Home Blog Page 8

অফিসে শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান ইস্যুতে গোলাম পরওয়ারকে উদ্ধৃত করে আমার দেশের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিসে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানো সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্তের প্রস্তাব জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত না করার অভিযোগ তুলে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ‘শেখ মুজিব সম্মানিত ব্যাক্তি, তাঁর ছবি টাঙানোর বিধান থাকলে সমস্যা কি’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে দৈনিক আমার দেশের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের স্টোরিতেও ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখা গেছে।

এছাড়া, সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ পরিচালিত ফেসবুক পেজ Voice Bangla দৈনিক আমার দেশকে সূত্র উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ারের নামে আলোচিত মন্তব্যটি প্রচার করেছে।

ফ্যাক্টচেক


রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়া গোলাম পরওয়ার ‘শেখ মুজিব সম্মানিত ব্যাক্তি, তাঁর ছবি টাঙানোর বিধান থাকলে সমস্যা কি’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি এবং আমার দেশও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আমার দেশের ফটোকার্ড ডিজাইনের আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডে আমার দেশের লোগো ও তারিখ হিসেবে ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ উল্লেখ থাকতে দেখা যায়।

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে এমন কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। এছাড়া আমার দেশের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং, ৩০ অক্টোবর রাতে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আলোচিত ফটোকার্ডটিকে ফেইক বলে উল্লেখ করা হয়। পোস্টে বলা হয়, ‘আমার দেশের ফে/ইক ফটোকার্ড বানিয়ে পাঠকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপ/চেষ্টা করছে একটি মহল। পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের এ ব্যাপারে সচেতন থাকার অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

এছাড়া, ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজের ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির বাক্যে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল পরিলক্ষিত হয়।

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও মিয়া গোলাম পরওয়ারের এমন মন্তব্য সংবলিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি৷

এছাড়া, মিয়া গোলাম পরওয়ারের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো পোস্টের সন্ধান মেলেনি।

সুতরাং, মিয়া গোলাম পরওয়ারকে উদ্ধৃত করে ‘শেখ মুজিব সম্মানিত ব্যাক্তি, তাঁর ছবি টাঙানোর বিধান থাকলে সমস্যা কি’ শিরোনামে আমার দেশের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

জামায়াত আগামীতে সরকার গঠন করবে বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেননি, আমার দেশের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘জামায়াত সরকার গঠন করবে আশাবাদী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী’ শিরোনামে দৈনিক আমার দেশের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক


রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘জামায়াত সরকার গঠন করবে আশাবাদী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী’ শিরোনামে আমার দেশ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আমার দেশের ফটোকার্ডের ডিজাইনের আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে আমার আমার দেশের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়। 

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আমার দেশের ফেসবুক পেজে গত ১৭ অক্টোবর পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দারের বক্তব্য সংবলিত এমন কোনো ফটোকার্ড পাওয়া যায়নি। এছাড়া, সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গত 

২৪ আগস্ট গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে ‘জামায়াত আমিরের বাসায় যাবেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উল্লিখিত ফটোকার্ড সংবলিত পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৪ আগস্ট ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে দেখতে যাবেন বলে ২৩ অক্টোবর রাতে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে গত ২৪ আগস্ট ‘আমীরে জামায়াতের সঙ্গে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর জনাব মুহাম্মাদ ইসহাক দার এর সৌজন্য সাক্ষাৎ’ শিরোনামে প্রকাশিত পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে সংযুক্ত ডা. শফিকুর রহমানের সাথে মুহাম্মাদ ইসহাক দারের একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্টের বিস্তারিত ক্যাপশনে বলা হয়, ‘২৪ আগস্ট (রবিবার) বেলা ২টায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর জনাব মুহাম্মাদ ইসহাক দার আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। 

এ সময় তার সাথে ছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মি. তারিক বাযওয়া, পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল (সাউথ এশিয়া ও সার্ক) মি. ইলিয়াস মেহমুদ নিজামী, ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের হাইকমিশনার মি. ইমরান হায়দার, ডেপুটি হাইকমিশনার মি. মুহাম্মাদ ওয়াসিফ এবং পলিটিক্যাল কাউন্সেল মি. কামরান দাঙ্গল প্রমুখ।  

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এবং আমীরে জামায়াতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।

সাক্ষাৎকালে পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব ইসহাক দার আমীরে জামায়াতের সাথে কুশল বিনিময় করেন। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. শফিকুর রহমানের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। আমীরে জামায়াত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। 

ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকটি আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎ শেষে নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের সাংবাদিকদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং দেন।’

উল্লিখিত পোস্টে জামায়াতের বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজের ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির বাক্যে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল পরিলক্ষিত হয়।

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে প্রচারিত এই মন্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ‘জামায়াত সরকার গঠন করবে আশাবাদী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী’ শিরোনামে আমার দেশের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

নারায়ণগঞ্জের কথিত যুবদল কর্মীকে শিবিরের হত্যার দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট করায় নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ার কথিত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও যুবদল কর্মী মাসুদ শিবিরের নেতাকর্মীরা হত্যা করেছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত পোস্টগুলোতে আরও দাবি করা হয়, শিবিরের বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে নৌকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। 

এ ঘটনায় সুজন, আলম ও সাব্বির নামের শিবিরের কথিত তিন নেতাকর্মী জড়িতে বলেও পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি নারায়ণগঞ্জে শিবিরের নেতাকর্মী দ্বারা মাসুদ নামের কথিত কোনো যুবদল নেতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীর তীরে ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাত দলকে ধরে গণধোলাই দেয় স্থানীয় লোকজন। উক্ত ঘটনার ভিডিও এটি।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জে মাসুদ নামের কোনো যুবদল নেতাকে হত্যার তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি নারায়ণগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিবিরের সংশ্লিষ্টতার তথ্যও পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Md Abbas’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০১ মার্চ প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি, নৌকা এবং পোশাকের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। তবে প্রাপ্ত ভিডিওটি আলোচিত ভিডিওটির বিপরীত পাশ থেকে ধারণ করা হয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

মো. আব্বাস তার পোস্টে দাবি করেন, শরীয়তপুরে গণপিটুনিতে দুই ডাকাত নিহত। উক্ত ঘটনার ভিডিও এটি। উক্ত ঘটনার ভিডিও মিরর করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ওই সময় একই তথ্যে আরও একাধিক ব্যক্তি ভিডিওটি পোস্ট করেন। দেখুন– এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ০১ মার্চ ‘‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় নদীতে নেমে ধাওয়া, পাল্টা গুলি-ককটেল, গণপিটুনিতে নিহত ২’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর তীরে ‘ডাকাতি’ করে পালানোর সময় শরীয়তপুর সদরের কীর্তিনাশা নদীর দুই পাড় ও নদীতে নেমে সন্দেহভাজন ডাকাত দলকে ধাওয়া দেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় ওই দল স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছোড়ে। পরে স্পিডবোট ফেলে ওই দলের সদস্যরা একটি ইটভাটায় আশ্রয় নিলে স্থানীয় লোকজন তাদের ঘিরে ধরে পিটুনি দেন। এতে দুজনের মৃত্যু হয়।

তখন একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছিল যমুনা টিভি, চ্যানেল ২৪, ডেইলি স্টার , ইত্তেফাকের মতো মূলধারার গণমাধ্যমগুলো।

পূর্বেও আলোচিত ভিডিওটি ছাত্রলীগ কর্মীকে হত্যার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হলে সেসময় দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, গত ফেব্রুয়ারিতে শরীয়তপুরের স্থানীয় জনগণ কর্তৃক ডাকাতদের গণধোলাই দেওয়ার দৃশ্যকে নারায়ণগঞ্জে মাসুদ নামের কথিত যুবদল কর্মীকে শিবিরের হত্যার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

মুফতি মুহিবুল্লাহকে নিয়ে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার 

গাজীপুরের টঙ্গী টিএন্ডটি এলাকার বিটিসিএল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি মুহিবুল্লাহ মিয়াজি গত ২২শে অক্টোবর সকাল সাতটার দিকে হাটতে বের হওয়ার পর তার আর হদিস পাওয়া যায়নি। পরদিন সকাল সাড়ে ৬টায় উত্তরের জেলা পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের সিতারাম হেলিপ্যাড এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পরপরই তিনি দাবি করেছিলেন তাকে অপহরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশের অনুসন্ধানে জানতে পারে, অপহরণ নয়, পুরো ঘটনাটা ছিল সাজানো নাটক। পরে আদালতেও বিষয়টি স্বীকার করেন ওই খতিব। 

এই প্রেক্ষাপটে, পুলিশ সদস্যের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে তিন জায়গায় তিন পোশাকের তিনজন কথিত পুলিশ সদস্যকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যে বলতে শোনা যায়– “গাজীপুরে মুফতি অপহরণ তদন্তে বাংলাদেশ পুলিশ ইসকনের কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি। কিন্তু যারা আজকে এই ইসকন বন্ধের জন্য বেরিয়েছেন, তারা অস্ত্রসস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে মিছিল করেছেন। এবার বুঝুন আসল জঙ্গি কারা? এই ভিডিওটি অনেক শেয়ার করুন; যাতে সারাবিশ্বের মানুষ বুঝতে পারে যে ইসকন কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয়। ওরাই সন্ত্রাসী।”

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরের মুফতি মুহিবুল্লাহ মিয়াজির প্রসঙ্গে পুলিশের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও। 

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। 

এছাড়া, ২৪ সেকেন্ডের আলোচিত ভিডিওটির প্রথম ৮ সেকেন্ডে এক ধরনের ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তিকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। ৯ থেকে ১৫ সেকেন্ডে ভিন্ন ধরনের পোশাক পরা আরেক ব্যক্তিকে বক্তব্য দিতে এবং শেষাংশে আরও এক ব্যক্তিকে অন্য আরেক ধরনের পোশাক পরে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। এদের মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তির পরিহিত পোশাক বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিফর্মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

প্রথম ৮ সেকেন্ডে বক্তব্য দেওয়া কথিত পুলিশ সদস্যের সামনে কয়েকটি মাইক্রোফোন দেখা যায়, যার মধ্যে একটি ‘M News’ নামের হলেও বাকিগুলো স্পষ্ট নয়। এই নামগুলো দিয়ে বাংলাদেশের কোনো মূলধারার গণমাধ্যমের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। একই ব্যক্তির পেছনে ‘Bainplmah Polihe’ লেখা দেখা যায়, যা বাংলাদেশের কোনো থানার সঙ্গে মেলে না। এটি মূলত এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওতে টেক্সট বিকৃতির একটি উদাহরণ, কারণ এআই-তৈরি কনটেন্টে প্রায়ই লেখায় এমন অসংগতি দেখা যায়। ফলস্বরূপ, ভিডিওটিতে ‘Police’ শব্দটি ভুলভাবে ‘Polihe’ হিসেবে প্রদর্শিত হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার ভিডিওটি ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ টুলের ‘AVSRDD (2025)’ মডেল দিয়ে পরীক্ষা করে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই-নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৮ শতাংশ।

Screenshot: Deepfake-o-meter.

উল্লেখ্য, গত আলোচিত ভিডিওটির সাথে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি প্রেস রিলিজের ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। যা গত ২৬ অক্টোবর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়েছে। তবে, উক্ত প্রেস রিলিজে আলোচিত ভিডিওতে থাকা কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, এআই ভিডিওকে গাজীপুরের মুফতি মুহিবুল্লাহ মিয়াজির প্রসঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ড. ইউনূসকে দেশ ধ্বংসের নায়ক বলেননি নাহিদ ইসলাম

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক  নাহিদ ইসলাম বক্তব্য দিচ্ছেন এমন একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল “এই দেশ ধ্বংস করার নায়ক ইউনূস। বললেন, নাহিদ ইসলাম।”

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ৬৩ হাজার বার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে দেশ ধ্বংসের নায়ক বলেননি নাহিদ ইসলাম।  প্রকৃতপক্ষে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন নাহিদ ইসলাম, সে ঘটনার একটি ভিডিওর মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য রয়েছে। ভিডিওতে থাকা নাহিদ ইসলামের পোশাকের রং, তার ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা সাদা টি-শার্ট পরিহিত ব্যক্তি, তার সামনে রাখা সংবাদ মাধ্যমের লোগোযুক্ত মাইক্রোফোনের অবস্থানে মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner 

তবে মূল ভিডিওটির কোথাও ড. ইউনূসকে নিয়ে নাহিদ ইসলামের এমন মন্তব্য শোনা যায়নি। এই ভিডিওতে নাহিদ ইসলাম বলেন, “৩ আগস্ট এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার পর অনেকের সঙ্গে পরামর্শ করে ৪ আগস্ট রাতেই ড. ইউনূসকে সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাব করা হয়।”

Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন নাহিদ ইসলাম। একপর্যায়ে তিনি বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট নতুন সরকার গঠনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করেন তারা। এ সময় ড. ইউনূসকে নতুন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতেও ড. ইউনূসকে নিয়ে নাহিদ ইসলামের এমন কোনো মন্তব্যের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, নাহিদ ইসলাম ড. ইউনূসকে দেশ ধ্বংসের নায়ক বলেছেন দাবিতে ভিন্ন বক্তব্যের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে ; যা মিথ্যা।

 তথ্যসূত্র 

  • Channel24 –  YouTube Video

অপু বিশ্বাসের দাবিতে এআই ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি ‘নতুন স্টাইলে অপু বিশ্বাস।’ ক্যাপশনে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি অপু বিশ্বাসের নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় তৈরি একটি ভিডিওর স্থিরচিত্রকে অপু বিশ্বাসের আসল ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে অপু বিশ্বাসের ফেসবুক পেজফেসবুক প্রোফাইলে পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে,  Bong Portrait নামক টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ১৭ অক্টোবর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর অংশবিশেষের সাথে আলোচিত ছবিটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির প্রথম এক সেকেন্ড পরিমাণ অংশের সাথে আলোচিত ছবিটির মিল রয়েছে। উল্লিখিত অংশের স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে ‘AI-generated’ লেবেল যুক্ত করা আছে, যার অর্থ হলো পোস্টদাতা নিজেই ভিডিওটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি বলে চিহ্নিত করেছেন।

উক্ত অ্যাকাউন্টটির অন্যান্য কন্টেন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এখানে নিয়মিতভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে নির্মিত ভিডিও কন্টেন্ট প্রচার করা হয়। অ্যাকাউন্টটিতে এরকম একাধিক ভিডিও (, খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটির বিষয়ে নিশ্চিত হতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘Hive Moderation ’ মাধ্যমে ছবিটি পরীক্ষা দেখা যায়, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০০ শতাংশ। 

Screenshot: Hive Moderation Website 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওর স্থিরচিত্রকে অপু বিশ্বাসের আসল ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সেনাপ্রধানের নির্দেশে এনসিপি নিষিদ্ধ হওয়ার ভুয়া দাবি প্রচার 

সম্প্রতি অনলাইনে কথিত এক সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেছেন, হাসিনাকে তাড়িয়ে ভুল করেছি ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের নির্দেশে নিষিদ্ধ হলো জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের নির্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিষিদ্ধ হওয়ার দাবি ও শেখ হাসিনাকে তাড়িয়ে ভুল করেছি শীর্ষক উমামা ফাতেমার মন্তব্য করার দাবি সঠিক নয়৷ প্রকৃতপক্ষে, কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কয়েকটি পুরোনো ও অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও প্রচার করে আলোচিত দাবি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত সংবাদ প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করলে, শুরুতে পুলিশে ঘেরা অবস্থায় কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়ার একটি ফুটেজ প্রদর্শিত হয়। উক্ত ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘৫০ লাখ টাকা চাঁদা নিতে গিয়ে ধরা, ৪ সমন্বয়কের সাত দিন রিমান্ড’ শিরোনামে গত ২৭ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত সংবাদ প্রতিবেদনের শুরুর অংশের মিল পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner 

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘বাংলা ট্রিবিউন’ ও ‘জাগোনিউজ২৪’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ জুলাইয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায়, ‘ঢাকার গুলশানে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে গ্রেফতার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের এক নেতার গত ২৭ জুলাই সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আসামিরা হলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাব, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ। জানা গেছে, সম্প্রতি সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এই পাঁচ যুবক। আটকের পর এই পাঁচ জনকে তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

তবে উক্ত ঘটনায় এনসিপিকে নিষিদ্ধ করা বা উমামা ফাতেমার আলোচিত মন্তব্য করার দাবির কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত প্রতিবেদনে একজন সংবাদ উপস্থাপিকাকে বলতে শোনা যায়, ‘সমন্বয়ক পরিচয়ে গতকালের চাঁদাবাজির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি বাদে সারাদেশের সকল কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ‘কেন্দ্র ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি স্থগিত’ শিরোনামে গত ২৭ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত প্রতিবেদনে সংযুক্ত এই সংবাদ উপস্থাপিকার ভিডিও ফুটেজটি পাওয়া যায়। তবে উক্ত প্রতিবেদনেও আলোচিত দাবির কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, কথিত প্রতিবেদনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানীর একটি বক্তব্যের অংশ পাওয়া যায় যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘..আজকের নায়করা ভিলেনেও পরিণত হতে পারে, আমি সাবধান করে দিচ্ছি’।.. উক্ত ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘ফেস দ্যা পিপল’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ জুলাইয়ে অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানীর বক্তব্যের একটি ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়, যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত সংবাদ প্রতিবেদনে প্রদর্শিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘২০২৪ এর জুলাই-আগস্টে হওয়া গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি বিপ্লবের পথ উন্মোচিত হয়েছে। এবং গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই পথ দীর্ঘ হবে এবং এই দীর্ঘ পথে আজকের নায়করা ভিলেনেও পরিণত হতে পারে যদি এদেশের মানুষের আকাঙ্খা, স্বপ্ন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়।’ বক্তব্যে তিনি ২০২৪ এর আন্দোলনের নানা বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান নিয়ে কথা বলাসহ নানা বিষয় তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তবে, কোথাও উক্ত ঘটনায় এনসিপিকে নিষিদ্ধ করা বা উমামা ফাতেমার আলোচিত মন্তব্য করার দাবির কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, কথিত সংবাদ প্রতিবেদনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশীদের দায় স্বীকার করার একটি ফুটেজেরও সংযুক্তি পাওয়া যায়। উক্ত ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘নিউজ২৪’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথিত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ভিডিও ফুটেজের তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। ভিডিওতে রিফাত রশীদ বলেন, ‘আমরা দায় স্বীকার করেছি এবং দায় স্বীকার করে সারা বাংলাদেশের সমস্ত যে এক্সিসটিং সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে আমরা সেটা স্থগিত করে দিয়েছি’। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম ঘিরে সমালোচনার মুখে গত ২৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারা দেশের সব কমিটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত করার ঘোষণার ভিডিও। এর সাথেও আলোচিত দাবির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

এছাড়াও, কথিত প্রতিবেদনটিতে আরো নানা অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও ফুটেজের সংযুক্তি পাওয়া যায় যার কোনোটার সাথে আলোচিত দাবির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও আলোচিত দাবির সপক্ষে মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের নির্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং শেখ হাসিনাকে তাড়িয়ে ভুল করেছি শীর্ষক মন্তব্য উমামা ফাতেমা করেছেন শীর্ষক দাবিগুলো মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে উদ্ধৃত করে ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরতে রাজি কিন্তু সার্বিক বিবেচনা করে আমরা যেতে দিচ্ছি না’ শিরোনামে একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরতে রাজি কিন্তু সার্বিক বিবেচনা করে আমরা যেতে দিচ্ছি না’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, একটি স্যাটায়ার পেজের ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট থেকে সূত্রপাত হওয়া মন্তব্যকে আসল মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যসূত্র পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে ‘Iqbal Tv’ নামক একটি লোগো খুঁজে পাওয়া যায়। পাশাপাশি ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৭ অক্টোবরের কথা উল্লেখ পাওয়া যায়। এরই সূত্র ধরে ‘Iqbal Tv’ নামক একটি ফেসবুক পেজে গত ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত এ সংক্রান্ত মূল ফটোকার্ডটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook  

‘Iqbal Tv’ পেজটির পরিচিতি অংশ থেকে জানা যায়, এই পেজটি বিনোদনের উদ্দেশ্যে পরিচালনা করা হয়। তাই এটির কোনো পোস্টকে গুরুত্ব না দিতে বলা হয়েছে।

ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে এমন কোনো মন্তব্য করলে তা গণমাধ্যমে ঢালাওভাবে প্রচার হওয়ার কথা। তবে ভারত কিংবা বাংলাদেশের কোনো গণমাধ্যমেই আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

মেট্রোরেলে আগুন দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার 

গত ২৬ অক্টোবর ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়লে এর আঘাতে মারা যান আবুল কালাম নামের শরীয়তপুরের এক ব্যক্তি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি মেট্রোরেলে আগুন লাগার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, একটি মেট্রো ট্রেন লাইনের ওপর কাত হয়ে পড়ে আছে এবং আগুন জ্বলছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি মেট্রোরেলে আগুন লাগার কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিওর মাধ্যমে এ দাবি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে, এআই টুল ‘Sora’ এর নাম দেখতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি, প্রচারিত ভিডিওটিতে ট্রেনের কাত হয়ে ঝুলে থাকা অবস্থান, আগুন লাগার দৃশ্য, ক্যামেরা অ্যঙ্গেলসহ পারিপার্শ্বিক অবস্থাতে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়। 

এছাড়াও, অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি আসল হওয়ার সপক্ষে মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে, মেট্রোরেলের অবকাঠামোর কোনো অংশ ভেঙে পড়লে এবং তাতে আগুন লাগলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে ব্যপকভাবে প্রচার করা হতো। 

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘AVSRDD (2025)’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ভিডিওটি ভুয়া বা এআই তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ। 

Screenshot : DeepFake-O-Meter 

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে মেট্রোরেলে আগুন লাগার আসল দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

সালমান খানকে পাকিস্তানে নিষিদ্ধের খবরটি ভুয়া

গত ১৭ অক্টোবরে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘জয় ফোরাম ২০২৫’ নামক একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন বলিউড তারকা সালমান খান, শাহরুখ খান ও আমির খান৷ কথার এক পর্যায়ে সালমান খান বলেন, ‘এই মুহূর্তে যদি আপনি কোনো হিন্দি সিনেমা বানিয়ে সৌদি আরবে মুক্তি দেন, তা সুপারহিট হবে। আপনি যদি তামিল, তেলেগু বা মালয়ালম সিনেমা বানান, সেগুলো শত কোটি টাকার ব্যবসা করবে, কারণ এখানে এখন বিভিন্ন দেশের অসংখ্য মানুষ কাজ করছে। এখানে বালুচিস্তান থেকে মানুষ আছে, আফগানিস্তান থেকে আছে, পাকিস্তান থেকেও অনেকে এসেছে—সবাই এখানে কাজ করছে।’ সালমান খানের উক্ত বক্তব্য ঘিরে নেট দুনিয়ায় বেশ আলোচনা চলছে৷ দাবি করা হচ্ছে বেলুচিস্তান পাকিস্তানের প্রদেশ হওয়া সত্ত্বেও দেশের নাম হিসেবে আলাদা উল্লেখ করে বেলুচিস্তানকে ভিন্ন দেশ দাবি করেছেন সালমান খান। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি গণমাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, ‘সম্প্রতি বালুচিস্তানকে আলাদা দেশ হিসেবে উল্লেখ করায় সালমানকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ তকমা দিয়ে নিষিদ্ধ করলো পাক সরকার। পাকিস্তান সরকার তাকে ১৯৯৭ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সিডিউল-৪ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই তালিকাকে সাধারণভাবে কালো তালিকা বলা হয়,যেখানে সন্ত্রাসবাদ বা নিরাপত্তাজনিত কারণে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নাম থাকে।’

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন: সময় টিভি, আরটিভি, যমুনা টিভি (ইউটিউব), চ্যানেল২৪, এনটিভি, চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা, দেশ টিভি, কালবেলা, বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কণ্ঠ, দেশ রূপান্তর, যায় যায় দিন, দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক আজাদী, বাংলানিউজ২৪, জাগোনিউজ২৪, ঢাকা মেইল, ঢাকা প্রকাশ, রাইজিং বিডি, বার্তা২৪, রূপালী বাংলাদেশ (ইউটিউব), বাহান্ন নিউজ, ঢাকা জার্নাল, প্রতিদিনের কাগজ, বার্তা বাজার, খবরের কাগজ, সুখবর, কর্পোরেট সংবাদ, তালাশ বিডি, জনতার কণ্ঠ, জয়যুগান্তর,দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ, বাংলা ব্রিফ, দৈনিক ডেসটিনি, ভিওডি বাংলা, দৈনিক সরোবর, সকালের আলো

উল্লেখ্য, বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে আলোচিত দাবিটি মূলত ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সালমান খানকে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদিত একটি বিজ্ঞপ্তির সূত্র ধরে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পাকিস্তান সরকারের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট, বালুচিস্তান সরকারের ওয়েবসাইট, পাকিস্তান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে পাকিস্তান সরকারের সাথে সম্পর্কিত কোনো ওয়েবসাইটেই আলোচিত দাবির উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, বেশিরভাগই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্ট ও একটি বিজ্ঞপ্তির ছবিকে সূত্র দেখিয়ে আলোচিত দাবি প্রচার করেছে। একই বিজ্ঞপ্তির ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টেও প্রচার হতে দেখা যায়।

পরবর্তী পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞপ্তিটিতে একাধিক অসঙ্গতি নজরে আসে। প্রথমত, বিজ্ঞপ্তির তারিখ হিসেবে ১৬ অক্টোবর উল্লেখ করা হলেও সালমান খান সংশ্লিষ্ট মন্তব্যটি করেন তারও একদিন পর, অর্থাৎ ১৭ অক্টোবর। দ্বিতীয়ত, বিজ্ঞপ্তিটিতে একাধিক বানান ভুল রয়েছে। যেমন: ‘BALOCHISTAN’ এর জায়গায় ‘BALOCIIISTAN’, ‘Terrorism’ এর জায়গায় ‘Terrarism’, ‘affiliated’ এর জায়গায় ‘aftilisted’ এবং ‘concerned’ এর জায়গায় ‘concemed’ লেখা হয়েছে। এছাড়া, সালমান খানের নামে যে CNIC নম্বরটি ব্যবহার করা হয়েছে তা ১১ সংখ্যার, যেখানে প্রকৃত CNIC সাধারণত ১৩ সংখ্যার হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, CNIC (Computerized National Identity Card) পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ব্যবহৃত জাতীয় পরিচয়পত্র, যা একজন ভারতীয় নাগরিক সালমান খানের থাকার কথা নয়। তাছাড়া, উল্লিখিত CNIC নম্বরটি পাকিস্তান সরকারের ‘CNIC Information’ ওয়েবসাইটে যাচাই করেও ভুল হিসেবে পাওয়া গেছে।
আলোচিত বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Baloch Women Forum’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে গত ২১ অক্টোবরে প্রচারিত একটি বিজ্ঞপ্তির ছবি পাওয়া যায়। বিজ্ঞপ্তিটিতে তিনজন ব্যক্তিকে আলোচিত ১৯৯৭ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সিডিউল-৪ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। উক্ত বিজ্ঞপ্তির নাম্বার, তারিখ, সইয়ের অবস্থানের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির নাম্বার, তারিখ, সইয়ের অবস্থানের হুবহু মিল পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির ছবিটি  তৈরি করা হয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়া, পাকিস্তান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ফ্যাক্টচেক বিভাগ ২৬ অক্টোবর এক্স-এ প্রকাশিত এক পোস্টে জানায়, পাকিস্তানের কোনো সরকারি রেকর্ড বা বিজ্ঞপ্তিতে সালমান খানের নাম চতুর্থ সূচিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার তথ্য নেই। যাচাইযোগ্য প্রমাণ না থাকায় দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সুতরাং, বেলুচিস্তান নিয়ে মন্তব্যের জেরে সালমান খানকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ তকমা দিয়ে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র