Home Blog Page 333

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে অভিনেতা ডিপজলের ছেলে দাবিতে সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নায়ক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের সন্তান দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ছবিটি মূলত Topic News BD নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘কোন অভিনেতার ছেলে নাহিদ ইসলাম? জানলে চমকে যাবেন আপনিও!’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিওর থাম্বানেইল ইমেজ।

উপদেষ্টা নাহিদ

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ডিপজল নাহিদ ইসলামের পিতা দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং, ২০২৩ সালে সন্তানদের সাথে ডিপজলের জন্মদিন উদযাপনের পুরোনো ছবিকে সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ৭ এপ্রিলের একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পোস্টে ব্যবহৃত প্রথম ছবিটির একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির বেশ কিছু মিল রয়েছে। 

Image Comparison by Rumor Scanner

ছবিটিতে ডিপজলকে সাদা টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও তাকে আলোচিত ছবিটির ন্যায় কালো টি-শার্ট পরিহিত একজন ব্যক্তিকে ফুল দিতে দেখা যায়। তবে উক্ত ব্যক্তির চেহারার সাথে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের চেহারার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি পোস্টটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ছবিটি ২০২৩ সালে সিঙ্গাপুরে ছেলেদের সাথে ডিপজলের জন্মদিন উদযাপনের সময়ের। যেখানে তাকে তার ‍দুই ছেলের সাথে দেখা যাচ্ছে।

পরবর্তীতে ডিপজলের ছেলেদের সম্পর্কে জানতে দৈনিক দেশ রূপান্তর এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৭ মার্চ ছোট ছেলেকে পরিচয় করালেন ডিপজল শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ডিপজলের তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছেন। তার বড় ছেলের নাম শাদমান মনোয়ার অমি, ছোট ছেলের নাম সামির মনোয়ার এবং মেয়ের নাম ওলিজা মনোয়ার। তবে উক্ত প্রতিবেদনের কোথাও তার মেজো ছেলের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

পরবর্তীতে পুনরায় মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ফেসবুক পেজে তার পুরো পরিবারের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এখানে নাহিদকে দেখা যায়নি। 

Screenshot: Facebook

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের পরিবারের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক যুগান্তর-এর ওয়েবসাইটে গত ৯ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ উপদেষ্টা নাহিদ ও আসিফ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নাহিদ ইসলামের বাবার নাম বদরুল ইসলাম জামির। তিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। এছাড়াও তার মায়ের নাম মমতাজ নাহার।

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বাবা নায়ক ডিপজল দাবিতে ইন্টারনেটে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

গত ৫ সেপ্টেম্বর শ্রীমঙ্গলে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার আয়োজন দাবিতে আগস্টের ভিডিও প্রচার

0

গত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিগত সরকারের গোপন বন্দিশালা থেকে মুক্তি পান সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (বরখাস্ত) আবদুল্লাহিল আমান আযমী। মুক্তি পরবর্তী গত ০৩ সেপ্টেম্বর বন্দী জীবনের অভিজ্ঞতা ও তার নানা ইচ্ছার কথা তুলে ধরেন। এসময় বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সংগীতকে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের পরিপন্থি’ উল্লেখ করে তা পরিবর্তনের দাবি জানান তিনি। এর প্রতিবাদে গত ৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত’ – এর আয়োজনের কথা জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী। তবে পরবর্তীতে এই আয়োজন বিভিন্ন কারণে স্থগিত করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে, শ্রীমঙ্গলে গত ৫ সেপ্টেম্বর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের আয়োজন হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি আলোচিত দাবির সবচেয়ে ভাইরাল ভিডিওটি ১৮ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ভিডিওতে ১ লক্ষ ২২ হাজারের বেশি প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এছাড়া, ১০ হাজার ২ শতবার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক  

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শ্রীমঙ্গলে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের আয়োজনের এই ভিডিওটি গত ৫ সেপ্টেম্বরের নয় বরং গত আগস্ট মাসে শ্রীমঙ্গলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আন্দোলনের সময় জাতীয় সংগীত গাওয়ার ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Badhan Acharjee নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১২ আগস্ট তারিখে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর স্থান ও পারিপার্শ্বিক বিষয়ের সাথে সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি গত ১২ আগস্ট সিলেট মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আন্দোলনের সময় জাতীয় সংগীত গাওয়ার ভিডিও।

একই দিনে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

অনলাইন গণমাধ্যম একুশে সংবাদ এ গত ১২ আগস্ট “শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন সনাতনি সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দোকানপাঠ, বাড়িঘর ও মন্দির ভাংচুর, লুঠপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে গত ১২ আগস্ট মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিভিন্ন সনাতনী সংগঠন।

তবে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও গত ৫ সেপ্টেম্বরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত আয়োজনের কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে অধিকতর তথ্য নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি শিমুল তরফদারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর শ্রীমঙ্গলে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের কোনো আয়োজন হয়নি।

আলোচিত ভিডিওটি তার সাথে শেয়ার করা হলে তিনি জানান, এটি গত ১২ আগস্ট শ্রীমঙ্গলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার ভিডিও।

একই বিষয়ে দৈনিক দেশ রূপান্তরের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি অনির্বাণ সেনগুপ্ত জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বরে শ্রীমঙ্গলে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার কোনো আয়োজন হয় নি।

উল্লেখ্য, সিলেটের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো গত ০৬ সেপ্টেম্বর সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার আয়োজন করলেও পরবর্তীতে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তা স্থগিত করা হয়।

সুতরাং, গত ৫ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত আয়োজনের দাবিতে গত ১২ আগস্টের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এটি রোবটের ডাব কাটার ভিডিও নয় 

সম্প্রতি, ‘রোবট যা শুরু করছে তাতে  আমাদের কর্মজীবি মানুষের কাজ কেড়ে নিয়ে বেকার বানিয়ে ছাড়বে’ শীর্ষক শিরোনামে রোবট ডাব কাটছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

রোবটের ডাব

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোবটের ডাব কাটার এই ভিডিওটি বাস্তব নয় বরং, মানুষের ডাব কাটার ভিডিওকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদনা করে রোবট কাটছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে ‘THEINFINITE’ নামক শর্ট ভিডিও প্লাটফর্ম টিকটকের একটি অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিটির ডাব কাটা শুরুর অংশের সাথে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও, উক্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখুন- ,,,

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওতে একজন নারীকে ডাব কাটতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি রোবটের ডাব কাটার নয়। 

সুতরাং, মানুষের ডাব কাটার ভিডিওকে রোবটের ডাব কাটার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত বা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • THEINFINITE: Tiktok video
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

সনাতন ধর্মীয় পোস্টে উগ্রবাদী মন্তব্য করা প্রসঙ্গে ড. ইউনূসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দাবি প্রচার করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সনাতন ধর্মীয় পোস্টগুলোতে উগ্রবাদী কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন।

সনাতন ধর্মীয়

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে সবচেয়ে ভাইরাল পোস্টটিতে ৭ হাজার ৫ শত এরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং প্রায় ৪ হাজারটি মন্তব্য করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সনাতন ধর্মীয় পোস্টগুলোতে উগ্রবাদী কমেন্ট করা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং কোনরকম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে শুরুতে দাবিটির সূত্রপাতের খোঁজে একাধিক ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।

রুবাল মজুমদার নামের একটি ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৪ সেপ্টেম্বর তারিখে আলোচিত দাবিতে সম্ভাব্য সর্বপ্রথম পোস্টটি করা হয়। পোস্টটির ক্যাপশনে “Ten Unknown Facts About #BMW…” নামের সাম্প্রতিক সময়ের একটি বহুল জনপ্রিয় ক্যাপশন লিখে কোন রকম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়। তাছাড়া প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে কোন গণমাধ্যমের লোগো কিংবা নামও দেখা যায়নি। সাধারণত কোন ফটোকার্ড কোন মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করে থাকলে তারা সেই ফটোকার্ডটিতে তাদের নিজেদের লোগো কিংবা নাম ব্যবহার করে থাকে। অর্থাৎ উক্ত ফটোকার্ডটি কোন মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেনি।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ড. ইউনূসের উক্ত মন্তব্যের বিষয়ে আলোচিত দাবির সপক্ষে বিশ্বস্ত সূত্রে কোন তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য ড. ইউনূস আলোচিত মন্তব্যটি না করলেও সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহিংসতা এড়ানোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে একাধিক মন্তব্য করেছেন। মূলধারার সংবাদমাধ্যম কালবেলাতে গত ১৩ আগস্ট তারিখে “কোনো ধর্মের নয়, মানুষ হিসেবে অধিকার নিশ্চিত হোক : ড. ইউনূস” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৩ আগস্ট তারিখে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা সেখানে আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক।’

এর আগে গত ০৭ আগস্ট তারিখে মূলধারার গণমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারে “সহিংসতা করে নতুন পৃথিবী নির্মাণের সুযোগ হারাতে চাই না: দেশবাসীকে ড. ইউনূস” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৫ আগস্ট তারিখে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরের পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকতে এবং সব ধরনের সহিংসা এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান ড. ইউনূস৷ তাছাড়া, শিক্ষার্থী ও দলমত নির্বিশেষে সবাইকে শান্ত থাকার জন্যেও অনুরোধ করেন তিনি।

অর্থাৎ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস একাধিক মন্তব্য করলেও হিন্দু ধর্মীয় পোস্টগুলোতে উগ্রবাদী কমেন্ট করা প্রসঙ্গে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো মন্তব্য করেননি।

সুতরাং, ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, সনাতন ধর্মীয় পোস্টগুলোতে উগ্রবাদী কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকুন শীর্ষক দাবিটি ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের পক্ষে পশ্চিমবঙ্গের টলিউড তারকাদের স্লোগানের ভিডিওটির অডিওটি এডিটেড

বাংলাদেশের উপর ভারতের অন্যায় আগ্রাসন আছে দাবি করে এবং তার বিরোধীতা করাসহ সীমান্ত হত্যা, নদীর পানি, বাঁধ ইত্যাদি নানা বিষয়ে নানাসময়ই ভারতের আগ্রাসনবিরোধী নানা স্লোগান দেওয়া হয় বাংলাদেশে। যার ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়েও নানা জায়গায় নানা স্লোগান দেখা গিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়, যেখানে দেখা যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের টলিউড তারকারাও বাংলাদেশের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। ভিডিওটিতে তাদেরকে “তোমার দেশ, আমার দেশ – বাংলাদেশ বাংলাদেশ ” ও “দিল্লি না ঢাকা – ঢাকা ঢাকা” স্লোগান দিতে শোনা যায়।

টলিউড তারকাদের স্লোগানের

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ৬০ লাখ বার চালু করা হয়েছে এবং প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে ব্যবহৃত অডিওটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে আসল ভিডিওটিতে টলিউড তারকারা ভিন্ন স্লোগান দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে হওয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ করছিলেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তার মধ্যে কিছু পোস্টে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের নাম দেখতে পাওয়া যায়। যা প্রাথমিকভাবে ধারণা দেয় যে ভিডিওটি সম্ভবত আনন্দবাজারের কোনো অনলাইন মাধ্যমে প্রচার হয়েছিল। তাছাড়া, স্লোগানটিতে তারকাদের হাতে থাকা ব্যানারে “সব অভয়া শহর গ্রামে…” লেখা দেখতে পাওয়া যায় যা প্রাথমিকভাবে ধারণা দেয় যে ভিডিওটি সম্ভবত সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের আরজিকর হাসপাতালে হওয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষিতা ঐ মেয়ের পরিচয় গোপন রাখতে গণমাধ্যমে নানা নামে উল্লেখ করে সংবাদ প্রচার করা হয়েছিল যার মধ্যে বহুল ব্যবহৃত একটি নাম ছিল অভয়া।

অতঃপর, এরই সূত্র ধরে ও রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে গত ১৯ আগস্ট “RG Kar Incident । ‘সিনেমাপাড়ার একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর’, সুর চড়ালেন তারকারা” শিরোনামে আনন্দবাজার পত্রিকার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির প্রথম দিকের ফুটেজের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত দৃশ্যের ও হাতে থাকা ব্যানারের হুবহু মিল পাওয়া যায় যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় এটি কলকাতার সাম্প্রতিক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার ভিডিও।

Comparison : Rumor Scanner

কিন্তু উক্ত ভিডিওটিতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত স্লোগানের বদলে আরজিকর হাসপাতালে হওয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে “সিনেমাপাড়ার একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আরজিকর”, “উই উয়ান্ট জাস্টিস” স্লোগানসহ নানা কথা শোনা যায়। কোথাও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মতো  “তোমার দেশ, আমার দেশ – বাংলাদেশ বাংলাদেশ ” ও “দিল্লি না ঢাকা – ঢাকা ঢাকা” শীর্ষক স্লোগান শোনা যায়নি।

অতঃপর, উক্ত প্রতিবাদ মিছিলের বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধান করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দে “RG Kar News: ‘সিনেমাপাড়ার একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর’, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে টালিগঞ্জের কলাকুশলীরা” শিরোনামে গত ১৮ আগস্ট তারিখের একটি সংবাদ পাওয়া যায়। সংবাদটির শিরোনামে “সিনেমাপাড়ার একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর” স্লোগানটিরও উল্লেখ পাওয়া যায়। সংবাদটি পড়ে জানা যায়, উক্ত প্রতিবাদ মিছিলটি পশ্চিমবঙ্গের আরজিকর হাসপাতালে হওয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার। উক্ত সংবাদেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে শুনতে পাওয়া “দিল্লি না ঢাকা” বা “তোমার দেশ, আমার দেশ” কোনো স্লোগানের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

উক্ত প্রতিবাদ মিছিলটির বিষয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার বরাতে বাংলাদেশি মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোতেও “কলকাতায় নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যা: রাজপথে টালিউডের তারকারা” শিরোনামে গত ১৯ আগস্ট তারিখে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত প্রতিবাদ মিছিলটির ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। কিন্তু উক্ত প্রতিবেদনেও বাংলাদেশের পক্ষে টলিউড তারকাদের কোন স্লোগানের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, পশ্চিমবঙ্গের টলিউডের তারকারা বাংলাদেশের পক্ষে স্লোগান দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির অডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

যুবদলের নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

যুবদলের নেতাকে

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে অব্যাহতি দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়নি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল বরং আলোচ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে  গত ৭ সেপ্টেম্বর এর কথা উল্লেখ পাওয়া যায়।

অনুসন্ধানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ গত ৭ সেপ্টেম্বর এমন কোন প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি দেশিয় কোনো গণমাধ্যমেও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে অব্যাহতি দেওয়ার কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ফেসবুক পেজে গতকাল(৮সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত একটি পোস্টে (আর্কাইভ) আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুলে উল্লেখ করে জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক স্বাক্ষরিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন কে অব্যাহতি সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভূয়া ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি, তাই সবাইকে এ ব্যাপারে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ রইল।

Screenshot: Facebook

সুতরাং, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Bangladesh Nationalist Youth Party – Facebook Post
  • Statement from Miftahul Islam Pantho

আওয়ামী লীগের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি ঘোষণা দাবিতে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন ঘটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলের। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর প্রেক্ষিতে বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক গতিশীলতা বজায় রাখতে শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়েছে দাবিতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটিতে লিখা রয়েছে, বিশ্বমানবতার জননী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। তিনি চলে যাওয়ার পর সারা দেশে জামায়াত-বিএনপির দোসররা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালিয়েছে। ভাঙচুর, অগ্নি-সংযোগ, লুটপাটের শিকার হয়েছে মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়ি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। এতে মনোবল হারিয়ে ফেলেছে তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। বিরাজমান পরিস্থিতিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা বা তার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় কারো পক্ষেই দেশে এসে দলের হাল ধরা সম্ভব নয়। এমতাবস্থায়, দলকে পুনর্গঠন করতে ও সুশৃঙ্খল করে গড়ে তুলতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলো। পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি কার্যকর থাকবে।

আহ্বায়ক: মো: আবদুল হামিদ

সদস্য সচিব: সেলিনা হায়াৎ আইভী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন বিজ্ঞপ্তি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মো: আবদুল হামিদকে আহ্বায়ক এবং সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আওয়ামী লীগের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব ঘোষণা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি। বরং আলোচ্য দাবিতে আওয়ামী লীগের নামে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

অনুসন্ধানে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ, মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এসংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গত ৬ সেপ্টেম্বর তাদের পেজে প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। যেখানে তাদের পক্ষ থেকে আলোচিত অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিকে গুজব বলে জানানো হয়। মূলত দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টির জন্যে এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে পোস্টটিতে দাবি করা হয়।

Screenshot: Facebook 

সুতরাং, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলটিকে গতিশীল রাখতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Bangladesh Awami League Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

শায়খ আহমুদুল্লাহ অসুস্থ দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হওয়ার দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

শায়খ আহমুদুল্লাহ অসুস্থ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শায়খ আহমাদুল্লাহ সুস্থ আছেন এবং অসুস্থতার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ২০২৩ সালের।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে প্রেজেন্ট নিউজ নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে ২০২৩ সালের ০৬ সেপ্টেম্বর ‘শায়খ আহমাদুল্লাহর অসুস্থতা নিয়ে যা জানা গেল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদের সাথে সংযুক্ত ছবিটির সাথে শায়খ আহমাদুল্লাহ অসুস্থ দাবিতে প্রচারিত ছবিটি হুবহু মিলে যায়। অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা এর ওয়েবসাইটে একই দিনে অর্থাৎ ২০২৩ সালের ০৬ সেপ্টেম্বর ‘শায়খ আহমাদুল্লাহর অসুস্থতা নিয়ে যা জানা গেল’ শিরোনামে প্রচারিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদের বরাতে জানা যায়, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে শায়খ আহমাদুল্লাহ’র শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ বিষয়ে ২০২৩ সালের ০৫ সেপ্টেম্বর শায়খ আহমাদুল্লাহ’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট করে জানানো হয়। 

এছাড়াও, কি ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ’র অসুস্থতা সংক্রান্ত কোনো তথ্য ও সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, শায়খ আহমাদুল্লাহ’র সুস্থতার বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি সুস্থ আছেন বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।

সুতরাং, শায়খ আহমাদুল্লাহ’র ২০২৩ সালের অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ছবি সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হওয়ার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সিঙ্গাপুর প্রবাসীরা ওবায়দুল কাদেরকে গণধোলাই দিয়েছেন দাবিতে ২০০৮ সালের ভিডিও প্রচার

0

গণ-আন্দোলনের চাপের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন, যার ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হয়ে যায়। সরকারের পতনের পর মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য আত্মগোপনে চলে গেছেন, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দাবি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরের প্রবাসীরা গণধোলাই দিয়েছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি তাকে কোলে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন এবং এতে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান শোনা যাচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত এই বিষয়ে ফেসবুকে ভাইরাল একটি ভিডিও প্রায় ৮৫ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। প্রায় ৩২ হাজার ব্যবহারকারী ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ভিডিওটি ৪ হাজারেরও বেশি বার শেয়ার করা হয়েছে এবং এতে ৯৪০টির বেশি মন্তব্য রয়েছে। পাশাপাশি টিকটকে ভাইরাল একটি ভিডিওর ভিউ সংখ্যা ২৫ লক্ষের বেশি এবং প্রায় ১ লক্ষ ব্যবহারকারীর প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। টিকটক ভিডিওটি ১৬ হাজারেরও বেশি শেয়ার হয়েছে এবং এতে ৩ হাজারের বেশি মন্তব্য রয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের প্রবাসীরা ওবায়দুল কাদেরকে গণধোলাই দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০০৮ সালের এবং ভিডিওটির প্রেক্ষাপটও ভিন্ন।

অনুসন্ধানে ‘Mashudul Haque’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৪ সালে প্রকাশিত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের এই ভিডিওটির ১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড পর্যন্ত দৃশ্যের সঙ্গে দাবিকৃত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওতে ওবায়দুল কাদেরকে কোলে তুলে নেওয়ার দৃশ্যটি ২০০৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বরের বলে উল্লেখ করা হয়। ভিডিওর সংবাদ বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘২০০৮ সালে কারামুক্ত হয়ে তিনি কারাগারকে রাজনীতিবিদদের পাঠশালা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।’

এছাড়া দাবিকৃত ভিডিওতে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান শোনা গেলেও মূল ভিডিওতে এমন কিছু শোনা যায়নি। অর্থাৎ, ভিডিওতে ভুয়া স্লোগানটি এডিটের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।

ইউটিউব ভিডিওতে উল্লিখিত তারিখের সূত্রে পুরোনো পত্রিকার অনলাইন সংরক্ষণাগার সংগ্রামের নোটবুক ওয়েবসাইট থেকে ২০০৮ সালের ০৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রথম আলো পত্রিকার একটি কপি খুঁজে বের করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

পত্রিকারটির দ্বিতীয় পাতায় “রাজনীতিকদের পাশাপাশি শীর্ষ সন্ত্রাসীও ছাড়া পাচ্ছেন” শীর্ষক শিরোনামের নিচে ওবায়দুল কাদেরের কারামুক্তি সম্পর্কে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নেন। মুক্তি পেয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘এবারের কারাজীবন অন্যরকম, এটি রাজনীতিবিদদের জন্য একটি পাঠশালা।’

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি ২০০৮ সালের।

সুতরাং, ২০০৮ সালের ভিন্ন প্রেক্ষাপটের একটি ভিডিওকে বিকৃত করে সম্প্রতি ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরের প্রবাসীরা গণধোলাই দিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সমন্বয়করা উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে দাবিতে পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্বারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহণ ও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন সশস্ত্র হামলার শিকার হয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্বারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনকে সশস্ত্র হামলারনয় বরং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আনসার ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষে শিক্ষার্থী কর্তৃক আনসার কর্মকর্তাদের গাড়িতে ভাঙচুরের চেষ্টা চালানোর ভিডিও।

অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম বিডিনিউজ ২৪ এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ২৫ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের সাথে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে।

Screenshot collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, বিডিনিউজ ২৪ এর ওয়েবসাইটে একইদিনে অর্থাৎ গত ২৫ আগস্ট ‘সচিবালয়ের সামনে আনসার ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত সংবাদের বরাতে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট জাতীয়করণের দাবিতে আনসার সদস্যরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে, শিক্ষার্থীদের সাথে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হলে বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আনসার কর্মকর্তাদের গাড়ি সামনে পেয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করে। প্রচারিত ভিডিওটি তখনকার। তবে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর সহায়তায় রক্ষা পান তারা। 

সুতরাং, আনসার সদস্য ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষের ভিডিওকে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেসর সমন্বয়ক কর্তৃক উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের ওপর সশস্ত্র হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র