Home Blog Page 7

সেনাবাহিনী ও বিজিবির ভয়ে খাগড়াছড়ির মানুষের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। জুম্ম ছাত্র-জনতার সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে খাগড়াছড়িতে অন্তত ৩ জন নিহতও হন। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি অনলাইনে একটি কথিত সংবাদ প্রতিবেদনের ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘সেনাবাহিনী ও বিজিবির কারণে খাগড়াছড়ির মানুষের জীবন দুর্বিষহ। তারা এখন প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছে।’ এছাড়াও, ভিডিওতে লেখা হয়েছে, ‘ভোর রাত থেকে পালিয়ে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির লোক’।

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি সেনাবাহিনী ও বিজিবির ভয়ে ভোর রাত থেকে খাগড়াছড়ির মানুষের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের।

উল্লেখ্য যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ এর লোগো দেখা যায়।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওটি ১৩ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ১২ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সেনাবাহিনী ও বিজিবির ভয়ে খাগড়াছড়ির মানুষের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও। এছাড়া, চ্যানেল২৪ও আলোচিত দাবিতে কোনো সংবাদ বা ভিডিও প্রচার করেনি।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ এর লোগো পাওয়া যায়। এরই সূত্র ধরে ‘চ্যানেল২৪’ এর ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেলওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রেও এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত মানুষ, মানুষের অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।

Screenshot of Claimed Video

এছাড়া, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ ও এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টের লেবেল দেখতে পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

Collage: Rumor Scanner/DeepFake-O-Meter

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘AVSRDD’, ‘LIPINC’ ও ‘TALL’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ভিডিওটি ভুয়া বা এআই তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা যথাক্রমে ৯৯.৯ শতাংশ, ১০০ শতাংশ ও ৯৯.৪ শতাংশ। এছাড়াও, এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এর বিশ্লেষণমতে আলোচিত ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ৯৫.১ শতাংশ। 

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ এ প্রচারিত সেনাবাহিনী ও বিজিবির ভয়ে খাগড়াছড়ির মানুষের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দাবি করে অনলাইনে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত করে একাধিক গণমাধ্যমের নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি ‘প্রধান উপদেষ্টাকে বিশ্বাস করা ভুল ছিল: নাহিদ’ শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম আরটিভি, ‘প্রধান উপদেষ্টা আখের গুছিয়েছেন, সেফ এক্সিটের বিষয়ে ভাবছেন: নাহিদ ইসলাম’ শিরোনামে কালের কন্ঠ এবং ‘প্রধান উপদেষ্টা প্রতারণা করেছে: নাহিদ ইসলাম’ শিরোনামে একাত্তর টিভির ডিজাইন সংবলিত তিনটি পৃথক ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

এসব ফটোকার্ডে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত এবং তার ছবি যুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া, ‘পিএস সফিক সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন: নাহিদ’ শিরোনামে ডিবিসি নিউজের ডিজাইন সংবলিত  একটি ফটোকার্ডও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত আরটিভির ফটোকার্ডের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত কালের কন্ঠের ফটোকার্ডের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফেসবুকে প্রচারিত একাত্তর টিভির ফটোকার্ডের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফেসবুকে প্রচারিত ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ডের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আলোচিত চারটি ফটোকার্ডে উল্লিখিত মন্তব্য করেননি। এছাড়া, আরটিভি, কালের কন্ঠ, একাত্তর টিভি ও ডিবিসি নিউজ এরূপ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রচার করেনি। প্রকৃতপক্ষে, এসব গণমাধ্যমের ভিন্ন চারটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

আরটিভির ফটোকার্ড যাচাই:

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে আরটিভির লোগো রয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে আরটিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সংবলিত  কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, কালের কন্ঠের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, আরটিভির প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির একটি অংশের ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।

তবে, আরটিভির ফেসবুক পেজে গত ০৪  অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে আরটিভির লোগো এবং নাহিদ ইসলামের ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, ‘কয়েকজন উপদেষ্টাকে বিশ্বাষ করা ভুল ছিল: নাহিদ’ শিরোনামে আরটিভির উক্ত ফটোকার্ডটির ‘কয়েকজন’ এর স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘প্রধান’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

আরটিভির উক্ত ফটোকার্ডের মন্তব্য ঘরে দেওয়া ওয়েবসাইটের লিংকে একই শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘কয়েকজন উপদেষ্টাকে বিশ্বাস করা সবচেয়ে বড় ভুল ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, নাহিদ ইসলাম একাত্তর টিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। 

অর্থাৎ, আরটিভির লোগো ও ডিজাইন সংবলিত  ফটোকার্ড সম্পাদনা করে নাহিদ ইসলামের মন্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে।

কালের কণ্ঠের ফটোকার্ড যাচাই:

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কালের কন্ঠের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০৫ অক্টোবর ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে কালের কন্ঠের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সংবলিত  কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, কালের কন্ঠের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, কালের কন্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির একটি অংশের ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।

তবে, কালের কন্ঠের ফেসবুক পেজে গত ০৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে কালের কন্ঠের লোগো এবং নাহিদ ইসলামের ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, ‘অনেক উপদেষ্টা আখের গুছিয়েছেন, সেফ এক্সিটের বিষয়ে ভাবছেন: নাহিদ ইসলাম’ শিরোনামে কালের কন্ঠের উক্ত ফটোকার্ডটির ‘অনেক’ এর স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘প্রধান’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

কালের কন্ঠের উক্ত ফটোকার্ডের মন্তব্য ঘরে দেওয়া ওয়েবসাইটের লিংকে একই শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। তারা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলার সমর্থনই তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে।’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নাহিদ ইসলাম একাত্তর টিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। 

অর্থাৎ, কালের কন্ঠের লোগো ও ডিজাইন সংবলিত  ফটোকার্ড সম্পাদনা করে নাহিদ ইসলামের মন্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে।

একাত্তর টিভির ফটোকার্ড যাচাই:

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে একাত্তর টিভির লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০৪ অক্টোবর ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে একাত্তর টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সংবলিত  কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, একাত্তর টিভির ফেসবুক পেজে গত ০৪ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে একাত্তর টিভির লোগো এবং নাহিদ ইসলামের ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, ‘কয়েকজন উপদেষ্টা প্রতারণা করেছে: নাহিদ ইসলাম’ শিরোনামে একাত্তর টিভির উক্ত ফটোকার্ডটির ‘কয়েকজন’ এর স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘প্রধান’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

একাত্তর টিভির উক্ত ফটোকার্ডের মন্তব্য ঘরে দেওয়া ওয়েবসাইটের লিংকে একই শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘উপদেষ্টা পরিষদের অনেককেই বিশ্বাস করাটা ছিলো অনেক বড় ভুল। তাদের প্রতি আস্থা রেখে প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সেইসব উপদেষ্টাদের নাম প্রকাশের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।’ নাহিদ ইসলাম একাত্তর টিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। 

অর্থাৎ, একাত্তর টিভির লোগো ও ডিজাইন সংবলিত  ফটোকার্ড সম্পাদনা করে নাহিদ ইসলামের মন্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে।

ডিবিসি নিউজের ফটোকার্ড যাচাই:

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ‘ডিবিসি নিউজ’ এর লোগো এবং প্রকাশের তারিখ হিসেবে ‘৫ই অক্টোবর, ২৫’ উল্লেখ রয়েছে।

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে ডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সংবলিত  কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ডিবিসি নিউজের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, ডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেজে গত ০৫  অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডে ডিবিসি নিউজের লোগো এবং নাহিদ ইসলামের ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, ‘অনেক উপদেষ্টা সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন: নাহিদ’ শিরোনামে ডিবিসি নিউজের উক্ত ফটোকার্ডটির ‘অনেক উপদেষ্টা’ এর স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘পিএস সফিক’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

ডিবিসি নিউজের উক্ত ফটোকার্ডের মন্তব্য ঘরে দেওয়া ওয়েবসাইটের লিংকে একই শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের একটি বড় অংশ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ বা লিয়াজোঁ স্থাপন করেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ করেছেন সাবেক উপদেষ্টা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি মন্তব্য করেছেন, এই উপদেষ্টারা এখন নিজেদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে ভাবছেন।সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

অনুসন্ধানে জানা যায়, নাহিদ ইসলাম একাত্তর টিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। 

অর্থাৎ, ডিবিসি নিউজের লোগো ও ডিজাইন সংবলিত  ফটোকার্ড সম্পাদনা করে নাহিদ ইসলামের মন্তব্য বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে জড়িয়ে নাহিদ ইসলামের নামে একাধিক গণমাধ্যমের নামে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের নামে বানোয়াট মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘Tulip Rizwana Siddiq’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্টের বরাতে দাবি করা হচ্ছে পোস্টটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক দিয়েছেন। পোস্ট অনুযায়ী দাবি করা হচ্ছে টিউলিপ সিদ্দিক বলেছেন, ‘তদের বাপের খেলা শেষ সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ’।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘Tulip Rizwana Siddiq’ নামক এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের নয়, বরং এটি তার নামে পরিচালিত একটি  ভুয়া অ্যাকাউন্ট। 

অনুসন্ধানে প্রচারিত পোস্টগুলোতে ‘Tulip Rizwana Siddiq’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এর স্ক্রিনশট যুক্ত থাকতে দেখা যায়। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘Tulip Rizwana Siddiq’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। ‘Tulip Rizwana Siddiq’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এই অ্যাকাউন্টটি থেকে গত ০১ অক্টোবর সন্ধ্যা ০৬ টা ১১ মিনিটে আলোচিত পোস্টটি করা হয়েছে। 

এছাড়া, উক্ত অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, গত ২৩ জুন অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছে এবং এটি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। 

Screenshot: Facebook 

এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। ২০১৫ সালে তার বাংলাদেশে আসার তথ্য পাওয়া গেলেও বিগত কয়েকবছরে আসার তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, টিউলিপ সিদ্দিকের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে টিউলিপ সিদ্দিকের এক্স (সাবেক টুইটার) ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের লিংক দেওয়া রয়েছে। কিন্তু, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজের কোন লিংক দেওয়া নেই। এমনকি অনুসন্ধানে টিউলিপ সিদ্দিকের কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, ‘Tulip Rizwana Siddiq’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া।

সুতরাং, ‘তদের বাপের খেলা শেষ সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ’ বলে টিউলিপ সিদ্দিক ফেসবুক পোস্ট করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

সেনাবাহিনীর ভয়ে মানুষের খাগড়াছড়ি ছেড়ে যাওয়ার দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। জুম্ম ছাত্র-জনতার সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে খাগড়াছড়িতে অন্তত ৩ জন নিহতও হন। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি অনলাইনে একটি কথিত সংবাদ প্রতিবেদনের ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘খাগড়াছড়ির মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী। তারা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা পরিত্রাণ চায় এই পরিস্থিতি থেকে।’

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি সেনাবাহিনীর ভয়ে খাগড়াছড়ির মানুষের খাগড়াছড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওটি ৪৬ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ৪৫ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সেনাবাহিনীর ভয়ে খাগড়াছড়ির মানুষের খাগড়াছড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

অনুসন্ধানে কোন গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে ভিডিওটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত মানুষ, মানুষের অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।

Screenshot of Claimed Video

এছাড়া, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ ও এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টের লেবেল দেখতে পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

Collage : Rumor Scanner/DeepFake-O-Meter, Hive Moderation

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘AVSRDD’ ও ‘TALL’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ভিডিওটি এআই তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ। এছাড়াও, এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এর বিশ্লেষণমতে আলোচিত ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ৯২.৭ শতাংশ। 

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে সেনাবাহিনীর ভয়ে খাগড়াছড়ির মানুষের খাগড়াছড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দাবি করে অনলাইনে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

অস্ত্রসহ পাহাড়ি আটক দাবিতে নাটোরের ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষণের বিচার দাবিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর নগরীতে আন্দোলন ও অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় পুলিশ ও স্থানীয় বাঙালিদের সাথে সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। উক্ত সহিংসতার ঘটনার জন্য ইউপিডিএফের উসকানিকেও দায়ী করা হয়। এরপর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নেতিবাচক প্রচারণা করতে দেখা যায়। এর প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি, পাহাড়িদের একটি দল ব্যাগ ভর্তি অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার সময় সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি পাহাড়িদের একটি দল অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়া ঘটনার নয়। এছাড়াও ভিডিওটির সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর  কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, নাটোরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্র ও খেলনা পিস্তলসহ ৬ জনকে আটকের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে রাজ্য নেই তবুও রাজা নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২১ জুন নাটোরে খেলনা পি’স্ত’ল দিয়ে ছিন*তা’ইয়ের চেষ্টা, সেনাবাহিনীর হাতে আটক ৪ ডা’কা’ত শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর ২৮ সেকেন্ড থেকে শুরু হওয়া ফুটেজের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতেই একই সেনাসদস্যকে নীল টি-শার্ট পরিহিত একই ব্যক্তিকে থাপ্পড় মারতে দেখা যায়। ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া চারজন ব্যক্তি ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন। এসময় তাদের কাছে একটি খেলনা পিস্তল ছিল বলে পোস্টটিতে ‍উল্লেখ করা হয়। ভিডিওটিতেও নীল টি-শার্ট পরিহিত ব্যক্তিকে একটি পিস্তল ফেলে দিতে দেখা যায়। যা পরবর্তীতে ওই সেনাসদস্য উদ্ধার করেন।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যম জাগোনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে একইদিন (২১ জুন) উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Jagonews24

প্রতিবেদনটিতেও সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়া একই ব্যক্তিদের ছবি দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ২০ জুন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কালাকান্দর স্লুইসগেট এলাকা থেকে রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ওই চারজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতদলের দুই প্রধানকেও আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র ও খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয় বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনটি থেকে আরো জানা যায়, আটক ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে ডাকাত দলের প্রধান আব্দুর রাজ্জাক (৩৮) ও মৃত কামাল হোসেনের ছেলে কাওসার আহম্মেদ (২৫), আব্দুল আজিজের ছেলে বিপ্লব হোসেন (২৪), মোবারক আলীর পুত্র মবিদুল ইসলাম (২১), হরদমা গ্রামের রওশন আলীর ছেলে মনিরুল (২৪) ও কালিনগর পাধোয়া গ্রামের আব্দুল সালামের পুত্র সুরুজ আলী (২১)।

অর্থাৎ, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ-ই পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নয়। এছাড়াও এ ঘটনায় একাধিক মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলোর কোথাও উক্ত ঘটনার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়নি। এমন প্রতিবেদন দেখুন এখানে এবং এখানে

সুতরাং, নাটোরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ডাকাত দলের সদস্যদের আটক হওয়ার ভিডিওকে অস্ত্রসহ পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোক আটক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে গাজাবাসীর স্বাগত জানানোর ভিডিও দাবিতে তিউনিসিয়ার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, গাজায় চলমান ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। পরবর্তীতে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি দ্বীপ ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে আরও কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, উক্ত নৌবহরটি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জনসাধারণ স্বাগত জানাতে সমুদ্র তীরে জড়ো হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি গাজার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি তিউনিসিয়ার সিদি বু সাইদ বন্দরে তিউনিসিয়াবাসীর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে স্বাগত জানানোর। তিউনিসিয়া থেকে পুনরায় ফ্লোটিলা নৌবহর যাত্রা শুরু করলে সেখান থেকেও বেশ কয়েকটি নৌযান উক্ত নৌবহরে যুক্ত হয়। 

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তিউনিসিয়ার গণমাধ্যম Médina FM LIVE এর ফেসবুক পেজে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রচারিত কয়েকটি ছবি সম্বলিত একটি ফটো অ্যালবাম পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। 

Comparison by Rumor Scanner 

পোস্টটির ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাজার সমুদ্র তীরে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে স্বাগত জানানোর ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর জনসমাগমের সাথে উক্ত পোস্টের ছবির স্থান ও জনসমাগমের মিল পাওয়া যায়। উভয় স্থানেই উপস্থিত জনগনের হাতে ফিলিস্তিনের ও তিউনিসিয়ার পতাকা দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও পোস্টটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, ছবিগুলো তিউনিসিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে বিদায় জানাতে তিউনিসিয়ার সিদি বু সাইদ বন্দরে আসা জনসমাগমের। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম Reuters এর ইউটিউব চ্যানেলে সেদিন সিদি বু সাইদ বন্দরে তিউনিসিয়াবাসীর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে স্বাগত জানানোর ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

এছাড়াও Médina FM LIVE নামের তিউনিসিয়ার গণমাধ্যমের পেজে প্রচারিত আরেকটি পোস্ট থেকে জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহর তিউনিসিয়ার সিদি বু সাইদ বন্দরে পৌঁছায়। একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও সেদিনের ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

উল্লেখ্য, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের মাত্র একটি জাহাজ গাজার জলসীমায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল কিন্তু সেটি তীরে পৌঁছানো পূর্বেই ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটি আটক করে। পরবর্তীতে গত ৩ অক্টোবর গাজাগামী ত্রাণবাহী সর্বশেষ জাহাজ দ্য ম্যারিনেটকেও ফিলিস্তিনি উপকূলের কাছে আটক করে ইসরাইলি বাহিনী। তবে নতুন করে আরও ১১ টি জাহাজ ত্রাণ সহায়তা নিয়ে যাত্রা শুরু করে বলেও জানা যায়। কিন্তু উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অব্দি কোনো জাহাজ গাজার তীরে পৌঁছায়নি।

সুতরাং, তিউনিসিয়ার সিদি বু সাইদ বন্দরে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে তিউনিসিয়াবাসীর স্বাগত জানানোর ভিডিওকে গাজাবাসীর ফ্লোটিলা নৌবহরকে স্বাগত জানানোর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে হত্যার কথিত পরিকল্পনা নিয়ে জাফর ইকবালের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

0

সম্প্রতি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে উদ্ধৃত করে ‘ম্যাটিকুলাস ডিজাইনে হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাই সে স্থান পরিবর্তন করেছে। পলায়নি। পদত্যাগও করেনি।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা পরিকল্পনা ও পদত্যাগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি জাফর ইকবাল। প্রকৃতপক্ষে, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়া জাফর ইকবাল নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজের পোস্টের সূত্র ধরে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল’ নামক ফেসবুক পেজে গত ১ অক্টোবর তাকে উদ্ধৃত করে ‘ম্যাটিকুলাস ডিজাইনে হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাই সে স্থান পরিবর্তন করেছে। পলায়নি। পদত্যাগও করেনি।’ শিরোনামে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

পরবর্তীতে উক্ত ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম পেজের ইন্ট্রোতে এটি একটি ফ্যান পেজ লেখা খুঁজে পায়। পেজটির ‘ট্রান্সপারেন্সি’ বিভাগ পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় এটি ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর চালু করা হয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেসবুকে বর্তমানে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের কোনো অফিশিয়াল পেজ সক্রিয় নেই। ২০২৩ সালের ১২ মার্চ অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ থেকে জানা যায়, Muhammed Zafar Iqbal নামে চালু থাকা জাফর ইকবালের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজটি হ্যাক হয়েছে। পরবর্তীতে পেজটির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এবং এটি বর্তমানে ফেসবুকের সার্চ ফলাফলেও প্রদর্শিত হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জাফর ইকবালকে প্রকাশ্যে দেখা যায় নি৷ তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে চলে গেছেন তা এখনো অজানা। তাছাড়া, জাফর ইকবালের মতো ব্যক্তি এমন মন্তব্য করলে উক্ত বিষয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি।

সুতরাং, শেখ হাসিনাকে হত্যার কথিত পরিকল্পনা ও তার পদত্যাগ সম্পর্কে জাফর ইকবালকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত দাবিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

চাঁদপুরে খতিবকে কুপিয়ে আহতের ঘটনা অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা নন 

0

গত ১১ জুলাই চাঁদপুর শহরের প্রসেসরপাড়ায় স্থানীয় এক মসজিদের খতিবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে মো. বিল্লাহ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। 

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘৭৫ বছর বয়সি ইমাম নুরুল আমিন মাদানী। চাঁদপুর প্রফেসর পাড়া, মোল্লাবাড়ি, বাইতুল আমিন জামে মসজিদের ইমাম সাহেব। গত শুক্রবার পবিত্র জুমার বয়ান দেন এবং উনার বয়ান কিছু লোকের পছন্দ না হওয়াতে, বয়ান চলা অবস্থায় চাপাতি দিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপির দলের সন্ত্রাসীরা।’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

একই ঘটনার প্রেক্ষিতে হামলাকারী ব্যক্তিতে জামায়াত শিবিরের নেতা দাবিতেও প্রচার করতে দেখা যায়।

বিএনপির নেতা দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

জামায়াত শিবিরের নেতা দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁদপুরে মসজিদের খতিব মাওলানা নূরুর রহমানের ওপর হামলাকারী ব্যক্তি বিএনপি কিংবা জামায়াত-শিবিরের কেউ নন বরং, অভিযুক্ত মো. বিল্লাহ হোসেন একজন তরকারি বিক্রেতা। 

অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ১২ জুলাই “চাঁদপুরে মসজিদের খতিবকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১১ জুলাই জুম্মার নামাজের খুতবা পছন্দ না হওয়ায় মো. বিল্লাল হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া মোল্লাবাড়ী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আ ন ম নুর রহমানের ওপর চাপাতি দিয়ে হামলা চালান। এতে রহমান মারাত্মকভাবে আহত হন। উক্ত ঘটনার মাওলানা রহমানের ছেলে বাদী হয়ে ১২ জুলাই মামলা করেন এবং অভিযুক্ত গ্রেফতার হন। 

বাংলা নিউজ২৪ এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত মো. বিল্লাহ হোসেন একজন ভ্রাম্যমাণ সবজি ব্যবসায়ী৷ 

অভিযুক্ত মো. বিল্লাহ হোসেন সবজি বিক্রেতা বা কাঁচামাল ব্যবসায়ী উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করেছে– বিডিনিউজ২৪, ইত্তেফাক, ঢাকা মেইলও

পরবর্তীতে অভিযুক্ত বিল্লাহ হোসেনের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে বিল্লাল হোসেনের রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য চাঁদপুরের স্থানীয় একাধিক সাংবাদিকের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

এখন টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি তাহলা জুবায়ের বলেন, অভিযুক্ত বিল্লাহ হোসেন কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলেন না। তিনি উগ্রপন্থী মানুষ ছিলেন। 

চ্যানেল ২৪ এর চাঁদপুর প্রতিনিধি আল ইমরান শোভন বলেন, বিল্লাল হোসেন কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। 

অর্থাৎ, অভিযুক্ত মো. বিল্লাহ হোসেন একজন সবজি বিক্রেতা বা কাঁচামাল ব্যবসায়ী।

সুতরাং, চাঁদপুরের মসজিদের খতিবকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় অভিযুক্তের রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকার দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গাজার উদ্দেশ্যে ত্রাণ নিয়ে জাহাজে করে যাত্রার ভিডিও দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে গাজার ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে একটি নৌবহর যাত্রা শুরু করে। এই মিশনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক এবং মানবাধিকারকর্মীরা অংশ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতেও আরো জাহাজ গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি অনলাইনে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি গাজার উদ্দেশ্য ত্রাণ নিয়ে জাহাজে করে যাত্রার দৃশ্যের।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টটি ৫৬ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ৮ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গাজার উদ্দেশ্যে ত্রাণ নিয়ে জাহাজে করে যাত্রার আসল ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে এই ভুয়া ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘zainulabdin55666’ ইউজারনামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ২ অক্টোবরে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সম্ভাব্য মূল ভিডিওটি পোস্ট হতে দেখা যায়। পোস্টটির ভিডিওটিতে ‘এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট’ উল্লেখ করে লেবেল থাকতে দেখা যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, উল্লিখিত টিকটক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আরো অনেক এআই তৈরি কনটেন্ট পোস্ট হতে দেখা যায়।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে মানুষের গড়ন, পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায় যা সাধারণত এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

Screenshot : DeepFake-O-Meter

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘AVSRDD’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ভিডিওটি ভুয়া বা এআই তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ। এছাড়াও, এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৭০ শতাংশ বলে জানা যায়। 

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে গাজার উদ্দেশ্যে ত্রাণ নিয়ে জাহাজে করে যাত্রার আসল ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রাজধানীতে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্য জবাই করে হত্যা দাবিতে ২০১৭ সালের ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ‘এই মুহূর্তে রাজধানীতে প্রকাশ্য শত-শত মানুষের সামনে একজনকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা’- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৭ সালে রাজধানীর সদরঘাটের শরিফ মার্কেট এলাকায় একটি ভবন থেকে পড়ে রাকিব নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার দৃশ্য এটি।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘চলো পাল্টাই’ নামক ফেসবুক পেজে ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টে দাবি করা হয়, পুরান ঢাকার সদরঘাটে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলার প্ররোচনায় এক কিশোর রাজধানীর সদরঘাটের শরিফ মার্কেট এলাকায় গ্রেট ওয়াল নামক শপিং কমপ্লেক্সের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

একই তথ্যে একই ভিডিও সেইসময় একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছিল। পোস্টগুলো দেখুন– এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

পাশাপাশি, আলোচ্য বিষয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি কারী  ‘Mahfuz Hossain’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে সংযুক্ত ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে এবং পোস্টে এটি ‘ব্লু হোয়েল’ এর পরিণতি বলে ধারণার কথা জানানো হয়। 

উল্লেখিত পোস্টগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রিন্ট এডিশনে ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবরে আলোচিত ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটির বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ঢাকার কোতোয়ালি থানার সদরঘাট শরিফ মার্কেটে ভবন থেকে পড়ে রাকিব নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ এবং প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হয়। 

এছাড়া, একই বিষয়ে জাগো নিউজের ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি অনুযায়ী এটি ‘ব্লু হোয়েল’ এর পরিণতি হলেও পুলিশ বলছে, এটি ‘আত্মহত্যা’ এবং ‘ব্লু হোয়েল’ গেম এর সাথে এই ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

সুতরাং, ২০১৭ সালে রাজধানীর সদরঘাটের শরিফ মার্কেট এলাকায় রাকিব নামক এক যুবকের ভবন থেকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় প্রকাশ্যে একজনকে জবাই করে হত্যার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র