সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাবলিতে হাসনাত-সারজিসের জড়িত থাকার ভুয়া তথ্য প্রচার

গত ১৪ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র পাঁচদিনের ব্যবধানে দেশে তিনটি ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে গত ১৯ অক্টোবর থেকে ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ৩ জনের ভাষ্যমতে হাসনাত ও সারজিসের নির্দেশে এই অগ্নিকাণ্ড গুলো হয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে মিরপুরের গুদাম, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এছাড়া, কথিত গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের উল্লিখিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নির্দেশনা প্রদানের তথ্যও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের ফ্রি ডোমেইন সাইটে প্রকাশিত একটি কথিত প্রতিবেদনের বরাতে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত দাবিগুলোর পোস্টের কমেন্টে তথ্যসূত্র হিসেবে একটি ব্লগপোস্টের লিংক দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘sadhinnews247.blogspot.com’ নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়।

উক্ত লিংকে ‘রাজধানীতে ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনজন গ্রেফতার, পেছনে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের নির্দেশ!’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Collage: Rumor 

উক্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রাজধানীতে সাম্প্রতিক ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত ১৯ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৃথক অভিযানে তাদের আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা প্রত্যক্ষভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিল।

ডিবির বরাত দিয়ে কথিত এই সংবাদ সূত্রে জানা যায়, আটক তিনজন স্বীকার করেছে যে, তারা জাতীয় নাগরিক পার্টির দুই নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের নির্দেশে এসব অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, এই অগ্নিকাণ্ডগুলোর উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানো এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পরবর্তীতে বাংলাদেশ পুলিশবাংলাদেশের সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্রে আলোচিত দাবিকে সমর্থন করে এমন কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷

উল্লেখ্য, রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এসব ফ্রি ডোমেইনের সাইটগুলো নিয়ে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা গেছে এসব ফ্রি ডোমেইনের পেছনে সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে।

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের জড়িত থাকার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img