Home Blog Page 366

গণেশের মূর্তির ছবি দিয়ে তৈরি জুতাটি বাংলাদেশের নয়, ছবিটিও প্রায় ২০ বছর পুরোনো

0

সম্প্রতি হিন্দুদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেবতা গণেশের ছবি সম্বলিত একটি স্যান্ডালের ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে বাংলাদেশে সনাতন ধর্মকে অবমাননা করা হচ্ছে।

মূর্তি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেবতা গণেশের ছবি সম্বলিত স্যান্ডেলের ছবিটি বাংলাদেশের নয়, এটি আমেরিকার। আমেরিকার প্রতিষ্ঠান American Eagle Outfitters এটি তৈরি করেছিল এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা দুঃখপ্রকাশ করে ২০০৩ সালেই এটি মার্কেট থেকে সরিয়ে নেয়।

এ বিষয়ের অনুসন্ধানের শুরুতে, রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুসন্ধান করলে Change নামের এক ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালে করা একটি পিটিশন দেখতে পায় রিউমর স্ক্যানার। সেখানে একই এক জোড়া স্যান্ডেলের ছবি দিয়ে শশীকলা ডালভি নামের একজন ব্যক্তি American Eagle Outfitters এর প্রতি একটি পিটিশন শুরু করেন এবং স্যান্ডালটির প্রত্যাহার দাবি করেন। উক্ত পিটিশনটিতে ৩৯২ জন সাপোর্টার ছিলেন৷ 

Screenshot: Change

তবে, পরবর্তীতে তিনি এই পিটিশনটি বন্ধ করে দেন এবং আপডেট হিসেবে জানান, AE থেকে দুঃখপ্রকাশসহ ২০০৩ সালেই এই স্যান্ডালটির বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ পুরাতন বিষয় নিয়ে এরকম পদক্ষেপের জন্য তিনি দুঃখপ্রকাশও করেন। 

Screenshot: Change

এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে, ২০১৫ সালে একই ছবি, ও (বিক্রয় বন্ধ করার) একই দাবিতে একটি টুইট এক্সে (সাবেক টুইটার) খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। যেখানে, কোম্পানিকে ট্যাগ করে টুইট করা হয়।

Screenshot: X

কোম্পানির নামের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে এ পর্যায়ে আলোচিত বিষয়ে ২০০৩ সালে প্রকাশিত কিছু সংবাদফোরাম কার্যক্রম খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। 

২০০৩ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকাশিত “Hindus Protest over Sandels with ganesha images” শিরোনামে দুটি আর্টিকেল খুঁজে পাওয়া যায়৷ যার মধ্যে প্রথমটিতে স্যান্ডেলের বিষয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ করার পরও হিন্দু সম্প্রদায় প্রতিবাদ অব্যাহত রাখে৷ কারণ, তখনও একই কোম্পানির তৈরি আরেকটি হ্যান্ডব্যাগ দেবতা গণেশকে অবমাননা করছে বলে আমেরিকান হিন্দু কমিটি American Hindus Against Defamation বা সংক্ষেপে AHAD প্রতিবাদ চালিয়ে যায়৷ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে খুঁজে পাওয়া দ্বিতীয় আর্টিকেলেও Sify News এর বরাতে প্রকাশ করা হয় যে কোম্পানিটি এই বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছে। 

বেশ কিছু সমালোচনার মুখোমুখি হলে অবশেষে এটি তৈরির সাথে জড়িত ‘আমেরিকান ঈগল আউটফিটার্স’ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জেনারেল কাউন্সেল Neil Bulman নিজেদের এই কার্যক্রমের জন্য ২০০৩ সালের ২৯ এপ্রিল প্রকাশ্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং একইসাথে মার্কেট থেকে এই স্যান্ডালটি প্রত্যাহারের বিষয়েও আশ্বস্ত করেন। 

Photo : Apology from American Eagle Outfitters 

Nidan নামে হিন্দুধর্ম নিয়ে অধ্যয়ন করা একটি জার্নালও Neil Bulman এর এই প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ফিচার প্রকাশ করে। তাছাড়া, তাঁদের এই অপরাধ স্বীকার করে মার্কেট থেকে জুতাটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সংবাদ আরো কিছু ওয়েবসাইটেও প্রকাশ হতে দেখা যায়। 

মূলত, ২০০৩ সালে American Eagle Outfitters হিন্দুদের দেবতা গণেশের ছবি সম্বলিত একটি স্যান্ডাল বাজারে আনলে হিন্দু সম্প্রদায়ের তীব্র প্রতিবাদের মুখোমুখি হয়ে তারা একটি প্রকাশ্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে এবং মার্কেট থেকে জুতাটি প্রত্যাহার করে নেয়৷ 

সম্প্রতি সেই জুতার ছবিকে বাংলাদেশে তৈরি জুতার মধ্যে গণেশের মূর্তির ছবি বলে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, বাংলাদেশে জুতার মধ্যে দেবতা গণেশের ছবি ছাপিয়ে হিন্দুদের অবমাননা করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়ার গুজব প্রচার

0

সম্প্রতি, সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়ার দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

বিনামূল্যে সোলার

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে মানুষকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত পোস্ট গুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে DailySearch নামক ফেসবুক পেজে গত ৯ এপ্রিলে বেলা ১১ টা ৩৬ মিনিটে এবং PremiumSearch নামক ফেসবুক পেজে একই দিনে বেলা ১১ টা ৪২ মিনিটে একই বিষয়ে আলাদা দুটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে এই পেজ দুটির মাধ্যমেই আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে।

পরবর্তীতে উক্ত পেজ দুটির এড লাইব্রেরি অপশনে গিয়ে একই ছবি দিয়ে অন্যান্য বিভিন্ন দেশের ভাষায় একই দাবি প্রচার করতে দেখা যায়।

Screenshot Collage: Rumor Scanner

ফেসবুক পোস্টে দেওয়া ওয়েবসাইট (,) গুলোতে ঢুকে আলোচিত দাবির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়ার ক্যাম্পেইনটি ভুয়া।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ অফিসের যুগ্ম সচিব এম. রায়হান আখতারের সাথে যোগাযোগ করা হলে  তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এমন কোনো প্রকল্প সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি”।

এছাড়া, সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশিয় গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়া হচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে একটি তথ্য প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধনে জানা যায়, উক্ত দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে, ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে মানুষের সাথে প্রতারণার উদ্দেশ্যে আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। সরকার এমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে বিদ্যুৎ বিভাগের জ্বালানি দক্ষতা ও সংরক্ষণ অফিসের যুগ্ম সচিব এম. রায়হান আখতার রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।

সুতরাং, সরকারি অনুদানের অধীনে বিনামূল্যে সোলার প্যানেল দেওয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Statement from M. Rayhan Akhtar
  • Rumor Scanner Own Analysis

এটিএন নিউজ ও ডিপজলের ভিডিও ব্যবহার করে জুয়ার অ্যাপের বিজ্ঞাপন ফেসবুকে

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদ্য নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে এটিএন নিউজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

জুয়া

BTR Group নামে ফেসবুক পেজে প্রচারিত উক্ত দাবির ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজ ডিপজলের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি বরং ২৭ মার্চ প্রকাশিত একটি সংবাদ বুলেটিনের ভিডিওকে সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে লোগো এবং ভিন্ন ভয়েস-ওভার যুক্ত করে ডিপজলের একটি প্রেস ব্রিফিং এর ভিডিও ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ মার্চ “ভেঙে পড়ল ভারতের দীর্ঘতম সেতু | Bridge Collapse | India | International | ATN News” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি সংবাদ বুলেটিনের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনের শুরুর অংশের সংবাদ উপস্থাপনের অংশের সাথে আলোচিত সম্পাদিত ভিডিওটির শুরুর অংশের সাথে মিল রয়েছে। তবে, এর সাথে আলোচিত জুয়া সম্বলিত দাবিটির কোনো সম্পর্ক নেই। তাছাড়া এটিএন নিউজেও এমন কোনো সংবাদ প্রচারের প্রমাণ মেলেনি। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner 

ডিপজলের সাক্ষাৎকারের ভিডিও ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে একই বেসরকারি সংবাদমাধ্যম এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩১ মার্চ, ২০২৪ এ “কাঞ্চন পরিকল্পনা করে শিল্পী সমিতি নষ্ট করেছে অভিযোগ ডিপজলের | Shilpi Shomiti | Ilias Kanchan -Dipjol” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর ডিপজলের ক্লিপের সাথে উক্ত ভিডিওর  মিল রয়েছে। দুটোতেই তার পোশাক, চোখের চশমা, অঙ্গভঙ্গি, বাচনভঙ্গী,পাশে বসা মাথায় ক্যাপ পরিহিত শিল্পী সমিতির সদ্য নির্বাচিত সভাপতি মিশা সওদাগর, পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন সবকিছুর মিল দেখতে পাওয়া যায়। 

Screenshot comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডিপজলকে শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে সমালোচনা করতে দেখা যায়। তবে উক্ত ভিডিওতে ডিপজলকে কোনো জুয়ার অ্যাপের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি। তাই ডিপজলের উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিটির কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা গেল

আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারকারী BTR Group (আর্কাইভ) পেজটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় এতে অনলাইন ভিত্তিক জুয়া খেলার প্রচারণামূলক পোস্ট রয়েছে। এছাড়াও পেজটির লোকেশনের স্থানে রোমানিয়ার বুখারেস্ট শহরের কথা উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি জানা যায় উক্ত পেজটি ২০২৩ সালের ২৩ জুন তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot comparison: Rumor Scanner

মূলত, সম্প্রতি অভিনেতা ডিপজলের কথিত অনলাইন জুয়ার অ্যাপ নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিপজলকে নিয়ে এমন কোনো সংবাদ এটিএন নিউজ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৭ মার্চে এটিএন নিউজে সংবাদ বুলেটিনের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। উক্ত ভিডিওর উপস্থাপিকার এবং ডিপজলকে নিয়ে এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত একটি সংবাদ সম্মেলনের কিছু অংশ কেটে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাতে এটিএন নিউজের লোগো, ভিন্ন একটি অডিও এবং ‘Crazy Time’ নামের একটি অনলাইন জুয়ার অ্যাপের বিজ্ঞাপন যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।  

সুতরাং, এটিএন নিউজের লোগো সম্বলিত ভিডিওটিতে যুক্ত অভিনেতা ডিপজল Crazy Time নামের অনলাইন জুয়ার অ্যাপের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিষয়টি স্ক্যাম বা প্রতারণা।

তথ্যসূত্র

নাটোর-রাজশাহী নয়, ছবিটি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের

0

অন্তত ছয় বছর ধরে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের দৃশ্য দাবিতে দুই পাশে সবুজ গাছে ঘেরা একটি মহাসড়কের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

নাটোর-রাজশাহী

সম্প্রতি উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

বিগত বছরগুলোতে উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন  ২০২৩ (আর্কাইভ, ২০২২ (আর্কাইভ), ২০২০ (আর্কাইভ), এবং ২০১৯ (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের ছবি নয়, বরং এটি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের ছবি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি মূলত মোঃ আবুল বাশার নামের একজন ফটোগ্রাফার তুলেছিলেন। 

তিনি ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হুবহু একই ছবিটি পোস্ট করেন। উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে ছবিটি তুলতে তিনি Canon 60D ব্যবহার করেছেন বলে উল্লেখ করেন। একইসাথে ছবিটির স্থান সম্পর্কে ক্যাপশনে লেখা হয়, “বসন্তপুর, রাজশাহী টু চাঁপাইনবাবগঞ্জ রোড”। 

Photo: Facebook

২০২৩ সালের ৯ জুন তারিখে ছবিটি নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পুনরায় পোস্ট করেন জনাব বাশার।

২০২০ সালে Bangladeshi Beauty নামের নিজ ফেসবুক গ্রুপে একই স্থানের ভিন্ন একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি৷

তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অনুসন্ধান করে জানা যায়, তিনি রাজশাহীতেই থাকেন এবং প্রায়ই রাজশাহীর নানা ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করে থাকেন। 

এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য রিউমার স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে মোঃ আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ছবিটি তিনি আরো অনেক আগে (২০১৮ সালে) তুলে নিজের ফেসবুক পেজ ও আরো নানা গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন। তবে, ফেসবুক পেজটি হারিয়ে যাওয়ায় প্রথম দিকে করা মূল পোস্টটি আর নেই। এই ছবির স্থান সম্পর্কে তিনি জানান, “রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাইওয়ে। বসন্তপুর (গোপালপুর পার হয়ে একটু সামনে)”

পরবর্তীতে জনাব আবুল বাশারের কাছ থেকে মেইলযোগে উক্ত ছবির মূল ফাইলটি সংগ্রহ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

মেটাডাটা বিশ্লেষণ 

মোঃ আব্দুল বাশার থেকে প্রাপ্ত মূল ছবিটির মেটাডাটা বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এই বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় যে, ছবিটির ডাটায় কোনো ধরনের বিকৃতি ঘটেনি। এছাড়াও মেটাডাটা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ছবিটি ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর তোলা হয়েছিল।

Image Metadata: JIMPL. 

মূলত, ২০১৮ সালে মোঃ আবুল বাশার নামের এক ফটোগ্রাফার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের একটি ছবি তুলে ফেসবুক শেয়ার করেন। পরবর্তীতে তার তোলা এই ছবিটি গত কয়েক বছর ধরে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।  

অর্থাৎ, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের ছবিকে নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis
  • Metadata of image provided by MD Abul Bashar – Image Metadata 

সময় টিভি’র নকল ফটোকার্ডে আরএস ফাহিমের টিকটক আইডি হ্যাকের ভুয়া তথ্য প্রচার

সম্প্রতি, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আরএস ফাহিমের টিকটক আইডি আরেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাকিব হোসেন হ্যাক করেছেন দাবিতে ‘আরএস ফাহিমের এর টিকটক আইডি হ্যাক করেছে রাকিব হোসেনের’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ডে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

হ্যাক

টিকটকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ডের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত উক্ত দাবির ভিডিওই দেখা হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ ৮০ হাজার বার। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ৩৪ হাজার ৭৯৬ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ২৩১ বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আরএস ফাহিমের টিকটক আইডি আরেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাকিব হোসেন হ্যাক করেছে দাবি করে কোনো প্রতিবেদন কিংবা ফটোকার্ড সময় টিভি প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট বা সম্পাদনার মাধ্যমে সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা লোগোর সূত্র ধরে সময় টিভি‘র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সময় টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়াও সময় টিভি’র পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। আলোচিত ফটোকার্ডটিতে সময় টিভি’র শিরোনাম লেখার প্যার্টান ও ফন্টের মধ্যে সম্পূর্ণ ভিন্নতা রয়েছে। এছাড়াও আলোচিত ফটোকার্ডটিতে তা প্রকাশের তারিখের স্থান ফাঁকা রয়েছে। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সময় টিভি’র ‘সময়ের গল্প’ নামের ফেসবুক পেজে গত ৭ এপ্রিল আরএস ফাহিমের বাইক চুরি করেছেন রাফসান! শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড এবং এর ক্যাপশনে একই শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot Collage by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুঞ্জন শুরু কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আরএস ফাহিমের বাইক চুরি হয়েছে। আর সেই চুরির দায় পড়ে আরেক জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের ওপর। 

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, গুঞ্জনের শুরুটা রাফসান দ্য ছোট ভাই নিজেই করেছেন। সেদিন দুপুর ১২টার দিকে ‘আরএস ফাহিমের বাইক চুরি হয়ে গেছে!’ শীর্ষক তার এমন ফেসবুক পোস্ট থেকেই মূলত এই আলোচনার শুরু।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি আরএস ফাহিমের টিকটক আইডিটি টিকটক থেকে ব্যান (আর্কাইভ) করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

তবে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাকিব হোসেনের বিরুদ্ধে আরএস ফাহিমের টিকটক আইডি হ্যাক করার দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরএস ফাহিমের এ সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, ‘আরএস ফাহিমের এর টিকটক আইডি হ্যাক করেছে রাকিব হোসেনের’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

মূলত, সম্প্রতি কনটেন্ট ক্রিয়েটর আরএস ফাহিমের টিকটক আইডিটি টিকটক থেকে ব্যান করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তার অ্যাকাউন্টটি টিকটকে পাওয়া যাচ্ছে না। এরই প্রেক্ষিতে এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আরএস ফাহিমের টিকটক আইডি আরেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাকিব হোসেন হ্যাক করেছেন দাবিতে ‘আরএস ফাহিমের এর টিকটক আইডি হ্যাক করেছে রাকিব হোসেনের’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি’র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ডে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সময় টিভি এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। এছাড়া আর ফাহিম নিজেও তার টিকটক আইডি রাকিব হোসেন হ্যাক করেছে এমন কোনো দাবি করেননি।

সুতরাং, ‘আরএস ফাহিমের এর টিকটক আইডি হ্যাক করেছে রাকিব হোসেনের’ শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভি‘র লোগো সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

সিলেটের তাপমাত্রা ৬ দশকেও ৩৮ ডিগ্রি না ছোঁয়ার ভুল তথ্য গণমাধ্যমে

সম্প্রতি, মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে “সিলেটে ৬ দশকেও তাপমাত্রা ছোঁয়নি ৩৮ ডিগ্রীর ঘর” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার করা হয়।

সিলেটের তাপমাত্রা

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে(আর্কাইভ)।

পরবর্তীতে চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

এছাড়াও একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত আরও কিছু পোস্ট দেখুন এখানে(আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৬ দশকে সিলেটের তাপমাত্রা কখনোই ৩৮ ডিগ্রি না পেরোনোর তথ্যটি সঠিক নয় বরং ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল সিলেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। পাশাপাশি, ২০২২ সালে ১৪ জুলাই সিলেটের ইতিহাসে জুলাই মাসের সর্বোচ্চ ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, সময় টিভি’র ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৫ জুলাই “৬৬ বছরের মধ্যে জুলাইয়ে সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Source: সময় নিউজ

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৪ জুলাই সিলেটে ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা গত ৬৬ বছরের মধ্যে জুলাই মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। অর্থাৎ, ২০২২ সালের ১৪ জুলাই ছিল সিলেটে ৬৬ বছরের ইতিহাসে জুলাই মাসের উষ্ণতম দিন।

পাশাপাশি, সংবাদ সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৫ জুলাই “৬৬ বছরের মধ্যে জুলাইয়ে সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা!” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সিলেটে ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা সিলেট জেলায় গত ৬৬ বছরের মধ্যে জুলাই মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যৈষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরীর বরাত দিয়ে জানানো হয়, ‘এ ধরনের উচ্চ তাপমাত্রা জেলায় সর্বশেষ ১৯৫৬ সালের জুলাই মাসে রেকর্ড করা হয়েছিল।’

অর্থাৎ, ২০২২ সালে সিলেটে ৬৬ বছরের ইতিহাসে জুলাই মাসের সর্বোচ্চ ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। 

পরবর্তীতে, সংবাদমাধ্যম সিলেট ভিউ ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৪ জুলাই “সিলেটে তাপমাত্রা প্রায় ৩৯ ডিগ্রি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

Source: সিলেট ভিউ ২৪

উক্ত প্রতিবেদনে সিলেটের আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরীর বরাত দিয়ে জানানো হয়, ২০২২ সালের ১৪ এপ্রিল বিকালে সিলেটে তাপমাত্রা ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল- যা সিলেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ছিল।

অর্থাৎ, গত এক দশকেই সিলেটের তাপমাত্রা অন্তত দু’বার ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। যার মধ্যে ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল সিলেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

মূলত, পাহাড় ও হাওরবেষ্টিত সিলেট অঞ্চলের তাপমাত্রা গত ৬ দশকে কখনোই ৩৮ ডিগ্রি ছোঁয়নি দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল টুয়েন্টিফোরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। গত এক দশকেই সিলেটের ইতিহাসে অন্তত দু’বার ৩৮ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে ২০১৪ সালে সিলেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

সুতরাং, গত ৬ দশকে সিলেটের তাপমাত্রা কখনোই ৩৮ ডিগ্রি পেরোয়নি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফরিদপুরের মধুখালীতে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহতের গুজব

0

গত ১৮ এপ্রিল মন্দিরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সন্দেহের জেরে ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামে দুই নির্মাণ শ্রমিক পিটিয়ে  হত্যা করে একদল উত্তেজিত হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এর প্রতিবাদে গতকাল ২৩ এপ্রিল সকালে মধুখালীর বাগাট বাজার এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। এসময় মহাসড়ক থেকে বিক্ষুব্ধ জনতাকে  সরাতে পুলিশ টিয়ারসেল ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। যাতে প্রায় ১৫ জন আহত হন।

এর প্রেক্ষিতে উক্ত ঘটনায় পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। এর সাথে শর্টগানের গুলিতে আহত এক ব্যক্তির ছবি যুক্ত করে দাবি করা হয় উক্ত ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। 

পুলিশের গুলিতে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, মহাসড়ক অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। যাতে প্রায় ১৫ জন আহত হন। এর মধ্যে একজন গুরুতর আহত হন। যার ছবিকে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া ব্যক্তির ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যলোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম (সমকাল, দেশ রূপান্তর, ইনকিলাব, নয়া দিগন্ত, কালবেলা)। এতে পুলিশের গুলিতে ১৫ জন আহত হবার তথ্যটি পাওয়া গেলেও কারও নিহত হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়াও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও উক্ত ঘটনায় দুজন নিহতের দাবির বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে  গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফরিদপুর জেলা পুলিশমধুখালী থানার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot Collage by Rumor Scanner

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অদ্য ২৩-০৪-২০২৪ খ্রি. মধুখালী থানায় মানববন্ধন ও হাইওয়ে রোডে ব্যারিকেড দেওয়ার ঘটনা জেলা পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে যানবাহন চলাচল ও অন্যান্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আজকের ঘটনায় কোথাও কেউ নিহত হয়নি। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহতের সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সকলকে এমন মিথ্যা প্রচার হতে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। আইন মেনে চলুন, পুলিশকে সহায়তা করুন।’ 

পরবর্তীতে দাবিটির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে একাধিক গণমাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

দৈনিক কালবেলা এর ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি তন্ময় উদ্দৌলা রিউমর স্ক্যানারকে জানান, উক্ত ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ২০ জনের মত আহত হয়েছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি। নিহত ব্যক্তির ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি তাকে দেখানো হলে তিনি জানান, এই ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন কিন্তু মারা যাননি। 

ঢাকা পোস্ট এর ফরিদপুর প্রতিনিধি জহির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও একই তথ্য জানান।

পরবর্তীতে উক্ত বিষয়ে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কবির সরদারের সাথেও কথা বলে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি বলেন, ‘সকালের ঘটনায় কেউ নিহত হননি। সোহেল নামের একজন গুরুতর আহত ছিলেন তবে বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন।’ 

অর্থাৎ,  মধুখালীতে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে করা মানববন্ধনে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের চালানো গুলিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি। 

মূলত, গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনায় পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন স্কুল ভবনের আশরাফুল ও আশাদুল নামের দুই নির্মাণশ্রমিক ভাইকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে একদল উত্তেজিত হিন্দু ধর্মাবলম্বী। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন মারা যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ২৩ এপ্রিল  সকালে মধুখালীর বাগাট বাজার এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় লোকজন। এসময় মহাসড়ক অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। যাতে প্রায় ১৫ জন আহত হন। এই ঘটনায় পুলিশের ছোড়া গুলিতে দুজন নিহত হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি নিহতের ছবি দাবিতে শর্টগানের গুলিতে আহত এক ব্যক্তির ছবিও প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হলেও এতে কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি। বরং আহত একজন ব্যক্তির ছবি নিহতের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • জেলা পুলিশ, ফরিদপুর Facebook Page: Post
  • মধুখালী থানা, ফরিদপুর Facebook Page: Post
  • ফরিদপুর জেলা কালবেলা প্রতিনিধির বক্তব্য
  • ফরিদপুর জেলা ঢাকা পোস্ট প্রতিনিধির বক্তব্য
  • মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর আবাসিক মেডিকেল অফিসারের বক্তব্য
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

সিলেটে পতিতালয়ে বেশিরভাগ নারী ধর্মান্তরিত নওমুসলিম শীর্ষক দাবিটি বানোয়াট

0

সম্প্রতি, কয়েকজন নারী-পুরুষ এবং দুইজন পুলিশের ছবি যুক্ত একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, সিলেটে পতিতালয়ে বেশিরভাগ নওমুসলিম নারী।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেটে পতিতালয়ে বেশিরভাগ নারী ধর্মান্তরিত নওমুসলিম শীর্ষক দাবিটি বানোয়াট। উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই। 

অনুসন্ধানের শুরুতে, সিলেটে পতিতালয়ে বেশিরভাগ নওমুসলিম নারী’- শীর্ষক দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এরপর আলোচ্য দাবির সাথে প্রচারিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্ট এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২২ মার্চ “সিলেটে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ নারীসহ আটক ৬”  শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন  খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবিটির সাথে আলোচিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Image Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ মার্চ ৮টার দিকে সিলেট নগরীর সোনালী আবাসিক হোটেল থেকে ৩ নারী ও ৩ পুরুষসহ মোট ৬ জনকে আটক করে বন্দরবাজার ফঁড়ি  পুলিশ।

একই তথ্য এবং ছবি ব্যবহার করে একই তারিখে সিলেটের একটি স্থানীয় গণমাধ্যমও সংবাদ প্রকাশ করেছিল।

এই প্রতিবেদনগুলোর কোথাও আটককৃত নারীদের ধর্মান্তরিত নওমুসলিম বলে উল্লেখ করা হয়নি। 

মূলত, সম্প্রতি সিলেটে পতিতালয়ে বেশিরভাগ ধর্মান্তরিত নওমুসলিম নারী শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উক্ত দাবির বিষয়ে গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া, আলোচ্য দাবির সাথে যে ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে সেটিও সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক।

সুতরাং, সিলেটে পতিতালয়ে বেশিরভাগ নারী ধর্মান্তরিত নওমুসলিম দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। 

তথ্যসূত্র

পরীমনির মৃত্যুর গুজব টিকটকে

গত ৯ এপ্রিল টিকটকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করা হচ্ছে “ভারতের সিনেমায় অভিনয় করতে যাওয়ার পথে ভয়াবহ রোড এক্সিডেন্টে মারা গেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি”। 

পরীমনি

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিনেত্রী পরীমণি মারা যাননি বরং অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় ভিত্তিহীনভাবে তার মৃত্যুর গুজব টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে। 

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধানে পরীমণির মৃত্যুর বিষয়ে গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির পক্ষে কোনো সংবাদ কিংবা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া দাবিটি ৯ এপ্রিল তারিখে প্রচার হলেও এর পরবর্তী সময়েও পরীমণিকে তার ফেসবুক প্রোফাইলে বিভিন্ন পোস্ট করতে দেখা যায়। গত ২১ এপ্রিল তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “My Life Is a fairy tale. You could not make it up”….🧚‍♀️” ক্যাপশনে ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিলের নিজের একটি ফেসবুক স্মৃতি শেয়ার করেন। 

Screenshot: Facebook

এছাড়াও, একই দিন দুপুরে তিনি একটি অ্যাপের প্রমোশনাল পোস্ট শেয়ার করেন। ২১ এপ্রিল জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূরের সাথে সাতটি ছবি পোস্ট করেছেন পরীমনি। ২০ এপ্রিল নিজের আসন্ন সিনেমা ’ফেলুবক্সী’ এর একটি প্রমোশনাল পোস্টারও শেয়ার করেছেন। ১৬, ১৮ এবং ১৯ এপ্রিল তারিখেও পরীমনির ফেসবুক পেজে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।  

Collage: Rumor Scanner

মূলত, গত ৯ এপ্রিল টিকটকে অভিনেত্রী পরীমণি মারা গেছেন দাবিতে ভিডিও প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে যে, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়। পরীমণি এখনও জীবিত আছেন এবং তার মৃত্যুর দাবির পরেও তার ফেসবুক পেজে নিয়মিত অ্যাক্টিভিটি দেখা গেছে। এছাড়া বিশ্বস্ত কোনো সূত্র থেকেও তার মৃত্যুর কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, পরীমণির মৃত্যু হয়েছে দাবিতে টিকটকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এটি জ্বীনের নামাজ পড়ার ভিডিও নয়

একটি রুমের মধ্যে শরীরের পুরো অংশ  কাপড় দিয়ে মোড়ানো মানুষ সদৃশ কেউ নামাজ পড়ছে। তার পাশেই মশারীর ভেতর একজন ব্যক্তি ঘুমাচ্ছে। সম্প্রতি, এই ভিডিওটিকে মাদরাসায় জ্বীন নামাজ পড়ছে দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

জ্বীনের নামাজ

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত এমন আরও ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জ্বীন মাদরাসায় নামাজ পড়ছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে কোনো জ্বীন ছিল না বরং, মজার ছলে অধিক ভিউ পাওয়ার উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি ভিডিও বাস্তবে জ্বীন নামাজ পড়ছে দাবি করে প্রচারিত হয়েছে। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটিতে জ্বীন দাবি করা বস্তুটি যখন সিজদাহ করতে যায় তখন মানুষের পা দেখা যায়। 

ভিডিওটি প্রচার হওয়া ইউটিউব চ্যানেলটি (আর্কাইভ) পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটি থেকে এই একটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। প্রচরিত ভিডিওটির মধ্যে @arfan.mahmud নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টের নাম দেখতে পাওয়া যায়। 

টিকটকে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে arfan mahmud নামক টিকটক অ্যাকাউন্টটি (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। উক্ত আইডিতে আপলোডকৃত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে টিকটক আইডিতে পাওয়া ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। 

পর্যবেক্ষণে টিকটক আইডিটিতে প্রায় একই ধরনের আরও ভিডিও নজরে আসে রিউমর স্ক্যানার টিমের। ভিডিওগুলোর ক্যাপশনও জ্বীন নামাজ পড়ছে এই ধরনেরই। আরও দেখা যায়, প্রচার করা হওয়া ভিডিওটিকে ক্যাপশন পরিবর্তন করে অনেকবার আপলোড করা হয়েছে । ক্যাপশন পরিবর্তন হলেও ’জ্বীন’ শব্দটির উল্লেখ করা হয়।

Collage: Rumor Scanner 

বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে উক্ত টিকটক আইডি অর্থাৎ জনাব আরফান মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। তিনি জানান, মজার ছলে ভিডিওগুলো আপলোড করেন তিনি। ভিডিওতে দেখানো অবয়বটি জ্বীন নাকি মানুষের জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি মূলত মানুষই ছিল। 

মূলত, কাপড় ‍দিয়ে শরীরের পুরো অংশ ঢেকে এক ব্যক্তি বা বস্তুর নামাজ পড়ার দৃশ্যের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, জ্বীন নামাজ আদায় করছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি বাস্তবে কোনো জ্বীন নামাজ পড়ছে এমন ভিডিও নয়। মজার ছলে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, জ্বীন নামাজ পড়ছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Tiktok: Arfan Mahmud 
  • Statement from Arfan Mahmud
  • Rumor Scanner’s own analysis