Home Blog Page 9

গাইবান্ধার সাবেক এমপি মাহাবুব আরা গিনি মারা যাননি 

0

গত ৩ অক্টোবর, গাইবান্ধা-২ আসনের সাবেক সংসদ ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ সদস্য মাহাবুব আরা গিনি কারাগারে মৃত্যু বরণ করেছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহাবুব আরা গিনি মারা যাননি। প্রকৃতপক্ষে, বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা কারাগারে আটক আছেন। তিনি সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে জেল কর্তৃপক্ষ। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ৪ অক্টোবর ‘গাইবান্ধার সাবেক এমপি মাহাবুব আরা গিনির মৃত্যুর খবর গুজব : জেল কর্তৃপক্ষ’’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ জেল কর্তৃপক্ষের বরাতে বলা হয়, গিনি বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দী আছেন এবং সুস্থ আছেন। তিনি নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমও সংবাদ (,,) প্রচার করে।

এছাড়া, মাহাবুব আরা গিনির পরিবারের পক্ষ থেকেও তিনি মারা গেছেন এমন কোনো দাবি করা হয়নি। মাহবুব আরা গিনির মতো ব্যক্তি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটলে উক্ত বিষয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন মাহাবুব আরা গিনি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে গাইবান্ধা ও ঢাকায় কয়েকটি মামলায় বর্তমানে তিনি জেলে রয়েছেন। 

সুতরাং, মাহাবুব আরা গিনি মারা যাওয়ার দাবিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

থাই-কম্বোডিয়ান সেনাদের বাকবিতণ্ডার ভিডিওকে বান্দরবান সীমান্তে আরাকান আর্মি-বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভিডিও দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি ‘ঘটনাটি বান্দরবান সিমান্তের: আরাকান আর্মি, বার্মার নাগরিক ধরতে ধরতে বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকে পরেছে বাঙালি পরিবারের উপর হামলা করতে এসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয়।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে আরাকান আর্মির বাংলাদেশে ঢুকে পড়া এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত জুলাইয়ে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার বিতর্কিত সীমান্তে অবস্থিত একটি মন্দিরে কম্বোডিয়ার নাগরিকদের পরিদর্শনকে ঘিরে দুই দেশের সেনাদের মধ্যকার উত্তেজনার ভিডিওকে বান্দরবান সীমান্তের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Weapons Update নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ জুলাই প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, থাই সেনারা কম্বোডিয়ার নাগরিকদের কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে অবস্থিত ‘তা মোয়ান থম’ মন্দির পরিদর্শনে বাধা দেওয়ার দৃশ্য এটি। 

পরবর্তীতে, থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম The Nation এর ওয়েবসাইটে গত ১৫ জুলাই ‘Tension at Ta Muen Thom resolved after disagreement between Thai and Cambodian forces’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের সাদৃশ্য রয়েছে। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেদিন কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশের ফানম ডং রাক জেলার ‘তা মুয়েন থম’ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের কাছে একজন কম্বোডিয়ান দর্শনার্থী প্রবেশ করতে গেলে থাই সেনারা বাধা দেয় ও তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে কম্বোডিয়ার সেনারাও এসে পৌঁছায়।

একই বিষয়ে Pattaya People নামক ওয়েবসাইটে গত ১৫ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। 

সুতরাং, থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্তে অবস্থিত মন্দিরে কম্বোডিয়ার নাগরিকদের পরিদর্শনকে ঘিরে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনার ভিডিওকে বান্দরবান সীমান্তে আরাকান আর্মির প্রবেশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাথে তাদের বাকবিতণ্ডার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

এশিয়া কাপে জাকের আলীর সাথে সূর্যকুমার যাদবের হাত না মেলানোর দাবিটি মিথ্যা

0

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনার কারণে সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপে ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব পাকিস্তান দলের অধিনায়ক ও খেলোয়াড়ের সাথে হাত মেলাতে অস্বীকৃতি জানান যা ক্রিকেটদুনিয়ায় বেশ আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তান ভিত্তিক নানা অ্যাকাউন্ট থেকে সম্প্রতি প্রায় ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও অনলাইনে প্রচার করে দাবি করা হয়, ভারত পাকিস্তান ম্যাচের ধারাবাহিকতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জাকের আলী অনিকের সাথে হাত মেলাননি ভারত দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টটি প্রায় ৮১ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৩৮ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ৪ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টগুলোতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টটি প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৫ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটিতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৩ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টগুলোতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টটি প্রায় ৬৮ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৩ লক্ষ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটিতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

এরূপ দাবিতে থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এশিয়া কাপে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে জাকের আলীর সাথে সূর্যকুমার যাদবের হাত না মেলানোর দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রচারিত ভিডিওটিরই দীর্ঘায়িত সংস্করণে একে অপরকে ফিস্টবাম্প (মুষ্টি স্পর্শ/মুষ্টি দিয়ে অভিবাদন) করতে ও একাধিক সূত্রে টসের সময় তাদের হাত মেলাতে ও ম্যাচ শেষেও দুই দলের খেলোয়াড়দের হাত মেলাতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Islavath Nanaji’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচের টসের সময়কার ৩ মিনিট ৮ সেকেন্ডের একটি দীর্ঘায়িত ভিডিও সংস্করণ পাওয়া যায়। ভিডিওটির ২ মিনিট পরবর্তী সময়ে জাকের আলী অনিক ও সূর্যকুমার যাদবকে একে অপরকে ফিস্টবাম্প করতে দেখা যায়। উল্লেখ্য, ‘ফিস্টবাম্প’ একধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ অভিবাদন, যেখানে দু’জন মানুষ একে অপরের বন্ধ মুঠি (fist) হালকা করে ঠোকায় যা করমর্দনের (handshake) বা হাই-ফাইভের মতোই, কিন্তু অনেকটা অনানুষ্ঠানিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ ভঙ্গিতে ব্যবহৃত হয়।

এছাড়াও, ‘GSMS Media’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টেও গত ২৪ সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচের টসের সময়কার ২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি দীর্ঘায়িত ভিডিও সংস্করণ পাওয়া যায়। ভিডিওটিতেও ফিস্টবাম্পের একই দৃশ্য দেখা যায়।

Collage: Rumor Scanner

পাশাপাশি অনুসন্ধানে ভিজ্যুয়াল মিডিয়া কোম্পানি ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটেও গত ২৪ সেপ্টেম্বরে জাকের আলী ও সূর্যকুমার যাদবের ফিস্টবাম্পের একটি ছবি প্রকাশ হতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র ওয়েবসাইটে গত ২৪ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এবং বাংলাদেশের অধিনায়ক জাকের আলী বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে এশিয়া কাপ সুপার ফোরের ম্যাচের আগে টসের সময় করমর্দন করেন। তারা (ভারত দল) পাকিস্তান ছাড়া প্রতিটি দল, অধিনায়ক এবং কর্মকর্তার সঙ্গে করমর্দনের “ঐতিহ্য” অব্যাহত রাখেন।’ (অনূদিত)

Screenshot : Lokmat Times

অনুসন্ধান ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘লোকমাত টাইমস’ ও ‘দেশ সেবক’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জাকের আলী ও সূর্যকুমার যাদবের হাত মেলানোর একটি ছবিরও সংযুক্তি পাওয়া যায়।

এছাড়াও, ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র ওয়েবসাইটে গত ২৫ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে ম্যাচশেষে বাংলাদেশ ও ভারতের খেলোয়াড়দের হাত মেলানোর একটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ভারত পাকিস্তান ম্যাচের মতো বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জাকের আলী ও বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের সাথে হাত মেলানো এড়াননি ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব বা তার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল।

সুতরাং, এশিয়া কাপে জাকের আলীর সাথে সূর্যকুমার যাদবের হাত না মেলানোর দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পিরোজপুরে প্রতিমা ভাংচুরের এই ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০১৯ সালের 

0

সম্প্রতি, ‘আবার প্রতিমা ভাংচুর! আজ ভোরে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের কলারদনিয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে একজন,দুইজন পালিয়ে গেছে। তারা কয়েকজন মিলে পালাক্রমে কলারদোয়ানিয়া গ্রামে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রম ও কালি মন্দির,এবং কলারদোয়ানিয়া বাজার সার্বজনীন দুর্গা মন্দির সহ মোট ৩ টি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে।সর্বশেষ মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে ছবিতে উল্লেখিত কামরুল ইসলাম সুজন  আটক কামরুল ইসলাম সুজন স্বরূপকাঠি উপজেলার রাজাবাড়ী গ্রামের প্রয়াত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।তাছাড়া অন্য  দুইজন পালিয়ে গেছে।ধৃত কামরুল ইসলাম সুজনকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে,বিচারহীনতার সংস্কৃতি এই সব দুর্বৃত্তদের অন্যায় কাজ করতে সাহস যোগায়।অপরাধীকে যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হতো তবে পরবর্তীতে এই ধরনের অন্যায় কাজ গুলো আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেখতে হতোনা। দিবাকর সত্যান্বেষী।’ ক্যাপশনে ভাঙচুরের শিকার প্রতিমা ও অভিযুক্ত ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ‘Saimon Bangali’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এই দাবিটিপ্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পিরোজপুরে প্রতিমা ভাংচুরের এই ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০১৯ সালের ঘটনা। সেসময় পিরোজপুরের নাজিরপুরে একই দিনে তিনটি মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগে এক যুবককে আটক করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে  ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর ‘পিরোজপুরে ৩ মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর, আটক ১‘ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে  সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রথম ছবিটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় পিরোজপুরের নাজিরপুরে একই দিনে তিনটি মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগে স্থানীয়রা হাতেনাতে কামরুল ইসলাম সুজন (৩০) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছিল। উপজেলার কলারদোয়ানিয়া গ্রামে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ সেবাশ্রম ও কালি মন্দির, কলারদোয়ানিয়া বাজার সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বাজার সংলগ্ন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অধির রঞ্জন মল্লিকের বাড়ির শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছিল।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, বিডিনিউজ২৪ ডট কমের প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত মন্দিরে ভাংচুরের ছবি ও অভিযুক্ত ব্যক্তির ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

সেসময় অন্যান্য গণমাধ্যমও এবিষয়ে সংবাদ (,,) প্রকাশ করে। 

অর্থাৎ, পিরোজপুরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনাটি সাম্প্রতিক নয়।

সুতরাং, ২০১৯ সালে পিরোজপুরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষের দৃশ্য দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার ভিডিও প্রচার 

গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। অবরোধের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে পাহাড়িদের সংঘর্ষে অন্তত ৩ জনের মৃত্যু হয়। উল্লেখিত ঘটনার  প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘খাগরা ছরির এখনের অবস্থা’ শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, আগস্টের শেষ সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায় সংঘটিত সরকার বিরোধী বিক্ষোভের ভিডিওকে বাংলাদেশের খাগড়াছড়ির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে dhenyprasetyo নামক টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ২৯ আগস্ট প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন, ‘demo jakarta chaos’ থেকে এটি ইন্দোনেশিয়ার ভিডিও হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কেননা, জাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীর নাম।

পরবর্তীতে, ৩১ আগস্ট০১ সেপ্টেম্বর টিকটক ও ফেসবুকে প্রকাশিত একাধিক ভিডিওর শিরোনাম থেকে জানা যায় যে, ভিডিওটি ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভে পুলিশের হামলার ঘটনার দৃশ্য। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনার আগে থেকে ইন্টারনেটে রয়েছে। 

উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ার সংসদ সদস্যদের মাসিক ভাতা বাড়ানোর একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে গত ২৫ আগস্ট শুরু হওয়া বিক্ষোভ সহিংস রুপ নেয় ২৮ আগস্ট রাতে। পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ২১ বছর বয়সী একজন মোটরসাইকেল চালক পুলিশের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা যান, যিনি জাকার্তায় রাইড শেয়ারিং সেবা দিতেন। এরপর পশ্চিম জাভা থেকে শুরু করে বালি, লোম্বকের মতো দ্বীপ এলাকাতেও তীব্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। 

সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ায় সংঘটিত বিক্ষোভকালীন ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ির সংঘর্ষের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

১১ উপদেষ্টার দেশত্যাগ ও বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত থেকে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ১১ জন উপদেষ্টা দেশত্যাগ করেছেন। এরপরই ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলেও পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়। এছাড়াও পোস্টটিগুলোতে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওটিতে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটে বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত দলকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১১ জন উপদেষ্টা দেশত্যাগ করেননি। এছাড়া, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করার ভিডিওটিও সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত এপ্রিল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ১১ জন উপদেষ্টা হঠাৎ দেশত্যাগ করলে তা গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্বসহকারে প্রচার করা হতো। কিন্তু আলোচিত এই দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে এমন কোনো তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় তার সাথে ছয়জন রাজনৈতিক নেতা ও চারজন উপদেষ্টাসহ মোট ১০৪ জন সফরসঙ্গী ছিলেন বলে জানা যায়। উক্ত সফরসঙ্গীদের নিয়ে নয় দিনের সফর শেষে গত ২ অক্টোবর দেশে ফেরেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে প্রবাসী জীবন নামের একটি ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে গত ৭ এপ্রিল একই ভিডিওটি প্রচারিত হতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওটিতে শুধুমাত্র বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলা হলেও বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Facebook 

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে পরবর্তীতে নাজমুল হাসান ভূঁইয়া পিন্টু নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৮ এপ্রিল প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। পোস্টটিতে আলোচিত ভিডিওটির দুটি ফ্রেমের স্ক্রিনশট প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫-এ আগত বিদেশিদের জন্য বিমানবন্দরে এই বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে। উক্ত পোস্টটি ব্যতীত আলোচিত ভিডিও সম্পর্কিত ভিন্ন আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Facebook 

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ শুরু হয়। যাতে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৪০টি দেশের শীর্ষস্থানীয় ৬ শতাধিক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী অংশ নেয়। 

ভিডিওটি বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ কে কেন্দ্র করে দেশে আগত বিদেশিদের জন্যে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদারের ভিডিও কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এটি নিশ্চিত যে এটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ভিডিও নয়।

সুতরাং, ১১ উপদেষ্টার দেশত্যাগ ও বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার দাবিতে ইন্টারনেটে বিদ্যমান পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • প্রবাসী জীবন Facebook Post
  • নাজমুল হাসান ভূঁইয়া পিন্টু Facebook Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

কালবেলার নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ফেসবুকে

0

সম্প্রতি, “জাতীয় দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় সারাদেশে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে” দাবিতে কালবেলার লোগো সম্বলিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশে কাজের সুযোগ রয়েছে এমন উল্লেখিত পদ হলো- 

▪️স্টাফ রিপোর্টার
▪️ক্রাইম রিপোর্টার
▪️বিশেষ প্রতিনিধি
▪️ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
▪️উপজেলা প্রতিনিধি
▪️ক্যাম্পাস প্রতিনিধি 

এছাড়াও, আবেদন শুধু মাত্র হোয়াটসঅ্যাপের এই নাম্বারে (01986095909) করতে হবে আবেদনের শেষ তারিখ হিসেবে ১০ অক্টোবর ২০২৫ ইং উল্লেখ কর হয়েছে।

মেটা অ্যাড লাইব্রেরি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নিয়োগসংক্রান্ত এই পোস্টটি অর্থের বিনিময়ে বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কালবেলা সাংবাদিক নিয়োগ সংক্রান্ত পোস্টটি ভুয়া। প্রতারণার উদ্দেশ্যে কালবেলার নাম ব্যবহার করে আলোচিত পোস্টটি প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটিতে থাকা নাম্বারে রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে, কালবেলার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করেও এ সংক্রান্ত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

তবে, আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে কালবেলার নিজস্ব প্রতিবেদক বীর সাহাবী ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩০ সেপ্টেম্বর একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে তিনি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া বলে উল্লেখ করেন। এছাড়াও, কালবেলাতে আরো কয়েকজন সাংবাদিক (, , ) বিষয়টি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছেন।

সুতরাং, কালবেলায় সারাদেশে সাংবাদিক প্রয়োজন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা দাবিতে ভুয়া তালিকা প্রচার

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা দাবিতে অন্তত ১৮৩ আসনের একটি তালিকা প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত তালিকার প্রথম ছবিতে তালিকাটি ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ এর জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কর্তৃক প্রাথমিক ভাবে মনোনীত প্রার্থীদের আসন ভিত্তিক খসড়া তালিকা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপি এখন অবধি কোনো প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি। ছড়িয়ে পড়া তালিকাটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত তালিকাটির সত্যতার সপক্ষে মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি কর্তৃক এরূপ কোনো তালিকা প্রচার করা হলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।

মূলধারার গণমাধ্যম ‘যুগান্তর’ এ আজ (৫ অক্টোবর) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিএনপিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। আসনভিত্তিক প্রার্থী যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। একক প্রার্থী নির্ধারণে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে একক প্রার্থীদের ‘সবুজ সংকেত’ দেবে বিএনপি। ইতোমধ্যে প্রত্যেক আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দায়িত্বশীল নেতারা।’

অর্থাৎ, এখন পর্যন্ত আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

Screenshot : Facebook

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত তালিকার বিষয়ে অনুসন্ধানে বিএনপির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ৩০ সেপ্টেম্বরে এ বিষয়ে প্রচারিত একটি বিজ্ঞপ্তি পোস্ট পাওয়া যায়। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটিতে আলোচিত তালিকার ছবি সংযুক্ত করে বলা হয়, ‘সংশোধনী | আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এই মর্মে বিএনপি’র সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, কোন স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন আসনে বিএনপি’র প্রার্থী মনোনয়নের একটি তালিকা পোষ্ট করে। ফেসবুকে পোষ্টকৃত তালিকাটি সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভুয়া তালিকাটি নিম্নে উল্লেখ করা হলো- 

উল্লিখিত তালিকাটি বিএনপি’র দফতর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়নি। এটি সম্পূর্ণরুপে বানোয়াট ও ভুয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্টকৃত তালিকাটির বিষয়ে বিএনপি’র সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ সর্বসাধারণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

একই ঘটনায় মূলধারার গণমাধ্যম ‘কালের কণ্ঠ’ এর ওয়েবসাইটেও গত ৩০ সেপ্টেম্বরে সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা দাবিতে প্রচারিত তালিকাটি আসল নয়।

সুতরাং, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপি কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা দাবিতে প্রচারিত তালিকাটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র 

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে অধিকারকর্মী আটকের ঘটনা দাবিতে পাকিস্তানের ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার 

গাজায় চলমান ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ইসরায়েল বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪৫০ জন অধিকারকর্মীকে আটক করে। এর প্রেক্ষিতে, ‘গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী জাহাজ বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ৩৭ দেশের ২০০ অধিকারকর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েল।’ শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে অধিকারকর্মী আটকের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, সাম্প্রতিক সময়ের পাকিস্তানের মুলতানে ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধারকারী নৌকা দুর্ঘটনার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ‘Public News’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১০ সেপ্টেম্বর ‘Heart-Touching Emotional Scenes as 20-day-old Baby Girl Safely Rescued in Jalalpur’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ‘DAWN’ এর ওয়েবসাইটে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মুলতানের পুলিশ কর্মকর্তা সাদিক আলীর বরাতে বলা হয়, জালালপুর পীরওয়ালা এলাকায় রেসকিউ ১১২২-এর একটি উদ্ধারকারী নৌকা ডুবে একজন শিশু নিহত হয় এবং ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে, পাকিস্তানি গণমাধ্যম এপি নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বন্যায় জালালপুর পিরওয়ালা এবং আশেপাশের কয়েক ডজন গ্রামের প্রায় ১,৪২,০০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা আত্মীয়দের কাছে চলে গেছেন, আবার অনেকে ত্রাণ শিবির বা বাঁধে রাত কাটাচ্ছেন। পাঞ্জাব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে, ২৩শে আগস্ট থেকে বন্যায় পাঞ্জাব জুড়ে প্রায় ৪,০০০ গ্রাম ডুবে গেছে, ২১ লক্ষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং কমপক্ষে ৬৮ জন মারা গেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ভারী বর্ষণ এবং ভারতীয় বাঁধ থেকে বারবার পানি ছেড়ে দেওয়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

অর্থাৎ, ভিডিওটি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে অধিকারকর্মী আটকের নয়। 

সুতরাং, পাকিস্তানের মুলতানে ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধারকারী নৌকা দুর্ঘটনার দৃশ্যকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে অধিকারকর্মী আটকের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

খাগড়াছড়িতে আহত বাংলাদেশি সেনা সদস্যের ছবি দাবিতে থাই সেনা সদস্যের ছবি প্রচার

গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।

এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘সেনাবাহিনীর উপরে হাত উডালে কোন সাহাসে রে…’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷ 

ভিডিওটিতে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত একজন আহত ব্যক্তিকে ধরাধরি করে নিয়ে যেতে দেখা যায়৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ফেসবুকে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ২৩ লক্ষ বার দেখা হয়েছে, এটিতে প্রায় ৫২ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি ১২ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সংঘর্ষে পাহাড়িদের দ্বারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো সদস্যের আহত হওয়ার ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষে একজন থাই সৈন্যের আহত হওয়ার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Ikgryangqngkaal নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে, থাইল্যান্ডের গণমাধ্যম Thai PBS এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ‘Thai Army use rubber bullets and tear gas against Cambodian crowd’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উল্লেখিত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবি ও আলোচিত ভিডিওতে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর একজন সৈন্যকে সাদা মাস্ক ও নীল টুপি পরিহিত একজন ব্যক্তি ধরে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। উভয় ছবিতে একই ব্যক্তি ও পারিপার্শ্বিকতা রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে থাই সৈন্যরা থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার বিতর্কিত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনকালে প্রায় ২০০ জন কম্বোডিয়ান সেখানে এই কাজের প্রতিবাদ করতে জড়ো হয়েছিল। থাইল্যান্ডের সা কায়েও প্রদেশের খোক সুং জেলার বান নং ইয়া কায়েওতে এই ঘটনা ঘটে। লাঠি ও পাথর দিয়ে থাই সৈন্যদের ওপর আক্রমণকারী কম্বোডিয়ানদের ছত্রভঙ্গ করতে থাই দাঙ্গা-বিরোধী বাহিনী রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।

এই সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন থাই সৈন্য আহত হয়, যার মধ্যে পাথরের আঘাতে একজনের চোখে জখম হয়। প্রতিবেদনে যুক্ত ছবিটি উক্ত ঘটনার দৃশ্য। 

এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম The Free Press Journal এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘Thai Army Clashes With Cambodian Protesters at Border | Tear Gas & Rubber Bullets Fired’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনার নয়।

সুতরাং, থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষে আহত থাই সৈন্যের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ি সংঘর্ষে আহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সৈন্যের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র