Home Blog Page 6

শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত কথিত লবিস্টের সাথে আইসিসিতে যাওয়ার বানোয়াট তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি ‘নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট পরিদর্শন সহ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত লবিস্ট ড্রোসোফিলা হর্তিকের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় নেদারল্যান্ডস হেগ শহরে অবস্থিত নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে  বিশেষ নিরাপত্তায় পৌঁছেছি’ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি শেখ হাসিনার নিয়োগপ্রাপ্ত কথিত লবিস্ট ড্রোসোফিলা হর্তিকের সাথে আলোচনার জন্য কথিত তামান্না আক্তার ইয়াসমানের নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার নয় বরং, আমস্টারডামে ন্যাশনাল হলোকাস্ট মিউজিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজোগের উপস্থিতির প্রতিবাদের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইরানি বংশোদ্ভূত সুইডিশ লেখক Trita Parsi এর এক্স হ্যান্ডেলে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে যুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

পোস্টটির বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজোগের আগমনে প্রতিবাদের চিত্র। 

উক্ত সূত্র ধরে নেদারল্যান্ডসের গণমাধ্যম Dutch News এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে একই ধরনের চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

এছাড়া, প্রচারিত পোস্টে উল্লিখিত ‘ড্রোসোফিলা হর্তিক’ নামক ব্যক্তি বা কোনো লবিস্টের তথ্য ওপেন সোর্সে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমিরর ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, কথিত লবিস্ট ড্রোসোফিলা হর্তিকের সাথে আলোচনার জন্য এক নারীর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার ভিডিও দাবিতে আমস্টারডামে ন্যাশনাল হলোকাস্ট মিউজিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতি আইজ্যাক হারজোগের উপস্থিতির প্রতিবাদের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

বিরাট কোহলি ও মেয়ে ভামিকার নামে এআই দিয়ে বানানো ভুয়া ছবি ভাইরাল

0

সম্প্রতি বিরাট কোহলি ও তার মেয়ে ভামিকার একসঙ্গে থাকার দাবিতে তিনটি ছবি নিয়ে তৈরি একটি কোলাজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, এটি তাদের আসল ছবি।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে
ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে

টিকটকে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

থ্রেডসে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিগুলো বাস্তব নয়; বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগুলো তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে একটি অসংগতি শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনটি ছবির মধ্যে প্রথম ছবিতে ভামিকার চেহারা বাকি দুটি ছবির চেহারা থেকে আলাদা।

এছাড়া, বিশ্বস্ত কোনো উৎসেও কোহলি ও তার কন্যার এমন কোনো ছবির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মা তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার কথা বিবেচনা করে এখনো মেয়ে ভামিকা ও ছেলে আকায়-এর কোনো ছবি বা চেহারা প্রকাশ করেননি।

পরবর্তীতে ছবিগুলো ‘সাইটইঞ্জিন’ ও ‘হাইভ মোডারেশন’ নামের দুটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী ওয়েবসাইটে যাচাই করে দেখা হয়। উভয় ওয়েবসাইটের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

Screenshot: Sightengine. 
Screenshot: Hive Moderation. 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ছবিকে বিরাট কোহলি ও তার কন্যা ভামিকার আসল ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের রাজপথে নামার দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, “আলহামদুলিল্লাহ দীর্ঘদিন পর আওয়ামী লীগ মাঠে ফিরেছি জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু” ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ২ লক্ষ ৭৫ হাজার বার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের রাজপথে নামার কোনো ঘটনার নয় বরং, এটি ২০২৩ সালে বিএনপির এক দফার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের কর্মসূচির ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওতে দৃশ্যমান  ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ‘Channel 24’ এর লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ‘দীর্ঘ দিন পর রাজপথে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল | 14 Dol | Awami League | Dhaka | Channel 24’ শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ১ সেকেন্ড অংশ থেকে ১৪ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেদিন পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ করে ১৪ দলীয় জোট। একই দিন তৎকালীন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে মিছিল সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট “বিএনপির এক দফার বিরুদ্ধে আজ মাঠে নামছে ১৪–দলীয় জোট” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় বিএনপি ও তাদের মিত্রদের চলমান এক দফা আন্দোলনের বিরুদ্ধে জোটগতভাবে রাজপথে কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। ০২ আগস্ট (২০২৩) থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ ঢাকায় নানা কর্মসূচি পালন করে তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের এই জোট।

এ বিষয়ে সেসময় বিভিন্ন গণমাধ্যম একই তথ্যসংবলিত সংবাদ (,) প্রচার করে। 

সুতরাং, ২০২৩ সালে বিএনপির এক দফার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের কর্মসূচির ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের রাজপথে নামার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হবে দাবি করে মন্তব্য করেননি ড. ইউনূস

0

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফটোকার্ড আকারে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে প্রচারিত আরও ফেসবুক দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে । 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখনও অবধি কোনো মন্তব্য করেননি । প্রকৃতপক্ষে, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে তার নাম ব্যবহার করে আলোচিত মন্তব্যটি প্রচার করা হয়েছে।

গুগলে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে গত ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টার সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সাক্ষাতের প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমের সাথে তার কথা বলার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, প্রধান উপদেষ্টার সাথে তার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন আলাপ হলেও নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে তার সাথে কোনো আলাপ হয়নি। এছাড়াও আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে তাকে কোনো মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। 

প্রধান উপদেষ্টা আদৌও এমন কোনো মন্তব্য করেছেন কিনা তা জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম কথা বলে তাঁর উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের সাথে। তিনি আমাদের নিশ্চিত করেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন কোনো মন্তব্য করেননি। ড. ইউনূসের নামে প্রচারিত মন্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা কী?

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর হচ্ছে নির্বাচনি ব্যবস্থার এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আসন বণ্টন হয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে।

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জুলাই অভ্যুত্থানকে হেয় করে নাফসিন মেহনাজের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত

২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের একবছর পূর্তি উপলক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজসহ আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিভিন্ন পেজ এবং আইডি থেকে জুলাই অভ্যুত্থানকে হেয় করে ভিন্ন পোস্ট করতে দেখা যায়। যার মধ্যে #julycdi শীর্ষক একটি ক্যাম্পেইন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রেক্ষিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনকারী নাফসিন মেহনাজও উক্ত ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওটিতে তাকে, ‘প্লিজ এক্সকিউজ মাই ল্যাংগুয়েজ টুডে। বাট, জুলাই চুদি।’ শীর্ষক মন্তব্য করতে শোনা যায়। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নাফসিন মেহনাজের আলোচিত ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়ে ভিডিও প্রচারের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, জাতীয় নাগরিক পার্টি কর্তৃক জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠের ঘোষণার সমালোচনা করে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তার বক্তব্যের সাথে ‘জুলাই চুদি’ শীর্ষক ভয়েসওভার যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার তার বক্তব্যের ‘প্লিজ এক্সকিউজ মাই ল্যাংগুয়েজ টুডে। বাট’ অংশের সাথে পরবর্তী অংশ ‘জুলাই চুদি’-এর ভয়েসের পার্থক্য লক্ষ্য করে। এছাড়াও শেষের অংশে তার ভিডিওটি ফ্রিজ হয়ে থাকতেও দেখা যায়।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Nafsin Mehanaz Azireen এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩০ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর শুরু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর শুরুর অংশের হুবহু মিল রয়েছে। তবে উক্ত ভিডিওটিতে তাকে ‘প্লিজ এক্সকিউজ মাই ল্যাংগুয়েজ টুডে। বাট, জুলাই চুদি।’ শীর্ষক মন্তব্যের পরিবর্তে ‘প্লিজ এক্সকিউজ মাই ল্যাংগুয়েজ টুডে। বাট, জুলাই কারো বাপের না।’ শীর্ষক মন্তব্য করতে শোনা যায়। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, আলোচিত ভিডিওটিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন ভয়েসওভার যুক্ত করা হয়েছে।

আগামী ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর জুলাই ঘোষণাপত্র এবং ইশতেহার পাঠ করার ঘোষণার প্রেক্ষিতে ভিডিওটিতে নাফসিন মেহনাজকে, ‘জুলাই কারো বাপের না। সর্বদলীয় আম জনতার জুলাই কোন দলীয় সম্পত্তি না। কোন রাজনৈতিক দল এককভাবে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করার অধিকার রাখে না।’ শীর্ষক মন্তব্য করতে শোনা যায়। 

এছাড়াও ভিডিওটিতে তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘোষণাপত্র এককভাবে কোন দল নিজেদের মত করে পাঠ করতে চাইলে ওই সকল মানুষকে অবমাননা করা হবে যারা নিঃস্বার্থভাবে রাজপথে নেমেছিল। জুলাইয়ের বিস্তৃতি সারা বাংলাদেশ জুড়ে। সেই জুলাই এককভাবে দখল করার অধিকার কে দিয়েছে আপনাদের এবং এককভাবে এই জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করার সিদ্ধান্ত কোন সাহসে আপনারা নিলেন?’

সুতরাং, জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নাফসিন মেহনাজ #julycdi শীর্ষক ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়ে ভিডিও করেছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের দাবিটি ভুয়া

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা পাওয়া গেছে যা তার (সারজিসের) কাছে রাখা হয়েছিল ঈদের পরে এনসিপির প্রচারণার খরচের জন্য শীর্ষক দাবিতে সারজিস আলমের ছবিযুক্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওগুলো প্রায় ১০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত  ভিডিওটি সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের ঘটনার নয় বরং এটি মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ঘটনার ভিডিও। এছাড়া, প্রচারিত পোস্টগুলোতে সারজিস আলমকে উপদেষ্টা বলে দাবি করা হলেও তিনি সরকারের উপদেষ্টা নন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ৫ জুন “মা/দ/ক বিক্রির চার বস্তা টাকাসহ একজনকে আ/ট/ক করলো যৌথ বাহিনী | Bangladesh |Kaler Kantho” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ৫ জুন ‘জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান : মাদক বিক্রির আড়াই কোটি টাকাসহ গ্রেপ্তার ১০’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “৪ জুন রাতে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব-২ যৌথভাবে মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোড এলাকায় অবস্থিত বিহারি ক্যাম্পে এই অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রির ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।  গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো— মো. ইসহাক আহমেদ (৩৮), মো. চুম্মন (২৫), মো. রবিউল ইসলাম (৩০), মো. রায়হান (১৮), মো. শহিদুল ইসলাম বিজয় (১৮), মো. ইমরান সাইদ (৪২), মো. রাসেল (২২), মো. ইমরান (৩২), মো. শাহাদাত (২০) এবং মো. নয়ন (২৩)।”

সেসময় দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমও এ বিষয়ে সংবাদ (,,) প্রকাশ করে।

তবে উক্ত প্রতিবেদনগুলোর কোথাও সারজিস আলমের সাথে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের সম্পর্ক আছে বলে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রির অভিযোগে টাকাসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দৃশ্যকে সারজিস আলমের বন্ধুর বাসা থেকে তিন বস্তা টাকা উদ্ধারের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

সরকার নতুন বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে দাবিতে ড. ইউনূসের বক্তব্যের বিকৃত ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, “A new project for the citizens of Bangladesh” শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

যেখানে দাবি করা হচ্ছে, সরকার একটি বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে যেখানে একজন নাগরিক প্রতি সপ্তাহে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আয় করতে পারবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। এছাড়া ভিডিওটিতে আরো দাবি করা হয়েছে, মাত্র ৩০৫০০ টাকা বিনিয়োগ করলেই সপ্তাহে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আয় করার নিশ্চয়তা রয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকার একটি বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে এবং সেখানে ৩০৫০০ টাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করা যাবে শীর্ষক দাবিটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, কাতার-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাতে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিওকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত স্থিরচিত্র রিভার্স সার্চের মাধ্যমে আল জাজিরার ইউটিউব (ইংরেজি) চ্যানেলে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল “Bangladesh’s future: Change or Elite reshuffle? Muhammad Yunus answers” শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এরূপ বিনিয়োগ উদ্যোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner.

২৮ মিনিট ১৫ সেকেন্ড সময়ের উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর ভিজুয়াল সাদৃশ্যতা থাকলেও অডিওর (ভয়েস) সঙ্গে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কন্ঠস্বর, ঠোঁটের অস্বাভাবিক নড়াচড়া এবং স্বাভাবিক উপস্হাপনে কিছুটা অমিল দেখতে পাওয়া যায়, যেটা আসল সাক্ষাৎকারে পরিলক্ষিত হয়নি। 

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে অনুসন্ধানেও সরকারের এরূপ বিনিয়োগ উদ্যোগের বিষয়ে কোনো তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ভয়েস এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশনে অডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৮ শতাংশ। পাশাপাশি, ডিপফেক শনাক্তকরণ টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’-এর  একটি মডেলের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

Image Collage by Rumor Scanner 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকারের সম্পাদিত ভিডিওকে সরকার একটি বিনিয়োগ প্লাটফর্ম চালু করেছে দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • Al Jazeera English: YouTube Video 
  • Hive Moderation Tool 
  • DeepFake-O-Meter 
  • Rumor Scanner’s analysis 

মামলা থেকে শেখ হাসিনাকে অব্যাহতির বানোয়াট তথ্য, প্রচারিত ছবিটি রুয়ান্ডা ও ইউএইর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের

0

সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আন্তবর্তীন কালিন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডা: মোহাম্মদ ইউনুসের দায়ের করা পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ লুটপাটের মামলা থেকে অব্যাহিত পাওয়া রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, লন্ডন, মালেশিয়া, সুইজারল্যান্ড আদালতের মুল কপিটি হাতে পেলাম’ ক্যাপশনে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ত দেখুন এখানে 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ লুটপাটের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কিংবা বাংলাদেশের বাহিরে কোনো মামলা দায়ের হয়নি। গত বছরের ১৭ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামক একটি ওয়েবসাইটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রিম আল হাশিমি এবং রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ভিনসেন্ট বিরুতার সাক্ষাতের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ২০২০ সালের ০৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

পোস্টটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, আফ্রিকান ইউনিয়ন এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে রুয়ান্ডা প্রজাতন্ত্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে যৌথ কমিটি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী বিরুতা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশেমীর সাথে দেখা করেন। ছবিটি উক্ত ঘটনার চিত্রের।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ আগস্ট গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। তবে এই প্রতিবেদনকে ‘উসকানিমূলক’ দাবি করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস ও প্রকল্পের কাজ করা রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম। ঐ বছরের ৩ সেপ্টেম্বর এই অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ববি হাজ্জাজ। অভিযোগ ওঠা পাঁচ বিলিয়ন ডলার অর্থ আত্মসাৎ প্রতিরোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ১৫ ডিসেম্বর আলোচিত অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমিরর ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, শেখ হাসিনাসহ টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা অর্থ লুটপাটের মামলা থেকে বিভিন্ন দেশের আদালত থেকে অব্যাহতি পাওয়ার নথির মূল কপি হাতে পাওয়ার ছবি দাবিতে রুয়ান্ডার পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী বিরুতা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশিমির সাক্ষাতের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না’ শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে এআই নির্মিত ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, “দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না, এইটা আমাদের সবার। লুটপাট বন্ধ করেন ভাই, দিন শেষ হইছে। চেয়ারটা সাময়িক ভাই, কিন্তু বদনামটা চিরস্থায়ী। কিছু তো লজ্জা করেন!” শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না, এইটা আমাদের সবার’ শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিওর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওতে এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। যেমন- র‍্যাব সদস্যের পেছনের মানুষগুলোর অস্বাভাবিক নড়াচড়া।

পাশাপশি ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের অনুরূপ বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড। 

Screenshot from Facebook by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে ভিডিওটি এআই (AI) কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল ‘Cantilux’ দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়। 

Screenshot From Cantilux by Rumor Scanner 

সুতরাং, ‘দেশটা আপনার বাপের সম্পত্তি না, এইটা আমাদের সবার’ শিরোনামে র‍্যাব সদস্যের বক্তব্য দাবিতে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Google Tool: Veo 
  • AI Content Detection Tool: Cantilux 
  • Rumor Scanner’s Analysis 

আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমানের বক্তব্যকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দাাবিতে প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায়’ শীর্ষক মন্তব্যটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায়’ শীর্ষক মন্তব্যটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নয় বরং, সম্প্রতি একটি টকশোতে এমন মন্তব্য করেছেন আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান। 

অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ২৯ জুন  কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে “যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায় : তারেক রহমান”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি একটি টক শোতে অংশ নিয়ে আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান বলেন, যারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় তাদের দেশের কোনো এলাকায় নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই।

তারেক রহমান বলেন, ‘ভোটে নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস না থাকায় তারা সারা দেশের ভোটকে একত্রিত করে সংসদে যেতে চান। তারা সমন্বিত গড়কে সামনে আনতে চান।’

তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধিতিতে নির্বাচন হলে সবচেয়ে লাভবান হবে আওয়ামী লীগ। দলটি যদি ২০ শতাংশ ভোটও পায় তাহলে ৬০ জন এমপি তাদের ভাগে পড়বে। কিন্তু পিআর পদ্ধতি যদি না হয় তাহলে তারা হয়তো একজন এমপিও নির্বাচিত করতে পারবেন না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে না। প্রতিনিধি নির্বাচন করবে দলের হাই কমান্ড। এতে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে অনেকের সংসদে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এমপি পদ বিক্রি করে দলের সভাপতি-সম্পাদক রাতারাতি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাবেন।’ 

তারেক রহমান বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে একজন খারাপ প্রার্থীকে বয়কট করার সুযোগ জনগণের থাকবে না। এভাবে উল্টো অযোগ্যদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে।’ 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গত ২৮ জুন ফেস দ্যা পিপল নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত একটি লাইভ টকশো খুঁজে পাওয়া যায়। ০১ ঘন্টা ০৯ মিনিটের উক্ত টকশোর প্রথম তিন মিনিটে তারেক রহমানকে উক্ত মন্তব্যটি করতে শোনা যায়। 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, প্রচারিত মন্তব্যটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নয়। 

উল্লেখ্য, ১ জুলাই বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অনলাইনে যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন,  ‘কোনো কোনো দল সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন। বিশ্বের কোনো কোনো দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী বিধান রয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায়, ভৌগোলিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই মুহূর্তে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা কতটুকু উপযোগী, বা উপযোগী কিনা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ রাখব।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, নিত্যনতুন ইস্যু যদি আমরা সামনে নিয়ে আসতে থাকি, এর সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ পাবে।’

সুতরাং, আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমানের ‘যাদের নির্বাচিত হওয়ার ফিটনেস নেই, তারাই পিআর পদ্ধতি চায়’ শীর্ষক মন্তব্যকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র