Home Blog Page 8

ভুয়া অ্যাকাউন্টের পোস্টকে সূত্র দেখিয়ে ইরান সরকারের নামে ট্রাম্পবিরোধী মন্তব্য প্রচার গণমাধ্যম

১৩ জুন ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের হামলার পর ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে উদ্দেশ্য করে একাধিক মন্তব্য করেছেন। এর জবাবে ইরান সরকারের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে ‘মি. ডোনাল্ড ট্রাম্প! আপনি যদি না জানেন আমরা কারা, তাহলে কারবালার ইতিহাস পড়ে দেখুন’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই দাবি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

Screenshot: X. 

এ দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন: যুগান্তর, আরটিভি, এনটিভি, জাগোনিউজ২৪ (ইউটিউব), সময়ের কণ্ঠস্বর, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস, ঢাকা প্রকাশ, বিডি২৪ রিপোর্ট এবং নিউজজি২৪ (ইউটিউব)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে

এক্সে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইরান সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে ‘কারবালার ইতিহাস জানুন’ এমন কোনো মন্তব্য করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, এই দাবি ‘Islamic Republic of Iran’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্ট এবং ‘Iran Military’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সূত্রে প্রচারিত হলেও এই অ্যাকাউন্টগুলো ইরান সরকার বা সামরিক বাহিনীর অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট নয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এই দাবির সূত্র হিসেবে ‘Islamic Republic of Iran’ নামের এক্স অ্যাকাউন্ট এবং ‘Iran Military’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্ট উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে এই পোস্টগুলো এম্বেড করা অবস্থায় রয়েছে।

এই সূত্র ধরে এক্স প্ল্যাটফর্মে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায়, উক্ত এক্স অ্যাকাউন্টটি প্ল্যাটফর্মটির নীতিমালা লঙ্ঘনের কারণে অপসারণ করা হয়েছে। তবে অনলাইন আর্কাইভে অ্যাকাউন্টটির একটি সংরক্ষিত সংস্করণ পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টটির বায়োতে “independent” এবং “unaffiliated” শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায় এটি কোনো সরকারি বা সংশ্লিষ্ট সংস্থার অ্যাকাউন্ট নয়।

এক্স-এর নীতিমালা অনুযায়ী, প্যারোডি, ধারাভাষ্য বা ফ্যান অ্যাকাউন্টগুলোর নাম ও বায়োতে “প্যারোডি”, “ফেক” বা “ফ্যান” শব্দ অন্তর্ভুক্ত করতে হয়, যাতে এগুলো মূল ব্যক্তি বা সংস্থার অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট হিসেবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রোফাইলটিতে ব্লু টিক থাকলেও সেটি এক্স-এর সাধারণ পেইড ভেরিফিকেশন, যা যে কেউ অর্থ পরিশোধ করে পেতে পারে। এক্স-এর নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য নির্ধারিত টিক চিহ্ন হলো গ্রে রঙের।

অর্থাৎ, এটি ইরান সরকারের কোনো অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট নয়।

একইভাবে, ‘Iran Military’ নামের ফেসবুক প্রোফাইলটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রোফাইলে ইরানের জাতীয় পতাকা ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এটি যদি ইরানের সামরিক বাহিনীর অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট হতো, তাহলে সেখানে বাহিনীর নিজস্ব লোগো ব্যবহৃত থাকার কথা ছিল। এছাড়া, প্রোফাইলের বায়োতেও “independent” ও “unaffiliated” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা নির্দেশ করে এটি কোনো অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট নয়।

Screenshot: Facebook. 

এছাড়া, ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সিতে ১৪ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সামরিক বাহিনীর দেশীয় বা বিদেশী সামাজিক মাধ্যমে কোনো অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট নেই।

সুতরাং, ইরান সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে ‘কারবালার ইতিহাস জানুন’ শীর্ষক মন্তব্য করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রাজধানীতে চলন্ত বাসে অগ্নিকাণ্ডের সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে ২০২৩ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি “রাজধানী ঢাকায় চলন্ত বাসে আগুন জ্বলছে!! বাংলাদেশ কে কোথায় কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে কেউ জানেনা!! জামাত বিএনপি সারা দেশে খুন হত্যা লুটপাট অগ্নী সংযোগ নারী ধর্ষণ করে যাচ্ছে, শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য!!” শিরোনামসহ ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে বাসে অগ্নিসংযোগের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীতে চলন্ত বাসে আগুন দেওয়ার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং, ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁও তালতলায় বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে অগ্নি সংযোগের ঘটনায় ধারণকৃত দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে দেশিয় মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর “রাজধানীতে বিহঙ্গ পরিবহনের বাসে আগুন | Bus fire | Jamuna TV” শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যমুনা টিভির ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বরে “রাজধানীতে আরও দুটি বাসে আগুন” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর থেকে সারাদেশের ১১ জায়গায় বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে ১৮ নভেম্বর (২০২৩) সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আগারগাঁও তালতলায় বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে গুলিস্তানে ফ্লাইওভারের কাছে যাত্রাবাহী আরও একটি বাসে আগুন দিয়ে সটকে পড়ে দুর্বৃত্তরা। 

এছাড়া, সেসময়ে রাজধানীতে বাসে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে দেশীয় একাধিক মূলধারার (জাগো নিউজ২৪, এটিএন বাংলা নিউজ, ঢাকা পোস্ট) সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার হতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

সুতরাং, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে রাজধানীতে একটি বাসে দুর্বৃত্তদের দেয়া অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ‘রাজধানী ঢাকায় চলন্ত বাসে আগুন জ্বলছে’ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

সাধারণ মানুষ শিবলী সাদিককে আবারও এমপি হিসেবে দেখতে চায় দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, সাধারণ মানুষ আবারও এমপি শিবলী সাদিক ভাইকে এমপি হিসেবে দেখতে চায় শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে বুম মাইক্রোফোন হাতে একজন রিপোর্টারকে বলতে শোনা যায়, “সাধারণ মানুষ দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলী সাদিক ভাইকে আবার এমপি হিসেবে চায়।” এই বলে তিনি বুম পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির দিকে দিলে, ব্যক্তিটি বলেন, “হ্যাঁ, আমরা তাঁকেই চাই।” এই কথা বলার সাথে সাথে রিপোর্টারের পাশে থাকা অন্যান্য ব্যক্তিরা হাততালি দেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাধারণ মানুষ দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক এমপি শিবলী সাদিক ভাইকে আবার এমপি হিসেবে চায় দাবিতে প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিও রিপোর্টের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওতে এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। যেমন – রিপোর্টারের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের হাত তালি দেওয়ার সময় হাতের অস্বাভাবিক নড়াচড়া।

পাশাপশি ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

Indicated by Rumor Scanner

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে ভিডিওটি এআই (AI) কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল ‘Cantilux’ দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮১ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়।

Screenshot From Cantilux

সুতরাং, দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক এমপি শিবলী সাদিককে সাধারণ জনগণ আবারও এমপি হিসেবে চায় দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি এককটি ভিডিও রিপোর্টকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • AI Content Detection Tool: Cantilux
  • Rumor Scanner’s Analysis

জুনে ৩১১ ভুল তথ্য শনাক্ত

0

চলতি বছরের জুন মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ৩১১টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইটে গত জুন মাসে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক থেকে গণনাকৃত এই সংখ্যার মধ্যে রাজনৈতিক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি (১১৫) ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে, যা মোট ভুল তথ্যের ৪০ শতাংশ। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিষয়ে ৮৫টি, জাতীয় বিষয়ে ৪৫টি, বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ে ১৮টি, প্রতারণা বিষয়ে ১০টি, খেলাধুলা বিষয়ে পাঁচটি, ধর্মীয় বিষয়ে সাতটি, শিক্ষা বিষয়ে তিনটি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে জুনে।

এসব ঘটনায় ভিডিও কেন্দ্রিক ভুলই ছিল সবচেয়ে বেশি, ১৫৩টি। এছাড়া তথ্য কেন্দ্রিক ভুল ছিল ১১০টি এবং ছবি কেন্দ্রিক ভুল ছিল ৪৮টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে মিথ্যা হিসেবে ২০৯টি, বিকৃত হিসেবে ৬৪টি এবং বিভ্রান্তিকর হিসেবে ৩৮টি ঘটনাকে সাব্যস্ত করা হয়েছে। 

প্লাটফর্ম হিসেবে গত মাসে ফেসবু্কে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, সংখ্যার হিসেবে যা ৩০৩টি। এছাড়া ইনস্টাগ্রামে ৬৬টি, ইউটিউবে ৬৮টি, এক্সে ১৯টি, টিকটকে ২৩টি এবং লিংকডইনে অন্তত একটি ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। ভুল তথ্য প্রচারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি দেশের গণমাধ্যমও। ১০টি ঘটনায় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।  

বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য প্রচারের বিষয়টি গেল বেশ কয়েক মাস ধরে আলোচনায় থাকলেও সম্প্রতি তা কিছুটা হ্রাস পেতে দেখা যাচ্ছে। জুন মাসে সাতটি সাম্প্রদায়িক অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর মধ্যে ছয়টি ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় পরিচয়ধারী অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গেল মাসে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জড়িয়ে তিনটি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। ভুলতথ্যগুলোর ধরণ বুঝতে এগুলোকে রিউমর স্ক্যানার দুইটি আলাদা ভাগে ভাগ করেছে৷ সরকারের পক্ষে যায় এমন ভুল তথ্যের প্রচারকে ইতিবাচক এবং বিপক্ষে যায় এমন ভুলতথ্যের প্রচারকে নেতিবাচক হিসেবে ধরে নিয়ে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, এসব ভুলতথ্যের সবগুলোতেই সরকারকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

জুন মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ১৭টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। সবগুলোতেই তাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে জড়িয়ে তিনটি (সবগুলোই বিপক্ষে), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে জড়িয়ে তিনটি (সবগুলোই বিপক্ষে), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে), ফরিদা আখতারকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে) এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে দুইটি (সবগুলোই বিপক্ষে) ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে সর্বত্র। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গেল মাসে ২৯টি অপতথ্যের প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

রিউমর স্ক্যানার গেল মাসের ফ্যাক্টচেকগুলো বিশ্লেষণে দেখেছে, এই সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), তার অঙ্গসংগঠন এবং নেতাকর্মীদের জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি অপতথ্য (৪৯টি) প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে দল হিসেবে বিএনপিকে জড়িয়ে ১৬টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে, যার সবগুলোতেই দলটিকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। এই সময়ে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে), ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে চারটি (সবগুলোই বিপক্ষে) এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে একটি (বিপক্ষে) অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে। দলটির ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে জড়িয়ে এই সময়ে একটি (বিপক্ষে) অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে।

বিএনপির পর কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি (২৪টি) অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে ছয়টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে যার ৮৩ শতাংশই দলটির পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে এই সময়ে ১১টি অপতথ্য (৮২ শতাংশই পক্ষে) প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়া দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে জড়িয়ে জুনে একটি অপতথ্য (পক্ষে) শনাক্ত করা হয়েছে। 

এছাড়া, জুন মাসে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, তার অঙ্গসংগঠন এবং নেতাকর্মীদের জড়িয়ে ১৫টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে দল হিসেবে জামায়াতকে জড়িয়ে ছয়টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে, যার সবগুলোই দলটিকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানকে জড়িয়ে এই সময়ে দুইটি অপতথ্য (৫০ শতাংশ বিপক্ষে) প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। দলটির ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এই সময়ে চারটি (সবগুলোই বিপক্ষে) অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও দলটির নেতাকর্মীদের জড়িয়ে গত মাসে ১৮টি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দল হিসেবে এনসিপিকে জড়িয়ে পাঁচটি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে, যার সবগুলোই দলটিকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। এই দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে গত মাসে একটি (বিপক্ষে) অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে গত মাসে। এছাড়া দলটির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহকে জড়িয়ে দুইটি (সবগুলোই বিপক্ষে), সারজিস আলমকে জড়িয়ে চারটি (সবগুলোই বিপক্ষে), তাসনিম জারাকে জড়িয়ে দুইটি (সবগুলোই বিপক্ষে), নুসরাত তাবাসসুমকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে), তাজনূভা জাবীনকে জড়িয়ে একটি (বিপক্ষে) এবং সারোয়ার তুষারকে জড়িয়ে দুইটি (সবগুলোই বিপক্ষে) অপতথ্যের প্রচার দেখা গেছে।  

ভুল তথ্যের রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোও। গেল মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জড়িয়ে চারটিসহ এই বাহিনীকে জড়িয়ে পাঁচটি ভুল তথ্য প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি ময়নুল ইসলামকে জড়িয়ে একটিসহ এই বাহিনীকে জড়িয়ে চারটি ভুল তথ্য এবং র‌্যাবকে জড়িয়ে একটি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার।    

গেল মাসের ভুল তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, এই সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ভুয়া কনটেন্ট শনাক্ত হয়েছে ৪১টি। একই সময়ে ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত করা হয়েছে পাঁচটি। 

গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতের সূত্রপাত হয়। এরপর হামলা, পাল্টা জবাব ও হুমকির মধ্যে ১২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর যুদ্ধবিরতির খবর আসে।  এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে বহু ভুল তথ্য ছড়ায়, নিয়মিত প্রচার হয় পুরোনো ছবি কিংবা ভিন্ন ঘটনার ভিডিও। ভুয়া ছবি-ভিডিও তৈরিতে ব্যবহার হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিও। এসব ঘটনাবলীকে কেন্দ্র করে রিউমর স্ক্যানার গেল মাসে এ সংক্রান্ত ৭৫টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। 

গত মাসে গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ও ভুয়া ফটোকার্ড ব্যবহার করে ৫২টি ঘটনায় দেশি ও বিদেশি ২৭টি সংবাদমাধ্যমকে জড়িয়ে ৫২টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে ভুল তথ্য প্রচারে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলার নাম সবচেয়ে বেশি (৭) ব্যবহার করা হয়েছে। গণমাধ্যমটির পর একাত্তর টিভি, কালের কণ্ঠ ও ইত্তেফাক (চারটি করে) এর নাম বেশি ব্যবহার করা হয়েছে।  

বার্তা প্রেরক
তানভীর মাহতাব আবীর
জ্যেষ্ঠ ফ্যাক্টচেকার,
রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ। 
[email protected]

গণ অধিকার পরিষদের কথিত নেত্রী তন্নি দাবিতে ভিনদেশি নারীর এডাল্ট ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক নারীর একটি এডাল্ট ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মহিলা সম্পাদিকা তন্নির।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গণ অধিকার পরিষদের কোনো নেত্রী কিংবা কর্মীর নয় বরং, ইন্টারনেট থেকে ‘প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জী’ নামের ভিনদেশি এক নারীর ভিডিও সংগ্রহ করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখায় তন্নি নামের কোনো মহিলা সম্পাদিকা নেই।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘priyankabanerjee569’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৫ এপ্রিলে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত নারীর আরো অনেক ভিডিও পাওয়া যায়। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি ‘প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জী’ নামক উক্ত নারীর। পরবর্তীতে উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটির অ্যাবাউট সেকশন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় অ্যাকাউন্টটি মূলত ভারত থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি গণ অধিকার পরিষদের কোনো নারী কর্মী বা নেত্রীর নয়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখায় তন্নি নামের কোনো মহিলা সম্পাদিকা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নিশ্চিত করেন যে, তন্নি নামে গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখায় কোনো মহিলা সম্পাদিকা নেই।

সুতরাং, ইন্টারনেট থেকে ‘প্রিয়াঙ্কা ব্যানার্জী’ নামের ভিনদেশি এক নারীর এডাল্ট ভিডিও সংগ্রহ করে তা গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কথিত মহিলা সম্পাদিকা তন্নির ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • priyankabanerjee569 – Instagram Post 
  • Statement of Nazim Uddin, President, Dhaka Metropolitan South, Gono Odhikar Parishad
  • Rumor Scanner’s analysis

আর্টিস্টের তৈরি শিল্পকর্মকে মানব দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে বানানো আসল চেয়ার দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, “মানুষ থেকে আসবাব: ইতিহাসের অন্যতম বিকৃত মানসিকতার গল্প” শিরোনামে সিরিয়াল কিলার চেয়ার দাবিতে একটি তথ্য সম্বলিত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত চেয়ারের ছবিটি মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে তৈরি নয়। বরং, কায়লা এরেনা নামক এক আর্টিস্টের তৈরি শিল্পকর্মকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে থাকা ছবিটি রিভার্স সার্চের মাধ্যমে Kayla Arena Fx নামক ফেসবুক একাউন্টে ২০১৬ সালের ২২ মে “This is my first Ed Gein chair which is still reaching millions of people to this day” শিরোনামে প্রকাশিত পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ছবিটির হুবহু মিল দেখতে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে থেকে জানা যায়, কায়লা এরেনা নামক এই আর্টিস্ট এড গেইন চেয়ার নামে একটি খুবই জনপ্রিয় জিনিস তৈরি করেছেন, যা অনেকেই পছন্দ করেছে এবং আশানুরূপ বিক্রি হয়েছে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে AFP Fact Check এর ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, এটি মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে তৈরি কোনো চেয়ার নয়।

এছাড়া, কায়লা এরেনার ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণে অনুরূপ একাধিক (এক, দুই, তিন) শিল্পকর্ম পাওয়া যায়, যা বিক্রির জন্য প্রদর্শনরত থাকতে দেখা যায়। 

উল্লেখ্য, এড গেইন ছিলেন একজন আমেরিকান সিরিয়াল কিলার। যার ভয়ঙ্কর অপরাধ বিশ্বব্যাপী কুখ্যাতি অর্জন করেছিল এবং অসংখ্য বই এবং হরর ফিল্মকে অনুপ্রাণিত করেছিল। 

সুতরাং, আর্টিস্টের তৈরি একটি শিল্পকর্মকে মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়ে তৈরি করা আসল চেয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূস পদত্যাগের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি, হঠাৎ পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস শীর্ষক দাবিতে কিছু পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। প্রচারিত পোস্টগুলোতে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে। বেশিরভাগ পোস্টগুলোই করা হয়েছে গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করে খোলা ভুয়া ফেসবুক গ্রুপে।

আলোচিত দাবিতে অন্তত ৭টি মূলধারার গণমাধ্যমের নামে খোলা ভুয়া ফেসবুক গ্রুপ থেকে এই দাবিটি প্রচার হতে দেখা গেছে। গণমাধ্যমগুলো হলো- বাংলাদেশ প্রতিদিন, এনটিভি, একাত্তর টিভি, আরটিভি, সময় টিভি, এটিএন বাংলা নিউজ, আমার দেশ এই গ্রুপগুলোতে সম্মিলিতভাবে প্রায় ৫,৫৬,৫০০ জন সদস্য রয়েছেন।

প্রচারিত পোস্টগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা গেছে। সবগুলো পোস্টই সময় টিভির লোগো ব্যবহার করে ‘সময়’ নামে খোলা একটি ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করেননি বরং, কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ওয়েবসাইটের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। লিংকটিতে ক্লিক করলে Bangla News Ache নামক একটি ওয়েবসাইটে ‘হঠাৎ পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে নিয়ে যায়। তবে, প্রতিবেদনটিতে ড. ইউনূসের একটি ছবি ছাড়া আর কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে Bangla News Ache নামক ওয়েবসাইটটি ভূঁইফোড় ওয়েবসাইট বলে প্রতীয়মান হয়।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করলে তা স্বাভাবিকভাবে গণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার হবার কথা। তবে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও উক্ত দাবির সত্যতা মেলেনি।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা পদে আছেন।

এছাড়া, আজ [৩০ জুন] অনলাইন সংবাদ মাধ্যম জাগোনিউজ২৪.কম এর ওয়েবসাইটে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি চালু কাল, উদ্বোধন করবেন ড. ইউনূস’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সাহসী শিক্ষার্থীদের স্মরণে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি’ চালু করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। শহীদদের স্মৃতিকে সম্মান জানানো ও চিরস্মরণীয় করে রাখাই এ বৃত্তির মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে এ শিক্ষাবৃত্তির উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ মনিটরিং ও মূল্যায়ন দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।’

অর্থাৎ, ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবেই আগামীকাল রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসির বৈঠক নয়, ভিডিওটি ইপি প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আইসিসি পরিদর্শনের

0

সম্প্রতি ‘জুলাই আন্দোলন এবং ৫ আগস্টের সন্ত্রাসী হত্যা হামলা সহ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মামলা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি বৈঠকে বসেছেন নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট…..’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বৈঠকের নয় বরং, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) এ আইসিসির প্রেসিডেন্ট বিচারক পিওতর হফমান্সকি এর সাথে সাক্ষাতের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত ভিডিওটির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ICC-এর প্রেসিডেন্ট বিচারক পিওতর হফমান্সকি এবং ICC প্রসিকিউটর করিম এএ খান কেসির সাথে দেখা করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এক্স হ্যান্ডেলে ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও ও এর ক্যাপশন থেকেও একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়৷ 

অন্যদিকে, পূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশেমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের এক নারীর আওয়ামী লীগের হয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রভাবশালী ভূমিকা পালনের ভুয়া দাবি করা হলে এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে।

সুতরাং, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বৈঠকের ভিডিও দাবিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পরিদর্শনের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • European Parliament – Website
  • International Criminal Court – X Post 

প্রচারিত ছবিগুলো ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণের দৃশ্যের নয়

0

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশে কোনো একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মদদে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে বলে সরাসরি মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ন্যাটো…..’ ক্যাপশনে ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণ দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণের নয় বরং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের প্যারিসে ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী রচিদা দাতির সাথে সাক্ষাতের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর পক্ষ ‘বাংলাদেশে কোনো একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মদদে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে’ বলে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদ সংস্থা WAM এর ওয়েবসাইটে গত ১০ মার্চ ‘Abdullah bin Zayed meets with French Minister of Culture and attends signing of memorandum of understanding between the two countries’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাথে প্রচারিত ছবিগুলোর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদন সূত্র জানা যায়, গত ১০ মার্চ ফ্রান্সের প্যারিসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী রচিদা দাতির মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করতে বৈঠক হয়। বৈঠকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী রিম বিনতে ইব্রাহিম আল হাশিমি; প্রতিমন্ত্রী নৌরা বিনতে মোহাম্মদ আল কাবি; অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ক মন্ত্রীর সহকারী সাইদ মুবারক আল হাজারি; ফাহাদ সাইদ আল রাকবানি; এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং ভ্যাটিকানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনাবাসী রাষ্ট্রদূত ওমর সাইফ ঘোবাশ উপস্থিত ছিলেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ১০ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রেস রিলিজেও একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিগুলো ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকের নয়। 

এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নন্যাটোর ওয়েবসাইটে ‘বাংলাদেশে কোনো একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মদদে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে’ শীর্ষক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অন্যদিকে, পূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশেমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের এক নারীর আওয়ামী লীগের হয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রভাবশালী ভূমিকা পালনের ভুয়া দাবি করা হলে এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে।

সুতরাং, ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণের ছবি দাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের প্যারিসে ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী রচিদা দাতির সাথে সাক্ষাতের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Emirates News Agency-WAM – Website
  • United Arab Emirates Ministry of Foreign Affairs – Website 

দিনাজপুরের কথিত মুখ্য সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা উপমার ভিডিও দাবিতে ভিন্ন নারীর এডাল্ট ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুরের মুখ্য সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা উপমার ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুর কিংবা অন্য কোনো এলাকার নারী সমন্বয়কের নয়। এছাড়া ভিডিওর নারীর নাম সাদিয়া সুলতানা উপমা নয়। প্রকৃতপক্ষে, ফারহু জারা নামের আরেক বাংলাদেশি নারীর এডাল্ট ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে zaf_zara00 ইউজারনেমের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৯ মে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে থাকা ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতেই একই নারীকে একই পোশাক ও অঙ্গভঙ্গিতে আয়নার সামনে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও ভিডিওটি ব্যতীত পোস্টটিতে থাকা ছবিগুলোতেও ওই নারীকে একই শাড়িতে দেখতে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওর নারীর নাম ফারহু জারা। এছাড়াও তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি থেকে প্রাপ্ত তার ফেসবুক আইডি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, তিনি একজন বাংলাদেশি।

এছাড়াও অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে জুলাই আন্দোলনের সময় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করতে দেখা যায়। উক্ত শেয়ার পোস্ট ব্যতীত আন্দোলন সংক্রান্ত আর কোনো পোস্ট বা এক্টিভিটি তার প্রোফাইল লক্ষ্য করা যায়নি। পাশাপাশি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এই নারীর সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য প্রমান মেলেনি।

এছাড়া, অনুসন্ধানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাদিয়া সুলতানা উপমা নামের কোনো নারী সমন্বয়ক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুরের কথিত মুখ্য সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা উপমার ভিডিও দাবিতে ভিন্ন আরেক নারীর এডাল্ট ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Farhu Zara Instagram Account Post
  • Farhu Zara Facebook Account
  • Rumor Scanner’s Analysis