Home Blog Page 573

বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর হামলার পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা ও  সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনার ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে তার ওপর হামলার ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে probasnews24.com নামক ফেসবুক পেজে ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান সেদিন সাদা পোশাকের পুলিশের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন। উক্ত হামলার ঘটনায় তিনিসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন অন্তত।

এছাড়া, অনুসন্ধানে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের উপর সম্প্রতি হামলা হওয়ার কোনো তথ্য দেশিয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন।

মূলত, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান। সেসময় নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে জেলার কটিয়াদী উপজেলার বীর নোয়াকান্দি গ্রামে উঠান বৈঠক করার সময় সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য কর্তৃক তিনি হামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন।। তার আহত হওয়ার তথ্য ও ভিডিও সেসময় দেশিয় গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়। সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামানের ওপর কোনো হামলার ঘটনা না ঘটলেও তার ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়েছে দাবিতে সেই পুরোনো ভিডিও আবার নতুন করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দলীয় শৃংখলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামানকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

সুতরাং, ২০১৮ সালে সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনার ভিডিওকে সম্প্রতি তার ওপর বর্বরোচিত হামলা হওয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

প্রিম্যাচিউর শিশুকে বাঁচাতে বাবার বুক ছিদ্র করে ফুসফুসের সাথে সংযোগ স্থাপনের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, প্রিম্যাচিউর বাচ্চা ভূমিষ্ঠ হওয়ায় সন্তানের শ্বাসকষ্ট সমস্যা থেকে বাঁচাতে বাবার বুক চিড়ে ফুসফুসের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

প্রিম্যাচিউর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  প্রচারিত ছবিতে প্রিম্যাচিউর শিশুটিকে তার বাবার বুক ছিদ্র করে ফুসফুসের সাথে যুক্ত করে শ্বাস দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বরং শিশুটিকে কেবল বুকে রেখে স্কিন টু স্কিন থেরাপি দেয়া হচ্ছিল, যা সাধারণত প্রিম্যাচিউর নবজাতকদের দেওয়া হয়ে থাকে।

মূলত, অকালে বা প্রিম্যাচিউর হয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্য স্কিন টু স্কিন বা ক্যাঙ্গারু কেয়ার উপকারি হয়। জেনি সানচেজ এবং রাসিক ডিকি দম্পতির ৫ মাসে জন্ম নেওয়া প্রিম্যাচ্যুর শিশুকে তার বাবার বুকে রেখে সেই স্কিন টু স্কিন থেরাপি দেওয়ার সময়ের তোলা কিছু ছবি শিশুটির মা তার ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন। পরবর্তীতে সেই ছবিগুলো বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচারিত হয়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

তারেক জিয়াকে নিয়ে পিনাকী ভট্টাচার্যের মন্তব্য দাবিতে বিভ্রান্তিকর ভিডিও প্রচার

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তারেক জিয়াকে উদ্দেশ্য করে পিনাকী ভট্টাচার্য, ‘ওই নাকি ইংল্যান্ড আর জার্মানির বাজারকে ছাড়াইয়া যাওয়ার জন্যে কাজ করিচ্ছে। ওই নাকি আবার কাজও করে! টাকা মারা ছাড়া তো জানতাম আর কোনো কাজ নাই!’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, পিনাকী ভট্টাচার্য তার ইউটিউব চ্যানেলে গত ৬ ডিসেম্বর ‘হাসিনার স্যাংশনের ডর || নির্বাচনের পর স্যাংশন আসতে পারে- শেখ হাসিনা || Pinaki Bhattacharya’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করেন। উক্ত ভিডিওটিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আসন্ন নিবার্চন নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেন। এরই প্রেক্ষিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ‘ওই নাকি ইংল্যান্ড আর জার্মানির বাজারকে ছাড়াইয়া যাওয়ার জন্যে কাজ করিচ্ছে। ওই নাকি আবার কাজও করে! টাকা মারা ছাড়া তো জানতাম আর কোনো কাজ নাই!’ শীর্ষক মন্তব্যটি করেন। সেই ভিডিরও উক্ত অংশটুকু কাট করে তার সাথে তারেক জিয়ার ছবি যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে দেখা যায় ভিডিওটির বামপাশে উপরের বাংলা পলিটিক্স লেখা একটি লোগো রয়েছে। 

Screenshot: Youtube

লোগোটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলা পলিটিক্স নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৮ ডিসেম্বর টাকা মা*রা ছাড়া তা*রেক জি*য়ার আর কি কাজ জানালেন পি*নাকী দা😃 শীর্ষক শিরেনামে প্রচারিত আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

এছাড়াও, পেজটির ক্যাটাগরি সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, এটি একটি কমেডি পেজ। বিভিন্ন সময়ে এই পেজটি থেকে বিভিন্ন কমেডিধর্মী পোস্ট প্রচার করতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে পিনাকী ভট্টাচার্যের ভিডিওটির সূত্র অনুসন্ধানে তার ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ৬ ডিসেম্বর হাসিনার স্যাংশনের ডর || নির্বাচনের পর স্যাংশন আসতে পারে- শেখ হাসিনা || Pinaki Bhattacharya শীর্ষক শিরোনামে তার চ্যানেলে প্রচার করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওটির ২ মিনিট ২৫ সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটুকুর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাথে হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

তিনি মূলত ভিডিওটিতে আসন্ন জাতীয় নিবার্চন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলেন। ভিডিওটির এ পর্যায়ে তিনি গত ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়া bdnews24.com এ যুক্তরাজ্য ও জার্মানির বাজারকে ছাড়িয়ে যেতে কাজ করছি: শেখ হাসিনা শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেন। 

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে বাংলা পলিটিক্স নামক ফেসবুক পেজ থেকে ব্যাঙ্গাত্মক হিসেবে প্রথমে প্রচার করে। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

মূলত, গত ৬ ডিসেম্বর পিনাকী ভট্টাচার্য তার ইউটিউব চ্যানেলে ‘হাসিনার স্যাংশনের ডর || নির্বাচনের পর স্যাংশন আসতে পারে- শেখ হাসিনা || Pinaki Bhattacharya’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করে। ভিডিওটিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। ভিডিওটির এক পর্যায়ে তিনি বাংলাদেশের অনলাইন মিডিয়া bdnews24.com এ গত ১৯ নভেম্বর ‘যুক্তরাজ্য ও জার্মানির বাজারকে ছাড়িয়ে যেতে কাজ করছি: শেখ হাসিনা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেন। যেটি পরবর্তীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে বাংলা পলিটিক্স নামক ফেসবুক পেজ থেকে ব্যাঙ্গাত্মক হিসেবে প্রথমে প্রচার করে। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

সুতরাং, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে পিনাকী ভট্টাচার্যের করা একটি মন্তব্যের ভিডিওকে তারেক জিয়ার উদ্দেশ্যে করা বক্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আইপিএল খেলার যোগ্যতা নিয়ে শোয়েব আখতারের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘IPL লীগে জল টানার যোগ্যতাও নেই বাংলাদেশী প্লেয়ারদের’ শীর্ষক একটি মন্তব্যকে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতারের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

আইপিএল

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলা প্রসঙ্গে বাংলাদশি ক্রিকেটারদের যোগ্যতা নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং ‘রক্তে আমার ক্রিকেট 2.0’ নামের একটি ভারতীয় ফেসবুক পেজ থেকে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে বিদ্রুপ করে এই মন্তব্যটি প্রথম প্রচার হয়, যা পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।

গুজবের সূত্রপাত

এবিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘রক্তে আমার ক্রিকেট 2.0’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ০৯ ডিসেম্বর “IPL লীগে জল টানার যোগ্যতাও নেই বাংলাদেশী প্লেয়ারদের- শোয়েব আখতার” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্টটির কমেন্টবক্স এবং পেজটির অ্যাবাউট সেকশন পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যায়, এটি ভারতীয় কোনো ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজ।

Screenshot: Facebook
Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে আলোচিত পেজটির সাম্প্রতিক কয়েকটি পোস্ট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গত ০১ ডিসেম্বর ‘IPL শুধু জল টানায় খেলতে নেয় না, তাই IPL নিলাম থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন শাকিব’ শীর্ষক তথ্য সম্বলিত প্রায় একই ধরনের একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। ফটোকার্ডটিতে উক্ত পেজের লোগো এবং নাম থাকায় নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত পেজের পরিচালকরা এই ফটোকার্ডটির নির্মাতা।

Screenshot: Facebook

এছাড়াও এই পেজটি থেকে বাংলাদেশকে হেয় করে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত আরও কিছু পোস্ট (, ) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Screenshot: Facebook
Screenshot: Facebook

অর্থাৎ, উক্ত পেজটি থেকে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিদ্রুপাত্মক পোস্ট করা হয় এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের আইপিএলে খেলার যোগ্যতা নিয়ে শোয়েব আখতারের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত পোস্টটিও বিদ্রুপের উদ্দেশ্য করা হয়েছিল; যা পরবর্তীতে বাস্তব দাবিতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে।

এছাড়াও, পাকিস্তানের গণমাধ্যম, শোয়েব আখতারের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ কিংবা ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত শোয়েব আখতারের ‘আইপিএল লীগে জল টানার যোগ্যতাও নেই বাংলাদেশী প্লেয়ারদের’ শীর্ষক মন্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, আলোচিত মন্তব্যটি পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতারের নয়।

মূলত, গত ১৯ নভেম্বর ভারতে অনুষ্ঠিত ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজিত হয় ভারত। সে ঘটনায়  বাংলাদেশি ক্রিকেট সমর্থকদের একাংশের ভারতের পরাজয়ে উল্লাস করার বিষয়টি বাংলাদেশ ও ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে ভারতে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভারতীয়দের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি জানান। পরবর্তীতে ‘রক্তে আমার ক্রিকেট 2.0’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ০৯ ডিসেম্বর বিদ্রুপাত্মকভাবে ‘বাংলাদেশী প্লেয়ারদের উচিত খেলা-ধুলা বাদ দিয়ে ভালো করে জল টানা প্রেক্টিস করা’ শীর্ষক ক্যাপশনে ‘আইপিএল লীগে জল টানার যোগ্যতাও নেই বাংলাদেশী প্লেয়ারদের’ শীর্ষক একটি মন্তব্য পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতারের মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত ফটোকার্ডটি বাস্তব দাবিতে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলা প্রসঙ্গে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের যোগ্যতা নিয়ে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার এরূপ কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৯ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) আসন্ন আসরের নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এবারের আইপিএলের চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটার। এদের মধ্যে রয়েছেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম। মুস্তাফিজের ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রুপি, তাসকিনের ভিত্তিমূল্য ৭৫ লাখ রুপি এবং শরিফুলের ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ রুপি।

উল্লেখ্য, পূর্বে আইপিএলে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধের ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘আইপিএল লীগে জল টানার যোগ্যতাও নেই বাংলাদেশী প্লেয়ারদের’ শীর্ষক একটি মন্তব্যকে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতারের মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি সিলেটে সন্ধান পাওয়া জ্বালানি তেলের খনিটি দেশে পাওয়া প্রথম তেলের খনি নয়

0

সম্প্রতি, সিলেটে জৈন্তাপুর-গোয়াইনহাট এলাকায় ১০ নম্বর কূপে তেলের ওখনির সন্ধান মিলেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। এটি বাংলাদেশে প্রথম তেলের খনির সন্ধানের ঘটনা দাবি করেবেশ কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। পরবর্তীতে একই দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

জ্বালানি

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন জুম বাংলা, বাংলা ইনসাইডার, বার্তা বাজার, বাংলাদেশ মোমেন্টস্, দৈনিক করতোয়া, আজকের দর্পণ, বাহান্ন নিউজ এবং দ্য রিপোর্ট.লাইভ

এছাড়া মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে সংবাদটি সংশোধন করে নেয়।

ফেসবুকে গণমাধ্যমের পেজসহ অন্যান্য অ্যাকাউন্ট হতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি সিলেটে জৈন্তাপুর-গোয়াইনহাট এলাকায় ১০ নম্বর কূপে জ্বালানি তেলের সন্ধানের ঘটনাটি বাংলাদেশের প্রথম জ্বালানি তেলের খনি পাওয়ার ঘটনা নয় বরং এর আগে ১৯৮৬ সালে দেশে প্রথম সিলেটের হরিপুরে জ্বালানি তেলের খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। 

আলোচিত দাবির বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিউমর স্ক্যানার টিম সিলেটে তেলের খনি সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে গত রোববার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের করা প্রেস ব্রিফিংয়ের লাইভ ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে।

৮ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৩ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এর আগে ১৯৮৬ সালে দেশে প্রথম তেলের সন্ধান পাওয়ার কথা বলছেন। তিনি বলেন, এর আগে তেলের উপস্থিতি ১৯৮৬ সালে আমরা পেয়েছিলাম হরিপুরে। সেটা সাসটেইন করেছিল পাঁচ বছর।

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ দিলে গত ১০ ডিসেম্বর বিবিসি বাংলা এর ওয়েবসাইটে “সিলেটে তেলের সন্ধান, কতটা সম্ভাবনাময়?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে ৩৭ বছর পর আবারও ভূগর্ভে তেলের সন্ধান মিলেছে। সিলেটে একটি গ্যাসক্ষেত্রে কূপ খননের সময় সেখান তেল পাওয়া যায়। 

এছাড়া, একই দিনে দৈনিক প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে “সিলেটের গ্যাসক্ষেত্রে তেলের সন্ধান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে দেশে প্রথম তেলের সন্ধান পাওয়া যায় হরিপুরে। এটি পাঁচ বছর স্থায়ী হয়েছিল। ওই সময় এপিআই গ্র্যাভিটি ২৭ ডিগ্রি। 

এছাড়া, ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি বণিক বার্তা’র ওয়েবসাইটে “গ্যাস মিলেছে, তেল পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি বাপেক্স” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বণিক বার্তার প্রতিবেদনটি প্রকাশ অবধি হরিপুরই ছিল দেশের একমাত্র অঞ্চল, যেখানে তেলের সন্ধান মিলেছে। ১৯৮৬ সালে হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ৭ নম্বর কূপ খনন করা হয়। ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর কূপটিতে তেল পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, সম্প্রতি সিলেট পাওয়া তেলের খনিটি দেশের প্রথম নয়। এর আগে ১৯৮৬ সালে সিলেটের হরিপুরে আরেকটি তেল খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। 

মূলত, গত ১০ ডিসেম্বর সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট এলাকায় ১০ নম্বর কূপ খনন করে প্রথম স্তরে তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। পরবর্তীতে কতিপয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটিই দেশে সন্ধান পাওয়া প্রথম তেলের খনির বলে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি দেশে সন্ধান পাওয়া প্রথম তেলের খনি নয়। প্রকৃতপক্ষে ১৯৮৬ সালে সিলেটের হরিপুরে দেশের প্রথম তেলের খনির সন্ধান পায় বাংলাদেশ তেল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)।

সুতরাং, ১৯৮৬ সালে সিলেটের হরিপুরে দেশের প্রথম তেলের খনি পাওয়া গেলেও সম্প্রতি সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট এলাকায় সন্ধান পাওয়া তেলের খনিকে দেশের প্রথম সন্ধান পাওয়া তেলের খনি বলে দাবি করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

অনঙ্গপাল তোমর নয়, দিল্লির লাল কেল্লা তৈরি করেছেন সম্রাট শাহজাহান

0

সম্প্রতি, পৃথ্বীরাজ চৌহানের দাদু অনঙ ১০৬২ সালে দিল্লির লাল কেল্লা বানিয়েছিলেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

এই দাবিতে বাংলাদেশে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ওপার বাংলায় প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনঙ্গপাল তোমর দিল্লির লাল কেল্লা তৈরি করেননি বরং লাল কেল্লা তৈরি করেছেন সম্রাট শাহজাহান।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এর ওয়েবসাইটে “World Heritage Site – Red Fort, Delhi” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রবন্ধটি থেকে জানা যায়, সম্রাট শাহজাহানের হাত ধরে ১৬৩৯ সালে রেড ফোর্ট বা লাল কেল্লার কাজ শুরু হয় এবং নয় বছর পর কাজ শেষ হয়।

এছাড়া, ভারতীয় গণমাধ্যম The Hindu এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর “The original Red Fort of Delhi” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, লাল কেল্লার অনেক আগে অষ্টম শতাব্দীতে অনঙ্গপাল তোমর দিল্লিতে লাল কোট নামে আরেকটি স্থাপনা তৈরি করেছিলেন।

পরবর্তীতে গুগল ম্যাপে তথ্য প্রদান করে আলাদা দুইটি জায়গা সম্পর্কে জানা যায় এবং দেখা যায় এদের দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটারের ব্যবধান।

অনঙ্গপাল তোমর
Screenshot: Google Map

অর্থাৎ, লাল কেল্লা সম্রাট শাহজাহানই তৈরি করেছিলেন। অপরদিকে লাল কোট তৈরি করেছিলেন অনঙ্গপাল তোমর।

মূলত, অষ্টম শতাব্দীতে অনঙ্গপাল তোমর দিল্লিতে লাল কোট তৈরি করেন এবং সম্রাট শাহজাহানের হাত ধরে ১৬৩৯ সালে রেড ফোর্ট বা লাল কেল্লার কাজ শুরু হওয়ার নয় বছর পর কাজ শেষ হয়। তবে সম্প্রতি, অনঙ্গপাল তোমর দিল্লির লাল কেল্লা তৈরি করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, দিল্লির লাল কেল্লা সম্রাট শাহজাহান তৈরি করলেও এটি অনঙ্গপাল তোমর তৈরি করেছেন বলে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

অ’ ককা হাতী শীর্ষক ভারতের ভিডিওকে বাংলাদেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণের দৃশ্য দাবিতে প্রচার  

0

সম্প্রতি, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমের বিষয়ে ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। এর মধ্যেই একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে, একটি শ্রেণিকক্ষে একদল নারী-পুরুষ “অ’ ককা হাতী” শীর্ষক ছড়া সদৃশ্য একটি গান গাওয়ার মাধ্যমে শারীরিক কসরতে অংশ নিয়েছেন। দাবি করা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশ সরকারের নতুন শিক্ষাক্রমের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য।

অ' ককা হাতী

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উল্লিখিত দাবিতে সংযুক্ত পোস্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ২১ লক্ষ বা ২.১ মিলিয়ন বার দেখা হয়েছে। ভাইরাল পোস্টগুলোর মন্তব্যঘর ঘুরে পোস্টটির দাবির প্রেক্ষিতে অধিকাংশ নেটিজেনকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি দেশের নতুন শিক্ষাক্রমের অধীনে কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণের দৃশ্যের নয়, এমনকি এটি বাংলাদেশের ভিডিওই নয় বরং ভারতের আসামের ক শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে থাকা অ’ ককা হাতী শীর্ষক উক্ত ভংগীমা গীতটি গাওয়ার মাধ্যমে সেখানকার একটি স্কুলে শিক্ষকদের কসরত প্রদর্শনের ভিডিও এটি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একজন নারী যে গানটি গাইছেন করছেন তা হলো,

অ’ ককা হাতী 
মই যে তোমাৰ নাতি
তোমাৰ তলত সোমাই থাকিম  
মোক নেলাগে ছাতি।

মস্ত এডাল নেজ
আৰু
মস্ত এটা পেট
চকু দুটা ইমান সৰু
লাজ লাগি যায় ধেৎ।

অ’ ককা হাতী
মই যে তোমাৰ নাতি
মোৰ ওপৰত বহি নিদিবা
পেট যাব মোৰ ফাটি।

রিউমর স্ক্যানার টিম গত ১৫ মার্চ Easy to learn Academy নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ) প্রকাশ হতে দেখেছে। 

ভিডিওটির ডেসক্রিপশন অংশ থেকে জানা যাচ্ছে, এটি অসমীয়া ভাষার একটি ভংগীমা গীত। যে নারীকে এটি গাইতে দেখা যাচ্ছে তার নাম মৃদুলা দত্ত (Mridula Dutta)।

Screenshot: YouTube 

একই ইউটিউব চ্যানেলের অধীনে থাকা ফেসবুক পেজেও (Easy to Learn) এই ভিডিওটি (আর্কাইভ) একইদিন প্রকাশ করা হয়। 

এই পোস্টে মৃদুলা দত্তের অ্যাকাউন্টটি এক ব্যক্তি মেনশন করে জানান, তিনি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছেন। 

Screenshot: Facebook

আমরা মৃদুলা দত্তের সাথে এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছি। তবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত তার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।

আমরা অনুসন্ধানে দেখেছি, গত ০৬ ডিসেম্বর এক ব্যক্তি Assam Learning Centre নামে একটি পেজে প্রকাশিত একই ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, স্কুলে তার গাওয়া শেষ গান এটি। তিনি পোস্টের ক্যাপশনে স্কুলের পেজও মেনশন করেছেন যার নাম, Lambudar Borgohain Sankardev Sishu Vidya Niketan। 

Screenshot: Facebook 

এই স্কুলটি আসামের মধুপুরের ডিমৌতে অবস্থিত৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি আমরা। তবে তাদের পক্ষ থেকে উত্তর মেলেনি। 

রিউমর স্ক্যানার টিম আসামের আম্বারি শিশুকল্যাণ এলপি স্কুলের শিক্ষক রতন লাল সাহার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছে। তিনি বলছিলেন, ক শ্ৰেণির কৰ্মপুথি নামের বইতে এটি আছে। বইটির নাম:-অকণিৰ কৰ্মপুথি।

আমরা আসামের বাজ্যিক শিক্ষা-গবেষণা আব্রু প্রশিক্ষণ পরিষদের ওয়েবসাইটে বইটির কাভার পেজের ছবি খুঁজে পেলেও বইটির কোনো কপি পাইনি। 

Image: Akonir Karmaputi Cover Page

অকণিৰ কৰ্মপুথি নামের এই বইটির বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে আমরা ইউটিউবের একটি চ্যানেলে একটি প্লে-লিস্ট খুঁজে পেয়েছি যেখানে আলোচিত ভংগীমা গীতটি রয়েছে। 

Screenshot: YouTube 

আসামে ক শ্রেণিতে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয় অকণিৰ কৰ্মপুথি নামের এই বইটি। দেখুন এখানে, এখানে। 

মূলত, সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে, একটি শ্রেণিকক্ষে একদল নারী-পুরুষ একটি ছড়া সদৃশ্য গান গাওয়ার মাধ্যমে শারীরিক কসরতে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় এবং এই ভিডিওর দৃশ্যের সাথে নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণেরও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, অন্তত গত মার্চ মাস থেকেই ভারতের আসামের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। ভিডিওতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসমীয়া ভাষায় অ’ ককা হাতী শীর্ষক যে ছড়াটি আবৃত্তি করছেন সেটি আসামের ক শ্রেণির অকণিৰ কৰ্মপুথি নামের পাঠ্য বইয়ের একটি ভংগীমা গীত। 

প্রসঙ্গত, নতুন শিক্ষাক্রমের বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য প্রতিরোধে অবদান রাখায় গত ০৯ ডিসেম্বর ‘পজেটিভ ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ভারতের আসামের একটি স্কুলে শিক্ষকদের ভংগীমা গীত করার একটি দৃশ্যকে জাতীয় শিক্ষাক্রমের অধীনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

  • Easy to Learn: Facebook Video
  • Statement from Ratan Lal Saha
  • Rumor Scanner’s own investigation

রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশের গুজব

গত ০৯ ডিসেম্বর ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে Sabai Sikhi নামের একটি চ্যানেলে ‘এইমাত্র প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করলো সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র হাসিনার পদত্যাগ নিশ্চিত করলো সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি

ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি প্রায় ৪৯ হাজার বার দেখা হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটিতে প্রায় দেড় হাজার হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। 

পরবর্তীতে একই ভিডিওটি কয়েকটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়। পোস্টগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত ভিডিওটি’র ইউটিউব লিংক শেয়ার করে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করার দাবিটি সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও ক্লিপ এবং ছবি নিয়ে তৈরি একটি ভিডিও প্রতিবেদন, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের পুরোনো কিছু কার্যক্রমের দৃশ্য দেখানো হয়।

ভিডিওটি’র সংবাদপাঠ অংশে বলা হয়, “অবশেষে রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানের নির্দেশে পদত্যাগের ঘোষণা দিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যেই পদত্যাগের জন্য জরুরি প্রজ্ঞাপন জারি করলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণায় খুশি বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। এদিকে নির্বাচনের যেকোনো দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত সেনাবাহিনী।”

উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ছাড় দেওয়া হবে না: মো. সাহাবুদ্দিন’ শীর্ষক শিরোনামে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jamuna TV

এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটি’র রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

তবে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কর্তৃক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে ছাড় না দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশের দাবি সংক্রান্ত তথ্যও আলোচিত ভিডিওতে অনুপস্থিত।

অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশের দাবিটি সঠিক নয়।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৯ ডিসেম্বর Sabai Sikhi নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘এইমাত্র প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করলো সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক শিরোনাম ও ‘এইমাত্র হাসিনার পদত্যাগ নিশ্চিত করলো সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি’ শীর্ষক থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার কয়েকটি পুরোনো ভিডিও ক্লিপ ও ছবি যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, পূর্বেও চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রেক্ষিতে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সময় টিভি’র নকল ফটোকার্ডে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রীর পোস্ট ভাইরাল’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভাইরাল পোস্টের স্ক্রিনশটসহ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রীর পোস্ট ভাইরাল’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে সময় টিভি’র লোগো যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া আলোচিত ফটোকার্ডে যুক্ত কথিত ভাইরাল পোস্টটিরও কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গুজবের সূত্রপাত

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলা চটি গল্প ভান্ডার নামের একটি পাবলিক গ্রুপে Jim Akter নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ৬ ডিসেম্বর দুপুর ৩:৩০ মিনিটে করা সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে একই আইডি থেকে সেদিন বিকেল ৫টা ২৮ মিনিটে যশোরের মেয়ে স্বপনা নামের আরেকটি পাবলিক গ্রুপে ‘এখনো সময় আছে মেয়েদের কওমি মহিলা মাদ্রাসায় সুশিক্ষিত করুন! আর কত দেখবেন!’ শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত ফটোকার্ডটি পুনরায় পোস্ট (আর্কাইভ) পোস্ট করা হয়।

Screenshot: Facebook

এছাড়াও একই ফেসবুক আইডি থেকে উক্ত ফটোকার্ড ব্যতীতও শুধু কথিত ভাইরাল পোস্টের তথ্যটি 💔😔ডিপ্রেশন😔💔 নামের একটি পাবলিক গ্রুপে গত ৭ ডিসেম্বর দুপুর ৩:২১ মিনিটে পোস্ট (আর্কাইভ)  করা হয়।

Screenshot: Facebook

এরপর থেকেই আলোচিত ফটোকার্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। 

আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত Tumpa Akter নামের আইডির কথিত ভাইরাল পোস্টটিতে পোস্ট করার সময়ের স্থলে ২ দিন আগে লেখা রয়েছে। অর্থাৎ ফটোকার্ডটি যদি ৬ তারিখ প্রথম পোস্ট করা হয় সে হিসেবে কথিত ভাইরাল পোস্টটি ৪ তারিখ করা হতে পারে। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Tumpa Akter নামের একটি আইডি খুঁজে পাওয়া যায়। যাতে গত ৫ নভেম্বর আপলোড করা একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। যার সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত কথিত ভাইরাল পোস্টের স্ক্রিনশটের আইডির প্রোফাইল পিকচারের হুবহু মিল রয়েছে।

Photo Comparison by Rumor Scanner

তবে, Tumpa Akter নামের উক্ত ফেসবুক আইডিটি পর্যালোচনা করেও আলোচিত স্ট্যাটাসটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, আইডিটিতে গত ৯ নভেম্বর যতই ঠান্ডা পড়ুক বাড়ুক শীতের প্রকোপ, সেরার সেরা এই ঋতু যে ক্ষণস্থায়ী বড়,,তাই মনে জাগে ক্ষোভ (আর্কাইভ) শীর্ষক শিরোনামে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

যার মন্তব্যের ঘরে Sohail Hasan নামের এক ব্যক্তি আলোচিত ফটোকার্ডটি দিয়ে উক্ত পোস্টটি তার কিনা জানতে চান। এর উত্তরে Tumpa Akter জানান পোস্টটি তার নয়।

Screenshot: Facebook

পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডটি সময় টিভি প্রকাশ করেছে কিনা তা জানতে সময় টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সময় টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়াও সময় টিভি’র পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। উভয় ফটোকার্ডে সময় টিভি’র লোগোর পজিশন, ছবি ব্যবহারের নিয়ম এবং শিরোনাম লেখার ধরণ ও ফন্টের মধ্যে সম্পূর্ণ ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও সময় টিভি’র পেজে গত ২ মাসে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সময় টিভি তাদের ফেসবুক পেজে উক্ত ডিজাইনে কখনো কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

মূলত, গত ৬ ডিসেম্বর বাংলা চটি গল্প ভান্ডার নামের একটি পাবলিক গ্রুপে Jim Akter নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘আমি একজন জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রী হলেও বলছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ১০০% মেয়ের মধ্যে ৯০ % মেয়েই খাওয়া,’ শীর্ষক স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে একই আইডি থেকে উক্ত ফটোকার্ডটি আরও বেশকিছু পাবলিক গ্রুপে পোস্ট হলে সেটি  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সময় টিভি তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রকাশ করেনি। এছাড়াও দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত কথিত ভাইরাল পোস্টটি যে আইডি থেকে করা হয়েছে বলে উপস্থাপন করা হয়েছে সেই ফেসবুক আইডিটি পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কথিত ভাইরাল পোস্টের সাথে সময় টিভি’র লোগো যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং,‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রীর পোস্ট ভাইরাল’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি‘র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

তারেক রহমানের নির্দেশে সেনাবাহিনীর মাঠে নামার এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের গুজব 

সম্প্রতি, “সেনাবাহিনীর সহায়তা চাইলো তারেক জিয়া,ভয়ে পদত্যাগের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম” শীর্ষক শিরোনাম এবং তারেক রহমানের নির্দেশো মাঠে নামছে সেনাবাহিনী, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হাসিনার পদত্যাগ শীর্ষক  তথ্য সম্বলিত থাম্বনেইলে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

তারেক রহমান

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সেনাবাহিনীর মাঠে নামা এবং ২৪ ঘন্টার শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার তথ্যগুলো  সঠিক নয় বরং অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি (আর্কাইভ)পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ২ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের এই  ভিডিওটিতে প্রচারিত দাবিগুলো প্রসঙ্গে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি ভিডিও দেখানো হয়।

ভিডিও যাচাই

অনুসন্ধানে গত ৩০ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘দেশব্যাপী তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ পালনের আহবান জানিয়ে বক্তব্য। 30 October 2023’ শীর্ষক শিরোনামে তারেক রহমানের একটি ভিডিও (আর্কাইভ) বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও দেওয়া তারেক রহমানের বক্তব্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত তারেক রহমানের বক্তব্যের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় এবং ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের হাজারো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাসি, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ৩১ অক্টোবর এবং ১ ও ২ নভেম্বর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচী পালন করার আহ্বান বিষয়ক বক্তব্য দেন।

তবে, উক্ত আলোচনার কোথাও তারেক রহমান সেনাবাহিনীর মাঠে নামার বিষয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ করেননি।

এছাড়া, একটি দেশে সেনা মোতায়েন কিংবা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটলে তা অবশ্যই গণমাধ্যমে প্রচারিত হবে। তবে, রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে সেনাবাহিনীর মাঠে নামা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পদত্যাগ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পায়নি।

মূলত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ এবং সেনাবাহিনীর অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটে নানা ধরনের তথ্য প্রচার হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেটে “তারেক রহমানের নির্দেশে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হাসিনার পদত্যাগ” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। ভিডিওটি নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিগুলো সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে অধিক ভিউ পাবার আশায় একটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করে তাতে চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিগুলোর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র