Home Blog Page 375

গণমাধ্যমের ফটোকার্ড বিকৃত করে বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন প্রচারের গুজব

0

বেশ কিছুদিন যাবতই বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের একটি সামাজিক আন্দোলন চলমান রয়েছে। এরই মাঝে গত ২০ মার্চ বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ও দেশীয় পণ্য ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তার গাঁয়ের কাশ্মিরি শাল রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেন৷ এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রচারণা আরও বাড়তে থাকে।

এরই ফলশ্রুতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে দাবিতে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ফটোকার্ডের আদলে তৈরি দুটি পৃথক ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। 

পণ্য

প্রথম আলোর ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ডেইলি স্টারের ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দৈনিক প্রথম আলো কিংবা ডেইলি স্টার দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন প্রচার বিষয়ক কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি। এছাড়াও বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন প্রচার করার দাবিটিও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পৃথক দুটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ড দুটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যলোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায়, প্রথম আলোর ফটোকার্ড দাবিতে ‘কারা দিল দুবাইয়ের বুর্জ খলিফাতে ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে প্রথম আলোর লোগোর পাশাপাশি এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২২ মার্চ ২০২৪ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্য করা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটি তাদের ‘জীবনযাপন’ বিটের। অপরদিকে ডেইল স্টারের ফটোকার্ড দাবিতে ‘দুবাইয়ে বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ মার্চ ২০২৪ উল্লেখ করা হয়েছে। 

দাবিগুলোর সত্যতা যাচাইয়ে প্রথমে প্রথম আলোর ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে থাকা লোগো এবং তারিখের সূত্র ধরে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে গত ২২ মার্চে প্রকাশিত এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে প্রথম আলোর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২২ মার্চ ‘৬০ বছর বয়সেও যেভাবে তারুণ্য ধরে রেখেছেন নীতা আম্বানি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ফটোকার্ডটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে উক্ত ফটোকার্ডের প্রকাশের তারিখ ২২ মার্চ ২০২৪ এবং বিটের নামের (জীবনযাপন) মিল রয়েছে। এছাড়াও উভয় ফটোকার্ডের গ্রাফিক্যাল ডিজাইনেরও মিল রয়েছে। তবে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবি ও ফন্টের সাথে প্রথমআলোর উক্ত ফটোকার্ডের অমিল পরিলক্ষিত হয়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে ডেইলি স্টারের আদলে তৈরি ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডে থাকা লোগো এবং তারিখের সূত্র ধরে ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজ , এবং ওয়েবসাইটে গত ২৬ মার্চে প্রকাশিত এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে ডেইলি স্টার বাংলার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২৬ মার্চ ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে জাহাজের ধাক্কায় ধসে পড়েছে সেতু’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, ডেইলি স্টারের ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে উক্ত ফটোকার্ডের প্রকাশের তারিখ ২৬ মার্চ ২০২৪ এবং উভয় ফটোকার্ডের গ্রাফিক্যাল ডিজাইনের মিল রয়েছে। তবে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবি ও ফন্টের সাথে ডেইলি স্টারের উক্ত ফটোকার্ডের অমিল পরিলক্ষিত হয়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ড এডিট করেই আলোচিত ফটোকার্ড দুটি তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে বুর্জ খলিফায় সত্যি ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে কিনা তা জানতে আলোচিত ফটোকার্ডগুলোতে ব্যবহৃত ছবিটি রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধানেও আন্তর্জাতিক গণামাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বুর্জ খলিফার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ পর্যলোচনার মাধ্যমেও এবিষয়ে কোনো তথ্য অথবা ছবি পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২২ মার্চ দৈনিক প্রথম আলো ‘৬০ বছর বয়সেও যেভাবে তারুণ্য ধরে রেখেছেন নীতা আম্বানি’ শীর্ষক শিরোনামে এবং ২৬ মার্চ ডেইলি স্টার ‘যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে জাহাজের ধাক্কায় ধসে পড়েছে সেতু’ শীর্ষক শিরোনামে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দুটি পৃথক ফটোকার্ড প্রকাশ করে। সম্প্রতি, উক্ত ফটোকার্ড দুটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়েছে দাবিতে ‘কারা দিল দুবাইয়ের বুর্জ খলিফাতে ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলো এবং ‘দুবাইয়ে বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন’ শীর্ষক শিরোনামে ডেইলি স্টারের ফটোকার্ডের আদলে পৃথক দুটি ফটোকার্ড তৈরি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দুবায়ের ‍বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের কোনো বিজ্ঞাপন প্রচারের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় ভারতীয় পণ্য বয়কটের বিজ্ঞাপন প্রচারের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • Prothom Alo Facebook Page
  • Prothom Alo Website
  • Prothom Alo Facebook Page: Post
  • The Daily Star Facebook Page
  • The Daily Star বাংলা Facebook Page
  • The Daily Star Website
  • The Daily Star বাংলা Facebook Page: Post
  • Burj Khalifa Website
  • Burj Khalifa Facebook Page
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীতা নিয়ে প্রথম আলোর নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণা করলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি” শীর্ষক শিরোনামে বা তথ্যে প্রথম আলোর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফটোকার্ডটিতে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি আবু তৈয়ব অপির ছবি যুক্ত করা হয়েছে।

প্রথম আলো

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাচনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু তৈয়ব অপির প্রার্থীতা ঘোষণা সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ফটোকার্ড পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর একটি লোগো দেখা যায়। তবে ফটোকার্ডটি প্রচারের কোনো তারিখ উল্লেখ করা হয়নি।

পরবর্তীতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রথম আলোর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও প্রথম আলো’র ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

ইন্টারনেটে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে আলোচিত দাবির প্রেক্ষিতে কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে দৈনিক প্রথম আলো’র অনলাইন বিভাগের প্রধান শাখাওয়াত হোসাইন মাসুম’র সাথে কথা হয় রিউমর স্ক্যানার টিমের।

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ‘দৈনিক প্রথম আলো এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।’

এছাড়া, দৈনিক প্রথম আলো ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির গ্রাফিক্যাল ডিজাইন এবং ফন্টের সুস্পষ্ট ভিন্নতা দেখা যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

এদিকে প্রথম আলোর অনলাইন বিভাগের সাথে রিউমর স্ক্যানার টিমের যোগাযোগের পরবর্তী সময়ে গতকাল ৮ এপ্রিল প্রথম আলো তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে করা এক পোস্টে আলোচিত ফটোকার্ডটিকে মিথ্যা প্রচারণা উল্লেখ করে  বলেছে, ‘প্রথম আলোর নামে ছড়ানো এই স্ক্রিনশটটি নকল, আমাদের তৈরি নয়। বিভ্রান্তি এড়াতে আমাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও অনলাইনের সঙ্গে থাকুন।’

Screenshot: Facebook

মূলত, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা থেকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি আবু তৈয়ব অপির উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার একটি গুঞ্জন উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে চাউর হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি “আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণা করলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি” শীর্ষক শিরোনামে বা তথ্যে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম আলো এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন বিভাগের প্রধান শাখাওয়াত হোসাইন মাসুমও এমন কোনো ফটোকার্ড প্রথম আলো প্রকাশ করেনি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার করা হলে সেগুলো তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, দৈনিক প্রথম আলোর নামে প্রচারিত কুমিল্লায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাচনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতির প্রার্থীতা ঘোষণা সংক্রান্ত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

কারা লুকিয়ে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল দেখেছে তা জানা সম্ভব নয়

সম্প্রতি, “কারা লুকিয়ে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল দেখেছে, জানুন এই উপায়ে” শীর্ষক শিরোনামে দেশীয় একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রচার করেছে।

গণমাধ্যমে প্রচারিত এমন প্রতিবেদন দেখুন ডেইলি বাংলাদেশ। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গোপনে কে ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইল পরিদর্শন করছে তা জানা সম্ভব নয় বরং এ ধরণের কোনো সুবিধা ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীদের দেয় না। 

মূলত, ডেইলি বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত দাবি সম্বলিত প্রতিবেদনটিতে প্রোফাইল পরিদর্শনকারীর তালিকা বের করার যে কৌশল দেখানো হয়েছে সেই কৌশল ভিন্ন ভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রয়োগ এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই পদ্ধতিটি কার্যকর নয় বলে প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া, প্রোফাইল পরিদর্শনকারীর তালিকা দেখা সম্পর্কে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের হেল্প সেন্টারে জানিয়েছে, “ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তাদের প্রোফাইল কে দেখছে তা ট্র্যাক করতে দেয় না। থার্ডপার্টি অ্যাপগুলোও এই কার্যকারিতা প্রদান করতে অক্ষম।”

সুতরাং, ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইলে গোপনে কে ভিজিট করে তা জানার জন্য দেশীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি বাংলাদেশ এর প্রতিবেদনে উল্লিখিত কৌশল সম্বলিত দাবিটি মিথ্যা। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে প্রথমদিকে “জানতে চান কে দেখল আপনার ফেসবুক প্রোফাইল?” শীর্ষক শিরোনামে ২০১৬ সালের ৮ মে দৈনিক ‘প্রথম আলো’ এর অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এ তথ্যটি প্রচার করে আসছে। উক্ত তথ্যের সত্যতা অনুসন্ধানে ২০২২ সালে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

লাল গরু উৎসর্গ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট এই এক্স পোস্টটি করেননি

0

ইসরাইল-ফলিস্তিনের চলমান সংকটের প্রেক্ষাপটে ইহুদিরা লাল গরু উৎসর্গের মাধ্যমে জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদের স্থানে থার্ড টেম্পল বা তৃতীয় মন্দির নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে বলে একটি।

এই দাবির প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) “দুঃখিত ভারতীয়রা, আপনারা আমাকে সমর্থন করুন আর না করুন, আমাকে এটা করতেই হবে। আমি আপনাদের প্রিয় দেবতাকে বলি দিতে যাচ্ছি। ইহুদি প্রথা অনুযায়ী, একটি সম্পূর্ণ লাল গাভীর ছাই জেরুসালেমে তৃতীয় মন্দির নির্মাণের জন্য আবশ্যক।” শীর্ষক পোস্ট করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

এই দাবিতে প্রচারিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লাল গরু উৎসর্গ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভারতীয়দের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে এক্স পোস্ট করার বিষয়টি সত্য নয় বরং তার নামে তৈরি একটি ভুয়া (প্যারোডি) অ্যাকাউন্ট থেকে করা একটি পোস্টের সূত্রে এই দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে।

এ দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে একটি এক্স পোস্টের স্ক্রিনশট প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। সে সূত্রে ‘Benjamin Netanyahu – בנימין נתניהו parody’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। গত ২৯ মার্চ এই এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচ্য পোস্টটি করা হয়।

Screenshot: X.

উক্ত অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নামের পাশে এবং অ্যাকাউন্টের বায়োতে ইংরেজিতে ‘Parody’ শব্দ লেখা রয়েছে।

Screenshot: X

ক্যামব্রিজ ডিকশনারি অনুযায়ী, প্যারোডি বলতে এমন এক ধরনের শিল্পকে বোঝায়, যেখানে কোনো বিখ্যাত ব্যক্তি বা বস্তুকে মজার ও ব্যঙ্গাত্মক ভাবে নকল করা হয়।

এক্সের হেল্প সেন্টারে প্যারোডি অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। হেল্প সেন্টারের তথ্য মতে, এক্স-এ মানুষ প্যারোডি, ধারাভাষ্য, এবং ফ্যান অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে, কিন্তু তাদের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে যাতে অ্যাকাউন্টগুলো বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে। অ্যাকাউন্টের নাম এবং বায়োতে “প্যারোডি,” “ফেক,” “ফ্যান,” এমন শব্দ অন্তর্ভুক্ত করে স্পষ্ট করতে হবে যে এসকল অ্যাকাউন্ট মূল ব্যক্তি বা ব্র্যান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।

পরবর্তীতে, এক্স-এ বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ছাড়াও আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির নামে খোলা প্যারোডি অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। প্ল্যাটফর্মটিতে এক্স-এর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ইলন মাস্ক, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন, মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের নামেও প্যারোডি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ইলন মাস্কের নামে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্যারোডি অ্যাকাউন্ট দেখা যায়।

অধিকাংশ প্যারোডি অ্যাকাউন্টের নামের পাশেই ভেরিফাইড নির্দেশকারী নীল চিহ্ন দেখা যায়। এর কারণ গত বছর বিশ্বব্যাপী টুইটারের ‘ব্লু’ সাবস্ক্রিপশন উন্মুক্ত করা হয়। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮ ডলার (আইওএস ব্যবহারকারীদের জন্য ১১ ডলার) ব্যয় করে টুইটারের নীল চিহ্নের এই বিশেষ ব্যাজটি নেওয়া যায়।

এছাড়া বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট ঘুরেও এমন কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ইসরাইল-ফলিস্তিনের চলমান সংকটকে কেন্দ্র করে ইহুদিরা লাল গরু উৎসর্গের মাধ্যমে আল আকসা মসজিদের স্থানে থার্ড টেম্পল নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে বলে একটি দাবি উঠেছে। এই বিষয়ে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভারতীয়দের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে এক্স পোস্ট করেছেন দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচ্য পোস্টটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নামে তৈরি একটি প্যারোডি অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছিল। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে এমন কোনো বার্তা প্রদান করেননি।

পূর্বেও এক্সের প্যারোডি অ্যাকাউন্টের কারণে ছড়ানো গুজব শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। দেখুন-

সুতরাং, ইসরায়েলে লাল গরু উৎসর্গ প্রসঙ্গে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভারতীয়দের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে এক্স পোস্ট করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পিরোজপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে ১১ কিংবা ৫ জন নয়, ২ জনের মৃত্যু হয়েছে

0

গত ৭ এপ্রিল আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে পিরোজপুরে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে কয়েকশ ঘরবাড়ি। এই ঝড়ের কবলে পিরোজপুর জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন দাবি লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার। ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন পোস্টে পিরোজপুরে ঝড়ে ১১ জন কিংবা ৫ জন মারা যাওয়ার পৃথক দাবি করা হয়েছে।

১১ জন নিহতের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

৫ জন নিহতের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ০৭ এপ্রিলের কালবৈশাখী ঝড়ে পিরোজপুর জেলায় ১১ জন কিংবা ৫ জনের মৃত্যু হয়নি বরং ঝড়ে এই জেলায় ২ জন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার এর ওয়েবসাইটে গতকাল (৭ এপ্রিল) “৬ জেলায় কালবৈশাখীতে ১১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ছয় জেলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও দুজন নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে পটুয়াখালীর বাউফলে তিন জন, ঝালকাঠিতে তিন জন, বাগেরহাটে একজন, পিরোজপুরে দুইজন, নেত্রকোণায় একজন ও খুলনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

একই তারিখে মূলধারার আরেক সংবাদমাধ্যম আজকের পত্রিকা এর ওয়েবসাইটে “হঠাৎ ঝড়ে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন পিরোজপুর, নিহত বেড়ে ২” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ০৭ এপ্রিল (রবিবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঝড় শুরু হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে পিরোজপুরে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কয়েকশ বাড়িঘর। ঝড়ের কবলে গাছচাপায় এক নারী ও গ্রামের খালে পড়ে গিয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। 

নিহতরা হলেন- রুবী বেগম (২২) ও অনিল পাল (৮০)।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে বাংলানিউজ২৪। 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য পিরোজপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। তিনি বলেন, ঝড়ে দুইজন নিহত হয়েছেন, তাদের বাড়িতে গিয়ে আমরা সহযোগিতা করে এসেছি। এছাড়া ১৪ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে একটি শিশুর অবস্থা একটু বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে খুলনা পাঠানো হয়েছে। 

মূলত, গতকাল (০৭ এপ্রিল) পিরোজপুরসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। উক্ত ঝড়ের কবলে পিরোজপুর জেলায় ১১ জন ও ৫ জন নিহতের ভিন্ন দুইটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঝড়ে পিরোজপুরে ১১ জন কিংবা ৫ জন নিহতের তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, এপ্রিলের কালবৈশাখী ঝড়ে পিরোজপুরে ২ জন নিহত এবং ১৪ জন আহত হয়েছেন। পিরোজপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

সুতরাং, পিরোজপুরে গত ০৭ এপ্রিল কালবৈশাখী ঝড়ে ২ জন মৃত্যু হলেও উক্ত ঘটনায় ১১ জন কিংবা ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সৌদি আরবে গতকাল শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি

0

সৌদি আরবে গত ১১ মার্চ থেকে পবিত্র মাহে রমজান মাস শুরু হয়। রমজান মাস জুড়ে সিয়াম সাধনার পর শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন মুসলমানরা। সাধারণত ২৯ রোজা শেষে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ পালিত হয়। সৌদি আরবেও গতকাল (০৮ এপ্রিল) ২৯ রোজা শেষে চাঁদ দেখার আয়োজন ছিল। তবে চাঁদ দেখার আগে পরে ফেসবুকের একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, দেশটির আকাশে চাঁদ দেখা গেছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সৌদি আরবের আকাশে গতকাল (০৮ এপ্রিল) চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আজ (০৯ এপ্রিল) দেশটিতে ঈদ হচ্ছে না। ৩০ রোজা শেষে ১০ এপ্রিল সেখানে ঈদ পালিত হবে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেটের এক এক্স পোস্ট থেকে জানা যাচ্ছে, সোমবার (০৮ এপ্রিল) সৌদি আরবে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে এবার ৩০ রোজা সম্পন্ন করতে হবে সৌদি বাসীদের। ঈদুল ফিতর পালিত হবে ১০ এপ্রিল, বুধবার। 

সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট চাঁদ দেখা না যাওয়ার দরুন ১০ এপ্রিল ঈদ পালনের ঘোষণা দিয়েছে। 

একই তথ্য এসেছে সৌদি আরবের আরেক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া’র প্রতিবেদন এবং হারামাইন শরীফ ভিত্তিক ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ‘ইনসাইড দ্যা হারামাইন’ এর এক পোস্ট থেকেও ০৮ এপ্রিল চাঁদ দেখা না যাওয়া এবং তার প্রেক্ষিতে সৌদিতে ১০ এপ্রিল ঈদ পালনের বিষয়ে জানা যায়। 

মূলত, সৌদি আরবে গতকাল (০৮ এপ্রিল) ২৯ রোজা শেষে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার আয়োজন ছিল। তবে চাঁদ দেখার আগে ও পরে ফেসবুকের একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, দেশটির আকাশে চাঁদ দেখা গেছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশটির আকাশে গতকাল চাঁদ দেখা যায়নি। এর ফলে ২৯ রোজা শেষে ঈদও হচ্ছে না সেখানে। ৩০ রোজা শেষে ১০ এপ্রিল দেশটিতে ঈদুল ফিতর পালনের ঘোষণা এসেছে।

সুতরাং, সৌদি আরবের আকাশে ০৮ এপ্রিল শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেছে শীর্ষক একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগ নেতার কবরে আগুন ও শামীম ওসমানের দল ত্যাগের গুজব

সম্প্রতি, আওয়ামী লীগ নেতার কবরে আগুন এবং ক্ষমা চেয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান নিজের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেছেন দাবিতে ‘এইমাত্র আ.লীগ নেতার কবরে ভয়ংকর আগুন ক্ষমা চেয়ে দলত্যাগ শামিম ওসমান’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতার কবরে আগুন লাগার এবং শামীম ওসমানের দল ত্যাগ করার আলোচিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সজিরন নামের এক মহিলার কবরে আগুন লাগার ঘটনায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের ভিডিওর সাথে ফেস দ্যা পিপল নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের অনলাইন টকশোর ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যলোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটির শুরুতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির একটি প্রতিবেদনের কিছু অংশ দেখানো হয়। যেখানে একটি কবরে আগুন লাগার ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ফেস দ্যা পিপল নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের একটি অনলাইন টকশোর কিছু অংশ দেখানো হয়। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

আলোচিত ভিডিওর শুরুতে দেখানো দেশ টিভির প্রতিবেদন অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Desh TV News এর ইউটিউব চ্যানেলে ২৭ মার্চ কবরের ওপর দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন | News | Desh TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

প্রতিবেদনটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওতে দেখানো কবরে আগুন লাগার ফুটেজের সাথে উক্ত প্রতিবেদনের মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও জানা যায়, গত ২৬ মার্চ জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পৌর এলাকার সাতপোয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের এক পারিবারিক কবরস্থানে সজিরন নামের এক মহিলার কবরে আগুন লাগার এই ঘটনাটি ঘটে। সজিরন ওই এলাকার মরহুম দানেছ শেখের স্ত্রী ছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর গত ৫ মাস আগে নিজ বাড়িতে মারা যান। ২৬ মার্চ গভীর রাতে তার কবরের ওপরে রাখা বাঁশে হঠাৎ করেই আগুন জ্বলতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ, উক্ত ঘটনাটি কোনো আওয়ামী লীগ নেতার কবরে আগুন লাগান নয়। 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে দেখানো অনলাইন টকশোর ভিডিওটি অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা ‘ফেস দ্যা পিপল’ লেখাটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Face The People নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ মার্চ ৮০ হাজার থেকে কীভাবে আড়াইলাখ মুক্তিযো*দ্ধা হলো, যা বললেন এডঃ সাইয়েদ মামুন মাহবুব শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখা যায় আলোচিত ভিডিওর টকশোর সাথে উক্ত ভিডিওর বেশকিছু অংশের ‍হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও লক্ষ্য করা যায় টকশোর উপস্থাপক এবং আমন্ত্রিত আলোচকরাও একই। উক্ত টকশোতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ ইসলাম, সাইদ মামুন মাহমুদ এবং ফরহাদ হোসাইন। পুরো টকশো জুড়েই তারা ‍মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যার জটিলতা এবং ২৫শে মার্চ কালো রাত নিয়ে নানা আলোচনা করেছেন। যার সাথে আলোচিত কোনো দাবিরই কোনো সম্পর্ক নেই।

পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান নিজের তার রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেছেন কিনা এবং সাম্প্রতিক সময়ে কোনো আওয়ামী লীগ নেতার কবরে আগুন লাগার কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা তা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও কোনো গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূলত, গত ২৬ মার্চ জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সাতপোয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামে এক এক মহিলার কবরে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গণমাধ্যমগুলো তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। এরই প্রেক্ষিতে উক্ত ঘটনায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ভিডিওর সাথে ফেস দ্যা পিপল নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের অনলাইন টকশোর একটি ভিডিওর কিছু অংশ যুক্ত করে আওয়ামী লীগ নেতার কবরে আগুন এবং ক্ষমা চেয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান নিজের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেছেন দাবিতে ‘এইমাত্র আ.লীগ নেতার কবরে ভয়ংকর আগুন ক্ষমা চেয়ে দলত্যাগ শামিম ওসমান’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, দেশের কোথাও কোনো আওয়ামী নেতার কবরে আগুন কিংবা আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের দল ত্যাগের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

 সুতরাং, আওয়ামী লীগ নেতার কবরে আগুন এবং ক্ষমা চেয়ে শামীম ওসমানের দল ত্যাগ করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ সদস্য আটকের গুজব

গত ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র গোষ্ঠী সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে টাকা ও অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনারই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি, রুমায় ব্যাংক ডাকাতি সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস, পুলিশ কে ধরলো সেনাবাহিনী শীর্ষক থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

রুমায়

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে এক লক্ষ ১৫ হাজার বার। ভিডিওটিতে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসমন্ধানে জানা যায়, বান্দরবানের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক কোনো পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়নি বরং ভিন্ন প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ভিডিওটিতে কোথাও সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশকে আটক করার দাবি সম্পর্কিত প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি ভিডিওটিতে আলোচিত দাবির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোনো ভিডিও কিংবা বক্তব্যেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ভিডিওটি’র থাম্বনেইলে প্রচারিত দাবিটির সাথে বিস্তারিত অংশের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবির বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে দেখানো ভিডিও ক্লিপগুলোর বিষয়ে আলাদাভাবে অনুসন্ধান চালায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ০১

আলোচিত ভিডিওটিতে প্রথম দিকের ক্লিপটিতে প্রদর্শিত বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম News 24 এর লোগো’র সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে News 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ এপ্রিল “ব্যাংক লুটের ঘটনায় অভিযানে সেনাবাহিনী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশই আলোচিত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছে। 

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র গোষ্ঠী সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে টাকা ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। এই তথ্যের ভিত্তিতেই নিউজ ২৪ এর সংবাদ পাঠক তাদের স্থানীয় প্রতিবেদকের সাথে স্টুডিও থেকে লাইভে যুক্ত হয়ে কথা বলেন। তবে প্রতিবেদক উক্ত ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ আটক হওয়ার কোনো তথ্য জানান নি।

ভিডিও যাচাই ০২

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে, বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া MY TV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ এপ্রিল “যশোরে পুলিশের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, বেনাপোল সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুইজন নাগরিক আহত হওয়ার ঘটনায় ফলো-আপ নিউজের জন্য হাসপাতালে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে পুলিশ বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া সময় টিভির যশোর প্রতিনিধিকে হেনস্থা করে। তবে, এই প্রতিবেদনে সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ আটক হওয়ার কোনো তথ্য জানা যায়নি।

ভিডিও যাচাই: ০৩

কি-ওয়ার্ড সার্চ অনুসন্ধান করে, বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া Somoy TV এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ এপ্রিল “পুলিশের ছদ্মবেশে নারীদের টার্গেট!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর একটি অংশই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, রাজধানীতে পুলিশের ছদ্মবেশ ধারণ করে নারীদের ধর্ষণ এবং ছিনতাইকারীর একটি গ্রুপকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই প্রতিবেদনেরও কোথাও সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ সদস্য আটক হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনার সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়া, আলোচিত দাবিটি প্রচারের পূর্বে দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বান্দরবানে রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ সদস্য আটক হওয়া কিংবা অন্য কেউ আটক হওয়ার বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বম সম্প্রদায়ের তিনজনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ৮ এপ্রিল বান্দরবান জেলা পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতের বরাতে এই তথ্যের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

মূলত, গত ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র গোষ্ঠী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে টাকা ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। এই তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম বান্দরবানে নিউজ ২৪ এর সাংবাদিক স্টুডিওতে কথা বলেন। এছাড়া বেনাপোল সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুইজন নাগরিক আহত হওয়ার ঘটনায় ফলো-আপ নিউজের জন্য হাসপাতালে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে পুলিশ বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া সময় টিভির যশোর প্রতিনিধিকে হেনস্থা করেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে সেসময় বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া মাইটিভির ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। একইদিনে রাজধানীতে পুলিশের ছদ্মবেশ ধারণ করে নারীদের ধর্ষণ এবং ছিনতাইকারীর একটি গ্রুপকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যা বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি, উক্ত পৃথক তিনটি সংবাদের ভিডিও ফুটেজ একত্রে যুক্ত করে বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ সদস্য আটক হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত দাবিটি প্রচারের পূর্বে বান্দরবানে রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ সদস্য আটক হওয়া কিংবা অন্য কেউ আটক হয়নি।

সুতরাং, ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটের সংবাদ প্রতিবেদনের ফুটেজ যুক্ত করে বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় সেনাবাহিনী কর্তৃক পুলিশ সদস্য আটক হওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সামগ্রিক অর্থে নয়, মাউন্ট এভারেস্ট সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বিবেচনায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ

0

মাউন্ট এভারেস্ট নেপাল ও চীন সীমান্তের হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত। ৪০-৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ও ইউরেশিয়া টেকটনিক প্লেটের সংর্ঘষের ফলে হিমালয় পর্বতমালা গঠিত হয়। পরবর্তীতে, প্লেইস্টোসিন যুগে হিমালয় পর্বতমালা আজকের আকার পায়। হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত পর্বতগুলোর মধ্যে মাউন্ট এভারেস্ট সবচেয়ে উঁচু। পর্বতশৃঙ্গটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৯,০৩২ ফুট বা ৮৮৪৯ মিটার উঁচু। ব্রিটিশ সার্ভেয়র জেনারেল স্যার জর্জ এভারেস্টের নামে মাউন্ট এভারেস্টের নামকরণ করা হয়। 

পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ কোনটি?

এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে জানা প্রয়োজন আমরা কোন প্রসঙ্গ কাঠামো ব্যবহার করে পর্বতের উচ্চতা নির্ধারণ করছি। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতের উচ্চতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে তিন ধরনের রেফারেন্স ফ্রেম বা প্রসঙ্গ কাঠামোর উল্লেখ পাওয়া যায়।

পদ্ধতি-১: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পর্বতের উচ্চতা নির্ধারণ

এ পদ্ধতিতে, একটি গড় সমুদ্রপৃষ্ঠকে রেফারেন্স ফ্রেম হিসেবে ধরে সেই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পর্বতটি কতটা উঁচু তা নির্ণয় করা হয়। এ পদ্ধতি সঠিকভাবে প্রয়োগের জন্য বিশ্বব্যাপী একটি গড় আদর্শ সমুদ্রপৃষ্ঠ নির্ধারণ করা হয়েছে। কোনো পর্বতের উচ্চতা মাপার ক্ষেত্রে এই আদর্শ সমুদ্রপৃষ্ঠকেই শূন্যদাগ ধরা হয় বা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকেই হিসাব শুরু হয়। উল্লেখ্য, এটিই বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতি। এ পদ্ধতি অনুসারে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দুই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত।

মাউন্ট এভারেস্ট
Image By Rumor Scanner

পদ্ধতি-২: পর্বতের পাদ বিন্দু থেকে উচ্চতা নির্ধারণ

পর্বতের উচ্চতা নির্ধারণে অনেকসময় পর্বতটির পাদ বিন্দু থেকে পর্বতের শীর্ষ বিন্দু পর্যন্ত পরিমাপ করা হয়। এক্ষেত্রে সমুদ্রপৃষ্ঠ বিবেচনায় নেওয়া হয় না। পর্বতটির অবস্থান যে স্থানেই হোক না কেন, পর্বতের শীর্ষ থেকে পাদ বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব মেপে এ পদ্ধতিতে পর্বতের উচ্চতা নির্ধারণ করা যায়। এ পদ্ধতি অনুসারে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বত সেটি-ই যার পাদ বিন্দু ও শীর্ষ বিন্দুর মধ্যে দূরত্ব সবচেয়ে বেশি।

পদ্ধতি-৩: পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে উচ্চতা নির্ধারণ 

এ পদ্ধতিতে পৃথিবীর কেন্দ্রকে রেফারেন্স ফ্রেম হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এরপর কোনো পর্বতের শীর্ষ পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে কতটা দূরে তা পরিমাপ করা হয়। এভাবে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে পর্বত শীর্ষের মধ্যবর্তী দূরত্ব পরিমাপ করে পর্বতের দৈর্ঘ্য নির্ণয় করা হয়। এ পদ্ধতি অনুসারে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত হবে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে ভূপৃষ্ঠের সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু।

Image By Rumor Scanner

যে পদ্ধতিতেই মাপা হোক না কেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত একই হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এমন হয় না। এর কারণ পৃথিবীর আকার ও ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য। পৃথিবীর আকার ও ভূ-প্রকৃতির কারণে এই তিন পদ্ধতি অনুসারে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন পর্বতকে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত বলা যায়। বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার করা যাক। 

উদাহরণস্বরূপ, মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রসঙ্গ কাঠামো হিসেবে সমুদ্রপৃষ্ঠ ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, গড় আদর্শ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নির্ণয় করা হয়েছে মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা। সে হিসেবে মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা প্রায় ২৯,০৩২ ফুট বা ৮৮৪৯ মিটার। পৃথিবীর গড় আদর্শ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা নির্ধারণ করলে মাউন্ট এভারেস্ট-ই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত। 

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের ‘মুয়ানা কিয়া’ নামের একটি আগ্নেয়গিরির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১৩,৮০২ ফুট বা ৪,২০৫ মিটার। যা মাউন্ট এভারেস্টের মোট উচ্চতার অর্ধেকেরও কম। কিন্তু, যদি সমুদ্রপৃষ্ঠ বিবেচনায় না নিয়ে শুধুমাত্র পাদবিন্দু থেকে শীর্ষবিন্দুর মধ্যবর্তী দৈর্ঘ্য পরিমাপ করে পর্বতের উচ্চতা নির্ণয় করা হয় তবে মুয়ানা কিয়া’র প্রকৃত উচ্চতা হলো ৩৩,৪৯৭ ফুট বা ১০,২১১ মিটার। যা স্পষ্টতই মাউন্ট এভারেস্টের থেকে বড়। এর কারণ, মুয়ানা কিয়া’র বেশিরভাগ অংশই সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে অবস্থিত। 

তবে কি মুয়ানা কিয়া’কে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বত বলা যায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব হাইল্যান্ড অ্যান্ড আইল্যান্ড এর সেন্টার ফর মাউন্টেইন স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক প্রফেসর মার্টিন প্রাইস বলেন, “এটা নির্ভর করছে আপনি কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখছেন। যদি পৃথিবীতে কোনো সমুদ্র না থাকত তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো বিতর্কই থাকত না। তাছাড়াও, সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ যেখানে সমুদ্র নেই, সেসব গ্রহের পর্বতের সাথেও তুলনা করা যেত।”

অর্থাৎ, সমুদ্রপৃষ্ঠ বিবেচনায় না নিলে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের ‘মুয়ানা কিয়া’ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বত।

অন্যদিকে, ইকুয়েডরের মাউন্ট চিম্বোরাজো আন্দিজ পর্বতমালার সবচেয়ে উঁচু পর্বত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতের তালিকায় শীর্ষ ৩০ টির মধ্যে নেই। কিন্তু, ইকুয়েডরের মাউন্ট চিম্বোরাজো পর্বতের চূড়া পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু। 

এর কারণ, আমাদের পৃথিবীকে সাধারণত গোল বলে বর্ণনা করা হয়, কিন্তু এটি আসলে পুরোপুরি গোলাকৃতির নয়। দুই মেরুর কাছে পৃথিবী কিছুটা চাপা, কাজেই আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে পৃথিবী আসলে উপ-বর্তুলাকার। আর সব গ্রহের মতোই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এবং নিজের অক্ষের উপর ঘূর্ণনের কারণে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে মেরু অঞ্চল কিছুটা চ্যাপ্টা, আর নিরক্ষীয় অঞ্চল কিছুটা চওড়া। এ কারণেই বিষুব রেখা বরাবর পৃথিবীর ব্যাসার্ধ মেরু বরাবর ব্যাসার্ধের চেয়ে ২১.৩৯ কিলোমিটার বেশি। চিম্বোরাজো পর্বত বিষুব রেখার মাত্র ১ ডিগ্রি দক্ষিণে অবস্থিত হওয়ায় পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চিম্বোরাজো পর্বতের চূড়া সবচেয়ে দূরবর্তী স্থান। পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চিম্বোরাজো পর্বতের চূড়ার এ দূরত্ব প্রায় ৩,৯৬৭ মাইল। যা কেন্দ্র থেকে এভারেস্টের চূড়ার দূরত্বের থেকেও ৬,৭৯৮ ফুট বা ২,০৭২ মিটার বেশি। 

Image By Rumor Scanne

অর্থাৎ, ইকুয়েডরের চিম্বোরাজো পর্বতের চূড়া হলো কেন্দ্র পৃথিবীর সবচেয়ে দূরবর্তী স্থান। 

তাহলে, এখন প্রশ্ন হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বত কোনটি? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রফেসর মার্টিন প্রাইস জানান, “সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বত মাউন্ট এভারেস্ট, অন্যদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠ বিবেচনায় না নিলে মুয়ানা কিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বত। যদিও চিম্বোরাজোকে সবচেয়ে বড় পর্বত দাবি করা একটু কঠিন, তবে সবকিছুই নির্ভর করছে দৃষ্টিকোণের ওপর।”

সৌরজগতের সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ কোনটি?

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বতশৃঙ্গের সন্ধান তো করা হলো। এবার সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তমান গ্রহগুলোর ব্যাপারে আসা যাক। মঙ্গলগ্রহের অলিম্পাস মন্স হলো সৌরজগতের গ্রহগুলোতে অবস্থিত সবচেয়ে বড় পর্বত। পর্বতটির উচ্চতা প্রায় ২১.৯ মিটার। যা ‘মুয়ানা কিয়া’র উচ্চতার দ্বিগুণেরও বেশি। অর্থাৎ, সৌরজগতের গ্রহগুলোতে অবস্থিত পর্বতসমূহের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু পর্বতটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বতেরও দ্বিগুণ। 

Source: Science Focus

পরিশেষে, মাউন্ট এভারেস্টকে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত না বলে বরং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত বলাই সঠিক হবে। আর পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত কোনটি?- এমন প্রশ্নের জবাবে, “সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বত মাউন্ট এভারেস্ট, সমুদ্রপৃষ্ঠ বিবেচনায় না নিলে মুয়ানা কিয়া আর পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী স্থান বিবেচনায় চিম্বোরাজো হলো সবচেয়ে বড় পর্বত”- বলাই সমীচীন হবে। 

তথ্যসূত্র

মদ্য পানের ভাইরাল ভিডিওটি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা যুব মহিলা লীগ নেত্রী তনুর নয়

গত ০১ এপ্রিল ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা শাখা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ইসরাত জাহান তনুকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যুবলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংগঠন ও শৃংখলা বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়। 

বহিষ্কারাদেশ আসার পর ফেসবুকের একাধিক পোস্টে তনুর মদ্য পানের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও এবং ভিডিওর স্থিরচিত্র প্রচার করা হয়েছে। 

মহিলা লীগ

এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ভিডিও তনুর দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন কালবেলা, বাংলা ইনসাইডার, আপন দেশ, ঠিকানা নিউজ।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা যুব মহিলা লীগ নেত্রী তনুর মদ্য পানের ভিডিও নয় এটি বরং অন্তত ২০২১ সাল থেকে ভারতের একাধিক অ্যাকাউন্ট ও পেজে ভিডিওতে প্রচার হয়ে আসছে যার সাথে তনুর কোনো সম্পর্ক নেই। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মিরা মিথুন নামে ভারতের তামিল এক অভিনেত্রীর ফ্যান পেজে ২০২২ সালের ১২ জুলাই প্রকাশিত একই ভিডিও পাওয়া যায়। এটিতে একটি গানের অডিও যুক্ত থাকায় ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে কোনো তথ্য মেলেনি। 

আরো অনুসন্ধান করে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর সুধাময় সরকার নামে একটি ভারতীয় ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই ভিডিও প্রকাশ হতে দেখা যায়। এই ভিডিওতে বাংলা ভাষায় কিছু কথোপকথন শুনতে পাওয়া যায়। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

এই দুই ভিডিও বিশ্লেষণ করে উক্ত নারীর পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া গেলেও ভিডিওটি যে ভারতেই প্রথম প্রচার হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে।

এ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ইসরাত জাহান তনু নিজেও এই ভিডিও তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে এই ভিডিও তার নয় বলে জানিয়েছেন। 

Screenshot: Facebook 

মূলত, সম্প্রতি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা যুব মহিলা লীগ নেত্রী ইসরাত জাহান তনুর মদ্য পানের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিওতে থাকা নারী তনু নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের এক নারীর মদ্য পানের অন্তত আড়াই বছরের পুরোনো ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, ভারতের এক নারীর মদ্য পানের ভিডিওকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা যুব মহিলা লীগ নেত্রী তনুর ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র