Home Blog Page 7

বিরোধীদল থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য শিশির মনির করেননি, ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘বিরোধীদল থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে হবে: শিশির মনির’ শীর্ষক দাবিতে কালের কণ্ঠের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘বিরোধীদল থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে হবে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য আইনজীবী শিশির মনির করেননি এবং কালের কণ্ঠও আলোচিত দাবিতে কোনো প্রতিবেদন বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, কালের কণ্ঠের ফটোকার্ডের ডিজাইন প্রযুক্তির সহায়তায় নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি করে পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, এটি কালের কণ্ঠের লোগো এবং তারিখ হিসেবে ৩০ অক্টোবর ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। 

উল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে উল্লিখিত ফটোকার্ডটির অস্তিত্ব মেলেনি। এছাড়া, সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, শিশির মনিরের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করেও আলোচিত দাবির সত্যতা মেলেনি।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্য কোনো গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ২৮ অক্টোবর কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি লাইভ পাওয়া যায়। ১১ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের লাইভে শিশির মনিরকে বলতে শোনা যায়, যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি একই সালে দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। এই পরিবর্তন, বিরাট ব্যাপার। আগে আমরা দেখেছি এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, তিনি দলেরও প্রধান, তিনি হাউজেরও প্রধান, তিনি সরকারেও প্রধান। সবই গণভবনে। কিন্তু এখন যিনি দলের প্রধান হবেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না।…

একই ভিডিও এটিএন বাংলার ইউটিউব চ্যানেলেও প্রকাশ করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, শিশির মনির ভিন্ন কথা বলেছেন। 

সুতরাং, শিশির মনিরকে উদ্ধৃত করে ‘বিরোধীদল থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে হবে’ শিরোনামে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র 

যুক্তরাজ্যে এটিএম বুথ চুরির দৃশ্যকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি ‘পুরো এটিএম বুথ ট্রেন দিয়ে টেনে নিয়ে গেলো চোর’ ক্যাপশনে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

একই দাবিতে টেক্সট আকারে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এসব পোস্টের ক্যাপশনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করা হলেও ভিডিওর শিরোনামে এটি বাংলাদেশের ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে, বা ‘লাল স্বাধীনতা’, ‘দেশে নিরাপত্তা কোথায়’ সূচক শব্দাবলী দ্বারা এটি বাংলাদেশের ঘটনা বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকাশ্যে ক্রেন দিয়ে টেনে এটিএম মেশিন চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত অক্টোবর মাসে যুক্তরাজ্যে ঘটে যাওয়া এটিএম চুরির ঘটনাকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম The Telegraph এর ওয়েবসাইটে গত ২৮ অক্টোবর ‘Thieves use JCB to rip cash machine from Sainsbury’s store’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটিএম চুরির ঘটনাটি গত ২৬ অক্টোবর রাতে যুক্তরাজ্যের বাকিংহামশায়ারের কেইনসের ব্রুকল্যান্ডস স্কয়ারে সেন্সবারির একটি দোকানে ঘটেছে। চোরেরা একটি জেসিবি টেলিহ্যান্ডলার ক্রেন ব্যবহার করে জানালা ভেঙে দোকানের সামনে থেকে এটিএমটি তুলে নেয় একটি সাদা পিক-আপ ট্রাকে তোলা হয়। এরপর চোরেরা দোকানের সামনে জেসিবিটি ফেলে পালিয়ে যায়। টেমস ভ্যালি পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। 

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক আরেক গণমাধ্যম BBC এর ওয়েবসাইটে ‘Telehandler used to steal Sainsbury’s cash machine’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি। 

সুতরাং, যুক্তরাজ্যের চুরি করে এটিএম বুথ তুলে নিয়ে যাওয়ার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

উত্তর কোরিয়ায় ব্যর্থ আত্মহত্যা প্রচেষ্টাকারীদের মৃত্যুদন্ড হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় 

সম্প্রতি গণমাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, ‘গোপনে আত্মহত্যা আগেই নিষিদ্ধ ছিলো উত্তর কোরিয়ায়। সেখানে এবার এক নতুন মাত্রা যুক্ত করলেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। জানা গেছে, আত্মহত্যার চেষ্টাকারী যদি কোনোভাবে বেঁচে যান তাহলে তার মরতে হবে কঠোর শাস্তিতে। সেই শাস্তিও হচ্ছে মৃত্যুর শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড।’

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন: এটিএন নিউজ, মাই টিভি, নিউজ২৪, জনকণ্ঠ, ফেস দ্যা পিপল, ঢাকা প্রকাশ, টাইম টেলিভিশন

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

গণমাধ্যম ছাড়াও নানা ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, উত্তর কোরিয়ায় ব্যর্থ আত্মহত্যা প্রচেষ্টাকারীদের মৃত্যুদন্ড হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘রেডিও ফ্রি এশিয়া’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনগুলোর তুলনা করলে বেশ মিল পাওয়া যায়। যেমন: দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার বক্তব্য, আত্মহত্যার পরিসংখ্যান, উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তার বক্তব্য। ‘রেডিও ফ্রি এশিয়া’র উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আত্মহত্যা প্রতিরোধে গোপন নির্দেশ জারি করেছেন।’ তবে, প্রতিবেদনে আত্মহত্যার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হলে মৃত্যুদন্ডের কোনো উল্লেখ করা হয়নি। উক্ত প্রতিবেদনের সূত্রে পরবর্তীতে ভারত, যুক্তরাজ্যসহ নানা দেশের গণমাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয় যে উত্তর কোরিয়ায় আত্মহত্যার প্রচেষ্টা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে আত্মহত্যার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হলে মৃত্যুদন্ডের দাবির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, রেডিও ফ্রি এশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘রয়টার্স’ এ ২০২৩ সালের ৬ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ায় আত্মহত্যার চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনটি যাচাই করতে পারেনি।’

এছাড়াও, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে এমন কোনো মানবাধিকার সাক্ষ্য বা রাষ্ট্রীয় নীতির ঘোষণা পাওয়া যায়নি, যেখানে কোনো ব্যক্তিকে কেবল আত্মহত্যার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

পরবর্তীতে অনলাইনে থাকা নির্ভরযোগ্য সূত্রে অনূদিত উত্তর কোরিয়ার ফৌজদারি আইনের বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তর’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের উত্তর কোরিয়ার ফৌজদারি আইন পাওয়া যায়। তবে উক্ত আইনে আলোচিত দাবির কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, উত্তর কোরিয়ায় ব্যর্থ আত্মহত্যা প্রচেষ্টাকারীদের মৃত্যুদন্ড হওয়ার দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

জামায়াতের নির্বাচনী প্রচারণার ভিডিওকে ইউনূস সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আ.লীগের বিক্ষোভ বলে প্রচার

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়, এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির দৃশ্য।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার এই ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ দাবি সম্পর্কিত কোনো কর্মসূচির নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ঢাকা-১১ আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট আতিকুর রহমানের সমর্থনে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে একুশে টেলিভিশন এর ফেসবুক পেজে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ‘ঢাকা ১১ আসনে জামায়াতের মটরযাত্রা। সরাসরি…’ শিরোনামে প্রচারিত সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধানে ঢাকা -১১ (রামপুরা-বাড্ডা- ভাটারা- হাতিরঝিল আংশিক) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট আতিকুর রহমানের ফেসবুক পেজে ৩১ অক্টোবর প্রচারিত আলোচিত শোভাযাত্রার সরাসরি সম্প্রচারিত একটি ভিডিওর সন্ধান মেলে। জানা যায়, ৩১ অক্টোবর আতিকুর রহমানের সমর্থনে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মালিবাগ মোড় হয়ে নতুন বাজার পর্যন্ত মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ দাবির কোনো কর্মসূচির নয়।

সুতরাং, ঢাকা ১১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার ভিডিওকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গুলিস্তানে আবাসিক হোটেলে বোমা হামলা দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, গুলিস্তানের একটি আবাসিক হোটেলে জঙ্গি হামলা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

থ্রেডসে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গুলিস্তানের আবাসিক হোটেলে বোমা হামলার কোনো দৃশ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটের পাশের স’ মিলে আগুন লাগে। সেই ঘটনার দৃশ্য এটি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Muhammad Muzzammill’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

পোস্টে দাবি করা হয়, খিলগাঁওয়ে তলতলা মার্কেটের পাশে আগুন লেগেছে। সেই দৃশ্য এটি। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে একই দিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের পাশের একটি স’ মিলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে দুইটি স’ মিল ও অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গিয়েছিল।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অন্যদিকে, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স থেকে খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের দূরত্ব ৬ কিলোমিটারের বেশি।

সুতরাং, গত ফেব্রুয়ারিতে খিলগাঁওয়ে আগুন লাগার ভিডিওকে সম্প্রতি গুলিস্তানের আবাসিক হোটেলে বোমা হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আ.লীগকে নিষিদ্ধ চায় না জামায়াত শীর্ষক মন্তব্য করেননি গোলাম পরওয়ার, ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারকে উদ্ধৃত করে ‘কোনভাবেই আওয়ামিলীগকে নিষিদ্ধ চায়না জামাআতে ইসলামী।’ শিরোনামে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার ফটোকার্ডের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে। 

একই দাবির ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখুন এখানে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘কোনভাবেই আওয়ামিলীগকে নিষিদ্ধ চায়না জামাআতে ইসলামী।’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য মিয়া গোলাম পরওয়ার করেননি এবং কালের কণ্ঠও আলোচিত দাবিতে কোনো প্রতিবেদন বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, কালের কণ্ঠের ফটোকার্ডের ডিজাইন প্রযুক্তির সহায়তায় নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি করে পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, এটি কালের কণ্ঠের লোগো এবং তারিখ হিসেবে ২১ অক্টোবর ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। 

উল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে নিয়ে ২১ অক্টোবর একাধিক ফটোকার্ড (, , , ) প্রচার করা হলেও উল্লিখিত ফটোকার্ডটির অস্তিত্ব মেলেনি। এছাড়া, সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, মিয়া গোলাম পরওয়ারের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করেও আলোচিত দাবির সত্যতা মেলেনি।

তাছাড়া, পর্যবেক্ষণে আলোচিত ফটোকার্ডটির বানান এবং শব্দ বিন্যাসে একাধিক ভুল পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কালের কণ্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডগুলোয় সাধারণত দেখা যায় না। 

Screenshot analysis: Rumor Scanner 

পরবর্তী অনুসন্ধানে, অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, মিয়া গোলাম পরওয়ারকে উদ্ধৃত করে ‘কোনভাবেই আওয়ামিলীগকে নিষিদ্ধ চায়না জামাআতে ইসলামী।’ শিরোনামে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র 

  • Rumor Scanner’s analysis

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

গত ২৬ অক্টোবর ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়লে এর আঘাতে মারা যান আবুল কালাম নামের শরীয়তপুরের এক ব্যক্তি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার দৃশ্য এটি।

উক্ত দাবির গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন মাছরাঙা টিভি (ফেসবুক, ইউটিউব)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার আসল দৃশ্য নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি এই ভুয়া ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য সূত্রে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়াকালীন ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ভায়াডাক্ট বা বিয়ারিং প্যাডের কাছে কোনো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও ছিল না যে তা থেকে সে সময়ের রিয়েল টাইম ফুটেজ পাওয়া যাবে। মূল ধারার গণমাধ্যম মাছরাঙা টিভি এই ফুটেজটি কোনো ডিসক্লেইমার ছাড়াই প্রচার করেছে যা থেকে জনমনে আরো বিভ্রান্তি বেড়েছে৷ 

পাশাপাশি, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে উপাদানগুলোর পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়। 

ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার আসল দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis

অক্টোবরে রেকর্ড ৪৭০ ভুল তথ্য শনাক্ত

0

চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ৪৭০টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। রিউমর স্ক্যানারের ইতিহাসে একক মাস হিসেবে যা সর্বোচ্চ ভুল তথ্য শনাক্তের সংখ্যা। রিউমর স্ক্যানারের ওয়েবসাইটে ৩৬৩টি প্রতিবেদনের মাধ্যমে এসব ভুল তথ্যের ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্লেষণ বলছে, অক্টোবরে রাজনৈতিক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি (২০৫) ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে, যা মোট ভুল তথ্যের প্রায় ৪৪ শতাংশ। এছাড়া জাতীয় বিষয়ে ৯৪টি, বিনোদন বিষয়ে ৮৫টি, ধর্মীয় বিষয়ে ১০টি, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ৩৮টি, খেলাধুলা বিষয় ২৬টি এবং শিক্ষা ও প্রতারণা বিষয়ে চারটি করে ও অন্যান্য বিষয়ে চারটি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে গত মাসে। নিয়মিত ফ্যাক্টচেক ছাড়াও দুইটি পরিসংখ্যান এবং তিনটি ফ্যাক্ট ফাইল প্রকাশিত হয়েছে অক্টোবরে।

অক্টোবরে শনাক্তকৃত ভুল তথ্যগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, এসব ঘটনায় ভিডিও কেন্দ্রিক ভুলই ছিল সবচেয়ে বেশি, ২৮০টি। এছাড়া তথ্য কেন্দ্রিক ভুল ছিল ১১১টি এবং ছবি কেন্দ্রিক ভুল ছিল ৭৯টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে মিথ্যা হিসেবে ২৯৯টি, বিকৃত হিসেবে ১১৮টি, বিভ্রান্তিকর হিসেবে ৫২টি ও আংশিক মিথ্যা হিসেবে ১টি ঘটনাকে সাব্যস্ত করা হয়েছে। 

শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, এই সময়ে পুরুষদের জড়িয়ে ভুল তথ্য প্রচার হয়েছে ২৪০টি এবং নারীদের জড়িয়ে ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে ১৭২টি। 

একই সময়ে বয়সের ধরণ অনুযায়ী চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ভুল তথ্যগুলোকে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই সময়ে যুবদের (যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে) জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি (১৬২) ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। 

এছাড়া, শিশুদের (যাদের বয়স ০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে) জড়িয়ে চারটি, মধ্য বয়সীদের (যাদের বয়স ৩৬ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে) জড়িয়ে ১২৬টি এবং প্রবীণদের (যাদের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি) জড়িয়ে ১১৮টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

প্লাটফর্ম হিসেবে গেল মাসে ফেসবু্কে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে, সংখ্যার হিসেবে যা ৪১৪টি। এছাড়া ইনস্টাগ্রামে ১৩৬টি, টিকটকে ১১৪টি, ইউটিউবে ৬৮টি, এক্সে ২৫টি, থ্রেডসে অন্তত ১৪টি এবং হোয়াটসঅ্যাপ ও লিংকডইনে একটি করে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। ভুল তথ্য প্রচারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি দেশের গণমাধ্যমও। ১২টি ঘটনায় দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য প্রচারের বিষয়টি গেল বেশ কয়েক মাস ধরে আলোচনায়। অক্টোবরে ১০টি সাম্প্রদায়িক অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর মধ্যে অর্ধেক ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় পরিচয়ধারী অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

রিউমর স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অক্টোবরে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জড়িয়ে সাতটি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। ভুলতথ্যগুলোর ধরণ বুঝতে এগুলোকে রিউমর স্ক্যানার দুইটি আলাদা ভাগে ভাগ করেছে৷ সরকারের পক্ষে যায় এমন ভুল তথ্যের প্রচারকে ইতিবাচক এবং বিপক্ষে যায় এমন ভুলতথ্যের প্রচারকে নেতিবাচক হিসেবে ধরে নিয়ে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, এসব ভুলতথ্যের প্রায় ৮৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই সরকারকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

অক্টোবর মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ২৩টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। এসব ভুলতথ্যের প্রায় ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই তাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে ছয়টি, সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে জড়িয়ে পাঁচটি করে এবং সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে জড়িয়ে প্রচার হওয়া একটি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে সর্বত্র। গেল বেশ কয়েক মাসে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপতথ্যের প্রচার বৃদ্ধি পেয়েছে। অক্টোবরে এ সংক্রান্ত ২৬টি অপতথ্য শনাক্ত হয়েছে।  

রিউমর স্ক্যানার অক্টোবর মাসের ফ্যাক্টচেকগুলো বিশ্লেষণে দেখেছে, এই সময়ে সক্রিয় রাজনীতিতে থাকা দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, তার অঙ্গসংগঠন এবং নেতাকর্মীদের জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি (৬০টি) অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে দল হিসেবে জামায়াতকে জড়িয়ে ৩০টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। এসবের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ ক্ষেত্রেই দলটিকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। দলটির ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এই সময়ে ২১টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে।

জামায়াতের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), তার অঙ্গসংগঠন এবং নেতাকর্মীদের জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি অপতথ্য (৩৫টি) প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে দল হিসেবে বিএনপিকে জড়িয়ে ১৮টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে, যার সবগুলোতেই দলটিকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। এর বাইরে ছাত্রদলকে জড়িয়ে এই সময়ে নয়টি এবং যুবদলকে জড়িয়ে দুইটি অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। 

এছাড়া, অক্টোবর মাসে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও দলটির নেতাকর্মীদের জড়িয়ে ৩৪টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এর মধ্যে দল হিসেবে এনসিপিকে জড়িয়ে ১০টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে, যার সবগুলোতেই দলটিকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। এই সময়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে নয়টি অপতথ্যের (সবগুলোই নেতিবাচক) প্রচার দেখা গেছে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে অক্টোবরে ১৩২টি অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে ৫১টি অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে যার সবগুলোই দলটির পক্ষে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির সুযোগ রেখেছে। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে এই সময়ে ৩৯টি অপতথ্য (প্রায় ৭৯ শতাংশই ইতিবাচক) প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষিত হওয়া দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে জড়িয়ে গত মাসে ১০টি এবং যুবলীগকে জড়িয়ে দুইটি অপতথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। 

ভুল তথ্যের রোষানল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোও। অক্টোবরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জড়িয়ে ১২টিসহ এই বাহিনীকে নিয়ে ৩২টি ভুল তথ্যের প্রচার দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশকে জড়িয়ে ১২টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার।    

অক্টোবরে শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, এই সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ভুয়া কনটেন্ট শনাক্ত হয়েছে ১৪৩টি। এর মধ্যে ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্ত করা হয়েছে ১৯টি। 

অক্টোবর মাসে নয়টি ঘটনা বা ইস্যুতে ভুল তথ্যের প্রচার ছিল। এর মধ্যে মাসজুড়ে বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ সংখ্যক (২৫টি) ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইস্যুতে ১৮টি, এশিয়া কাপ ইস্যুতে ১০টি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে। 

গণমাধ্যমের নাম, লোগো, শিরোনাম এবং নকল ও ভুয়া ফটোকার্ড ব্যবহার করে ভুল তথ্য প্রচারের পরিমাণ আবার বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে৷ অক্টোবর মাসে এই পদ্ধতির ব্যবহার করে ৬১টি ঘটনায় দেশ-বিদেশি ২৩টি সংবাদমাধ্যমকে জড়িয়ে ৬৭টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে।   

বার্তা প্রেরক
তানভীর মাহতাব আবীর
সিনিয়র ফ্যাক্টচেকার,
রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ। 
[email protected]

জুলাই সনদকে অবৈধ বা বাতিল ঘোষণা করেননি রাষ্ট্রপতি

0

গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হয়। সেখানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেয়।

৩০ অক্টোবর রাতে ‘জুলাই সনদ কে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করলেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জুলাই জাতীয় সনদকে অবৈধ বা বাতিল ঘোষণা করেননি বরং, কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ওয়েবসাইটের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে sadhinnews247 নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। সাইটে ‘জুলাই সনদ বাতিল ঘোষণা করলেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন’ শীর্ষক দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে এবং প্রকাশকাল ২০২৫ সালের ৩০ অক্টোবর উল্লেখ রয়েছে।

কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, আজ (৩০ অক্টোবর) বঙ্গভবনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ শাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্ত ঘোষণা দিয়েছেন যে বহুল আলোচিত “জুলাই জাতীয় সনদ” আর কার্যকর নয়। তিনি এটিকে “রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার স্বার্থে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেনরাষ্ট্রপতি বলেন- “জুলাই সনদ দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে অস্থিতিশীল করে তুলছিল। সংবিধান ও সার্বভৌম সংসদের বাইরে কোনো দলিল বা চুক্তি কার্যকর হতে পারে না। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো সনদ রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিনির্ধারণ করতে পারে না সেই কারণেই আজ আমি একে বাতিল ঘোষণা করছি।” উক্ত সংবাদে আরও দাবি করা হয়, জুলাই সনদ বাতিল করায় সরকার, বিরোধী দল এবং নাগরিক সমাজ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

স্বাভাবিকভাবে, রাষ্ট্রপতি জুলাই সনদ অবৈধ বা বাতিল ঘোষণা করলে সে বিষয়ে গণমাধ্যমে ফলাও করে খবর প্রচার হতো। তবে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে গণমাধ্যমে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও উক্ত দাবির সত্যতা মেলেনি।

উল্লেখ্য, রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এসব ফ্রি ডোমেইনের সাইটগুলো নিয়ে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা গেছে এসব ফ্রি ডোমেইনের পেছনে সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে।

সুতরাং, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জুলাই জাতীয় সনদকে অবৈধ বা বাতিল ঘোষণা করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • Rumor Scanner’s Analysis   

অফিসে শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান ইস্যুতে গোলাম পরওয়ারকে উদ্ধৃত করে আমার দেশের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিসে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানো সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্তের প্রস্তাব জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত না করার অভিযোগ তুলে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ‘শেখ মুজিব সম্মানিত ব্যাক্তি, তাঁর ছবি টাঙানোর বিধান থাকলে সমস্যা কি’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে দৈনিক আমার দেশের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের স্টোরিতেও ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখা গেছে।

এছাড়া, সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ পরিচালিত ফেসবুক পেজ Voice Bangla দৈনিক আমার দেশকে সূত্র উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ারের নামে আলোচিত মন্তব্যটি প্রচার করেছে।

ফ্যাক্টচেক


রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়া গোলাম পরওয়ার ‘শেখ মুজিব সম্মানিত ব্যাক্তি, তাঁর ছবি টাঙানোর বিধান থাকলে সমস্যা কি’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি এবং আমার দেশও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আমার দেশের ফটোকার্ড ডিজাইনের আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডে আমার দেশের লোগো ও তারিখ হিসেবে ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ উল্লেখ থাকতে দেখা যায়।

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে এমন কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। এছাড়া আমার দেশের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং, ৩০ অক্টোবর রাতে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আলোচিত ফটোকার্ডটিকে ফেইক বলে উল্লেখ করা হয়। পোস্টে বলা হয়, ‘আমার দেশের ফে/ইক ফটোকার্ড বানিয়ে পাঠকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপ/চেষ্টা করছে একটি মহল। পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের এ ব্যাপারে সচেতন থাকার অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

এছাড়া, ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজের ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির বাক্যে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল পরিলক্ষিত হয়।

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও মিয়া গোলাম পরওয়ারের এমন মন্তব্য সংবলিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি৷

এছাড়া, মিয়া গোলাম পরওয়ারের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো পোস্টের সন্ধান মেলেনি।

সুতরাং, মিয়া গোলাম পরওয়ারকে উদ্ধৃত করে ‘শেখ মুজিব সম্মানিত ব্যাক্তি, তাঁর ছবি টাঙানোর বিধান থাকলে সমস্যা কি’ শিরোনামে আমার দেশের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র