Home Blog Page 9

ঢাকায় আ.লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে ২০২৪ সালের ভিডিও প্রচার 

গেল সেপ্টেম্বরে ‘ঢাকার রাজপথে আওয়ামীলীগ ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদের নিশ্চিত হবে,,,জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’ ক্যাপশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত কোনো মিছিলের দৃশ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নেতৃত্বে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Ismail Chowdhury Samrat Official নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ‘‘রাজাকার’ স্লোগানের প্রতিবাদে হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে সম্রাট ভাইয়ের শোডাউন’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির অংশিক মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ০০:০১ থেকে ০০:৩৬ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে, উক্ত ভিডিওর অডিও ক্লিপের সাথে প্রচারিত ভিডিওটির অডিও ক্লিপের পার্থক্য রয়েছে। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

পরবর্তীতে, গণমাধ্যম বিবার্তা২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ‘‘রাজাকার’ স্লোগানের প্রতিবাদে হাজারো নেতা-কর্মী নিয়ে সম্রাটের শোডাউন’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ স্লোগানের প্রতিবাদে সেবছরের ১৫ জুলাই রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের নেতৃত্বে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী। বিক্ষোভ মিছিলটিতে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীরা ‘রাজাকারের আস্তানা, ভেঙে দাও উড়িয়ে দাও’, ‘রাজাকারের চামড়া, তুলে নেবো আমরা’, ‘হই হই রই রই, জামায়াত-শিবির গেলি কই’, ‘তোরা যারা রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

উক্ত প্রতিবেদন এবং Ismail Chowdhury Samrat Official নামক ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে প্রতীয়মান হয় যে, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাইয়ের বিক্ষোভ মিছিলের মূল ভিডিওটির অডিও ক্লিপের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা ভিন্ন একটি স্লোগানের অডিও প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

সুতরাং, চলতি বছরে সেপ্টেম্বরে ঢাকায় আওয়ামী লীগের আয়োজিত মিছিলের ভিডিও দাবিতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্রে ভারী শিলাবৃষ্টির দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ যুক্তরাষ্ট্রের ভয়ংকর শিলাবৃষ্টি এই যেনো কিয়ামতের লক্ষণ…..!’ ক্যাপশনে বৃষ্টির সাথে ২০ কেজি ওজনের পাথর পড়ছে দাবিতে একটি ভিডিও গণমাধ্যমে ও  ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন- বৈশাখী টিভি (ফেসবুক), প্রবাস টাইম (ইউটিউব)। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে শিলাবৃষ্টির দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় তৈরি একটি ভিডিওকে আসল ঘটনার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে বিশালাকৃতির শিলা মাটিতে গড়িয়ে দেয়ালে মিলিয়ে যাওয়ার মতো কিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়।   

উক্ত ভিডিওটির বিষয়ে নিশ্চিত হতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘DeepFake-O-Meter’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০০ শতাংশ। 

Comparison: Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, Love Trends Ai নামক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ দুটি ভিডিও (, ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওগুলো যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

উক্ত ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এগুলোতে এআই ভিডিও প্রস্তুতকারী প্লাটফর্ম InVideo এর জলছাপ রয়েছে। এছাড়া, ভিডিওগুলোর ক্যাপশন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে ‘#InVideoAI’ সূচক হ্যাশট্যাগ রয়েছে এবং ভিডিওটিতে ‘AI Info’ লেবেল যুক্ত করা আছে, যার অর্থ হলো পোস্টদাতা নিজেই ভিডিওটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি বলে চিহ্নিত করেছেন।

উক্ত অ্যাকাউন্টটির অন্যান্য কন্টেন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এখানে নিয়মিতভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে নির্মিত ভিডিও কন্টেন্ট প্রচার করা হয়। অ্যাকাউন্টটিতে শিলাবৃষ্টির দৃশ্য দাবিতে আরও ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্থানে এত ভারী মাত্রায় শিলাবৃষ্টির ঘটনাটি যদি সত্য হতো, তবে উক্ত ঘটনার ভিডিও বা স্থিরচিত্র এবং ঘটনার বর্ণনা প্রচারিত হতো। কিন্তু, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে এ ধরনের ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রে শিলাবৃষ্টির দৃশ্য দাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আগামী নির্বাচনে আ.লীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে স্যাটায়ার পেজের পোস্টকে আসল দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, “আওয়ামীলীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে কোনো বাঁধা নেই” শিরোনামে  নির্বাচন হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের অংশগ্রহণ করতে কোনো বাঁধা নেই শীর্ষক কোনো বক্তব্য দেননি। প্রকৃতপক্ষে, একটি স্যাটায়ার পেজের ব্যাঙ্গাত্মক পোস্ট থেকে সূত্রপাত হওয়া ফটোকার্ডকে আসল খবর দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে উক্ত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যসূত্র পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে ‘Iqbal Tv’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ০২ অক্টোবরে আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রথম পোস্ট হতে দেখা যায়। 

Comparison : Rumor Scanner  

আলোচ্য ‘Iqbal Tv’ পেজটির অ্যাবাউট সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পেজটিকে বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা বলে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও, পেজটি পর্যবেক্ষণ করলে এরূপ একাধিক (, , ) ব্যাঙ্গাত্মক পোস্ট পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত পোস্টটিও মূলত ব্যাঙ্গাত্মক কনটেন্ট হিসেবেই তৈরি করা হয়েছে। 

তাছাড়া, নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি এরূপ কোনো মন্তব্য করেছেন কী না সে বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশিয় সংবাদমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে নির্বাচন হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করা হলেও বাস্তবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে ‘নির্বাচন হাইকমিশনার’ নামে কোনো পদবীর অস্তিত্ব নেই। 

সুতরাং, নির্বাচন হাইকমিশনার ‘আওয়ামীলীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে কোনো বাঁধা নেই’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ দাবিতে শেওড়াপাড়ায় সাম্প্রতিক খুনের ঘটনার ভিডিও প্রচার 

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বরে ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় অভিনেতা সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় ২৯ বছর পর সম্প্রতি সালমান শাহর মৃত্যুকে ‘হত্যা’ হিসেবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি প্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ। ৩০ বছর পর এই সিসিটিভি ফুটেজ হঠাৎ করে ফাঁস করে দেওয়া হয় কোনো এক অজানা সাইট থেকে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আগে সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ নয় বরং, গত ১৪ আগস্ট ঢাকার শেওড়াপাড়ায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে সালমান শাহ নিহত হওয়ার ঘটনায় চিত্রনায়িকা শাবনূরকেও অভিযুক্ত করা হয়। 

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘শেওড়াপাড়ায় স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন, মরদেহ যেভাবে বের করলো খু-নিরা’ শিরোনামে গত ১৪ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে একটি সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য প্রদর্শিত হয় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও, সিসিটিভি ফুটেজেও তারিখ হিসেবে ‘১৪ আগস্ট ২০২৫’ দেখা যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, শেওড়াপাড়ার নারী মৃত্যুর ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দাবিতে আরো একাধিক গণমাধ্যমেও আলোচিত সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্য প্রচার হতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১৪ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার শেওড়াপাড়ার শামীম স্মরণীর একটি বহুতল ভবন থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১৪ আগস্ট রাতে তার স্বামী তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। নিহতের নাম সৈয়দা ফাহমিদা তাহসিন কেয়া। তার স্বামীর নাম সিফাত আলি।’

এ বিষয়ে গত আগস্টে আরো একাধিক গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, প্রচারিত ফুটেজটি প্রায় ৩০ বছর পূর্বে সালমান শাহ’র নিহত হওয়ার সময়কালের নয় এবং এই সিসিটিভি ফুটেজের সাথে সালমান শাহ’র নিহত হওয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

সুতরাং, গত ১৪ আগস্ট ঢাকার শেওড়াপাড়ায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজকে প্রায় ৩০ বছর আগে সালমান শাহকে হত্যার পর লাশ স্থানান্তরের সিসিটিভি ফুটেজ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মুফতি মুহিব্বুল্লাহর অপহরণ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠের নামে একাধিক সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

গত ২২ অক্টোবর গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব আলহাজ ক্বারি মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজী নিখোঁজ হন। এর আগে জুমার খুতবায় সামাজিক অবক্ষয়, পারিবারিক মূল্যবোধ ও উগ্রপন্থি সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর থেকে ১২ বার চিঠি দিয়ে তাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাই তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টিকে অপহরণ বলে দাবি করে অনেকে এবং তার অপহরণের পেছনে ইসকন জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভও করে মুসুল্লিরা। পরবর্তীতে গত ২৩ অক্টোবর নিখোঁজের এক দিন পর পঞ্চগড় থেকে শিকলবন্দি ও অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। একটি সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, মুফতি মহিবুল্লাহকে অপহরণ করা হয়নি, তিনি নিজেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দৈনিক কালের কণ্ঠ-এর লোগো ব্যবহার করে মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীর গা ঢাকা দেওয়ার বিষয়ে একাধিক ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর একটিতে বলা হয়, ‘পুলিশের লেখা স্ক্রিপ্ট পড়ে ইসকন কতৃক অপহরণকে নাটক বলতে বাধ্য হলেন মুফতি হাবিবুল্লাহ’।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

অপরটিতে বলা হয়, ‘ছোট মেয়েকে ধর্ষণের হুমকির পর অপহরণকে নাটক বলতে বাধ্য হলেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ’। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে জড়িয়ে কালের কণ্ঠ উল্লিখিত ফটোকার্ডগুলো প্রচার করেনি। ফটোকার্ডগুলোতে করা দাবিগুলোর সপক্ষেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, মুফতি মুহিব্বুল্লাহ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠের ভিন্ন শিরোনামের ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তার সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ফটোকার্ড যাচাই ১

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কালের কণ্ঠের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়।

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ২৮ অক্টোবর আলোচিত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২৮ অক্টোবর পেজটিতে ‘অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করলেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ!’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের ছবি ও গ্রাফিক্যাল ডিজাইনের সাথে এর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। শুধু আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ‘অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করলেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ!’ শীর্ষক বাক্যের পরিবর্তে ‘পুলিশের লেখা স্ক্রিপ্ট পড়ে ইসকন কতৃক অপহরণকে নাটক বলতে বাধ্য হলেন মুফতি হাবিবুল্লাহ’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে। 

Phonecard Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, কালের কণ্ঠের এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনা করেই আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

ফটোকার্ড যাচাই ২

দ্বিতীয় ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কালের কণ্ঠের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়।

তবে উল্লিখিত তারিখেও সংবাদমাধ্যমটির কোনো প্ল্যাটফর্মে এমন কোনো ফটোকার্ড পাওয়া যায়নি। উক্ত ফটোকার্ডটির সাথেও গত ২৮ অক্টোবর ‘অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করলেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ!’ শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটির ছবি ও গ্রাফিক্যাল ডিজাইনের সাথে এর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। শুধু আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ‘অপহরণের নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করলেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ!’ শীর্ষক বাক্যের পরিবর্তে ‘ছোট মেয়েকে ধর্ষণের হুমকির পর অপহরণকে নাটক বলতে বাধ্য হলেন মুফতি মুহিব্বুল্লাহ’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দ্বিতীয় ফটোকার্ডটিও কালের কণ্ঠের এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীর নিখোঁজ হওয়ার প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ড দুইটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Kaler Kantho Facebook Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

জুলাই আন্দোলনে চিফ প্রসিকিউটরের জড়িতের প্রমাণ শীর্ষক ভুয়া দাবিতে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি “জুলাই আগস্টের হত্যাকান্ডে, চিফ প্রসিকিউটরের তাজুল ইসলাম এর সরাসরি জড়িতোর প্রমাণ মিলেছে।” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার সংবাদমাধ্যম সমকালের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “জুলাই আগস্টের হত্যাকান্ডে, চিফ প্রসিকিউটরের তাজুল ইসলাম এর সরাসরি জড়িতোর প্রমাণ মিলেছে।” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে সমকাল কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় গণমাধ্যমটির ভিন্ন একটি ফটোকার্ড সম্পাদনার মাধ্যমে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে সমকালের লোগো এবং ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ১৪ অক্টোবর উল্লেখ রয়েছে। এর সূত্র ধরে সমকালের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সমকালের ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ১৪ অক্টোবরে “গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যার সব দায় শেখ হাসিনার” শীর্ষক শিরোনামে সমকালের ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের ছবি ও গ্রাফিক্যাল ডিজাইনের সাথে এর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। তবে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ‘গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যার সব দায় শেখ হাসিনার’ শীর্ষক বাক্যের পরিবর্তে ‘জুলাই আগস্টের হত্যাকান্ডে, চিফ প্রসিকিউটরের তাজুল ইসলাম এর সরাসরি জড়িতোর প্রমাণ মিলেছে।’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, সমকালের এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনা করেই আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

মূল ফটোকার্ড সংবলিত পোস্টটির কমেন্টে পাওয়া এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলাকালে দেশজুড়ে ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে এর সব দায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ১৪ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার যুক্তি উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। 

এই প্রতিবেদন এবং অন্যান্য গণমাধ্যম সূত্রে আলোচিত দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “জুলাই আগস্টের হত্যাকান্ডে, চিফ প্রসিকিউটরের তাজুল ইসলাম এর সরাসরি জড়িতোর প্রমাণ মিলেছে।” শীর্ষক দাবিতে সমকালের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

যুবলীগের সম্রাটের সাম্প্রতিক অবস্থান কর্মসূচি দাবিতে ২০২৪ সালে কোটা আন্দোলনকালীন সময়ের ভিডিও প্রচার 

সাম্প্রতিক সময়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের তাদের সকল নেতাকর্মীর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করেছে। এরই প্রেক্ষিতে আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকা দক্ষিণের রাজপথ দখলে নিয়ে মাঠে নেমেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালনের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে মূলধারার সংবাদমাধ্যম বাংলা ভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৩ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রকাশের ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটির ফিচারে সংযুক্ত ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের সাদৃশ্য রয়েছে। 

Screenshot from Songbad Prokash website 

প্রতিবেদনটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রুখে দিতে রাজধানীর গুলিস্তানে নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত (তৎকালীন) সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। এসময় সম্রাটকে স্বাধীনতার পক্ষে নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। 

উল্লেখ্য, অস্ত্র মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। তবে, সম্রাট পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

সুতরাং, ২০২৪ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের অবস্থান কর্মসূচির ভিডিওকে সম্প্রতি সম্রাট পদ ফিরে পেয়ে ঢাকা দক্ষিণের রাজপথ দখলে নিয়ে মাঠে নেমেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

গেল আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ঢাকা-চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ-আ.লীগের মিছিল দাবিতে ২০২০ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত আগস্ট মাসে ‘ঢাকা মহানগর দক্ষিণজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে মিছিল।’ ক্যাপশনে ঢাকায় এবং সেপ্টেম্বর মাসে ‘২৫-০৯-২০২৫ উত্তাল বীর চট্রলা, গ্রেফতার করে আমাদের কে দাবায় রাখা যাবে না,, ইনশাআল্লাহ আমাদের লড়াই চলছে চলবে।’ ক্যাপশনে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷

আগস্ট মাসে ঢাকা মহানগর দক্ষিণজেলা ছাত্রলীগের মিছিল দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং চট্টগ্রামেরও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘কামরাঙ্গীরচর থানা ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর ‘ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ আয়োজিত ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ’ শিরোনামে প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটির বিবরণীতে দাবি করা হয়, এটি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ আয়োজিত ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্য। 

উক্ত ভিডিওতে লোকেশন ট্যাগের স্থলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

গুগল ম্যাপের সহায়তায় জিও লোকেশন বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি  ‘ইনজিনিয়ারিং ইউনিভারসিটি স্কুল এন্ড কলেজ’ এর সামনের রাস্তায় ধারণ করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে অবস্থিত। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি ২০২০ সালে বুয়েট ক্যাম্পাস এলাকায় ধারণকৃত।

পরবর্তীতে, Raunaf Rehman নামক ফেসবুক প্রোফাইলে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত পোস্টে যুক্ত ছবি ও ক্যাপশন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

Screenshot: Facebook 

উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ নামে বাংলাদেশের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক ইউনিট থাকলেও ঢাকা মহানগর দক্ষিণজেলা নামে সংগঠনটির কোনো ইউনিট নেই।

সুতরাং, ২০২০ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ মিছিল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পাহাড়ি যুবক কর্তৃক বাঙালি যুবককে লাথি দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে নেপালের ভিডিও প্রচার 

0

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষণের বিচার দাবিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর নগরীতে আন্দোলন ও অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয় বাঙালিদের সাথে সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এর প্রেক্ষিতেই পাহাড়ি যুবক কর্তৃক বাঙালি যুবককে লাথি দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, গত সেপ্টেম্বর মাসে নেপালের জেন-জিদের আন্দোলনের দৃশ্যকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানে Nigrani Tv নামক একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ১৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ভিডিওর ১২ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে থাকা দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, জেনজি আন্দোলন নিয়ন্ত্রণের বাইরে পৌরসভা, সরকারি অফিস এবং বিভিন্ন নেতার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। সেইসব ঘটনার দৃশ্য এগুলো। 

একই ভিডিও সেইসময় নেপালের দাবিতে Nigeani Post, Digital Voice Media সহ সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট হতে দেখা যায়। 

উল্লেখ্য, গত ০৯ সেপ্টেম্বর জেন-জিদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। 

সুতরাং, গত সেপ্টেম্বর মাসে নেপালের আন্দোলনের ভিডিওকে বাংলাদেশে পাহাড়ি যুবক কর্তৃক বাঙালি যুবককে লাথি দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

শেখ হাসিনার মৃত্যু দাবিতে বানোয়াট সূত্র ও তথ্যপ্রমানহীন পোস্টে সয়লাব ইন্টারনেট

0

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিনই দেশ ত্যাগ করে পাশ্বর্বর্তী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তবে এরমধ্যে বেশ কয়েকবার তার অডিওবার্তা প্রচার ও কলে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে অংশগ্রহণ করার তথ্য আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ সূত্রে পাওয়া যায়। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ ইন্টারনেটে তিনি মারা গেছেন দাবিতে বেশ কয়েকটি অপতথ্য ছড়িয়ে পড়তে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

গত ২২ অক্টোবর ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর বেঁচে নাই’ শিরোনামে প্রথম যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখা যায়। 

Screenshot: Facebook

তবে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে উল্লিখিত সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর বেঁচে নেই’ শিরোনাম সংবলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Comparison by Rumor Scanner 

পাশাপাশি, যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডগুলোতে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।


পরবর্তীতে ২৬ অক্টোবর শেখ হাসিনা দিল্লিতে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন দাবিতে ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট হতে দেখা যায়। কিন্তু উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

Screenshot: Facebook

২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের একটি কথিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গিয়েছেন দাবিতে আরেকটি পোস্ট ব্যাপকভাবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রচারিত পোস্টটিতে তার মরদেহের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবিও প্রচার করা হয়।

Screenshot: Facebook

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের ওয়েবসাইটে গত ৮ মার্চ Denied wheelchair by Air India, woman falls at Delhi airport, lands in ICU শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। শেখ হাসিনার মরদেহের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবির সাথে উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত একটি ছবির মিল রয়েছে।

Comparison by Rumor Scanner 

উভয় ছবিতেই একই বয়স্ক মহিলাকে হাসপাতালের বিছানায় চোখ বন্ধ অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখা যায়। তবে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিতে দেখতে পাওয়া ছবিটির মহিলার চেহারার শেখ হাসিনার চেহারার সাথে কিছুটা সাদৃশ্যপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হয়। কিন্তু ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে ব্যবহার বয়স্ক মহিলার একাধিক ছবি পর্যালোচনার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তাদের প্রতিবেদনে ব্যবহৃত বয়স্ক মহিলার ছবিটিই আসল। শেখ হাসিনার মরদেহের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি কিছু সম্পাদনা করে ওই মহিলার চেহারা শেখ হাসিনার চেহারার আদলে তৈরি করা হয়েছে। 

এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, আলোচিত ছবিটিতে দেখতে পাওয়া বয়স্ক মহিলা একজন ভারতীয় নারী। গত ৪ মার্চ তিনি তার পরিবারের সাথে ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে ব্যাঙ্গালুুরুতে বিমান ভ্রমণের উদ্দেশ্যে দিল্লি বিমানবন্দর যান। এসময় বিমানবন্দরে তার চলাচলের জন্যে আগে থেকেই বুকিং দেওয়া হুইলচেয়ার এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো বিকল্প না পাওয়ায় ওই বয়স্ক মহিলাকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়। যার ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি অসুস্থ হয়ে যান। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। আলোচিত ছবিটি তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তোলা হয়। উক্ত ঘটনায় ওই বয়স্ক নারীর নাতনি ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি এক্স (সাবেক টুইটার)- পোস্ট করেন বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। যার ফলে এই ঘটনাটি পরবর্তীতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা মারা যাওয়ার দাবিতে যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইন সম্বলিত আরেকটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে উক্ত ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানেও গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেল পর্যালোচনা করে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদের সন্ধান মেলেনি।

Screenshot: Facebook

একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সূত্র উল্লেখ করে আরেকটি আরও একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচারিত হতে দেখা যায়। 

Screenshot: Facebook

তবে অনুসন্ধানে টাইমস অব ইন্ডিয়ার ফেসবুক পেজ কিংবা ওয়েবসাইটে এমন দাবি সংবলিত কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। 


দেশিয় গণমাধ্যম বাংলাভিশনও একই দিনে শেখ হাসিনার মৃত্যু দাবিতে একটি ফটোকার্ড প্রচার করেছে বলে ফেসবুক একটি পোস্টে দাবি করা হয়।

Screenshot: Facebook

তবে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে উল্লিখিত সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, তাদের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।উল্লিখিত পোস্টগুলো ছাড়াও শেখ হাসিনার মৃত্যুর দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কথিত সূত্রের বরাতে বেশকিছু টেক্সট পোস্টও দেখতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি তার মৃত্যুর দাবিতে স্যাটায়ার ধর্মী ফেসবুক পেজ ইকবাল টিভির প্রচারিত একটি ফটোকার্ড পরবর্তীতে সিরিয়াস পোস্ট দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পরতেও দেখা যায়।

Screenshot: Facebook

এছাড়াও আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের সূত্রে ফেসবুকে শেখ হাসিনার মারা যাওয়ার দাবিটি প্রচারিত হয়। কিন্তু গণমাধ্যমটির ফেসবুক, ওয়েবসাইটসহ কোনো প্ল্যাটফর্মে-ই এমন কোনো সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখা যায়নি।

Screenshot: Facebook

শেখ হাসিনার মরদেহের ছবি দাবিতে ফেসবুকে আরেকটি ছবিও প্রচারিত হতে দেখা যায়। প্রচারিত ছবিটিতে একজন স্বাস্থ্যকর্মীকে সাদা কাপড়ে মোড়ানো একটি লাশ স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি ২০২১ সালে থাইল্যান্ডের পথুম থানি প্রদেশে তোলা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপের সেসময় দেশটির হাসপাতালগুলো মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়ে যায়। তাই হাসপাতালের মর্গ লাশে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে দেশটির হাসপাতালগুলো ফ্রিজিং কন্টেইনারে লাশ সংরক্ষণ করতো। আলোচিত ছবিতে দেখতে পাওয়া লাশটিও হাসপাতাল থেকে কন্টেইনারে নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।

সর্বশেষ গতকাল অর্থাৎ, ২৮ অক্টোবর রাতে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নামে পরিচালিত একটি ভুয়া পেজে শেখ হাসিনার মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শোকবার্তা প্রকাশ করেছে দাবিতে একটি বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করা হয়।

Screenshot: Facebook

তবে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এমন কোনো শোকবার্তা প্রচারিত হতে দেখা যায়নি। বরং, উক্ত শোকবার্তাটি ভুয়া জানিয়ে দলটির পেজে একটি পোস্ট করা হয়।

Screenshot: Facebook

এছাড়াও দলটির ফেসবুক পেজ, শেখ হাসিনা পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক পেজ ও কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ পুতুলের এক্স অ্যাকাউন্টে শেখ হাসিনার মারা যাওয়ার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত আজ দুপুরে একটি পোস্ট করে জানান, তার সাথে আজ শেখ হাসিনার কথা হয়েছে। গতকাল আরাফাতের বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) যোগাযোগ করেন বলেও তার পোস্টে সে উল্লেখ করেন।

পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফ্রান্স ২৪,, রয়টার্স এবং ইনডিপেনডেন্ট আজ (২৯ অক্টোবর) শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার সংবলিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যমগুলো দাবি করে, গত ৫ আগস্টের পর এটাই শেখ হাসিনার গণমাধ্যমে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকার। যদিও রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে তারা ইমেইলের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। 

সুতরাং, শেখ হাসিনার মৃত্যুর দাবি নিয়ে ইন্টারনেটে প্রচারিত ১০টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এসব অপতথ্যের প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছে একাধিক গণমাধ্যমের ভুয়া ফটোকার্ড, গণমাধ্যমের ভুয়া সূত্র, ভিন্ন নারীর বিকৃত ছবি, ভিন্ন ব্যক্তির লাশের ছবি ও ভুয়া শোকবার্তা।

তথ্যসূত্র