Home Blog Page 10

লিবীয় হজ্জ যাত্রী আমের আল গাদ্দাফি মারা যাননি 

0

সম্প্রতি আমের আল গাদ্দাফি নামক এক লিবীয় হজ্জ যাত্রী তার উপাধি ‘আল গাদ্দাফি’ এর সাথে সম্পর্কিত নিরাপত্তা বিলম্বের কারণে ইমিগ্রেশনে বাঁধার সম্মুখীন হন। নাটকীয়ভাবে একই ফ্লাইটের বিমানটি দুইবার ফিরে এসে তৃতীয়বার যখন ফ্লাইটটি ছাড়ে, তখন আমের আল গাদ্দাফি বিমানে উঠতে পারেন এবং বিমানটি কোনো সমস্যা ছাড়াই সৌদি আরবে গিয়ে পৌঁছায়। আমের আল গাদ্দাফি মক্কায় পৌঁছার পর তাওয়াফরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লিবীয় হজ্জ যাত্রী আমের আল গাদ্দাফি মারা যাননি, তিনি সুস্থ আছেন। কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র উল্লেখ না করে আমের আল গাদ্দাফির মৃত্যুর তথ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মিশরীয় গণমাধ্যম Youm7 এর ওয়েবসাইটে গত ৪ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youm7 Website

প্রতিবেদনটিতে আমেরের একটি ভিডিও বার্তার কথা  উল্লেখ করে বলা হয়, ভিডিও ক্লিপটিতে পরিবারের একজন সদস্যের সাথে ভিডিও কলের সময় আমের আল গাদ্দাফি উপস্থিত হয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে তিনি সুস্থ আছেন এবং হজ তীর্থযাত্রা সম্পন্ন করার জন্য মিনায় যাবেন (আরবি থেকে অনূদিত)।

এছাড়া, এই বিষয়ে ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা Alt News এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ যুবায়েরের এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১২ জুন প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: X

উক্ত পোস্টে আমের আল গাদ্দাফির ১৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সংযুক্ত করে উল্লেখ করা হয়, হাজী আমের আল মাহদি মানসুর আল গাদ্দাফি জীবিত আছেন। তার মৃত্যুর গুজবের সময়কালীন চারদিন আগের ওই ভিডিও বার্তায় তিনি সুস্থ আছেন বলে জানান। (ইংরেজি থেকে অনূদিত)। 

এছাড়া, নির্ভর‍যোগ্য গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট সূত্রে আমের আল গাদ্দাফির মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, লিবীয় হজ্জ যাত্রী আমের আল গাদ্দাফি মারা গেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

জামায়াত আমীরের সামনে জনতার ‘রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগান দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত

সম্প্রতি,জামায়াত আমীরের সামনেই উত্তেজিত জনতার ‘রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগানে উত্তাল সমাবেশস্থল দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান স্টেজে বসা অবস্থায় হাত নেড়ে সামনের দিকে কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছেন, এমন সময় দর্শক সারি থেকে অডিও বা স্লোগান হিসেবে শোনা যাচ্ছে, “জামায়াত শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যনার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সামনে উত্তেজিত জনতার ‘রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগান দেওয়ার দাবিটি সত্য নয়। বরং, ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর নীলফামারীতে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠানের ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যের একটি ভিডিও প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদনা করে তাতে “জামায়াত শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়” স্লোগানের অডিও যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে থাকা ‘Azam Bd’ লেখার সূত্র ধরে ‘Azam Bd’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর ‘যে কারণে আমিরে জামাত ডা.শফিকুর রহমান রেগে গেলেন সাংবাদিকের উপর। Dr Shafiqur Rahman New Speech’ শীর্ষক ক্যপশনের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিটির শুরুর ৪ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিটিতে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে নির্বাচন এবং অন্যান্য ইস্যুতে করা প্রশ্নের উত্তর দিতে দেখা যায়। তবে, ভিডিওর কোথায় “জামায়াত শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়” শীর্ষক স্লোগান ছিল না।

পরবর্তীতে, শফিকুর রহমানের উপস্তিত থাকা এই অনুষ্ঠান বা সমাবেশ সম্পর্কে জানতে ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করে একই অনুষ্ঠানের আরও ভিডিও পাওয়া যায়। দেখুন – এখানে, এখানে, এখানে। এর মধ্যে একটি ভিডিওর থাম্বনেইল থেকে জানা যায় অনুষ্ঠান বা সমাবেশটি ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর নীলফামারীতে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন।

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যমের সংবাদ এবং জামায়াতে ইসলামীর ইউটিউব চ্যানেলে ডা. শফিকুর রহমানের প্রচারিত বক্তব্য থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

উল্লিখিত সূত্র গুলোর কোথাও ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর নীলফামারীতে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে “জামায়াত শিবির রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়” দেওয়া হয়েছে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, জামায়াত ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সামনে উত্তেজিত জনতার ‘রাজাকার-রাজাকার’ স্লোগান দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ভিডিওটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

লন্ডনে নাশকতার অভিযোগে ৪৪ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের দাবিটি ভুয়া

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত ১০ জুন লন্ডন যান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার এ সফরকে কেন্দ্র করে লন্ডনে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর ও তার সফরকালীন আবাসস্থল ডরচেস্টার হোটেলের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, লন্ডনে নাশকতার অভিযোগে আওয়ামী লীগের ৪৪ জন নেতাকর্মীকে লন্ডন প্রশাসন গ্রেফতার করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে । 

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, লন্ডনে বিক্ষোভকারী ৪৪ আওয়ামীর নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বিক্ষোভের নিউ ইয়র্কের একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে কানাডাভিত্তিক গণমাধ্যম The Post Millennial-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১১ জুন CHAOS in NYC as anti-ICE riots erupt, cops make arrests শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটির বেশ কিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। এর একটি অংশে আলোচিত ভিডিওর মত সাদা রংয়ের পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যকে একজন ব্যক্তিকে আটক করতে দেখা যায়। ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি অ্যান্টি-আইসিই অর্থাৎ, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বিক্ষোভের নিউ ইয়র্ক শহরের আন্দোলনকারীদের আটকের দৃশ্য।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের স্থানীয় গণমাধ্যম PIX11 News-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১১ জুন At least 80 people detained during anti-ICE protests in New York City: NYPD শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের ম্যানহ্যাটন এলাকা সংঘটিত আইসিই বিরোধী বিক্ষোভ থেকে কমপক্ষে ৮০ জনকে আটক করে নিউ ইয়র্ক পুলিশ। অর্থাৎ, উক্ত ঘটনার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে লন্ডনে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভের কারণে কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনুসন্ধান করা হলে দেশিয় কিংবা যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোনো গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়াা যায়নি।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে সেখানে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ করার কারণে ৪৪ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

যুক্তরাজ্যে আ. লীগের বিক্ষোভ নিয়ে শফিকুল আলমের ফেসবুক পোস্ট প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি ‘ছোট থেকেই মানুষ আমাকে তুই তুকারি করে, অপমান করে, এমনকি গায়েও হাত তোলে। তাই অপমান বিষয়টা আমি আমলে নেই না। – শফিকুল আলম’ শীর্ষক দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে  (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মানুষের অপমান গায়ে না মাখা প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ফেসবুক পোস্ট দাবিতে বাংলাদেশ প্রতিদিন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১২ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ১২ জুন গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “শফিকুল আলমের স্ট্যাটাস ‘ঘেউ ঘেউ করার জন্য মাত্র ২০টা লোক পাইলো!’” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও লিংকটি বর্তমানে সচল নয়। তবে, আলোচিত ফটোকার্ডের বিষয়ে ১২ জুন বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত ফটোকার্ডটি বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করা হয়।

Screenshot: Facebook 

অর্থাৎ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, শফিকুল আলমকে উদ্ধৃত করে “ছোট থেকেই মানুষ আমাকে তুই তুকারি করে, অপমান করে, এমনকি গায়েও হাত তোলে। তাই অপমান বিষয়টা আমি আমলে নেই না।” শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিনের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

ইরানের হামলায় ইসরায়েলের অবস্থা দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান দুর্ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এই ঘটনাকে ঘিরে, ইরানের হামলায় ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের দৃশ্য দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের হামলায় তেল আবিবের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার দৃশ্যের নয়; বরং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরে ঘটে যাওয়া একটি মেডিকেল বিমান দুর্ঘটনার পুরোনো ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, ‘Hakan Tuluhan’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যার দৃশ্যাবলির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির মিল দেখা যায়।

Comparison: Rumor Scanner. 

ভিডিওটির বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, মেক্সিকোতে নিবন্ধিত লিয়ারজেট ৫৫ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ফিলাডেলফিয়া এক্সিকিউটিভ এয়ারপোর্ট থেকে উড্ডয়নের পরপরই দুর্ঘটনার শিকার হয়। Fox29-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানটিতে থাকা ছয়জন আরোহী নিহত হন।

‘The Truth Lies’ নামের আরেক ইউটিউব চ্যানেলের ২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিওতেও একই ধরনের দৃশ্য ও তথ্য পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব নয়।

এই তথ্যের ভিত্তিতে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে গত ৩১ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে ঘটনার বিস্তারিত পাওয়া যায়। এতে জানানো হয়, সেদিন রাতে উত্তর-পূর্ব ফিলাডেলফিয়ার একটি শপিং সেন্টারের কাছে ছয়জন আরোহীসহ একটি ছোট মেডিকেল বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানের সব আরোহী ও মাটিতে থাকা একজন নিহত হন এবং অন্তত ১৯ জন আহত হন। দুর্ঘটনায় আগুন ধরে গেলে আশপাশের বাড়িঘর ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সুতরাং, ইরানের হামলায় তেল আবিবের দৃশ্য দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পুরোনো বিমান দুর্ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি গুজব 

0

সম্প্রতি, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গ্রেফতার’- শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে গ্রেফতার করা হয়নি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ‘amardeesh247’ নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। অপরদিকে আমার দেশের আসল ডোমেইন নাম ভিন্ন। উক্ত ‘amardeesh247’ নামের এই ব্লগস্পটের সাইটে “বৈশ্বিক চাঞ্চল্যের কেন্দ্রস্থল: সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে” শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ গত ১২ জুন ২০২৫ প্রকাশ করা হয়েছে।  

কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, গত ১২ জুন এক বৈধ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে নিরাপত্তা বাহিনী সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে গ্রেফতার করেছে, এ খবর পাওয়া যাচ্ছে কর্ণফুলী জেলহাট রোডে অবস্থিত তার ব্যক্তিগত ভাড়াবাড়ি থেকে।

উক্ত সংবাদটি পর্যালোচনা করে এতে গ্রেফতারের দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

একটি দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতির মতো ব্যক্তি গ্রেফতার হলে সে বিষয়ে গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও উক্ত দাবির সত্যতা মেলেনি। 

গত ০৭ মে দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে আবদুল হামিদ দেশ ছাড়েন। আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার ঘটনায় সারা দেশে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হয়। জেলা কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়া ঢাকা বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনে নিয়োজিত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার এবং উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শক পদমর্যাদার দুজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর গত ০৮ জুন দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে আবদুল হামিদ থাইল্যান্ড থেকে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তিনটার দিকে তিনি বিমানবন্দর ছাড়েন।

পাশাপাশি, গত ০৯ জুন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট না থাকায় গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানান। 

উল্লেখ্য, ফ্রি ডোমেইনের ব্লগসাইট ব্যবহার করে অপতথ্য ছড়ানোর এই পদ্ধতি গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। সম্প্রতি রিউমর স্ক্যানারের ইনভেস্টিগেশন ইউনিট এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে বেরিয়ে এসেছে এসব সাইটের পেছনে কারা আছেন, কারাই বা এসব সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এবং কাদের এসব অপতথ্যের শিকার বানানো হচ্ছে। পড়ুন এখানে। 

সুতরাং, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গ্রেফতার হয়েছেন শীর্ষক তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন দল থেকে বহিষ্কার দাবিতে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার 

0

সম্প্রতি পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনার উত্তেজনার ঘটনায় নুর ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘ভিপি নুরুল হক নুরের কাছে মামুন তুমি একটা তেলাপোকা…’ ক্যাপশনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

কথিত এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে, ‘পটুয়াখালী – ০৩ আসনে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সহিংস কর্মকান্ড এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন কে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনেতা তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং স্থানীয় বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের তার সাথে কোন প্রকার সাংগঠনিক যোগাযোগ না রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে হাসান মামুনকে বহিষ্কার করা নিয়ে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৩ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ১৩ জুন বিএনপির ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত পৃথক দুটি পোস্টে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি সংযুক্ত করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর যুক্ত উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কথিত বহিষ্কারাদেশের প্রেস বিজ্ঞপ্তির ছবি যুক্ত করে বলা হয়, “কোন স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর জাল করে ১৩ জুন ২০২৫ তারিখ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোষ্ট করে। ফেসবুকে পোষ্টকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। উল্লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি তার স্বাক্ষরে বিএনপি’র দফতর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়নি। এটি সম্পূর্ণরুপে বানোয়াট ও ভুয়া এবং এই ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।”

সুতরাং, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে হাসান মামুনকে বহিষ্কার করা হয়েছে দাবিতে বিএনপির নামে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূস ও তার কন্যা মনিকা ইউনূসের ছবি নিয়ে অপপ্রচার

সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও এক নারীর ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ওই নারী তার প্রাক্তন স্ত্রী। ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া.কম-এ গত বছরের ডিসেম্বরে একই ছবি সম্পর্কে দাবি করা হয়, এটি ড. ইউনূস ও তার প্রাক্তন স্ত্রী ভেরা ফরস্তেনকোর ছবি।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিতে ড. ইউনূসের সাথে থাকা নারী তার প্রাক্তন স্ত্রী নন; বরং এই নারী তার (ইউনূস) বড় কন্যা মনিকা ইউনূস।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে, “লন্ডনী” নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালে ড. ইউনূসকে নিয়ে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি সম্পর্কে ওয়েবসাইটটিতে উল্লেখ করা হয়, এটি ড. ইউনূস ও তার বড় কন্যা মনিকা ইউনূসের ছবি।

এছাড়া, মনিকা ইউনূসের ফেসবুক পেজে থাকা অন্যান্য ছবির সঙ্গে তুলনা করেও ওই নারীর চেহারার মিল পাওয়া গেছে।

গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ১৯৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেরা ফরস্তেনকোর সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের  পরিচয় হয়, এবং ১৯৭০ সালে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৯ সালে তাদের কন্যা মনিকা ইউনূসের জন্মের পর অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের দাম্পত্যজীবনের অবসান ঘটে। মনিকা বর্তমানে নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী একজন অপেরা শিল্পী। পরবর্তীতে ড. ইউনূস পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা করা আফরোজি ইউনূসকে বিয়ে করেন, যিনি পরে অধ্যাপনায় যোগ দেন। তাদের একমাত্র কন্যা দীনা আফরোজ ইউনূস।

অর্থাৎ, ভেরা ফরস্তেনকো ড. ইউনূসের প্রাক্তন স্ত্রী হলেও আলোচিত ছবিটি ড. ইউনূস ও তার কন্যা মনিকা ইউনূসের।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার বড় কন্যা মনিকা ইউনূসের ছবিকে ড. ইউনূস ও তার প্রাক্তন স্ত্রীর ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনার দৃশ্য দাবিতে নেপালের পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ১২ জুন (বৃহস্পতিবার) এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার মডেলের একটি বিমান ২৪২ জন আরোহী নিয়ে আহমেদাবাদের কাছে বিধ্বস্ত হয়। উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের একটি ভবনের সঙ্গে ধাক্কা খায় বিমানটি। বিমানটিতে থাকা যাত্রীদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই প্রাণ হারান বলে দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এরই প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক সময়ে “ভারতীয় বিমানটা পতনের সময়ে প্লেনের ভেতরের এক্সক্লুসিভ ক্লিপ” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের বিমান দুর্ঘটনার সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং, এটি ২০২৩ সালে নেপালে ঘটে যাওয়া ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট-৬৯১ এর দুর্ঘটনার ঠিক আগমুহূর্তের দৃশ্য, যা বোর্ডে থাকা এক যাত্রী নিজেই মোবাইলে ধারণ করেছিলেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ‘CNA’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারিতে ‘Nepal plane crash: Final moments of Yeti Airlines flight 691, filmed by a passenger on board’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

পাশাপাশি, ভারতীয় প্রকাশনা প্লাটফর্ম ‘Mojo Story’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি তারিখে ‘Nepal Plane Crash: Inside Video Shot By Indian Passenger As Yeti Airline Crashed In Pokhara’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি তারিখে নেপালের পোখারায় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়।  

উপরিল্লিখিত ভিডিও দুইটি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘The Business Standard’ এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারিতে “Nepal: Video captures moment of fatal crash; Indian passenger’s FB Live” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নেপালের পোখরায় অবতরণের কয়েক মিনিট আগে ৭২ জন আরোহী নিয়ে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৬৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নেপালের তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ৬৮ জনের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। নিহত পাঁচ ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে একজন, সোনু জয়সওয়াল, দুর্ভাগ্যজনক বিমানটিতে ফেসবুক লাইভ শ্যুট করেছিলেন। (অনূদিত)  

অর্থাৎ, গত ১২ জুন  ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে প্রচারিত ভিডিওটির কোনো সম্পর্ক নেই।

সুতরাং, ২০২৩ সালে নেপালের পোখরায় বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বাজেট ইস্যুতে রাজনৈতিক দলকে জড়িয়ে ড. ইউনূসের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

গত ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেট। এরই প্রেক্ষিতে, ড. ইউনূসের নামে একটি উদ্ধৃতি সমাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমের এসব পোস্টে ড. ইউনূসকে উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে- ‘যেখানে বিশ্ব অর্থনীতি আমার কাছে পরামর্শ চায়। সেখানে দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের কাছে আমাকে বাজেট শিখতে হবে’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এমন কোনো মন্তব্য করেননি। বরং, কোনো ধরনের তথ্যসূত্র ছাড়াই সামাজিক মাধ্যমে ড. ইউনূসের নামে ভুয়া এই মন্তব্য প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে এমন কোনো মন্তব্য ড. ইউনূস করেছেন কিনা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে নির্ভরযোগ্য সূত্রে দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তাই, স্বাভাবিকভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন কোনো মন্তব্য করলে তা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করার কথা কিন্তু মূলধারার গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে, এই বিষয়ে অনুসন্ধানে সামাজিক মাধ্যমে একই উদ্ধৃতিটি ড. ইউসুফ নাম দিয়ে পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। দেখুন – এখানে, এখানে, এখানে

Collage: Rumor Scanner

এসব পোস্টে অনেকেই মন্তব্যটি ড. ইউনূসের মনে করলেও কিছু কিছু মন্তব্যকারী এটিকে কথিত ড. ইউসুফ এর মন্তব্য বলেও দাবি করেন।

Collage: Rumor Scanner

এছাড়াও, একই উদ্ধৃতি ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস (যে কথা বলেননি)’ দাবিতেও প্রচার করা হয়েছে। দেখুন – এখানে

Screenshot: Youth Vocal (Facebook)

অর্থাৎ, সামাজিক মাধ্যমের প্রচারিত পোস্ট ও পোস্টের মন্তব্যের ঘর পর্যবেক্ষণ করে এটি নিশ্চিত যে আলোচিত মন্তব্যটি প্রথমে মজার ছলেই ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছিল। যা পরবর্তীতে সত্য দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে। 

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানার টিম যোগাযোগ করে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের সাথে। তিনিও নিশ্চিত করেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনো প্লাটফর্মেই এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্ধৃত করে ‘যেখানে বিশ্ব অর্থনীতি আমার কাছে পরামর্শ চায়। সেখানে দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের কাছে আমাকে বাজেট শিখতে হবে’ শীর্ষক দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত মন্তব্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis