Home Blog Page 66

গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে হামলায় গর্ভবতী নারী পুলিশসহ ৪ জন নিহত হননি, কালের কণ্ঠের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

আজ (১৬ জুলাই) অন্তত দুপুর থেকে “গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে ছাত্রলীগ-বামজোটের জঙ্গি হামলায় গর্ভবতি মহিলা পুলিশ সহ নিহত ৪” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠ এর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে ছাত্রলীগ-বামজোটের জঙ্গি হামলায় গর্ভবতি মহিলা পুলিশ সহ নিহত ৪” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠ কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে কালের কণ্ঠের ফটোকার্ডের আদলে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘কালের কণ্ঠ’ এর লোগো ও ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ‘১৬ জুলাই ২০২৫’ দেখা যায়। এরই সূত্র ধরে ‘কালের কণ্ঠ’ এর ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অন্য কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রায় পুলিশের গাড়িতে হামলার বিষয়ে কালের কণ্ঠের প্রচারিত সংবাদ পর্যবেক্ষণ করলে তাদের ফেসবুক পেজে “গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হা/ম/লা ও গাড়িতে আ/গু/ন” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও এবং “গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে আগুন” শীর্ষক শিরোনামে কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ হতে দেখা যায়। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে সংযুক্ত গাড়ির ছবির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে সংযুক্ত গাড়ির ছবি মিল রয়েছে। তবে, এগুলো ব্যতীত কালের কণ্ঠকে আলোচিত বিষয়ে এখন পর্যন্ত অন্য কোনো সংবাদ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। তাছাড়া, উক্ত ভিডিও এবং প্রতিবেদনেও আলোচিত দাবিটির কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে কালের কণ্ঠের ফটোকার্ডের আদলে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

কালেরকণ্ঠ ব্যতীত অন্য কোনো গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, “গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে ছাত্রলীগ-বামজোটের জঙ্গি হামলায় গর্ভবতি মহিলা পুলিশ সহ নিহত ৪” শীর্ষক দাবিতে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আবু সাঈদের ফাঁসি চাওয়া সংক্রান্ত বক্তব্যটি বিএনপির কোনো সমাবেশে অংশ নেওয়া ব্যক্তির নয়

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, এবার বিএনপির সমাবেশ থেকে আবু সাঈদের ফাঁসির দাবী করেছেন বিএনপির কর্মী। 

উক্ত দাবিতে প্রচারিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

একই দাবির ইন্সটাগ্রাম পোস্ট দেখুন এখানে। 

একই দাবির ইউটিউব ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির সমাবেশে আবু সাঈদের ফাঁসি চাওয়া সংক্রান্ত দাবিটি সঠিক নয় বরং জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রমে স্থবিরতা ও আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নিস্ক্রিয়তার প্রতিবাদে তার প্রতীকী কফিন নিয়ে মিছিল করেছে বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি (বিআরপি)। উক্ত মিছিলে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি উক্ত মন্তব্য করেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে মূল ধারার গণমাধ্যম গ্লোবাল টেলিভিশনের লোগো থাকার সূত্রে গণমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে এ সংক্রান্ত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। দুই ঘন্টায় ১০০ টাকা, আইন উপদেষ্টার প্রতিকী ক’ফি’ন মিছিলে ভাড়ায় মানুষ! শীর্ষক শিরোনামে গত ০৫ জুলাই প্রকাশিত এই ভিডিওতে সাংবাদিক কর্তৃক এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার দলের নাম কী? জবাবে তিনি বলেন, বিআরপি। এরপর উক্ত সাংবাদিক আবার জিজ্ঞেস করেন, “দাবি কী আজকের?” এরপর এই ব্যক্তি বলেন, “দাবি হইসে আবু সাঈদের ফাঁসির দাবি চাই।”

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওর বক্তব্যের এই অংশই প্রচার হচ্ছে আলোচিত দাবিতে। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে মূল ধারার আরেক সংবাদমাধ্যম একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই মিছিলটি ছিল বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির (বিআরপি)। ৫ জুলাই বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত প্রতীকী এই মিছিল করে দলটির নেতাকর্মীরা। জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রমে স্থবিরতা ও আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নিস্ক্রিয়তার প্রতিবাদে তার প্রতীকী কফিন নিয়ে এই মিছিল করে।

অর্থাৎ, এটি বিএনপির কোনো সমাবেশ নয়। 

দাবিটির সূত্রপাত খুঁজতে গিয়ে সাজ্জাদ শরীফ নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুলাইয়ে প্রকাশিত “ব্রেকিং,,,এবার বিএনপির সমাবেশ থেকে আবু সাঈদের ফাসির দাবী তুললেন বিএনপি কর্মীরা। বিস্তারিত The Delhi Star এ” শীর্ষক ক্যাপশনে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Collage: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশনে দ্য দিল্লী স্টার নামে যে পেজটিকে তিনি উল্লেখ করেছেন তা একটি সার্কাজম পেজ। কমেন্টে তিনি বলছেন, “অনেকে কমেন্ট করছেন এইটা brp নামক দলের সমাবেশ। সেটা আমিও জানি।আমি বিএনপি লিখসি কারন লোকটা বিএনপির কথা বলছে। এই লোকগুলো ভাড়ায় খাটে,সব দলের হয়ে। এই পোস্ট এত সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নাই।” তবে ভিডিওতে স্পষ্টই শোনা যাচ্ছে যে উক্ত ব্যক্তি দলের নাম বিআরপি বলেই উল্লেখ করেছেন। এই ভিডিওটি সাত লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে।

সুতরাং, বিএনপির সমাবেশে আবু সাঈদের ফাঁসি চাওয়া হয়েছে দাবিতে বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির মিছিলে অংশ দেওয়া এক ব্যক্তির বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের দৃশ্য দাবিতে সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরের পুরোনো দৃশ্য প্রচার

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে আজ (১৬ জুলাই) পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে আ’গু’ন ও ভা’ঙ’চু’র”।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট : ঢাকা পোস্ট

গণমাধ্যমের প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি আলোচিত দাবিতে পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  প্রচারিত ভিডিওর প্রথম দিককার ফুটেজটি আজ (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনার নয় বরং, গত বছরের ১০ আগস্ট গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরের পুরোনো দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে “দৈনিক ভোরের পাতা’ নামক সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজে “গোপালগঞ্জে আ. লীগের মিছিল থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন, অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে মিছিল” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ১১ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে এক পর্যায়ে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির প্রথম দিককার নারীর সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

দৃশ্যটির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ভিডিওটিতে বলা হয়, “গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ভাঙচুর এবং পরবর্তীতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। গতকাল (১০ আগস্ট, ২০২৪) বিকেলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপীনাথপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বেলা তিনটার দিকে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচিতে সদর উপজেলার গোপীনাথপুর ও জালালাবাদ ইউনিয়ন এবং কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এ সময় সেনাবাহিনী এসে তাদের রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তারা সেনাবাহিনীর ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে, একপর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়৷ এ ঘটনায় ৫ জন সেনা সদস্য সহ ৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এসময় ছবু তুলতে গেলে দুই সাংবাদিককে মারধর ও লাঞ্চিত করা হয়। সেনাসদস্যরা অবরোধ তুলে নিতে বললে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভাঙচুর শুরু করে এবং এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।”

এছাড়াও, “অভিশপ্ত প্রবাস” নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা চালালো দুর্বৃত্তরা,,,” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ১০ আগস্টে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উল্লিখিত দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে আরো কিছু ফুটেজও সংযুক্ত করা হয় তবে সেসব ফুটেজের বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত তথ্য জানা যায়নি।

সুতরাং, গত বছরের ১০ আগস্টে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরের পুরোনো দৃশ্যকে আজ (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এনসিপির লং মার্চ টু গোপালগঞ্জের কর্মসূচিতে হামলায় ২৩ জন নিহত হওয়ার দাবিটি মিথ্যা

0

পূর্বে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে পদযাত্রায় গিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। 

এরই প্রেক্ষিতে, গোপালগঞ্জবাসির হামলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ২৩ জন নিহত হয়েছেন- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লং মার্চ টু গোপালগঞ্জ পদযাত্রায় ২৩ জন নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই এই ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে ‘sadhinnews247.blogspot.com’ নামক একটি ওয়েবসাইটের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘sadhinnews247.blogspot.com’ নামক সাইটটি ব্লগস্পট প্ল্যাটফর্মে তৈরি ও blogspot.com ডোমেইনে হোস্ট করা একটি ভূঁইফোড় ওয়েবসাইট বলে প্রতীয়মান হয়। 

উক্ত সাইটে “গোপালগঞ্জে এনসিপির লংমার্চে ফের হামলা: নিহত ২৩, উত্তপ্ত পরিস্থিতি”-  শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, “জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জগামী লং মার্চের গাড়ি বহরে আবারও ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে উলপুর ও আশপাশের এলাকায় বহরের উপর একাধিক দিক থেকে সংঘবদ্ধ হামলা হয়। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৩ জন নিহত এবং বহু আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।” তবে প্রতিবেদনটিতে ২৩ জন নিহতের দাবির সপক্ষে কোনো সূত্র বা তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।

আজ (১৬ জুলাই) এনসিপি গোপালগঞ্জের কর্মসূচিতে হামলায় ২৩ জন নিহতের দাবির সপক্ষে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশস্থলে আজ বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ হামলায় নিহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে এনসিপির মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচি ও পথসভাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। 

মূলধারার প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান সদর উপজেলার ইউএনও এম রাকিবুল হাসান। সেখান থেকে ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার কংশুরে ইউএনওর গাড়িতে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর গাড়ির চালক আহত হন।”

এ বিষয়ে মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ ২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

তবে, এসব ঘটনায় নিহতের কোনো তথ্য গণমাধ্যমে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লং মার্চ টু গোপালগঞ্জ পদযাত্রায় ২৩ জন নিহত হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগানের দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার  

জুলাই আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি চালাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর অংশ হিসেবে ৬৪ জেলা সফরে রয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। আজ বুধবার গোপালগঞ্জে পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে গোপালগঞ্জে বিশাল জনসমাগম ও শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগান দিতে দেখা যায়। দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি আজ সকালেই গোপালগঞ্জে ধারণ করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আজ বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে ঘিরে শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগানের ভিডিও নয়। বরং, এটি গত বছরের আগস্টে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর দাবিতে গোপালগঞ্জে অনুষ্ঠিত একটি বিক্ষোভের দৃশ্য।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Iktar Khan’ নামের একটি টিকটক প্রোফাইলে গত বছরের ৮ আগস্ট একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর দাবিতে টুঙ্গিপাড়ায় সমাবেশের দৃশ্য।

Comparison: Rumor Scanner. 

এছাড়া, ‘Md Sahajan Islam’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও ওই দিনের একই সমাবেশের ভিন্ন কোণ থেকে ধারণকৃত ভিডিও পাওয়া যায়।

একই সঙ্গে, প্রথম আলোর ইউটিউব চ্যানেলে সেদিন প্রকাশিত টুঙ্গিপাড়ার বিক্ষোভের ভিডিওর সঙ্গেও আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যগত মিল দেখা যায়।

২০২৪ সালের ৮ আগস্ট বিডিনিউজ২৪-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে টুঙ্গিপাড়ায় হাজারো মানুষ রাজপথে নামে। সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে আসা মানুষ আধুনিক পৌর সুপার মার্কেটের সামনে জড়ো হন, সেখান থেকে বেলা ১১টায় একটি বিশাল মিছিল বের হয়, যা উপজেলা সদরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।

উল্লেখ্য, আলোচিত ভিডিওটি আজকের না হলেও এনসিপির পদযাত্রাকে ঘিরে আজ গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন। (,) যেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের শেখ হাসিনার পক্ষে নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে। 

সুতরাং, গত বছরের আগস্টে ধারণ করা একটি ভিডিওকে এনসিপির আজকের গোপালগঞ্জ পদযাত্রার প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগানের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনী সন্দেহভাজন আরাকান আর্মির সদস্যদের গ্রেফতার করেছে দাবিতে আনসার সদস্য আটকের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আরাকান আর্মির ১৫ জন সন্দেহভাজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।” (অনূদিত)

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরাকান আর্মির সদস্যদের গ্রেফতারের দৃশ্যের নয় বরং, গত ২৫ আগস্টে চাকরি জাতীয়করণসহ নানা দাবিতে সচিবালয় অবরুদ্ধ রাখার পর আটককৃত আনসার সদস্যদের ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘কালবেলা’ এর ফেসবুক পেজে “সেনাবাহিনীর হাতে আটক আনসার সদস্যরা” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ২৫ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও আনসার সদস্য দাবিতে সেসময় ফেসবুকে প্রচারিত আরো কিছু ভিডিওর সাথেও আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনে গত ২৬ আগস্টে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “টানা ১০ ঘণ্টা সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান আনসার সদস্যরা। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় মুখে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন তারা। এসময় বেশিরভাগ আনসার সদস্য ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও আটকা পড়েন শতাধিক সদস্য।..

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন পেশাজীবীদের দাবি-দাওয়ার মধ্যেই আন্দোলনে নামেন আনসার সদস্যরা। তাদের কয়েকটি দাবির মধ্যে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন আনসার সদস্যরা। একই দাবিতে রবিবার (২৫ আগস্ট) সকালেও প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন তারা। এক পর্যায়ে তারা বেলা ১২টার দিকে সচিবালয়ের চারপাশে পাঁচটি ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। দিনভর নানান নাটকীয়তার পর তাদের আন্দোলন গড়ায় রাত পর্যন্ত।” এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রেও একইরকম তথ্য জানা যায়।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান আর্মির সদস্যদের আটক করার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, গত ২৫ আগস্টে চাকরি জাতীয়করণসহ নানা দাবিতে সচিবালয় অবরুদ্ধ রাখার পর আটককৃত আনসার সদস্যদের ভিডিওকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আরাকান আর্মির সদস্যদের গ্রেফতারের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গোপালগঞ্জে প্রবেশকালে সড়ক দুর্ঘটনায় এনসিপির দুই নেতার মৃত্যুর দাবিটি ভুয়া

0

জুলাই আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উদযাপনের লক্ষ্যে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মাসব্যাপী এই কর্মসূচিতে দেশের ৬৪টি জেলা সফর করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। এরই অংশ হিসেবে আজ বুধবার গোপালগঞ্জে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে আজ মধ্যরাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাধিক পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, গোপালগঞ্জে প্রবেশের সময় গাড়ি এক্সিডেন্টে চালক সহ এনসিপির দুইজন কেন্দ্রীয় নেতা নিহত হয়েছেন।

উক্ত দাবির কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গোপালগঞ্জে প্রবেশকালে সড়ক দুর্ঘটনায় এনসিপি দুই নেতার মৃত্যু সংক্রান্ত দাবিটি সঠিক নয় বরং গোপালগঞ্জে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেছেন এই পদযাত্রার সঙ্গে থাকা একাধিক সাংবাদিক। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কিওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যমে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গোপালগঞ্জের কর্মসূচী সংক্রান্ত একাধিক পোস্ট (, ) ফেসবুকে পাওয়া গেলেও তাদের কোনো নেতা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন এমন কোনো দাবি করতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এনসিপির এই পদযাত্রার খবর সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিক হাসান শিকদারের সাথে কথা বলেছে রিউমর স্ক্যানার। তিনি জানান, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন, এমন কিছু ঘটেনি। এটি গুজব।

তবে আজ সকালে শহরের উলপুর ইউনিয়নের উলপুর- দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হওয়ার খবর এসেছে গণমাধ্যমে।   

সুতরাং, পদযাত্রার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জে প্রবেশকালে সড়ক দুর্ঘটনায় এনসিপির দুই নেতা নিহত হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

শ্রদ্ধা কাপুরের প্রেমিক রাহুল মোদী নরেন্দ্র মোদীর ছেলে নন

সম্প্রতি ‘সাঁই পল্লবীর সাথে আমিরপুত্র, নরেদ্র মোদীর ছেলে প্রেমে শ্রদ্ধা কাপুর’ শীর্ষক দাবিতে কয়েকটি ছবি যুক্ত করে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেলে টোয়েন্টিফোর তাদের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে সংবাদ প্রচার করেছে।

ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পুত্র রাহুল মোদীর সাথে বলিউড অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কাপুরের প্রেমের গুঞ্জন ভাসছে নেট দুনিয়ায়। 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কোনো সন্তান নেই। প্রচারিত ভিডিওতে উল্লিখিত বলিউড অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কাপুরের চর্চিত প্রেমিক রাহুল মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পুত্র নন। প্রকৃতপক্ষে, রাহুল মোদী বলিউডের একজন স্ক্রিপ্টরাইটার এবং সহকারী পরিচালক; নামের উপাধিতে মিল থাকার কারণে আলোচিত ভিডিওতে তাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পুত্র বলে দাবি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Stars unfolded নামক ওয়েবসাইটে ‘Rahul Mody Age, Girlfriend, Family, Biography & More’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাহুল মোদীর পিতার নাম আমোদ মোদী, যিনি মেটাল ফ্যাব্রিকেশন ব্যবসায় জড়িত এবং রাহুলের বোন সোনিকা মোদী বিজ্ঞাপন নির্মাণের কাজ করেন। ১৯৯০ সালের ৭ অক্টোবর মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণকারী রাহুল মোদী বলিউডের একজন স্ক্রিপ্টরাইটার এবং সহকারী পরিচালক। তিনি ‘পেয়ার কা পঞ্চনামা ২’, ‘সোনু কে টিটু কি সুইটি’ এবং ‘তু ঝুঠি ম্যায় মাক্কার’ নামক হিন্দি সিনেমার স্ক্রিপ্টরাইটার ও সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। ভারতের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণকারী ও কর্মরত রাহুল মোদীর সাথে নরেন্দ্র মোদীর কোনো পারিবারিক সম্পর্ক নেই।

একই বিষয়ে Bollywood Shaadis নামক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া গেছে। 

অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত হলেও তার স্ত্রী যশোদাবেন মোদীর থেকে দীর্ঘদিন ধরে আলাদা বাস করছেন। তাদের কিংবা নরেন্দ্র মোদীর কোনো সন্তান নেই।

সুতরাং, বলিউড অভিনেত্রী শ্রদ্ধা কাপুরের চর্চিত প্রেমিক রাহুল মোদীকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পুত্র দাবি করে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

তথ্যসূত্র

এগুলো মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় হাতি ও ডলফিনের বাস্তব ছবি নয়

অন্তত ২০২১ সাল থেকে মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় হাতি ও ডলফিনের দৃশ্য দাবি করে দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।

২০২১ সালে ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন: এখানে

সম্প্রতি ফেসবুকে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিগুলো বাস্তবে মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় হাতি ও ডলফিনের দৃশ্য নয়। বরং, এগুলো সিলিকন মডেল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে, যা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একাধিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়েছে।

ছবিগুলো ঘিরে অনুসন্ধানে ‘হোক্সআই’ নামের একটি এক্স প্রোফাইলে ২০২১ সালে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। সেখানে এসব ছবির দাবি খণ্ডন করে জানানো হয়, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে প্রচারিত ‘In the Womb’ টিভি সিরিজে প্রাণীদের সিলিকন মডেল ব্যবহার করা হয়েছিল।

ওই পোস্টের সূত্র ধরে ডেভিড বারলো নামের একটি ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। একই নামের ইউটিউব চ্যানেলেও ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একই ধরনের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উভয় ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত হাতির ছবির মিল দেখা যায়।

একইভাবে, ডলফিনের ক্ষেত্রেও ডেভিড বারলোর ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে থাকা ভিডিওর সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটে সংযুক্ত নথিতে উল্লেখ রয়েছে, এসব ভিডিওতে দেখানো প্রাণীগুলো সিলিকন মডেল ব্যবহার করে তৈরি।

পরবর্তীতে, ডেভিড বারলোর ওয়েবসাইটে হাতি ও ডলফিন ছাড়াও আরও কিছু প্রাণীর গর্ভকালীন অবস্থা তুলে ধরা ভিডিওর কালেকশন পাওয়া যায়। বর্ণনায় জানানো হয়, প্রাণীর ভ্রূণ থেকে জন্ম পর্যন্ত বিকাশের চিত্র ফুটিয়ে তুলতে বাস্তব প্রাণীর পরিবর্তে নিখুঁতভাবে নির্মিত মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। এতে নৈতিক ও ব্যবহারিক জটিলতা এড়িয়ে গর্ভকালীন অভ্যন্তরীণ দৃশ্য ঘনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন সম্ভব হয়েছে। এসব দৃশ্যের অনেকগুলোই ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের জনপ্রিয় তথ্যচিত্র “Animals in the Womb” ও “Extreme in the Womb”-এ ব্যবহার করা হয়েছে।

সুতরাং, কৃত্রিমভাবে তৈরি সিলিকন মডেলের ছবি হাতি ও ডলফিনের বাস্তব মাতৃগর্ভের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নাহিদ ও হাসনাতের সাথে ছবিতে থাকা এই ব্যক্তি মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলার আসামী নন

0

গত ৯ জুলাই মিটফোর্ডে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর সাথে এক ব্যক্তির ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, নাহিদ ইসলাম ও হাসনাত আবদুল্লাহর সাথে ছবিতে থাকা ব্যক্তি মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার পরিচালক বা আসামী।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নাহিদ ও হাসনাতের সাথে ছবিতে থাকা এই ব্যক্তি মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার আসামী নন। তার নাম আহনাফ জামান, তিনি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য। সোহাগ হত্যার মামলার আসামীর তালিকায় আহনাফ জামানের নাম নেই।

অনুসন্ধানে ‘Ahnaf Zaman’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১২ মার্চে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর সাথে তুলা একটি ছবি অ্যাকাউন্টটির কাভার ফটো হিসেবে পোস্ট হতে দেখা যায়। ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত হাসনাত আবদুল্লাহর সাথের ছবির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

একই অ্যাকাউন্টে গত ২৫ জুনে “চলেন একটা কোরাম করি নাহিদ ভাই” শীর্ষক ক্যাপশনে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাথে তুলা একটি ছবি পোস্ট হতে দেখা যায়৷ উক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত নাহিদ ইসলামের সাথের ছবির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে বায়োতে নিজের পরিচয় হিসেবে দেখা যায়, “কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ”। ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে নাহিদ ইসলাম ও হাসনাত আবদুল্লাহর সাথে থাকা এই ব্যক্তির নাম আহনাফ জামান।

পরবর্তীতে মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলার আসামীর তালিকার বিষয়ে অনুসন্ধান করলে মূলধারার গণমাধ্যম আরটিভির ওয়েবসাইটে “প্রকাশ্যে সেই হত্যাকাণ্ডের সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল” শীর্ষক শিরোনামে গত ১১ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “এ ঘটনায় নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, মো. সিরাজুল ইসলাম, রবিন, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী, আনিসুর রহমান হাওলাদারসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।” এছাড়াও, এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরদেশ রূপান্তরেও মামলার আসামী হিসেবে একই ব্যক্তিদের নাম পাওয়া যায়। কিন্তু, আসামীর তালিকায় ‘আহনাফ জামান’ এর নাম পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নিশ্চিত করেন, মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলায় আসামীর তালিকায় ‘আহনাফ জামান’ নামে কারোর নাম নেই।

সুতরাং, নাহিদ ইসলাম ও হাসনাত আবদুল্লাহর সাথে ছবিতে থাকা ব্যক্তি ‘আহনাফ জামান’ মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার আসামী শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র