বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নয়, হাতাহাতির এই ভিডিও মিয়ানমারের

সম্প্রতি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সমন্বয়কদের কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম মাটির সাথে মিশে গেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সশস্ত্র সমারিক পোশাক পরিহিত কিছু ব্যক্তি ও সামরিক পোশাকবিহীন (পরনে সামরিক প্যান্ট দেখা যায়) ব্যক্তি মারপিট বা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘বাংলাদেশের সুনাম ধন্য এক বাহিনীর নাম বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ছিল। সেই সেনাবাহিনী সম্মান মাটির সাথে গেছে অবৈধ সরকার ইউনূস গং এবং সমন্বয়ক নামের কুলাঙ্গারদের পৃষ্ঠপোষকতায়।’

উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত এই ভিডিওটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নয়। বরং, মায়ানমারের কাচিন ইনডিপেডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এর সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে  ‘စစ်ရူံးဘဘမင်းအောင်လိူင်’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৮ জানুয়ারী ‘Part 1 အချင်းချင်းချကုန်ပီဟ #army #military #myanmar’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত ভিডিওর সাথে এই ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে #army #military #myanmar হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়া, ‘Arakha Youtube Channel’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ জানুয়ারী ‘KIA ၊ TNLA တပ်ဖွဲ့ဝင်များ မြေပြင်မှာ တင်းမာနေမှု။’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত উক্ত ঘটনার একটি দীর্ঘ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এটা নিশ্চিত যে এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কোনো ঘটনা নয়। এছাড়া ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি KIA এবং TNLA এর সৈন্যদের উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা।

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যগুলোর সূত্র ধরে মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা মিয়ানমার নাউ (Myanmar NOW) এর ওয়েবসাইটে গত ২৯ জানুয়ারী প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওটি মিয়ানমারের কেআইএ (KIA) ও টিএনএলএ (TNLA) সস্ত্র গোষ্ঠির সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার। উত্তর শান রাজ্যে কুতকাই টাউনশিপের নাম ফাত কার শহরে বা তার কাছাকাছি সীমানা নির্ধারণ নিয়ে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। টিএনএলএ (TNLA) সদস্যরা একটি কেআইএ (KIA) চেকপয়েন্ট জোর করে অতিক্রম করার চেষ্টা করলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

সুতরাং, মিয়ানমারের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে সাধারণ মানুষের হাতাহাতির ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img