Home Blog Page 369

কাতার ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ করেনি

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকের একাধিক পোস্টে কাতার  ভারতীয় পেঁয়াজ নিষিদ্ধ করেছে শীর্ষক দাবি প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।  

ভারতীয় পেঁয়াজ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) ।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কাতারে ভারতীয় পেঁয়াজ নিষিদ্ধ হয়নি বরং ভারতই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। তবে কাতারের বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে থাকা আমদানি পণ্যের তালিকায় ভারতীয় পেঁয়াজের নাম রয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কাতারের সংবাদমাধ্যম কাতার ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পেঁয়াজ রপ্তানি নতুন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ভারত। এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে দেশটি এ পণ্য রপ্তানি স্থগিত রেখেছিল। সে সময় বলা হয়েছিল, ৩১ মার্চ পর্যন্ত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এবার ফের নতুন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য রপ্তানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

তবে এই প্রতিবেদনসহ দেশটির কোনো সংবাদমাধ্যমেই কাতার কর্তৃক ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ মেলেনি।  

এ বিষয়ে পরবর্তী অনুসন্ধানে কাতারের বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত তথ্যের বিষয়ে খোঁজ করেছে রিউমর স্ক্যানার। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ বা অন্য কোনো পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো তথ্য এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। ওয়েবসাইটটিতে আমদানি পণ্যের মূল্য তালিকা দেওয়া রয়েছে যা নিয়মিত হালনাগাদ হয়ে থাকে। এই তালিকায় ভারতীয় লাল পেঁয়াজের নাম উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে। মূল্য তালিকাটির ৪ এপ্রিল এবং সর্বশেষ ১৮ এপ্রিলের হালনাগাদেই এই পেঁয়াজের বিষয় উল্লেখ পাওয়া গেছে।  

মূলত, কাতারে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে শীর্ষক দাবি সম্বলিত কিছু পোস্ট ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এই দাবির কোনো সত্যতা মেলেনি। প্রকৃতপক্ষে, ভারতই অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। 

সুতরাং, কাতার কর্তৃক ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মুসলমানরা মানসিকভাবে অসুস্থ ও উন্মাদ বলে মন্তব্য করেননি লিওনেল মেসি

0

আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি তার পেশাদার ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময় বার্সেলোনা ক্লাবের হয়ে খেলেছেন এবং এই ক্লাবের হয়ে অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন। মেসি ৮ বার ব্যালন ডি’অর  অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন এবং ২০২২ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেন। বর্তমানে তিনি মেজর লিগ সকার ক্লাব ইন্টার মায়ামি এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলেন।

সম্প্রতি লিওনেল মেসিকে নিয়ে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত ভিডিওতে দাবি করা হয়, “স্কাই নিউজ চ্যানেলে মেসি বলেছিলঃ কেন এই মুসলিমরা রমজানে তারাবিহ এর নামাজ পড়ে? কেন এই মুসলিমরা রমজানে রোজা রেখে খাবার ও পানীয় ছেড়ে দেয়? প্রকৃতপক্ষে, এই মুসলিমরা মানসিকভাবে অসুস্থ এবং উন্মাদ এবং এরকম মুসলমানরা আমার ভক্ত হওয়াতে আমি সম্মানিত নই।”

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এ বিষয়ে ফেসবুকে সর্বাধিক ভাইরাল একটি ভিডিও প্রায় ৯ লক্ষ ৬৪ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে, ভিডিওটি প্রায় ১০ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে এবং এতে প্রায় ৭ হাজার ৬০০ টি মন্তব্য করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি মুসলমানরা মানসিকভাবে অসুস্থ ও উন্মাদ বলে কোনো মন্তব্য করেননি বরং একাধিক ভুল তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, ভিডিওটির এক কোণে ‘Mahfuj Ibna-Al Delowar’ নামে এক ব্যক্তির নাম ভিডিও কার্টেসি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই সূত্রে গত ১ ফেব্রুয়ারি ‘Mahfuj Ibn Al-DelowAr’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে একই ভিডিও (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। জনাব মাহফুজের উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওতে থাকা তথ্যটি তিনি ‘শাইখ মুনীর আস সাদী আল আদানী’ নামের এক ব্যক্তির বক্তব্য থেকে পেয়েছেন।

এই সূত্রে আরবি ভাষায় কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আরবি নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে শায়খ মুনির আস-সাদি আল-আদানি’র মেসিকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। আরবি ভাষার বক্তব্যটি অনুবাদ করে জানা যায় তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, “আজ আমি এই ঘৃণ্য ও অপবিত্র মেসি সম্পর্কে শুনেছি—বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে, আমরা কেন তাকে সমর্থন করি এবং ভালোবাসি। স্কাই চ্যানেলের একটি সাক্ষাৎকারে সে বলেছে, “রমজানে মুসলিমরা কেন তারাবিহ নামাজ পড়ে? এবং কেন তারা সারাদিন খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকে?” সে তাদেরকে (মুসলিমদের) অসুস্থ বলে আখ্যায়িত করেছে এবং বলেছে যে মুসলমানদের সমর্থন পাওয়া তার জন্য সম্মানের বিষয় নয়। এই ঘৃণ্য, অপবিত্র ব্যক্তি সম্পর্কে আপনাদের কি মতামত? হ্যাঁ, সেই দুষ্ট, খ্রিষ্টান অবিশ্বাসী। হ্যাঁ, অর্থাৎ আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া মুসলিম যুবকেরা প্রায় তার প্রতি উন্মাদ হয়ে যায়। দেখুন, সে মুসলিমদের সম্পর্কে কি বলে। আল্লাহর কসম, এমন একজন ব্যক্তি কি বলে দেখুন। আপনাদের কাছে আমি অনুরোধ করছি যে এই ব্যক্তির নোংরামি ও তার অপবিত্রতা মুসলিমদের মধ্যে ছড়িয়ে দিন, যাতে তারা তাকে আঁকড়ে না ধরে, না ভালোবাসে, এমনকি তার ছবির দিকেও না তাকায়।”

অর্থাৎ শায়খ মুনির আস-সাদি আল-আদানি দাবি করেছেন যে, স্কাই চ্যানেলে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে লিওনেল মেসি মুসলিমদের রমজান মাসে খাদ্য ও পানীয় ত্যাগ এবং তারাবিহ নামাজ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন এবং মুসলিমদেরকে মানসিকভাবে অসুস্থ ও উন্মাদ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরো দাবি করেছেন যে, মেসি বলেছেন মুসলিমদের সমর্থন পাওয়া তার জন্য কোনো সম্মানের বিষয় নয়।

এই বিষয়ে সত্যতা যাচাই করার জন্য আমরা স্কাই টিভি এবং স্কাই স্পোর্টসের ওয়েবসাইট এবং সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি, কিন্তু মেসির এমন কোনো মন্তব্যের কোনো প্রমাণ সেখানে পাওয়া যায়নি। মেসির মতো একজন প্রখ্যাত ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব যদি ধর্মীয় বিষয়ে এমন আপত্তিকর মন্তব্য করতেন, তা নিশ্চিতভাবে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত হতো। কিন্তু মেসির এমন কোনো মন্তব্যের তথ্য বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি। এর ফলে এটি পরিষ্কার যে মেসির বিরুদ্ধে করা এই দাবির কোনো বাস্তবিক ভিত্তি নেই।

তবে শায়খ মুনীর আস সাদী আল আদানী বক্তব্যের একটি অংশ যেখানে তিনি দাবি করেন “মেসি বলেছেন মুসলিমদের সমর্থন পাওয়া তার জন্য কোনো সম্মানের বিষয় নয়” সে প্রসঙ্গে অনুসন্ধান করতে গিয়ে আরব ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান মিসবারে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। মিসবারের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেসি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। এই মন্তব্যটি প্রথম ২০১৫ সালে Wakila Info নামের একটি স্যাটায়ার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়। মূলত বিনোদনের উদ্দেশ্যে এমন কাল্পনিক মন্তব্য প্রচার করে তারা। আর্জেন্টিনা কাতার বিশ্বকাপ জেতার পর ২০১৫ সালে তৈরিকৃত এই ভুয়া মন্তব্যটি ইন্টারনেটে পুনরায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

জনাব মাহফুজ উক্ত ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে মেসি সম্পর্কিত আলোচ্য তথ্যটির পক্ষে আরবি ভাষার সংবাদের একটি ভিডিও সূত্র হিসেবে যুক্ত করেছেন।

Screenshot: Facebook.

উক্ত ভিডিওর সূত্রে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে একই ভিডিও প্রতিবেদন (আর্কাইভ)  ‘Ăm Ïñë’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি অনুবাদের মাধ্যমে জানা যায়, উক্ত ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে মেসি ইসরায়েলে এক মিলিয়ন ইউরো অনুদান দিয়েছেন। ভিডিওতে আরোও দাবি করা হয়, মেসি রমজানের পবিত্র মাসে রোজা এবং প্রার্থনা করে নিজেদের কষ্ট দেওয়ার কারণে মুসলিমদেরকে অসুস্থ বলে অপমান করেছেন।

উক্ত ভিডিওর এক কোণে আরবি ভাষায় একটি লোগো লক্ষ্য করা যায়। লোগোটির সূত্রে জানা যায় উক্ত ভিডিওটি শুরুক নিউজ (Shorouk News) নামের মিশরীয় একটি গণমাধ্যমের। তবে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ কিংবা অন্য কোনো সামাজিক মাধ্যমে এই প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ভিডিও প্রতিবেদনটিতে দাবিকৃত ইসরায়েলে মেসির অনুদানের বিষয়টি যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ম্যাগাজিন দ্য ন্যাশনাল ইন্টারেস্টে এ বিষয় নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ইসরায়েলের জন্য লিওনেল মেসির ১ মিলিয়ন ইউরো দানের তথ্যটি ভুয়া। লে কম্পেটিটর (Le Compétiteur) নামের আলজেরিয়ান প্যারোডি  ওয়েবসাইট থেকে এই তথ্যটি ছড়িয়েছিল। উক্ত প্যারোডি সাইটটিতে বিনোদনের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদন সত্য ভেবে বিষয়টি বিভিন্ন দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছিল। 

লন্ডন ভিত্তিক প্যান-আরব সংবাদ সংস্থা দ্য নিউ আরব এবং মিশরীয় গণমাধ্যম ইউম৭ (Youm7) থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, ইসরায়েলের জন্য লিওনেল মেসির ১ মিলিয়ন ইউরো দানের তথ্যটিও ভুয়া।

এছাড়া শুরুক নিউজের প্রতিবেদনের একাংশে মেসিকে ইহুদিদের তীর্থস্থান পরিদর্শনের কিছু দৃশ্য ব্যবহার করতে দেখা যায়। এমন কয়েকটি ছবি ব্যবহার করে প্রায়ই দাবি করা হয় ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়েছে মেসি। তবে উক্ত ছবিটি বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের শান্তি সফরের। ২০১৩ সালের এই সফরে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন উভয় ভূখণ্ডে ভ্রমণ করে দলটি (,,)। এছাড়া এখন অবধি ফিলিস্তিন কিংবা ইসরায়েল কোনো দেশকেই সমর্থনের কথা প্রকাশ্যে জানায়নি মেসি ।

তাছাড়া মুসলিমদের রোজা রাখা প্রসঙ্গে মেসির এরূপ মন্তব্যও বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি। শুরুক নিউজের কাছে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়ে এবং প্রতিবেদনটি বর্তমানে তাদের ওয়েবসাইট কিংবা অন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় না পাওয়ার কারণ জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলেও এখন অবধি কোনো প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসিকে নিয়ে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটির মাধ্যমে দাবি করা হয়, স্কাই চ্যানেলে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে লিওনেল মেসি মুসলিমদের রমজান মাসে খাদ্য ও পানীয় ত্যাগ এবং তারাবিহ নামাজ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন এবং মুসলিমদেরকে মানসিকভাবে অসুস্থ ও উন্মাদ বলে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। দাবি করা হয়, মেসি বলেছেন মুসলিমদের সমর্থন পাওয়া তার জন্য কোনো সম্মানের বিষয় নয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে স্কাই চ্যানেলে মেসির দেওয়া এমন কোনো মন্তব্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাছাড়া ‘মুসলিমদের সমর্থন পাওয়া তার জন্য কোনো সম্মানের বিষয় নয়’ শীর্ষক তথ্যটি ২০১৫ সালে Wakila Info নামের একটি স্যাটায়ার ফেসবুক পেজ থেকে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল পোস্টগুলোতে এ দাবির স্বপক্ষে উপস্থাপিত সূত্রগুলোও রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে ভুল বলে প্রমাণিত হয়।

সুতরাং, লিওনেল মেসি মুসলমানরা মানসিকভাবে অসুস্থ ও উন্মাদ বলেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ঢাকার চক বাজারের ছবিকে গুলশানের প্রাচীন ছবি দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, “বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে ভিআইপি এলাকা গুলশান দুই নাম্বার এলাকার প্রাচীন চিত্র” শীর্ষক শিরোনাম একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

গুলশানের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে সবচেয়ে ভাইরাল পোস্টটিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ৩২ হাজারের অধিক রিয়েক্ট পড়েছে। ৮০০ এর অধিক ব্যবহারকারী পোস্টটিতে কমেন্ট করেছেন। পোস্টটি আড়াই হাজারেরও অধিকবার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের ১৮৭২ সালের ছবি নয় বরং ১৯০৪ সালে ফ্রিটজ কাপ নামের একজন ফটোগ্রাফার ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে ছবিটি ধারণ করেন।

রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আর্কাইভ ছবির ওয়েবসাইট get archive এ  “Dacca Town Chowk – A black and white photo of an old town ” শীর্ষক শিরোনামের একটি ওয়েবপেজে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Source: get archive

উক্ত ছবির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ১৯০৪ সালে ফ্রিটজ কাপ নামের ফটোগ্রাফার ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে ছবিটি ধারণ করেন। 

পাশপাশি, ফটো ম্যানেজমেন্ট ও শেয়ারিং প্লাটফর্ম flickr এর ওয়েবসাইটে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর প্রকাশিত “Classic Bangladesh Photos” শীর্ষক শিরোনামের একটি ওয়েবপেজেও আলোচিত ছবিটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Source: flickr

উক্ত ছবির বিস্তারিত বিবরণী থেকেও ছবিটি  ১৯০৪ সালে ঢাকার চক বাজার মোড় থেকে  ধারণকৃত বলে জানা যায়। বর্তমানে স্থানটি নাজিমউদ্দিন রোড নামে পরিচিত।

মূলত, ১৯০৪ সালে ফ্রিটজ কাপ নামের এক ফটোগ্রাফার ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে বাজারের দোকানপাটের একটি ছবি ধারণ করেন। উক্ত ছবিকেই সম্প্রতি ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের ১৮৭২ সালের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ঢাকার চকবাজারের ছবিকে গুলশানের ১৮৭২ সালের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বলাৎকার হলে ৯৯৯ এ ফোন দিতে হবে শীর্ষক ব্ল্যাকবোর্ডের লেখাটি সম্পাদিত 

0

সম্প্রতি, “বলাৎকার হলে ৯৯৯ এ ফোন দিতে হবে” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ব্ল্যাকবোর্ডের ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

বলাৎকার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছড়িয়ে পড়া ব্ল্যাকবোর্ডের মূল ছবিটিতে “বলাৎকার হলে ৯৯৯ এ ফোন দিতে হবে” শীর্ষক কোনো লেখা ছিল না  বরং শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের সময় “বয়কট ইন্ডিয়ান পণ্য” শীর্ষক একটি লেখা ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে এডিট করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের ভেরিফাইড ফেসবুক (আর্কাইভ) পেজে গত ১৮ এপ্রিল প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে ব্ল্যাকবোর্ডের দৃশ্যটিও রয়েছে। চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ধারণকৃত এই ভিডিওতে একজন শিক্ষককে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতে দেখা যায়। সেসময় পাঠদান কক্ষের ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা ছিল ‘বয়কট ইন্ডিয়ান পণ্য।’

Comparison Image By Rumor Scanner

যা থেকে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে, ব্ল্যাকবোর্ডের “বয়কট ইন্ডিয়ান পণ্য” লেখাটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে এডিট বা সম্পাদনা করে তার স্থলে “বলাৎকার হলে ৯৯৯ এ ফোন দিতে হবে” লেখাটি যুক্ত করা হয়েছে।

মূলত, শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের সময় ব্ল্যাকবোর্ডে “বয়কট ইন্ডিয়ান পণ্য” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ভিডিও স্ক্রিনশট ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায্যে এডিট বা সম্পাদনা করে সম্প্রতি শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের সময় ব্ল্যাকবোর্ডে শিক্ষক “বলাৎকার হলে ৯৯৯ এ ফোন দিতে হবে” শীর্ষক বাক্য লিখেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, পাঠদানের সময় ব্ল্যাকবোর্ডে “বলাৎকার হলে ৯৯৯ এ ফোন দিতে হবে” শীর্ষক লেখাটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

শাকিব খান মারা যাননি, টিকটকে প্রায় ছয় লাখ ভিউ পেয়েছে ভুয়া দাবি

গত ২৭ মার্চ টিকটকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অভিনেতা শাকিব খান মৃত্যুবরণ করেছেন।

শাকিব খান মারা

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় উক্ত ভিডিওটি প্রায় ছয় লাখ বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শাকিব খান মারা যাননি বরং সংগীত শিল্পী সাদি মহম্মদের মৃত্যুতে তার ভাই শিবলী মহম্মদের স্মৃতিচারণের একটি ভিডিও ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানের মূল ধারার সংবাদমাধ্যম চ্যানেল আই এর ফেসবুক পেজে চলতি বছরের ১৪ মার্চ তারিখে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে দেখা যায়, জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার সাদি মহম্মদের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে তাঁর ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ শোকপ্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করেন। সেখানে মানুষের প্রতি নিজের ভাইয়ের অভিমানের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। শিবলী মহম্মদের বলা কথা বলার অংশ কেটে এবং এডিট করে টাইটেলে শাকিব খানের মৃত্যু হয়েছে দাবিতে টিকটকে প্রচার করা হয়। টিকটকে  প্রচারিত সেই ভিডিওতে কোথাও শাকিব খানের নাম উল্লেখ করা হয়নি।  

অধিকতর নিশ্চিত হতে শাকিব খানের মৃত্যুর বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথম সারির কোনো গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে কি না অনুসন্ধান করলে এ বিষয়ে কোনো গণমাধ্যমে কোনাে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। শাকিব খান বাংলাদেশী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির একজন জনপ্রিয় নায়ক তার মৃত্যু ঘটে থাকলে তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ হতো। কিন্তু এরকম কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

মূলত, জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার সাদি মহম্মদের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে তাঁর ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ চ্যানেলে আই’তে শোকপ্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করেন। উক্ত ভিডিওতে শিবলী মহম্মদের বলা কথাগুলোই কেটে এবং এডিট করে টাইটেলে শাকিব খানের মৃত্যু হয়েছে দাবি করে টিকটকে ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, শাকিব খানের মৃত্যু হয়েছে দাবিতে টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আতিফ আসলামের কনসার্টে মুনজেরিন শহীদ যাননি, ভিন্ন নারীর ছবি দিয়ে ভুল দাবি ফেসবুকে

0

গত ১৯ এপ্রিল ঢাকায় একটি কনসার্টে গান গেয়ে শোনান পাকিস্তানের সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম। এই কনসার্টে অনলাইন শিক্ষা প্লাটফর্ম টেন মিনিট স্কুলের শিক্ষক এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর মুনজেরিন শহীদ উপস্থিত হন দাবি করে ফেসবুকের কিছু পোস্টে বলা হচ্ছে, তিনি স্টেজে উঠে আতিফকে জড়িয়ে ধরেন।

আতিফ আসলামের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকায় আতিফ আসলামের সাম্প্রতিক কনসার্টের মাঝেই স্টেজে উঠে আতিফকে জড়িয়ে ধরা নারী মুনজেরিন শহীদ নয় বরং মুনজেরিন এই কনসার্টেই উপস্থিত ছিলেন না। ভিন্ন নারীর ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে নারী ভক্ত কর্তৃক আতিফ আসলামকে জড়িয়ে ধরার মুহূর্তের ভিডিও ফুটেজ ওপেন সোর্স থেকে খুঁজে বের করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত নারীর সাথে মুনজেরিন শহীদের শারীরিক গঠন, উচ্চতাসহ দৃশ্যমান একাধিক অমিল পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও উক্ত নারীর চোখে চশমা দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু মুনজেরিন শহীদ সবসময় চশমা ব্যবহার করে থাকেন।

Comparison: Rumor Scanner 

এ বিষয়ে জানতে মুনজেরিনের স্বামী এবং টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিকের সাথে কথা বলেছে রিউমর স্ক্যানার। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, তিনি বা মুনজেরিন কেউই সেদিন কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন না।

মূলত, গত ১৯ এপ্রিল ঢাকায় একটি কনসার্টে গান গেয়ে শোনান পাকিস্তানের সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম। এই কনসার্টে অনলাইন শিক্ষা প্লাটফর্ম টেন মিনিট স্কুলের শিক্ষক মুনজেরিন শহীদ উপস্থিত হন দাবি করে ফেসবুকের কিছু পোস্টে বলা হচ্ছে, তিনি স্টেজে উঠে আতিফকে জড়িয়ে ধরেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, দাবিটি সঠিক নয়। এই নারী মুনজেরিন শহীদ নয়। তাছাড়া, মুনজেরিন সেদিন এই কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন না বলে নিশ্চিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার৷ 

সুতরাং, ঢাকায় কনসার্টে আতিফ আসলামকে জড়িয়ে ধরেন মুনজেরিন শহীদ শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।   

তথ্যসূত্র

প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদানের ভাইরাল ক্যাম্পেইনটি ভুয়া

0

সম্প্রতি “PMYP প্রধানমন্ত্রী ল্যাপটপ স্কিম 2024 আবেদনপত্র গ্রহণ করা শুরু করেছে” শীর্ষক আর্থিক সীমাবদ্ধতায় থাকা মানুষদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদানের একটি ক্যাম্পেইন লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

বিনামূল্যে ল্যাপটপ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নাম জড়িয়ে আর্থিক সীমাবদ্ধতায় থাকা মানুষদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদানের ক্যাম্পেইনটি আসল নয় বরং প্রতারণার উদ্দেশ্য এই ক্যাম্পেইনটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ক্যাম্পেইনের লিংকটিতে (আর্কাইভ) ঢুকলে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে, বিনামূল্যে ল্যাপটপ পেতে হলে বয়স সীমা ১০ থেকে ৫০ এর মধ্যে হতে হবে এবং লিখতে ও পড়তে জানা একজন শিক্ষার্থী হতে হবে।

Screenshot: Scam Website

পরবর্তী ধাপে গেলে আবেদন গৃহীত হওয়ার একটি বার্তা সামনে আসে এবং ল্যাপটপ পাওয়ার যোগ্য কিনা সেটি নিশ্চিত করতে পরবর্তী ধাপে যেতে বলা হয়। 

Screenshot: Scam Website

কিছুক্ষণ লোডিং হওয়ার পর আরেকটি পেজে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে পুনরায় নিজের নাম দেওয়ার একটি ঘর আসে এবং ল্যাপটপ নেওয়ার উদ্দেশ্য নির্বাচন করতে বলা হয়। তথ্য দেওয়ার পর ‘অনুরোধ’ বাটন চাপতে বলা হয়।

Screenshot: Scam Website

পরের পেজে ল্যাপটপ পাওয়ার জন্য অনুমোদিত হয়েছেন বলে অভিনন্দন জানানো হয়। তবে এখানেই শেষ নয়। এবার ১৫ জন বন্ধু বা ৫টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি বার্তা শেয়ার করতে বলে হয় এই কাজটি সম্পূর্ণ করলেই ১৫ মিনিটের মধ্যে একটি নিশ্চিতকরণ এসএমএস পাওয়া যাবে বলা হয়।

Screenshot: Scam Website

কিন্তু শেয়ার দেওয়ার পর আরেকটি পেজে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে আইফোন, ল্যাপটপ, আইপ্যাড এবং অন্যান্য উপহার প্রলোভন দেখিয়ে কিছু স্প্যাম লিংকে ক্লিক করতে বলা হয়।

Screenshot: Scam Website

হোয়াটসঅ্যাপে ছড়ানো আর্থিক সীমাবদ্ধতায় থাকা মানুষদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদান করার ক্যাম্পেইন লিংকের প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করা জানা যাচ্ছে, এই ক্যাম্পেইনে কোনো ল্যাপটপ প্রদান করা হচ্ছে না বরং ল্যাপটপ প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে।

ক্যাম্পেইন ওয়েবসাইট পর্যালোচনা

ল্যাপটপ প্রদানের এই ওয়েবসাইটটি পর্যালোচনা করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। ওয়েবসাইটি কোনো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নয়, এমনকি বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদান করা হবে দাবি করা হলেও এসব ল্যাপটপ কে দিবে এবং কেনই বা দেওয়া হবে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য সেখানে দেওয়া নেই।

ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় ধাপে এখন পর্যন্ত কতজন এই অফারের সুবিধা নিয়েছে তার পরিসংখ্যান দেখানো হয়। এই পরিসংখ্যান ৯৮৭০০ থেকে শুরু হয় এবং ক্রমশ বাড়তে থাকে। তবে, ক্যাম্পেইনের পেছনের ধাপে ফিরে আবার এই ধাপে আসলে প্রতিবারই ৯৮৭০০ থেকে পরিসংখ্যান শুরু হয়। যার ফলে স্পষ্ট হয় যে, এই পরিসংখ্যানটি বানোয়াট।

Screenshot: Scam Website

শুরুতে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ দেওয়া হবে বলা হয়েছে কিন্তু একটি ধাপে গিয়ে ল্যাপটপ নেওয়ার উদ্দেশ্য নির্বাচন করতে গিয়ে অপশনে শিক্ষার উদ্দেশ্য ছাড়াও ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য এবং অন্যান্য উদ্দেশ্যের অপশন নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

Screenshot: Scam Website

তাছাড়া ক্যাম্পেইনের ওয়েবসাইটটিতে গেলে ল্যাপটপ পেয়েছে জানিয়ে বেশ কয়েকটি রিভিউ লক্ষ্য করা যায়। রিভিউ গুলোর বাক্য গঠনে অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া সেখানে একটি মন্তব্যের ঘর থাকলেও সেখানে কোনো মন্তব্যই করা যায় না। অর্থাৎ ক্যাম্পেইন ওয়েবসাইটে যে রিভিউগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলোও ভুয়া।

Screenshot: Scam Website

তাছাড়া PMYP এর বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, এর পূর্ণরূপ Prime Minister’s Youth Programme, যা পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ২০১৩ সালে শুরু করেন। যুবদের মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং অর্থপূর্ণ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। পাকিস্তানের উচ্চ শিক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় ২০২৩ সালেও এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদান করা হয়েছে। তবে সে স্কিমের ওয়েবসাইট ভিন্ন।  

এছাড়া অনুসন্ধানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই নামে বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদানের কোনো স্কিমের তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এসব ভুয়া ক্যাম্পেইন ছড়ানোর উদ্দেশ্য কী?

বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট নকল করে কিংবা ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে আকর্ষণীয় অফারের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়।

এসব ভুয়া ক্যাম্পেইনের নামে স্প্যাম ও ফিশিং লিংক ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব ফিশিং লিংকের মাধ্যমে ই-মেইল, পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের পিনকোড, মোবাইল ব্যাংকিং সেবার পিনকোড সহ আরো অনেক ব্যক্তিগত অথবা পেশাগত তথ্য চুরি করা হয়। 

চুরি করা এসব তথ্য দিয়ে কখনো কখনো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও ইমেইলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার সম্ভব হয়। আবার ব্যক্তিগত এসব অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেসব থেকে অন্যদের ফিশিং লিংক পাঠানো, অন্যদের থেকে আর্থিক সহায়তা চাওয়া কিংবা ব্ল্যাকমেইলের ঘটনাও ঘটতে পারে।

মূলত, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে PMYP নামের একটি উদ্যোগের অধীনে আর্থিক সীমাবদ্ধতায় থাকা মানুষদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদান করা হবে দাবিতে একটি ক্যাম্পেইন লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে উক্ত ক্যাম্পেইনের সে লিংকে গেলে ল্যাপটপ প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ধাপ পূরণ করতে বলা হয়। সর্বশেষ ধাপে একটি বার্তা ১৫ জন বা ৫টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠালেই ল্যাপটপ পাওয়া যাবে বলা হলেও সে ধাপ শেষ করলে আবার কিছু স্প্যাম ও সার্ভে লিংকে ক্লিক করতে বলা হচ্ছে। তাছাড়া PMYP নামের বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদানের উদ্যোগটি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর, সে স্কিমের ওয়েবসাইটের সাথে আলোচ্য ওয়েবসাইটের কোনো মিল নেই। এছাড়া  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই নামে বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদানের কোনো স্কিমের তথ্য বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে একইভাবে স্বনামধন্য বিভিন্ন সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট নকল করে প্রতারণার উদ্দেশ্য এমন ক্যাম্পেইন ছড়ালে পাঠকদের সতর্ক করার উদ্দেশ্যে সেসব যাচাই করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলো পড়ুন এখানে

অর্থাৎ,প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে PMYP নামের একটি উদ্যোগের অধীনে আর্থিক সীমাবদ্ধতায় থাকা মানুষদের বিনামূল্যে ল্যাপটপ প্রদান করা হবে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ক্যাম্পেইনটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

তথ্যসূত্র

প্রশিক্ষণের ভিডিওটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নয়

সম্প্রতি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্রেনিং এর দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছ। 

প্রশিক্ষণের

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকের এই ভিডিওটি এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্রেনিং দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশেরই নয় বরং, তুরস্কের জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের (সামরিক বিশ্ববিদ্যালয়)  পুরোনো একটি ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে । 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে তুরস্কের সামরিক বিশ্ববিদ্যালয় Milli Savunma Üniversitesi (National Defense University-জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়) এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘MSÜ Kara Astsubay Meslek Yüksekokulu 2018 Yıl Sonu Askeri Eğitimi Güç Geliştirme Parkuru’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটির বিষয়ে জানা যায়, এটি মিলি সাভুনমা ইউনিভার্সিটির (এমএসইউ) ল্যান্ড পেটি অফিসার ভোকেশনাল স্কুল ২০১৮ সনের সমাপনী সামরিক প্রশিক্ষণ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট ট্র্যাকের দৃশ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়টির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে জানা যায়, এটি মূলত একটি সামরিক বিশ্ববিদ্যালয় যা তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত। 

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্রেনিংয়ের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি তুরস্কের একটি সামরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। অন্তত ২০১৮ সাল থেকে ইন্টারনেটে ভিডিওটি পাওয়া যাচ্ছে। 

সুতরাং, তুরস্কের জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো একটি ভিডিওকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের ভিডিও দাবিতে ইইন্টারনেটে প্রচারিত হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সাকিব আল হাসানের সাক্ষাৎকারের পুরোনো ভিডিও ব্যবহার করে জুয়ার অ্যাপের ভুয়া বিজ্ঞাপন ফেসবুকে 

0

সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান Crazy Time Win নামে একটি ক্যাসিনোর অ্যাপ্লিকেশনের প্রচারণা চালাচ্ছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

জুয়ার অ্যাপের

Crazy Time Win নামে একটি পেজ থেকে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিব আল হাসান Crazy Time Win নামের কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি বরং ২০২০ সালে ক্রিকবাজকে দেওয়া তার একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রচার করা হচ্ছে।  

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটিতে যুক্ত সাকিব আল হাসানের কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ক্রিকেট বিষয়ক ভারতীয় ওয়েবসাইট Cricbuzz এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের  ২৪ জুন Cricbuzz In Conversation ft. Shakib Al Hasan: Bangladesh’s Poster Boy শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সাকিব আল হাসানের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। দুটোতেই তার পোশাক, অঙ্গভঙ্গি এবং কথা বলার স্টাইলের মিল দেখতে পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান  Cricbuzz In Conversation এর একটি অনলাইন ইন্টারভিউতে উপস্থাপক হার্শা ভোগলের সাথে তার পরিবার, ক্রিকেটে অলরাউন্ডার হয়ে উঠার উত্থান, ২০১৯ বিশ্বকাপে তার স্বপ্ন এসব নিয়ে আলোচনা করেছেন। উক্ত ভিডিওতে সাকিবকে কোনো জুয়ার অ্যাপ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়নি। সাকিব আল হাসানের উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিটির কোনো সম্পর্ক নেই।

তাছাড়া, এই ভিডিওতে সাকিবের কণ্ঠস্বরের পরিবর্তে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নকল কণ্ঠস্বর বসিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

সাকিবের জুয়ার বিজ্ঞাপনের কথিত ভিডিওটি Crazy Time Win নামে যে পেজ থেকে প্রচার করা হয়েছে সেটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় এতে অনলাইন ভিত্তিক জুয়া খেলার প্রচারণামূলক পোস্ট রয়েছে। এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে ফিলিপাইনের জামবোয়াঙ্গা শহরের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে তথ্য গোপন রাখায় পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে পেজটি কোন দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে তা জানা সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি জানা যায় উক্ত পেজটি ২০২২ সালের ২৩ মার্চ তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot collage: Rumor Scanner 

মূলত, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ২০২০ সালে খেলা বিষয়ক একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে একটি ইন্টারভিউ টকশো এর ভিডিও প্রচার করা হয়। সম্প্রতি উক্ত ভিডিওর কিছু অংশ (১ মিনিট ২৫ সেকেন্ড থেকে) ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাতে ভিন্ন একটি ভয়েসওভার এবং জুয়ার অ্যাপের প্রচারণার ভিডিও যুক্ত করে দাবি করা হচ্ছে, সাকিব আল হাসান জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করছেন। প্রকৃতপক্ষে, সাকিব আল হাসান এমন কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা করেননি।

সুতরাং, সাকিব আল হাসান Crazy Time Win নামের অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিষয়টি স্ক্যাম বা প্রতারণা। 

তথ্যসূত্র

বৃষ্টির পানির সাথে মার্কেটে মাছ প্রবেশের এই ভিডিওটি দুবাইয়ের নয়

গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ভারী বৃষ্টিপাতে দুবাইয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। এতে পথঘাট তলিয়ে যায় এবং বিভিন্ন এলাকার আবাসিক ভবনেও পানি ঢুকেছে। এরই প্রেক্ষিতে  সামাজিক মাধ্যমে দুবাইয়ে বৃষ্টির পানির সাথে মাছ ঢুকছে দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি গ্রোসারি দোকানের মেঝেতে অল্প পানিতে কিছু মাছ লাফাচ্ছে এবং দোকানের এক পাশে কিছু মানুষ দাড়িয়ে তা দেখছে। 

দুবাইয়ে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দুবাইয়ে মার্কেটে বৃষ্টির পানির সাথে মাছ ঢুকার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি দুবাইয়ের সাম্প্রতিক বন্যার সময়ের কোনো ভিডিও নয় বরং ভিডিওটি জর্জিয়ার তিবিলিসি শহরের একটি মার্কেটের। যা  অন্তত ২০১৮ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা UPI (United Press International) এর ওয়েরসাইটে ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী ‘Broken tank fills grocery store aisle with flopping fish’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জর্জিয়ার একটি মুদি দোকানেে একটি অ্যাকোয়ারিয়াম ভেঙে যাওয়ার পর একজন ক্রেতা দোকানের মেঝেতে মাছের ছোটাছুটির ভিডিও ধারণ করেছেন।’

প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, “ইউটিউবে ভিডিওটি শেয়ার করে ভিডিও ধারণকারী লিখেছেন, অ্যাকুয়ারিয়ামটি ভেঙে গেছে।” “সব মাছই মেঝেতে ছিল। কর্মীরা মাছগুলো বাঁচানোর চেষ্টা করছিল।”

আরও অনুসন্ধানে The Mirror ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী ‘Dozens of live fish left flopping around supermarket floor when tank smashes’ শীর্ষক শিরোনামে কাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ’জর্জিয়ার তিবলিসিতে একটি ফরাসি খুচরা বিক্রেতার শাখায় একটি ট্যাঙ্ক ভেঙে গেছে এবং অসহায় কর্মীরা মাছগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করার সময় ক্রেতারা হতবাক হয়ে দেখছিলেন।’ 

Screenshot: Mirror 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, জর্জিয়ার তিবিলিসিতে অবস্থিত ফরাসি খুচরা বিক্রেতা কারফুরের একটি শাখায় একটি অ্যাকুয়ারিয়াম ভেঙে ডজন ডজন মাছ সুপারমার্কেটের মেঝেতে পড়ে যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, মাছগুলো মেঝেতে অল্প পানিতে লাফাচ্ছিল, আর দোকানের কর্মীরা জাল দিয়ে মাছগুলোকে ধরার চেষ্টা করছিলেন। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে কিছু ক্রেতা হতবাক হয়ে দেখছিলেন, আবার কেউ কেউ দোকান থেকে চলে যাচ্ছিলেন।

এই ঘটনায় অ্যাকুয়ারিয়ামটি কীভাবে ভাঙল, তা স্পষ্ট নয় উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ঘটনার পর একজন দর্শক তার ফোনে এই বিশৃঙ্খলার ভিডিও ধারণ করেছেন।

মূলত, দুবাইয়ে গত সপ্তাহে (১৬ এপ্রিল) ভারী বৃষ্টির পর বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার ফলে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায় এবং কিছু এলাকার আবাসিক ভবনেও পানি ঢুকে যায়। বন্যা শুরু হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে দুবাইয়ে মার্কেটে বৃষ্টির পানির সাথে মাছ ঢুকছে দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক দুবাইয়ে ভারী বৃষ্টিপাত থেকে সৃষ্ট বন্যার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসির একটি মার্কেটের। অন্তত ২০১৮ সাল থেকে ইন্টারনেটে এই ভিডিওটি পাওয়া যাচ্ছে।

সুতরাং, জর্জিয়ার পুরোনো ভিডিওকে দুবাইয়ে সাম্প্রতিক বন্যায় মার্কেটে বৃষ্টির পানির সাথে মাছ ঢুকার দৃশ্য দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র