সম্প্রতি, “OIC রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন বিশ্বে ৮৫০০ জনলোক পবিত্র কালেমা পড়ে মুসলমান হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ্” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওআইসি’র রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন বিশ্বে গড়ে ৮৫০০ জন কালিমা পড়ে মুসলিম হওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং সংস্থাটি এ ধরনের কোনো রিপোর্ট প্রকাশ করে নি।
মূলত, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবেই বিগত কয়েকবছর ধরে OIC এর বরাতে প্রতিদিন বিশ্বে গড়ে ৮৫০০ জন কালিমা পড়ে মুসলিম হওয়ার দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে যেখানে ওআইসি এ ধরণের কোনো রিপোর্ট-ই প্রকাশ করে নি।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশকে পিটিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা গণভবন দখল বা ঘেরাও করেনি বরং কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিন্ন ঘটনারও পুরোনো ছবি ও ভিডিওর সাথে চটকদার শিরোনাম এবং থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার জাতীয় দৈনিক’Daily Ittefaq’ এর ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর “রাজধানীতে জামায়াত ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
এই ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে। ভিডিওটির কোথাও গণভবন দখল কিংবা পুলিশকে পেটানোর দৃশ্য দেখা যায়নি।
Video Comparison : Rumor Scanner
ভিডিওটির বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে দৈনিক ইনকিলাবের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর “আজও রাজধানীতে জামায়াতের বিক্ষোভ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot : Daily Inqilab
উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন রাজধানীতে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর।
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর উত্তর বাড্ডা ওভার ব্রিজের নিচ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেরুল বাড্ডা এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
অর্থাৎ এই ঘটনার ভিডিওটি কোনো প্রকার প্রাসঙ্গিকতা ছাড়াই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে।
পরবর্তীতে থাম্বনেইলে যুক্ত পুলিশের আহত হওয়ার ছবির বিষয়ে অনুসন্ধানে দ্য ডেইলি স্টারের বাংলা সংস্করণে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর “বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে ৪১ পুলিশ আহত: ডিএমপি মিডিয়া সেল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison : Rumor Scanner
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় রাজধানীর পল্টন-কাকরাইল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৪১ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এই প্রতিবেদনে থাকা পুলিশের আহত হওয়ার ছবিটিকে আলোচিত ভিডিওটির থাম্বনেইলে যুক্ত করা হয়েছে।
তাছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পুলিশকে পিটিয়ে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের গণভবন দখলে নেওয়ার কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর রাজধানীতে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর। একই বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টন-কাকরাইল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৪১ পুলিশ সদস্য আহত হয়। সম্প্রতি গত ১ অক্টোবরের জামায়াতে ইসলামীর মিছিলের ভিডিওর সাথে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আহত এক পুলিশ সদস্য ছবি জুড়ে দিয়ে “বাঁশ হাতে ভোরেই পুলিশকে পিটিয়ে গণভবন দখলে নিলো জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সম্প্রতি জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীদের কর্তৃক পুলিশ পিটিয়ে গণভবন দখলের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সুতরাং, পুলিশকে পিটিয়ে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের গণভবন দখলে নেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গতকাল ১৭ জানুয়ারি সকালে কিছু যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটের রজনীগন্ধা নামের একটি ফেরি পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের কাছে ডুবে গেছে। এ ঘটনায় ডুবে যাওয়া ফেরিতে থাকা যানবাহনের সংখ্যা নিয়ে কতিপয় গণমাধ্যম এবং ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।
১৭টি যানবাহন দাবি করে সংবাদ প্রচার করলেও পরবর্তী তা সংশোধন করে নেয় আমার সংবাদ। তবে গণমাধ্যমটির সংশোধন পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের আর্কাইভ পাওয়া যায়নি।
১৮টি যানবাহন দাবি করে সংবাদ প্রচার করলে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে নেয় ইনকিলাব, যুগান্তর, ডেইলি বাংলাদেশ এবং আজকালের খবর। তবে গণমাধ্যমটির সংশোধন পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের আর্কাইভ পাওয়া যায়নি।
১৮টি যানবাহন দাবি করে জনপ্রিয় ইউটিউবার ‘কিটো ভাই’ খ্যাত মাসরুর রাব্বি ইনান এবং জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুনায়েদ ইভান ফেসবুক পোস্ট করেছেন।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা ফেরিতে ১৭ কিংবা ১৮টি যানবাহন ছিল না বরং ফেরিটিতে সাতটি ছোট ট্রাক এবং দুইটি বড় ট্রাক মিলিয়ে মোট নয়টি ট্রাক ছিল।
অনুসন্ধানের শুরুতে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে ডুবে যাওয়া ফেরিতে থাকা যানবাহনের বিভিন্ন সংখ্যা দেখি আমরা। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় যেসব গণমাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য রয়েছে সেসব গণমাধ্যমের প্রতিবেদন খুঁজে বের করি।
গতকাল ১৭ জানুয়ারি উক্ত দুর্ঘটনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফায়ার সার্ভিসের বরাতে জানানো হয়েছে, ফেরিতে অন্তত ৯টি পণ্যবাহী ট্রাক ছিল।
অনলাইন গণমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে পারি আমরা। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বিডিনিউজ২৪ কে জানায়, ‘ইউটিলিটি ফেরি ‘রজনীগন্ধা’ মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে দৌলতদিয়া থেকে সাতটি ছোট ট্রাক এবং দুটি বড় ট্রাক নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু পাটুরিয়ার কাছাকাছি গিয়ে ঘন কুয়াশার কারণে নদীতে নোঙ্গর করে। সকাল ৮টার দিকে ফেরিটি দুর্ঘটনায় পড়ে।’
অনলাইন গণমাধ্যম বাংলানিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিমের বরাতে জানানো হয়েছে, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটে ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা ফেরিতে ছোট-বড় মিলে মোট ৯টি ট্রাক ছিল।
এছাড়া বিস্তারিত অনুসন্ধানে বেসরকারি টেলিভিশনে চ্যানেল এনটিভির ফেসবুক পেজে উক্ত দুর্ঘটনা বিষয়ক একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাই আমরা। উক্ত ভিডিওতে এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তার বক্তব্য দেখতে পাই। তিনি জানান, ফেরিতে সাতটি ছোট ট্রাক এবং দুইটি বড় ট্রাক ছিল।
তৎক্ষণাৎ কিছু গণমাধ্যম ফেরিতে ১৭টি এবং কিছু গণমাধ্যম ১৮টি যানবাহন ছিল বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে অধিকাংশ গণমাধ্যম উক্ত প্রতিবেদনগুলো সংশোধন করে ফেরিতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৯টি ট্রাক ছিল বলে উল্লেখ করেছে।
মূলত, গতকাল ১৭ জানুয়ারি মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ‘রজনীগন্ধা’ নামের একটি ফেরি ডুবে যায়। ফেরিডুবির এ ঘটনায় তৎক্ষণাৎ সংবাদ প্রচার করতে গিয়ে কতিপয় গণমাধ্যম উক্ত ফেরি ১৭টি এবং অন্য কিছু গণমাধ্যম ১৮টি যানবাহন সহ ডুবে যায় দাবি করে সংবাদ প্রচার করে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, ফেরিতে সাতটি ছোট ট্রাক এবং দুইটি বড় ট্রাক ছিল। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় এবং ফায়ার সার্ভিস পক্ষ থেকে এই তথ্যটি একাধিক গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে।
সুতরাং, রজনীগন্ধা ফেরি নয়টি ট্রাকসহ ডুবে গেলেও কতিপয় গণমাধ্যম ফেরিতে ১৭ ও ১৮টি যানবাহন সহ ডুবে যায় দাবি করে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, দেশে ফিরলেন তারেক রহমান, রাজনৈতিক নতুন মোড়, ভয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষক শিরোনাম এবং দেশে ফিরলেন তারেক রহমান, রাজনৈতিক নতুন মোড় শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।
উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় সাত হাজার বার। ভিডিওটিতে তিনশতরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসেন নি বরং উক্ত দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি বানোয়াট। প্রকৃতপক্ষে পূর্বে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই ০১
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ভিডিওটির শুরুতে বাংলা ভাষায় ‘এদিকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র প্রেসিডেন্ট শীর্ষক তথ্যে বেসরকারি ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম একাত্তর টিভির লোগোসহ একটি সংবাদ প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে লক্ষ্য করা যায়।
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া Ekattor TV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর “মাকে দেখতে তারেক রহমান কি তাহলে বাংলাদেশে ফিরছেন?” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
ভিডিও থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র প্রেসিডেন্ট। তবে যুক্তরাজ্যের আইনজীবীরা জানিয়েছেন তারেক রহমান দেশে এলেই গ্রেপ্তার হতে পারেন।
অর্থাৎ, তারেক রহমানের দেশে আসার সম্ভাবনা নিয়ে প্রচারিত সংবাদটি ২০২১ সালের।
ভিডিও যাচাই ০২
প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে, বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া DBC NEWS এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১৪ মার্চ “ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা পেলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রকাশিত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison: Rumor Scanner
ভিডিও থেকে জানা যায়, ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা পেলেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলে প্রত্যাশা করছে বিএনপির আইনজীবীরা। আইনজীবীরা জানান, তারেক রহমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন তবে দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা না আসা পর্যন্ত দলটির শীর্ষ নেতাকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চান না তারা।
এছাড়া, তারেক রহমানের দেশে আসার প্রেক্ষিতে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, ২০২১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা পেলেই দেশে ফিরবেন বলে প্রত্যাশা করেন দলটির আইনজীবীরা। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেসময় বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া ডিবিসি নিউজে সংবাদ প্রচারিত হয়। এছাড়া একই বছরের নভেম্বরে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানায় যুক্তরাজ্যের বিএনপি’র প্রেসিডেন্ট। তবে তারেক রহমান দেশে এলেই গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা করেন যুক্তরাজ্যের আইনজীবীরা। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেসময় বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া একাত্তর টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারিত হয়। সম্প্রতি, এই সংবাদের ফুটেজ একত্রে যুক্ত করে তারেক রহমান দেশে ফিরেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরেছেন দাবিতে ২০২১ সালের পুরনো সংবাদ প্রতিবেদনের ফুটেজ যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
সম্প্রতি, অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ভারতের ৫০০ রুপির নোটের ওপর লাল কেল্লার ছবির পরিবর্তে শ্রীরাম ও রামমন্দিরের ছবি যুক্ত করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ও ব্যাংক নোটের ছবি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ভারতের ৫০০ রুপির নোটের ওপর লাল কেল্লার ছবির পরিবর্তে রাম ও রাম মন্দিরের ছবি যুক্ত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং এ দাবিতে প্রচারিত নোটের ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পদনার মাধ্যমে তৈরি করা।
অনুসন্ধানের শুরুতে ভাইরাল নোটটি পর্যবেক্ষণ করে সেখানে @raghuamurthy07 নামক এক্স আইডির ইউজার দেখতে পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে ওই এক্স আইডিটি অনুসন্ধান করে আইডিতে গত ১৪ জানুয়ারি ওই নোটটি Rama Bhakta Gandhi also wanted this(হিন্দি থেকে ইংরেজিতে অনূদিত) শিরোনামে পোস্ট করতে দেখা যায়।
Screenshot from X/raghuamurthy07
ওই এক্স আইডিতে আরও একাধিক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে ওই ইউজার জানিয়েছেন ভাইরাল ওই নোটটি তিনি তৈরি করেছেন। সাথে এই নোটকে আসল নোট হিসেবে প্রচারের বিষয়টিকে ভুল তথ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
Screenshot from X/raghuamurthy07
অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে ভারতের ৫০০ রুপির ব্যাংক নোটে কোনো পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা বিষয়টি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ৫০০ টাকার নোটের বর্ণনায় সেখানে আগের নোটের কথাই উল্লেখ পাওয়া যায়। ৫০০ রুপির নোটের বর্ণনার কোনো পরিবর্তন সেখানে হয়নি। এখনও নোটে সামনের দিকে মহাত্মা গান্ধীর ছবি এবং পেছনে লাল কেল্লার সাথে চশমা রয়েছে।
Screenshot from RBI pdf
বিষয়টি ভারতের ভাইরাল হওয়ার পর ভারতের একাধিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান বিষয়টিকে ভুয়া চিহ্নিত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাদের ফ্যাক্টচেকে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র যোগেশ দয়ালের বক্তব্যও রয়েছে, যেখানে ওই মুখপাত্র দাবিটিকে ভুয়া হিসেবে নিশ্চিত করেছেন।
মূলত, আগামী ২২ জানুয়ারি ভারতের অযোধ্যা রাম মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে ভারতের ৫০০ রুপির নোট একজন টুইটার ব্যবহারকারী এডিট করে মহাত্মা গান্ধী, চশমা এবং লাল কেল্লার পরিবর্তে রাম, ধনুক ও রাম মন্দিরের ছবি বসিয়ে প্রচার করে। যা পরবর্তীতে ভারতের আসল ব্যাংক নোটের ছবি হিসেবে প্রথমে ভারত ও পরবর্তীতে বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে ভারত সরকার কিংবা ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে কোনো ব্যাংক নোট জারি করেনি।
সুতরাং, ভারতের ৫০০ রুপির নোটে লাল কেল্লার পরিবর্তে রাম ও রামের ছবি যুক্ত করার বিষয়টি ভুয়া এবং প্রচারিত নোটটি এডিটেড।
তথ্যসূত্র
Statement from RBI via Indian Fact-checking Organizations
সম্প্রতি, ‘সুযোগ বুঝে আমাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে’ শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর-হরিরামপুর-সদরের তিনটি ইউনিয়ন) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমের ছবিযুক্ত জাতীয় দৈনিক কালবেলার ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম ‘সুযোগ বুঝে আমাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি এবং দৈনিক কালবেলাও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং উক্ত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৬ জানুয়ারি ২০২৪।
Screenshot: Facebook Claim
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ১৬ জানুয়ারি প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
তবে একই দিনে কালবেলা’র ফেসবুক পেজে ‘সুযোগ বুঝে আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে’ শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় এবং এর কমেন্টে একই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Kalbela Facebook Page
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াই করে পরাজিত হয়েছেন সংগীতশিল্পী ও রাজনীতিক মমতাজ বেগম। নির্বাচনের পর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ১৫ জানুয়ারি রাতে ফেসবুক নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) দিয়েছেন মমতাজ।
পোস্টে মমতাজ লিখেছেন, নিজের খ্যাতিটাও মাঝে মাঝে গলার কাঁটা মনে হয়। সুনাম নষ্ট হবে এই ভয়ে মুখ বুঁজে কত যে অত্যাচার সহ্য করতে হয় তা আমি আর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
তিনি আরও লিখেছেন, যা কিছু অর্জন করেছি তা আমার অনেক কষ্টের অর্জন। মা বাবা পীর মুর্শিদের দোয়াও আছে। আমার এই অর্জনের পেছনে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির হাত না থাকলেও আজ সেটাকে ধ্বংস করতে কতিপয় ব্যক্তি উঠেপড়ে লেগেছে। যারা কোনোদিনই আমার সুনাম, খ্যাতি, অর্জন, ভালো থাকা কোনোভাবেই সহ্য করতে পারে নাই, তবুও আমি আমার সাধ্যমতো তাদের সম্মান ও সহযোগিতা করে আসছি, কিন্তু লাভ হয়নি! সুযোগ বুঝে ঠিকই আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে।
পোস্টের শেষে মমতাজ লিখেছেন, কষ্টটা হলো আমি যা না, আমি যা করিনি সেই অপবাদ আমাকে দিচ্ছে শুধু কিছু অর্থ স্বার্থের বিনিময়ে। আমি জানি সত্যটা ঠিকই একদিন এ দেশের মানুষ জানবে শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। আল্লাহ তুমি এই স্বার্থপর মানুষগুলোকে হেদায়েত দান করো।
অর্থাৎ, কালবেলা’র ফেসবুক পেজে গত ১৬ জানুয়ারি প্রচারিত ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে তাতে ‘সুযোগ বুঝে আমাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
Photocard Comparison by Rumor scanner
মূলত, গত ১৫ জানুয়ারি সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে একটি পোস্ট দেন। তার পোস্টের “সুযোগ বুঝে ঠিকই আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে” শীর্ষক অংশকে কোট করে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা তাদের ফেসবুক পেজে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করে। পরবর্তীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃতের মাধ্যমে ‘সুযোগ বুঝে আমাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে’ শীর্ষক শিরোনামে কালবেলা’র ফটোকার্ড দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
উল্লেখ্য, পূর্বের কালবেলা’র ফটোকার্ড এডিট করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, কালবেলা’র নাম ব্যবহার করে ‘সুযোগ বুঝে আমাকে খেয়ে ছেড়ে দিয়েছে’ শীর্ষক শিরোনামে মমতাজকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি, “টিভিতে দেখলাম জিতেছি পরে দেখি হেরেছি” শীর্ষক মন্তব্যকে নরওয়েজিয়ান ফুটবলার আর্লিং হাল্যান্ডের মন্তব্য দাবিতে দেশের বেসরকারি ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নরওয়েজিয়ান ফুটবলার আর্লিং হাল্যান্ড “টিভিতে দেখলাম জিতেছি পরে দেখি হেরেছি” শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেনি এবং যমুনা টিভিও তার মন্তব্য দাবিতে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে ভিন্ন ব্যক্তির একই মন্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আর্লিং হাল্যান্ডের ছবি যুক্ত করে তার মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগো ও লেখার সূত্র ধরে যমুনা টিভি’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে উক্ত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, গত ৮ জানুয়ারি যমুনা টিভি’র ফেসবুক পেজে “ভোটের ফলাফল ভুল দাবি করে তা পরিবর্তনের আপিল নিয়ে মধ্যরাতে নির্বাচন কমিশনে যান ঢাকা-৫ আসনের নৌকার প্রার্থী হারুনুর রশিদ মুন্না” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত ফটোকার্ড সম্বলিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
এই পোস্টে ব্যবহৃত ফটোকার্ডের সঙ্গে আলোচিত ফটোকার্ডটির শিরোনামের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে এই ফটোকার্ডটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির তূলনামূলক বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে বেশ কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
প্রথমত, যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনামের হুবহু মিল থাকলেও শিরোনামের নিচে ব্যবহৃত নামের অংশির ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
দ্বিতীয়ত, যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ছবির অমিল পাওয়া যায়।
Photocard Comparison : Rumor Scanner
এসব বিশ্লেষণ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই ফটোকার্ডটিতে যুক্ত ছবি এবং শিরোনামের নিচে যুক্ত নামের অংশটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডে যুক্ত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর “Man City 3-3 Tottenham: Erling Haaland criticises referee on social media” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot : BBC Website
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বর ২০২৩-২৪ সিজনের ম্যানসিটি বনাম স্পার্সের মধ্যেকার ম্যাচের ৯৪ তম মিনিটের অন্তিম মুহুর্তে রেফারি হোপারের একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে হাল্যান্ডসহ ম্যানসিটির প্লেয়াররা রেফারিকে ঘিরে তার ওপর ক্রুদ্ধ হন। সেসময় ক্যামারাবন্দী হওয়া হাল্যান্ডের ছবিটিকেই আলোচিত ফটোকার্ডে যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে।
মূলত, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৫ আসনের নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন হারুনুর রশিদ মুন্না। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে তিনি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ফলাফলে আসনটিতে মাত্র ২৯৭ ভোটের ব্যবধানে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা সজলের কাছে পরাজিত হন। এ খবর শুনে রাতেই নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যান নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হারুনর রশীদ (মুন্না)। এ সময় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘টিভিসহ সব জায়গায় চলে এসেছে আমি জিতলাম, এখন দেখি হারলাম!’। উক্ত ঘটনায় ‘টিভিতে দেখলাম জিতেছি পরে দেখি হেরেছি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড ও প্রতিবেদন প্রকাশ করে যমুনা টিভি। পরবর্তীতে যমুনা টিভি’র উক্ত ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে নরওয়েজিয়ান ফুটবলার আর্লিং হাল্যান্ডের নাম ওছবি যুক্ত করে ‘টিভিতে দেখলাম জিতেছি পরে দেখি হেরেছি’ শীর্ষক মন্তব্যকে আর্লিং হাল্যান্ড এর মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, যমুনা টিভি’র নাম ব্যবহার করে ‘টিভিতে দেখলাম জিতেছি পরে দেখি হেরেছি’ শীর্ষক শিরোনামে নরওয়েজিয়ান ফুটবলার আর্লিং হাল্যান্ডকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
যা দাবি করা হয়েছে
“বিশ্ব ভোট চোর” শীর্ষক শিরোনামে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার একটি আঁকা ছবি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম “বিশ্ব ভোট চোর” শীর্ষক লেখাযুক্ত ছবি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানায়নি বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার একটি আঁকা ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে “বিশ্ব ভোট চোর” শীর্ষক লেখা যুক্ত করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গত ১৬ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত পোস্টে সংযুক্ত দুইটি ছবির একটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির “বিশ্ব ভোট চোর” শীর্ষক লেখা ব্যতীত বাকি অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।
Image Comparison: Rumor Scanner
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পোস্ট থেকে জানা যায় ছবিটি প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবন গণভবনে তোলা। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক নয়া দিগন্ত’র ওয়েবসাইটে গত ১৭ জানুয়ারি “প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণভবনে দেখা করলেন মেয়র আইভী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেকর্ড পাঁচবার ও পরপর চারবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী অভিনন্দন জানান।
মূলত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড পাঁচবার ও পরপর চারবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী গত ১৮ জানুয়ারি অভিনন্দন জানান। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং মেয়র আতিকুল একটি আঁকা ছবি হাতে নিয়ে ছবি তোলেন। যা পরবর্তীতে সেলিনা হায়াৎ আইভী তার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করে। সে ছবিকেই ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে “বিশ্ব ভোট চোর” শীর্ষক লেখা যুক্ত করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
সুতরাং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে “বিশ্ব ভোট চোর” শীর্ষক লেখা যুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার আঁকা ছবি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা বিকৃত।
গত ১২ জানুয়ারি ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান বিয়ে করেছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে দাবি করা হচ্ছে ‘জোভান চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও টিভি মডেল নীলাঞ্জনা নীলাকে বিয়ে করেছেন’।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছোট পর্দার অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও মডেল নীলাঞ্জনা নীলাকে বিয়ে করেননি বরং তিনি সাজিন আহমেদ নির্জনাকে বিয়ে করেছেন।
জোভানের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ১২ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
উক্ত ছবিটির ক্যাপশনে জোভান লিখেছেন, আমরা একসাথে আলহামদুলিল্লাহ, কবুল বলেছি। তবে স্ত্রীর পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানাননি তিনি।
পরবর্তীতে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ১৩ জানুয়ারি “বিয়ের খবর জানালেও স্ত্রী প্রসঙ্গে কিছুই জানাতে চান না অভিনেতা” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনে জোভানের কাছের কয়েকজন বন্ধুর সূত্র দিয়ে জানানো হয়েছে, জোভানের স্ত্রীর নাম সাজিন আহমেদ নির্জনা। বাড়ি পুরান ঢাকায়, একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন।
এছাড়া জাতীয় দৈনিক দ্য দেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে গত ১৩ জানুয়ারি “কাকে বিয়ে করলেন জোভান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, ফারহান আহমেদ জোভানের বউয়ের নাম সাজিন আহমেদ নির্জনা।
এছাড়া, অনুসন্ধানে নীলাঞ্জনা নীলার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৩ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
পোস্টে তিনি জানান, তিনি নিয়ে করেননি। যখন তিনি বিয়ে করবেন তিনি আনন্দের সাথে জানাবেন।
মূলত, গত ১২ জানুয়ারি ছোট পর্দার অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তার বিয়ের কথা জানান। তবে তিনি সেই পোস্টে তার স্ত্রীর পরিচয় প্রকাশ করেননি। এরই প্রেক্ষিতে তিনি অভিনেত্রী ও টিভি মডেল নীলাঞ্জনা নীলাকে বিয়ে করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জোভান ও নীলাঞ্জনা নীলার বিয়ে হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায় জোভানের স্ত্রীর নাম সাজিন আহমেদ নির্জনা। নীলাঞ্জনা নীলাও একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়ে জানান তিনি বিয়ে করেননি।
সুতরাং, ছোট পর্দার অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও টিভি মডেল নীলাঞ্জনা নীলাকে বিয়ে করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ -৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচিত মুখ ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে “ব্যারিস্টার সুমন ভাইয়ের কাজ শরু হয়ে গেছে” শীর্ষক দাবিতে রাস্তার পাশের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে ব্যারিস্টার সুমনের তত্ত্বাবধায়নে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন একটি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের তত্ত্বাবধায়নে রাস্তার পাশের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের কোনো ঘটনার নয় বরং বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিডি ক্লিন’ এর উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ দিয়ে তৈরি একটি প্রমো ভিডিওটিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
দাবিটি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ আলোচিত ভিডিওটিতে এটি ব্যারিস্টার সুমনের তত্ত্বাবধায়নে ময়লা পরিষ্কারের ভিডিও নয় বরং এটি ‘বিডি ক্লিন’ এর উদ্যোগে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের ভিডিও বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
Screenshot Collage : Rumor Scanner
উক্ত মন্তব্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিডি ক্লিন’ এর ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর “Clean Bangladesh is getting ready” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison : Rumor Scanner
এই ভিডিওটির কিছু খণ্ড খণ্ড অংশই আলোচিত ভিডিওটিতে যুক্ত করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার সুমন এমপি নির্বাচিত হওয়ার এমন তার নির্বাচনী এলাকায় ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা তা জানতে গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম কালেরকণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ১৪ জানুয়ারি “শপথ গ্রহণ করেই নদী পরিষ্কার অভিযান ব্যারিস্টার সুমনের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণের পর প্রথম কাজ হিসেবে চুনারুঘাটের মরা খোয়াই নদী পরিষ্কার ও দখলমুক্ত অভিযান শুরু করছেন হবিগঞ্জ-৪(মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন। ১৪ জানুয়ারি রবিবার তার কর্মীবাহিনী এ নদী পরিষ্কার কাজ শুরু করেছে। তবে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে অনেকেই এসেও নদীতে নামতে পারেননি। তাপমাত্রা বাড়লে এবং রোদের দেখা পেলে শত শত কর্মীবাহিনী স্বেচ্ছাশ্রমে এ কাজে যোগদান করবে। নির্বাচনের পূর্বে সাইদুল হক সুমন তার ইশতেহারে উল্লেখ করেছিলেন, নির্বাচিত হলে তার প্রথম কাজ হবে এ নদী পরিষ্কার ও দখলমুক্ত করে এখানে একটি ওয়াকওয়ে ও পার্ক নির্মাণ করা।
মূলত, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে হবিগঞ্জ -৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় লাভ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচিত মুখ ব্যারিস্টার সুমন। নির্বাচনের তিনি পূর্বে তার ইশতেহারে উল্লেখ করেছিলেন, নির্বাচিত হলে তার প্রথম কাজ হবে খোয়াই নদী পরিষ্কার ও দখলমুক্ত করে এখানে একটি ওয়াকওয়ে ও পার্ক নির্মাণ করা। ফলশ্রুতিতে গত ১৪ জানুয়ারি তার কর্মীবাহিনী এ নদী পরিষ্কার কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘ব্যারিস্টার সুমন ভাইয়ের কাজ শরু হয়ে গেছে’ শীর্ষক শিরোনামে ইন্টারনেটে রাস্তার পাশে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ব্যারিস্টার সুমনের তত্ত্বাবধায়নে রাস্তার পাশের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিডি ক্লিন’ কর্তৃক দেশের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের একাধিক ভিডিও ক্লিপের সাহায্যে তৈরি একটি ভিডিও।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩ জুন ‘পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের স্বপ্ন’ নিয়ে ফরিদ উদ্দিনের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠন ‘বিডি ক্লিন’। যত্রতত্র ময়লা ফেলার অভ্যাসের মানসিকতা পরিহার করে জীবাণুমুক্ত ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।
সুতরাং, বিডি ক্লিনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির পুরোনো ভিডিওকে ব্যারিস্টার সুমনের তত্ত্বাবধায়নে রাস্তা পরিষ্কারের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে ; যা মিথ্যা।