লাইভ সম্প্রচার করে। সেই লাইভ করার সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যের ভিডিও এটি।
অর্থাৎ, এখানেও আলোচিত দাবিগুলো নিয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
ভিডিও যাচাই- ৩
এই অংশে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল আল-মামুনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায় এবং চ্যানেল ২৪ এর লোগোও লক্ষ্য করা যায়। সেই লোগো’র সূত্র ধরে অনুসন্ধানে চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ জানুয়ারি “নির্বাচন ঘিরে বিএনপির সকল পরিকল্পনা আমরা জেনে গেছি” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ০৫ জানুয়ারি দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে এক বিফ্রিংয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল আল-মামুনের দেওয়া একটি বক্তব্যের ভিডিও এটি।
তবে, বক্তব্যে আইজিপি চৌধুরী আব্দুল আল-মামুন আলোচিত দাবিগুলো সম্পর্কিত কোনো তথ্য উল্লেখ করেননি বা এ-সংক্রান্ত কোনো কথাও বলেননি।
ভিডিও যাচাই- ৪
এই অংশে সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে Voice Bangla নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৬ জানুয়ারি “বিএনপির নাম ধরে আইজিপি ভয়*ঙ্কর ইঙ্গিত দিলেন” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ০৫ জানুয়ারি আইজিপি’র দেওয়া একটি বক্তব্যের সমালোচনা করা তিনি একটি বক্তব্য দেন। এছাড়া ভিডিওটিতে দৈনিক সমকাল এর ওয়েবসাইটে ০৫ জানুয়ারি “বিএনপির পরিকল্পনা জেনে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: আইজিপি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাঠ করতেও শোনা যায়।
পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো গ্রহণযোগ্য সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ০৫ জানুয়ারি রাত ৯ টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে লাইভ সম্প্রচার করে সময় টিভি এবং দেশ টিভি। এছাড়া, গত ০৫ জানুয়ারি আইজিপির দেওয়া একটি বক্তব্য প্রচার করে চ্যানেল ২৪ এবং আইজিপির দেওয়া বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা করে একটি বক্তব্য দেন সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওগুলোথেকে কিছু অংশ কেটে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিডিওগুলো যুক্ত করে “ট্রেনে আগুন লাগিয়ে ধরা খেল পুলিশ, হাতেনাতে ধরলো সেনাবাহিনী” শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, বেনোপাল ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, পুলিশ কর্তৃক ট্রেনে আগুন দেওয়া এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক হাতেনাতে পুলিশকে আটক করা হয়েছে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।
গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম হেরে যান। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে যাতে মমতাজকে কান্না করতে দেখা যাচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, নির্বাচনে হারার পর মমতাজের কান্নার দৃশ্য এটি।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মমতাজ বেগমের কান্নার ভিডিওটি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হারার পরবর্তী সময়ের নয় বরং এটি গত ০৪ জানুয়ারি নির্বাচনী প্রচারণায়র সময়ের ঘটনা।
প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘সাহসী কণ্ঠ নিউজ’ নামক ফেসবুক পেজে গত ৫ জানুয়ারি একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Comparison: Rumor Scanner
ভিডিও থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার শেষ দিনে মমতাজ বেগম প্রচারণার সময় পিতা-মাতার কথা স্মরণ করে কান্না করেন।
পরবর্তীতে মমতাজ বেগম এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ০৪ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত মূল লাইভ ভিডিও থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
অর্থাৎ, এটি নির্বাচনের পূর্বের দৃশ্য।
মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গেছেন মমতাজ বেগম। তিনি হেরে যাওয়ার পর একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হচ্ছে, হেরে গিয়ে তার কান্না করার দৃশ্য এটি। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় ভিডিওটি নির্বাচন পরবর্তী সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি গত ০৪ জানুয়ারি মমতাজ বেগমের নির্বাচনী প্রচারণার সময়ের দৃশ্য।
উল্লেখ্য, নির্বাচনে হারার পর মমতাজ বেগম গত ৯ জানুয়ারি বক্তব্য রাখেন এবং সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা জানান।
সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে মমতাজ বেগম হেরে কান্না করছেন দাবিতে নির্বাচনের পূর্বে প্রচারণায় গিয়ে তার কান্না করার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি ‘শপথ বর্জনের চিঠি দিল জাতীয় পার্টি চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত পূনরায় নির্বাচন দিবে সিইসি’ শীর্ষক থাম্বনেইল এবং প্রায় সমজাতীয় শিরোনামে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ অনুষ্ঠান বর্জন করে চিঠি দেয়নি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালও পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়নি। বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ঘটনার ভিডিও এবং একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সমন্বয় করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ব্যবহার করে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটিতে সময় টিভির একটি প্রতিবেদন, এনটিভিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ড. ফয়জুল হক এবং কতিপয় আন্দোলনকারীর বক্তব্য প্রদানের ভিডিও দেখানো হয়। যার কোনোটিতেই শপথ বর্জনের জন্যে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া কিংবা সিইসির পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবির বিষয়ে কিছু বলতে দেখা যায় না।
ভিডিও যাচাই ১
আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে দেখানো ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা সময় টিভির লোগো ও সংবাদ পাঠিকার ‘কাল শপথ নিচ্ছেন না দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বিজয়ী ১১ সংসদ সদস্য’ শীর্ষক বক্তব্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে SOMOY TV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৯ জানুয়ারি কাল শপথ নিচ্ছেন না জাতীয় পার্টির বিজয়ীরা | Jatiya Party | National Election 2024 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: YouTube
প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে দেখানো প্রতিবেদনের সাথে এর হুবহু মিল রয়েছে।
Video Comparison by Rumor Scanner
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, জাতীয় পার্টির বিজয়ী সংসদ সদস্যরা ১০ জানুয়ারি বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শপথ অনুষ্ঠানে শপথ নিচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ঢাকায় আসলে তার সাথে আলোচনা করে শপথ নেওয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে প্রতিবেদনটিতে দলটির শপথ বর্জনের জন্যে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
ভিডিও যাচাই ২
পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বক্তব্য দেওয়ার ভিডিওটি অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা এনটিভির লোগোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে NTV News এর ইউটিউব চ্যানেলে ৯ জানুয়ারি দেশে একদলীয় শাসন কায়েম হবে : জি এম কাদের | GM Quader | NTV News শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: YouTube
প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো ভিডিওর সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
উক্ত প্রতিবেদনের কোথাও জিএম কাদেরকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে শপথ বর্জন করার নির্দেশনা দিতে দেখা যায় না কিংবা এজন্যে চিঠি দেওয়ার বিষয়েও কিছু বলতে শোনা যায় না। এছাড়াও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার দাবির বিষয়েও কোনো তথ্য উক্ত ভিডিওতে পাওয়া যায়না।
ভিডিওটি পর্যালোচনা করে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো ভিডিওর সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে।
Video Comparison by Rumor Scanner
তবে ভিডিওটির কোথাও আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিডিওতে জিএম কাদেরের ‘সরকারের নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন হয়েছে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা’ শীর্ষক বক্তব্য নিয়ে ড. ফয়জুল হকের মন্তব্য দেখে পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে শপথ বর্জনের জন্যে জাতীয় পার্টির চিঠি দেওয়া এবং সিইসি-র পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক নানা কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে শপথের জন্য সময় চেয়ে স্পিকারের কাছে জাতীয় পার্টির চিঠি দেওয়ার বিষয়ে একটি মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম ওসমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শপথে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। কিন্তু আজ গেজেট হওয়ায় আমাদের দলের পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে। গেজেট অনুযায়ী কাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ। আমাদের বিজয়ী প্রার্থীরা সবাই এক জায়গায় আসতে সময় লাগছে। সে কারণে সময় চাওয়া হয়েছে। শপথ না নেওয়ার কোনও কারণ নাই।’
১০ জানুয়ারি শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে স্থির থাকতে পারেনি জাতীয় পার্টি। সন্ধ্যায় দলটির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির বরাতে গণমাধ্যমে খবর আসে পূর্বের সিদ্ধান্ত বদল করে ১০ জানুয়ারিই শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে দলটি।
মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১টি আসনে জয় পায় জাতীয় পার্টি। এত কম আসনে জয় লাভ করায় দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে দায়ী করে দলের ভেতরে বাহিরে চলছে তুমুল সমালোচনা। এর মধ্যে ৯ জানুয়ারি দুপুরে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা গণমাধ্যমকে জানান ১০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তারা অংশ নিচ্ছেন না। দলটির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের জন্য আরও কিছু দিন সময় চেয়ে স্পিকারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও দলটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে জানানো হয়। উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘শপথ বর্জনের চিঠি দিল জাতীয় পার্টি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পুনরায় নির্বাচন দিবে সিইসি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে স্পিকারের নিকট শপথ বর্জনের কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। শপথ গ্রহণের জন্য কিছুদিন সময় চেয়ে চিঠি দেওয়া হলে পরবর্তীতে দলটি তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ১০ জানুয়ারিই শপথ গ্রহণ করার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এছাড়া, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পক্ষ থেকেও পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়নি।
সুতরাং, জাতীয় পার্টির শপথ বর্জনের জন্যে চিঠি দেওয়া ও সিইসি’র পুরনায় নির্বাচন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবিগুলো মিথ্যা।
গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাতেই পুলিশের সহায়তায় নৌকায় সিল পিটালো আ. লীগের কর্মীরা’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘রাতেই পুলিশের সহযোগিতায় ব্যালট বাক্স পূর্ণ, নিরব প্রশাসন’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার বার। ভিডিওটিতে প্রায় ৬ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোট জালিয়াতির আলোচিত এই ভিডিওটি গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ের নয় বরং এটি ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়ে ভোট জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে ধারণকৃত ভিডিও।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে চশমা পরিহিত এক যুবককে সাংবাদিকদের কাছে ভোট জালিয়াতির বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করতে দেখা যায়। তবে সেখানে কোনো পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আরটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর ‘প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে সিল মারছে যুবকরা!’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
এই ভিডিওটি’র একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
অর্থাৎ, এই ভিডিওটি ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনের নয় এবং এর সাথে পুলিশের কোনো সংশ্লিষ্টটা নেই বরং ভিডিওটি ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়ের। তবে ভিডিওটি কোন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি’র থাম্বনেইলে এক ব্যক্তিকে ব্যালটে সিল দিতে দেখা যায়।
Screenshot: Sabai Sikhi YouTube
কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ২০২৩ সালের ০৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপ নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার ঘটনার দৃশ্যের।
Screenshot: Channel 24 YouTube
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকটি আসনের একাধিক কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকের ব্যালটে সিল মারার বা নৌকা প্রতীকের সিল সম্বলিত ব্যালটের ভিডিও প্রকাশ হওয়ার কথা গণমাধ্যম সূত্রে (১, ২, ৩) জানা যায়। এসব অভিযোগে একাধিক কেন্দ্রে সিল মারা ব্যালট বাতিল ও কেন্দ্রের ভোট বাতিলের সংবাদও পাওয়া যায়।
মূলত, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়ে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে যুবকদের সিল মারার অভিযোগের একটি ভিডিও সেসময় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। উক্ত ভিডিও’র একটি অংশের সাথে গত ০৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাতেই পুলিশের সহায়তায় নৌকায় সিল পিটালো আ. লীগের কর্মীরা’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘রাতেই পুলিশের সহযোগিতায় ব্যালট বাক্স পূর্ণ, নিরব প্রশাসন’ শীর্ষক থাম্বনেইলের সাথে ২০২৩ সালের ০৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপ নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে এক যুবকের সিল মারার ছবি যুক্ত করে প্রচার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ইন্টারনেটে প্রচারিত একাধিক ভুল তথ্য শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়ের পুরোনো ভিডিওকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশের সহায়তায় নৌকায় সিল মারার ভিডিও দাবিতে ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি “সুষ্ঠ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হয়নি। একি বললো প্রধান নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচনের খবর। Bd Election” শীর্ষক শিরোনাম এবং “নির্বাচন সুষ্ঠ হয়নি বললো প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসির বক্তব্য শুনে ক্ষেপেছেন প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি শীর্ষক কোনো মন্তব্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল করেননি বরং
নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া প্রসঙ্গে তার দেওয়া বক্তব্যকে খণ্ডিত আকারে উপস্থাপন করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি ভিডিও যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন যেখানে ভিডিওটির শুরুতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ড.ফয়জুল হক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়। পরবর্তীতে ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে উক্ত ভিডিও ক্লিপগুলোই বিস্তারিত অংশে দেখানো হয়।
ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “দর্শকশ্রোতামন্ডলী এই নির্বাচন গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হয়নি, এই নির্বাচন সুষ্ঠু গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হয়নি এমনটা দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আজকে যে নির্বাচনটি আমরা দেখলাম এখানে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ভোট কারচুপি করা হয়েছে…। ”
সংবাদপাঠ অংশে থাকা দাবিগুলো নিয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এরূপ কোনো দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও ক্লিপের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
ভিডিও যাচাই – ০১
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা কাজী হাবিবুল আউয়ালের ভিডিওটির অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ জানুয়ারি “নির্বাচন যে গ্রহনযোগ্য হয়েছে সেটাতো আমি বলিনি: সিইসি। Election Update। Election News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশ আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো হয়।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ঢাকার নির্বাচন ভবনে নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। উক্ত সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবের এক পর্যায়ে তিনি বলেন “আমি তো গ্রহণযোগ্য হয়েছে এই কথা এখনও বলিনি। গ্রহণযোগ্য হয়েছে এটা আপনারা বলবেন ফলাফল প্রকাশ এবং চূড়ান্ত মূল্যায়ন হওয়ার পরে। এর জন্য আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।” কিন্তু আলোচিত ভিডিওটিতে এই বক্তব্যের শেষ অংশটুকু বাদ দিয়ে শুধু প্রথম বাক্যটি অর্থাৎ ‘আমি তো গ্রহনযোগ্য হয়েছে এ কথা এখনও বলিনি’ শীর্ষক বাক্যটি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।
ভিডিও যাচাই – ০২
পরবর্তী ভিডিওটির অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘Dr.Faizul Huq’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ জানুয়ারি “ভোট প্রত্যাখ্যান করেছে জনগন! ঘৃণিত ভাবে পতন হচ্ছে ওদের! ড.ফয়জুল হক Dr.Faizul Huq” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওটিতে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ড.ফয়জুল হককে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণ এবং বর্জন এর বিষয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতে দেখা যায়। এই ভিডিওটি কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত দাবির সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই – ০৩
আলোচিত দাবিটিতে সর্বশেষ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহার একটি ভিডিও দেখানো হয়। উক্ত ভিডিওটির অনুসন্ধানে ‘Rumeen’s Voice’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ জানুয়ারি “মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে এই নাটক। Rumeen’s Voice । রুমিন ফারহানা । Rumeen Farhana”শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওটিতে রুমিন ফারহানা গত ৭ তারিখ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি, ভোটার উপস্থিতি সহ আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার মতামত ব্যক্ত করেন।
অর্থাৎ আলোচিত ভিডিওর কোথাও কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি শীর্ষক মন্তব্য করেছেন বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি, কি ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রসঙ্গে কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষে ঢাকার নির্বাচন ভবনে নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। উক্ত সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে ‘আমি তো গ্রহণযোগ্য হয়েছে এই কথা এখনও বলিনি। গ্রহণযোগ্য হয়েছে এটা আপনারা বলবেন ফলাফল প্রকাশ এবং চূড়ান্ত মূল্যায়ন হওয়ার পরে। এর জন্য আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।’’ শীর্ষক বক্তব্যের একটি অংশ কাট করে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার উক্ত মন্তব্যটি করেননি। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি শীর্ষক একটি মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম কপি করে তা ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, দৈনিক যুগান্তর “জনগণের নীরব ভোট প্রত্যাখ্যান, সরকারের পরাজয়” শীর্ষক মন্তব্য জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুগান্তরের সূত্রে প্রচারিত তথ্যটি যুগান্তরের নিজস্ব কোনো তথ্যের ভিত্তিতে করা সংবাদ নয় বরং গত ০৭ জানুয়ারি ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের দেওয়া বক্তব্যকে কোট করে প্রকাশিত সংবাদকে যুগান্তরের নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে করা সংবাদ দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ০৭ জানুয়ারি “জনগণের নীরব ভোট প্রত্যাখ্যান, সরকারের পরাজয়’’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Jugantor
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “৭ জানুয়ারি দুপুরে প্রেসক্লাব, পল্টন এলাকায় ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত হরতাল ও গণ-কারফিউর সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা। তখন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা বলেন, আওয়ামী লীগের ‘ডামি’ নির্বাচনে জনগণের ভোট বর্জন ইতিহাসের মাইল ফলক হয়ে থাকবে।
তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগের এখনই নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ করা উচিত। কারণ জনগণ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। দেশের মানুষ এই জালিম সরকারকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। তাই জনগণের নীরব ‘ভোট প্রত্যাখানে’ জাতির বিজয় এবং ফ্যাসিবাদ সরকারের পরাজয়।
তারা আরো বলেনবলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সেই ভোট ডাকাতির কলঙ্কজনক অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এই সরকার দেশ ও জনগণের জন্য একটি মহাবিপদ ডেকে এনেছে। তাই এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের বিদায় না করা পর্যন্ত জনগণের মুক্তি আসবে না। আমরা শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনসহ একদফার যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এ সময় ভোট বর্জন, হরতাল ও গণ-কারফিউ পালন করায় দেশবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ।”
অর্থাৎ, আলোচিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের অংশ কোট করে বানানো হয়েছে। এখানে, যুগান্তরের নিজস্ব কোনো সূত্র বা তথ্য নেই।
একই ঘটনায় যুগান্তরের মতোই প্রায় একই শিরোনামে দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন দেখুন আরটিভি, এনটিভি, বাংলা নিউজ২৪ এবং ঢাকা টাইমস।
মূলত, গত ৭ জানুয়ারি ঢাকায় ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে ১২ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের সমর্থনে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা বলেন, আওয়ামী লীগের ‘ডামি’ নির্বাচনে জনগণের ভোট বর্জন ইতিহাসের মাইল ফলক হয়ে থাকবে। উক্ত বিক্ষোভ মিছিলে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের দেওয়া বক্তব্যকে শিরোনামে কোটেশনের মাধ্যমে উদ্বৃত্ত করে যুগান্তরসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেখানে যুগান্তরের শিরোনামটি ছিল “‘জনগণের নীরব ভোট প্রত্যাখ্যান, সরকারের পরাজয়’। যা পরবর্তীতে কপি হয়ে যুগান্তরের নিজস্ব মতামত সম্বলিত সংবাদ প্রতিবেদন দাবিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে নেটিজেনরা উক্ত মন্তব্যকে যুগান্তরের মন্তব্য ধরে নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া জানান।
সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দের দেওয়া বক্তব্যকে কোট করে প্রকাশিত সংবাদকে যুগান্তরের নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে করা সংবাদ দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন অর্থাৎ গতকাল (০৮ জানুয়ারি) Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘খালেদ মুহিউদ্দীনের সামনে নির্বাচন বাতিল করলো সিইসি, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
পরবর্তীতে ভিডিওটি অপর একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। সেটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
Sabai Sikhi চ্যানেলের উক্ত ভিডিওটি’র লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের কোনো ঘোষণা দেননি বরং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে দেওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সাক্ষাৎকারের একটি অংশের ভিডিও ক্লিপের সাথে উক্ত দাবি সম্বলিত শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে দেখা যায়। তবে সেখানে কোথাও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নির্বাচন বাতিল কিংবা পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণার কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।
উক্ত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৮ জানুয়ারি ‘মুখোমুখি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
এই ভিডিওটি’র সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র একটি অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
ভিডিওটিতে গত ৭ তারিখ অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দিনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে কোথাও আলোচিত দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ভিডিওতে নির্বাচন কতটা সফল হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘‘কমিশন সার্বিকভাবে চেষ্টা করেছে নির্বাচন সফল করতে৷ এটাও কিন্তু একটা আপেক্ষিক বিষয়, কারণ, একটা বড় দল নির্বাচনে অংশহগ্রহণ করেনি৷ এটা অনস্বীকার্য৷’’
নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন অনেকটাই সহিংসতামুক্ত হয়েছে এবং ভোটার উপস্থিতিও ছিল সব মিলিয়ে৷ আমাদের জন্য যেটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে যে কোনো ধরনের সহিংসতা বড় ধরনের হয়নি, মৃত্যু ঘটেনি, যেটা আমরা সব সময় প্রত্যাশা করি যে মানুষ আহত না হয়, নিহত না হয়৷ সেদিক থেকে আপেক্ষিক অর্থে নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ হয়েছে৷”
অর্থাৎ, ভয়েচে ভেলের সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে দেওয়া নির্বাচন পরবর্তী উক্ত সাক্ষাৎকারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল কিংবা পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের কোনো ঘোষণা দেননি।
পাশাপাশি, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল কিংবা পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণার দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। বরং নির্বাচনে ২৯৮ আসনে বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে ২৯৮টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ২২২টি আসন লাভ করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ১১টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র পদে মোট ৬২ টি আসনে জয়লাভ করেছেন প্রার্থীরা।
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়।
মূলত, গত ০৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ২৯৮ আসনের ফলাফলে ২২২ টি আসন লাভ করে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন পরবর্তী গতকাল ০৮ জানুয়ারি উক্ত নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। উক্ত সাক্ষাতকারের ভিডিওটি ‘DW খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে উক্ত ভিডিওটি সংগ্রহ করে এর কিছু অংশের সাথে ‘খালেদ মুহিউদ্দীনের সামনে নির্বাচন বাতিল করলো সিইসি, পুনরায় নির্বাচনের ঘোষণা’ শীর্ষক শিরোনাম ও থাম্বনেইল যুক্ত করে Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ০৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল কিংবা পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের কোনো ঘোষণা দেননি।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং ডয়েচে ভেলের সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন দুটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।