সম্প্রতি ‘কুমিল্লায় অভিযান চলাকালীন সময় জান্নাতি দলের জামাত-শিবির নেতাকর্মীর কাছ থেকে কিছু বেহেশতে যাওয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত ১০ জন জামায়াতে-শিবিরের নেতা-কর্মী নন। কোনো প্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়া গ্রেফতারকৃতরা জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে৷
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে গত ২৬ জানুয়ারি ‘কুমিল্লায় বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ১০’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে আলোচিত দাবিতে ব্যবহৃত ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়৷

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর সেনাবাহিনীর একটি দল বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলভার, তিনটি শর্টগান, ৯ রাউন্ড শটগানের বুলেট, ৪ রাউন্ড পিস্তল ও রিভলবারের বুলেটসহ বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- নগরীর ঝাউতলা এলাকার মো. নাইমুল ইসলাম নাঈম (৩৬), মো. জাবেদুর রহমান (২৯), কালিয়াজুড়ির আবির হামিদ মাহি (২১), মো. রাকিব (২১), ছোটরা এলাকার মো. সাজিদুল ইসলাম (২১), মোহাম্মদ আলী (২৪), মো. সাব্বির হোসেন (২১), ধর্মসাগর পাড় এলাকার অভিজিৎ রায় সরকার (৩০), মো. অপু (৪২) ও বুড়িচংয়ের সাদকপুর এলাকার মো. আবুল খায়ের (৩৯)। প্রতিবেদনে গ্রেফতারকৃতদের কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি৷
পরবর্তীতে একই ঘটনায় মূলধারার সংবাদমাধ্যম দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইটে গত ২৬ জানুয়ারি ‘কুমিল্লায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১০’ শিরোনামে একই ছবি ব্যবহার করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ তবে উক্ত প্রতিবেদনেও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি৷
এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহিনুল ইসলাম ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “গ্রেফতারকৃতদের কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।”
সুতরাং, কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃত ১০ ব্যক্তি জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা৷
তথ্যসূত্র
- Channel 24 – কুমিল্লায় বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ১০
- দেশ রূপান্তর – কুমিল্লায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১০
- Statement of Officer-in-Charge of Cumilla Kotwali Model Police Station