Home Blog Page 7

নুরকে দেখতে মির্জা ফখরুলের হাসপাতালে যাওয়ার এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের 

গতকাল (২৯ আগস্ট) রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পার্টি এবং গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের পর যৌথবাহিনীর লাঠিপেটায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।

এরই প্রেক্ষিতে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আহত ভিপি নুরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে নুরুল হক নুর আহত পরবর্তী ঘটনার নিন্দা জানালেও তাকে দেখতে হাসপাতালে যাননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রকৃতপক্ষে, এটি ২০২৩ সালের আগস্টের ভিডিও। সেসময় ছাত্রলীগের হামলায় আহত নুরুল হক নুরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন এই বিএনপি নেতা।

অনুসন্ধানে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বিএনপির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলায় আহত নুরুল হক নুরকে দেখতে হাসপাতালে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একটি দীর্ঘতম সংষ্করণ।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হয়, ‘৩ আগস্ট, ২০২৩ বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলায় আহত গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরকে দেখতে ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।’

সেসময় দৈনিক ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলেও একই ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে ইত্তেফাের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হন নুরুল হক নুর। পরদিন অর্থাৎ, ৩ আগস্ট  হাসপাতালে নুরকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

অর্থাৎ, নুরুল হক নুরকে হাসপাতালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেখতে যাওয়ার এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্টের।

পরবর্তীতে, গত ২৯ আগস্ট নুরের আহত হওয়ার পরবর্তী সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাসপাতালে নুরকে দেখতে যাওয়ার সপক্ষে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, হাসপাতালে দেখতে না গেলেও এই ঘটনায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল নিন্দা জানিয়েছেন।

সুতরাং, নুরুল হক নুরকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার ২০২৩ সালের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

অপহরণের টাকার জন্য শিশুকে বিএনপি নেতার হত্যার দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, “অপহরণের পরে টাকা না দেওয়ায়, শিশুর লাশ পাওয়া গেলো বিএনপির নেতার বাড়িতে চালের ড্রামের ভিতরে।” দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চালের ড্রাম থেকে শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং ভিডিওর ঘটনার সাথে বিএনপি নেতার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, এটি ২০২২ সালে যশোরে প্রতিবেশীর ঘরের চালের ড্রামে পাওয়া শিশুর লাশের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে “আমাদের তুলপাই” নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২২ সালের ২ অক্টোবর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালী গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এক প্রতিবেশী ৪ বছরের কন্যাসন্তানকে’ হাত-পা বেঁধে হত্যা করে চালের ড্রামে রেখে দিয়েছে। প্রতিবেশীর চাল রাখা ড্রাম থেকে নিখোঁজ শিশুর হাত পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।

উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২ অক্টোবর “প্রতিবেশী নারীর ঘরের চালের ড্রাম থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালে যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালী গ্রামে বাক্প্রতিবন্ধী শিশুকে ‘পাগল’ বলে ডাকায় সানজিদা জান্নাত নামের চার বছর বয়সের শিশুকে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবন্ধী শিশুটির মা আঞ্জুয়ারা বেগম (৪০) খুন করে। পরে আঞ্জুয়ারার ঘরের চালের ড্রাম থেকে সানজিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

সেসময় এবিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও সংবাদ (,) প্রকাশ করে। 

গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে আলোচিত ঘটনায় কোনো বিএনপি নেতার সম্পৃক্ত থাকার তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

সুতরাং, ২০২২ সালে যশোরে প্রতিবেশীর ঘরের চালের ড্রামে পাওয়া শিশুর লাশের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণের পর টাকা না দেওয়ায় বিএনপি নেতার বাড়ির চালের ড্রাম থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার  দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

বান্ধবীর হলে ঢুকা নিয়ে ডাকসু ভিপি প্রার্থী আবিদুলের মন্তব্য বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্তৃক মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে আবিদুলকে বলতে শোনা যায়, “এটা কেমন আইন যে আমি আমার বান্ধবীর হলে আমি ঢুকতে পারবো না আমি আমার বৈধ কার্ড আছে এভ্রিথিং আছে?”

ভিডিওটি প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “এটা কেমন আইন , আমি আমার বান্ধবীর হলে ঢুকতে পারবোনা? : ছাত্র দলের ভিপি প্রার্থী আবিদ”। অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে আবিদুল নিজে তার বান্ধবীর হলে ঢুকতে না পারার বিষয়ে অভিযোগ করছেন।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টগুলো সম্মিলিতভাবে ২ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২,৮০০ এরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটিতে আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান নিজে তার বান্ধবীর হলে ঢুকতে না পারার বিষয়ে অভিযোগ করেননি। প্রকৃতপক্ষে কোনো এক মেয়ে তার বৈধ কার্ড থাকা সত্ত্বেও অন্য হলে থাকা তার বান্ধবীর হলে ঢুকতে না পারার নিয়মের বিষয়ে আবিদুল উল্লেখ করে বলেন এরূপ নিয়ম বাতিল করা উচিত। আবিদুল ইসলামের সাম্প্রতিক বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশকে বিভ্রান্তিকরভাবে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ‘বায়ান্ন টিভি’র ফেসবুক পেজে ‘বৈধ কার্ড থাকা সত্ত্বেও ঢাবির এক হলের বান্ধবী অন্য হলের বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে পারে না’ শিরোনামে গত ২৩ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। 

ভিডিওটিতে আবিদুল ইসলাম খানকে বলতে শোনা যায়, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ডাইনোসর যুগের আইন আছে। সে আইনটা হচ্ছে একটা মেয়ে স্টুডেন্ট তার বৈধ কাগজপত্র কার্ড এভরিথিং থাকার পরও তার সে যে হলে বসবাস করে আরেকটা হলে তার বান্ধবী থাকে, আরেকটা মেয়ে হলে, সে ইচ্ছে করলেই তার বৈধ কার্ড শো করেও তার বান্ধবীর সাথে দেখা করতে পারে না। যেতে পারে না। হলে ঢুকতে পারে না। দেখেন বর্তমান যুগে এসে এটা কোনোভাবেই কোন ধারাতেই কোন পরিস্থিতিতেই এটা মেনে নেওয়া যায় না। এখন আমি নির্বাচন করছি, আমি আমরাও নির্বাচন করছি। এখন আমার যেমন সেন্ট্রাল প্রার্থী আছে মেয়েরা আছে যেমন আমরা ছেলেরা প্রত্যেক হলে হলে গিয়ে প্রচারণা করতে পারতেছি। সেন্ট্রাল মেয়েরাও তো আছে সে রোকেয়া হলে থাকে সে ইচ্ছে করলেই শামসুন্নাহার হলে কেন্দ্রীয় প্রার্থী হিসেবে এখানে যেতে পারবে না পারছে না। রেগুলারিটি তার কোন এক্সেস নাই। সেটা শুধু নির্বাচন কেন্দ্রীক নয়৷ নির্বাচন কেন্দ্রীক নয়৷ আমাদের সকলের জন্য, সকলের সুবিধার্থে। আরে ভাই এটা কেমন আইন যে আমি আমার বান্ধবীর হলে আমি ঢুকতে পারবো না আমি আমার বৈধ কার্ড আছে এভ্রিথিং আছে?”

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও আবিদুলের দু’পাশে থাকা মানুষ ও তাদের পোশাকেরও হুবহু মিল পাওয়া যায়৷ এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত আবিদুলের উক্ত দিনের বক্তব্যের ভিডিও থেকেই নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলাডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেজেও আবিদুল ইসলাম খানের উক্ত বক্তব্যের ভিডিও পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে আবিদুল ইসলামের উপরোল্লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনা করলে বুঝা যায়, বক্তব্যে আবিদুল ইসলাম মেয়েদের হলে তার নিজের ঢুকার বিষয়ে বলেননি। প্রকৃতপক্ষে কোনো এক মেয়ে তার বৈধ কার্ড থাকা সত্ত্বেও অন্য হলে থাকা ঐ মেয়ের বান্ধবীর হলে ঢুকতে না পারার নিয়মের বিষয়ে আবিদুল উল্লেখ করে বলেন এরূপ নিয়ম বাতিল করা উচিত। 

সুতরাং, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণায় ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান নিজে তার বান্ধবীর হলে ঢুকতে না পারার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ঢাকা সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়

সম্প্রতি, ঢাকা সিএমএম আদালতে ভাঙচুরের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওটিতে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যায়।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি গত বছরের আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের ভিডিও। 

অনুসন্ধানে সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ০৪ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ঢাকার বিএমএম আদালতে ভাঙচুরের দৃশ্য এটি। ভিডিওর ক্যাপশনের পাশে কোটা মুভমেন্ট ট্যাগও পরিলক্ষিত হয়।

একই তারিখে একই ভিডিওটি চ্যানেল ২৪ এবং যমুনা টিভিকেও প্রকাশ করতে দেখা যায়। 

উল্লিখিত গণমাধ্যমগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে একই তারিখে জাগো নিউজের ওয়েবসাইটে “সিএমএম আদালতে হামলা, প্রিজনভ্যান-পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আন্দোলনকারীরা ঢাকার নিম্ন আদালতে হামলা করে। এসময় আন্দোলনকারীরা হাজতখানার সামনে থাকা একটি প্রিজনভ্যান, কয়েকটি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন। এছাড়া সিএমএম আদালতের পেছনের গেটের নিচতলার সিঁড়ির রেলিং ভাঙচুর করেন।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে দৈনিক ইত্তেফাকও। 

সুতরাং, গত বছরের আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারী কর্তৃক ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

যুবলীগ নেতাকে না পেয়ে মাকে ভেতরে রেখে যুবলীগ নেতার বাড়িতে বিএনপি-জামায়াতের আগুনের দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, “সাতক্ষীরায় যুবলীগ নেতাকে না পেয়ে, তার মাকে ঘরের ভিতরে রেখেই আগুন দিলো বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। আহা নির্যাতন, আর কত নির্যাতন সহায় কবরে সাধারণ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।” দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এটি সাতক্ষীরা কোনো যুবলীগ নেতার মাকে ঘরের মধ্যে রেখে আগুন দেওয়ারও ঘটনা নয়। প্রকৃতপক্ষে, অন্তত ২০২২ সাল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির পক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে ‘মো: জুবায়ের’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২২ সালের ৩ এপ্রিলে “নোয়াখালী বসুরহাট মাকে ঘরে রেখে আগুন ধরিয়ে দিল” ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধানে ‘মো: শাহাদত হোসাইন’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই বছরের ৯ জানুয়ারি প্রচারিত ভিন্ন একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতেও একজন ব্যক্তিকে আহাজারি করতে দেখা যায় এবং প্রচারিত ভিডিওটির মতো একই কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ঘরের ভেতর তার মাকে রেখে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “ধিক্কার জানাই একরকম নিষ্ঠুরতার। ইউপি নির্বাচন কে কেন্দ্র করে ভোলায় মাকে ঘরে আটকে রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মাকে বাঁচাতে ছেলে ফেসবুক লাইভে এসে আহাজারি করছে…. ভিডিওটি সংগ্রহ”।

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ফেস দ্য পিপল-নিউজ’ এর ফেসবুক পেজে আহাজারি করা উক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি প্রচারিত একটি ফেসবুক লাইভ পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “#মাকে_ঘরে_রেখে_আগুন । আছেন সেই রাসেল।  ভোলায় নির্বাচনী সহিংসতায় রাসেলের মা”কে ঘরে রেখে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা । সেই ভয়ানক দৃশ্য ও তার কারণ জানাচ্ছেন আর্তনাদ করা সেই সন্তান রাসেল।”

ভিডিওটিতে উক্ত ব্যক্তিকে নিজের ডাক নাম রাসেল হোসাইন বলতে শোনা যায় এবং তিনি জানান ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি রাজনৈতিক ও নির্বাচনী কারণে তার ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, প্রচারিত আগুনের ভিডিওটি ও ব্যাকগ্রাউন্ডের আহাজারি একই ঘটনার কিনা ধারণকৃত কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া, ২০২২ সালে ভিডিওটি নোয়াখালী ও ভোলার পৃথক পৃথক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তবে এটি ঠিক কোন স্থানে ধারণ করা হয়েছে তা রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সুতরাং, অন্তত ২০২২ সাল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান আগুনের ঘটনার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে একজন যুবলীগ নেতার মাকে ঘরের ভিতর রেখে বিএনপি-জামায়েত আগুন দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের নয়, পাকিস্তান নিজেদের বাঁধে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে

মেঘ বিস্ফোরণ, প্রবল বর্ষণ ও ভারতীয় বাঁধ খুলে দেওয়ায় পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল ও পাঞ্জাবসহ বেশকিছু অঞ্চল ভয়াবহ বন্যাকবলিত হয়েছে। যাতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ করে দাবি করা হয়েছে, “ভারতের দেওয়া বাঁধ উড়িয়ে দিলো পাকিস্তান”।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট: একুশে টিভি, দ্য নিউজ২৪

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

গণমাধ্যম ছাড়াও নানা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি ভারতের দেওয়া বাঁধ পাকিস্তান উড়িয়ে দেয়নি। প্রকৃতপক্ষে উড়িয়ে দেওয়া বাঁধটি পাকিস্তানেরই ছিল। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাকিস্তান তাদের নিজেদের ভূখণ্ডের পাঞ্জাব প্রদেশের কাদিরাবাদ বাঁধের তীররক্ষা বাঁধটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে বলতে শোনা যায়, “পাঞ্জাবের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ অবশেষে সেই কাজটিই করলো যার হুমকি তারা আগেই দিয়েছিল। চেনাব নদের কাদিরাবাদ বাঁধের পাশের তীররক্ষা বাঁধ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে পাকিস্তান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ এর ওয়েবসাইটে ‘Over 210,000 evacuated as floodwaters rise across Punjab following India’s water release’ শিরোনামে গত ২৭ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির এক পর্যায়ে বলা হয়, “বুধবার (২৭ আগস্ট) চেনাব নদীর কাদিরাবাদ বাঁধে পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে একটি তীররক্ষা বাঁধ ধ্বংস করেছে। “কাঠামো রক্ষা করার জন্য আমরা ডান পাশের তীররক্ষা বাঁধ কেটে দিয়েছি, যাতে পানির প্রবাহ কমে আসে,” বলেন পাঞ্জাব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র মজহার হুসেইন।” (অনূদিত)

এছাড়া, পাকিস্তান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ আগস্টে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “এএফপি জানিয়েছে, বর্ষার অতিরিক্ত পানিতে ফুলে ওঠা কাদিরাবাদ বাঁধের পাশে একটি তীররক্ষা বাঁধ উড়িয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চেনাব নদীর কাদিরাবাদ বাঁধে পানির স্তর বাড়তে থাকায় কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে একটি তীররক্ষা বাঁধ ধ্বংস করেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিকস টাইমস’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ আগস্টে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, “ভারতজুড়ে ভারী বৃষ্টির কারণে তিনটি নদী উপচে পড়ায় পাকিস্তান তীব্র বন্যার সঙ্গে লড়াই করছে, যার ফলে পাঞ্জাব প্রদেশে ব্যাপকভাবে মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়েছে। পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কর্তৃপক্ষ কাদিরাবাদ বাঁধের একটি তীররক্ষা বাঁধ কেটে দিয়েছে।” (অনূদিত)

এ বিষয়ে ভারতীয় মূলধারার আরো একাধিক গণমাধ্যমসহ নানাদেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়। সেসব সংবাদেও বলা হয় কাদিরাবাদ বাঁধের তীররক্ষা বাঁধটি পাকিস্তান সরকারের তরফ থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দেওয়া হয়। এবং সেসব সংবাদে পাকিস্তানকেই বাঁধটির কর্তৃপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়৷ কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেই বাঁধটি ভারতের বলে উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

‘কাদিরাবাদ’ নামক এলাকাটির বিষয়ে অনুসন্ধান করলে একাধিক ওয়েবসাইটের সূত্রে জানা যায়, কাদিরাবাদ হলো পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মান্দি বাহাউদ্দিন জেলার ফালিয়া তহসিলের চেনাব নদীর তীরবর্তী একটি গ্রাম।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, কাদিরাবাদ বাঁধের তীররক্ষা বাঁধটির কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান এবং এটি পাকিস্তানের তরফ থেকেই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সুতরাং, ভারতের দেওয়া বাঁধ উড়িয়ে দিলো পাকিস্তান শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সমাবেশ দাবিতে ২০২৩ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ২৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের মিছিলের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০২৩ সালে ‘বিএনপি’র ভাংচুর, অগ্নিসন্ত্রাস,  নৈরাজ্য সৃষ্টি ও সহিংস ঘটনার’ প্রতিবাদে হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের সমাবেশের ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে  “S.A Rony” নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বর “হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য প্রধানকালে।” প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে সরকারি বার্তা সংস্থা ‘বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস)’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর “বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের সমাবেশ” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিএনপির ভাংচুর, অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা শহরের পৌর টাউন হল এবং জেলা পরিষদের সামনে আলাদাভাবে এই সমাবেশ করা হয়। শুরুতে পৌর টাউন হলের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আলমগীর চৌধুরী। পরে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদের সামনে গিয়ে পথসভায় মিলিত হয়। 

সুতরাং, ২০২৩ সালে ‘বিএনপি’র ভাংচুর, অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি ও সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের সমাবেশের ঘটনার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তকর। 

তথ্যসূত্র 

২৮ আগস্ট রাতে ঢাকার রাস্তায় সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জের দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ২৮ আগস্ট, “ঢাকায় রাতে অসংখ্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে ইউনুছ সরকার।গভীর রাতে রাস্তায় রাস্তায় চলছে সেনাবাহিনীর ব‍্যপক লাঠিচার্জ।” দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত ২৮ আগস্ট রাতের নয় এবং ওই দিন ঢাকায় জনতার ওপর সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জের কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাতে উচ্চশব্দে বাইক চালানোর অভিযোগে কতিপয় ব্যক্তিকে সেনাবাহিনীর মারধরের ভিডিও দাবিতে অন্তত গত জুন মাস থেকে ইন্টারনেটে ভিডিওটির অস্তিত্ব রয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে “সাইফুল ইসলাম শেখ সুমন” নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২৫ সালের ১২ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।  

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি মধ্যরাতে উচ্চশব্দে বাইক চালানোর জন্য সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জের ভিডিও।

সেসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত পোস্টেও  (,,) ভিডিওটি সম্পর্কে একই তথ্য জানা যায়। 

এছাড়া, একই তারিখে জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে “রাস্তায় মাতাল যুবকদের শাস্তি দিল সেনাবাহিনী!’’ ক্যাপশনে ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে গণমাধ্যমটিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

সুতরাং, অন্তত গত জুন মাস থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

টেকনাফে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২২ সালের 

সম্প্রতি ‘28/08/25 আসামিকে ছাড়াতে পুলিশের উপর হামলা। কক্সবাজারে টেকনাফে পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাই করেছে। রাত ১০টার দিকে টেকনাফে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে আসামী ধরতে গিয়ে গুরুত্বর সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দুই পুলিশ সদস্য।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, টেকনাফের ২০২২ সালের একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নগর কক্সবাজার নামক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ এপ্রিল কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। সেদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের  বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে আসামী ধরতে গিয়ে গুরুতর সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় দুই পুলিশ সদস্য।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে টেকনাফে পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনার ভিডিও দাবিতে ২০২২ সালের পুরোনো ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যার বিতর্ক নিয়ে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি “যদি শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ হয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা গ্রামে ৫০ থেকে ৬০ জন শহীদ থাকার কথা। দেখা যায় একটা গ্রামে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাও নাই। চেক গুজবের গালগল্প এই দেশে আর চলবে না” শিরোনামে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে দেওয়া পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি আসল নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও। 

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে কোনো পুলিশ সদস্য বাস্তবে মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে এরূপ কোনো বক্তব্য প্রদান করলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।  

এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া, সংবাদ সম্মেলনে বক্তার পেছনে থাকা ব্যানারের বাংলা ভাষার শব্দগুলো অর্থপূর্ণ নয়। বক্তার সামনে থাকা গণমাধ্যমের বুমগুলোতে যেসব গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করা হয়েছে বাস্তবে সেসব গণমাধ্যমের লোগোর ডিজাইন এমন নয়।

Screenshot from Youtube

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৮৬.৯ শতাংশ।  

Screenshot from DeepFake-o-meter by Rumor Scanner  

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটির দৈর্ঘ ১৬ সেকেন্ড। অনুমান করা হচ্ছে, এই ভিডিওটি গুগলের অত্যাধুনিক এআই টুল Veo দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, যেটি ৮ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। ২টি আলাদা ভিডিও একত্রিত করে ১৬ সেকেন্ডের আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা ভিডিওকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যার বিতর্ক নিয়ে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র