Home Blog Page 140

মাকে ভেতরে রেখে সম্প্রতি সমন্বয়করা ঘরে আগুন লাগিয়েছে দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

0

অন্তত গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “একজন মাকে ঘরের ভিতর রেখে আগুন ধরিয়ে দিল সমন্বয়ক নামধারী ডাকাত, জ*ঙ্গিরা”।

প্রচারিত ভিডিওটিতে একটি ঘর পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য প্রদর্শিত হয় এবং ব্যকগ্রাউন্ডে এক ব্যক্তির আহাজারির দৃশ্য শোনা যায়।

সমন্বয়করা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উল্লেখ্য যে, উক্ত দাবিতে লন্ডন মহানগর যুবলীগের সভাপতি তারেক আহমেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ আহমদ শাহীনও উক্ত ভিডিওটি তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং প্রায় তিন বছরের পুরোনো ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে ‘মো: জুবায়ের’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২২ সালের ৩ এপ্রিলে “নোয়াখালী বসুরহাট মাকে ঘরে রেখে আগুন ধরিয়ে দিল” ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং প্রায় তিন বছর পুরোনো৷ 

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধানে ‘মো: শাহাদত হোসাইন’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই বছরের ৯ জানুয়ারি প্রচারিত ভিন্ন একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতেও একজন ব্যক্তিকে আহাজারি করতে দেখা যায় এবং প্রচারিত ভিডিওটির মতো একই কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ঘরের ভেতর তার মাকে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “ধিক্কার জানাই একরকম নিষ্ঠুরতার। ইউপি নির্বাচন কে কেন্দ্র করে ভোলায় মাকে ঘরে আটকে রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মাকে বাঁচাতে ছেলে ফেসবুক লাইভে এসে আহাজারি করছে…. ভিডিওটি সংগ্রহ”।

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ফেস দ্য পিপল-নিউজ’ এর ফেসবুক পেজে আহাজারি করা উক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি প্রচারিত একটি ফেসবুক লাইভ পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “#মাকে_ঘরে_রেখে_আগুন । আছেন সেই রাসেল।  ভোলায় নির্বাচনী সহিংসতায় রাসেলের মা”কে ঘরে রেখে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা । সেই ভয়ানক দৃশ্য ও তার কারণ জানাচ্ছেন আর্তনাদ করা সেই সন্তান রাসেল।” ভিডিওটিতে উক্ত ব্যক্তিকে নিজের ডাক নাম রাসেল হোসাইন বলতে শোনা যায় এবং তিনি জানান ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি রাজনৈতিক ও নির্বাচনী কারণে তার ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

তবে, প্রচারিত আগুনের ভিডিওটি ও ব্যাকগ্রাউন্ডের আহাজারি একই ঘটনার এবং একইসাথে ধারণকৃত কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে প্রচারিত ভিডিওটি এবং ভিডিওটিতে সংযুক্ত ব্যাকগ্রাউন্ডের আহাজারি অন্তত দুই বছরের পুরোনো।

সুতরাং, অন্তত দুই বছরের পুরোনো আগুনে ঘর পোড়ার ও আহাজারির ভিডিও প্রচার করে সাম্প্রতিক সময়ে একজন মাকে ঘরের ভিতর রেখে সমন্বয়ক আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গাজীপুরে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার ঘটনায় একাধিক নিহতের ভুয়া দাবি

0

গত ০৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় হামলাকারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালানোয় অনেকে আহত হন। উক্ত ঘটনায় অন্তত একজন থেকে সর্বোচ্চ দশজনের (শিবির ও সমন্বয়ক দাবিও রয়েছে) নিহতের দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

মোজাম্মেল হকের

দশজন নিহত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷ 

তিনজন নিহত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷ 

দুইজন নিহত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একজন নিহত হওয়ার দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার ঘটনায় কোনো ব্যক্তি নিহত হয়নি বরং, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে মৃত্যুর ভুয়া দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে ০৮ ফেব্রুয়ারি “গাজীপুরে শুক্রবার রাতে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে কী ঘটেছিল?” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় হামলাকারীদের ওপর পাল্টা হামলা চালানোয় অনেকে আহত হয়েছেন। হামলায় অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানান গাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।

একই তারিখ প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত হামলার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। 

গণমাধ্যমটিকে গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন মাহমুদা আখতার বলেন, ১৫-১৬ জনকে তাজউদ্দীন মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ছাত্র–জনতার পরিচয় দিয়ে সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় স্থানীয় লোকজন হামলাকারীদের আটক করে মারধর করেছেন। এতে ১২-১৩ জন আহত হয়েছেন বলে তাঁদের কাছে তথ্য রয়েছে।

এছাড়া, ১০ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও ১৭ জন আহতের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

তবে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে উক্ত ঘটনায় কারো নিহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহতের ঘটনা ঘটেছে শীর্ষক একাধিক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সমন্বয়ক ও হিযবুত তাহ্‌রীর বিরোধী নয়, ভিডিওটি ২০২৩ সালের গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রচারণার

0

সম্প্রতি “সমন্বয়ক ও হিযুবত তাহেরীর লোকজন গাজীপুরে আসতেছে শুনে গাজীপুরের মানুষ সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে রাজপথ দখলে নিয়ে নেই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গাজীপুরে সমন্বয়ক ও হিযবুত তাহ্‌রীর লোকজনের বিরুদ্ধে রাজপথ দখলের দৃশ্যের নয় বরং, এটি ২০২৩ সালে প্রতীক বরাদ্দের পর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আয়োজিত একটি সমাবেশের দৃশ্য।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরু আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘তুরাগ টাইমস’ নামের একটি ফেসবুক পেজে  গত ১৮ ডিসেম্বর ‘প্রতীক বরাদ্দের পর গাজীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উচ্ছ্বাস!গাজীপুর ১, ২ ও ৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে মাঠে নেমেছে গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ১ মিনিট ১৫ সেকেন্ড অংশের দৃশ্যের মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত তথ্যেরসূত্র ধরে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ‘প্রতীক বরাদ্দের পর জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একমঞ্চে ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একমঞ্চে উপস্থিত হন গাজীপুরের তিনটি আসনের ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী। প্রতীক বরাদ্দের পর ১৮ ডিসেম্বর (সোমবার) দুপুর ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে রাজবাড়ী মাঠে গাজীপুরের সাবেক মেয়রের সঙ্গে উপস্থিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। প্রার্থীরা হলেন- গাজীপুর-১ আসনের (কালিয়াকৈর) স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম, গাজীপুর-২ (সদর আসন) স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিমুদ্দিন, গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামান। 

এছাড়া, এ বিষয়ে দেশের মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন (,) থেকেও একই তথ্য জানা যায়।প্রচার করে। 

সুতরাং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আয়োজিত একটি সমাবেশের দৃশ্যকে সমন্বয়ক ও হিযবুত তাহ্‌রীর লোকজনের বিরুদ্ধে রাজপথ দখলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশের আগুন দেওয়ার দাবিতে পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

0

গত ৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলের বাড়িতে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। যাতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামের অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশের আগুন দেওয়ার ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশের আগুন দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। বরং, ২০১৬ সালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আঁখের খামারের জমিতে অবস্থিত সাঁওতালদের বসতিতে পুলিশের আগুন দেওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে এতে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম সময় টেলিভিশন-এর লোগো দেখতে পায়। পরবর্তীতে সময় টেলিভিশনের ফেসবুক পেজে ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর পুলিশের দেয়া আগুনে পুড়ে ছাই সাঁওতালপল্লী শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওটি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অবস্থিত রংপুর সুগার মিলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার এলাকায় সাঁওতালদের বসতিতে পুলিশ সদস্যদের আগুন দেওয়ার ঘটনার।

পরবর্তী অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সাঁওতালদের ঘরবাড়িতে প্রথম আগুন দিয়েছিল পুলিশ! (ভিডিও) শীর্ষক শিরোনামে একই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আঁখ কাটাকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে সেবছরের ৬ নভেম্বর পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল মারা যান এবং আরও চারজন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও সাঁওতালদের ছোড়া তীরে আহত হন ৯ পুলিশ। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ইক্ষু খামারের জমি থেকে সাঁওতালদের বসতি উচ্ছেদ করে। এ সময় তাদের বসত-ঘরগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

সুতরাং, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের বসতিতে পুলিশের আগুন দেওয়ার পুরোনো ভিডিওকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ভিডিও দাবিতে ইন্টারেনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আগুনে একজনের দগ্ধ হয়ে ছাই হওয়ার দাবিটি ভিত্তিহীন

0

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে ঘটনা পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, “ধানমন্ডি ৩২ এর ছাদে নিজের হাতে লাগানো আগুনে একজন আটকা পড়ে দগ্ধ হয়ে ছাই হয়ে গেছে”।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ধানমন্ডি ৩২ এর ছাদে নিজের হাতে লাগানো আগুনে একজন আটকা পড়ে দগ্ধ হয়ে ছাই হয়ে যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে ৫ ফেব্রুয়ারিতে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার এখন পর্যন্ত কারোর নিহত হওয়ার কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে, উক্ত ঘটনায় কেউ নিহত না হলেও আহতের খবর পাওয়া গেছে।

সুতরাং, ‘ধানমন্ডি ৩২ এর ছাদে নিজের হাতে লাগানো আগুনে একজন আটকা পড়ে দগ্ধ হয়ে ছাই হয়ে গেছে’ শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

তথ্যসূত্র

পিনাকী ভট্টাচার্যের বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ভুয়া দাবি প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে যে, “এবার বিক্ষুব্ধ ছাত্র – জনতার দেয়া আগুনে পুড়ছে পিনাকী ভট্টাচার্যের বাড়ি।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

পিনাকী

এছাড়া, “এবার ছাত্রলীগের দেয়া আগুনে পুড়ছে পিনাকী ভট্টাচার্যের বাড়ি” শীর্ষক দাবিও ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পিনাকী ভট্টাচার্যের বাড়ি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বা ছাত্রলীগের আগুনে পোড়ানোর দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় বরং, ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে আমার দেশের লোগো ব্যবহার করে ভুয়া সংবাদের লিংক তথ্যসূত্র হিসেবে আলোচিত পোস্টগুলোর মন্তব্যের ঘরে উল্লেখ করে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে সূত্র হিসেবে দেওয়া মন্তব্যের ঘরে একটি লিংক পাওয়া যায়। লিংকটিতে প্রবেশ করে ব্লগস্পটে একটি বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে ‘ব্রেকিং নিউজ: ডাক্তার পিনাকী ভট্টাচার্যের গ্রামের বাড়িতে আগুন দিলো ছাত্রলীগ’ শীর্ষক শিরোনামে গত ১০ ফেব্রুয়ারির তারিখে আলোচিত বিষয়ে কথিত একটি সংবাদ প্রকাশ দেখতে পাওয়া যায়।

সাইটটির লোগো হিসেবে আমার দেশের লোগো ব্যবহার হলেও এর ইউআরএলে ব্যবহার হয়েছে ‘আমার দেশ’ এর ভুল বানান: amardeesh247.

কথিত সংবাদটি পড়ে দেখা যায়, এতে দাবি করা হয়েছে, “বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. পিনাকী ভট্টাচার্যের গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আজ রাত ৯টার দিকে একদল মুখোশধারী যুবক বাড়িটিতে প্রবেশ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। … স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেলে করে এসে প্রথমে বাড়িটির গেট ভাঙার চেষ্টা করে। পরে তারা পেট্রোল ঢেলে একাধিক স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা পানি দিয়ে নেভানোর চেষ্টা করলেও ততক্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। … প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আগুন লাগানোর সময় তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকে, যা সাধারণত ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে ব্যবহৃত হয়। তবে, স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, এটি তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হতে পারে। … ফ্রান্সে নির্বাসিত অবস্থায় থাকা ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “এটি ক্ষমতাহীনদের ফ্যাসিবাদী দমন-পীড়নের আরেকটি উদাহরণ।””

এছাড়াও কথিত উক্ত তথ্য প্রতিবেদনে ঘটনার বিষয়ে আরো কিছু দাবি করা হয়। পিনাকীর বাড়ি আগুনে পোড়ার দৃশ্যের ভিডিও দাবিতে একটি লিঙ্কও কথিত প্রতিবেদনে সংযুক্ত করা হয়। তবে উক্ত লিঙ্কে আগুনে বাড়ি পোড়ার কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। কথিত উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে পিনাকীর বাড়ির নামফলকের একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে উক্ত নামফলকের ছবিটি পিনাকীর বাড়ির নামফলকের নয় বরং ভিন্ন একটি নামফলকের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার ইতোমধ্যে একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

উল্লেখ্য যে, কথিত উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে আগুন লাগানোর জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করা হলেও উক্ত কথিত প্রতিবেদনের লিঙ্ককে সূত্র হিসেবে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’ আগুন লাগিয়েছে দাবিতেও প্রচার করা হয়েছে।

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে উক্ত কথিত প্রতিবেদন ছাড়া মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমার দেশের প্রকৃত ওয়েবসাইটেও এ বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। কথিত উক্ত প্রতিবেদনে বাড়ি আগুনে পোড়ার বিষয়ে পিনাকী ভট্টাচার্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা জানিয়েছেন দাবি করা হলেও তার ফেসবুক বা এক্স অ্যাকাউন্টে উল্লিখিত বিষয়ে এরূপ কোনো পোস্ট বা মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের বাড়ি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বা ছাত্রলীগ পুড়িয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনী কর্তৃক কালেমা খচিত এই কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়নি

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তালেবানী জিহাদি সন্ত্রাসীদের পতাকা উত্তোলন করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও ইউএসএআইডির এজেন্ট।’ এমন দাবিতে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে।

কালেমা খচিত

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজতক বাংলা’র একটি অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশি এক্টিভিস্ট নিঝুম মজুমদার৷ ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কালেমা খচিত কালো পতাকা উত্তোলন করেনি বরং, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার শাহবাগে গণভবন অভিমুখে বিক্ষোভকারীদের এগিয়ে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় সেনাবাহিনীর গাড়ি বহরের পাশে জনতার কালেমা খচিত পতাকা উত্তোলনের ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির ওয়েবসাইটে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, এটি গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকায় গণভবন অভিমুখে পাশে জনাকয়েক সেনাসদস্যসহ বিক্ষোভকারীদের যাত্রার ছবি।

এছাড়া বিবিসির এই ছবিতে ওয়াটারমার্কে  থাকা তথ্য অনুযায়ী ছবিটির স্বত্বাধিকারী ছবি শেয়ারিং এবং স্টোরেজ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গেটি ইমেজেস। পরবর্তীতে গেটি ইমেজেসের ওয়েবসাইটে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটির বর্ণনায়ও বিবিসির ন্যায় একই তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়। ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবিটি ধারণ করেছেন এএফপির ফটোসাংবাদিক মুনির উজ জামান।

Comparison: Rumor Scanner

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজে কলেমা খচিত সবুজ পতাকা উত্তোলন করতে দেখা যায়। যেটি বিগত সরকারগুলোর সময়েও পরিলক্ষিত হয়েছে।

Photo: ISPR

সুতরাং, গত বছরের ৫ আগস্ট গণভবন অভিমুখে বিক্ষোভকারীদের এগিয়ে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় সেনাবাহিনীর গাড়ি বহরের পাশে জনতার কালেমা খচিত পতাকা উত্তোলনের ঘটনাকে সেনাবাহিনী কর্তৃক এই পতাকা উত্তোলন করা হয় দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/Update

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫: এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একটি অনুষ্ঠানে একই দাবি প্রচার হওয়ার প্রেক্ষিতে তা প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করে প্রয়োজনীয় হালনাগাদ সম্পন্ন করা হলো। 

ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজের নামে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের সন্তানের প্রতি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা কলেজ একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তির ছবি প্রচার করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, যারা ১৪ই ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত ক্লাসের নাম দিয়ে কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হবে তাদের চিহ্নিত করুন। ১৪ই ফেব্রুয়ারি কোনো এক্সট্রা ক্লাস নেই। যদি কেউ বলে এক্সট্রা ক্লাস আছে, তার ফোন ভালোভাবে চেক করুন, আপনার সন্তান প্রেমে আসক্ত। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিতে অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।’

ফেসবুকে প্রচারিত এমন বিজ্ঞপ্তি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিটি সঠিক নয় বরং, কলেজটির ২০২৪ সালের ভিন্ন একটি বিজ্ঞপ্তি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভুয়া এই বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটি পর্যালোচনা করে এতে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের তারিখ ০৯/০২/২০২৫ দেখা গেলেও এতে থাকা অধ্যক্ষের স্বাক্ষরের নিচে তারিখের স্থলে ২৩/১১/২৪ তারিখ লক্ষ্য করা যায়।

Screenshot: Facebook.

পরবর্তী অনুসন্ধানে ঢাকা কলেজের ওয়েবসাইটের নোটিশ সেকশনে ১৪ ফেব্রুয়ারি সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ২০২৪ সালের ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। বিজ্ঞপ্তিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত বিজ্ঞপ্তির অধ্যক্ষের স্বাক্ষরের অংশের সাথে আলোচিত বিজ্ঞপ্তির স্বাক্ষরের অংশের সাদৃশ্য রয়েছে। উভয় বিজ্ঞপ্তিতেই ২৩/১১/২৪ তারিখটি দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও আলোচিত বিজ্ঞপ্তির মূল অংশের ফন্টের সাথে ঢাকা কলেজের বিজ্ঞপ্তির ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।

অর্থাৎ, ২০২৪ সালের ভিন্ন ঘটনার বিজ্ঞপ্তিকে সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়া বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে জানতে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারি সংক্রান্ত এই বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি।

সুতরাং, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ অভিভাবকদের সন্তানের প্রতি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি সম্পাদিত

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসকে জড়িয়ে জুয়ার ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচার

0

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অ্যাপের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করার কথা বলছেন, এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর বক্তব্যের একটি ফুটেজ দেখানো হয়েছে। এই ফুটেজে তাকে অ্যাপের মাধ্যমে ১০ টাকা আয় করতে পারলে তাকে ১০০০ টাকা বোনাস দেওয়া হবে বলে বলতে শোনা যায়।

ড. ইউনূসকে

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস জুয়ার অ্যাপের মাধ্যমে টকা উপার্জনের কথা বলেননি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর বক্তব্যের ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের  ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ‘Acceptance Speech: IFI Awards 2018 for Grand Jury Special Award for Lifetime Achievement’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওর সাথে আলোচিত জুয়ার বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত ড. ইউনূসের বক্তব্যের ফুটেজের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি মূলত ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ এ আজীবন সম্মাননা পাওয়া উপলক্ষে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে কথা বলেন। উক্ত ভাষণে তিনি জুয়ার অ্যাপ নিয়ে কোনো কথা বলেননি।

ভিডিওটি প্রচার করা ফেসবুক পেজ সম্পর্কে যা জানা যায়

Fabi Fausto’ পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন যাচাই করে দেখা যায়, উক্ত পেজ ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই চালু করা হয়। পেজটি যারা পরিচালনা করছেন তাদের মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে তিন জন, ভারত থেকে দুই জন, থাইল্যান্ড থেকে একজন রয়েছেন। দুই জনের লোকেশন পাওয়া যায়নি। এছাড়া, পেজটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে উল্লেখযোগ্য কোনো পোস্ট নেই এবং জুয়ার ভিডিওটি বুস্ট করে প্রচার করা হচ্ছে।

Screenshot: Facebook

উল্লেখ্য, পূর্বেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জড়িয়ে ভুয়া জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন (, , ) প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূস জুয়ার অ্যাপে বিনোয়োগ করে অর্থ উপার্জন করার কথা বলেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং এ সংক্রান্ত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের দাবি ও তাতে বাইডেন-ইউনূসের জড়িত থাকা নিয়ে তুলসী গ্যাবার্ডের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদের জন্য সিনেট গোয়েন্দা কমিটির ভোট প্রাপ্ত প্রার্থী তুলসী গ্যাবার্ডকে জড়িয়ে সম্প্রতি ‘বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর তুলসি গ্যাব্বার্ড। বাইডেন প্রসাশনকে দায়ী এর জন্য, ইউনুস বাইডেন এর সাথে সরাসরি যুক্ত..।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷

তুলসী গ্যাবার্ড

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন ইস্যুতে সম্প্রতি কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি এবং এ জন্য বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করেও কোনো মন্তব্য করেননি। একইভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সম্পর্ক নিয়েও তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। বরং, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদপ্রার্থী হিসেবে সিনেট কমিটির শুনানিতে তার বক্তব্যের অংশকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে CNN-News 18 এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ জানুয়ারি ‘Tulsi Gabbard Confirmation Hearing | “No Love For Dictators”: Gabbard Defends Loyalty |’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ১:০৫:৩৫ ঘন্টা থেকে ১:০৭:০৪ ঘন্টা পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে৷ উক্ত অংশে তুলসী গ্যাবার্ড আল-কায়েদা, ইসলামি ‘চরমপন্থীদের’ প্রতি কতিপয় মার্কিন নেতার ‘নমনীয়তা’, মার্কিন প্রশাসনের অতীত ধর্মীয় বিদ্বেষ, এবং হিন্দু ও হিন্দুধর্মের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য বৈষম্য নিয়ে কথা বলেন। ভিডিওটির তবে, তিনি কোথাও বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকা কিংবা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাইডেনের সম্পর্ক নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।

এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি৷ 

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটির শুনানিতে তুলসী গ্যাবার্ডের ভিন্ন বিষয়ে দেওয়া বক্তব্যের ভিডিওকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তিনি বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন, বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করা এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাইডেনের সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র