Home Blog Page 148

ফারজানা সিথির নাচের দৃশ্য দাবিতে ডিপফেক ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুইটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে ভিডিও দুইটি ফারজানা সিঁথির নাচের দৃশ্যের। উল্লেখ্য যে, ফারজানা সিঁথি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচিত মুখ। সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকমাস আগে ভাইরালও হয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।

ফারজানা সিঁথির নাচের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ৫ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ৭ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফারজানা সিঁথির নাচের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ৫ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ৭ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফারজানা সিঁথির নাচের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দুইটিতে ফারজানা সিঁথি নয়, ছিলেন ভারতীয় দুই নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী। উর্ভশী অপ্সরা ও স্বেকশা সিং নামের উক্ত দুই মডেলের ভিডিওকে প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ফারজানা সিঁথির মুখমণ্ডল বসিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

প্রথম ভিডিও যাচাই:

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রথম ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে উর্ভশী অপ্সরা নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে (ইউজারনেম: urvashi_apsaraa) গত ০১ জানুয়ারিতে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ব্যক্তির ড্রেস, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং অঙ্গভঙ্গির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, নৃত্যরত ব্যক্তি ভারতীয় নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী উর্ভশী অপ্সরা। উর্ভশী একই পোশাকে পরবর্তী সময়ে তার অ্যাকাউন্টে কিছু ছবিও পোস্ট করেছেন।

অর্থাৎ, উর্ভশীর নাচের ভিডিওকে ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ফারজানা সিঁথির মুখমণ্ডল বসিয়ে প্রচার করা হয়েছে৷ 

দ্বিতীয় ভিডিও যাচাই:

ফারজানা সিঁথির নাচের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত দ্বিতীয় ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘swekshaasinghh27’ ইউজারনেমের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবরে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ব্যক্তির ড্রেস, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং অঙ্গভঙ্গির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, নৃত্যরত ব্যক্তি ভারতীয় নৃত্যশিল্পী স্বেকশা সিং। তিনি একই পোশাকে তার অ্যাকাউন্টে আরো কিছু নাচের ভিডিও পোস্ট করেছেন।

অর্থাৎ, স্বেকশার নাচের ভিডিওকে ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ফারজানা সিঁথির মুখমণ্ডল বসিয়ে প্রচার করা হয়েছে৷

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় ভুয়া ভিডিও প্রচারের পরিমাণ বেড়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা, নায়িকা অপু বিশ্বাস, অভিনেত্রী তানজিনা তিশাসহ একাধিক সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব এই ডিপফেক ভিডিওর শিকার হয়েছেন৷

সুতরাং, ফারজানা সিঁথির নাচের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ফেব্রুয়ারীতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচী নিয়ে শেখ হাসিনার নামে ভুয়া বিবৃতির ছবি সামাজিক মাধ্যমে

0

গত ২৮ জানুয়ারী নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ফেব্রুয়ারী মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি (,) ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি। ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ। ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ কর্মসূচি। ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতাল। এছাড়া, বিজ্ঞপ্তিতে শেখ হাসিনাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করেছে । তবে, বিজ্ঞপ্তিটি দলটির সংশ্লিষ্ট কোনো নেতা-কর্মীর পক্ষ থেকে তা উল্লেখ ছিল না।

এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে ‘ফেব্রুয়ারিতে হরতাল ও আন্দোলনের গুজব বিষয়ক জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি বিবৃতির ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রিয় দেশবাসী! আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন যে, আমি শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ। প্রাণঘাতী ক্যান্সার আমাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় আমার কোন প্রকার ক্ষমতা বা রাজনৈতিক আশা আকাংখা নাই। আমি আজ স্পষ্ট জানাচ্ছি যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ হ্যাক করে বিএনপি জামায়াতের লোকেরা বিভিন্ন উস্কানিমূলক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে আওয়ামী লীগের শান্তিপ্রিয় নেতাকর্মীদেরকে হরতাল, অবরোধসহ জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচীর দিকে চালিত করছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণার্হ কাজ। আমি বারবার বলেছি আমি এখন শান্তি চাই, পরকালের পাথেয় যোগাড় করতে চাই। আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আমি এখনো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং আমি এসব সন্ত্রাস ও জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচীর সাথে আমার বা আমার দলের দূরতম সম্পর্কও নাই। এমতাবস্থায় দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই এসকল দুর্বৃত্ত আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন এবং তাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিন। জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু!! বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে ‘ফেব্রুয়ারিতে হরতাল ও আন্দোলনের গুজব বিষয়ক জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত এই বিবৃতিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে শেখ হাসিনা এমন কোনো বিবৃতি দেননি।

অনুসন্ধানের শুরুতে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে আলোচিত বিবৃতি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত বিবৃতির ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। বিবৃতির ছবিটিতে ভারতের জাতীয় প্রতীক,হিন্দি ও বাংলার সংমিশ্রণ, শেখ হাসিনার নাম হিন্দি ও ইংরিজেতে থাকার মতো অসঙ্গতি দেখা যায়। শেখ হাসিনা কোনো বিবৃতি দিলে স্বাভাবিকভাবে তাতে এসব তথ্য থাকার কথা নয়।

Indicated by Rumor Scanner

এছাড়া, বিবৃতিটিতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ফেসবুক পেজ হ্যাক হয়েছে দাবি করা হলেও এমন কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা আওয়ামীলীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রেও আলোচিত বিবৃতি বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, শেখ হাসিনার বিবৃতি দাবিতে ‘ফেব্রুয়ারিতে হরতাল ও আন্দোলনের গুজব বিষয়ক জরুরী বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত এই বিবৃতি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

তারেক রহমানকে জড়িয়ে ডিবিসি নিউজের আসল ফটোকার্ডকে ভুয়া দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি যুক্ত ডিবিসি নিউজের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া বলে দাবি করে অভিযোগ করা হয়েছে যে  ‘আল বটর গুজব শিবির বাহিনী তাদের অপকর্ম ঢাকতে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ক্লিন ইমেজ কে বিতর্কিত করতে এই ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড বানিয়ে তাদের হীন কার্যক্রম চালাচ্ছে’।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন, কেউ বাধা হলে প্রতিহত করা হবে শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি কোনো ভুয়া ফটোকার্ড নয় বরং, ডিবিসি নিউজ কর্তৃক প্রকাশিত আসল ফটোকার্ডটিকে ভুয়া দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে কথিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে ডিবিসি নিউজ এর লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫  উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্রে একই দিন ডিবিসি নিউজ এর ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে একই শিরোনামে ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: rumor scanner

আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে, ফটোকার্ডটির মিল পাওয়া যায়। 

ফটোকার্ডের তথ্যের বিষয়ে যাচাই করার জন্য জাগোনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে ৩১ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন, কেউ বাধা হলে প্রতিহত করা হবে’ শিরোনামে তারেক রহমানের ভিডিও সম্বলিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে গত ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির আয়োজনে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও মেহেরপুর জেলায় বিএনপির কর্মশালায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তারেক রহমান। 

সুতরাং, আল বটর গুজব শিবির বাহিনী তাদের অপকর্ম ঢাকতে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ক্লিন ইমেজকে বিতর্কিত করতে এই ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড বানিয়ে তাদের হীন কার্যক্রম চালাচ্ছে দাবিটি মিথ্যা। এবং আলোচিত ফটোকার্ডটি সঠিক। 

তথ্যসূত্র

দিল্লি থেকে জাতির উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনার সরাসরি ভাষণ দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

0

সম্প্রতি ‘অবশেষে দীর্ঘ ৬ মাস পর “দিল্লী” থেকে সরাসরি জাতির উদ্দ্যেশ্যে যা বললেন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷ 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের দিল্লি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে কোনো ভাষণ দেননি বরং, ২০২২ সালে তার প্রদানকৃত একটি ভাষণের ভিডিও ব্যবহার করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে৷ 

আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক প্রসঙ্গে কথা বলছেন এবং তার পেছনে ভারতের পতাকা ও ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’ লিখিত মনোগ্রাম রয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ০৭ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির ০০:০২ থেকে ০০:০৭ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে “জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরাসরি চলে যাচ্ছি তার বক্তব্যে” বলা হয়েছে৷ তবে ভিডিওটির বাকি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল নেই৷ 

পুনরায় আলোচিত ভিডিওটির কি-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম আরটিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৫ জুন প্রকাশিত ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স-এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আছেন’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির ৩৭:১১ থেকে ৪২:১৫ মিনিট পর্যন্ত অংশে পদ্মা সেতু, ড. ইউনূস, গ্রামীণ ব্যাংক ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক প্রসঙ্গে কথা বলা হয়েছে৷ এরমধ্যে নির্দিষ্টভাবে ভিডিওর ৩৭:৪২ থেকে ৪০:১১ মিনিট পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে৷ এই অংশটিতে শেখ হাসিনা ড. ইউনূস কর্তৃক তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দুর্নীতি, ড. ইউনূসের প্ররোচনায় পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ঋণ স্থগিত ইত্যাদি দাবি নিয়ে কথা বলে৷ উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা বিষয়বস্তু, পারিপার্শ্বিকতা ও শেখ হাসিনার পোশাকের মিল রয়েছে, তবে আলোচিত ভিডিওটির মতো শেখ হাসিনার পেছনে ভারতের পতাকা ও ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’ লিখিত মনোগ্রাম দেখা যায়নি৷ 

Screenshot: YouTube 

ভিডিওটির ৪৮:১৬ মিনিটে আয়োজনস্থলটি সম্পূর্ণ ফ্রেমে দেখানো হয়, সেখানেও ভারতের পতাকা ও ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’ লিখিত মনোগ্রাম দেখা যায়নি৷

অর্থাৎ, ২০২২ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স-এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তার পেছনে ভারতের পতাকা ও ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’ লিখিত মনোগ্রাম সংযুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

সুতরাং, ভারতের দিল্লি থেকে শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দাবিতে তার ২০২২ সালের একটি ভাষণের ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

নির্যাতিত বম সম্প্রদায়ের ছবি দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

0

পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে প্রায়ই সংঘাতের ঘটনার ঘটে যার প্রভাব পড়ে বম সম্প্রদায়ের উপরও। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুইটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “ঢাকায় পার্বত্য মেলা হচ্ছে! অন্যদিকে পাহাড়ে বম জাতিগোষ্ঠীর সাথে এইটা হচ্ছে!”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে বম সম্প্রদায়ের ধারণকৃত ছবি। ছবি দুইটির মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে কোনো এক বন বা পাহাড়ে একদল মানুষ অবস্থান করছে এবং অপর ছবিতে কয়েকজন নারীকে আটককৃত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বম সম্প্রদায়ের সাম্প্রতিক সময়ে ধারণকৃত ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবি দুইটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং একটি ছবি ২০২২ সালের এবং অপরটি ২০২৪ সালের এপ্রিলের।

প্রথম ছবি যাচাই

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রথম ছবিটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বরের একটি প্রতিবেদনে পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) এর মধ্যকার সংঘাতের কারণে অনেক পাহাড়িরা পার্বত্য চট্টগ্রামে নিজেদের গ্রাম বা ঘর ছেড়ে ভারতের মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছে। প্রচারিত ছবিটির বিষয়ে বলা হয়, ছবিটিতে বাড়ি ছেড়ে চলে আসা সেসব গ্রামবাসীদের দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া, প্রতিবেদনে ২০২২ সালের নভেম্বরে পাহাড় ছেড়ে মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া এক ব্যক্তির মন্তব্যও প্রচার করা হয়েছে। অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২২ সালের।

দ্বিতীয় ছবি যাচাই

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দ্বিতীয় ছবিটি ‘হিল ভয়েস’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ছবিটি সম্পর্কে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, শিশু-নারী সহ নিরীহ নাগরিকদের সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও দাবি করা হয়, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সেনাসৃষ্ট কেএনএফ সন্ত্রাসীদের দমনের নামে বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায় বি এ (অনার্স) পড়ুয়া নিরীহ এক বম ছাত্রকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।” প্রচারিত ছবিটি সে সময়কার। এছাড়া, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগও প্রতিবেদনটিতে করা হয়। তবে দাবিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে, প্রচারিত উক্ত আটকের ঘটনার ভিন্ন কোণ থেকে ধারণকৃত আরেকটি ছবি গণমাধ্যম দেশ টিভির ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনে পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

“মায়ের সঙ্গে কারাগারে ৪ শিশু” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটিতে প্রচারিত ছবিটিতে প্রদর্শিত নারীদের সম্পর্কে বলা হয়, “বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে আরও ৩ নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। […] পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে রুমার গীর্জাপাড়া থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। পরে রুমা থানায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে বান্দরবান সদর থানায় আনা হয়। আজ (২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল) আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত দ্বিতীয় ছবিটিও সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২৪ সালের এপ্রিলের।

উল্লেখ্য যে, কেএনএফ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের কারণে ভয় ও আতঙ্কে বম জনগোষ্ঠীর লোকজন এলাকা ছাড়তে শুরু করে ২০২২ সালে শেষ দিকে। সে সময় ৫০০ জনের মত বম সদস্য প্রতিবেশী ভারতের মিজোরামে গিয়ে আশ্রয় নেয় বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়। পরে তাদের মধ্যে কেউ কেউ পরিবার নিয়ে ফিরে আসেন। এরপর গত বছরের এপ্রিলের শুরুতে রুমা ও থানচিতে কয়েকটি ব্যাংকে ডাকাতরা হানা দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ দুটি ঘটনায় জড়িত পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা, যারা পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত। ডাকাতির ঘটনার পর যৌথ বাহিনীর কেএনএফ-বিরোধী অভিযানে ‘গণহারে গ্রেপ্তারের’ মধ্যে চলাফেরা, খাদ্য সংগ্রহসহ নানা বিধিনিষেধের মধ্যে পড়তে হয় বলে বমরা অভিযোগ করছিলেন। এ সময়ও বমদের পাড়াছাড়ার ঘটনা ঘটছিল।

সুতরাং, ২০২২ ও ২০২৪ সালের দুইটি পুরোনো ছবি প্রচার করে ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে বম সম্প্রদায়ের ধারণকৃত ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সারজিস আলমের বিয়ের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন দম্পতির ভিডিও প্রচার 

0

গত ৩১ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যম জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিয়ের সংবাদ প্রকাশ করছে। কয়েকটি গণমাধ্যম সূত্রে তার স্ত্রীর নাম রাইতা বলে জানা গিয়েছে, তবে তার ছবি প্রকাশ করা হয়নি৷ এরই প্রেক্ষিতে সারজিসের বিয়ের ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সারজিস আলমের বিয়ের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তার বিয়ের ভিডিও নয় বরং, তাসমিয়া তাবাসসুম মম এবং রাগিব নূর নামের এক দম্পতির বিয়ের ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির কি-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Momottm নামক ফেসবুক পেজে ২০২৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রকাশিত ‘Sarjis Alam’s wedding: Clearing the misconceptions.’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে মম নামের ওই নারী দাবি করেন, আলোচিত ভিডিওটিতে কনে সাজে নারীটি তিনি ও ভিডিওটি তার বিয়েতে ধারণ করা হলেও ভিডিওতে থাকা ছেলেটি সারজিস আলম নয়। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায় এবং দেখান  প্রাপ্ত তার পুরো নামের (Tasmia Tabassum Momo) সূত্র ধরে তার ফেসবুক আইডির সন্ধান পাওয়া যায়। উক্ত ফেসবুক আইডি পর্যবেক্ষণের  মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া ২০২২ সালের ২৯ আগস্টের একটি পোস্টে দেখা যায়, তিনি রাগিব নূর নামক  ব্যক্তির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সংবাদ জানান এবং তাদের বিয়ের কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেন। উক্ত ছবিগুলোতে মম এবং তার স্বামী রাগিবের পরিহিত পোশাকের সাথে আলোচিত ভিডিওতে বর ও কনের পরিহিত পোশাকের হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়া, উক্ত ছবিগুলো থাকা ‘Checkmate’ লিখা লোগোর সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Checkmate Events নামক পেজের ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারির একটি পোস্টে মম ও রাগিবের বিয়ের বেশকিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ভিডিও ব্যবহার করে একইরকম দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় রিউমর স্ক্যানার টিম দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন ও কুইক ফ্যাক্ট  প্রকাশ করেছে।

জামায়াত সদস্যের লাঠিপেটার দৃশ্য দাবিতে শ্রমিক লীগ নেতার করোনাকালের ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জামাতির অত্যাচার দেখছেন, ক্ষমতা এত সোজা নারে কাঠ মোল্লা’ শিরোনামের একটি ভিডিও প্রচারিত হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পাঞ্জাবি ও টুপি পরিহিত এক ব্যক্তি সাধারণ জনগণকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন। আলোচিত পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, লাঠি হাতে থাকা ওই ব্যক্তি একজন জামায়াত ইসলামী সদস্য।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে বের হওয়ার অভিযোগে টাঙ্গাইল পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর আমিনুর রহমান আমিন সাধারণ মানুষকে লাঠিপেটা করার ঘটনার। তিনি টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক লীগের নেতা।

দাবিকৃত ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘University Life’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল ‘টাঙ্গাইলে সামাজিক দূরত্ব না মানায় লাঠিপেটা’ ক্যাপশনে প্রচারিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner. 

উক্ত ভিডিওটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ২০২০ সালের ০৮ এপ্রিল বাংলানিউজ২৪-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এই ঘটনার বিস্তারিত জানা যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল টাঙ্গাইল পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর আমিনুর রহমান আমিন করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে বের হওয়ার অভিযোগে সাধারণ মানুষকে লাঠিপেটা করেন।

এ ঘটনায় টাঙ্গাইল জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। সাধারণ মানুষের ওপর এমন আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

সমালোচনার মুখে ৮ এপ্রিল ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চান আমিনুর রহমান আমিন। তিনি বলেন, ‘সারাদেশে করোনা ভাইরাস যেভাবে মহামারি আকার ধারণ করেছে, সে লক্ষ্যে টাঙ্গাইল বাসীকে সুরক্ষা করা এবং ঘরে ফেরানোর জন্য আবেগের বশে জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি। এজন্য আমি লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।’

উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওতে লাঠি হাতে থাকা পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তির মিল দেখা যায়।

এছাড়া অনুসন্ধানে, তিনি টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা যায়।

সুতরাং, ২০২০ সালে শ্রমিক লীগ নেতার লাঠিপেটার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র


লস অ্যাঞ্জেলেসে সাম্প্রতিক দাবানলের ছবি দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে স্থানীয় সময় গত ৮ জানুয়ারি ভয়াবহ দাবানলের সূত্রপাত ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে, সাম্প্রতিক দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও পোস্ট দেখুন সময় টিভি, ফেস দ্যা পিপল (ফেসবুক)। 

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলের ছবি নয় বরং, ছবিটি ২০১৭ সালের অক্টোবরে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ক্যালিস্টোগা শহরের টাবসের কাছের নাপা কাউন্টিতে হওয়া দাবানল পরবর্তী সময়ের দৃশ্য।

অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর “Catastrophic wildfires rage in California” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা একটি ছবির সাথে আলোচিত ছবির মিল রয়েছে। 

Image Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের অক্টোবরের ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলে নিশ্চিত মৃতের সংখ্যা ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ১৭০,০০০ একর (৬৯০ বর্গকিলোমিটার) আগুনে পুড়ে গেছে, সেই সাথে ৩,৫০০ টিরও বেশি বাড়িঘরও পুড়ে গেছে। ছবিটি ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবিটি রয়টার্সের জন্য তুলেছিলেন স্টিফেন লাম নামের একজন ফটোগ্রাফার। 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে রয়টার্সের ওয়েবসাইটেও আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Reuters 

রয়টার্সের ওয়েবসাইটে ছবিটি ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর তোলা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি অন্তত সাত বছরের পুরোনো। 

সুতরাং, ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলের পরে তোলা ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলের পরবর্তী সময়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগের শোডাউন দাবিতে ২০২৪ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার 

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত ৩১ জানুয়ারির দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, পটুয়াখালীতে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা শোডাউন করেছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে শোডাউনের দৃশ্য নয় এটি বরং ২০২৪ সালে বিগত সরকারের সময়ের পুরোনো ভিডিও প্রচার করে উক্ত দাবি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে Search In Crime লেখা থাকার সূত্রে একই নামে ফেসবুকের একটি পেজে ২০২৪ সালের ০৪ আগস্ট একই ভিডিওর সন্ধান পায় রিউমর স্ক্যানার। ভিডিওটির ক্যাপশনে কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে প্রশ্ন রাখা হয়, “পটুয়াখালীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে এরা কারা?” 

Comparison: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, পুরোনো এই ভিডিওর মাধ্যমে এটা নিশ্চিত যে এটি সাম্প্রতিক সময় বা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের কোনো দৃশ্য নয়। 

পটুয়াখালী ভিত্তিক পেজটির এডিটর ইন চিফ মাসুম আহমেদ মিরা সম্প্রতি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও ভিডিওটি শেয়ার করেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেন, “পাগলা মেহেদী জীবনের সবচেয়ে বড় পাপ করেছে ৪ আগস্ট। ছাত্র জনতার আন্দোলন দমাতে পিও অভিভাবক ময়ূর মহিউদ্দিনের নির্দেশে দেশীয় অ’স্ত্র’শস্ত্র নিয়ে লাফিয়ে পরে ছাগলামি করা বোকাচন্দ্র বর্তমানে তার আম্মো হাসিনার ত্যাজ্যপুত্র ঘোষিত’র মত লুকিয়ে আছে। যে পাপ সে করেছে, এ জাতি কোনদিনও তা ক্ষমা করবে বলে মনে হয় না!”

সুতরাং, পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগের শোডাউন দাবিতে ২০২৪ সালের আগস্টের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

তিতুমীর কলেজে আমরণ অনশন ইস্যুতে ডেইলি ক্যাম্পাসের নামে ভুয়া ফটোকার্ড

0

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। গত ২৯ জানুয়ারি বিকেল থেকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করাসহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। এরই প্রেক্ষিতে ‘খেয়ে খেয়ে পালা বদল করে আমরণ অনশনে বসছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।’ শীর্ষক শিরোনামে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর লোগো সম্বলিত ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘খেয়ে খেয়ে পালা বদল করে আমরণ অনশনে বসছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।’ শীর্ষক শিরোনামে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর লোগো ব্যবহার করে ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে কথিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্রে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে প্রচারিত সংবাদ ও ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর ওয়েবসাইট এবং অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ‘খেয়ে খেয়ে পালা বদল করে আমরণ অনশনে বসছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।’ শীর্ষক শিরোনামে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis