Home Blog Page 371

ফিলিস্তিন ফান্ডে টাকা জমার জন্য মোজো কেনাই যথেষ্ট, কিউআর কোড স্ক্যানের প্রয়োজন নেই

0

ফিলিস্তিন ও ইজরায়েলের চলমান ইস্যুতে ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানিয়ে বাংলাদেশের আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড এর কোমল পানীয় ব্র্যান্ড ‘মোজো’ ঘোষণা করে, মোজাে’র প্রতিটি বিক্রিত বোতলের জন্য এক টাকা করে ফিলিস্তিনে দান করা হবে। ফিলিস্তিনের জন্য তাদের অর্থ সংগ্রহের এ উদ্যোগ ব্যাপক আলোচিত হয়। এ উদ্যোগের প্রেক্ষিতে মোজো তাদের বোতলের গায়ে উই সাপোর্ট প্যালেস্টাইন এবং ফান্ড আপডেট দেখার জন্য তৈরিকৃত ওয়েবসাইটের ঠিকানা কিউআর কোড হিসেবে যুক্ত করে। 

মোজোর বোতলের গায়ের সেই কিউআর কোডকে নিয়ে সম্প্রতি কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে– মোজোর বোতলে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান না করলে ফিলিস্তিনের জন্য তৈরীকৃত ফান্ডে কোনো টাকা জমা হবে না। কিংবা মোজোর ফিলিস্তিন ফান্ডে টাকা জমার জন্য কিউআর কোড স্ক্যান করতে হয়৷ 

ফেসবুকে এরকম দাবির কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিস্তিন ফান্ডে ডোনেশনের জন্য মোজো কেনাই যথেষ্ট, এই ডোনেশনের সাথে মোজোর বোতলের গায়ের কিউআর কোড স্ক্যান করা কিংবা না করার কোনো সম্পর্ক নেই।

ফিলিস্তিন ফান্ডে টাকা জমা হওয়ার জন্য মোজো কিনে বোতলের কিউআর কোড স্ক্যান করতে হয় এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে রিউমর স্ক্যানার। 

অনুসন্ধানের শুরুতে কিউআর কোডে সংযুক্ত তথ্য দেখার জন্য গুগল লেন্স দিয়ে মোজোর বোতলের লেবেলের কিউআর কোডটি স্ক্যান করলে সেখানে মোজোর ফিলিস্তিন এক টাকা উদ্যোগের যে ওয়েবসাইট, যেখানে ফান্ড আপডেট দেখা যায় সেই ওয়েবসাইটের ইউআরএল ‘wesupportpalestine.net’ পাওয়া যায়। 

QR code scan using Google lens

এই QR কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে গিয়ে মূলত ফান্ডের আপডেট জানা যাবে। এতে এক টাকা যোগ হওয়ার কোনো বিষয় নেই। মোজোর ফেসবুক পেজে প্রবেশ করলেও এমন তথ্যই পাওয়া যাবে। তাদের ফেসবুক পেজের পোস্টগুলোর ক্যাপশনে লেখা থাকে– “ফান্ড আপডেট জানতে ভিজিট করো www.wesupportpalestine.net অথবা মোজো বোতলে থাকা QR কোডটি স্ক্যান করো। ” অর্থাৎ,  এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে কিংবা কিউআর কোডের মাধ্যমে একই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ফান্ড আপডেট পাওয়া যাবে৷ প্রতিবার প্রবেশে, হোক সেটা কিউআর কোডের মাধ্যমে কিংবা সরাসরি ইউআরএলের মাধ্যমে– এতে ১ টাকা ফান্ডে যুক্ত হওয়ার কোনো বিষয় নেই৷ 

Mojo’s Facebook post

কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে যে এক টাকা ফান্ডে জমা হয়নি সেটি পরীক্ষার জন্য গত ১১ এপ্রিল, ১৬ এপ্রিল এবং ১৮ এপ্রিল তিনটি ভিন্ন দিনে রিউমর স্ক্যানার টিমের একজন অনুসন্ধানকারী মোজো কিনে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেছেন। মোজো কেনার পর স্ক্যান করার আগে ফিলিস্তিনের জন্য মোজোর ফান্ড সংগ্রহের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা ফান্ডের পরিমাণ তিনি নোট করেছেন এবং পরবর্তীতে স্ক্যান করার পর পুনরায় সেই ফান্ডের পরিমাণ যাচাই করে অভিন্ন পরিমাণ পেয়েছেন। অর্থাৎ, স্ক্যান করার কারণে ফান্ডে কোনো অর্থ যোগ হয়নি। অর্থ যোগ না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে মূলত কেবল তাদের ফান্ড আপডেট ওয়েবসাইট ভিজিট হচ্ছে। যদি কিউআর কোডের মাধ্যমে তাদের ফান্ড আপডেটের ওয়েবসাইটে প্রবেশে এক টাকা যোগ হতো, তাহলে বিষয়টা প্রতি ভিজিটে এক টাকা যোগ হওয়ার মতো দাঁড়াত। আদতে মোজো এই ফান্ডে প্রতি বোতল বিক্রি হওয়ার জন্য এক টাকা দিচ্ছে।

Screengrab from Moja Palestine fund update website

বিষয়টি নিয়ে আমরা মোজো কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। মোজো পানীয়র মালিক প্রতিষ্ঠান আকিজ ফুড এন্ড বেভারেজের ব্র্যান্ড ম্যানেজার আদনান শফিকের সাথে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি এটিকে সঠিক নয় বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। বোতলের গায়ে কিউআর কোড দেওয়ার ব্যাখ্যায় তিনি এটিকে স্বচ্ছতা নিশ্চিতমূলক পদক্ষেপ বলে জানান। তিনি আরও বলেন, “URL এর বদলে কেউ চাইলে সহজেই কিউআর কোড স্ক্যান করেও যাতে সংগ্রহকৃত ফান্ডের পরিমাণ দেখতে পারে, এজন্যই কিউআর কোডটি দেওয়া। ফিলিস্তিনের ফান্ডে টাকা জমা হতে কিউআর কোড স্ক্যান করার কোনো প্রয়োজন নেই। পানীয়টি কিনা-ই যথেষ্ট।”

কিভাবে ওই ওয়েবসাইটে ফান্ড আপডেট হয় সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “ডিস্ট্রিবিউটর থেকে দোকানে যে সেলস হয় এবং সেখান থেকে যে ইনফরমেশনগুলো আমাদের কাছে আসে সেগুলো সার্ভারে অ্যাড করা হয়।”

মূলত, বাংলাদেশের আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড এর কোমল পানীয় ব্র্যান্ড মোজো কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এবং ফান্ড আপডেট দেখার বিষয়কে সহজ করতে বোতলের গায়ে ফান্ড আপডেটের জন্য তৈরি ওয়েবসাইটের ইউআরএল টি কিউআর কোড হিসেবে দিয়েছে। যাতে করে যে কেউ সহজেই কিউআর কোডটি স্ক্যান করে সংগ্রহকৃত ফান্ডের পরিমাণ দেখতে পারেন। এটি স্ক্যান করা বা না করার সাথে ফিলিস্তিনের ফান্ডে টাকা জমা হওয়ার কোনোরকমের সম্পর্ক নেই।

সুতরাং, ‘মোজোর বোতলের কিউআর কোড স্ক্যান না করলে ফিলিস্তিনের জন্য তৈরীকৃত ফান্ডে কোনো টাকা জমা হবে না’ মর্মে প্রচারিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Analysis
  • Statement from Mojo authority  

ইরান কর্তৃক ইসরায়েলের আক্রমণের ঘটনার নয়, ভিডিওটি আর্জেন্টিনার

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসের নিকটে ইসরায়েলের হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের একজন সিনিয়র কমান্ডার ও ছয় কর্মকর্তা নিহত হলে এই হামলার প্রতিবাদে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলে কয়েকশ ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালায় ইরান। এরই প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে মিসাইল আঘাত করার পর ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে ইসরায়েলিরা দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে মিসাইল হামলায় ইসরায়েলিদের ঘর ছেড়ে পালানোর ভিডিও নয় বরং আর্জেন্টিনার ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ে agustomlinson নামক টিকটক একাউন্ট থেকে ২০২৪ সালের ৮ই এপ্রিল “LOU TE AMOO” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডের সাদৃশ্য পাওয়া যায়৷ 

Video Comparison: Rumor Scanner

টিকটক ভিডিওটিতে স্থান হিসেবে আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সের Four Seasons Hotel এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। গুগল ম্যাপে Four Season Hotel লিখে সার্চ করলে হোটেলটির অবস্থান আর্জেন্টিনায় বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। তুলনা করার সুবিধার্থে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভিডিওতে লেখাবিহীন একই ভিডিও খুঁজলে ১৪ এপ্রিল ২০২৪ সালে এক্সে প্রচারিত একই দাবির এই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

তাছাড়া, এবার গুগল ম্যাপের স্ট্রিট ভিউ থেকে আলোচিত ভিডিওর সাথে হোটেলের পারিপার্শ্বিক দৃশ্যেরও বেশ কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

টিকটক ভিডিওটিতে ব্রিটিশ গায়ক লুইস টমলিনসনের হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা দেখে কীওয়ার্ড সার্চ করলে ৮ এপ্রিল তারিখে আর্জেন্টিনায় উক্ত গায়ককে নিয়ে আর্জেন্টিনার সংবাদপত্র Infobae এ একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তাছাড়া, ঐদিনই গায়কের টিম থেকে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যেখানে বুয়েন্স আয়ার্সে ভক্তদের সাথে গায়ককে সাক্ষাৎ করতে দেখা যায়। যদিও, প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যধারণের পিছনের ঘটনা বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি, তবে কিছু এক্স ব্যবহারকারী ঘটনাটিকে টমলিনসনের সাথে ছবি তুলার জন্য ভক্তদের হুড়োহুড়ির ঘটনা বলে দাবি করেছেন। এরকম একজন ইউজারের ভাষ্যমতে তিনি নিজেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। 

Screenshot : X

অর্থাৎ, ভিডিওটির দৃশ্যধারণের পিছনের প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য জানা না গেলেও এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি ইসরায়েলের নয়।

মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল ইরান নিজেদের ভূখন্ড থেকে সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালায়। এরই প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে মিসাইল আঘাত করার পর ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে ইসরায়েলিরা দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইসরায়েলের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে ধারণকৃত।

সুতরাং, ইন্টারনেটে বিদ্যমান আর্জেন্টিনার একটি ভিডিওকে ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে ড্রোন হামলার পর ইসরায়েলিদের ঘর ছেড়ে পালানোর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকা-কোলা পান করলে মৃত্যুর ঝুঁকি নেই

0

কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকা-কোলা খেলে শরীরে ৩টি সাপের বিষের সমান বিষক্রিয়া উৎপন্ন হয়ে মানুষের মৃত্যু ঘটে” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য বেশ কয়েকবছর ধরে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকা-কোলা পান করলে মৃত্যুর কোনো ঝুঁকি নেই বরং কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত তথ্যটি বিগত কয়েকবছর ধরে ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়ে আসছে।

বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ব্লগিং অ্যান্ড সোস্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট Steemit এর ওয়েবসাইটে ৮ বছর পূর্বের একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত নিবন্ধে দাবি করা হয়, কাঁঠাল ও কোকা-কোলা একসাথে খেলে শরীরে ৫ টি কোবরা সাপের বিষের সমান বিষ উৎপন্ন হয়।

একই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ৭ বছর পূর্বের একটি নিবন্ধে কাঁঠালের কাছাকাছি প্রজাতির ডুরিয়ান ফলের সাথে কোকা-কোলা পান করে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত নিবন্ধে বলা হয়, একজন বিদেশি সিঙ্গাপুর ভ্রমণের সময় ডুরিয়ান ফলের সাথে কোকা-কোলা পান করায় ক্যাফেইনের বিষক্রিয়া ঘটে। ফলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ব্যক্তিটি অকস্মাৎ মৃত্যুবরণ করেন।  

এছাড়াও, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ব্যাঙ্গালোর মিররে ২০১৭ সালের ২৮ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় আমের সাথে কোকা-কোলা পান করে চীন ভ্রমণরত এক ভারতীয়ের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। 

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানে AFP এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১৩ জুলাই “Health experts refute misleading claim that consuming durian and cola together can be lethal” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Source: AFP

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ডুরিয়ান ফলের সাথে কোকা-কোলা পান করলে নিশ্চিত মৃত্যুর ঝুঁকি নেই বলে নিশ্চিত করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ। প্রতিবেদনটিতে আরও জানানো হয়, ডুরিয়ান অন্যসব চিনিযুক্ত ফলের মতোই। ফলে, স্থূলতা পরিহার করতে চাইলে ঘনঘন ডুরিয়ান ও কোকা-কোলা পান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

তবে, ডুরিয়ান ফলের সাথে অ্যালকোহল পান করলে অ্যালকোহলের বিষক্রিয়ার উপসর্গ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে একইসাথে ডুরিয়ান ও অ্যালকোহল পান করা উচিত নয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

অর্থাৎ, বিগত কয়েক বছর থেকেই কোকা-কোলার সাথে ভিন্ন ভিন্ন ফলের নাম জুড়ে দিয়ে, এসব ফল খাওয়ার পর কোকা-কোলা পান করলে নিশ্চিত মৃত্যু হবে দাবিতে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়ে আসছে।

ভারতের স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট লাইব্রেট এ- “কাঁঠাল ও কোকা-কোলা একত্রে খেলে আকস্মিক মৃত্যু হয় কি না?” এমন প্রশ্নের জবাবে, ডা. রাজিভা গুপ্তা নামের এক চিকিৎসক জানান, কাঁঠাল ও কোকা-কোলা একসাথে খেলে মৃত্যু হয় না, তবে কাঁঠাল ও কোকা-কোলা একত্রে খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়।

Source: Lybrate 

একই প্রশ্নের জবাবে ডা. রিয়াজ খান নামের একজন পুষ্টিবিদ বলেন, “কাঁঠাল ও কোকা-কোলা একত্রে খেলে মৃত্যু হয় না। কোনো খাবারের কম্বিনেশনই (একটি আরেকটির সাথে খাওয়া হলে) মৃত্যু ঘটায় না।”

Source: Lybrate 

ডা. নরেন্দ্র বড়ুয়া নামের অপর একজন পুষ্টিবিদ একই প্রশ্নের উত্তরে জানান, “কোনো খাবারের কম্বিনেশনই মৃত্যু ঘটাতে পারে না, কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং, এ জাতীয় অভ্যাস বর্জন করাই শ্রেয়।”

Source: Lybrate 

অর্থাৎ, কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকা-কোলা পান করলে নিশ্চিত মৃত্যুর ঝুঁকি নেই তবে কোকা-কোলা ও কাঁঠাল একসাথে না পান করাই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

মূলত, কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকা-কোলা পান করলে খেলে ৩টি সাপের বিষের সমান বিষক্রিয়া উৎপন্ন হয়ে মানুষের মৃত্যু ঘটে শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য বিগত কয়েক বছর ধরেই ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়ে আসছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি ভিত্তিহীন। কাঁঠাল খেয়ে কোকা-কোলা পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না হলেও এতে মানুষের মৃত্যু ঘটে না।

সুতরাং, কাঁঠাল খাওয়ার পর কোকা-কোলা পান করলে শরীরে ৩টি সাপের বিষের সমান বিষ উৎপন্ন হয়ে মানুষের মৃত্যু ঘটে শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

১২ জুন, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে টিকটকে একই দাবি সম্বলিত ভিডিও আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে কতিপয় টিকটক পোস্টকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

ইসরায়েলে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

0

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসের নিকটে ইসরায়েলের হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের একজন সিনিয়র কমান্ডার ও ছয় কর্মকর্তা নিহত হলে এই হামলার প্রতিবাদে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলে কয়েকশ ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালায় ইরান। এরই প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে একাধিক ফুটেজযুক্ত একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটক প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, একাধিক ফুটেজ সম্বলিত প্রচারিত ভিডিওটি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে হামলার ঘটনার নয় বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও একত্র করে আলোচ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই: ০১

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে projectoalestine75 নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৪ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর প্রথম অংশের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ইসরায়েল কর্তৃক লেবাননে হামলার দৃশ্য।

পরবর্তীতে blackccclloud নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

উপরের তথ্য ও সময়ের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এর ওয়েবসাইটে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি “Huge explosions as Israel strikes southern Lebanon” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে উক্ত দাবির (ইসরায়েল কর্তৃক লেবাননে হামলা) সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

ভিডিও যাচাই: ০২

ভিডিওটির বিষয়ে জানতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দ্বিতীয় অংশের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিও থেকে জানা যায়, এটি ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) কর্তৃক লেবাননে হামলার দৃশ্য।

ভিডিও যাচাই: ০৩

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের শুরুতে ফুটেজটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। ফুটেজের এক পর্যায়ে জাপানিজ ভাষায় কিছু লেখা এবং “Oh toro kitchen” শীর্ষক একটি রেস্টুরেন্টের নাম লক্ষ্য করা যায়।

Screenshot: Facebook

পবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জানা যায় এটি জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের মিনাটো শরের শিমবাশি এলাকার একটি রেস্টুরেন্ট

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাপানের দ্য জাপান নিউজ’র ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৩ জুলাইয়ে “Large Explosion in Shimbashi, Central Tokyo, 4 Injured” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত ঘটনা ২০২৩ সালে মধ্য টোকিওর শিমবাশি এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ে বিস্ফোরণের।

মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল ইরান নিজেদের ভূখন্ড থেকে সরাসরি ইসরায়েলে ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে হামলা চালায়।এই ঘটনার পরপরই ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার দৃশ্যদাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি উক্ত ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ইসরায়েল কর্তৃক লেবাননে হামলার এবং ২০২৩ সালে জাপানের টোকিওর শিমবাশি এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ে বিস্ফোরণের ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একত্র করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ইসরায়েল কর্তৃক লেবাননে হামলার এবং ২০২৩ সালে জাপানের টোকিওর শিমবাশি এলাকায় একটি বিল্ডিংয়ে বিস্ফোরণের ভিডিওকে ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চ্যানেল২৪ এর বুলেটিনের ভিডিও ব্যবহার করে জুয়ার অ্যাপের ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচার

সম্প্রতি, মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের ‘Shakib Banger’ নামের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে চ্যানেল ২৪ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দাবিতে ‘সাকিব আল হাসানের নতুন অ্যাপটি বাংলাদেশীদের জীবন পরিবর্তন করছে!’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ সাকিব আল হাসানের অনলাইন জুয়ার অ্যাপ দাবিতে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, চ্যানেল ২৪ এর News Express নামের একটি বুলেটিন শো-এর গত ১৭ মার্চের ভিডিওর সাথে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ভক্সপপের ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যার্লোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটির ডানপাশের উপরের দিকে Channel 24 এর লোগো দেখতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি ভিডিওটির শেষাংশে সংবাদ উপস্থাপিকার পেছনে দুটি শব্দের আংশিক অংশ ‘NE’ এবং ‘EXPR’ লেখাগুলো দেখতে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটিতে থাকা Channel 24 এর লোগো এবং ‘NE’ এবং ‘EXPR’ লেখা দুটির সম্ভাব্য পূর্ণরূপ NEWS EXPRESS লেখাটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেল Channel 24 Bulletin এ গত ১৭ মার্চ নিউজ এক্সপ্রেস | News Express | ১৭ মার্চ ২০২৪ | Channel 24  শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যলোচনা করে দেখা যায়, সাকিব আল হাসানের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে চ্যানেল ২৪-এর প্রতিবেদন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির উপস্থাপিকার সাথে উক্ত ভিডিওর বেশ কিছু অংশের হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, এটি চ্যানেল ২৪ এর বুলেটিন শো News Express এর গত ১৭ মার্চের বুলেটিনের ভিডিও। 

তবে আলোচিত ভিডিওটিতে দেখানো তিন ব্যক্তির ভক্সপপের ভিডিওটি অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ এবং ভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা গেল

আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারকারী পেজটি (আর্কাইভ) পর্যালোচনা করে দেখা যায় এতে বেশ কিছু অনলাইন ভিত্তিক জুয়া খেলার প্রচারণামূলক পোস্ট রয়েছে (, , )। এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের কথা উল্লেখ রয়েছে। পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, পেজটি ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি আরও জানা যায়, উক্ত পেজটি ২০২৩ সালের ১৬ জুন তৈরি করা হয়েছে এবং পেজটির নাম একবার পরিবর্তন করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook 

মূলত, বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম  চ্যানেল ২৪তাদের বুলেটিন বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেলে বুলেটিন শো News Express এর ভিডিও প্রচার করে থাকে। গত ১৭ মার্চ কুমিল্লায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯ বগি লাইনচ্যুত হওয়াসহ সেদিনের বেশকিছু ঘটনা নিয়ে উপস্থাপিকা শাহনাজ শাহরিয়ারের একটি বুলেটিন প্রচার করা হয়। সম্প্রতি উক্ত বুলেটিনের কিছু অংশ কেটে তার সাথে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি ভক্সপপ যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাতে জুয়ার অ্যাপের প্রচারণামূলক ভয়েসওভার যুক্ত  করে দাবি করা হচ্ছে, চ্যানেল ২৪ মাগুরা- ১ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের ‘Shakib Banger’ নামের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, চ্যানেল ২৪ সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে এমন কোনো জুয়ার অ্যাপের বিষয় কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে চ্যানেল২৪  অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এ সংক্রান্ত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

সড়ক দুর্ঘটনায় মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর মৃত্যুর গুজব

0

সম্প্রতি, ইসলামিক বক্তা মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

তাহেরীর মৃত্যুর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি উক্ত দাবিতে ফেসবুকে সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি ১ কোটি ২০ লাখের ওপরে দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ৬৩ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এছাড়া, ভিডিওটি ৪৭ হাজারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসলামি বক্তা মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাননি বরং কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রে উক্ত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল (১৭ এপ্রিল) “তাহেরী হুজুর না ‘ফে/রা/র দেশে চলে গেলেন “মি/থ্যা, টাইটেল নিয়ে কী বললেন তাহেরী হুজুর” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত ভিডিওতে গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যে তাহেরী আলোচিত দাবিটি মিথ্যা বলে জানান। 

এছাড়া, গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও আলোচিত দাবিটি মিথ্যা উল্লেখ করে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করা হয়।

Screenshot: Facebook

পাশাপাশি, গতকাল (১৭ এপ্রিল) গিয়াস উদ্দিন তাহেরীকে কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ার মহালক্ষীপাড়ায় একটি ইসলামিক মাহফিলে অংশগ্রহণ (আর্কাইভ) করতে দেখা যায়। 

উক্ত মাহফিলে অংশগ্রহণের ভিডিও দেখুন- এখানে। 

মূলত, সম্প্রতি ইসলামিক বক্তা মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিটি মিথ্যা। গিয়াস উদ্দিন তাহেরী নিজেই ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচ্য দাবিটি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন এবং গতকাল (১৭ এপ্রিল) তাকে কুমিল্লায় একটি ইসলামিক মাহফিলে অংশগ্রহণ করতেও দেখা যায়। 

সুতরাং, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Mufti Gias Uddin Tahery- Facebook Post 
  • Md. Gias Uddin- Facebook Post (1,2,3)
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

যৌতুক চাওয়ায় বর ও বরের বাবাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখার ভাইরাল ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড

সম্প্রতি “বিয়েতে যৌতুক চাওয়ায় বরের বাবাকে রশি দিয়ে বেঁধে রেখেছে বউ এর পরিবার” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও এবং ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, বিয়ের কাবিনের সময় যৌতুক হিসেবে গাড়ি চাওয়ায় বর এবং বরের বাবাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে পাত্রীপক্ষ। 

যৌতুক চাওয়ায়

উক্ত বিষয়ে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। ইত্তেফাকের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ৮ লক্ষ ৫০ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ২০ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে, শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২শত বার এবং মন্তব্য করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬শ টি।

এ বিষয়ে ফেসবুকে ভাইরাল (আর্কাইভ) একটি ভিডিও প্রায় ১০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে, শেয়ার করা হয়েছে ৬ হাজার ১শত বার এবং ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজার ২ শত টি মন্তব্য করা হয়েছে।

জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরীর ফেসবুক পেজেও উক্ত ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত ১০ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভাইরাল এই পোস্টে প্রায় ৩৭ হাজার ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে, শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬ শত বার। ভিডিওটিতে ১ হাজার ৩ শত এর বেশি মন্তব্য করা হয়েছে।

টিকটকে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে একই দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, যৌতুক চাওয়ার কারণে বর এবং তার বাবাকে পাত্রীপক্ষের রশি দিয়ে বাঁধার ভাইরাল ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বরং বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি উক্ত ভিডিওটি বাস্তব দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

ভাইরাল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণের পর প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, গত ১২ এপ্রিল ‘Sk Sagor’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ৩ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের মূল ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল আলোচ্য ভিডিওটি এই ভিডিওরই খণ্ডিত অংশ। 

Screenshot: Facebook.

একই পেজে গতকাল ১৭ এপ্রিল যৌতুক প্রথা বিষয়ে আলোচ্য ভিডিওর মতো একই ধরণের ভিন্ন একটি ভিডিও (আর্কাইভ) প্রচার হতে দেখা ভাইরাল ভিডিওতে বর ও বরের বাবার ভূমিকায় থাকা ব্যক্তিরা এই ভিডিওতেও একই ভূমিকায় দেখা যায়।

পরবর্তীতে এসকে সাগর নামের ফেসবুক পেজটি (আর্কাইভ) পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পেজের বায়োতে লেখা রয়েছে, “এখন থেকে অনেক মজার মজার ফানি ভিডিও দেয়া হবে সবাই আমাদের ভিডিও গুলো দেখবেন আশা করি অনেক আনন্দ পাবেন।” এই বিবরণ থেকে বোঝা যায় পেজটিতে প্রচারিত উক্ত ভিডিওগুলো মূলত বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook. 

এরপর এই পেজে প্রচারিত অন্যান্য ভিডিওগুলোও পর্যবেক্ষণ করি আমরা। ভাইরাল ভিডিওতে বরের বাবার ভূমিকায় অভিনয় করা ব্যক্তিকে গত ১৭ মার্চ একই পেজে প্রচারিত বাইক চুরি সম্পর্কিত ভিন্ন একটি ভিডিওতে বাইকের মালিকের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়।

Comparison: Rumor Scanner. 

একই ব্যক্তিকে গত ১৮ মার্চ পেজটিতে প্রচারিত ছাগল চুরি সম্পর্কিত একটি ভিডিওতে ছাগলের মালিকের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner. 

ভাইরাল ভিডিওটিতে পাত্রীপক্ষের চরিত্রে অভিনয় করা এক ব্যক্তিকেও এই ভিডিওতে ছাগল চোরের চরিত্রে দেখা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner. 

অর্থাৎ, যৌতুক সম্পর্কিত ভাইরাল ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয়।

মূলত, গত ১২ এপ্রিল ‘Sk Sagor’ নামের একটি ফেসবুক পেজে বিয়ের দিন যৌতুক চাওয়ায় বর ও বরের বাবাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখার একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও কনটেন্ট প্রচার করা হয়। তবে ভিডিওতে কোনো ডিসক্লেইমার না থাকায়, নেটিজেনরা ভিডিওটিকে বাস্তব ঘটনা ভেবে বিভ্রান্ত হন। পরবর্তীতে, ভিডিওটি বাস্তব ঘটনা দাবি করে ইন্টারনেটে ভাইরাল হয় এবং একটি মূলধারার গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজেও ভিডিওটিকে বাস্তব ঘটনার বলে প্রচার করা হয়।

সুতরাং, বিয়েতে যৌতুক চাওয়ায় বর ও বরের রশি দিয়ে বেঁধে রাখা সংক্রান্ত একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও বাস্তব ঘটনা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Facebook Page: Sk Sagor 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis. 

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ছবি প্রচার

0

গত ৮ এপ্রিল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করেন উত্তর আমেরিকার বাসিন্দারা। উত্তর আমেরিকার তিন দেশ মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে এই সূর্যগ্রহণ দেখা যায়। যাকে ‘গ্রেট নর্থ আমেরিকান এক্লিপস’ও বলা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের অন্যতম সেরা ছবি দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের ছবি দাবিতে প্রচারিত আলোচিত ছবিটি বাস্তব নয়। বরং ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায়  তৈরি করা হয়েছে।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Astronomy Perplex নামের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও মহাকাশ বিষয়ক একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১১ এপ্রিল একই ছবিটি প্রচার করতে দেখা যায়। 

Screenshot: Instagram 

ছবিটির শিরোনামে দাবি করা হয়, ছবিটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা তৈরি করা। 

পরবর্তীতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ‍দুটি এআই শনাক্তকারী ওয়েবসাইট Hive Moderation এবং IsitAi এর সহায়তা নেয় রিউমর স্ক্যানার টিম। উভয় ওয়েবসাইটেই ছবিটিকে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত বলে শনাক্ত করা হয়। 

Screenshot: Hive Moderation & IsitAi

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নাসা-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৮ এপ্রিল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সরাসরি সম্প্রচারের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাস্তব পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের দৃশ্যের সাথে আলোচিত ছবির সূর্যগ্রহণের দৃশ্যের কোনো মিল নেই।

অর্থাৎ, সূর্যগ্রহণের আলোচিত ছবিটি কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত।

মূলত, গত ৮ এপ্রিল উত্তর আমেরিকার তিন দেশ মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হয়। যাকে ‘গ্রেট নর্থ আমেরিকান এক্লিপস’ও বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। ১৯৭৯ সাল ও ১৯৯১ সালের পর এবারই পুনরায় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করলো কানাডা ও মেক্সিকো। তবে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট শেষ এ রকম সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল। সম্প্রতি, এই গ্রেট নর্থ আমেরিকান এক্লিপস এর প্রেক্ষিতে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের অন্যতম সেরা ছবি দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি সূর্যগ্রহণের একটি ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের একটি ছবিকে সাম্প্রতিক পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গত ০৯ এপ্রিল চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন, দুইজন নন

0

গত ০৯ এপ্রিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা হবিগঞ্জগামী একটি যাত্রীবাহী বাস সামনে থাকা একটি কার্গোর পেছনে ধাক্কা দেয়। এই দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

চৌদ্দগ্রামে সড়ক

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ০৯ এপ্রিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় কাভার্ডভ্যান এবং বাসের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজন নয় বরং একজন নিহত হয়েছেন।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশ প্রতিদিন এর ওয়েবসাইটে গত ০৯ এপ্রিল “কুমিল্লায় কাভার্ডভ্যানে বাসের ধাক্কায় নারী নিহত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৯ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় কাভার্ডভ্যানে বাসের মধ্যকার একটি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে এক নারী নিহত হয়েছেন। 

একই তারিখে চ্যানেল ২৪ এর ওয়েবসাইটে “চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী নিহত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় শাহেদা বেগম (৫৫) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। 

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার ওসি মো. লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, চৌদ্দগ্রামের দুর্ঘটনায় একজন মহিলা মারা গিয়েছিলেন।

মূলত, গত ০৯ এপ্রিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় কাভার্ডভ্যান এবং বাসের মধ্যকার একটি দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় দুইজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত দুর্ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি নয় বরং একজন নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম শাহেদা বেগম (৫৫)। 

সুতরাং, গত ০৯ এপ্রিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন ব্যক্তি নিহত হলেও এই ঘটনায় দুইজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

জর্ডানের রাজকুমারী সালমা কর্তৃক ইরানের ড্রোন ধ্বংস করার দাবিটি মিথ্যা

0

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসের নিকটে ইসরায়েলের হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের একজন সিনিয়র কমান্ডার ও ছয় কর্মকর্তা নিহত হলে এই হামলার প্রতিবাদে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলে কয়েকশ ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালায় ইরান। এরই প্রেক্ষিতে জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহর কন্যা প্রিন্সেস সালমা ইরানের ৬ টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছেন দাবিতে সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটসহ একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

 ইরানের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়া, সংবাদমাধ্যমের স্ক্রিনশট ব্যতীতও প্রায় একই দাবি ফেসবুক প্রচার হতে দেখা যায়। উক্ত পোস্টগুলোতে ৬ টির পরিবর্তে ৫ টি ড্রোন ভূপাতিতের দাবি করা হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যনার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহর কন্যা প্রিন্সেস সালমা কর্তৃক ইরানের ৫ বা ৬ টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার দাবিটি সত্য নয় বরং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রিন্সেস সালমার নেতৃত্বে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

Screenshot: Facebook

অনুসন্ধানে শুরুতে প্রচারিত সংবাদের স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। স্ক্রিনশটটিতে আরব আমিরাত ভিত্তিক ম্যাগাজিন Emirates Woman এর লোগো লক্ষ্য করা যায়। পাশাপাশি উক্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশের তারিখ গত ১৪ এপ্রিল উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘Emirates Woman’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৪ এপ্রিলে “Princess salma of jordan reported to down 6 iranian drones overnight” শীর্ষক শিরোনামে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে Emirates Woman এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর “Princess Salma of Jordan leads Airforce initiative to airdrop medical supplies in Gaza” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত স্ক্রিনশটের শিরোনাম ও তারিখ ব্যতীত বাকি অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Emirates Woman

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে জর্ডানের রাজকুমারী সালমা বিনতে আবদুল্লাহ উত্তর গাজায় জরুরী চিকিৎসা সরবরাহের উদ্দেশ্যে জর্ডানের বিমান বাহিনীর সদস্যদের একটি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

অর্থাৎ, এই প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়া, অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে জর্ডানের রাজকুমারী সালমা বিনতে আবদুল্লাহ কর্তৃক ইরানের ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি প্রসঙ্গে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জর্ডানের রাজকুমারী সালমা বিনতে আবদুল্লাহ উত্তর গাজায় জরুরী চিকিৎসা সরবরাহের উদ্দেশ্যে জর্ডানের বিমান বাহিনীর সদস্যদের একটি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যা নিয়ে সেসময় আরব আমিরাত ভিত্তিক ম্যাগাজিন Emirates Woman এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি, সেই প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটের শিরোনাম ও তারিখ পরিবর্তন করে জর্ডানের রাজকুমারী সালমা বিনতে আবদুল্লাহর নেতৃত্বে সম্প্রতি ইরানের ৫ বা ৬টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, জর্ডানের রাজকুমারী সালমা বিনতে আবদুল্লাহ ইরানের ৫ বা ৬টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র