Home Blog Page 149

বিবিসি বাংলার ভুয়া ফটোকার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার  

0

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে হরতালসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। গত ২৮ জানুয়ারি দলটির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্ধৃত করে বিবিসি বাংলার লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দাবি করা হচ্ছে, তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিতেই পারে। আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। কোনো দলের রাজনৈতিক অধিকার হরণের পক্ষে নই।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিতেই পারে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য মির্জা ফখরুল ইসলাম করেননি, এবং বিবিসি বাংলাও এ বিষয়ে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল কারসাজির মাধ্যমে বিবিসি বাংলার লোগো ব্যবহার করে আলোচিত ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ফটোকার্ডটির সত্যতা যাচাইয়ে ২৮ জানুয়ারি থেকে বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে সেখানে এমন কোনো ফটোকার্ডের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটসহ অন্যান্য নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।

ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণেও বেশ কয়েকটি অসংগতি ধরা পড়েছে। সাধারণত সংবাদমাধ্যমের ফটোকার্ড সংক্ষিপ্ত হয়, যেখানে এক বা দুই লাইনের মধ্যে মূল বক্তব্য তুলে ধরা হয়। কিন্তু আলোচিত ফটোকার্ডটি তিন লাইনের, যা প্রচলিত কাঠামোর ব্যতিক্রম।  এছাড়া, এতে অপ্রয়োজনীয় ও অসংগতিপূর্ণ বিরাম চিহ্নের ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে,যা মূলধারার গণমাধ্যমের প্রকাশনাশৈলীর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

Comparison: Rumor Scanner. 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ধরনের মন্তব্য করেছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি আরও বলেন, এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার মাত্র, এবং এ ধরনের গুজব রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

সুতরাং, আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামের নামে প্রচারিত এই মন্তব্যটি মিথ্যা, এবং বিবিসি বাংলার নামে প্রচারিত আলোচিত ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও ভিত্তিহীন।

তথ্যসূত্র

  • BBC Bangla: Facebook page
  • BBC Bangla: Website.
  • Rumor Scanner’s analysis.
  • Statement from Sayrul Kabir Khan.

কালের কণ্ঠের সংবাদ শিরোনাম সম্পাদনা করে ছাত্রশিবিরের নামে ভুয়া তথ্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, জাতীয় দৈনিক ‘কালের কন্ঠ’ এর লোগোযুক্ত ‘শুক্রবার সারাদেশে শিবিরের যৌন মিছিল’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘শুক্রবার সারাদেশে শিবিরের যৌন মিছিল’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো সংবাদ দৈনিক কালের কণ্ঠ প্রকাশ করেনি বরং, ভিন্ন শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদের স্ক্রিনশট নিয়ে তা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত স্ক্রিনশটটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটিতে ‘কালের কণ্ঠ’ এর লোগো রয়েছে এবং সংবাদটি প্রকাশের সময় ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ সালের রাত ১০ টা ১৬ মিনিট উল্লেখ রয়েছে। 

Screenshot: Facebook 

উক্ত সূত্রগুলো ধরে অনুসন্ধানে দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে “শুক্রবার সারা দেশে শিবিরের গণমিছিল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের প্রকাশের সময় এবং ওয়েবসাইট আইকনের সাথে আলোচিত স্ক্রিনশটটির মিল রয়েছে।

Image Comparison By Rumor Scanner

তবে, কালের কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম হলো ‘শুক্রবার সারা দেশে শিবিরের গণমিছিল’। যা সম্পাদনা করে ‘গণমিছিল’ এর জায়গায় ‘যৌন মিছিল’ লিখা হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার কালের কণ্ঠের এই সংবাদের ইন্টারনেট আর্কাইভ যাচাই করেও উক্ত দাবিতে কোনো শিরোনাম দেখতে পায়নি। 

অনুসন্ধানে, ৩১ জানুয়ারির ছাত্রশিবিরের গণমিছিল নিয়ে অন্যান্য সংবাদমাধ্যমেও (সাম্প্রতিক দেশকাল, আমাদের সময়) সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়। এসব সংবাদেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।  

সুতরাং, ‘কালের কন্ঠ’ এর লোগোযুক্ত ‘শুক্রবার সারাদেশে শিবিরের যৌন মিছিল’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

ড. ইউনূসের ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদানের দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে ‘ইজরাইলকে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য ১০০ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া ইউনুস আজকে বাংলাদেশের সরকার প্রধান’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷

ইসরায়েলকে ১০০ কোটি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিচালনা করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকার কোনো সহায়তা দেননি বরং, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইউনূস সেন্টার বিষয়টি মিথ্যা বলে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের লোগো দেখতে পাওয়া যায়৷ উক্ত সূত্র ও ভিডিওটির বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়া ইসরায়েলকে প্রত্যাখান করেছিল বঙ্গবন্ধুর সরকার’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷ 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে ইসরায়েলের বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান ও তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েল প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হয়েছে৷ তবে, ভিডিওটিতে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিচালনা করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি৷ 

এই প্রসঙ্গে রিউমর স্ক্যানার ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লায়র হাইয়াতের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে। মি. লায়র রিউমর স্ক্যানারের সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে জানিয়েছেন, “ইউনূস কর্তৃক ইসরায়েলকে সহায়তার বিষয়টি আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানলাম। তাছাড়া, ইসরায়েল দাতাগোষ্ঠীর কোনো সহায়তার বিষয় জনসম্মুখে প্রকাশ করে না।”

পরবর্তীতে, রিউমর স্ক্যানার বিষয়টি নিয়ে ইউনূস সেন্টারের সাথেও কথা বলেছে। ড. ইউনূসের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আলোচিত দাবিটি মিথ্যা বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছে, “বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক কারণ ভুয়া এই সংবাদটি ড. ইউনূসের সুনামকে ইচ্ছাকৃতভাবে কলঙ্কিত করছে বলে মনে হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, পূর্বেও একাধিকবার একই দাবি বানোয়াট তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে রিউমর স্ক্যানার সেসময় ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন ও কুইক ফ্যাক্ট প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

এটি ঢাবির প্রশ্ন নয়, ইসকনকে সন্ত্রাসী দাবিতে খন্দকার’স জিকের গাইড বইয়ের ছবি প্রচার

0

গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বি ইউনিটের (কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্নে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে ঘিরে চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে হওয়া সংঘর্ষের ঘটনায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ-এর নিহত হওয়ার সাথে ইসকন জড়িত এবং এ হত্যাকাণ্ডের জন্যে ইসকনকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে দাবিতে একটি প্রশ্নপত্রের ছবি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ইসকনকে

এক্স-এ প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রে ইসকনকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রশ্ন করার দাবিটি সঠিক নয়। বরং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান বা জিকে সম্পর্কিত প্রস্তুতিমূলত গাইড ‘খন্দকার’স সিরিজের DU Recent Vaccine’ এর সাম্প্রতিক বিষয়াবলির একটি পৃষ্ঠার ছবি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত প্রশ্নপত্রের ছবিটি পর্যালোচনা করে এর উপরের অংশে DU Recent Vaccine শীর্ষক একটি লেখা দেখতে পায় রিউমর স্ক্যানার। পরবর্তী অনুসন্ধানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক প্রস্তুতির গাইড ‘খন্দকার’স GK’ এর ফেসবুক পেজে গত ২২ জানুয়ারি এই বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের B-ইউনিটে সাম্প্রতিক প্রশ্ন আসবে না ইনশাআল্লাহ। শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্যে খন্দকার’স সিরিজের DU Recent Vaccine নামের একটি সাধারণ জ্ঞান বিষয় গাইড বইয়ের ছবি প্রচার করা হয়েছে। উক্ত পোস্টের মাধ্যমে দাবি করা হয়, এতে প্রচারিত গাইড বইয়ের বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ইউনিটের পরীক্ষায় সাম্প্রতিক বিষয়াবলি নিয়ে কোনো প্রশ্ন আসবে না। 

পরবর্তীতে উক্ত গাইড বইয়ের ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাইড বইটির ৭৮ নাম্বার পৃষ্ঠায় থাকা ১৭৯ নাম্বার প্রশ্নটির সাথে আলোচিত প্রশ্নপত্রের প্রশ্নের মিল রয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও উক্ত প্রশ্নের আগে পরের অন্যান্য প্রশ্ন, পৃষ্ঠার উপরের DU Recent Vaccine, পেজ নাম্বার এবং প্রশ্ন নাম্বার সবই আলোচিত প্রশ্নপত্রের সাথে হুবহু মিলে। যা থেকে এটিই প্রতিয়মান হয় যে, উক্ত গাইড বইয়ের ছবিকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক প্রস্তুতিমূলক গাইড ‘খন্দকার’স সিরিজের DU Recent Vaccine’ এর ছবিকে ঢাবির বি-ইউনিটের প্রশ্নপত্র দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • খন্দকার’স GK Facebook Page Post

শেখ পরিবারের সদস্যদের ছবি সম্বলিত মদের দোকানের সাইনবোর্ডের সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘সরকারি দেশী মদের দোকান‘ লিখা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক সম্বলিত একটি সাইনবোর্ডের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। সাইনবোর্ডটিতে শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এর ছবি রয়েছে। 

উক্ত দাবিতে দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি এবং আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক সম্বলিত মদের দোকানের সাইনবোর্ডের ছবিটি আসল নয়। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে একটি মদের দোকানের সাইনবোর্ডে তাদের ছবি ও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক সংযুক্ত করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজ টোয়েন্টিফোর এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ০৯ মার্চ প্রকাশিত ‘ভাইরাল মদের দোকানের সেই সাইনবোর্ড নামালো প্রশাসন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির আংশিক মিল রয়েছে৷ 

প্রতিবেদনের ছবি ও আলোচিত ছবি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত ছবির ন্যায় প্রতিবেদনের ছবির সাইনবোর্ডে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকার অনুমোদিত’, ‘সরকারি দেশী মদের দোকান’,  ‘নালিতাবাড়ী রোড, হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ’, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর’, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, ঢাকা, বাংলাদেশ’ এসব তথ্য রয়েছে৷ তবে, প্রতিবেদনের ছবির সাইনবোর্ডটিতে কারো ছবি বা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নেই৷ 

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিতে থাকা সাইনবোর্ডটি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার একটি অনুমোদিত দেশি মদের দোকানের। মূল সাইনবোর্ডে কোথাও কোনো ব্যক্তির ছবি না থাকলেও সাইনবোর্ডের ছবিটি বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও সাইনবোর্ডটির এই সম্পাদিত ছবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা শনাক্ত করে রিউমর স্ক্যানার টিম ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন  ও একাধিক কুইক ফ্যাক্ট প্রতিবেদন (, ) প্রকাশ করেছিলো। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নয়, হাতাহাতির এই ভিডিও মিয়ানমারের

0

সম্প্রতি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সমন্বয়কদের কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম মাটির সাথে মিশে গেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সশস্ত্র সমারিক পোশাক পরিহিত কিছু ব্যক্তি ও সামরিক পোশাকবিহীন (পরনে সামরিক প্যান্ট দেখা যায়) ব্যক্তি মারপিট বা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘বাংলাদেশের সুনাম ধন্য এক বাহিনীর নাম বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ছিল। সেই সেনাবাহিনী সম্মান মাটির সাথে গেছে অবৈধ সরকার ইউনূস গং এবং সমন্বয়ক নামের কুলাঙ্গারদের পৃষ্ঠপোষকতায়।’

উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত এই ভিডিওটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নয়। বরং, মায়ানমারের কাচিন ইনডিপেডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এর সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে  ‘စစ်ရူံးဘဘမင်းအောင်လိူင်’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ জানুয়ারী ‘Part 1 အချင်းချင်းချကုန်ပီဟ #army #military #myanmar’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত ভিডিওর সাথে এই ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে #army #military #myanmar হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়া, ‘Arakha Youtube Channel’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ জানুয়ারী ‘KIA ၊ TNLA တပ်ဖွဲ့ဝင်များ မြေပြင်မှာ တင်းမာနေမှု။’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত উক্ত ঘটনার একটি দীর্ঘ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এটা নিশ্চিত যে এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কোনো ঘটনা নয়। এছাড়া ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি KIA এবং TNLA এর সৈন্যদের উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা।

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যগুলোর সূত্র ধরে মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা মিয়ানমার নাউ (Myanmar NOW) এর ওয়েবসাইটে গত ২৯ জানুয়ারী প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি মিয়ানমারের কেআইএ (KIA) ও টিএনএলএ (TNLA) সস্ত্র গোষ্ঠির সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার। উত্তর শান রাজ্যে কুতকাই টাউনশিপের নাম ফাত কার শহরে বা তার কাছাকাছি সীমানা নির্ধারণ নিয়ে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। টিএনএলএ (TNLA) সদস্যরা একটি কেআইএ (KIA) চেকপয়েন্ট জোর করে অতিক্রম করার চেষ্টা করলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

সুতরাং, মিয়ানমারের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে সাধারণ মানুষের হাতাহাতির ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

মুসলিম ব্যক্তির মরদেহের ভিডিও বাংলাদেশে হিন্দু হত্যার ঘটনা দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পানির মধ্যে একটি মরদেহের দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “বাংলাদেশি হিন্দু ছেলে সুমনকে হত্যা করে তার মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হলো ইসলামী বাংলাদেশে। বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের পর হিন্দু নির্যাতনের স্রোত আরও তীব্র হয়েছে।” (অনূদিত)

ভিডিও

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দৃশ্যটি সুমন নামের কোনো হিন্দু ব্যক্তির মরদেহের নয় বরং নয়ন হোসেন নামের এক মুসলিম অটোচালকের মরদেহের দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘জুয়েল রানা’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৮ জানুয়ারি তারিখে একটি ফেসবুক লাইভ ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, “নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও দরিকান্দি ব্রিজের নিচে অজ্ঞাতনামা লাশ পাওয়া গেছে”।

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ‘বিজনেস বাংলাদেশ’ নামের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে “সোনারগাঁওয়ে হাত-পা বাঁধাবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার” শীর্ষক শিরোনামে গত ২৮ জানুয়ারিতে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে সংযুক্ত ছবিটির সাথে প্রচারিত দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে নয়ন (৩০) নামে হাত-পা বাঁধাবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে বৈদ্যেরবাজার নৌ-পুলিশ। জানা যায়, যুবকের মরদেহটি ব্রহ্মপুত্র নদে দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে [২৮ জানুয়ারি] দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে বৈদ্যেরবাজার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর স্থানীয়রা মৃতের কপাল ও গালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়।

সোনারগাঁও থানার বৈদ্যেরবাজার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, নিহত নয়ন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার টিক্কাপাড়ার ১৫/সি-১৯ নং বাড়ির মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। সে সোনারগাঁও উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের বেলপাড়া এলাকার মোক্তার হোসেনের বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর বিস্তারিত বিষয়ে জানা যাবে।”

একই বিষয়ে আজকের পত্রিকা’র ওয়েবসাইটেও গত ২৮ জানুয়ারিতে প্রকাশিত আরেকটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে একই তথ্যের পাশাপাশি জানা যায়, নিহত নয়ন হোসেন একজন অটোচালক ছিলেন। নিহতের ভাই জীবন হোসেন জানান, সোমবার সন্ধ্যায় নয়ন এক নারী যাত্রীকে নিয়ে সাদিপুর থেকে লাঙ্গলবন্দ এলাকায় যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গত ২৮ জানুয়ারি তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। বৈদ্যেরবাজার নৌ-পুলিশের ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসমান অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, যাত্রী সেজে অটো ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে নয়নকে হত্যা করা হয়েছে। নয়নের অটোরিকশাটিও পাওয়া যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়াও কালবেলা, বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ আরো একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রেও একই তথ্য জানা যায়। অর্থাৎ, নিহত নয়নের পুরো নাম নয়ন হোসেন এবং তার পিতার নাম জয়নাল আবেদীন। তার নাম থেকে স্পষ্ট যে, নিহত নয়ন হিন্দু নন বরং ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম যোগাযোগ করে সোনারগাঁও থানার বৈদ্যেরবাজার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহবুবুর রহমানের সাথে৷ তিনি নিশ্চিত করেন নিহত হওয়া ব্যক্তি হিন্দু নন বরং মুসলিম এবং তার পুরো নাম নয়ন হোসেন। তার পিতার নাম জয়নাল আবেদীন।

সুতরাং, নয়ন হোসেন নামের এক মুসলিম অটোচালকের মরদেহের দৃশ্য প্রচার করে তাকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী দাবি করে সাম্প্রদায়িক আঙ্গিকে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জের দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার পতনের ডাক দিয়েছে জামায়াত শাহবাগ থেকে গরম পানি নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ শুরু হয়েছে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। এই ইউনুস তুই তাড়াতাড়ি পাকিস্তান চলে যা বাংলাদেশে আর জায়গা হবে না তোর জয় বাংলা’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত ভিডিওটিতে প্রায় ৭ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৪ শতকেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি  জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের  ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও জলকামান ছোড়ার কোনো ঘটনার  নয় বরং, গত ২৬ জানুয়ারি ঢাকায় ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের জলকামান নিয়ে অবস্থানের সময়ে ধারণকৃত দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে দৈনিক ইত্তেফাক এর লোগো দেখা যায়। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে দৈনিক ইত্তেফাক এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৬ জানুয়ারির ‘ শাহবাগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, পুলিশের জল কামান নিক্ষেপ | Shahbagh | Daily Ittefaq’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে উক্ত প্রতিবেদনের ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির প্রথম ৫৮ সেকেন্ডের মিল রয়েছে ৷  

Comparison by Rumor Scanner

একই দিনে মূলধারার আরেক গণমাধ্যম যায়যায়দিন এর ইউটিউব চ্যানেলেও একই ভিডিওটি প্রকাশিত হয়।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে একই দিনে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো এর ওয়েবসাইটে “শাহবাগে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ওপর পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিপেটা, আহত ৬” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২৬ জানুয়ারি চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান নেওয়া ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার এক পর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটাও করেছে। এতে এক নারীসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।

অর্থাৎ, ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ফুটেজকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, জামায়াত ইসলামীর কর্মসূচিতে পুলিশের গরম পানি নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের দৃশ্য দাবিতে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের জলকামান নিয়ে অবস্থানের ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এই ভিডিওতে রুহুল কবির রিজভীকে মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ বলেননি খালেদা জিয়া

সম্প্রতি, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। ভিডিওর ক্যাপশনে, আমাদের রিজভী আহমেদ মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক শীর্ষক মন্তব্য বেগম খালেদা জিয়া করেছেন বলে দাবি করা হয়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে আমাদের রিজভী আহমেদ মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক শীর্ষক মন্তব্য খালেদা জিয়া করেননি বরং, ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার লন্ডনে দেওয়া বক্তব্যের ভিন্ন ভিন্ন খন্ডিত অংশ আগে পিছে যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদেকে মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ লোক বলেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে করে ভিডিওতে খালেদা জিয়াকে বলতে শোনা যায়, ডিসিপ্লিন হতে হবে, যদি আমরা ডিসিডিপ্লিন না হয় তাহলে কোনো কিছু করা সম্ভব নয় সে জন্য শৃঙ্খলাটা অত্যন্ত বেশি প্রয়োজন। আমাদের যে রিজভী আহমেদ আপনার জানেন মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক, অপদার্থ একটা লোক, আমি সবসময় বলেছি যে মানে বিএনপিকে শেষ করে দেওয়ার প্ল্যান।

তবে, রিউমর স্ক্যানারের পর্যবেক্ষণে এই ভিডিও এবং অডিওর ধারাবাহিকতায় অসামঞ্জস্যতা আছে বলে প্রতীয়মান হয়।

অনুসন্ধানে বিএনপির ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর ১লা নভেম্বর ২০১৫, লন্ডনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ। ১ম অংশ’ শীর্ষক শিরোনামে ও ‘১লা নভেম্বর ২০১৫, লন্ডনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ। ২য় অংশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিও দুটিতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ফ্রেম ও অডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

খালেদা জিয়ার ভাষণের ভিডিও দুটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, খালেদা জিয়ার ভাষণের ভিন্ন ভিন্ন অংশ নিয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

১. আলোচিত ভিডিওতে খালেদা জিয়ার বলা, ডিসিপ্লিন হতে হবে, যদি আমরা ডিসিডিপ্লিন না হয় তাহলে কোনো কিছু করা সম্ভব নয় সে জন্য শৃঙ্খলাটা অত্যন্ত বেশি প্রয়োজন’ অংশটুকু ভাষণের প্রথম অংশের ০৪:৩৯ থেকে ০৪:৫০ মিনিট অংশের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

২. আলোচিত ভিডিওতে খালেদা জিয়ার বলা, ‘আমাদের যে রিজভী আহমেদ আপনার জানেন’ অংশটুকু ভাষণের দ্বিতীয় অংশের ০১:১৬ – ০১:১৯ মিনিট অডিওর অংশের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

৩. আলোচিত ভিডিওতে খালেদা জিয়ার বলা, ‘মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক, অপদার্থ একটা লোক, আমি সবসময় বলেছি যে’ ভাষণের প্রথম অংশের ৩০:৩৭ – ৩০:৪৩ মিনিট অংশের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

৪. আলোচিত ভিডিওতে খালেদা জিয়ার বলা, ‘মানে বিএনপিকে শেষ করে দেওয়ার প্ল্যান’ অংশটুকু ভাষণের দ্বিতীয় অংশের ৩:১২ – ৩:১৪ মিনিট অংশের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের খন্ডিত অংশগুলো বিএনপির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ২০১৫ সালে লন্ডনে খালেদা জিয়ার ভাষণের প্রথম অংশের ০৪:৩৯ থেকে ০৪:৫০ মিনিট এবং  ৩০:৩৭ – ৩০:৪৩ মিনিট অংশের থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয় অংশের ০১:১৬ – ০১:১৯ মিনিট ও ৩:১২ – ৩:১৪ মিনিট অংশ থেকে কেটে নেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়া তার পুরো বক্তব্যে রিজভী আহমেদ মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদেকে মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ লোক বলেন।

সুতরাং, ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার লন্ডনে দেওয়া বক্তব্যের ভিন্ন ভিন্ন খন্ডিত অংশ আগে পিছে যুক্ত করে আমাদের রিজভী আহমেদ মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক শীর্ষক মন্তব্য খালেদা জিয়া করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

সেনাপ্রধান এবং ড. ইউনূসকে জড়িয়ে কালের কণ্ঠের নামে অপপ্রচার 

0

সম্প্রতি, জাতীয় দৈনিক ‘কালের কন্ঠ’ এর লোগোযুক্ত ‘সেনাপ্রধানের চাপ, পদত্যাগের জন্য ইউনুসকে হুমকি। সার্জিস আলমকে গ্রেপ্তারের হুশিয়ারী’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  ‘সেনাপ্রধানের চাপ, পদত্যাগের জন্য ইউনুসকে হুমকি। সার্জিস আলমকে গ্রেপ্তারের হুশিয়ারী’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি কালের কন্ঠ বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে কালের কণ্ঠ এর লোগো ব্যবহার করে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদের স্ক্রিনশট সত্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিযুক্ত সংবাদের স্ক্রিনশটে থাকা কালের কণ্ঠ এর লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ব্লগস্পটের বিনামূল্যের একটি ডোমেইন সাইটে ‘ডেইলি নিউজ বিডি আওয়ামী লীগ’ নামক একটি সাইটে ‘সেনাপ্রধানের চাপ, পদত্যাগের জন্য ইউনুসকে হুমকি। সার্জিস আলমকে গ্রেপ্তারের হুশিয়ারী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি গত ২৮ জানুয়ারি প্রকাশিত হতে দেখা যায় এবং এটিই আলোচিত দাবিটির সম্ভাব্য উৎস বলে প্রতীয়মান হয়।

উক্ত সাইটটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সাইটটির লোগো হিসেবে কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার হলেও এর ইউআরএলে ব্যবহার হয়েছে আওয়ামী লীগের নাম; নাম দেওয়া হয়েছে ডেইলি নিউজ বিডি আওয়ামী লীগ।

Image By Rumor Scanner 

অর্থাৎ, কথিত এই সংবাদ থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে আলোচিত দাবিটি সমাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে কথিত সংবাদটি পড়ে দেখা যায়, “গোপন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, সেনাপ্রধান ড. ইউনুসকে পদত্যাগ করতে চাপ দিচ্ছেন। সেনা সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত জরুরী বৈঠকে সেনাপ্রধান এবং ড. ইউনুসের মধ্যে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে, যেখানে সেনাপ্রধান ইউনুসকে দ্রুত পদত্যাগের জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ইউনুস সরকার খুব শীঘ্রই পদত্যাগ করতে পারে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, সরকারের সমন্বয়ক, সার্জিস আলমকে সেনানিবাসে নিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ দু’জন মেজর তার সম্পদের উৎস জানতে চান। সেই বৈঠকে সার্জিস আলমকে সাফ জানানো হয় যে, তিনি ২ দিনের মধ্যে তার সমস্ত সম্পদের উৎসের হিসাব সেনাবাহিনীর কাছে জমা দেবেন, অন্যথায় দুর্নীতির মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উপদেষ্টা ও সমন্বয়করা ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদত্যাগ করবেন এবং দেশ ছাড়বেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সেনাবাহিনীর চাপের কারণে তাদের পদত্যাগের সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছে।

এই পরিস্থিতিতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এবং সকলের দৃষ্টি এখন সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।”

উক্ত সাইটে দাবিটি প্রকাশে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার করা হলেও কালের কণ্ঠ পত্রিকার ওয়েবসাইট এবং প্রিন্ট সংস্করণে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রকাশের প্রমাণ মেলেনি। ইন্টারনেট আর্কাইভেও এ সংক্রান্ত দাবির কোনো সংবাদ কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, আলোচিত ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে কালের কণ্ঠ এর লোগো ব্যবহার করে প্রকাশিত সংবাদে সেনাপ্রধানের চাপে ড. ইউনূসের দায়িত্ব ছাড়া এবং সারজিস আলমকে গ্রেফতার করার বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূল ধারার গণমাধমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে এমন কিছু হলে তা মূলধারা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার কথা।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার করা এই সাইটটি থেকে একাধিকবার ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন (, , , ) প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ‘সেনাপ্রধানের চাপ, পদত্যাগের জন্য ইউনুসকে হুমকি। সার্জিস আলমকে গ্রেপ্তারের হুশিয়ারী’ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র