Home Blog Page 146

বাগেরহাটে সরকারি চাল জব্দের ঘটনায় গ্রেফতার দুই ব্যক্তি যুবদল নেতা নন

0

সম্প্রতি, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “বাগেরহাটে ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ যুবদলের ২ নেতা গ্রেফতার” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাগেরহাটের ফকিরহাটে গুদাম থেকে ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করার ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তি যুবদল নেতা নয় বরং, গ্রেফতারকৃত একজন ঐ চালের গুদামের মালিকের ছেলে এবং একজন সেখানকার কর্মচারী। তাদের যুবদলের সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে সেগুলোতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আলোচ্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যম ‘খবর প্রতিদিন’-এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ জানুয়ারি “বাগেরহাটে ওএমএসের ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ, গ্রেপ্তার-২” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবুহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, বাগেরহাটের ফকিরহাট বাজারের একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ খোলা বাজারের বিক্রির (ওএমএস) ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেছে। এসময় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে ফকিরহাট বাজারের মেসার্স মজুমদার ভান্ডারের সুপারিপট্টি এলাকার চালের গুদাম থেকে এসব চাল জব্দ করে পুলিশ। এসব চাল বগুড়ার একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কিনেছেন বলে চাল ব্যবসায়ি প্রফুল্ল মজুমদার দাবি করেছেন। পরদিন সকালে ফকিরহাট থানার এসআই আব্দুল আলিম বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করেছেন। তারা হলেন, ফকিরহাট বাজারের মেসার্স মজুমদার ভান্ডারের মালিক প্রফুল্ল মজুমদারের ছেলে আশাতীত মজুমদার (২১) ও কর্মচারি আব্দুর রসূল (৪৫)।

এছাড়া, একই ঘটনায় মূলধারার অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে গত ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ‘বাগেরহাটে ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ, গ্রেপ্তার ২’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনেও ভিন্ন এ্যঙ্গেল থেকে তোলা আলোচিত গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের একটি ছবি পাওয়া যায়। 

তবে উপরোক্ত দুইটি প্রতিবেদনের কোথাও গ্রেপ্তারকৃত এই দুই ব্যক্তির কোন রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। একই বিষয়ে অন্যান্য মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও (,) তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।  

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত দুই ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে বাগেরহাটের ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আলমগীর কবীরের সাথে যোগযোগ করে রিউমার স্ক্যানার টিম। তিনি জানান এই দুই ব্যক্তির যুবদলের সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। 

সুতরাং, বাগেরহাটের ফকিরহাটে সরকারি চাল জব্দ করার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুই ব্যক্তি যুবদল নেতা শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

তাসকিনের প্রথমবারের মতো বিপিএল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাওয়ার দাবিটি সত্য নয়

0

গত ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিপিএল ম্যাচে তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে রাজশাহী দল সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৫ উইকেটে পরাজিত করে। এই জয়ের ফলে তাসকিন আহমেদের দলের সামনে প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনার তৈরি হয়। এর পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে যে, এটি তাসকিন আহমেদের জন্য বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এর প্লে-অফে খেলার প্রথম সুযোগ।

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, তাসকিন আহমেদের প্রথমবারের মতো বিপিএলের প্লে-অফে খেলার সুযোগ তৈরির তথ্যটি সত্য নয়। বরং, তিনি ২০১৩ সালে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরেই চিটাগং কিংসের হয়ে প্লে-অফে খেলেছিলেন।

অনুসন্ধানে ২০১৩ সালের বিপিএল আসরে প্লে-অফের প্রতিটি ম্যাচের স্কোরকার্ডে তাসকিন এর উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রথম সেমিফাইনালে ৩ ওভারে ৩১ রান খরচা করে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ৪ ওভার বোলিং করে ২৪ রান খরচা করে ১ উইকেট তুলে নেন তিনি। ফাইনাল ম্যাচের স্কোরকার্ড থেকে জানা যায়, চিটাগং কিংসের হয়ে ঢাকা গ্লাডিয়েটরস এর বিরুদ্ধে বল হাতে ৪ ওভারে ২ উইকেট তুলে নেয় তাসকিন। এবং ব্যাট হাতে এক বল খেলে শূন্য রানে ফিরে যান তিনি। অতএব এর আগেও একবার বিপিএল প্লে-অফে খেলেছিলেন তাসকিন। 

উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালের বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে তাসকিন আহমেদ দুটি সেমিফাইনাল ম্যাচে খেলেছিলেন। যদিও সেই সময়ের টুর্নামেন্ট পদ্ধতি বর্তমানের মতোই ছিল, তবে ম্যাচগুলোর নামকরণ ছিল ভিন্ন। তৎকালীন “১ম সেমিফাইনাল” বা “এলিমিনেশন ফাইনাল” ছিল এখনকার “এলিমিনেটর”, যেখানে পয়েন্ট টেবিলের ৩য় ও ৪র্থ স্থানের দল মুখোমুখি হয়। বর্তমানে প্রচলিত “কোয়ালিফায়ার-২”, যেখানে “কোয়ালিফায়ার-১”-এ পরাজিত দল ও এলিমিনেটরে জয়ী দল মুখোমুখি হয়, সেটি তখন “২য় সেমিফাইনাল” নামে অনুষ্ঠিত হতো। অন্যদিকে, বর্তমানে “কোয়ালিফায়ার-১” নামে পরিচিত ম্যাচটি সে সময় “প্লে-অফ রেস টু দ্য ফাইনাল” নামে পরিচিত ছিল। অর্থাৎ, প্লে-অফ পর্বে মোট তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যার মধ্যে দুটি ম্যাচে তাসকিন আহমেদের দল খেলেছিল এবং তিনিও উভয় ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন।

আরও উল্লেখ্য যে, তাসকিন আহমেদের দল দুর্বার রাজশাহী এবারের বিপিএলে প্লে-অফে জায়গা করে নিতে পারেনি। পয়েন্ট টেবিলে ৫ম স্থানে থেকে তাদের বিপিএল অভিযান শেষ হয়েছে।

সুতরাং, চলতি বিপিএলে প্রথমবারের মতো বিপিএল প্লে-অফে তাসকিন আহমেদের খেলার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার ১০ ব্যক্তি জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী নন

0

সম্প্রতি ‘কুমিল্লায় অভিযান চলাকালীন সময় জান্নাতি দলের জামাত-শিবির নেতাকর্মীর কাছ থেকে কিছু বেহেশতে যাওয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত ১০ জন জামায়াতে-শিবিরের নেতা-কর্মী নন। কোনো প্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়া গ্রেফতারকৃতরা জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে গত ২৬ জানুয়ারি ‘কুমিল্লায় বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ১০’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে আলোচিত দাবিতে ব্যবহৃত ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর সেনাবাহিনীর একটি দল বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলভার, তিনটি শর্টগান, ৯ রাউন্ড শটগানের বুলেট, ৪ রাউন্ড পিস্তল ও রিভলবারের বুলেটসহ বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- নগরীর ঝাউতলা এলাকার মো. নাইমুল ইসলাম নাঈম (৩৬), মো. জাবেদুর রহমান (২৯), কালিয়াজুড়ির আবির হামিদ মাহি (২১), মো. রাকিব (২১), ছোটরা এলাকার মো. সাজিদুল ইসলাম (২১), মোহাম্মদ আলী (২৪), মো. সাব্বির হোসেন (২১), ধর্মসাগর পাড় এলাকার অভিজিৎ রায় সরকার (৩০), মো. অপু (৪২) ও বুড়িচংয়ের সাদকপুর এলাকার মো. আবুল খায়ের (৩৯)। প্রতিবেদনে গ্রেফতারকৃতদের কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি৷ 

পরবর্তীতে একই ঘটনায় মূলধারার সংবাদমাধ্যম দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইটে গত ২৬ জানুয়ারি ‘কুমিল্লায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১০’ শিরোনামে একই ছবি ব্যবহার করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ তবে উক্ত প্রতিবেদনেও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি৷

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহিনুল ইসলাম ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “গ্রেফতারকৃতদের কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।”

সুতরাং, কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত ১০ ব্যক্তি জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

ছাত্রদল সভাপতি হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার বিচার চেয়েছেন দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

গত ২৬ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে  উভয়পক্ষের তোপের মুখে পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।

এই প্রেক্ষাপটে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, ছাত্রদল সভাপতি বলেছেন “হাসনাত আব্দুল্লাহ’র উপর যারা হামলা করেছে তাদের বিচার করতে হবে”। পোস্টটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।  

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “হাসনাত আব্দুল্লাহ’র উপর যারা হামলা করেছে তাদের বিচার করতে হবে” শীর্ষক কোনো মন্তব্য ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব করেননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আলোচিত পোস্টগুলোতেও এই দাবি সপক্ষে কোনো তথ্য বা প্রমাণ দেওয়া হয়নি। এছাড়া, রাকিবুল ইসলাম রাকিবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও হাসনাত আবদুল্লাহর ছবি তাদের নিজ নিজ ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া হয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। দেখুন এখানে এবং এখানে। 

Collage: rumor scanner 

সুতরাং, “হাসনাত আব্দুল্লাহ’র উপর যারা হামলা করেছে তাদের বিচার করতে হবে” শীর্ষক মন্তব্য ছাত্রদল সভাপতি করেছেন বলে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis

শবে বরাত উপলক্ষে দেশের সবাইকে সরকারের ৫৩০০ টাকা অনুদান দেওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

গত ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি “আসন্ন পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে সরকার দিচ্ছে দেশের সবাইকে ৫৩০০ টাকা অনুদান, যা সরাসরি বিকাশে প্রদান করা হবে।” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসন্ন পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে দেশের সবাইকে সরকারের ৫৩০০ টাকা অনুদান দেওয়ার কোনো ঘোষণা সরকার বা বিকাশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি বরং, ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই প্রলোভন দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত পোস্টগুলোতে থাকা ওয়েবসাইট লিংকে প্রবেশ করলে উপরে বিকাশের লোগো এবং “শবে বরাতে সরকারের বিশেষ উপহার” শীর্ষক একটি লেখা পাওয়া যায়। 

Screenshot : Scamming website

এরপর বিস্তারিত অংশে বলা হয়, “সারাদেশের সবাই পাবে। প্রত্যেক নাগরিক এই সুযোগ একবার পাবে। ৫৩০০ টাকা পেতে আপনাকে নিচের ফর্মটি পূরণ করতে হবে। ফর্ম পূরণ করার পর সরাসরি ৫৩০০ টাকা আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এই অফারটি সীমিত সময়ের জন্য! তাই দেরি না করে এখনই নিচের ফর্মটি পূরণ করুন এবং অফারে অংশ নিন।”

Screenshot : Scamming website

আরেকটু নিচে স্ক্রল করলেই টাকা পাওয়ার জন্য একটি ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে বলা হয়। ফর্মটিতে নিজের নাম, জেলা, এই মূহুর্তে (ফর্ম পূরণ করার মুহূর্তে) বিকাশ অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, বয়স, জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন/স্টুডেন্ট আইডি নম্বর, বিকাশ সার্ভিস কেমন লাগে ইত্যাদি তথ্য জানতে চাওয়া হয়।

Screenshot : Bkash payment page, redirected from Scamming website

রিউমর স্ক্যানার টিমের একজন অনুসন্ধানকারী নিরাপত্তাজনিত কারণে ভুল তথ্য দিয়ে উক্ত ফর্ম পূরণ করে জমা দিলে এটি আরেকটি নতুন পেজে নিয়ে যায়। উক্ত নতুন পেজটিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করে রিউমর স্ক্যানার টিম। নতুন পেজের ইন্টারফেসটি হুবহু বিকাশে পেমেন্ট করার ইন্টারফেসের মতো। তাছাড়া, দাবি অনুসারে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারীর ৫৩০০ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও নতুন ইন্টারফেসটি হচ্ছে কাউকে টাকা পেমেন্ট করার ইন্টারফেস। অধিকন্তু, এখানে পেমেন্ট গেটওয়ের জায়গায় বিকাশ কর্তৃপক্ষের কোনো কিছুর বদলে “sagor enterprise” নামটি দেখা যায়৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পূর্ববর্তী ফর্মে নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্টে আছে হিসেবে উল্লেখ করা ২৪০০ টাকাই এখানে পেমেন্টের পরিমাণ। এরপর বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার চাওয়া হয়। 

এ পর্যায়ে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারী বিকাশহীন নিজের একটি নাম্বার দিলে “The input wallet is not eligible” লেখাটি প্রদর্শন করে, যা প্রমাণ করে এটি বিকাশের আসল পেমেন্ট পেজেই নিয়ে এসেছে৷ তাছাড়া এ বিষয়ে বিকাশের ডোমেইন নাম দেখেও নিশ্চিত হওয়া যায়৷

Screenshot : Bkash payment page, redirected from Scamming website

তবে, উক্ত একই ফর্ম একটু পর পুনরায় পূরণ করলে এবার পেমেন্ট গেটওয়ের জায়গায় “BABU ENTERPRISE” নামে ভিন্ন আরেকটি নাম দেখা যায়। তবে আগের বারের মতো এবারও বিকাশ অ্যাকাউন্টে সর্বমোট উল্লেখ করা টাকার পরিমাণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেমেন্টের পরিমাণে চলে আসে।

Screenshot : Bkash payment page, redirected from Scamming website

তারপর সঠিক বিকাশ নাম্বার দিলে ওটিপি চাওয়া হয়। সঠিক ওটিপি দিলে পরবর্তীতে পাসওয়ার্ড চাওয়া হয়৷ অর্থাৎ, বিকাশ নাম্বার, ওটিপি এবং পাসওয়ার্ড ঠিকভাবে বসালে অ্যাকাউন্টে থাকা তথা ফর্মে উল্লেখ করা টাকা প্রতারকের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। কিন্তু, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারী সঠিক পাসওয়ার্ড দিয়ে সর্বশেষ ধাপটি সম্পন্ন করেন নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে, দেশের সবাইকে ৫৩০০ টাকা অনুদান দেওয়ার কোনো ঘোষণা সরকার বা বিকাশ দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড সার্চ করলে বিকাশের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, আসন্ন পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে দেশের সবাইকে সরকারের ৫৩০০ টাকা অনুদান দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ইডেন কলেজের সমন্বয়ক ফারিয়ার আপত্তিকর দৃশ্য দাবিতে সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আপত্তিকর ছবি আরো কয়েকটি স্ক্রিনশটের সাথে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, আপত্তিকর উক্ত ছবিটি ইডেন কলেজের সমন্বয়ক ফারিয়া রহমান নামের এক নারীর।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইডেন কলেজের সমন্বয়ক ফারিয়ার আপত্তিকর ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং, অনলাইনে বিদ্যমান ভিন্ন এক নারীর ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ফারিয়ার ছবি দাবিতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, ২০২৩ সালের ১২ আগস্টে রিংকি যাদব নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘টেলিগ্রাম ১৮+ লিংকস’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে প্রচারিত একজন নারীর একটি আপত্তিকর ছবি পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ছবিটিতে প্রদর্শিত ব্যক্তির পোশাক, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং অঙ্গভঙ্গির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়, যা থেকে বুঝা যায় যে উক্ত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তার সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়া, উক্ত ছবিটি আরো কিছু ওয়েবসাইটেও প্রচার হতে দেখা যায় তবে সংগত কারণে নাম উল্লেখ করা হচ্ছে না।

সুতরাং, ইডেন কলেজের সমন্বয়ক ফারিয়ার আপত্তিকর ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসের সকল নাগরিককে ৮০০০ টাকা উন্নয়ন ভাতা দেওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “দেশের সকল নাগরিককে ৮০০০ টাকা উন্নয়ন ভাতা দিচ্ছে ড. ইউনূস” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।প্রচারিত উক্ত ফেসবুক পোস্টটির সাথে একটি লিঙ্ক সংযুক্ত করে লিঙ্কটিতে ক্লিক করতে বলা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের সকল নাগরিককে ৮০০০ টাকা উন্নয়ন ভাতা দেওয়ার কোনো ঘোষণা ড. ইউনূস এর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি বরং, ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই প্রলোভন দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত পোস্টগুলোতে থাকা ওয়েবসাইট লিংকে প্রবেশ করলে উপরে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো এবং “বিকাশে ৮,০০০ টাকা উন্নয়ন ভাতা” শীর্ষক একটি লেখা পাওয়া যায়। এরপর বিস্তারিত অংশে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ৮,০০০ টাকা উন্নয়ন ভাতা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। এই ভাতা দেশের প্রত্যেক যোগ্য নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। এবং অফারের বিস্তারিত হিসেবে লেখা আছে, প্রতি নাগরিককে ৮,০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্রধারী বাংলাদেশিরাই আবেদন করতে পারবেন। আবেদনকারীদের তথ্য যাচাই করা হবে এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের বিকাশ একাউন্টে অর্থ প্রদান করা হবে।

Screenshot :Scamming website

আরেকটু নিচে স্ক্রল করলেই টাকা পাওয়ার জন্য একটি ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে বলা হয়। ফর্মটিতে নিজের নাম, জাতীয় পরিচয় পত্র/ ভোটার আইডির কার্ড নম্বর মনে আছে কিনা, বিকাশ নম্বর, বিকাশ নম্বর চালু আছে কিনা এবং এই মূহুর্তে (ফর্ম পূরণ করার মুহূর্তে) বিকাশ অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে ইত্যাদি তথ্য জানতে চাওয়া হয়।

রিউমর স্ক্যানার টিমের একজন অনুসন্ধানকারী নিরাপত্তাজনিত কারণে ভুল তথ্য দিয়ে উক্ত ফর্ম পূরণ করে জমা দিলে এটি আরেকটি নতুন পেজে নিয়ে যায়। এই পেজে আলিএক্সপ্রেসের একটি প্রমোশনাল বিজ্ঞাপন দেখা যায়, যার সাথে আলোচিত দাবি কিংবা বাংলাদেশ সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে, দেশের সকল নাগরিককে ৮০০০ টাকা উন্নয়ন ভাতা দেওয়ার কোনো ঘোষনা ড. ইউনূস এর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড সার্চ করলে Chief Adviser GOB ফেসবুক পেজ, গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, দেশের সকল নাগরিককে ৮০০০ টাকা উন্নয়ন ভাতা দিচ্ছে ড. ইউনূস শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

শামীম ওসমানের ক্ষমা প্রার্থনা ও দেশে ফিরতে চাওয়ার দাবিটি সত্য নয়  

0

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই দলটির বহু নেতাকর্মী দেশ ছেড়েছে। একইভাবে আওয়ামী লীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানও দেশ ছেড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে দেশে ফেরত আসতে চায় শামীম উসমান’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শামীম ওসমান জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে দেশে ফিরে আসতে চাওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং, তার ২০২৩ সালের একটি ভিডিওবার্তার প্রেক্ষাপট ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ‘হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলেন শামীম ওসমান’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত দাবিতে ব্যবহৃত ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম ওসমান সর্বসাধারণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন৷ পবিত্র ওমরাহ হজ পালনের উদ্দেশ্যে সপরিবারে সৌদি আরব যাবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ফিরে আসব কি না আমি জানি না। আপনারা দোয়া করবেন। এই কবরস্থানে আমার বাবা-মাসহ পরিবারের অনেকে শুয়ে আছেন। আমিও যেন এখানে তাদের সঙ্গে থাকতে পারি এই দোয়া করবেন।” 

পরবর্তীতে একই ঘটনায় ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ‘হাত জোড় করে সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন শামীম ওসমান’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনের ভিডিও চিত্রের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মিল রয়েছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ২০২৩ সালে প্রচারিত শামীম ওসমানের একটি ভিডিওবার্তার বক্তব্য ও ছবি সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে শামীম ওসমানের ক্ষমা প্রার্থনা ও দেশে ফিরতে চাওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ২০২৩ সালের ভিন্ন ঘটনায় শামীম ওসমানের দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে দেশে ফিরে আসতে চায় দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বিবিসিকে দেওয়া শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পুরোনো

0

সম্প্রতি, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে “বিবিসির সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনা” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ৫৬ হাজারেরও অধিকবার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ৬ হাজারের অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে প্রায় ৬ শতবার। ভিডিওটিতে ৩ শতাধিক বার মন্তব্য করা হয়েছে। ভিডিওটির মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে উক্ত দাবির পক্ষে মতামত দিতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বিবিসিকে দেয়া শেখ হাসিনার কোনো সাক্ষাৎকারের ভিডিও নয় বরং, এটি ২০০৭ সালে আল জাজিরাকে পুরোনো সাক্ষাৎকারের ভিডিও। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির ক্যাপশন পর্যবেক্ষণ করে এতে বিবিসির কথা উল্লেখ পাওয়া যায়। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বিবিসির ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইট যাচাই করে সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার এমন কোনো সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও থেকে কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০০৭ সালে কাতার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরার ইউটিউব চ্যানেলে ২০০৭ সালের ২৮ এপ্রিল ‘Frost Over The World – Sheikh Hasina Wazed -27 Apr 07‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ৮ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির ৩ মিনিট ২২ সেকেন্ডে উপস্থাপক ডেভিড ফ্রস্টকে প্রশ্ন করতে দেখা যায়, আপনি কি আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চান? এর উত্তরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা আমাদের জনগণের উপর নির্ভর করে। আমাদের জনগণ যদি আমাকে চায় তাহলে। এটা জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আমি এটা কিভাবে বলতে পারি? অবশ্যই আমি আমার জনগণের সেবা করতে চাই। আমি আমার জনগণের জন্য কাজ করতে চাই।’ 

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো সাক্ষাৎকারের নয়। 

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে বিবিসিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সম্পত্তিতে নারীর অধিকার প্রসঙ্গে জানাক মুখপাত্র সামান্তা শারমিনকে উদ্ধৃত করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার

0

গত ০১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ঢাকার বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে নারীর হিস্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ উক্ত আলোচনা সভায় বক্তারা নানা বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে দাবি প্রচার করা হয়, “সংগঠনের [জাতীয় নাগরিক কমিটি] মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকার ১৫ বছরে নারী নেতৃত্ব তৈরির পুরো প্রক্রিয়াকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। নারীকে নিয়ে রাজনীতির প্রচলিত সংস্কৃতির পরিবর্তন করা হবে। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়গুলো এখন আলোচনায় আসা উচিত।”

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন দেখুন : প্রথম আলো

উল্লেখ্য যে, প্রথম আলো তাদের প্রতিবেদন পরবর্তীতে সংশোধিত করেছে।

একই দাবিতে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ক্যাম্পাস টাইমস প্রেসও ফটোকার্ড প্রচার করেছে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে তারা ফটোকার্ডটি সরিয়ে নিয়ে এ বিষয়ে নতুন ফটোকার্ড প্রচার করে।

উক্ত দাবিতে ক্যাম্পাস টাইমসের ফটোকার্ডসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেটিজেনদের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন ‘সম্পদে নারীর সমান অধিকার’ এর কথা বলেননি বরং তিনি নারীদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেছেন। ‘সমান অধিকার’ শব্দগুচ্ছ তিনি উল্লেখ করেননি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় নাগরিক কমিটির ফেসবুক পেজে গত ০১ ফেব্রুয়ারিতে “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে নারীর হিস্যা।” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ফেসবুক লাইভ ভিডিও সম্প্রচার পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের বক্তব্যও পাওয়া যায়।

তার বক্তব্যে তিনি বলেছেন : “[…] ফিমেল এম্পাওয়ারমেন্ট এর সাথে অবশ্যই এখানে সম্পত্তির অধিকার জড়িত। আমাদের দেশে এই মুহুর্তে নারীদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যে আইন ব্যাবহার করা হয় সেটা একচুয়ালি পাকিস্তান আমলের আইন। পাকিস্তান আমলের আইন দিয়ে আমরা এখনো.. পাকিস্তান আমলের আইন দিয়ে আমরা শ্রম আইন করেছি, ১৮৬১ সালের ব্রিটিশ আইন দিয়ে পেনাল কোড এবং পরবর্তীতে পুলিশ আইন সেটাও ১৮৬১ সালের। নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য যে আইন সেটাও পাকিস্তান আমলের।.. নারীদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করা, পাওয়ার এক্সারসাইজ এর জায়গাগুলোতে নারীদের কি জায়গা থাকতে পারে এ জায়গাগুলো নিয়ে কথা বলা , সামনের দিনে এই আলাপগুলো আসা জরুরি।..”

তার উক্ত বক্তব্যে ‘সম্পদে নারীর সমান অধিকার’ এর কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, সামান্তা শারমিন মূলত নারীদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেছেন। একইসাথে বর্তমান আইনটি (মুসলিম পারিবারিক আইন – ১৯৬১) পাকিস্তানের আইন বলে উল্লেখ করেছেন। বিদ্যমান এই আইনের সমস্যা কিংবা এই আইনের কেমন সংস্কার চান, এখানে তিনি সমতা চান কিনা সে বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি।  তবে এটি নিশ্চিত যে তিনি তার বক্তব্যে ‘সম্পদে নারীর সমান অধিকার’ শব্দগুচ্ছ উল্লেখ করেননি।

সুতরাং, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন ‘সম্পদে নারীর সমান অধিকার’ এর কথা বলেছেন শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র