Home Blog Page 9

ইসরায়েলি স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য দাবিতে মেক্সিকোর ক্যাসিনোতে অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য প্রচার

শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত দৃশ্যটি ইসরায়েলের।


আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের নয় এবং দৃশ্যটিও ইসরায়েলের নয়৷ প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি গত ১৬ জানুয়ারিতে মেক্সিকোর কুলিয়াকানের ক্যাসিনো পার্কের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধারণকৃত।

এ বিষয়ে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে যু্‌ক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’ এর ওয়েবসাইটে Unbelievably tiny cause of massive explosion that blew apart casino revealed” শীর্ষক শিরোনামে গত ১৭ জানুয়ারিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনে একটি ভিডিও ও একাধিক ছবিরও সংযুক্তি পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটি সম্পর্কে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলে একটি ক্যাসিনো এবং একটি ইনডোর শিশু পার্ক ধ্বংসকারী অগ্নিকাণ্ডের  কারণ ছিল শর্ট সার্কিট — এমনটাই জানিয়েছে সিনালোয়া রাজ্যের কর্তৃপক্ষ।… আগুনটি (গত ১৬ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার কিছু পরে শুরু হয় এবং দুই ঘণ্টার মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কুলিয়াকান দমকল বিভাগ, রেড ক্রস এবং সিভিল ডিফেন্সের মোট ৮৮ জন সদস্য এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে অংশ নেন, এবং আগুন নেভাতে ৫ লক্ষ লিটার পানি ব্যবহার করা হয়।” (অনূদিত)

এছাড়াও, অনুসন্ধানে মেক্সিকো ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘এল হেরাল্ডো দে মেক্সিকো’ এর ওয়েবসাইটে ‘Revelan causa del incendio de Casino en Culiacán’ শীর্ষক শিরোনামে গত ১৬ জানুয়ারিতে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি বিকেলে কুলিয়াকানের সিনেপোলিস প্লাজায় একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন মূলত ক্যাসিনো রয়্যাল পার্ক এবং ট্রাম্পোলিন পার্কের স্থাপনাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ঘটনাটি পেদ্রো ইনফান্তে বুলেভার্দে, রাজ্য কংগ্রেস ভবন থেকে কয়েকটি রাস্তা দূরে ঘটেছে।” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

এছাড়াও, আরো একাধিক গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায় যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মেক্সিকোর।

সুতরাং, গত জানুয়ারিতে মেক্সিকোর কুলিয়াকানের ক্যাসিনো পার্কের অগ্নিকাণ্ডের  দৃশ্যকে সম্প্রতি ইসরায়েলের স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইরানের ভয়ে দেশ ত্যাগ করে নেহানিয়াহুর পুতিনের সাথে সাক্ষাতের দাবিটি ভুয়া 

0

গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও অস্ত্রাগারে হামলা চালায় ইসরায়েল। যার প্রতিশোধ স্বরূপ একইদিন রাতে ইসরায়েলের তেল আবিব ও জেরুজালেমকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, পুনরায় ইরানের হামলার ভয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশ ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে সহায়তা চেয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। উভয় রাষ্ট্র প্রধানের সাক্ষাতের ছবি দাবিতে পোস্টগুলোতে একটি ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে নেতানিয়াহুকে হিজাব পরিহিত একজন নারীর সাথে হ্যান্ডশেক করতে দেখা যাচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং রাশিয়ায় প্রেসিডেন্টের কাছে সহায়তা চাওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো সঠিক নয়। এছাড়াও আলোচিত ছবিটিও ইরান-ইসরায়লের সংঘাত বিষয়ক কোনো সাক্ষাতের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সাথে নেতানিয়াহুর সাক্ষাতের সময় আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমীর সাথে তোলা তার ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদ সংস্থা Wam-এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর Abdullah bin Zayed meets Benjamin Netanyahu শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে ব্যবহৃত ছবিগুলোর মধ্যে একটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। যেখানে তাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমীর সাথে হ্যান্ডশেক করতে দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, এটি ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সাথে ততকালীন ইসরায়েলের বিরোধী দলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাক্ষাতের মুহুর্তে ধারণ করা। এসময় আল নাহিয়ান এবং রিম আল হাশিমী ব্যতীতও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনে তাদের সাথে নেতানিয়াহুর সাক্ষাতের ছবিও রয়েছে। 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আরেক গণমাধ্যম Al Khaleej এর ওয়েবসাইটে একই ঘটনায় প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনেও আলোচিত ছবিটি দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকেও ছবিটির বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

পরবর্তীতে নেতানিয়াহুর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং রাশিয়ার প্র্রেসিডেন্টের নিকট সাহায্য প্রার্থনার দাবির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমীর সাথে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাক্ষাতের পুরোনো ছবিকে নেতানিয়াহুর দেশ থেকে পালিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে সহায়তা চাওয়ার ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দুবাইয়ের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে ইসরায়েলে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার

শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।

এই ঘটনাকে ঘিরে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পার্লামেন্টের অফিস কক্ষ টার্গেট করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইরান—এমন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি আকাশচুম্বী ভবনে আগুন জ্বলছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ইসরায়লে ইরানের হামলার কোনো ঘটনার নয়; এমনকি বহুতল ভবনে আগুনের এই ভিডিওটি ইসরায়েলের কোনো স্থানেরও নয়। বরং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের মেরিনা এলাকায় অবস্থিত ৬৭ তলা ‘মেরিনা পিনাকল’-এ গত ১৩ জুন সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে পাকিস্তানি বেসরকারি টেলিভিশন সংবাদ চ্যানেল ‘Geo News’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ জুন ‘Massive Fire in Dubai Marina Building Extinquished – Breaking News’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি শর্টস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের মারিনা এলাকায় ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে প্রাপ্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) এর সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস (Khaleej Times) এর ওয়েবসাইটে গত ১৩ জুন ‘Dubai: Fire breaks out at high-rise building in Marina; 3,800 residents evacuated’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের মেরিনা এলাকায় অবস্থিত ৬৭ তলা ‘মেরিনা পিনাকল’-এ গত ১৩ জুন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি (NDTV) এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, দুবাইয়ের একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিওকে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পার্লামেন্টের অফিস কক্ষ টার্গেট করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়োগের ভুয়া বিজ্ঞপ্তি 

0

সম্প্রতি, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দাবিতে কথিত বিজ্ঞপ্তিটির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। গত ২০ মে এর তারিখে প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তিতে চারটি পদে আবেদন করতে আহ্বান জানিয়ে [email protected] এই ইমেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, আবেদনের সময়সীমা ২৭ মে দুপুর ১২ টা।

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেয়নি বরং ভিন্ন একটি হাসপাতালের ২০২২ সালের পুরোনো বিজ্ঞপ্তি সম্পাদনা করে ভুয়া এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে স্টাডি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক ওয়েবসাইটে (, ) ২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির খোঁজ মেলে। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র নং ছিল ০৩.০৬.১৫৩৫.৩৩৫.১১.০২৯.১০-৪৬৪৬। একই সূত্র নং দেখা যায় সাম্প্রতিক সময়ে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নামে প্রচারিত কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেও। দুইটি বিজ্ঞপ্তির ছবির ডিজাইন, কালার গ্রেডিং এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি পর্যবেক্ষণ করে সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তির ছবিটি ২০২২ সালের চট্টগ্রাম ইপিজেড হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি থেকে সম্পাদনা করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পুরোনো বিজ্ঞপ্তিটির ছবিতে তারিখ, ঠিকানা, পদের বিষয়, আবেদনের মাধ্যম ও সময়সীমা সংক্রান্ত নির্দেশনা বদলে দিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

অনুসন্ধানে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়েবসাইট এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিভিন্ন কিওয়ার্ড সার্চ করে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। 

তাছাড়া, হাসপাতালটির একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত প্রচলিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য দেওয়া ইমেইল ঠিকানা [email protected]। এটি হাসপাতালটির ওয়েবসাইটের অধীনে থাকা একটি ইমেইল পরিষেবা। অন্যদিকে, প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিতে দেওয়া ইমেইল ঠিকানাটি ([email protected]) জিমেইল পরিষেবার, যা বিজ্ঞপ্তিটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে সক্ষম। 

এই বিষয়ে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। 

ভুয়া নিয়োগের এই ধরনটি খুব সাধারণ। গেল কয়েক বছর ধরেই এই ধরনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণা করে আসছেন প্রতারকরা। রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেশন ইউনিট গত বছর এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরে। দেখুন এখানে। 

সুতরাং, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তিটি বানোয়াট ও প্রতারণামূলক। 

তথ্যসূত্র 

  • Khulna City Medical College Hospital Cardiac Unit: Facebook Post 

ইসরায়েলের অস্ত্রাগারে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে চীনের ভিন্ন ঘটনার পুরোনো দৃশ্য প্রচার

শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “ইরান ইজরায়েলের অস্ত্রাগারে ভয়াবহ হামলা চালানোর দৃশ্য” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।

আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলের অস্ত্রাগারে ইরানের হামলার দৃশ্যের নয় বরং, এটি ২০১৫ সালে চীনের তিয়ানজিন শহরের একটি গুদামে আগুন লাগার পর হওয়া বিস্ফোরণের ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ‘Tianjin explosion video captures fear of eyewitnesses – BBC News’ শীর্ষক শিরোনামে ২০১৫ সালের ১৪ আগস্টে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির বর্ণনা অংশে ভিডিওটি সম্পর্কে বলা হয়, “চীনের তিয়ানজিন শহরে দুটি বিশাল বিস্ফোরণের ফুটেজ, যা এক হতভম্ব প্রত্যক্ষদর্শী ধারণ করেছিলেন, সেখানকার মানুষের ভয় ও আতঙ্ককে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। একটি বিপজ্জনক রাসায়নিক সামগ্রী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কোম্পানির মালিকানাধীন গুদামে আগুন লাগার পর ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বহু মানুষ নিহত হন এবং শত শত আহত হন।

শহরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুন লাগার সময় গুদামে কী ধরনের পদার্থ ছিল বা বিস্ফোরণের সঠিক কারণ কী—তা এখনো তারা জানেন না। প্রত্যক্ষদর্শী ড্যান ভ্যান ডিউরেন বিস্ফোরণের মুহূর্তটি ক্যামেরায় ধারণ করেন, এরপর তিনি ও অন্যরা বিপদ এড়াতে দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান।” (অনূদিত)

এছাড়াও, “Dan Witting” নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলেও “Tianjin Chemical plant explosion in China INSANE!!!” শীর্ষক শিরোনামে একই দৃশ্যটি ২০১৫ সালের ১৪ আগস্টে প্রচার হতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত ২০১৫ সালের এবং চীনের।

সুতরাং, ২০১৫ সালে চীনের তিয়ানজিন শহরে হওয়া বিস্ফোরণের দৃশ্যকে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলের অস্ত্রাগারে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া দাবিতে ভারতীয় অভিনেত্রীর সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবি দেখুন এখানে।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো অর্চিতা স্পর্শিয়ার নয়। বরং, ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় এক অভিনেত্রীর ছবি সংগ্রহ করে তাতে প্রযুক্তির সাহায্যে অর্চিতা স্পর্শিয়ার মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে Naina Ganguly নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ০৩ জুন প্রকাশিত কিছু ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। ছবিগুলোতে উক্ত নারীর মূখমণ্ডলে পার্থক্য ছাড়া অন্য সব উপাদানে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভারতে বসবাসকারী এই নারী একজন অভিনেত্রী। 

অর্থাৎ, মূল ছবিগুলো নায়না গাঙ্গুলি নামের ভিন্ন এক নারীর। 

অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নায়না গাঙ্গুলির ছবির ওপর অর্চিতা স্পর্শিয়ার মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এতে সম্পাদিত ছবির মতোই অনুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে।

সুতরাং, অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়া দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ছবিগুলো সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সকল হত্যা মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেননি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, কালের কণ্ঠের নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী “শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যতগুলো হত্যা মামলা রয়েছে সবগুলো প্রত্যাহার করার নির্দেশ।” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে কালের কণ্ঠের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আলোচিত মন্তব্যটি করেননি এবং উক্ত শিরোনামে কালের কণ্ঠও কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ভিন্ন মন্তব্য সম্বলিত কালের কণ্ঠের ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তার সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে কালের কণ্ঠের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৪ জুন, ২০২৫ উল্লেখ পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ১৪ জুন ‘মাঠ পর্যায়ের পুলিশের কাছে রাইফেলের মতো অ/স্ত্র থাকলেও ভারী মার/ণাস্ত্র থাকবে না। তিনি বলেন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) মতো বিশেষায়িত ইউনিটের কাছে থাকবে ভারী অ/স্ত্র।’ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম ব্যতিত বাকি সকল উপাদানের মিল রয়েছে। কালের কণ্ঠের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘মাঠ পর্যায়ের পুলিশের কাছে রাইফেলের মতো অ/স্ত্র থাকলেও ভারী মার/ণাস্ত্র থাকবে না। তিনি বলেন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) মতো বিশেষায়িত ইউনিটের কাছে থাকবে ভারী অ/স্ত্র।’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যতগুলো হত্যা মামলা রয়েছে সবগুলো প্রত্যাহার করার নির্দেশ।’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

অর্থাৎ, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে কালের কণ্ঠের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত কালের কণ্ঠের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১৪ জুন রাজধানীতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এরপর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। তবে তার বক্তব্যে তাকে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

সুতরাং, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যতগুলো হত্যা মামলা রয়েছে সবগুলো প্রত্যাহার করার নির্দেশ।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

জুলাই আহতের কাছ থেকে নয়, ভিডিওটি এক ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য উদ্ধারের ঘটনার 

সম্প্রতি “আমাদের জুলাইয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিদেশ থেকে চিকিৎসা করে আসার সময় কিছু লাল পানি নিয়ে আসছিলো। প্লিজ আপনারা অন্য কিছু ভাবিয়েন না” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট (ভিডিও) দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোগীর ছদ্মবেশ ধরে অভিযুক্ত অবৈধ পণ্য বহনকারী ব্যক্তি জুলাই অভ্যুত্থানে আহত বাংলাদেশি নয়। প্রকৃতপক্ষে চলতি বছরের ১৭ মার্চ ভারতের কলকাতা থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোগীর বেশধারী নজরুল হক নামের ভারতীয় এক নাগরিকের কাছ থেকে অভিনব কৌশলে লুকিয়ে রাখা মদ ও কসমেটিকস পণ্য উদ্ধারের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশিয় মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ‘Channel 24’ এর ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ১৮ মার্চ তারিখে “রোগী সেজে চোরাচালান; অবশেষে ধরা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি এবং দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি এবং দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশিয়  গণমাধ্যম ডেল্টা টাইমস এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ ১৮ মার্চে “শাহজালাল বিমানবন্দরে রোগীর বেশধারী ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে মদ জব্দ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে সংযুক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে।

Screenshot: Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ (সোমবার) রাতে ভারতের কলকাতা থেকে নজরুল হক নামের এক যাত্রী বিমানের সিসিইউ ইউনিটে ঢাকায় আসেন। বিমানবন্দর ত্যাগ করার সময় অভিনব কৌশলে লুকিয়ে রাখা মদ ও কসমেটিকস পণ্য উদ্ধার করে ঢাকা কাস্টম হাউস। জব্দ করা পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে– কসমেটিকস পণ্য ২০ কেজি, মদ ৪ লিটার, মোবাইল ৩ পিস ও কাপড় ৭ পিস। 

অর্থাৎ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোগীর বেশধারী ব্যক্তি জুলাই অভ্যুত্থানে আহত কোনো বাংলাদেশী নয় বরং তিনি ভারতীয় নাগরিক।  তার নাম নজরুল হক। 

সুতরাং, নজরুল হক নামক ভারতীয় এক নাগরিকের কাছে থেকে অভিনব কৌশলে লুকিয়ে রাখা মদ ও কসমেটিকস পণ্য উদ্ধারের ঘটনাকে রোগীর ছদ্মবেশ ধরে অভিযুক্ত অবৈধ পণ্য বহনকারী ব্যক্তি জুলাই অভ্যুত্থানে আহত বাংলাদেশি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ড. ইউনূসের সাথে টিউলিপ সিদ্দিকের দেখা করা প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি ‘দেখা করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান টিউলিপের, হতাশ ড. ইউনূস’ শীর্ষক শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে  (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেখা করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক শীর্ষক দাবিতে ঢাকা পোস্ট কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ঢাকা পোস্টের ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ঢাকা পোস্টের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৩ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা পোস্টের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ১৩ জুন গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “দেখা করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান ড. ইউনূসের, হতাশ টিউলিপ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। ঢাকা পোস্টের মূল ফটোকার্ডটিতে ‘দেখা করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান ড. ইউনূসের, হতাশ টিউলিপ’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘দেখা করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান টিউলিপের, হতাশ ড. ইউনূস’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner

অর্থাৎ, ঢাকা পোস্টের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ঢাকা পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের সাক্ষাতের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ ঘটনায় এক বিবৃতিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন টিউলিপ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসের বরাতে বলা হয়, টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ‘আদালতের বিষয়’ এবং তিনি বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওপর পূর্ণ আস্থা রাখেন।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “দেখা করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান টিউলিপের, হতাশ ড. ইউনূস” শিরোনামে ঢাকা পোস্টের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

রুথবা ইয়াসমিনের চাঁদে পা রাখতে যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়

সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, ‘প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন রুথবা ইয়াসমিন।’

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন: এটিএন নিউজ (ইউটিউব), মোহনা টিভি, নিউজ২৪, ডিবিসি নিউজ (ইউটিউব), এখন টিভি, বৈশাখী টিভি (ইউটিউব), বাংলা টিভি (ফেসবুক), আমার দেশ, আজকের পত্রিকা, যুগান্তর, কালবেলা, কালের কণ্ঠ, যায় যায় দিন, দেশ রূপান্তর, ইনকিলাব, মানবকণ্ঠ, জনকণ্ঠ, ঢাকা প্রকাশ (ফেসবুক), ঠিকানা নিউজ, ফেস দ্য পিপল (ইউটিউব), রুপালী বাংলাদেশ, বাংলাদেশ টাইমস, ঢাকা এক্সপ্রেস, কুমিল্লা প্রেস (ফেসবুক), বে অফ বেঙ্গল পোস্ট, খবর সংযোগ, দৈনিক পূর্বকোণ, সিলেট ভিউ২৪, বিডি টুডে, ডেল্টা টাইমস২৪, পার্বত্য সময়, এমটি নিউজ২৪, সময় নিউজ২৪, ক্লাইমেট জার্নাল২৪, আমার বরিশাল২৪, চাটগাঁ নিউজ, পদ্মা সংবাদ, জার্মান বাংলা চ্যানেল, আকাশবাণী বিডি২৪, দিবালোক, বাংলা৭১, ওয়েব বাংলাদেশ, ভিন্ন বার্তা

এছাড়াও নানা গণমাধ্যম আলোচিত দাবিতে সংবাদ প্রচার করে পরবর্তীতে তা সরিয়ে নেয় বা পরিবর্তন করে। এরূপ গণমাধ্যম: এনটিভি, চ্যানেল২৪, বাংলা ভিশন, দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও, উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ শেয়ার করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

লিংকডইনে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে রুথবা ইয়াসমিনের চাঁদে পা রাখতে যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে রুথবা ইয়াসমিন স্পেস নেশন নামক একটি কোম্পানির আয়োজিত ৩ দিনের একটি ‘মুন মিশন সিমুলেশন’ ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়েছেন। উক্ত প্রতিষ্ঠান কাউকে চাঁদে পাঠাচ্ছে না এবং অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানেরও চাঁদে মানুষ পাঠানোর কোনো মিশনে রুথবার নাম ঘোষণা করা হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিটির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ এর ওয়েবসাইটে ‘Forget Katy Perry, here’s Bangladesh’s Ruthba Yasmin shooting for the moon’ শীর্ষক শিরোনামে গত ১০ জুনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রুথবা ইয়াসমিন স্পেস নেশন নামক একটি কোম্পানির ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন’ ট্রেনিং সম্পন্ন করেছেন। রুথবা স্বপ্ন দেখেন তিনি প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে চাঁদে পা রাখবেন।

পরবর্তীতে স্পেস নেশন নামক উক্ত কোম্পানিটির ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় তারা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের মিডল্যান্ডে ৩ দিনব্যাপী ‘মুন মিশন সিমুলেশন’ প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। উক্ত প্রশিক্ষণটিতে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, ট্রেনিংটিতে নাসা মহাকাশচারীর উপস্থিতি থাকে/থাকবে বলেও কোম্পানিটি দাবি করে। উক্ত কোম্পানিটির ফেসবুক পেজ ও ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলে তাদের এরূপ প্রশিক্ষণে রুথবা ইয়াসমিনের অংশগ্রহণের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। কোম্পানিটির ফেসবুক পেজে গত ১৪ এপ্রিলে প্রচারিত একটি পোস্টেও তাদের এরূপ একটি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের নাম উল্লেখ করা হয় যেখানে রুথবা ইয়াসমিনেরও নাম পাওয়া যায়।

কোম্পানির পরিচয়ের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে তাদের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালে ফিনল্যান্ডে দুই বন্ধুর হাত ধরে কোম্পানিটির যাত্রা শুরু হয়েছে এবং ২০১৯ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্রেও কার্যক্রম শুরু করেছে৷ তবে, কোম্পানিটি চাঁদে মানুষ পাঠাচ্ছে এমন কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।

চাঁদে মানুষ পাঠানোর বিষয়ে অনুসন্ধান করলে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ নানা দেশের নানা সংস্থা চাঁদে মানুষ পাঠানোর বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায় তবে তারা চাঁদে কাদের অবতরণ করাবে সে বিষয়ে জানা যায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ‘আর্টেমিস ৩’ মিশনের মাধ্যমে ২০২৭ সালে চাঁদে মানুষের অবতরণ করানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তবে চন্দ্রপৃষ্ঠে কারা অবতরণ করবে তা এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। উল্লেখ্য যে, এর আগে ২০২৬ সালে নাসা ‘আর্টেমিস ২’ মিশনের মাধ্যমে চাঁদের চারপাশে মানুষদের প্রদক্ষিণ করাবে এবং সে মিশনে যারা থাকবে তাদের নামও ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। ‘আর্টেমিস-২’ এ থাকবেন কমান্ডার রিড ওয়াইজম্যান, পাইলট ভিক্টর গ্লোবার, মিশন স্পেশালিস্ট ক্রিস্টিনা কচ ও মিশন স্পেশালিস্ট জেরেমি হ্যানসেন। তবে উক্ত মিশনটিতে চন্দ্রপৃষ্ঠে মানুষ অবতরণ করা হবে না।

এছাড়াও, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও চাঁদে যাওয়ার কোনো মিশনে রুথবা ইয়াসমিনের নাম কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন রুথবা ইয়াসমিন শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র