সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে “যোগেশচন্দ্র কলেজে পুলিশের পাহারায় হবে সরস্বতী পুজো, নির্দেশ হাইকোর্টের” শীর্ষক লেখা সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয় “আমরা নাকি স্বাধীন?”।
অর্থাৎ, দাবি প্রচার করা হয়েছে যে আলোচিত ঘটনাটি বাংলাদেশের। উল্লেখ্য যে, মূলত বাংলাদেশি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজ থেকে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যোগেশচন্দ্র কলেজে পুলিশের পাহারায় সরস্বতী পূজা হওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত কলেজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘এই সময়’ এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ জানুয়ারি ‘পুলিশি নিরাপত্তায় সরস্বতী পুজো, যোগেশচন্দ্র ল কলেজ নিয়ে বড় নির্দেশ হাইকোর্টের’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷
উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “যোগেশচন্দ্র ল কলেজে সরস্বতী পুজো করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশি নিরাপত্তায় কলেজে সরস্বতী পুজো করার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার কোনও অফিসারের উপস্থিতিতে পুজো করতে হবে বলেও শুক্রবার [৩১ জানুয়ারি] আদালত জানিয়ে দিয়েছে।” উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি সংবাদমাধ্যমটির কলকাতা বিভাগে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া, প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, উক্ত কলেজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত।
পরবর্তী অনুসন্ধানে এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের ওয়েবসাইটে “পুলিশ প্রহরায় চলল পুজো, যোগেশচন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য, মালা” শীর্ষক শিরোনামে আজ (০২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে কড়া পুলিশি প্রহরায় যোগেশচন্দ্র কলেজের ভিতরে হল আইন বিভাগের পুজো। […] গত শুক্রবার [৩১ জানুয়ারি] কলকাতা হাই কোর্ট যোগেশচন্দ্র আইন কলেজে পুলিশ মোতায়েন করে সরস্বতী পুজোর অনুমতি দেয়। উচ্চ আদালত জানায়, বহিরাগতেরা যাতে কলেজে প্রবেশ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। কলেজে কারা প্রবেশ করছেন, কারা বার হচ্ছেন, তার উপরও নজর দিতে হবে। এর পরেও বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ে সরস্বতী পুজোর দিন বিক্ষোভ দেখালেন আইন বিভাগের পড়ুয়ারা।”
অর্থাৎ, উল্লিখিত যোগেশচন্দ্র কলেজ ও কলেজে হওয়া সরস্বতী পূজায় পুলিশি পাহারার ঘটনাটি ভারতের।
তাছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও উক্ত নামে বাংলাদেশে কোনো কলেজে পুলিশি পাহারার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের যোগেশচন্দ্র কলেজে পুলিশের পাহারায় সরস্বতী পূজা হওয়ার ঘটনাকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।