Home Blog Page 368

ডিপফেকের শিকার কনটেন্ট ক্রিয়েটর মামুন ও ভাইরাল ছাত্রী তিশা

বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে অন্যতম দুই জুটির একটি হলো টিকটকার মামুন ও লায়লা। অন্যটি হলো ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬০ বছর বয়সী সাবেক দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ এবং তার স্ত্রী সিনথিয়া ইসলাম তিশা। 

সম্প্রতি, এই দুই জুটিকে ঘিরে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যায় যে প্রিন্স মামুন ও সিনথিয়া ইসলাম তিশা একই বিছানায়। ভিডিওটি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, তিশা এখন মামুনের। 

মামুন ও ভাইরাল

উক্ত ভিডিও সম্বলিত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

এই বিষয়ে ফেসবুকে ভাইরাল একটি ভিডিও প্রায় ৫৪ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৬ হাজার ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে, ভিডিওটি ১০১ বার শেয়ার করা হয়েছে এবং এতে ৭৭৩টি মন্তব্য করা হয়েছে।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 
এ বিষয়ে টিকটকে ভাইরাল একটি ভিডিও ৫৭ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে, ভিডিওটি ৭৬২ বার শেয়ার করা হয়েছে এবং এতে ১ হাজার ৩ শত মন্তব্য করা হয়েছে।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মামুন ও তিশা এক বিছানায় থাকার ভাইরাল ভিডিওটি বাস্তব নয় বরং এটি একটি ডিপফেক ভিডিও। প্রকৃতপক্ষে, মূল ভিডিওতে মামুনের পাশে ছিলেন লায়লা। প্রযুক্তির সাহায্যে লায়লার চেহারা পরিবর্তন করে তার স্থানে তিশার মুখ বসানো হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে দাবিটির সূত্রপাত খোঁজার চেষ্টা করেছে রিউমর স্ক্যানার৷ এই বিষয়ে ভাইরাল একটি ভিডিওতে ‘jibon 2.5’ নামের একটি জলছাপ লক্ষ্য যায়। এই সূত্রে ‘alaminkpzofficial’ নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এই টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচ্য ভিডিওটি (আর্কাইভ) প্রচার হতে দেখা যায়।

উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে গত ৩ এপ্রিল প্রকাশিত ঠিক একই রকম একটি ভিডিও (আর্কাইভ) পাওয়া যায়, তবে এই সংস্করণে মামুনের পাশে তিশার পরিবর্তে খন্দকার মুশতাক আহমেদকে দেখা যায়।

পরবর্তীতে, আলোচ্য ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ২০২৩ সালের ৯ আগস্ট লায়লার ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেলে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। মূল ভিডিওতে মামুনের পাশে তিশা কিংবা মুশতাক নয়, বরং লায়লাকে দেখা যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner.

২০২১ সালের ২ জুলাই লায়লার ফেসবুক পেজ এবং ৩ জুলাই ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এই ভিডিওটির বর্ধিত অংশ প্রচারিত হয়। মূল ভিডিওতে পরবর্তী ভ্লগে মাসুম ও লায়লা কীভাবে গ্রামে গিয়েছিলেন তা দেখানো হবে বলে জানান মামুন।

এই সূত্রে ২০২৩ সালের ৯ জুলাই লায়লার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ‘ঈদে বাড়ীতে যাওয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

সুতরাং, প্রযুক্তির সাহায্যে মামুনের পাশে থাকা লায়লার মুখাবয়ব পরিবর্তন করে তিশার মুখাবয়ব সংযোজন করে আলোচ্য ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ, এটি একটি ডিপফেক ভিডিও।

ডিপফেক হল বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু নকল বা কিছুটা পরিবর্তিত কন্টেন্ট যা ভিডিও বা অডিওর উপাদান সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়। ডিপফেক ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তির মুখের অবয়ব বা ভয়েসকে অন্য কারোর সাথে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রযুক্তির সহায়তায় একজন ব্যক্তির এমন কিছু ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা তিনি নিজে বলেননি বা করেননি।

মূলত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচিত দুই জুটি হলো মামুন-লায়লা এবং মোশতাক-তিশা। সম্প্রতি মামুন-তিশা একই বিছানায় দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল এই ভিডিওটি মূলত ডিপফেক প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। মূল ভিডিওতে মামুনের পাশে ছিলেন লায়লা, কিন্তু প্রযুক্তির সাহায্যে লায়লার মুখাবয়ব পরিবর্তন করে তাতে তিশার মুখাবয়ব যোগ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একাধিক ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেসব প্রতিবেদন একত্রে দেখুন এখানে

সুতরাং, মামুন ও তিশা এক বিছানায় থাকার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

ফুলবাড়িতে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ শিক্ষক আটক দাবিতে বাংলাদেশ প্রতিদিন সংবাদ প্রকাশ করেনি

0

সম্প্রতি, জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন এর অনলাইন সংস্করণ ওয়েবসাইটে ‘ফুলবাড়িতে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ শিক্ষক আটক,গণধোলায়’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে দাবি করে ফেসবুকে কথিত সংবাদটির একটি স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে। স্ক্রিনশটটিতে দুজনের (পুরুষ ও নারী) ছবিও আছে। তবে এডিটের মাধ্যমে নারীর মুখ ঝাপসা করে দেওয়া হয়। 

ছাত্রীর সঙ্গে

ফেসবুকে প্রচারিত এ সংক্রান্ত পোস্টগুলো দেখুন  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘‘ফুলবাড়িতে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ শিক্ষক আটক,গণধোলাই’ শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিন  কোনো সংবাদ প্রকাশিত করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিদিন এর ২০১৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট নিয়ে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দাবিকৃত এমন কোনো সংবাদ বাংলাদেশ প্রতিদিন এর ওয়েবসাইটে পায়নি রিউমর স্ক্যানার। এছাড়াও, ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশ প্রতিদিন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদগুলোর লেখার ফন্টের সাথে প্রচারিত ছবিটির লেখার ফন্টের অমিল রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রতিদিন এর অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদে ’বাংলাদেশ প্রতিদিন’ নাম (লোগো), প্রকাশিত সংবাদের সাল ও তারিখ, ছবি সম্পর্কিত হেডলাইন এসব স্থানের অমিল পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে বাংলাদেশ প্রতিদিন এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত ‘ভালোবাসা দিবসে ন্যান্সি-বাশারের ‘জলরঙ’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুজেঁ পায় রিউমর স্ক্যানার। এই প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিটিতে যুক্ত স্ক্রিনশটে থাকা ছবিটির মিল পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘আসন্ন ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ৫ ফেব্রুয়ারি (২০১৮) মুক্তি পাচ্ছে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ন্যান্সির ডুয়েট গান ‘জলরঙ’। গানটিতে ন্যান্সির সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন তরুণ কণ্ঠশিল্পী বাশার।’

কিন্তু এই প্রতিবেদনে আলোচিত দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে একাধিক ভিন্ন ভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘ফুলবড়িতে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ শিক্ষক আটক,গণধোলাই’ শীর্ষক কোনো তথ্য অন্যান্য গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

মূলত, সম্প্রতি ‘ফুলবাড়িতে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ শিক্ষক আটক,গণধোলাই’ শীর্ষক শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিন এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন দাবিতে একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ প্রতিদিন এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৮ সালে গণমাধ্যমটির ভিন্ন একটি সংবাদের স্ক্রিনশট এডিট করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ফুলবাড়িতে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় কলেজ শিক্ষক আটক,গণধোলাই’ শীর্ষক শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সংবাদ দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

সংযুক্ত আরব আমিরাত বা সৌদি আরবের সাম্প্রতিক বন্যার নয়, এই ভিডিও পুরোনো 

গত ১৬ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারী বর্ষণের কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে দুবাইয়ে বন্যার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

বন্যার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই ভিডিও সম্প্রতি সৌদি আরবে বন্যার ভিডিও দাবিতে প্রচারিত হয়েছে। ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত বা সৌদি আরবের বন্যার ভিডিও নয় বরং সৌদি আরবে সংগঠিত ২০১৮ সালের বন্যার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনুসন্ধানে adamonzon নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবরে প্রকাশিত (আর্কাইভ) الحاج براهيم بوتايوو নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই তারিখে প্রকাশিত (আর্কাইভ) এবং @numanai4 নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বরে প্রকাশিত (আর্কাইভ) ভিন্ন দিক থেকে ধারণ করা একই জায়গার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিও গুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর কিছু দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওগুলোতে বলা হয়েছে, এটি সৌদি আরবের তাবুক অঞ্চলে বন্যার ভিডিও। 

Video Comparison: Rumor Scanner

এই ভিডিওগুলোর সাথে আলোচিত ভিডিওগুলোর দৃশ্যমান মিল দেখে এটা নিশ্চিত যে, সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো আদতে অন্তত ২০১৮ সালের পুরোনো ভিডিও। 

আমরা অনুসন্ধানে দেখেছি, সৌদি ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম Al Arabiya এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনে (আর্কাইভ) সে বছর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে সৌদি আরবের তাবুক এলাকায় বন্যা হওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়।

মূলত, সম্প্রতি সৌদি আরবে ভারী বর্ষণ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারী বর্ষণের কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে বন্যা দৃশ্যের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে যা কোনো পোস্টে সৌদি আরবের আবার কোনো পোস্টে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিও সাম্প্রতিক কোনো ঘটনারই নয়। প্রকৃতপক্ষে,সৌদি আরবের তাবুক এলাকায় ২০১৮ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে বন্যা হলে তা স্থানীয় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি, সেই ঘটনার এই ভিডিও দুবাই ও সৌদি আরবের বন্যার পরিস্থিতি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, সৌদি আরবে সংগঠিত ২০১৮ সালের বন্যার ভিডিও সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের বন্যার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতে ডলি চা ওয়ালাকে উইন্ডোজ ১২ এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করেননি বিল গেটস

0

ভারতে ফুটপাতে চায়ের দোকান দিয়ে বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন ডলি নামে এক চা বিক্রেতা। ডলি চা ওয়ালা নামে পরিচিত এই ব্যক্তিকে মাইক্রোসফট সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত উইন্ডোজ ১২ এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করার ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। 

ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর

উক্ত দাবির ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট টি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডলি চা ওয়ালাকে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস উইন্ডোজ ১২ এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করার ঘোষণা দেননি বরং ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্যারোডি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া এই দাবিটি প্রচারের ফলে সেটি ফেসবুকে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়েছে। 

মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও বিল গেটস চলতি বছরের শুরুতে সপ্তাহব্যাপী সফরের জন্য ভারতে এসেছিলেন যা তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট thisisbillgates এ পোস্টও করেন।

এই পোস্ট থেকে জানা যায়, তিনি ডলি চা ওয়ালার সাথে দেখা করেছেন।  

Screenshot: Instagram

রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে, এই খবরের পরই ডলি চা ওয়ালাকে নিয়ে শোরগোল পড়ে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। এর প্রেক্ষিতে গত ২৯ ফেব্রুয়ারী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের ইনস্টাগ্রাম প্যারোডি অ্যাকাউন্ট thebindutimes এ ডলি চা ওয়ালা ও বিল গেটসকে জড়িয়ে একটি পোস্ট  করা হয়। যেখানে বলা হয়, ডলি চা ওয়ালাকে উইন্ডোজ ১২ এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হয়েছে। যা নিছক ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে উপস্থাপিত।

Screenshot: Instagram

তবে মাইক্রোসফট বা বিল গেটস কেউই মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১২ কবে টেকমার্কেটে আসবে সে ব্যাপারে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। এটির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ঘোষণার কোনো তথ্যও গণমাধ্যমে আসেনি। 

মুলত, ডলি চা ওয়ালাকে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস উইন্ডোজ ১২ এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করার ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। তবে আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিল গেটস এমন কোনো ঘোষণা দেননি। প্রকৃতপক্ষে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্যারোডি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার পরবর্তী সময়ে সেটি ফেসবুকে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়েছে।

সুতরাং, ভারতের ডলি চা ওয়ালাকে বিল গেটস উইন্ডোজ ১২ এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করার ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে ; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফরিদপুরে মন্দির ভাঙচুরে হিন্দু যুবক গ্রেফতারের এই ঘটনাটি ২০২৩ সালের  

0

গত ১৮ এপ্রিল ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে একটি মন্দিরের প্রতিমায় আগুন ও এরপর সন্দেহের জেরে দুজন শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দশজনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার। এর প্রেক্ষিতে ‘ফরিদপুরে আলফাডাঙ্গায় এক রাতে ৩ মন্দিরে ভাংচুরের ঘটনায় হিন্দু যুবক গ্রেফতার শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত দাবি সম্বলিত পোস্টগুলোতে পুলিশ কর্তৃক এক যুবককে গ্রেফতারের ছবিও যুক্ত করা হয়েছে।  

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফরিদপুরে আলফাডাঙ্গায় এক রাতে ৩ মন্দিরে ভাংচুরের ঘটনায় হিন্দু যুবক গ্রেফতারের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের ভিন্ন ঘটনার ছবি ও তথ্যকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পুলিশ কর্তৃক যুবক গ্রেফতারের বহুল প্রচারিত মূল ছবিটি (আর্কাইভ) খুঁজে বের করেছে রিউমর স্ক্যানার। DOAM – Documenting Oppression Against Muslims – Bangla নামক ফেসবুক পেজ থেকে ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর পোস্টটি করা হয়।  

Screenshot collage: Rumor Scanner

একই ছবি একাধিক গণমাধ্যমের খবরেও সে সময় প্রকাশ হতে দেখা গেছে। 

অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজ২৪ এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিজয় দিবসের রাতে ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় হরি মন্দির, শ্রী বিষ্ণু পাগলের মন্দির এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আলফাডাঙ্গা মহল্লার শ্রীশ্রী দামুদর আখড়া মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে হরি মন্দিরের দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, মনসা ও মহাদেব; বিষ্ণু পাগলের মন্দিরের মহাদেব ও মনসা এবং দামুদর আখড়া মন্দিরের মহাদেব, শিবলিঙ্গ ও নারায়ণ ১০টি প্রতিমা ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় সনাতন মালো ওরফে সোনাই মালো (৪৫) নামের এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

একই খবর দিয়েছে নয়া দিগন্ত, ইনকিলাব, সময় নিউজ

মূলত, সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে একটি মন্দিরের প্রতিমায় আগুন ও এরপর সন্দেহের জেরে দুজন শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দশজনকে আটক করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ‘ফরিদপুরে আলফাডাঙ্গায় এক রাতে ৩ মন্দিরে ভাংচুরের ঘটনায় হিন্দু যুবক’ শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। উক্ত দাবি সম্বলিত পোস্টগুলোতে পুলিশ কর্তৃক এক যুবককে গ্রেফতারের ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধানে দেখেছে, আলফাডাঙ্গায় সম্প্রতি কোনো মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। যে ছবি ব্যবহার করে এই দাবি ছড়ানো হচ্ছে সেটি গত ডিসেম্বরের। সে সময় আলফাডাঙ্গার একাধিক মন্দিরে হামলার ঘটনায় সনাতন মালো ওরফে সোনাই মালো নামের এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

সুতরাং, সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে একটি মন্দিরে হামলার ঘটনায় গত ডিসেম্বরে ভিন্ন ঘটনায় গ্রেফতার যুবকের ছবি ব্যবহার করে তিনি সম্প্রতি ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।  

তথ্যসুত্র

বাংলাদেশের শ্যামলী পরিবহনের মালিকানায় ভারতীয় কেউ নেই  

0

বেশ কিছুদিন যাবতই বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের একটি সামাজিক আন্দোলন চলমান রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি বাংলাদেশের পরিবহন কোম্পানি শ্যামলী পরিবহন ভারতীয় প্রোডাক্ট দাবি করে এই পরিবহন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে একাধিক পোস্ট ফেসবুকে দেখা গেছে।   

শ্যামলী পরিবহ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের শ্যামলী পরিবহন (এন আর ট্রাভেলস) ভারতীয় কোম্পানির পরিবহন নয় বরং একই নামে ভারতে একটি পরিবহন কোম্পানি থাকলেও বাংলাদেশ এবং ভারতের শ্যামলী পরিবহনের মালিকানা ভিন্ন। 

শ্যামলী পরিবহনের মালিকানার বিষয়ে অনুসন্ধানে শ্যামলী পরিবহনের ওয়েবসাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, রমেশ চন্দ্র ঘোষ ১৯৭৩ সালে পাবনা জেলা থেকে শ্যামলী পরিবহন এর যাত্রা শুরু করেন৷ বাংলাদেশের প্রথম প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা-কোলকাতা-ঢাকা আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিস চালু করে। 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক মানবজমিন এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১০ আগস্ট “পরিবহন খাতে শীর্ষ নাম শ্যামলী / একটি টেম্পো দিয়ে যাত্রা শুরু” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে শ্যামলী পরিবহন সম্পর্কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শ্যামলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভংকর ঘোষ জানান, তার বাবা রমেন্দ্র নাথ ঘোষ এবং চাচা রমেশ চন্দ্র ঘোষের মাধ্যমেই যাত্রা শুরু হয় শ্যামলী পরিবহনের। তিনি আরও বলেন, ‘শুরুটা হয়েছিলো টেম্পো। তার বাবা নিজেই চালাতেন সেই টেম্পু। পাবনা-কুষ্ঠিয়া রুটে চলতো সেই টেম্পো। কঠোর পরিশ্রমে ধীরে ধীরে তা পঞ্চাশে রূপান্তর হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে তার বাবা একটি বাস কিনে ব্যবসার গতি বাড়ান এবং নাম দেন শ্যামলী। পরিবারের অন্যরাও এতে যুক্ত হয়। এভাবেই শ্যামলী পরিবহনের যাত্রা।’

অর্থাৎ শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস বাংলাদেশি কোম্পানির পরিবহন। 

আমাদের অনুসন্ধানে একই নামে ভারতে শ্যামলী পরিবহনের আরও একটি কোম্পানির লিংকড-ইন প্রোফাইল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে নাম একই হলেও ভারতের শ্যামলী পরিবহন লিমিটেড এর মালিক ভিন্ন এক ব্যাক্তি। উক্ত পরিবহন কোম্পানির লিংকড-ইন প্রোফাইল থেকে জানা যায়,অরুন কুমার ঘোষ নামক এক ভারতীয় ব্যাক্তির উদ্যোগে শ্যামলী পরিবহন লিমিটেড এর যাত্রা শুরু হয়। 

এছাড়া, ‘The Untold Stories of Bus Operator’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর “God gave me the power to serve passenger- Mr Arun Kumar Ghosh, Shyamoli Paribahan” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : YouTube Channel 

উক্ত ভিডিওতে ভারতের শ্যামলী পরিবহন লিমিটেড এর মালিক অরুন কুমার ঘোষকে তার কোম্পানির যাত্রা সম্পর্কে কথা বলতে দেখা যায়।

তাছাড়া, ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ‘THE ECONOMICS TIMES’ এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, শ্যামলী পরিবহন একটি বেসরকারি কোম্পানি হিসেবে ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট যাত্রা শুরু করে। কোম্পানির বর্তমান বোর্ড সদস্য ও পরিচালকরা হলেন অরুন কুমার ঘোষ ও শিবানী ঘোষ। 

অর্থাৎ বাংলাদেশ এবং ভারতের শ্যামলী পরিবহন নামে একই কোম্পানি থাকলেও এদের মালিকানা পুরোপুরি ভিন্ন ব্যক্তির।  

মূলত, সম্প্রতি দেশব্যাপী ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বানের অংশ হিসেবে “শ্যামলী পরিবহন ভারতীয় প্রোডাক্ট, তাই আমরা এই পরিবহন বর্জন করি” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবিটি সঠিক নয়। বাংলাদেশের শ্যামলী পরিবহনের মালিকানায় রয়েছে পাবনার রমেশ চন্দ্র ঘোষ পরিবার। শ্যামলী নামে একটি পরিবহন কোম্পানি ভারতে চালু থাকলেও বাংলাদেশ ও ভারতের কোম্পানি দুইটি ভিন্ন মালিকানার।

সুতরাং, বাংলাদেশের শ্যামলী পরিবহন  ভারতীয় কোম্পানি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে ; যা বিভ্রান্তিকর।  

তথ্যসূত্র

সময় টিভিকে জড়িয়ে সাকিব আল হাসানের নামে জুয়ার বিজ্ঞাপন ফেসবুকে

0

সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে সময় টিভি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

Best Spin নামে ফেসবুক পেজে প্রচারিত উক্ত দাবির ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভি সাকিব আল হাসানের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি বরং যমুনা টিভির সংবাদ বুলেটিনের ভিডিওকে সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে সময় টিভির লোগো এবং ভিন্ন ভয়েস-ওভার যুক্ত করে সাকিবের পুরোনো ভিডিও ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে  যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৬ মার্চের একটি সংবাদ বুলেটিন “যমুনা নিউজ | Latest News Headlines and Bulletin | Jamuna News | 26 March 2024 | 12 AM | Jamuna TV” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের ২ মিনিট ৫ সেকেন্ডের সংবাদ উপস্থাপনের অংশের সাথে আলোচিত সম্পাদিত ভিডিওটির শুরু অংশের সাথে মিল রয়েছে। অর্থাৎ, এর সাথে আলোচিত জুয়া সম্বলিত দাবিটির কোনো সম্পর্ক নেই। তাছাড়া সময় টিভিতেও এমন কোনো সংবাদ প্রচারের প্রমাণ মেলেনি। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

সাকিবের সাক্ষাৎকারের ভিডিও ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বেসরকারি সংবাদমাধ্যম Independent Television এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের গত ১৩ অক্টোবর, গল্পে সাকিব আল হাসান || পর্ব-২ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সাকিব আল হাসানের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওর  মিল রয়েছে। দুটোতেই তার পোশাক, অঙ্গভঙ্গি, বাচনভঙ্গী, পিছনের স্টেডিয়ামের গ্যালারি সবকিছুর মিল দেখতে পাওয়া যায়। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটিতে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের মুখোমুখি হয়ে  সাকিব আল হাসানকে  নিজের ক্যারিয়ার, ব্যক্তিগত জীবন আর ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। তবে উক্ত ভিডিওতে সাকিবকে কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি। তাই সাকিব আল হাসানের উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিটির কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা গেল

আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারকারী Best Spin (আর্কাইভ) পেজটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় এতে অনলাইন ভিত্তিক জুয়া খেলার প্রচারণামূলক পোস্ট রয়েছে। এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে বাংলাদেশের ঢাকা শহরের কথা উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি জানা যায় উক্ত পেজটি ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook 

মূলত, সম্প্রতি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে সময় টিভি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিবকে নিয়ে এমন কোনো সংবাদ সময় টিভি প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৬ মার্চে যমুনা টিভির সংবাদ বুলেটিনের ভিডিও প্রচার করা হয়। উক্ত ভিডিওর উপস্থাপিকার এবং সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ২০১৮ সালে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচারিত একটি ইন্টারভিউ এর কিছু অংশ কেটে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাতে সময় টিভির লোগো, ভিন্ন একটি অডিও এবং ‘Crazy Time’ নামের একটি অনলাইন জুয়ার অ্যাপের বিজ্ঞাপন যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।  

সুতরাং, সময় টিভির লোগো সম্বলিত যমুনা টিভির ভিডিওটিতে যুক্ত সাকিব আল হাসান Crazy Time নামের অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিষয়টি স্ক্যাম বা প্রতারণা।

তথ্যসূত্র

চ্যানেল২৪ এর ভিডিও ও পুলিশ কর্মকর্তার পুরোনো সাক্ষাৎকার ব্যবহার করে জুয়ার অ্যাপের ভুয়া বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে চ্যানেল২৪ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে বাংলাদেশ পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা গেছে৷ 

জুয়া

ফেসবুকে প্রচারিত এ সংক্রান্ত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল২৪ সাকিব আল হাসানের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি এবং কোনো পুলিশ কর্মকর্তাও এ সংক্রান্ত কোনো সাক্ষাৎকার দেননি বরং, চ্যানেল২৪ এর একটি প্রতিবেদনের সংবাদ পাঠিকার অংশের সাথে ডেইলি স্টারকে একজন পুলিশ কর্মকর্তার দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও এবং বাংলাভিশনকে হাসান আজিজুল হকের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যার্লোচনা করে  চ্যানেল২৪ এর লোগো সম্বলিত একটি সংবাদ পাঠিকার ভিডিও দেখানো হয়। পরবর্তীতে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এর ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও দেখানো হয়। তবে ভিডিওতে থাকা ব্যাক্তির গায়ে ‘জাহাঙ্গীর’ নামের ব্যাজ দেখতে পাওয়া যায়। সর্বশেষে আলোচিত ভিডিওটিতে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকেরও একটি ভিডিও দেখানো হয়।

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ে ভিডিওটিতে থাকা সংবাদ পাঠিকার ড্রেস এবং চ্যানেল২৪-এর লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধান করে Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ এপ্রিল বাংলা সংস্কৃতিকে ধ্বংসে কাজ করছে সরকার: রুহুল কবির রিজভী | Rizvi | BNP | BNP News | Channel 24 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর সংবাদ পাঠিকার ফুটেজের সাথে উক্ত প্রতিবেদনের সংবাদ পাঠিকার অংশের মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও জানা যায়, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বর্তমান সরকার নিয়ে করা এক মন্তব্য নিয়ে সংবাদটি প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এর ভিডিও দাবিতে উপস্থাপিত ভিডিওটি অনুসন্ধানে The Daily Star এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজানে হামলার স্প্লিন্টার এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হাসান শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর  মিল রয়েছে। এছাড়াও ভিডিওর ব্যক্তির নাম এস এম জাহাঙ্গীর হাসান। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার।

Video Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও জানা যায়, ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হওয়া হামলা মোকাবিলায় প্রথম সারিতে ছিলেন তিনি। ভিডিওটিতে তাকে সেসময়েরই নানা ঘটনা বর্ণনা করতে দেখা যায়।

ভিডিও যাচাই ৩

সর্বশেষ ভিডিওতে দেখানো কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ভিডিওর সূত্র অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন এর ইউটিউব চ্যানেল BanglaVision PROGRAM এ ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক-এর সাক্ষাৎকার | Hasan Azizul Haque | Mithila Farzana | Banglavision শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর বেশকিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ফুটেজের  মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাভিশন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সকাল বেলার রদ্দুর এর। উক্ত পর্বে অতিথি হিসেবে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক উপস্থিত ছিলেন। 

অর্থাৎ, চ্যানেল২৪ এর একটি প্রতিবেদনের সংবাদ পাঠিকার অংশের সাথে ডেইলি স্টার এবং বাংলাভিশনের ভিন্ন ভিন্ন দুটি ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা গেল
আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারকারী Bangladesh Games নামের পেজটি (আর্কাইভ) পর্যালোচনা করে দেখা যায় এতে জুয়া বিষয়ক কোনো পোস্ট নেই। কিন্তু পেজটিতে বেশকিছু ব্যাগের পোস্ট দেখতে পাওয়া যায় (), () । এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে থাইল্যান্ডের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে তথ্য গোপন রাখায় পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে পেজটি কোন দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে তা জানা সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি জানা যায় উক্ত পেজটি ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook 

মূলত, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বর্তমান সরকার নিয়ে ‘শুধু রাজনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তার ও আগ্রাসনের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতি ধ্বংসে কাজ করছে সরকার’ শীর্ষক মন্তব্য করেন। উক্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সেসময় চ্যানল২৪ একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার করে। সম্প্রতি, উক্ত ভিডিওর সংবাদ পাঠিকার কিছু অংশ কেটে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তার সাথে ডেইলি স্টারে হোলি আর্টিজান হামলার স্প্লিন্টারে আহত পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হাসানের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও এবং বেসরকারি টেলিভিশন বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান সকাল বেলার রদ্দুর-এ কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের দেওয়ার এক সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ যুক্ত করে একটি ভিডিও তৈরি করে দাবি করা হচ্ছে, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে চ্যানেল২৪ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চ্যানেল২৪ সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে এমন কোনো জুয়ার অ্যাপের বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে চ্যানেল২৪ অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এ সংক্রান্ত ভিডিওটি স্ক্যাম বা প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি। 

তথ্যসূত্র

সন্তানকে একা ফেলে মায়ের ১০ দিনের ভ্রমণের ঘটনার সাথে ভিন্ন নারীর পুরোনো ভিডিও জড়িয়ে অপপ্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘সন্তানের মৃত্যুতে মায়ের শাস্তির ভিডিও’ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয়, ১৬ মাসের কন্যা সন্তানকে রেখে মা ঘুরতে যাওয়ায় শিশুটি মারা যায় এবং এর কারনেই মাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে।  

সন্তানকে একা
Screenshot collage: Rumor Scanner

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ভারতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবের একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি সন্তানের মৃত্যুতে মাকে শাস্তি প্রদানের কোনো ভিডিও নয় বরং ২০১৮ সালের ভিন্ন নারীর ভিডিওর সাথে সাম্প্রতিক সময়ে সন্তানকে একা ফেলে মায়ের ১০ দিনের ভ্রমণের ঘটনায় এক নারীর আদালত কর্তৃক শাস্তি ঘোষণার ঘটনাকে জড়িয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে,  ২০১৯ সালের পহেলা আগস্ট একই ভিডিও (আর্কাইভ) Hannah Critchfield নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশ করা হয়।  

Screenshot: YouTube

ভিডিওর বিস্তারিত অংশে একটি নিউজের লিংক দেওয়া রয়েছে। এটির সূত্র ধরে ফিনিক্স নিউ টাইমস নামে মার্কিন একটি সংবাদমাধ্যমে I’m Gonna Die in Here’: 19-Year-Old Mentally Ill Woman Remains in Jail for Spitting শিরোনামের একটি সংবাদ প্রতিবেদনের খোঁজ মেলে। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভ্যালেন্টিনা গ্লোরিয়া, অটিজম এবং গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত একজন তরুণী, তার মানসিক স্বাস্থ্য সংকট থেকে উদ্ভূত ঘটনার কারণে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ফাঁদে পড়েছেন। ভ্যালেন্টিনার এই ঘটনা অ্যারিজোনার কারাগারে মানসিক ভারসাম্যহীনদের চিকিৎসার দুরবস্থা তুলে ধরে। 

তবে, ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি ভ্যালেন্টিনা গ্লোরিয়ার মায়ের ইন্টারভিউসহ The Real News Network নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে আরেকটি ভিডিও (আর্কাইভ) প্রকাশ করা হয়। সেখানে তার মা ভুল চিকিৎসা ও বাজে ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন। 

প্রকাশ হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গ্লোরিয়ার মেন্টাল হেলথ সেশনটি ছিলো ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। এরপর, মেন্টাল হেলথ সেশন চলাকালে অফিসারদের থুথু মারার দায়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পুরুষদের জেলে থাকেন তিনি। এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য মুক্তি দেয়া হয়। থুথু মারার সেই ভিডিও ব্যবহার করেই আলোচিত দাবিটি অর্থাৎ ১৬ মাসের কন্যাকে একা রেখে ১০ দিনের অবকাশে যাওয়া মাকে সাজা দেওয়ার দাবিতে বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে।  

ভিডিওটির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর এ সংক্রান্ত ভিডিওগুলোর ক্যাপশনে উল্লিখিত দাবির বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে রিউমর স্ক্যানার। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর ওয়েবসাইটে গত ১৯ মার্চ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডের নাগরিক ক্রিস্টেল ক্যান্ডেলারিও তার ১৬ মাস বয়সী কন্যা জাইলেনকে একা ঘরে রেখে ১০ দিনের অবকাশে গিয়েছিলেন। ২০২৩ সালের জুনের এই ঘটনায় অবকাশ কাটিয়ে ১৬ জুন বাড়ি ফিরে সন্তানকে অচেতন পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে ফোন দেন ক্রিস্টেল। সিএনএন বলছে, সংশ্লিষ্ট ফোর্সগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পূর্বেই ক্রিস্টেল তাঁর মেয়ের পোশাক পরিবর্তন করেন এবং দাবি করেন মাত্রই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। 

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদালতে সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করেন ক্রিস্টেল। সাজা হিসেবে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

মূলত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সন্তানের মৃত্যুতে মায়ের শাস্তির ভিডিও’ দাবিতে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হচ্ছে, শিশু সন্তানকে রেখে ঘুরতে যাওয়ার ফলে শিশুটি মারা যাওয়ায় মাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধানে দেখেছে, প্রচারিত ভিডিওটি মূলত আমেরিকান ভ্যালেন্টিনা গ্লোরিয়া নামক মানসিক রোগে আক্রান্ত এক কিশোরীর ২০১৮ সালের মেন্টাল হেলথ সেশনের ভিডিও যা ২০১৯ সালে প্রকাশ্যে আসে। অন্যদিকে, এই ভিডিও ব্যবহার করে যে ক্যাপশন কেন্দ্রিক দাবি প্রচার হচ্ছে তার সাথেও এই ভিডিওর কোনো সম্পর্ক নেই। ক্যাপশনের ঘটনাটি মূলত গত বছরের। ঘটনার প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদালতে সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করেন ক্রিস্টেল নামে উক্ত নারী। সাজা হিসেবে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সুতরাং, সন্তানের মৃত্যুতে মায়ের শাস্তি ঘোষণার গত ফেব্রুয়ারির একটি ঘটনার সাথে আমেরিকার মানসিক রোগে আক্রান্ত কিশোরীর মেন্টাল হেলথ সেশনের ২০১৮ সালের ভিডিও যুক্ত করে দুটোই একই ঘটনার বলে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

যমুনা টিভির ফটোকার্ড বিকৃত করে বার্সেলোনার নামে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, “বার্সেলোনার স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ” শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “বার্সেলোনার স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড যমুনা টিভি প্রকাশ করেনি বরং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের সেমিফাইনালে যাওয়ার তথ্য সম্বলিত যমুনা টিভির একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে যমুনা টিভি’র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৮ এপ্রিল ২০২৪ উল্লেখ রয়েছে।

এর সূত্র ধরে যমুনা টিভি’র ফেসবুক পেজে গত ১৮ এপ্রিল প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে “ম্যানসিটির স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ” শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

পর্যবেক্ষণে যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ফন্টের কিছু অংশের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডের “স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ” বাক্যাংশের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের বাক্যাংশের মিল থাকলেও বাক্যের শুরুতে লেখা “বার্সেলোনার” বাক্যাংশের সাথে যমুনা টিভি’র ফটোকার্ডের ফন্টের ভিন্নতা খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison Image By Rumor Scanner

অর্থাৎ, এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে “ম্যানসিটির” স্থলে “বার্সেলোনার” শব্দটি যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

একই দিনে যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৭ এপ্রিল দিবাগত রাতে ম্যানচেস্টার সিটিকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠে রেকর্ড ১৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার মালিক রিয়াল মাদ্রিদ। 

মূলত, গত ১৭ এপ্রিল ম্যানসিটির ঘরের মাঠে তাদেরকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদ। এর প্রেক্ষিতে “বার্সেলোনার স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ” শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভি’র আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। যমুনা টিভি’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত “ম্যানসিটির স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ” শীর্ষক শিরোনামের একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, “বার্সেলোনার স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ” শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র