অনলাইন জুয়ার প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনের সবচেয়ে বড় শিকার সাকিব 

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইনে জুয়ার অ্যাপের প্রচারণার বিষয়টি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশের কোনো সেলিব্রিটি তারকা এই প্রচারণায় অংশ না নিলেও তাদেরকে জড়িয়ে নিয়মিতই এসব বিজ্ঞাপন রীতিমতো ফেসবুকে অর্থের বিনিময়ে বুস্ট করে প্রচার করা হচ্ছে৷ রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে বেরিয়ে এসেছে, ভুয়া এসব বিজ্ঞাপনের প্রচারণার প্রধান শিকার হয়ে উঠেছেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য সাকিব আল হাসান। গত তিন মাসে শুধু সাকিবকে জড়িয়ে প্রচারিত এমন উনিশটি ভুয়া প্রচারণা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

যেভাবে চালানো হচ্ছে জুয়ার বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের জুয়ার বিজ্ঞাপনে আইনগত নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অনলাইন জুয়া অ্যাপগুলো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিয়মিত নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেটার অ্যাড লাইব্রেরি অনুসন্ধান করে প্রতিদিন হাজারো জুয়ার অ্যাপের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতে দেখা যায়। এসব বিজ্ঞাপন শুধু জুয়ার আইন ভঙ্গ করেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং বাংলাদেশের জনপ্রিয় তারকাদের ভুয়া ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে প্রতারণামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এদের মধ্যে প্রধান শিকার হয়ে উঠেছেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। 

রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের বিশ্লেষণে দেখা যায়, এমন প্রচারণার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ভিডিও বিকৃতি। সাকিব আল হাসানের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলোতে প্রচারিত এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার দেওয়া সাক্ষাৎকারের পুরোনো এবং অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও বিকৃতি করে এসব ভিডিওর অডিও পরিবর্তন করা হচ্ছে। সাকিবের কণ্ঠ নকল করে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন অডিও তৈরি করে এই ভিডিওগুলো জুয়ার বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।

এই প্রচারণায় শুধু সাকিবের ভিডিওই নয়, বিভিন্ন মূলধারার গণমাধ্যমের সংবাদ বুলেটিনের ভিডিওকেও বিকৃত করে ব্যবহার করা হচ্ছে। দর্শকদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য একটি গণমাধ্যমের সংবাদ বুলেটিনের ভিডিও ব্যবহার করে তাতে অন্য একটি গণমাধ্যমের লোগো সংযুক্ত করা হচ্ছে। কখনও কখনও ভারতীয় গণমাধ্যমের বুলেটিন ভিডিও ব্যবহার করে তাতে বাংলাদেশি গণমাধ্যমের লোগো সংযুক্ত করা হচ্ছে। বুলেটিন ভিডিওগুলোর অডিওগুলোও অনুরূপ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবর্তন করা হচ্ছে।

গত তিন মাসে সাকিব আল হাসান ও গণমাধ্যমকে জড়িয়ে এ ধরনের বিজ্ঞাপন নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের প্রকাশিত উনিশটি প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এ ধরনের বিজ্ঞাপনে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে যমুনা টিভির সংবাদ বুলেটিন কিংবা লোগো। এছাড়াও ব্যবহৃত হয়েছে বাংলাদেশের সময় টিভি, আরটিভি, এনটিভি, চ্যানেল২৪, চ্যানেল আই, মাছরাঙা টিভি, এটিএন নিউজ এবং ভারতের জি নিউজের সংবাদ বুলেটিন কিংবা লোগো।

ক্ষণে ক্ষণে ফেসবুক পেজ বদলে একই ধাঁচে প্রচারণা

জুয়ার এসব ভুয়া বিজ্ঞাপনগুলো বেশিরভাগই বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এসব ফেসবুক পেজগুলো টানা পর্যবেক্ষণ করে উল্লেখযোগ্য কিছু তথ্য পেয়েছে। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এক পেজে কিছুদিন বিজ্ঞাপন চালানোর পর সে পেজে বিজ্ঞাপন চালানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর আবার অন্য কিছু পেজে বিজ্ঞাপন চালানো হয়, এভাবে বিজ্ঞাপন চলতে থাকে। এছাড়া পেজগুলো থেকে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হলেও পেজগুলোর টাইমলাইনে সংশ্লিষ্ট পোস্টগুলো থাকে না। অর্থাৎ টাইমলাইন থেকে সরিয়ে রাখা হয়। পেজগুলোর ট্রান্সপারেন্সি সেকশন পর্যবেক্ষণে জানা যায়, এ পেজগুলোর বেশিরভাগই বাংলাদেশের বাইরের কিছু দেশ থেকে পরিচালনা করা হয়।

এই গবেষণা চলাকালীন শুধু সাকিব আল হাসানের ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে এমন ভুয়া জুয়ার অ্যাপের বিজ্ঞাপন প্রচারকারী ১৮টি ফেসবুক পেজের তালিকা করেছে রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট। তালিকাটি তৈরির সময় এই পেজগুলোতে অন্তত একটি জুয়ার বিজ্ঞাপন সক্রিয় ছিল।

ক্রমিকপেজের নামপেজ চালুর তারিখঅ্যাডমিনদের লোকেশন (জন)
Ilamlak০৯ এপ্রিল, ২০২১ইউক্রেন (০৪)জাপান (০১)
ফিলিপাইন (০১)
Fragile plough০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ইউক্রেন (০৩)
Flowers powers০৪ জুলাই, ২০২২দৃশ্যমান নয়
Crazy Time০১ এপ্রিল, ২০২৪ইন্দোনেশিয়া (০১)
Ace Armada২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩হংকং (০১)ইন্দোনেশিয়া (০১)দৃশ্যমান নয় (০১)
Abaandagni১৬ মার্চ, ২০২১ইউক্রেন (০৪)ফিলিপাইন (০৩)ভিয়েতনাম (০৩)ইন্দোনেশিয়া (০১)
Glory Life০৯ মে, ২০২৪দৃশ্যমান নয়
Dog Memes২৫ এপ্রিল, ২০২১ফিলিপাইন (০১)
বাংলাদেশ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১ইউক্রেন (০৬)জাপান (০১)ফিলিপাইন (০১)ভিয়েতনাম (০১)
১০Pink Flying Ball২২ ডিসেম্বর, ২০২৩দৃশ্যমান নয়
১১Skyla Will১০ অক্টোব, ২০২৩দৃশ্যমান নয়
১২Kelsie Shepard২০ মে, ২০২৩দৃশ্যমান নয়
১৩Smart Get Adrize০৭ এপ্রিল, ২০২৩যুক্তরাষ্ট্র (০১)
১৪Kilo MM১৫ এপ্রিল, ২০২৩দৃশ্যমান নয়
১৫Recommended০৭ মার্চ, ২০২৩দৃশ্যমান নয়
১৬WORK EAsier১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩দৃশ্যমান নয়
১৭Turquesa Bendito০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩পেরু (০১)
১৮Janey Sprague১৯ আগস্ট, ২০২২ইউক্রেন (০৯)বাংলাদেশ (০১)



ভিক্টিমই যখন বুলিংয়ের শিকার

সাকিবকে জড়িয়ে তার নাম এবং পুরোনো ফুটেজ ব্যবহার করে প্রচার করা জুয়ার ভুয়া বিজ্ঞাপনগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এই বিজ্ঞাপনগুলোর কমেন্ট সেকশনে সাকিব নিজেই বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। এমনই এক বিজ্ঞাপনে এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “এই জন্য তোকে এমপি বানাইছে, মানুষ জুয়া দেওয়ার জন্য।” আরেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “বাংলাদেশ এ এইরোকম  এমপি মন্তির প্রয়োজন জ্বে দেশ এ জোয়া খেলার জন্যে কি না কি করতে” (বানান অপরিবর্তিত) শুধু তাই নয়, কিছু কিছু কমেন্টে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিও করা হয়েছে।

Screenshot Collage: Rumor Scanner. 

বুস্ট করে এসব পোস্ট টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পর অনেকেই এসব বিজ্ঞাপনকে সত্য ভেবে নিয়ে সাকিবকে গালমন্দ করছেন। এর ফলে আদতে বিজ্ঞাপন প্রচারকারীরা একরকম সফলই বনে যাচ্ছেন। 

সাকিবকেই কেন বারবার টার্গেট করা হচ্ছে?

ঘটনা ২০১৯ সালের। সে বছরের অক্টোবরে জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার তথ্য গোপন করায় এক বছরের জন্য আইসিসি কর্তৃক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। পরবর্তীতে, ২০২২ সালে বেটউইনার নিউজ নামে একটি ওয়েবসাইটের পণ্যদূত হন সাকিব, যা বেটউইনার নামে এক বেটিং প্রতিষ্ঠানের ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান পাপন তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যদি সাকিব এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল না করেন, তাহলে বিসিবি তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবে না। এরপর সাকিব ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিল করেন। 

এই ঘটনার এক বছর পরেই বাবুএইটিএইট নামের একটি অনলাইন জুয়ার পোর্টালের বিজ্ঞাপনে দেখা যায় সাকিবকে। ভিডিওতে সাকিব বলছেন, “বাবু এইটিএইট স্পোর্টস বাংলাদেশের এক নম্বর স্পোর্টস প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলার আপডেট পাবেন।” কিন্তু পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এই সাইটটি আসলে একটি জুয়ার সাইট, যেখানে ক্রিকেট নিয়ে বাজি ধরার পাশাপাশি ক্যাসিনো, স্লট গেমের মতো জুয়াও খেলা যায়। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের কাছে মনে হয়েছে, এসব ঘটনা প্রবাহ সাকিবকে জুয়ার ভুয়া বিজ্ঞাপনগুলোর শিকার বানানাের ক্ষেত্রে প্রভাবক হয়ে থাকতে পারে। 

সাকিব বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং দীর্ঘ সময় ধরে দেশের ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া, ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার বিভিন্ন কর্মকান্ড বরাবরই সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়ে আসছে। এজন্য গণমাধ্যমে নিয়মিত মুখ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের এই পোস্টার বয়।

রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট মনে করছে, সাকিবের এই জনপ্রিয়তা ও পূর্বের জুয়া সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের কারণে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনের জন্য তাকে ব্যবহার করা সহজ এবং কার্যকর বলে মনে করছে বিজ্ঞাপন প্রচারকারীরা।

তবে সাকিবই শুধু শিকার নয়

রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের গবেষণা অনুযায়ী, কেবল সাকিবই এমন ভুয়া প্রচারণার শিকার নন। তিনি ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারাও এমন প্রচারণার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান, নায়ক শাকিব খান, মনোয়ার হোসেন ডিপজল, সংগীতশিল্পী এবং অভিনেতা তাহসান রহমান খান, কনটেন্ট নির্মাতা তাওহীদ আফ্রিদি এবং ইফতেখার রাফসান। এমনকি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাও এই প্রচারণা থেকে বাদ পড়েননি। বিটিআরসি চেয়ারম্যান এবং র‍্যাবের সাবেক একজন মুখপাত্রকে জড়িয়েও একাধিক জুয়ার বিজ্ঞাপন চালানোর প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট।

মেটার নীতিমালা ভঙ্গ করে চালানো হচ্ছে জুয়ার বিজ্ঞাপন

মেটার অনলাইন জুয়া এবং গেমিং বিজ্ঞাপন নীতি অনুযায়ী, এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপনদাতাদের মেটার লিখিত অনুমতি এবং স্থানীয় আইন মেনে চলার প্রমাণ দেখাতে হবে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন চালানো যাবে শুধু মেটার নির্ধারণ করা নির্দিষ্ট কিছু দেশকে লক্ষ্য করে। তবে অনুমতি ছাড়া শুধু জুয়া সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, সরকারি লটারি এবং বিনামূল্যে খেলার গেমগুলোর প্রচার করা যাবে।

মেটার নীতিমালায় অনুমতি নিয়ে জুয়া সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন চালানো যাবে এমন ৩৪টি দেশের নাম উল্লেখ রয়েছে, তবে এর মধ্যে বাংলাদেশের নাম নেই। অনুমতি নেওয়ার ফর্মেও বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের টার্গেট করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া মেটা বলেছে যে, এমন বিজ্ঞাপন চালাতে স্থানীয় আইন মেনে চলার প্রমাণ দেখাতে হবে। আমরা আগেই জেনেছি, বাংলাদেশের আইনে জুয়া নিষিদ্ধ। 

তবুও মেটার অ্যাড লাইব্রেরিতে প্রতিদিন হাজারো জুয়ার বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে, যা মেটার নীতিমালা এবং বাংলাদেশের আইন উভয়েরই লঙ্ঘন।

ভুয়া জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে কী ব্যবস্থা?

বর্তমান আইনে বাংলাদেশে জুয়া বেআইনি হলেও এই আইন ১৮৬৭ সালে ব্রিটিশ আমলে প্রণীত হয়েছিল এবং এ আইনে সাজার পরিমাণও নগণ্য। প্রচলিত আইনে বলা হয়েছে, কোনো ঘর, স্থান বা তাঁবু জুয়ার আসর হিসেবে ব্যবহৃত হলে তার মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণকারী, জুয়ার ব্যবস্থাপক বা এতে কোনো সাহায্যকারীকে তিন মাসের কারাদণ্ড বা ২০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। যদি কোনো ঘরে তাস, পাশা বা অন্য কোনো জুয়ার সরঞ্জামসহ কাউকে জুয়া খেলতে দেখা যায়, তবে সেই ব্যক্তিকে এক মাসের কারাদণ্ড বা ১০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এই আইন শুধুমাত্র প্রকাশ্য জুয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং বর্তমান সময়ের বাস্তবতার সাথে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

২০২৩ সালে বাংলাদেশের সংসদে নতুন আইন এবং সংশোধনীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পাস হয়েছে, যেমন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং পেটেন্ট অ্যাক্ট, যা আধুনিক যুগের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য প্রণীত হয়েছে। একইভাবে, জুয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনগুলো সংশোধন করা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষত অনলাইন জুয়ার বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে এই ধরণের আইনগুলো সংশোধন করা জরুরি হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ পুলিশও ১৮৬৭ সালের পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে, যা অনলাইন জুয়ার মতো নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অপ্রতুল। তারা অনলাইন জুয়া এবং সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে কার্যকর আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছে।

২০১৯ সালে ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে শতাধিক ব্যক্তি আটক হওয়ার পর তখনও এই আইনের সীমাবদ্ধতা আলোচনায় এসেছিল। যদিও অভিযানের সময় এই পুরোনো আইনে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। সেসময় পুলিশ ১৫৬ বছরের পুরোনো এই আইন সংশোধন করে একে যুগোপযোগী করা অত্যন্ত জরুরি বলে ব্যক্ত করে। সেসময় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, সরকার জুয়া আইনকে যুগোপযোগী করতে চায়। তবে, এখন অবধি এই বিষয়ে হালনাগাদকৃত কোনো তথ্য জানা যায়নি। 

RS Team
Rumor Scanner Fact-Check Team
- Advertisment -spot_img
spot_img
spot_img