Home Blog Page 11

১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিকাশের পক্ষ থেকে প্রতি গ্রাহককে ১৩০০ টাকা বোনাস দেওয়ার তথ্যটি গুজব

0

সম্প্রতি, “১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ বোনাস | বিকাশের অসাধারণ মাইলফলক উদ্‌যাপনে প্রতি গ্রাহক পাচ্ছেন ১৩০০ টাকা ফ্রি বোনাস—অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন বা কোনও চার্জ ছাড়াই!” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে প্রতি গ্রাহককে ১,৩০০ টাকা বোনাস দেওয়ার কোনো ঘোষণা বিকাশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি বরং, ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ঈদ বোনাসের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে থাকা ওয়েবসাইট লিংকে প্রবেশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করলে উপরে বিকাশের লোগো এবং “১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ বোনাস | বিকাশের অসাধারণ মাইলফলক উদ্‌যাপনে প্রতি গ্রাহক পাচ্ছেন ১৩০০ টাকা ফ্রি বোনাস—অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন বা কোনও চার্জ ছাড়াই!” শীর্ষক একটি লেখা পাওয়া যায়। এরপর অফারের বিস্তারিত অংশে বলা হয়, “অফারটি শুধুমাত্র বৈধ ও সক্রিয় বিকাশ অ্যাকাউন্টধারীদের জন্য। প্রতি মোবাইল নম্বর-এ একবারই ১৩০০ টাকা যুক্ত হবে “বোনাস ব্যালেন্স” হিসেবে। বোনাস ক্লেইম করার পর সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা মধ্যে টাকা জমা হবে। এই বোনাস দিয়ে সেন্ড মানি, মোবাইল রিচার্জ ও বিল পেমেন্ট করা যাবে। অভিযুক্ত বা সন্দেহজনক লেনদেন মিললে বিকাশ যে কোনও সময় অফার স্থগিত করতে পারে।”

Screenshot: Scamming website

আরেকটু নিচে স্ক্রল করলেই পাবলিক মন্তব্য দাবিতে একাধিক ব্যক্তির মন্তব্য দেখতে পাওয়া যায় যারা টাকা পেয়েছেন বলে স্বীকার করছেন। উক্ত ওয়েবপেজটির বিস্তারিত অংশের খানিকটা ওপরে ‘বোনাস পেতে ক্লিক করুন’ লেখা সম্বলিত একটি হাইপারলিঙ্ক পাওয়া যায়।

Screenshot : Scamming website

রিউমর স্ক্যানার টিমের একজন অনুসন্ধানকারী হাইপারলিঙ্কড লেখাটিতে ক্লিক করলে এটি আরেকটি নতুন পেজে নিয়ে যায়। উক্ত পেজটিতে বলা হয়, “অভিনন্দন, প্রিয় গ্রাহক!

সঠিক তথ্য দিয়ে নিচের ফরমটি পূরণ করুন। আপনি যে বিকাশে টাকা উত্তোলন করতে চান সেই বিকাশ নম্বরটি অবশ্যই সচল থাকতে হবে, ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার বিকাশ নম্বরে কোড পাঠানো হবে।” এরপর বিকাশ নম্বর এবং পিন চাওয়া হয়৷ এ পর্যায়ে নিজের বিকাশ নাম্বার, তবে ভুল পিন দিলে এটি নতুন আরেকটি পেজে নিয়ে যায়।

Screenshot : Bkash payment page, redirected from Scamming website

উক্ত নতুন পেজটিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করে রিউমর স্ক্যানার টিম। নতুন পেজের ইন্টারফেসটি হুবহু বিকাশে পেমেন্ট করার ইন্টারফেসের মতো। তাছাড়া, দাবি অনুসারে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারীর ১,৩০০ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও নতুন ইন্টারফেসটি হচ্ছে কাউকে টাকা পেমেন্ট করার ইন্টারফেস। অধিকন্তু, এখানে পেমেন্ট গেটওয়ের জায়গায় বিকাশ কর্তৃপক্ষের কোনো কিছুর বদলে “PUSTI FOOD AND LIVE BAKERY-RM1010232” নামটি দেখা যায়৷ এছাড়াও, পূর্ববর্তী ফর্মে উল্লিখিত নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার থেকেই পেমেন্ট হতে যাচ্ছে বলে দেখা যায়। এরপর নাম্বার কনফার্ম করলে ওটিপি আসে এবং ওটিপি চাওয়া হয়। কিন্তু, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারী এর পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন করেন নি। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে, ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রতি গ্রাহককে ১,৩০০ টাকা বোনাস দেওয়ার কোনো ঘোষণা বিকাশ দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে বিকাশের ওয়েবসাইট, বিকাশের ফেসবুক পেজ বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিকাশের সর্বমোট গ্রাহক সংখ্যার বিষয়ে অনুসন্ধান করলে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে গত ২৩ মার্চে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে গত জানুয়ারি মাসের মোবাইলে আর্থিক সেবার (এমএমএস) নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটির এক পর্যায়ে বলা হয়, বিকাশের নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা প্রায় আট কোটি। অর্থাৎ, বিকাশের ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি হওয়ার দাবিটির সপক্ষেও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ নেই।

সুতরাং, ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে প্রতি গ্রাহককে ১,৩০০ টাকা বোনাস দিচ্ছে বিকাশ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

তৌহিদ আফ্রিদির বাটার শো-রুমে লুটপাটের দাবিটি ভুয়া

জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গত ২৪ আগস্ট বরিশাল মহানগরের বাংলাবাজার এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেফতার হওয়ার পর রাজধানীতে থাকা তার বাটা জুতার শো-রুম লুটপাট করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত এপ্রিল মাসে সিলেটে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতা কেএফসি, ইউনিমার্ট, বাটা, ডমিনোজ পিৎজাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। একইসঙ্গে বাটার শো-রুমে লুটপাট করা হয়। সেই সময়কার দৃশ্য এটি। 

অনুসন্ধানে দেশটিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৭ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, বাটার শো-রুমে লুটপাট ও ভাঙচুরের দৃশ্য এটি। এছাড়া, ভিডিওটিতে ঘটনার বর্ণনা দিতে থাকা ব্যক্তিকে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বর্ণনা দিতে শোনা যায়। 

একই ভিডিও একই তারিখে মাছরাঙা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলেও প্রকাশ করতে দেখা যায়। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড করে বাংলা ট্রিবিউনে ওয়েবসাইটে ০৮ এপ্রিল “বাটা শোরুম থেকে লুট করা জুতা বিক্রির জন্য ফেসবুকে বিজ্ঞাপন, আটক ১৪” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৭ এপ্রিল ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল ছিল সিলেটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা কেএফসি, ইউনিমার্ট, বাটা, ডমিনোজ পিৎজাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। একইসঙ্গে বাটার শোরুমে লুটপাট করা হয়। ঘটনার পরদিন পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে লুটপাটের দায়ে ১৪ জনকে আটক করেছিল।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, বাটা একটি বহুজাতিক কোম্পানি। তারা সরাসরি দোকান পরিচালনার পাশাপাশি ডিস্ট্রিবিউশন/ ডিলারশিপের মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষকে পণ্য বিক্রির অনুমতি দেয়। তবে তৌহিদ আফ্রিদির বাটার কোনো ডিলারশিপ আছে কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সুতরাং, গত এপ্রিল মাসে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে সিলেটে বাটার শো-রুমে লুটপাটের ভিডিওকে তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেফতারের পর তাঁর বাটা জুতার শোরুমে লুটপাটের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভারতের সংসদে ড. ইউনূসের সমালোচনা দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুতের পর ভারতে আশ্রয়ে নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে সেদেশের সংসদে একাধিক বক্তা কথা বলেছেন দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওগুলো দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতীয় সংসদে শেখ হাসিনা ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে দাবিতে ভিডিওগুলো আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওগুলো তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম ভিডিওগুলোতে News Bangla g24 লেখা একটি লোগো দেখতে পায়। 

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওতে বক্তব্য প্রদানকারী মহিলা বক্তার ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাপ্ত লোগোটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে News Bangla g24 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৭ আগস্ট “বঙ্গবন্ধুকে অপমান ইউনুস লুটপাটকারী মুখ খুলল ভারত | Hasina | India #shorts #news #youtubeshorts #bn” শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ScreenShot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‍উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মহিলা বক্তার ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটিতে থাকা মহিলার সামনের লোকজনের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও বক্তার চোখ, হাতে কিছু মুহুর্তে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা যায়। 

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল হাইভ মডারেশনে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯২ শতাংশ বলে ফলাফল আসে।

Screenshot: Hive Moderation  

ভিডিও যাচাই ২

আলোচিত ভিডিওতে বক্তব্য প্রদানকারী মহিলা বক্তার ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে News Bangla g24 নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৬ আগস্ট “বঙ্গবন্ধুকে অপমানে জয় গেলেন ভারতে-মুখ খুলল ভারত | Hasina | India #shorts #news #youtubeshorts #bnp” শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ScreenShot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‍উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মহিলা বক্তার ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটিতে আশেপাশে থাকা লোকজনের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও বক্তার চোখ, হাতে কিছু মুহুর্তে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা যায়। 

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল হাইভ মডারেশনে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৮৪ শতাংশের ও বেশি বলে ফলাফল আসে।

Screenshot: Hive Moderation

ভিডিও যাচাই ৩

আলোচিত ভিডিওর বক্তব্য প্রদানকারী মহিলা বক্তার ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে News Bangla g24 নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৯ আগস্ট “বঙ্গবন্ধুকে অপমান লাখো তরুণ বেকার মুখ খুলল ভারত | Hasina | India #shorts #news #youtubeshorts #bnp” শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ScreenShot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‍উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মহিলা বক্তার ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটিতে মহিলার পেছনে থাকা লোকজনের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও বক্তার চোখ, হাতে কিছু মুহুর্তে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা যায়। 

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল হাইভ মডারেশনে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৭১ শতাংশ বলে ফলাফল আসে।

Screenshot: Hive Moderation

ভিডিও যাচাই ৪

আলোচিত ভিডিওর বক্তব্য প্রদানকারী মহিলা বক্তার ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে News Bangla g24 নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৯ আগস্ট “হাসিনা পদত্যাগ করেননি মুখ খুলল ভারত | Hasina | India #shorts #news #youtubeshorts #bnp #awamileague” শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ScreenShot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‍উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মহিলা বক্তার ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটিতে মহিলার পেছনে থাকা লোকজনের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও বক্তার চোখ, হাতে কিছু মুহুর্তে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা যায়। 

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল হাইভ মডারেশনে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৮৪ শতাংশের ও বেশি বলে ফলাফল আসে।

Screenshot: Hive Moderation

ভিডিও যাচাই ৫

আলোচিত ভিডিওর বক্তব্য প্রদানকারী মহিলা বক্তার ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে News Bangla g24 নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৬ আগস্ট “বঙ্গবন্ধুকে অপমান ইউনূসের আইন নিয়ে মুখ খুলল ভারত| Hasina | India #shorts #news #youtubeshorts #bnp” শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ScreenShot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‍উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটিতে আশেপাশে থাকা লোকজননের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও বক্তার চোখ, হাতে কিছু মুহুর্তে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা যায়।

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল হাইভ মডারেশনে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯১ শতাংশ বলে ফলাফল আসে।

Screenshot: Hive Moderation

ভিডিও যাচাই ৬

আলোচিত  ভিডিওগুলোতে বক্তব্য প্রদানকারী মহিলা বক্তার ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে News Bangla g24 নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৬ আগস্ট “বঙ্গবন্ধুকে অপমানে ইউনুসকে নিয়ে একি মুখ খুলল ভারত| Hasina | India #shorts #news #youtubeshorts #bnp” শিরোনামে প্রচারিত একটি শর্ট ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ScreenShot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‍উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মহিলা বক্তার ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটিতে মহিলার পেছনে থাকা লোকজনের শারীরিক অঙ্গভঙ্গি ও বক্তার চোখ, হাতে কিছু মুহুর্তে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা যায়। 

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল হাইভ মডারেশনে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৭ শতাংশের ও বেশি বলে ফলাফল আসে।

Screenshot: Hive Moderation

এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ভারতীয় সংসদে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা, দেশের খারাপ পরিস্থিতি ও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দরকার শীর্ষক দাবির বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি একাধিক ভিডিওকে ভারতীয় সংসদে ড. ইউনূসের সমালোচনার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গভীর রাতে সচিবালয়ে সেনাবাহিনীর গোলাগুলির দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, ‘এই মুহুর্তে গভীর রাতে সচিবালয়ে সেনাবাহিনী ব্যাপক গুলি করছে। সচিবালয়ের ভিতরে অনেককে আটক করা হয়েছে।’ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সচিবালয়ের নয়। সাম্প্রতিক সময়ে সচিবালয়ে সেনাবাহিনীর গোলাগুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত মার্চ মাসে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ‘অস্বাভাবিক ভাবে’ এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে উত্তেজিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাঁকাগুলি ছোড়ে যৌথবাহিনী। সেই সময়কার দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে ‘JagoComilla.com’ নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ২২ মার্চ প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি কুমিল্লা মেডিকেলে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজন-শিক্ষার্থীদের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিও। সেসময় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর ফাঁকা গুলি করেছে বলেও জানা যায়।

উল্লেখিত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে আলোচিত বিষয়ে ইনডিপেনডেন্ট টিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ২১ মার্চ রাত সাড়ে ১১টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে যমুনা টেলিভিশন ও চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের রিপোর্টারসহ চার সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, ‘অস্বাভাবিক ভাবে’ এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এই হামলার শিকার হন তারা। এ সময় রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে উত্তেজিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফাঁকাগুলি ছোড়ে যৌথবাহিনী। 

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করে প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ এবং সময় টিভি

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, কুমিল্লার ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে সচিবালয়ে সেনাবাহিনীর গুলাগুলির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের বাড়িতে ডিবি ও সেনাবাহিনী কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি

গতকাল (২৯ আগস্ট) রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পার্টি এবং গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিপেটায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতরভাবে আহত হয়। 

এরই প্রেক্ষিতে “এই মুহূর্তে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরের বাড়িতে ডিবি এবং সেনাবাহিনীর অভিযান। তার বাড়িতে অবৈধভাবে রাখা লক্ষ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে,, গতকাল তাকে লাঠিচার্জ করে আহত করার পরে এখন তার বাড়িতে অভিযান চলছে” শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বাড়িতে গোয়েন্দা পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনী কোনো অভিযান করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালে ভিন্ন একটি ঘটনায় ধারণকৃত একটি ভিডিওকে সম্প্রতি আলোচিত দাবিত প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Mizanur Rahman’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি “র‌্যাবের অভিযান, এ যেন টাকা-স্বর্ণের খনি” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২২ সেকেন্ড দীর্ঘ এই ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ‘Ekattor TV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে আলোচিত বিষয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে র‌্যাব-৩ এর একটি দল পুরান ঢাকার ১১৯/১ লাল মোহন সাহা স্ট্রিটে মমতাজ ভিলায় অভিযান শুরু করে। সেসময়ে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চলা শ্বাসরুদ্ধকর এই অভিযানে এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়া নামক সহোদরের বাড়ি থেকে নগদ সাড়ে ২৬ কোটি টাকা ছাড়াও ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজপত্র, মোটা অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ও প্রায় এক কেজি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। 

এছাড়া, আলোচিত বিষয় নিয়ে দেশিয় একাধিক সংবাদমাধ্যমে সেসময়ে প্রকাশিত একাধিক (আরটিভি, বিডিনিউজ২৪, ঢাকা টাইমস) প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণে একই তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায় এবং অভিযুক্ত এনামুল হক এনুকে গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা হিসেবে উল্লেখ পাওয়া যায়। 

পাশাপাশি, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমকে অভিযান পরিচালনা করতে দেখা গেলেও বর্তমানে তিনি সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ভিডিওটি ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারের পর দাবি গুলোকে (, ) মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত  ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বাড়িতে ডিবি ও সেনাবাহিনী অভিযানের দাবিটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ঢাবিতে ছাত্রদল, শিবির এবং এনসিপির মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের দাবিটি ভুয়া

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ছাত্রদল, শিবির এবং এনসিপি ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 


উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল, শিবির এবং এনসিপির মধ্যে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওকে সম্প্রতি উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 


এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলা” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে থাকা দৃশ্যের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে।

উক্ত ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দ্যা ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে আলোচিত বিষয়ে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই “ঢাবিতে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 


প্রতিবেদনটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৫ জুলাই দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল এবং ভিসি চত্ত্বরে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। 

পাশাপাশি, সেসময়ে আলোচ্য বিষয়ে দেশিয় মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও (সমকাল, যুগান্তর) খবর প্রকাশিত হয়েছে। যা থেকে একই তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, উপরোক্ত পর্যালোচনায় এটি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে যে, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনো সংঘর্ষের খবর দেশিয় সংবাদমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ছাত্রদল, শিবির ও এনসিপির মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শাহবাগে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ২৭ আগস্ট তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের পূর্বঘোষিত ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ করে প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ অবরোধের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা যমুনার দিকে পৌঁছলে লাঠিচার্জ করে শিক্ষার্থীদের পিছু হটতে বাধ্য করে পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে, “এই মুহূর্তে গভীর রাতে শাহবাগসহ আশেপাশের এলাকা রণক্ষেত্র পুলিশ নির্বিচারে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালাচ্ছে। ইউনুছ সরকারের হাতিয়ার এখন পুলিশ। টিকে থাকার জন্য শেষ কামড় দিচ্ছে….” দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি বরং, এটি ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার ভিডিও।


এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে “মসজিদ মাদ্রাসা খেদমত সেন্টার/আর্জেন্ট খেদমত দিচ্ছি নিচ্ছি” নামক ফেসবুক গ্রুপে  “ফখরুদ্দীন আল রাযী স্বাধীন” নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি প্রথম আলোর অফিসের সামনে সমাবেশে পুলিশের হামলার ভিডিও। 

উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর “প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যায় প্রথম আলো পত্রিকা অফিসের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। ওইদিন দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে জোড়া গরু জবেহ কর্মসূচি শুরু করে বিক্ষোভকারীরা।

সুতরাং, ২০২৪ সালে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গত ২১ আগস্ট ঢাকা কলেজ – সিটি কলেজ সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা কলেজের কোনো শিক্ষার্থী মারা যাননি

গত ২১ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  

এরই প্রেক্ষিতে, গত ২২ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ঢাকা কলেজে একজন ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে আজ সকালে. সেনাপ্রধান কই, মব ধামে নাই.’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা কলেজ – সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা কলেজের কোনো ছাত্র মারা যাননি। প্রকৃতপক্ষে, প্রচারিত ভিডিওটি গত ২২ জুলাই অর্থাৎ অন্তত ১ মাস আগে থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। উক্ত পুরোনো ভিডিও দিয়ে আলোচিত দাবি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ঢাকা ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের গত ২১ আগস্ট সংঘর্ষে বা সংঘর্ষের পরবর্তী সময়ে সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে কেউ মারা গেছে কিনা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্র আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে,  ভিডিওটিতে থাকা বাংলাদেশের অনলাইন সংবাদ মাধ্যম। ‘Financial Post’ লেখার সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ২২ জুলাই ‘সচিবালয়ের ভেতর থেকে আহত শিক্ষার্থীকে নিয়ে হসপিটালের পথে সহপাঠীরা…’ শিরোনামে ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, ভিডিওটি গত ২১ আগস্ট ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার প্রায় ১ মাস আগের।

গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, গত ২১ জুলাই ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর গভীর রাতে হঠাৎ করে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত কেন আগে নেওয়া হলো না এবং কেন রাত ৩টায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো -এই ক্ষোভে পরদিন অর্থাৎ ২২ জুলাই ঢাকা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়লে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বের করতে লাঠিচার্জ করে।

সুতরাং, পুরোনো ভিন্ন ঘটনার ভিডিও দিয়ে সম্প্রতি ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা কলেজের একজন ছাত্র মারা গেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

২৯ আগস্ট জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জিওপি নেতাকর্মীদের অগ্নিসংযোগ দাবিতে ২০২৪ সালের ভিডিও প্রচার

রাজধানীর কাকরাইলে গতকাল (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদের অভিযোগ, জাপা কর্মীরা তাদের মিছিলে হামলা করেছে। অন্যদিকে জাপার দাবি, গণ অধিকার পরিষদের কর্মীরা তাদের ওপর চড়াও হয়েছে। সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল (২৯ আগস্ট) রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “রাজধানীতে জাতীয় পাঠির কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে ভিপি নৃরের নেতাকর্মীরা।”

অর্থাৎ, দাবি করা হচ্ছে প্রচারিত ভিডিওটি গত ২৯ আগস্ট ঢাকায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভিপি নুরের দল গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আগুন দেওয়ার দৃশ্যের।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গতকাল ২৯ আগস্টের (শুক্রবার) নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ভিডিও।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Comrade Mahmud- কমরেড মাহমুদ’ নামের ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর ‘আজ ছাত্র জনতার উপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে আগুন…’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়।

একই তারিখে একই দাবিতে ভিডিওটি ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রচার হতে দেখা যায়। দেখুন – এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

উক্ত পোস্টগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর ওয়েবসাইট (,,) ও ইউটিউব চ্যানেলে (,,) সেই সময় প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে গত বছরের ১ নভেম্বরে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’র ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর তাঁদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ওই কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। তবে, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন দুই পক্ষই। জাতীয় পার্টি দাবি করেছে, তাদের ওপর আগে হামলা হয়েছে। অন্যদিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে যাওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তাঁদের ওপর আগে হামলা করেন জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা।

এছাড়া এ বিষয়ে ডেইলি স্টার -এর বাংলা ওয়েবসাইটে গত বছরের ৩১ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডিউটি ​​অফিসার রাশেদ বিন খালেদ ডেইলি স্টারকে জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে (২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর) তারা কল পান এবং ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নেভাতে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘জাতীয় বেঈমান জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার জাতীয় বেঈমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’

পাশাপাশি, এ বিষয়ে গত বছরের ৩১ অক্টোবরে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন -এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একইরকম তথ্য জানা যায়। 

উল্লিখিত তথ্যপ্রমাণ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি গতকাল (২৯ আগস্ট) এর নয়।

উল্লেখ্য, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ‘গত ২ আগস্ট জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এনসিপির অগ্নিসংযোগের ভিডিও’ দাবিতে প্রচার করা হলে সেসময় এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ভিডিওকে গতকাল ২৯ আগস্ট জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভিপি নুরের গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা অগ্নিসংযোগ করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

স্কুল শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির এই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সরু গলিপথ দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তি এক স্কুল শিক্ষার্থীর গায়ে হাত দিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন। এই ভিডিওটি বাংলাদেশের ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে।

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।

এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওই ফেসবুকে দেখা হয়েছে সাড়ে চার লক্ষেরও অধিক বার। 

এ ঘটনাটি বাংলাদেশের দাবি করে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার ওয়েবসাইটে পত্রিকাটির ডেপুটি নিউজ এডিটর আনিসুর বুলবুলের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। দেখুন এখানে। 

একই দাবিতে এক্সের পোস্ট দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, এটি পাকিস্তানের মুলতানের সাম্প্রতিক ঘটনা। দেশটির পুলিশ ইতোমধ্যেই এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারের ফেসবুক পেজে গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশনে থেকে জানা যায়, দেশটির মুলতানে পুলিশ দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে হেনস্থা করার ঘটনায় জড়িত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ পাওয়ার পর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে, যেখানে দেখা যায় যে, ভুক্তভোগী – একজন ম্যাট্রিকুলেশনের ছাত্রী – রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একজন মোটরসাইকেল আরোহী এগিয়ে এসে তাকে হয়রানি করে। ভাইরাল ভিডিওটির পর পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে অভিযুক্ত এখন হেফাজতে রয়েছে এবং আরও তদন্ত চলছে। 

পাকিস্তানের মূল ধারার গণমাধ্যম ডন এর ওয়েবসাইটে একই দিনে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ থেকে আরো জানা যায়, গত ২৩ আগস্ট এই ঘটনায় যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার নাম ওয়াকাস। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। 

সুতরাং, এক স্কুল শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির এই ভিডিওটি বাংলাদেশের বলে দাবি করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র