গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে আজ (১৬ জুলাই) পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে আ’গু’ন ও ভা’ঙ’চু’র”।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট : ঢাকা পোস্ট।

গণমাধ্যমের প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি আলোচিত দাবিতে পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওর প্রথম দিককার ফুটেজটি আজ (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনার নয় বরং, গত বছরের ১০ আগস্ট গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরের পুরোনো দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে “দৈনিক ভোরের পাতা’ নামক সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজে “গোপালগঞ্জে আ. লীগের মিছিল থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন, অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে মিছিল” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ১১ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে এক পর্যায়ে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির প্রথম দিককার নারীর সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

দৃশ্যটির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ভিডিওটিতে বলা হয়, “গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ভাঙচুর এবং পরবর্তীতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। গতকাল (১০ আগস্ট, ২০২৪) বিকেলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপীনাথপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বেলা তিনটার দিকে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচিতে সদর উপজেলার গোপীনাথপুর ও জালালাবাদ ইউনিয়ন এবং কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। এ সময় সেনাবাহিনী এসে তাদের রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তারা সেনাবাহিনীর ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে, একপর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়৷ এ ঘটনায় ৫ জন সেনা সদস্য সহ ৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এসময় ছবু তুলতে গেলে দুই সাংবাদিককে মারধর ও লাঞ্চিত করা হয়। সেনাসদস্যরা অবরোধ তুলে নিতে বললে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভাঙচুর শুরু করে এবং এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।”
এছাড়াও, “অভিশপ্ত প্রবাস” নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা চালালো দুর্বৃত্তরা,,,” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ১০ আগস্টে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উল্লিখিত দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে আরো কিছু ফুটেজও সংযুক্ত করা হয় তবে সেসব ফুটেজের বিষয়ে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত তথ্য জানা যায়নি।
সুতরাং, গত বছরের ১০ আগস্টে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরের পুরোনো দৃশ্যকে আজ (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Daily Vorer Pata –গোপালগঞ্জে আ. লীগের মিছিল থেকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন, অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে মিছিল
- অভিশপ্ত প্রবাস – Facebook Post