Home Blog Page 10

গত সেপ্টেম্বর মাসে নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় আ.লীগ নেতার লাশ উদ্ধারের দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ২০২২ সালের

গত ০৪ সেপ্টেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পিলকুনীতে আওয়ামী লীগ নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত সেপ্টেম্বর মাসের নয় এবং গত ০৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে এমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ সালের ০৪ নভেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পিলকুনী এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের (৩২) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই ঘটনার দৃশ্য এটি। 

অনুসন্ধানে কুমিল্লা জেলা প্রবাসী মিডিয়া নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে ২০২২ সালের ০৪ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে থাকা ফুটেজের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ০৪ নভেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পিলকুনী এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসাইন জানান, নিহতের লাশ রাস্তায় পায়ে ডুবায় ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ধারণা করা হচ্ছে– রাতে দূর্বৃত্তরা তাকপ শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ডুবায় ফেলে যায়। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জাগো নিউজের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ০৪ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ০৪ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পিলকুনী এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর লাশ উদ্ধারের ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পিলকুনী এলাকা অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ পাওয়ার দৃশ্যকে গত সেপ্টেম্বর মাসে একই স্থান থেকে আওয়ামী লীগ নেতার লাশ উদ্ধারের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আসামে আন্দোলনের ভিডিওতে জয় বাংলা স্লোগান লাগিয়ে আ. লীগের সমর্থনে মশাল মিছিল দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, “ইনশাআল্লাহ শেখ হাসিনা আসবে �প্রস্তুত হও” শিরোনামে আওয়ামী লীগের সমর্থনে মশাল মিছিলের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সমর্থনে মশাল মিছিল দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের আসাম রাজ্যে ঘটা একটি আন্দোলনের ভিডিওতে ‘জয় বাংলা’ শীর্ষক স্লোগান যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Senapati Today’ নামক ফেসবুক পেজে গত ১৩ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যাবে। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে। তবে দুইটি ভিডিওর অডিওতে অমিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ০২ সেপ্টেম্বরে আসামের তিনসুকিয়ায় অল মোরান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন একটি মশাল মিছিল আয়োজন করে। মিছিলে তারা মোরান জনগোষ্ঠীর জন্য পুনরায় তপশিলি জনজাতি মর্যাদা এবং বর্তমান মোরান স্বশাসিত পরিষদকে ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত পরিষদে উন্নীত করার দাবি জানায়। সরকার তাদের দাবি পূরণ না করলে আসাম রাজ্যে অর্থনৈতিক অবরোধ ডাকা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনটি। 

এছাড়া, ‘Rajesh Sharma’ নামক আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৭ সেপ্টেম্বরে একই ঘটনার বিষয়ে একটি ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়। ৪৯ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই ভিডিওটিতেও একই দৃশ্য দেখা যায়। এই ভিডিওটির ক্যাপশনেও এটিকে ভারতের আসামে মাতক, মোরান ও তাই আহোমসহ কয়েকটি সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘The Times of India’ এর ওয়েবসাইটে চলতি বছরের ০৩ সেপ্টেম্বরে আলোচ্য বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from ‘The Times of India’ website

প্রতিবেদনটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অল মোরান স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সদস্যদের নেতৃত্ব নিজেদের সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত উপজাতি মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসিত পরিষদের সাংবিধানিক উন্নয়ন দাবিতে আসামের তিনসুকিয়ায় মশাল মিছিল করে। তাদের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বিজেপির দেওয়া প্রতিশ্রুতি এক দশক পরও বাস্তবায়িত হয়নি, ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর সরকারের উদাসীনতায় তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো স্থানে বিক্ষোভ মিছিলের নয় তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে এবং উক্ত মিছিলের সাথে আওয়ামী লীগেরও কোনে সম্পর্ক নেই। 

সুতরাং, ভারতের আসাম রাজ্যে হওয়া একটি আন্দোলনের ভিডিওতে ‘জয় বাংলা’ শীর্ষক স্লোগান যুক্ত করে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সমর্থনে মশাল মিছিলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছেন দাবিতে একাধিক পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘আমার আওয়ামী লীগের ভাইয়েরা তৈরী তো, দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরেছেন দাবিতে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি ১৭ হাজার বার দেখা হয়েছে, এটিতে প্রায় ৮ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি ২ শত বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুন মাসে ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে শেখ হাসিনার  বাংলাদেশে ফেরার ভিডিওকে সাম্প্রতিক ঘটনা  দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ভিডিও যাচাই- ১:

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ০১ অক্টোবর ‘সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির প্রথম ফুটেজের সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ০০:০৭ থেকে ০০:১৫ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। 

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আটদিনের সফর শেষে সেদিন দেশে ফিরেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওর প্রথম ফুটেজের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

ভিডিও যাচাই- ২:

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম ThePrint এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২১ জুন ‘Bangladesh PM Sheikh Hasina arrives in Delhi for a 2-day State visit to India’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির দ্বিতীয় ফুটেজের সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ০০:০৯ থেকে ০০:১৬ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। 

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সেদিন ভারতের দিল্লিতে পৌঁছান  বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওর দ্বিতীয় ফুটেজের ঘটনাটিও সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

তাছাড়া, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে এলে এ বিষয়টি জাতীয়-আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করা হতো। কিন্তু, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে আলোচিত দাবিতে কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, শেখ হাসিনা সম্প্রতি বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন দাবিতে একাধিক পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে ফেরত আসার অনুরোধ জানিয়ে কাঁদা এই তরুণী জুলাই আন্দোলনকারী নন, ছাত্রলীগ নেত্রী

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যায় একজন নারী কান্না করে বলছেন, ‘মা দেশের মানুষ ভালো নেই। আপনাকে সবাই চায় মা। আপনাকে আসতে হবে মা। এদেশের জন্য হলেও, এদেশের মানুষের জন্য হলেও মা। মানুষ ভালো নেই মা। এদেশের সাধারণ মানুষ আপনাকে ভিক্ষে চাইতেছে মা৷ আপনাকে আসতে হবে মা।’

ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, এটি একজন জুলাই আন্দোলনকারীর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরে আসার অনুরোধ সংক্রান্ত ভিডিও। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে আসার অনুরোধ সংক্রান্ত এই ভিডিওর তরুণী ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনকারী নয় বরং, তিনি দোলা চৌধুরী, ফেনী সরকারি কলেজের ছাত্রী এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ফেনী জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ মে তারিখে সম্প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ একাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। উক্ত লাইভ ভিডিওর ৫৭ মিনিট ১০ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপের অংশ পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

লাইভ ভিডিওতে উক্ত নারীর পরিচয় হিসেবে বলা হয়, ‘তিনি দোলা চৌধুরী, তিনি ছিলেন ফেনী সরকারি কলেজের ছাত্রী এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ফেনী জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক।’ দোলা চৌধুরী সম্পর্কে আরো দাবি করা হয়, ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় তার বাড়িতে বিএনপি-জামায়াত হামলা করে ও তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, দোলা চৌধুরীর উপরোক্ত লাইভে বলা কথার একাংশ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ১৩ জুনে প্রচার হতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওতেও উক্ত নারীর পরিচয় হিসেবে বলা হয়, ‘দোলা চৌধুরী, ফেনী সরকারি কলেজের ছাত্রী এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (ফেনী জেলা) সাংগঠনিক সম্পাদক’। ভিডিওতে তাকে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নানা ভালো কাজের উল্লেখ করতে দেখা যায়। এছাড়াও, ভিডিওর এক পর্যায়ে তিনি নিজেও নিজেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নেত্রী বলেও উল্লেখ করেন।

সুতরাং, শেখ হাসিনাকে ফেরত আসার অনুরোধ জানিয়ে ছাত্রলীগ নেত্রীর বলা কথাকে জুলাই আন্দোলনকারীর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইউনূস বিরোধী আন্দোলনের দৃশ্য দাবিতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ভিন্ন আন্দোলনের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘হঠাও ইউনুস বাঁচাও দেশ। এখন ঢাকা কলেজের সব শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে। ছাত্র ও শিক্ষক দ্বারা কানায় কানায় পূর্ণ শহীদ মিনার।’- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিরোধী আন্দোলনের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি গত ১৩ অক্টোবর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ‘সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়’ অধ্যাদেশ সংশোধনের দাবিতে করা আন্দোলনের দৃশ্য।

অনুসন্ধানে Atiqur Rahman নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়েছে, ঢাকা কলেজের সব শিক্ষার্থী শহীদ মিনারে। ছাত্র-শিক্ষক দ্বারা কানায় কানায় পরিপূর্ণ শহীদ মিনার। এছাড়া, উক্ত ভিডিওতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিরোধী কোনো স্লোগান দিতেও শোনা যায়নি। 

গত ১৩ অক্টোবর এখন টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন ঢাকা কলেজ এলাকায় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছিলেন। 

প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একই দিনে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৩ অক্টোবর ঢাকা কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো বিলুপ্তির আশঙ্কায় কলেজটির উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে অভিযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন। আবার স্নাতক-স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের আরেকাংশ শিক্ষা ভবনের সামনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। এ নিয়ে শিক্ষকেরা সতর্ক অবস্থায় ছিলেন। একপর্যায়ে ইতিহাস বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপককে হেনস্তা ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের একজন ছাত্রকেও মারধর এবং কলেজের শিক্ষক ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছিল দৈনিক ইত্তেফাকও। 

উল্লেখ্য, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাত কলেজকে নিয়ে গঠিত সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এরপর তা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে পক্ষে ও বিপক্ষে মতামত দেখা যায়।

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওটি সাত কলেজে নিয়ে গঠিত সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাদেশ সংশোধনের দাবিতে করা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড সার্চ করে ঢাকাও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রধান উপদেষ্টা বিরোধী কোনো আন্দোলনের তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের করা আন্দোলনের ভিডিওকে প্রধান উপদেষ্টা বিরোধী আন্দোলনের দৃশ্য হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে ২০২৪ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই। চলছে লড়াই চলবে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ১৪/১০/২০২৫’ ক্যাপশনে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ফেসবুকে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ৫ হাজার বার দেখা হয়েছে, এটিতে প্রায় ৪ শত পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি প্রায় ২ শত বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো মিছিলের দৃশ্য নয়৷ প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের একটি বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি গত ১৪ অক্টোবর থেকে প্রচার করা হয়েছে এবং এটিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সেদিনের আয়োজিত মিছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।   

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে উক্ত তারিখের পোস্টগুলো যাচাই করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো পোস্ট বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, Sultan Ahmed নামক ফেসবুক প্রোফাইলে ২০২৪ সালের ০৩ আগস্ট প্রকাশিত পোস্টে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো মিছিলের নয়। 

এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০৩ আগস্ট ‘চট্টগ্রাম-এ ছাত্র জনতার মিছিল “আমার দেশ আমার মা পাকিস্তান, আফগানিস্তান হবে না”’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর মিল রয়েছে। 

Screenshot: YouTube  

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি সেদিন চট্টগ্রামে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলের দৃশ্য। 

সুতরাং, ২০২৪ সালের ০৩ আগস্টে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মিছিলের ভিডিওকে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাম্প্রতিক মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চীনে মোদীকে স্বাগত জানানোর দৃশ্য দাবিতে এআই সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

গত ৩১ আগস্ট চীনের তিয়ানজিন শহরে শুরু হয় দুই দিনের সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলন। এতে অংশ নিতে চীন সফরে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, চীনের প্রতিটি বিলবোর্ডে মোদীকে তুলে ধরা হচ্ছে। 

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং গত এপ্রিলের ভিন্ন ঘটনার একটি ছবিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সহায়তায় সম্পাদনা করে এই ছবিটি তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এর ওয়েবসাইটে গত ২০ এপ্রিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে থাকা একটি ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির পারিপার্শ্বিক মিল পাওয়া যায়। শুধু ছবিটিতে মোদীর মুখাবয়ব এবং তাকে স্বাগত জানানোর বাক্য (MODI WELCOME TO CHINA) অনুপস্থিত।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ১৯ এপ্রিল দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের নান্নান প্রদেশে ১৫ মিনিটের একটি ড্রোন শো অনুষ্ঠিত হয়। ওই শো এর সঙ্গে মোদীর সফরের কোনো সম্পর্কই নেই।

নান্নানে প্রতি শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনে এমন ড্রোন শো আয়োজিত হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি আসল নয়। 

পরবর্তীতে, প্রচারিত ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় সম্পাদিত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ছবিটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০০ শতাংশ। 

তাছাড়া, চলতি বছরের ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোদী চীন সফরের সময় ভারত বা চীন কোনো সরকারের পক্ষ থেকেই তার সম্মানে ড্রোন শো আয়োজনের কথা জানানো হয়নি।

সুতরাং, চীনে বিলবোর্ডে নরেন্দ্র মোদীর ছবি দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

এসসিও সম্মেলনে শি জিনপিংয়ের সাথে মোদীর করমর্দন না করার দাবিটি ভুয়া

গত ৩১ আগস্ট চীনের তিয়ানজিন শহরে শুরু হয় দুই দিনের সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) সম্মেলন। এতে অংশ নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, শি জিনপিং এর সাথে মোদি হ্যান্ডশেক করতে গেলে চীনা প্রেসিডেন্ট মোদিকে তার চেয়ার দেখিয়ে বললেন, “ওইযে ওখানে গিয়ে বস”। 

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং দাবিটিও সঠিক নয় বরং ২০২৪ সালে ব্রিকস সম্মেলনের এই ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণে দেখা যায়, মোদী শি জিনপিংয়ের দিকে করমর্দনের জন্য হাত বাড়ালে জিনপিং মোদীকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত করেন। এরপর দুই সরকার প্রধান নিজ নিজ দেশের পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে করমর্দন করেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই) এর এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের দৃশ্য এটি।

এএনআই এর ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একটি কক্ষে প্রবেশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দিকে করমর্দন করার জন্য হাত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু তখনই জিনপিং, মোদীকে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত করেন। এরপর দুই সরকার প্রধান নিজ নিজ দেশের পতাকার সামনে দাঁড়ান, পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেন এবং ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে পোজও দেন।

Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিটি সঠিক নয়।  

তাছাড়া, সাম্প্রতিক এসসিও সম্মেলনে এই দুই নেতার করমর্দনের ভিডিও-ও পাওয়া গেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের ইউটিউব চ্যানেলে। 

সুতরাং, এসসিও সম্মেলনে শি জিনপিংয়ের সাথে নরেন্দ্র মোদীর করমর্দন না করার দাবিতে পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

সাংবাদিক ইলিয়াস বিদেশ থেকে চাঁদাবাজি করছে দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার  

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, “সাংবাদিক ইলিয়াসের বিদেশ থেকে ফোন করে দেশে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে… বিদেশ থেকে বলে দেয় দেশে চাঁদাবাজরা চাদা কালেকশন করে কমিশন ইলিয়াসকে পাঠিয়ে দেন…. এভাবেই চলছে..”

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটির সাথে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের কোনো সম্পর্ক নেই বরং, ভিডিওতে আওয়ামী লীগ নেতাদের দ্বারা বিদেশ থেকে ফোনকলের মাধ্যমে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ করতে দেখা যায় কতিপয় ভুক্তভোগীকে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে একুশে টিভির পেজে ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘বিদেশ থেকে ফোনে চাঁদা চাইছে আ.লীগ নেতারা।’ ভিডিও পর্যালোচনায় দেখা যায়, কয়েকজন ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের কাছে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বিদেশ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ করছেন। ভিডিওর কোনো অংশেই সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের প্রসঙ্গ আসেনি। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটির সাথে ইলিয়াস হোসেনের কোনো সম্পর্ক নেই।   

তাছাড়া, অন্যান্য গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন বিদেশ থেকে চাঁদাবাজি করছে দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের মশাল মিছিল দাবিতে ভিন্ন ঘটনার দৃশ্য প্রচার

0

সম্প্রতি অনলাইনে একটি ছবি সম্বলিত ফটোকার্ড প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “নোয়াখালিতে আওয়ামী লীগের মশাল মিছিলে হাজার হাজার নেতাকর্মীর সমাগম হয়েছে”।

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দৃশ্যটি নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের মশাল মিছিলের নয় বরং, কুমিল্লায় নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনকারীদের বাসে হামলার প্রতিবাদে গত ২২ অক্টোবরে হওয়া মশাল মিছিলের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির সূত্রপাত একটি স্যাটায়ার পেজের ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট থেকে যা আসল খবর দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘চ্যানেল৭১’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২২ অক্টোবরে আলোচিত ফটোকার্ডটি পোস্ট হতে দেখা যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

‘চ্যানেল৭১’ পেজটি পর্যবেক্ষণ করলে পেজের বায়োতে উল্লেখ পাওয়া যায়, ‘বিশ্বাস করা না করা আপনার ব্যাপার, ধন্যবাদ’। এছাড়াও, পেজটি পর্যবেক্ষণ করলে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া এরূপ আরো নানা পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে থাকা ফটোকার্ডগুলোর নিচে বিজ্ঞাপনের অংশে ‘জেরিন স্পেশাল বদনা’ লেখা পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত পোস্টটিও মূলত ব্যাঙ্গাত্মক কনটেন্ট হিসেবেই তৈরি করা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে পেজটি কোনো আসল সংবাদমাধ্যম নয়। এছাড়াও, পেজটির লোগোও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন ‘চ্যানেল২৪’ এর আদলে তৈরি।

পরবর্তীতে আলোচিত দৃশ্যের বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘মোহনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ‘কুমিল্লায় নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনকারীদের বাসে হা”ম”লার প্রতিবাদে মশাল মিছিল’ শিরোনামে গত ২২ অক্টোবরে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

পাশাপাশি, ‘চ্যানেল নোয়াখালী’ নামের একটি ফেসবুক পেজেও আলোচিত ঘটনার ভিডিও গত ২২ অক্টোবরে প্রচার হতে দেখা যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়েছে ‘কুমিল্লায় বিভাগ আন্দোলনকারীদের বাসে হামলার প্রতিবাদে শতশত মশাল মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমেছে নোয়াখাইল্যারা।’ এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিতে প্রদর্শিত মিছিলের ব্যানারেও মোহনা টিভিতে প্রদর্শিত মিছিলের অনুরূপ ‘নোয়াখালীর বাসে কুমিল্লার… ও নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে’ শীর্ষক লেখা দেখতে পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত নোয়াখালীর বাসে হামলা ও নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে হওয়া মিছিলের দৃশ্য। এর সাথে আওয়ামী লীগের দলীয় মশাল মিছিলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

সুতরাং, কুমিল্লায় নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনকারীদের বাসে হামলার প্রতিবাদে হওয়া মশাল মিছিলের দৃশ্যকে নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের মশাল মিছিলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র