Home Blog Page 139

সমন্বয়ক ঈশিতা জামান ডলির আপত্তিকর ছবি দাবিতে ভারতীয় মডেলের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি একজন তরুণীর প্রায় ৭ টি আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “লাল বিপ্লবী আপনাদের সমন্বয়ক ঈশিতা জামান ডলি যিনি ফরিদপুর বোয়ালমারীর মাটি থেকে নেতৃত্ব  দিত | হয়তোবা এই ছবি ভাইরাল হওয়ার পর সে সমন্বয়ক কমিটির বিছানায় নেতৃত্ব দিবে।”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে প্রচারিত ছবিগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর ভিত্তিক সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী ঈশিতা জামান ডলি নামের একজন তরুণীর।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর ভিত্তিক সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী ঈশিতা জামান ডলি নামের কোনো তরুণীর নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রচারিত ছবিগুলো বাংলাদেশেরই কোনো ব্যক্তির নয় বরং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ভিত্তিক মডেল পায়েল মন্ডলের।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত ছবিগুলোর উৎসের বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত সাতটি ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনুসন্ধান করলে প্রতিটি ছবি পায়েল মন্ডল নামের একটি ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বিভিন্ন সময়ে পোস্ট হতে দেখা যায় (,,,,,,)। প্রচারিত ছবিগুলো পায়েল মন্ডলের অন্যান্য ছবি ও ভিডিও এর সাথে তুলনা করলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ছবিগুলো পায়েল মন্ডলেরই।

Comparison : Rumor Scanner

পরবর্তী অনুসন্ধানে পায়েল মন্ডলের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটির বায়োতে দেখা যায়, পায়েল মন্ডল ভারতের কলকাতা ভিত্তিক একজন মডেল ও ইনফ্লুয়েন্সার।

Screenshot: Instagram

তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটির অ্যাবাউট সেকশন পর্যবেক্ষণ করলেও দেখা যায় যে, উক্ত অ্যাকাউন্টটি মূলত ভারত থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

তাছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুরে কোনো কমিটি হয়নি এবং ঈশিতা জামান ডলি নামে কোনো সমন্বয়কের নাম গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভারতীয় মডেলের ছবিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর ভিত্তিক সমন্বয়ক ঈশিতা জামান ডলির আপত্তিকর ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

উপদেষ্টা আসিফের বাবা দাবিতে আওয়ামী লীগ নেতার হামলার ভিডিও প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবার ক্ষমতা কত, তা একবার দেখেই নিন! কিছু মানুষ শুধু নিজের পরিচয়েই নয়, তাদের ছেলের নামেও মাস্তানি করে -কারণ সেই নামের পেছনে থাকে এক বিশাল প্রভাব, ক্ষমতা ও সুনাম।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসিফের বাবার নয় বরং, প্রচারিত ভিডিওটি গত বছরের জুন মাসে ভোলার লালমোহন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাপ-পিরিচ প্রতীকের লায়ন হাসনাত হাছনাইনের ওপর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম হাওলাদারের হামলার দৃশ্য। 

অনুসন্ধানে ‘Nur E Alam Nuru’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত বছরের (২০২৪) ০৮ জুন প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম হাওলাদার একজন প্রার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার দৃশ্য এটি। 

এছাড়া, ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ০৫ জুন “ভোলার লালমোহনে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে প্রকাশ্যে মারধর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Screenshot: DBC NEWS YouTube Channel 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, দৃশ্যটি ভোলার লালমোহনে চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মারধরের। 

পরবর্তীতে সময় টিভির ওয়েবসাইটে গত বছরের ০৫ জুন “চেয়ারম্যান প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ নেতার মারধর, ভিডিও ভাইরাল”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ০৫ জুন ভোলার লালমোহন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাপ-পিরিচ প্রতীকের লায়ন হাসনাত হাছনাইনের ওপর হামলা চালিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম হাওলাদার। তার এই মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

অর্থাৎ, হামলাকারী ব্যক্তি আসিফ মাহমুদের বাবা নয়। তিনি ভোলার লালমোহন উপজেলার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম হাওলাদার।

অন্যদিকে, আসিফ মাহমুদের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরাবাজার থানাধীন আকুবপুর গ্রামে। তার বাবা মো. বিল্লাল হোসেন আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। 

সুতরাং, ভোলায় আওয়ামী লীগ নেতা কর্তৃক উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী লায়ন হাসনাত হাছনাইনের ওপর হামলার পুরোনো দৃশ্যকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা কর্তৃক হামলার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

এয়ারহোস্টেসের ছবির সাথে পাইলটের ভিত্তিহীন গল্প জুড়ে দিয়ে প্রচার 

0

দীর্ঘদিন ধরে এক এয়ারহোস্টেসের তিনটি ছবি কোলাজ করে এর সাথে একটি কথিত ঘটনার তথ্য  যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। পোস্টের ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, “ফ্লাইটে পাইলট ঘোষণা করল, আধা ঘণ্টার মধ্যে আমরা ল্যান্ড করতে যাচ্ছি। একথা বলার পর  কিন্তু পাইলট মাইক বন্ধ করতে ভুলে গেলো এবং পাশে থাকা পাইলটকে বলল, এখন আমি প্রথমে গরম চা খাবো তারপর এয়ার হোস্টেস কে চু’মু খাবো। একথা শুনে এয়ার হোস্টেস মাইক বন্ধ করার জন্য দৌড়াতে গিয়ে এক শিশুর পায়ে হোঁ/চ/ট খেয়ে কাছে পড়ে গেল। শিশুটি বলল, আপনার ভেতরে যাওয়ার তাড়া কিসের! ও আগে চা খাবে বললো শোনোনি?”

সম্প্রতি, একই কোলাজ ছবি ব্যবহার করে দাবিটি আবারও সামাজিক মাধ্যমে আবার প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এয়ারহোস্টেসের ভাইরাল ছবিগুলোর সঙ্গে থাকা গল্পটি সঠিক নয় বরং ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার দুইটি ছবি যুক্ত করে ভিত্তিহীন দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ছবি ২০১৪ সালে মালয়েশিয়ার এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইটে একজন চীনা যাত্রী কর্তৃক এয়ারহোস্টেসের দিকে গরম পানি ছুঁড়ে মারার। বাকি দুইটি ছবি ২০১৬ সালে রাশিয়ান এয়ারলাইনসে একদল ফুটবল অনুরাগী কর্তৃক একজন এয়ারহোস্টেসকে বিভ্রান্ত করার সময়কার। 

মূলত, ২০১৪ সালে ব্যাংকক থেকে নানজিংগামী একটি ফ্লাইটে একজন চীনা যাত্রীর সঙ্গে এয়ারহোস্টেসের বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই চীনা যাত্রী এয়ারহোস্টেসের দিকে গরম পানি ছুঁড়ে মারে এবং ২০১৬ সালে রাশিয়ান এয়ারলাইনসে একদল ফুটবল অনুরাগী একজন এয়ারহোস্টেসকে নিরাপত্তাবিষয়ক নির্দেশনা দেওয়ার সময় তাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। উক্ত দুইটি ঘটনার কিছু স্থিরচিত্র কোলাজ করে এর সাথে একটি গল্প জুড়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একাধিকবার একই দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন (,) প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে পুরোনো দৃশ্য প্রচার

0

সম্প্রতি ‘আওয়ামী লীগের ডাকা ৪৮ ঘন্টা হরতালে সারাদেশ জুড়ে চলছে ব্যাপক তাণ্ড’ব’ শীর্ষক দাবিতে একটি সংবাদ প্রতিবেদন সদৃশ ভিডিও ইউটিউবে ও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্টটি প্রায় দেড় লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ৮ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের দৃশ্যের নয় বরং, প্রায় দেড় বছর পুরোনো বিএনপির ডাকা হরতাল ও সংঘর্ষের ঘটনার দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ ঘোষিত হরতালের তারিখ হচ্ছে ১৮ ফেব্রুয়ারি যা এখনও আসেনি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির শুরুতে থাকা প্রতিবেদকের বলা কথার সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে “দিনভর রাজধানীতে ব্যাপক সংঘাত; পুলিশ সদস্য নিহত” শীর্ষক শিরোনামে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে সংবাদ প্রতিবেদকের বলা কথার সাথে প্রচারিত ভিডিওটির শুরুতে সংযুক্ত সংবাদ প্রতিবেদকের কথার সাদৃশ্য পাওয়া যায় যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত দৃশ্যটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে প্রদর্শিত একাধিক সংঘর্ষের দৃশ্যের সাথেও প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত সংঘর্ষের দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদন ভিডিওটির বর্ণনা অংশে বলা হয়, “রাজধানীতে ব্যাপক সংঘাত-সহিংসতা হয়েছে আজ। দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ রাজনৈতিক দলের অনেক কর্মী আহত হন। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে পুলিশ বক্স, গাড়ি। ভাঙচুর চালানো হয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের গেট, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের এম্বুলেন্সে। রক্ষা পায়নি গণমাধ্যমের যানবাহনও। আটক হয়েছে বিএনপি’র বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।”

প্রচারিত সংঘর্ষের দৃশ্যের বিষয়ে সংবাদ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর দুপুর ১২ টার দিকে শুরু হয় সংঘর্ষ। এর আগে কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকে বিএনপি কর্মীরা। ঐ পথে যাচ্ছিল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের বাস। এ বাসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। কেড়ে নেওয়া হয় প্ল্যাকার্ড৷ এছাড়া পুলিশের সাথেও সংঘর্ষ হয় বিএনপি কর্মীর।

প্রচারিত উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত আরো কিছু সংঘর্ষের দৃশ্য নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবরে প্রচারিত একটি ফেসবুক লাইভ সংবাদ সম্প্রচার পোস্ট পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির ২৮ মিনিট পরবর্তী সময়ের দৃশ্যের সাথেও প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত একাধিক দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। প্রচারিত দৃশ্যটি বিএনপির ডাকা হরতালের বলে সংবাদটিতে বলা হয়।

উল্লেখ্য যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ ও “অপশাসন-নির্যাতনের” প্রতিবাদে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গত ২৮ জানুয়ারি দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ, আওয়ামী লীগ ঘোষিত হরতালের তারিখ এখনও আসেনি। তবে, এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগসহ বেশকিছু দাবিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত অনলাইন প্লাটফর্ম এটিম কর্তৃক গত ১৮ জানুয়ারি সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়েছিল এবং একইসময়ে ফাঁসকৃত শেখ হাসিনার কথিত কলরেকর্ডেও শেখ হাসিনাকে ১৮ তারিখে হরতালের নির্দেশ দিতে দেখা যায়।

সুতরাং, আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের দৃশ্য দাবিতে প্রায় দেড় বছর পুরোনো বিএনপির ডাকা হরতাল ও সংঘর্ষের দৃশ্য প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য প্রদান দাবিতে বাংলাভিশনে ভুল সংবাদ প্রচার

0

গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্যদের পাশাপাশি উক্ত সম্মেলনে বড় মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা: পরিমল কান্তি দে বক্তব্য রাখেন দাবিতে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম বাংলা ভিশন একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করা হয়।

বাংলাভিশন-এ প্রচারিত এমন প্রতিবেদন দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কক্সবাজার জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন আওয়ামী লীগ নেতা ডা: পরিমল কান্তি দে-এর বক্তব্য দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য পরিমল কান্তি শীলকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমীর আবদুল্লাহ আল ফারুকের ফেসবুক প্রোফাইলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

পোস্টটিতে তিনি জানান, জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখা ব্যক্তির নাম পরিমল কান্তি শীল। যার পিতার নাম বিনোদ বিহারী শীল। অপরদিকে বড় মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতার নাম পরিমল কান্তি দে। তার পিতার নাম স্বর্গীয় অশ্বিনী কুমার দে। উক্ত তথ্যের ভিত্তি হিসেবে পোস্টটিতে পরিমল কান্তি শীলের জাতীয় পরিচয়পত্র ও তার ছবির পাশাপাশি পরিমল কান্তি দে-এর ও বড় মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির তালিকার ছবিও প্রদান করা হয়।  

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বাংলাভিশন-এ প্রচারিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

পোস্টটি থেকে জানা যায়, “বাংলাভিশন”-এ ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে অমুসলিম প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দানকারী পরিমল কান্তি শীলকে আওয়ামী’ লীগ নেতা হিসেবে সংবাদ পরিবেশন করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী ও সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম।

বিবৃতিতে তারা জানান, পরিমল কান্তি শীল কখনো আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। বাংলাভিশনে পরিবেশিত সংবাদে ‘পরিমল দে’ নামে যার নাম উল্লেখ করা হয়েছে তিনি হিন্দু ধর্মীয় কল্ল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য পরিমল শীল একই ব্যক্তি নন। এছাড়াও তথ্যের সত্যতা যাছাই না করে এ ধরণের ডাহা মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিটির মাধ্যমে।

পাশাপাশি পোস্টটিতে পরিমল কান্তি শীল এবং পরিমল কান্তি দে নামের উভয় ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি দেখতে পাওয়া যায়।

বাংলাভিশন ব্যতিত উক্ত ঘটনায় অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে তাকে আওয়ামী লীগ নেতার পরিবর্তে হিন্দু নেতা হিসেবে উল্লেখ করতে দেখা যায় (যমুনা টেলিভিশন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ)।

Screenshot Collage by Rumor Scanner 

এছাড়াও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত পঞ্চদশ ট্রাস্টি বোর্ডের তালিকা থেকে জানা যায়, পরিমল কান্তি শীল উক্ত ট্রাস্টি বোর্ডের ৯ নং সদস্য। তার কর্ম-এলাকা কক্সবাজার, খাগড়ছড়ি ও রাঙ্গামাটি।

Screenshot: hrwt.portal.gov.bd

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে News Vision নামের একটি অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যমের ফেসবুকে আজ ১১ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সম্মেলনে বক্তব্য রাখা ডা: পরিমল কান্তি শীলকে আ’লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে মি’থ্যা সংবাদ পরিবেশন বিষয়ে জেলা জামায়াতের সংবাদ সম্মেলন শীর্ষক শিরোনামে সরাসরি সম্প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

উক্ত সংবাদ সম্মেলনেও বাংলাভিশনের প্রতিবেদনে পরিমল কান্তি শীলকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানানো হয়।

অর্থাৎ, কক্সবাজার জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকারী পরিমল কান্তি শীল এবং আওয়ামী লীগ নেতা ডা: পরিমল কান্তি দে একই ব্যক্তি নন।

সুতরাং, কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা পরিমল কান্তি দে বক্তব্য প্রদান করেছেন দাবিতে বাংলাভিশনে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ফরচুন বরিশালের লঞ্চের এই ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ-বিপিএলের এবারের আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরচুন বরিশাল। এর প্রেক্ষিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। এতে দলটির লোগো, নাম সহ একটি লঞ্চের ছবি দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত লঞ্চের ছবিটি বাস্তব নয় বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ‘Cricketangon’ নামের একটি পেজ থেকে প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ছবি পাওয়া যায়। ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবিটি মোঃ রাকিব খান নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি করা বলেও জানানো হয়। 

Screenshot: Facebook

পরবর্তী অনুসন্ধানে ‘Fortune Barishal’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে ‘Md Rakib Khan’ অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৬ ফেব্রুয়ারির একটি পোস্ট পাওয়া যায়।  

Screenshot: Facebook 

এছাড়াও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী চার্টার্ড বিমানে করে ফরচুন বরিশালের খেলোয়াড়রা গত ১০ ফেব্রুয়ারী বরিশাল পৌঁছান ট্রফি নিয়ে উদযাপন করতে। অর্থাৎ, দলটি লঞ্চে করে বরিশালে যায়নি। তাছাড়া, ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার (৭ ফেব্রুয়ারি) পূর্বে থেকেই (৬ ফেব্রুয়ারি) এই ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। এছাড়া, লঞ্চের গায়ে ফ্রাঞ্চাইজির বানান Barisal লেখা। তবে দলটি Barishal বানান ব্যবহার করে থাকে। 

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি একটি ছবি ফরচুন বরিশালের লঞ্চের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে সরকারি গণমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কন্টেন্ট প্রচার নিষিদ্ধ দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচার 

0

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি আদেশ জারির মাধ্যমে সরকারি বেতার ও টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কন্টেন্ট প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন দাবিতে সম্প্রতি কতিপয় ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে৷ প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়েছে, উক্ত আদেশ জারির মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকারি বেতার ও টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যা নিয়ে কন্টেন্ট প্রকাশ এবং মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা বিষয়ে পাকিস্তানকে দায়ী করা ও মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জুলফিকার আলী ভুট্টোসহ পাকিস্তানি নেতৃবৃন্দের সমালোচনা করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে; একইসাথে, ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সালের সব নথি ও ভিডিও ফুটেজ ধ্বংস করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি দেখুন: ইন্ডিয়া ডট কম, এনটিভি তেলেগু, ইন্ডিয়া হেরাল্ড, ইবিএম নিউজ, ওয়ান ইন্ডিয়া

এ বিষয়ে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷  

এ বিষয়ে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান কর্তৃক সরকারি বেতার ও টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কন্টেন্ট প্রচার নিষিদ্ধের সংবাদটি সঠিক নয় বরং, বাংলাদেশ বেতারের সকল কেন্দ্র/ইউনিটের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজসমূহ থেকে সরকারি নীতিমালা বহির্ভূত সকল প্রকার ছবি, তথ্য এবং কন্টেন্ট অপসারণের নির্দেশে একটি অফিস আদেশের তথ্যকে অতিরঞ্জিত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ বেতারের ওয়েবসাইটে গত ০২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি অফিস আদেশের নোটিশ খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালকের পক্ষে অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম কর্তৃক গত ০২ ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষরিত উক্ত অফিস আদেশে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ বেতারের সকল কেন্দ্র/ইউনিটের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজসমূহ পর্যালোচনা করে সরকারি নীতিমালা বহির্ভূত সকল প্রকার ছবি, তথ্য এবং কন্টেন্ট অপসারণপূর্বক অদ্য ০২/০২/২০২৫ তারিখ বিকাল ৩ ঘটিকার মধ্যে সদর দপ্তরের প্রশাসন শাখা-কে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

Comparison: Rumor Scanner 

এই অফিস আদেশ পর্যালোচনা করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিংবা পাকিস্তান প্রসঙ্গে কোনো তথ্য বা আদেশের উল্লেখ করা হয়নি। 

এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের একটি ফেসবুক পেজ থেকেও এই বিষয়ে একটি পোস্ট করা হয়েছে। উক্ত পোস্টে ভারতীয় গণমাধ্যমের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এবং সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. ইউনূস কর্তৃক রেডিও ও টেলিভিশনে সেন্সরশিপ আরোপের ভিত্তিহীন দাবির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশের তথ্য মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টাকে নিশ্চিত করেছে যে, তারা বর্তমান গণমাধ্যমের উপর কোনো ধরনের সেন্সরশিপ আরোপ করেনি এবং এর কোনো উদ্দেশ্যও নেই। মন্ত্রণালয় তাঁকে আরও জানিয়েছে যে, তারা হাসিনার শাসনামলের কিছু বিতর্কিত বিষয়বস্তু তাদের আর্কাইভ থেকে সরিয়ে ফেলেছে এবং সহিংসতা উসকে দিতে পারে গণমাধ্যম থাকা এমন বিষয়বস্তু অপসারণে তাদের যথাযথ ও আইনানুগ দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান কর্তৃক সরকারি বেতার ও টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কন্টেন্ট প্রচার নিষিদ্ধ দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

১৩ বছরের ছেলে ৩৬ বছরের শিক্ষিকাকে বিয়ে করার ভাইরাল ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে, ১৩ বছরের এক কিশোর তার ৩৬ বয়সী শিক্ষিকাকে বিয়ে করেছেন। ভিডিওতে আলোচিত সেই ছেলে এবং মহিলাকে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে দেখা যাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৩ বছরের কিশোরের ৩৬ বছর বয়সী শিক্ষককে বিয়ে করার আলোচিত ভিডিওটি সত্য কোনো ঘটনার নয় বরং, স্ক্রিপ্টেড বা অভিনীত ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি থেকে কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Tawsif Tv 24’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বরে আপলোডকৃত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিরও মিল খুঁজে পাওয়া যায়। আলোচিত ভিডিওর একি মহিলা ও কিশোরকেকে উক্ত ভিডিওটিতে দেখা যায়। 

‘Tawsif Tv 24’ পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, পেজটি এই ধরনের ভিডিও নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে থাকে। তাছাড়া আলোচিত ভিডিওর মহিলাটিকে এই পেজেরই ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে প্রকাশিত আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়। এই ভিডিওতে ওই মহিলা বিয়ে করার জন্য অনলাইনে পাত্র খুঁজছেন বলে দাবি করা হয়।

Screenshot: Facebook. 

অর্থাৎ, পেজটি পর্যবেক্ষণ করে এটা নিশ্চিত যে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড।

সুতরাং, ১৩ বছরের কিশোরের ৩৬ বছর বয়সী শিক্ষিকাকে বিয়ে করার স্ক্রিপ্টেড ভিডিও সত্য ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের বিহারের ডাকাতির ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশের বলে প্রচার

0

সম্প্রতি, অস্ত্র হতে মুখোশধারী কয়েকজন দুষ্কৃতিকারীর পেট্রোল পাম্প এলাকায় ডাকাতির একটি ভিডিও বাংলাদেশের ঘটনা বলে প্রচারিত হয়েছে। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে “প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে। দেখেন অবৈধ দখলদার সরকারের মদদপুষ্ট তথাকথিত ছাত্র-জনতা নামধারী ডেভিলদের! এই দেশে দিনে রাতে এখন কেউ নিরাপদ নয়!” শিরোনামে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় বরং এটি ভারতের বিহারের অস্ত্র হাতে ডাকাতির একটি ঘটনার ভিডিও।

ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে Hate Detector নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টের গত ৭ ফেব্রুয়ারির একটি পোস্টে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে এই ঘটনার ভিন্ন কোণের আরো একটি সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে এটিকে ভারতের বিহারের বলে উল্লেখ করা হয়। 

Screenshot: Hate Detector/X

পরবর্তীতে এই ঘটনার একটি ভিডিও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিতে খুঁজে পাওয়া যায়। এনডিটিভি নিশ্চিত করে, ভিডিওটি বিহারের। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভারতীয় আরেক সংবাদমাধ্যম Free Press Journal এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিহারের সাহারসার বৈজনাথপুর থানার অন্তর্গত টিরি এলাকার পূজা পেট্রোল পাম্প এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। চারজন সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারী বন্দুক দিয়ে গুলি করার ভয় দেখিয়ে ₹২১,০০০ লুট করে দ্রুত পালিয়ে যায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সুতরাং, ভারতের বিহারের একটি ডাকাতির ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

বৌদ্ধ বিহারে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের আগুনকে উগ্রবাদীদের হামলা দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্যের ভিডিও সংযুক্ত করে দাবি প্রচার করা হয়েছে, “বাংলাদেশে উগ্রবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রুমা, বান্দরবানে একটি বৌদ্ধ মঠ এবং আশেপাশের এলাকায় অগ্নিসংযোগ করেছে।” (অনূদিত)

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বান্দরবানের রুমায় উক্ত বৌদ্ধ বিহারে উগ্রবাদীরা অগ্নিসংযোগ করেনি বরং বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে, পোস্টগুলোতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘শাওন বড়ুয়া’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৪ ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, “আজ সন্ধ্যা ৭টার দিকে বান্দরবান জেলা রুমা‌তে একটি বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ঘটনাটি রুমা উপজেলার, ১নং পাইন্দু ১নং ওয়ার্ড, মংশৈপ্রূ কার বাড়ি পাড়াতে ঘটে। বৌদ্ধ বিহারের সাথে আরো একটি ইউনিসেফ আগুন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তার মধ্যে এক পরিমাণ জিনিস পত্র ও ভিতর থেকে বের করতে পারেনি। বৌদ্ধ মূর্তি থেকে শুরু করে  সব কিছুই ছাই হয়ে পুড়িয়ে যায়। স্থানীয়দের মতে আগুন লাগার মূলত কারণ কারেন্ট থেকে।”

একইদিন ৪ ফেব্রুয়ারিতে ‘নাই ম্রা চিং মারমা’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “তাং:০৪/০২/২০২৫ ইং জেলা বান্দরবান, উপজেলা রুমা ১নং পাইন্দু ইউনিয়নে মংশৈপ্রু পাড়া আগুনে পুড়ে ছারখার সময় সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে।” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ফেসবুক লাইভ সম্প্রচার পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি বান্দরবান জেলার রুমার ১নং পাইন্দু ইউনিয়নে মংশৈপ্রু পাড়ার আগুনের দৃশ্য।

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে সংবাদমাধ্যম ‘দৈনিক জনকণ্ঠ’ এর ওয়েবসাইটে “বান্দরবানে পরিত্যক্ত বৌদ্ধ বিহারে আগুন” শীর্ষক শিরোনামে গত ৪ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “বান্দরবানের রুমা উপজেলায় আগুনে পুড়ে গেছে বৌদ্ধ বিহারের একটি পুরোনো পরিত্যক্ত ঘর। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পাইন্দু ইউনিয়নের দুর্গম মংসুথুই পাড়ায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের মতে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং মুহূর্তের মধ্যেই তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। দুর্গম ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেননি।

পাইন্দু ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মংচ খয় জানান, বৌদ্ধ বিহারের পরিত্যক্ত ঘরটিতে বৈদ্যুতিক মিটারের শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে এবং তা পুরো ঘর পুড়িয়ে দেয়। তবে আশপাশে কোনো বসতি না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।”

এছাড়া এ বিষয়ে ‘খোলা কাগজ’ নামের একটি সংবাদমাধ্যমে ‘রুমায় বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়ে ছাই’ শীর্ষক শিরোনামে একইদিন ৪ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত আরেকটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে আলোচিত ঘটনার দৃশ্যের একটি স্থিরচিত্রও সংযুক্ত করা হয় যার সাথে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের সাদৃশ্য রয়েছে। উক্ত প্রতিবেদনে বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ইন্দ্রাবংশ ভিক্ষুর বরাতে বলা হয়, “[৪ ফেব্রুয়ারি] সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিহারের বৈদ্যুতিক তার থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তখন আমার শিষ্য রান্নাঘরে ছিলো।”

একই তথ্য এর পরদিন তথা গত ৫ ফেব্রুয়ারিতে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা’য় প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়। তবে কোথাও নির্ভরযোগ্য সূত্রে অগ্নিকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশি কোনো উগ্রবাদী দল বা গোষ্ঠীকে দায়ী করা হয়নি।

সুতরাং, বান্দরবানের রুমার বৌদ্ধ বিহারে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের আগুনকে উগ্রবাদীদের হামলা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র