Home Blog Page 147

ফারাক্কার বিকল্প বাঁধ নির্মাণের দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘ফারাক্কা বাঁধের সাথে আরেক ফারাক্কা বাঁধ উঠাইতেছে বাংলাদেশ’ দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফারাক্কার বিকল্প বাঁধ নির্মাণ সংক্রান্ত নয়। বরং, এটি অন্তত ২০২২ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মাধ্যমে অনলাইনে প্রচারিত হয়ে আসছে। এছাড়া, ফারাক্কার বিকল্প বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়নি। 

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও থেকে কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে learningciviltechnology নামক ইন্সটাগ্রাম পেজে ২০২৪ সালের ১৪ অক্টোবর প্রচারিত একটি পোস্টে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওর সাথে ক্লেইম ভিডিওর সাথে হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, পানির মধ্যে কফারড্যাম (Cofferdam) তৈরির দৃশ্য, যেটি সাধারনত ব্রিজ তৈরির ক্ষেত্রে করা হয়ে থাকে।

এছাড়া, ২০২২ সালেও ফেসবুক টিকটকে বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে একই ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে। 

Collage: rumor scanner 

অনুসন্ধানে জানা যায়, গেলো বছরের আগস্টে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে দেশের অন্তত ১০টি জেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এ প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফারাক্কার বিকল্প বাঁধ নির্মাণের দাবি ওঠে। তবে এখন পর্যন্ত বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এই বাঁধ নির্মাণের কোনো উদ্যোগের তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, পুরোনো ভিডিও ব্যবহার করে বাংলাদেশ ফারাক্কা বাঁধের বিকল্প হিসেবে আরেকটি বাঁধ নির্মাণ করছে দাবি করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Instagram – learningciviltechnology post 
  • YoutTube- Approximate Engineer short 
  • Facebook- Dambar Sunuwar Kyabacha post
  • TikTok- tra_da_media post 

সাকিব আল হাসান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্ধৃত করে ‘আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি তার (সাকিবের) খেলার সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক টানা উচিত না। যে কোনো প্লেয়ার রাজনীতি করতেই পারে, এটা তার অধিকার।’ শীর্ষক একটি বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাকিব আল হাসান প্রসঙ্গে আলোচিত মন্তব্যটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেননি বরং, খেলোয়াড়দের রাজনীতিতে জড়ানো বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেওয়া তার একটি মন্তব্যকে বিকৃত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে গত ১৯ জানুয়ারি ‘সাকিবের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, চেক প্রতারণার মামলায় বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। এটা আমার সাবজেক্ট নয়। তিনি আরো বলেন, খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতির সঙ্গে উচিত না। এটা চলমান অবস্থাতেও নয়। যারা ভবিষ্যতে খেলাধুলা ছেড়ে দেবেন তারা রাজনীতিতে যেতেই পারেন। এটা তাদের অধিকার।

পরবর্তীতে একই ঘটনায় ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ জানুয়ারি ‘সাকিব আল হাসানকে নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, একজন সাংবাদিকের মির্জা ফখরুলের কাছে ক্রিকেটারদের খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় রাজনীতিতে জড়ানোর যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত না, এবং যেটা চলমান অবস্থাতেও নয়। এবং ভবিষ্যতে যারা খেলা ছেড়ে দেবেন তারা রাজনীতি করতে পারেন, এটা তাদের অধিকার। তবে এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার আমি মনে করি। এবং এই অধিকার মানুষের সকলেরই থাকা উচিত, গণতান্ত্রিক অধিকার।” অতঃপর আরেকজন সাংবাদিকের সাকিব আল হাসানের বিভিন্ন মামলায় জড়ানো ও দেশে ফিরতে না পারা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া থেকে মির্জা ফখরুল বলেন, “এ বিষয়ে আমি ঠিক মন্তব্য করতে চাই না, কারণ এটা আমার সাবজেক্ট নয়।”

অর্থাৎ,  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্রিকেটার ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি৷ 

উপরোক্ত তথ্যাদি থেকে নিশ্চিত করা যায়, সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুলের করা ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত না, এবং যেটা চলমান অবস্থাতেও নয়। এবং ভবিষ্যতে যারা খেলা ছেড়ে দেবেন তারা রাজনীতি করতে পারেন, এটা তাদের অধিকার। তবে এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার আমি মনে করি। এবং এই অধিকার মানুষের সকলেরই থাকা উচিত, গণতান্ত্রিক অধিকার।’ শীর্ষক মন্তব্যটিকে বিকৃত করে ‘আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি তার (সাকিবের) খেলার সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক টানা উচিত না। যে কোনো প্লেয়ার রাজনীতি করতেই পারে, এটা তার অধিকার’ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

সুতরাং, খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতি জড়ানো প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের করা একটি মন্তব্যকে বিকৃত করে সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুলের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার মৃত্যুর তথ্যটি গুজব

0

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ইন্টারনেটে ধারাবাহিকভাবে তার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য ও অপতথ্য প্রচার হয়ে আসছে৷ এরই প্রেক্ষিতে গত ৩০ জানুয়ারি থেকে ‘শেখ হাসিনা আজ রাত ভারতের সময় ২:৩০ মিনিট এ মারা যান’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে৷ 

Collage: Rumor Scanner 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়৷ কোনো প্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়া দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সর্বপ্রথম পোস্টটি গত ৩০ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয়। তবে, পোস্টগুলোতে দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়নি৷

পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ৩০ জানুয়ারি থেকে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়; দলটির বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য প্রচার করা হলেও শেখ হাসিনার মৃত্যুর দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷

এছাড়া, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ও এক্স অ্যাকাউন্ট এবং  মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের এক্স অ্যাকাউন্ট যাচাই করে শেখ হাসিনার মৃত্যুর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি৷ 

স্বাভাবিকভাবে একটি দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মারা গেলে তা সে দেশের এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়। প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্রে শেখ হাসিনার মৃত্যুর কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি৷ 

সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুর দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

যোগেশচন্দ্র কলেজে সরস্বতী পূজায় পুলিশের পাহারার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “যোগেশচন্দ্র কলেজে পুলিশের পাহারায় হবে সরস্বতী পুজো, নির্দেশ হাইকোর্টের” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয় “আমরা নাকি স্বাধীন?”।

অর্থাৎ, দাবি প্রচার করা হয়েছে যে আলোচিত ঘটনাটি বাংলাদেশের। উল্লেখ্য যে, মূলত বাংলাদেশি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজ থেকে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যোগেশচন্দ্র কলেজে পুলিশের পাহারায় সরস্বতী পূজা হওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত কলেজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘এই সময়’ এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ জানুয়ারি ‘পুলিশি নিরাপত্তায় সরস্বতী পুজো, যোগেশচন্দ্র ল কলেজ নিয়ে বড় নির্দেশ হাইকোর্টের’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “যোগেশচন্দ্র ল কলেজে সরস্বতী পুজো করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশি নিরাপত্তায় কলেজে সরস্বতী পুজো করার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার কোনও অফিসারের উপস্থিতিতে পুজো করতে হবে বলেও শুক্রবার [৩১ জানুয়ারি] আদালত জানিয়ে দিয়েছে।” উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি সংবাদমাধ্যমটির কলকাতা বিভাগে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া, প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, উক্ত কলেজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত।

পরবর্তী অনুসন্ধানে এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের ওয়েবসাইটে “পুলিশ প্রহরায় চলল পুজো, যোগেশচন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য, মালা” শীর্ষক শিরোনামে আজ (০২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে কড়া পুলিশি প্রহরায় যোগেশচন্দ্র কলেজের ভিতরে হল আইন বিভাগের পুজো। […] গত শুক্রবার [৩১ জানুয়ারি] কলকাতা হাই কোর্ট যোগেশচন্দ্র আইন কলেজে পুলিশ মোতায়েন করে সরস্বতী পুজোর অনুমতি দেয়। উচ্চ আদালত জানায়, বহিরাগতেরা যাতে কলেজে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। কলেজে কারা প্রবেশ করছেন, কারা বার হচ্ছেন, তার উপরও নজর দিতে হবে। এর পরেও বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ে সরস্বতী পুজোর দিন বিক্ষোভ দেখালেন আইন বিভাগের পড়ুয়ারা।”

অর্থাৎ, উল্লিখিত যোগেশচন্দ্র কলেজ ও কলেজে হওয়া সরস্বতী পূজায় পুলিশি পাহারার ঘটনাটি ভারতের।

তাছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও উক্ত নামে বাংলাদেশে কোনো কলেজে পুলিশি পাহারার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের যোগেশচন্দ্র কলেজে পুলিশের পাহারায় সরস্বতী পূজা হওয়ার ঘটনাকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

জানুয়ারিতে ২৭১ ভুল তথ্য শনাক্ত 

0

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৭১টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। ক্যাটাগরিভিত্তিক ভুল তথ্য শনাক্ত ছাড়াও গেল মাসে দুইটি পরিসংখ্যান এবং একটি ফ্যাক্ট ফাইলও প্রকাশ করা হয়েছে। 

রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক থেকে গণনাকৃত এই সংখ্যার মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি (১১৪) ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে, যা মোট ভুল তথ্যের ৪২ শতাংশ। এছাড়া, জাতীয় বিষয়ে ৬৭টি, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ২৯টি, ধর্মীয় বিষয়ে ১৮টি, বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ে ১৫টি, শিক্ষা বিষয়ে নয়টি, প্রতারণা বিষয়ে ছয়টি, খেলাধুলা বিষয়ে পাঁচটি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে জানুয়ারিতে। 

এসব ঘটনায় তথ্যভিত্তিক ভুলই ছিল সবচেয়ে বেশি, ১১৫টি। এছাড়া ছবি কেন্দ্রিক ভুল ছিল ৫৪টি এবং ভিডিও কেন্দ্রিক ভুল ছিল ১০২টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে মিথ্যা হিসেবে ১৭৫টি, বিভ্রান্তিকর হিসেবে ৬৫টি এবং বিকৃত হিসেবে ৩১টি ঘটনাকে সাব্যস্ত করা হয়েছে।

প্লাটফর্ম হিসেবে গত মাসে ফেসবু্কে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, সংখ্যার হিসেবে যা ২২৫টি। এছাড়া, এক্সে ৫৬টি, টিকটকে ৪৪টি, ইউটিউবে ৪২টি, ইন্সটাগ্রামে ১৯টি, থ্রেডসে অন্তত একটি ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। ভুল তথ্য প্রচারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি দেশের গণমাধ্যমও। ১৬টি ঘটনায় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।  

গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। গেল জানুয়ারিতে এই ধারাবাহিকতা দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। গত মাসে ভারতীয় গণমাধ্যমে সাতটি ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়িয়ে অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া নয়টি ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে বাংলাদেশকে নিয়ে ভুয়া তথ্যের প্রচার করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক অপতথ্য প্রচারের বিষয়টি গেল কিছু মাস ধরেই আলোচনায় রয়েছে। জানুয়ারিতে এমন ৩২টি সাম্প্রদায়িক অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর মধ্যে ২৫টি ঘটনাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গেল মাসে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জড়িয়ে ১৩টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। ভুলতথ্যগুলোর ধরণ বুঝতে এগুলোকে রিউমর স্ক্যানার দুইটি আলাদা ভাগে ভাগ করেছে৷ সরকারের পক্ষে যায় এমন ভুল তথ্যের প্রচারকে ইতিবাচক এবং বিপক্ষে যায় এমন অপতথ্যের প্রচারকে নেতিবাচক হিসেবে ধরে নিয়ে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই এসব অপতথ্য সরকারের বিপক্ষে যাওয়ার সুযোগ রেখেছে। 

জানুয়ারিতে ১২টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়েও। এর মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই এসব অপতথ্য তার পক্ষে যাওয়ার সুযোগ রেখেছে। অন্যদিকে ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুল তথ্যগুলো তার বিপক্ষে যাওয়ার সুযোগ রেখেছে।

সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে তিনটি (সবগুলোই বিপক্ষে), জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে নিয়ে দুইটি (৫০ শতাংশ বিপক্ষে) এবং নাহিদ ইসলাম ও আ ফ ম খালিদ হোসেনকে জড়িয়ে একটি করে (দুটিই পক্ষে) ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। 

রিউমর স্ক্যানার গেল মাসের ফ্যাক্টচেকগুলো বিশ্লেষণে দেখেছে, এই সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্যের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (১৬)। এর মধ্যে দলটির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৯৪ শতাংশ। এই সময়ে দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে প্রচার হওয়া ১০টি ভুল (সবগুলোই বিপক্ষে) তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান এই সময়ের মধ্যে দুইটি ভুল তথ্যের (সবগুলোই বিপক্ষে) শিকার হয়েছেন। 

গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে গত মাসে ছয়টি অপতথ্য (সবগুলোই দলটির পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে) শনাক্ত করা হয়েছে। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে এই সময়ে ২০টি অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। রিউমর স্ক্যানার দেখেছে ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই এসব অপতথ্য তার পক্ষে যাওয়ার সুযোগ রেখেছে। অন্যদিকে মাত্র ১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুল তথ্যগুলো তার বিপক্ষে যাওয়ার সুযোগ রেখেছে। আওয়ামী লীগের দুই অঙ্গ ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে জড়িয়ে এই সময়ে যথাক্রমে তিনটি (৬৭ শতাংশ বিপক্ষে) ও চারটি (সবগুলোই পক্ষে) করে অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) জড়িয়ে গত মাসে তিনটি (সবগুলোই বিপক্ষে) ভুল তথ্যের প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। এই সময়ে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুইটি (সবগুলোই বিপক্ষে), ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে চারটি (২৫ শতাংশ বিপক্ষে) এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে তিনটি (৬৭ শতাংশ বিপক্ষে) ভুল তথ্যের প্রচার করা হয়েছে।  

ভুল তথ্যের রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোও। গেল মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জড়িয়ে দুইটিসহ এই বাহিনীকে জড়িয়ে ১২টি ভুল তথ্যের প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা মেট্রোপলিটনের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে জড়িয়ে একটিসহ পুলিশের বিষয়ে ছড়ানো চারটি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর বাইরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) জড়িয়ে দুইটি ভুয়া তথ্যের প্রচার ছিল জানুয়ারিতে। 

কোটা আন্দোলন থেকে সরকার পতনের সময়টায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠনকে জড়িয়ে পরবর্তী মাসগুলোয় নিয়মিতই ভুয়া তথ্যের প্রচার লক্ষ্য করা গেছে। জানুয়ারিতেও সংগঠনটিকে জড়িয়ে সাতটি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নিয়ে একই সময়ে ১৮টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে হাসনাত আবদুল্লাহকে জড়িয়ে পাঁচটি, সারজিস আলমকে নিয়ে সাতটি, খান তালাত মাহমুদ রাফি ও নুসরাত তাবাসসুমকে জড়িয়ে দুইটি করে এবং হাসিব আল ইসলাম ও তিলোত্তমা ইতিকে জড়িয়ে একটি করে অপতথ্যের প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

গেল মাসের ভুল তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, গেল কয়েক বছরে শনাক্ত হয়েছে এমন ভুল তথ্যগুলো আবার ফিরে আসছে। ফেসবুকে মেমোরিজ বলে একটি অপশন রয়েছে যা পূর্বের বছরগুলোর নির্দিষ্ট দিনের অ্যাক্টিভিটি আপনাকে জানাবে৷ ফিরে আসা এসব ভুল তথ্যের ক্ষেত্রে এই মেমোরিস অপশন ভূমিকা রাখছে৷ দেখা গেছে, পূর্বের বছর জানুয়ারিতে একটি ভুল তথ্য প্রচার হলে পরের বছর ঠিক একই সময়েই তা আবার ছড়ায়। অথচ, এই ভুল তথ্যটি ইতোমধ্যেই শনাক্ত হয়েছে৷ রিউমর স্ক্যানার গত মাসে এমন ১৪টি ভুল তথ্য নতুন করে প্রচার হতে দেখেছে যেগুলো কিনা পূর্বেই শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে বিভিন্ন অঙ্গনের সুপরিচিত ব্যক্তি এবং বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে ১০টি মৃত্যুর গুজব প্রচার করা হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে জানুয়ারির শুরুর দিকে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমনকি গণমাধ্যমেও ভুল তথ্যের প্রচার দেখা গেছে। এই ঘটনায় রিউমর স্ক্যানার অন্তত ১০টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। গেল মাসে একক কোনো ঘটনায় এটিই সর্বোচ্চ ভুল তথ্য শনাক্তের সংখ্যা। এছাড়া, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্লাটফর্ম এটিমের আহ্বানে ১৮ জানুয়ারির ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে পাঁচটি এবং ২৬ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থী ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাঁচটি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

গত মাসে গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ও ভুয়া ফটোকার্ড ব্যবহার করে ৩৩টি ঘটনায় দেশি ও বিদেশি ২০টি সংবাদমাধ্যমকে জড়িয়ে ৩৯টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে ভুল তথ্য প্রচারে জাতীয় দৈনিক যমুনা টিভি’র নাম সবচেয়ে বেশি (৭) ব্যবহার করা হয়েছে। যমুনা’র পর আরেক জাতীয় গণমাধ্যম আমার দেশ এর নাম বেশি (৫) ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া, ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে জড়িয়ে একটি অপতথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার৷ 

বার্তা প্রেরক 
তানভীর মাহতাব আবীর
জ্যেষ্ঠ ফ্যাক্টচেকার
রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ
[email protected]

বাংলাদেশের ইজতেমার রাতের দৃশ্য দাবিতে পাকিস্তানের রায়উইন্ড ইজতেমার ভিডিও প্রচার

0

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে গত ৩১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তাবলিগ জামাতের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। তিন দিনব্যাপী এই মাহফিল আজ ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে। এরপর আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব, যা চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, ইজতেমার প্রথম ধাপের রাতের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত ইজতেমার কোনো দৃশ্য নয় বরং, এটি ২০২৪ সালের পাকিস্তানের লাহোরের রায়উইন্ড ইজতেমার দৃশ্য। 

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও থেকে কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে পাকিস্তানের লাহোরের সিটি ট্র্যাফিক পুলিশের ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর প্রচারিত একটি পোস্টে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি পাকিস্তানের লাহোরের রায়উইন্ড ইজতেমা ২০২৪-এর দৃশ্য। 

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত ইংরেজি ভাষার দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য ন্যাশন’-এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর (রবিবার) পাকিস্তানের লাহোরের রায়উইন্ড ইজতেমা ২০২৪-এর দ্বিতীয় পর্ব মাওলানা ইব্রাহিমের নেতৃত্বে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

পাকিস্তানের ‘দ্যা ট্রুথ ইন্টারন্যাশনাল’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের লাহোরের রায়উইন্ড ইজতেমা ২০২৪-এর প্রথম পর্বের সূচি ছিল ৩১ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর এবং দ্বিতীয় পর্বের সূচি ছিল ৭ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর। 

সুতরাং, ২০২৪ সালে পাকিস্তানের লাহোরের রায়উইন্ড ইজতেমার রাতের দৃশ্যকে বাংলাদেশের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে ডা. শফিকুরকে জড়িয়ে কালের কন্ঠের নামে ভুয়া ফটোকার্ড

0

আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে গত ২৮ জানুয়ারি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগসহ ১০টি দাবি উত্থাপন করে এবং এ দাবিগুলোর সমর্থনে ১ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এরই প্রেক্ষিতে জামায়েতের আমির ডা. শফিকুর রহমানকে জড়িয়ে ‘আমরা আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে বাধা দিতে চাই না: জামাত আমির’ শীর্ষক শিরোনামে কালের কন্ঠ পত্রিকার লোগো ও ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘আমরা আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে বাধা দিতে চাই না: জামাত আমির’’ শীর্ষক শিরোনামে কালের কন্ঠ পত্রিকা কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সম্পাদনার মাধ্যমে কালের কন্ঠকে জড়িয়ে ভুয়া এই ফটোকার্ডের মাধ্যমে ডা. শফিকুর রহমানের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার করা হয়েছে। 

আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে কালের কন্ঠ পত্রিকার লোগো এবং তারিখ হিসেবে ‘৩১ জানুয়ারি ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে। এই সূত্র ধরে কালবেলার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে প্রচারিত সংবাদ ও ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে এমন শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, ৩১ জানুয়ারি কালের কন্ঠের ফেসবুক পেজে ‘ফ্যাসিজম দুনিয়া-আখিরাতে কারো জন্য কল্যাণকর নয়: জামায়াতের আমির’ শীর্ষক একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়, তবে সেখানে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রসঙ্গে কিছু বলা হয়নি।

Comparison: Rumor Scanner 

পরবর্তী অনুসন্ধানে কালের কন্ঠ পত্রিকার ওয়েবসাইটে গত ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায় যেখানে তারা নিশ্চিত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি কালের কন্ঠ প্রকাশ করেনি। 

সুতরাং, ‘আমরা আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে বাধা দিতে চাই না’ শীর্ষক মন্তব্যকে ডা. শফিকুর রহমানের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মেয়ের নামে বিকৃত ছবি প্রচার

0

অন্তত গতকাল (০১ ফেব্রুয়ারি) থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের পরিবারের ছবি পোস্ট করে তার মেয়ের ছবিকে কেন্দ্র করে আরো দুইটি আপত্তিকর ছবি “গণশত্রুর মেয়ে হিজাবী গাভী! বাংলাদেশে হিজাবী, আমেরিকাতে উ’লঙ্গ গাভী।” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচার করা হয়।

অর্থাৎ, দাবি প্রচার করা হয়েছে, প্রচারিত আপত্তিকর ছবি দুইটি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মেয়ের এবং তা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে ধারণকৃত।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মেয়ের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবি দুইটি আসল নয় বরং পর্ণ অভিনেত্রী মিয়া খলিফার দুইটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে তাতে শফিকুল আলমের মেয়ের মুখমণ্ডল বসিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

প্রথম ছবি যাচাই:

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রথম ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কায় ২০২৩ সালের প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনে একটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায়৷ উক্ত ছবিটির সাথে প্রচারিত ছবিটির মুখমণ্ডল ব্যতীত পোশাক, অঙ্গভঙ্গি, পারিপার্শ্বিক অবস্থাসহ সবকিছুর হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে ছবিটি পর্ণতারকা মিয়া খলিফার বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও ‘লিবেরো’ নামক একটি পেরুভিয়ান সংবাদমাধ্যমেও প্রচারিত ছবিটি মিয়া খলিফার বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আরো একাধিক সংবাদমাধ্যম বা ওয়েবসাইটেও প্রচারিত ছবিটি মিয়া খলিফার ছবি বলে পাওয়া যায়। অর্থাৎ, মিয়া খলিফার ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে তাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মেয়ের মুখাবয়ব বসিয়ে প্রথম এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ছবি যাচাই:

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দ্বিতীয় ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজের ওয়েবসাইটে মিয়া খলিফাকে নিয়ে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনে একটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটির সাথে প্রচারিত ছবিটির মুখমণ্ডল ব্যতীত পোশাক, অঙ্গভঙ্গি, পারিপার্শ্বিক অবস্থাসহ সবকিছুর হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও ‘ডিয়ারিও ডো পারা’ নামক একটি ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যমেও প্রচারিত ছবিটি মিয়া খলিফার বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আরো একাধিক ওয়েবসাইটেও প্রচারিত ছবিটি মিয়া খলিফার ছবি বলে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, মিয়া খলিফার ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে তাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মেয়ের মুখাবয়ব বসিয়ে দ্বিতীয় এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মেয়ে দাবিতে প্রচারিত এই ছবি দুইটি এডিটেড বা বিকৃৃত।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে একই দাবি সম্বলিত ফেসবুক পোস্ট আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত পোস্ট প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

সেনাপ্রধানের নির্দেশে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফেরার বার্তা দিয়েছেন দাবিতে একটি কথিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে’(আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক কিংবা দেশীয় কোনো গণমাধ্যমে কোনো বার্তা বা নির্দেশ দেননি। প্রকৃতপক্ষে, গতবছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটির শুরুতে একজন সংবাদপাঠিকাকে, ‘শেখ হাসিনার ফিরে আসার বার্তা দিলেন বাংলাদেশের জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি’ শীর্ষক কথাগুলো বলতে শোনা যায়। তবে সংবাদপাঠিকার ‘শেখ হাসিনার ফিরে আসার বার্তা দিলে’ শীর্ষক বক্তব্যের সাথে পরবর্তী বক্তব্যের কণ্ঠের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও পরবর্তীতে দেখানো সেনাপ্রধানের ফুটেজে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে ‘আমরা একটি সুন্দর আলোচনা করেছি। সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ইন্টারিম গর্ভমেন্ট আমরা ফর্ম করবো।’ শীর্ষক বক্তব্য দিতে দেখা যায়। যার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি ভিডিওটির শেষাংশে এর উপস্থাপক  দাবি করেন সম্প্রতি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা চলছে। এছাড়াও তিনি, ‘আমি শেখ হাসিনাকে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় বসাবো। আমাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। যদি অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা প্রফেসর ড. এবং সমন্বয়করা বাধা দেয় তাহলে তাদের ধরে ধরে শাস্তি দেওয়া হবে।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন বলেও দাবি করেন ভিডিওটির উপস্থাপক।

ভিডিও যাচাই ১

সংবাদপাঠিকার ভিডিওটি অনুসন্ধানে অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে যমুনা টেলিভিশন-এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ‘১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন, সরকারকে সহায়তা করে যাবে সেনাবাহিনী’ | BD Army Chief | Reuters | Jamuna TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত প্রতিবেদনের সংবাদপাঠিকরা সাথে এবং তার পোশাক ও পরিবেশের সাথেও আলোচিত ভিডিওতে থাকা সংবাদ পাঠিকার মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতেই বামপাশে উপরের দিকে SEYLON FAMILY BLEND এর একটি লোগোও দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও, প্রতিবেদনটিতে সংবাদপাঠিকাকে ‘বাংলাদেশের জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি’ কথাগুলোও বলতে শোনা যায়। তবে আলোচিত ভিডিওর ‘শেখ হাসিনার ফিরে আসার বার্তা দিলেন’ শীর্ষক অসামঞ্জ্যপূর্ণ কণ্ঠের কথাগুলো উক্ত প্রতিবেদনে তাকে বলতে শোনা যায়না। বরং সেই স্থলে তাকে, ‘দেড় বছরের মধ্যে যাতে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হয় সেজন্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিবেন’ শীর্ষক কথাগুলো বলতে শোনা যায়।

অর্থাৎ, দেড় বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেনাপ্রধানের সমর্থন দেওয়ার বিষয়টিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে ভিডিওটি দেখানো সেনাপ্রধানের ফুটেজটি অনুসন্ধানে তার বক্তব্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যমুনা টেলিভিশন-এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে, কথা দিলেন সেনাপ্রধান | Army Chief Speech | Caretaker | Jamuna TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর ১৫ সেকেন্ড থেকে ২৪ সেকেন্ড পর্যন্ত সময়ের সেনাপ্রধানের ফুটেজ এবং বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটিতে থাকা তার ফুটেজের মিল রয়েছে। তবে আলোচিত ভিডিওতে তার ফুটেজটি মিরর করে ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটিতে গতবছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সেনাপ্রধানের সকল রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। যার সাথে আলোচিত দাবিটির কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়াও আলোচিত ভিডিওতে উপস্থাপকের সেনাপ্রধানের রয়টার্সকে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Reuters এর ওয়েবসাইটে গতবছরের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সাক্ষাৎকার প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে সেনাপ্রধানকে আলোচিত দাবিগুলোর সাথে সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়না।

অর্থাৎ, ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি প্রতিবেদনের ফুুটেজ এবং ভিন্ন ভয়েসওভার ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে একটি ভিডিও তৈরি করা আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নির্দেশে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘ওয়েস্টেরস বিশ্ববিদ্যালয়’ নয়,  প্রথম আলোর নামে ভুয়া ফটোকার্ড

0

সম্প্রতি, ‘সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে পারে ‘ওয়েস্টেরস বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলোর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে পারে ‘ওয়েস্টেরস বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে প্রথম আলো কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম আলোর ব্যবহার করে আলোচিত ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে প্রথম আলোর লোগো এবং এটি প্রকাশের দিন হিসেবে ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রথম আলোর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ‘সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে পারে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক শিরোনামে একটি পোস্ট পাওয়া যায়।

Comparison: rumor scanner

ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখাটি সম্পাদনা করে ‘ওয়েস্টেরস বিশ্ববিদ্যালয়’ লিখে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডে ‘ওয়েস্টেরস বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখায় ব্যবহৃত ফন্টের সাথে প্রথম আলোর প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়৷

এছাড়া, প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর সাতটি বড় সরকারি কলেজকে একত্রিত করে যে পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে, এর নাম হতে পারে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি এই নাম প্রস্তাব করেছে। শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে এই নামটি চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করা হতে পারে।

সুতরাং, সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে পারে ‘ওয়েস্টেরস বিশ্ববিদ্যালয় দাবিতে প্রথম আলোর নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র