Home Blog Page 11

ঢাবি শিক্ষক মোনামীর ছবি দাবিতে ভারতীয় মডেলের ছবি প্রচার

0

ডাকসু নির্বাচন চলাকালীন আলোচনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া (মোনামী)। সেসময় তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে জড়িয়ে বিভিন্ন অপপ্রচারও চালানো হয়। সম্প্রতি, তার ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুটি ছবি প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ছবি পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাবি শিক্ষিকা শেহরীন আমিন ভূঁইয়া (মোনামী)-এর ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো তার নয়। প্রকৃতপক্ষে, সাইমা ভার্মা নামের ভারতীয় একজন মডেলের ছবিকে এআই প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে চেহারার কিছুটা পরিবর্তন করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Syma Verma নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি ফটো অ্যালবাম খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটো অ্যালবামটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ফটো অ্যালবামের দুটো ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর মিল রয়েছে। 

Comparison by Rumor Scanner 

উভয় ছবিগুলোতেই একই নারীকে একই স্থানে একই পোশাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তবে ছবিগুলো সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে, প্রাপ্ত ছবিগুলোর সাথে শেহরীন আমিন ভূঁইয়ার ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর নারীর চেহারার সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। যেহেতু প্রাপ্ত ছবিগুলো একই নারীর এবং উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রচারিত অন্যান্য ছবিগুলোর সাথে এই নারীর চেহারার মিল রয়েছে। তাই এটা নিশ্চিত যে, যাচ্ছে, উক্ত ফটো অ্যালবামের আলোচিত ছবিগুলোর এআই প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে চেহারার কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। 

এছাড়াও প্রাপ্ত ফটো অ্যালবাম থেকে জানা যায়, ছবিগুলো ভারতের গুরুগ্রাম এলাকায় তোলা হয়েছে। পাশাপাশি উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, ছবির নারীর নাম সাইমা ভার্মা। তিনি ভারতের নয়া দিল্লির একজন বাসিন্দা এবং পেশায় একজন মডেল।

Screenshot: Instagram

পরবর্তীতে শেহরীন আমিন ভূঁইয়ার ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Deepfake-O-Meter এ ছবিটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, ছবিগুলো এআই দিয়ে সম্পাদনা হওয়ার সম্ভাবনা ৭৭.৫৫ ও ১০০  শতাংশ।

Collage by Rumor Scanner 

সুতরাং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া (মোনামী)-এর ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Syma Verma Instagram Post
  • Deepfake-O-Meter
  • Rumor Scanner’s Analysis

ভারতের সেনাপ্রধানের সাথে জামায়াত নেতা তাহেরের ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদীর সাথে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের ছবি দাবিতে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে। ছবিটি প্রচার করে ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, ‘জামায়াত এর নায়েব এ আমীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের কে দিল্লিতে স্বাগতম জানিয়েছে, ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান! আজকে রাত ৯ টায় দিল্লির একটি ৫ স্টার হোটেলে তাঁদের মধ্যে বেঠক অনুষ্ঠিত হবে।’

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদীর সাথে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের আসল কোনো ছবি নয়। বরং প্রকৃতপক্ষে ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি একটি ভুয়া ছবি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স সার্চে মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে ছবিটি আসল হওয়ার সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে ছবিটি আসল হয়ে থাকলে তা ভারত ও বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।

Screenshot : Claimed Photo

প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে ছবিটির ডানপাশে নিচের কোণায় গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ‘জেমিনি’ এর জলছাপ দেখা যায়। মূলত কোনো কনটেন্ট গুগলের এআই প্রযুক্তি জেমিনির সাহায্যে তৈরি করা হলে তাতে এরূপ জলছাপ দেখা যায়।

Screenshot : Hive Moderation

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এ আলোচিত ছবিটি বিশ্লেষণ করলে এটি এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৭ শতাংশ দেখা যায়। এছাড়াও এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ছবিটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘SIA’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ছবিটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৮৬.৩ শতাংশ।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি মূলত এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

এছাড়াও, সম্প্রতি উপেন্দ্র দ্বিবেদীর সাথে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার দাবির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদীর সাথে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের এআই দিয়ে তৈরি ছবিকে আসল দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসের জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণ নিয়ে মির্জা ফখরুলের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘ড.ইউনুসের জাতিসংঘের ভাষন শুনে মনে হয়েছে, ফালতু টাকা খরচ করে এখানে মিথ্যা কথা বার্তা বলতে এসেছে।’- শীর্ষক মন্তব্যটি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতিসংঘে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণ নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, মির্জা ফখরুলের মন্তব্য নিয়ে চ্যানেল ২৪ কর্তৃক প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ড পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে চ্যানেল ২৪ এর ফেসবুক পেজে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। চ্যানেল ২৪ এর মূল ফটোকার্ডটিতে “ড. ইউনুসের কথা শুনে মনে হয়েছে জিয়াউর রহমানের কথা শুনছি : মির্জা ফখরুল” শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে “ড. ইউনুসের জাতিসংঘের ভাষন শুনে মনে হয়েছে, ফালতু টাকা খরচ করে এখানে মিথ্যা কথা বার্তা বলতে এসেছে।’’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner 

অর্থাৎ, চ্যানেল ২৪ এই ফটোকার্ডটিতে থাকা শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

চ্যানেল ২৪ এর মূল ফটোকার্ডির মন্তব্যের ঘরে থাকা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে ‘এনআরবি কানেক্ট ডে : এমপাওয়ারিং গ্লোবাল বাংলাদেশি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের একটি সেশনে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিজনেস ফোরামের সভায় ড. ইউনুসের বক্তব্য শুনে বারবার আমার মনে হচ্ছিল, আমি যেন এদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কথাই শুনছি। গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নেরই প্রতিধ্বনি আমরা সেদিন ড. ইউনুসের কণ্ঠে শুনেছি।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো দুঃসময়ে বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করতে জানে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান তার প্রমাণ।’

বিএনপি মহাসচিব জানান, তার দল অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর কাজে সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, ‘আমি সবার সামনে পরিষ্কার করে বলতে চাই- বিএনপি সেই কাজই করবে, যাতে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হয়।’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘দেশের তরুণ প্রজন্ম আধুনিকভাবে চিন্তা করে এবং বিএনপি তাদের আধুনিক চিন্তাভাবনা গ্রহণ করার মানসিকতা রাখে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে তরুণ-তরুণীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘‘ড. ইউনুসের জাতিসংঘের ভাষন শুনে মনে হয়েছে, ফালতু টাকা খরচ করে এখানে মিথ্যা কথা বার্তা বলতে এসেছে।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন বলে প্রচারিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান করতে যাওয়ার সময় নেতানিয়াহুকে মারধর ও হেনস্তার দাবি ভুয়া

সম্প্রতি, জাতিসংঘের সাধারণ সভার অধিবেশনে যোগদান করতে যাওয়ার সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজ দেশের জনগণ কর্তৃক মারধর ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই ভিডিওটি নেতানিয়াহুর দাবিতে প্রচার করেছে জাতীয় দৈনিক জনকণ্ঠও। দেখুন– এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসরায়েলের জনগণ কর্তৃক নেতানিয়াহুকে মারধর ও হেনস্তা করার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে থাকা ব্যক্তি নেতানিয়াহু নন। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিটি হলেন ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা এমকে এলি দালাল। এলি দালাল গত ২০ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলের কফার সাবা নামক স্থানে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন। সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা যখন তাঁর যাওয়ার জন্য পথ তৈরির চেষ্টা করছিলেন, তখন তিনি মেঝেতে পড়ে যান। সেই ঘটনার দৃশ্য এটি।

অনুসন্ধানে ‘Bar Peleg’ নামক একটি এক্স (সাবেক টুইটার) থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওতে দাবি করা হয়, ভিডিওটি এমকে দালালের পড়ে যাওয়ার দৃশ্যের। 

একই অ্যাকাউন্ট থেকে ভিন্ন দিক থেকে প্রচারিত আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, উক্ত ব্যক্তি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নন। 

একই ভিডিও একই তারিখ পোস্ট করেন ইসরায়েলের সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট অরলি বারলেভও। তিনি বলেন, কফার সাবায় অনুষ্ঠানে যোগদান করতে যাওয়ার সময় লিকুদ পার্টির নেতা এলি দালাল নিজে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ইসরায়েলের গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর লিকুদ পার্টির নেতা ও আইনপ্রণেতা এলি দালাল একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করতে যাওয়ার সময় বিক্ষোভের সামনে পড়েন। তখন অনুষ্ঠানের প্রবেশপথ অবরোধ করে রাখা বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় মাটিতে পড়ে যান দালাল।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি গণমাধ্যমও। দেখুন– এখানে, এখানে এবং এখানে। 
এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করার তথ্যও গণমাধ্যমে এসেছে। 

অর্থাৎ, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি নেতানিয়াহু নন, এমকে এলি দালাল৷ 

সুতরাং, গত ২০ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির নেতা এলি দালালের হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার দৃশ্যকে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান করতে যাওয়ার সময় নিজ দেশের জনগণ কর্তৃক ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মারধর ও হেনস্তার শিকার হওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ব্যর্থতার দায়ে মাহমুদউল্লাহকে জাতীয় দলের নতুন নির্বাচক ঘোষণার দাবিটি ভুয়া

0

এশিয়া কাপ সুপার ফোরের পঞ্চম ম্যাচে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশের ম্যাচে বাংলাদেশ ১১ রানের হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়। এরই প্রেক্ষিতে, ‘এশিয়া কাপে ব্যর্থতার দায়ে লিপুকে হটিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নতুন নির্বাচক ঘোষণা বিসিবির’ শিরোনামে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এশিয়া কাপ ২০২৫ এ ব্যর্থতার দায়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলের আহ্বায়ক আশরাফ হোসেন লিপুকে সরিয়ে সাবেক ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নতুন নির্বাচক ঘোষণা করেনি। প্রকৃতপক্ষে, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সর্বাধিক ভাইরাল ফটোকার্ডটির কমেন্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে sportstimessy.blogspot.com নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। সাইটে গত ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ‘এশিয়া কাপে ব্যর্থতার দায়ে লিপুকে হটিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নতুন নির্বাচক ঘোষণা বিসিবির’ শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, এশিয়া কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে দলের পরাজয়ের পর থেকেই নির্বাচক কমিটিকে নিয়ে সমালোচনা চলছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন দল নির্বাচন ও একাদশ গঠনের বিষয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ক্রিকেট মহলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে— লিপু তার পদ ছাড়ছেন, এবং তার জায়গায় আসতে পারেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। যদিও বিষয়টি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি, বিসিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে যে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নীতিগতভাবে রিয়াদের নাম বিবেচনা করছেন।

এছাড়া, একই ফটোকার্ড ব্যবহার করে আরও একটি ব্লগস্পটে একই তথ্যসংবলিত সংবাদ প্রচার করা হয়। 

উক্ত সংবাদ দুটি পর্যালোচনা করে এতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক ঘোষণার দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, বাংলাদেশের জাতীয় দলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ও বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইটে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নতুন নির্বাচক ঘোষণার ঘটনা ঘটলে উক্ত বিষয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি।

সুতরাং, বিসিবি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে জাতীয় দলের নতুন নির্বাচক ঘোষণা করেছে দাবিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

  • Bangladesh Cricket Board – Website 
  • Bangladesh Cricket : The Tigers – Facebook Page 
  • Rumor Scanner’s analysis  

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক অধিবেশনে নেতানিয়াহুর বক্তব্যের ছবিকে ২০২৩ সালের দাবিতে প্রচার

0

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ভাষণ দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ড. ইউনূস ও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় অনেক দেশের প্রতিনিধি হল পরিত্যাগ করলেও হলে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার সফরসঙ্গী বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। তখন উক্ত দাবিটি খণ্ডনের প্রেক্ষিতে একটি ছবি প্রচার করা হয় যেখানে বাংলাদেশের আসন খালি দেখা যায় এবং ছবিটি প্রচার করে বলা হয়, নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন না। পরবর্তীতে সম্প্রতি এরই প্রেক্ষিতে আসন খালি থাকার উক্ত ছবিটি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ছবিটি ২০২৩ সালের জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ছবি যা সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের সময়ের ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে ছবিটি ২০২৫ সালেরই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময়কালের।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স সার্চে ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট কোম্পানি ‘Getty Images’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৬ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি ছবি পাওয়া যায়। ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

ছবিটির বর্ণনায় বলা হয়, ‘ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে নিউইয়র্ক সিটিতে জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে (UNGA) বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন। বিশ্ব নেতারা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে একত্রিত হয়েছেন। এ বছরের বার্ষিক বৈশ্বিক বৈঠকের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একসাথে আরও ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের জন্য ৮০ বছর ও তার পরেও।’ (ছবি: মাইকেল এম. সান্তিয়াগো/গেটি ইমেজেস)’ (অনূদিত)

এছাড়াও, অনুসন্ধানে জাতিসংঘের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৬ সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের এ বছরের ৮০তম অধিবেশনে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পুরো ভাষণের ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির ৭ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময়ে প্রদর্শিত দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

পরবর্তীতে ২০২৩ সালে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত সাধারণ অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতিসংঘের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বরে সেবছর জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে নেতানিয়াহুকে নীল টাই পরতে দেখা যায়। অপরদিকে এ বছর নেতানিয়াহু লাল টাই পরেছিলেন যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিরও মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

উপরোল্লিখিত তথ্যপ্রমাণ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ২০২৩ সালের নেতানিয়াহুর ভাষণের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি প্রকৃতপক্ষে ২০২৫ সালেরই।

এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে আরো দাবি করা হয় এ বছর বাংলাদেশের পাশে ব্রুনেই থাকলেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিতে বাংলাদেশের আশেপাশে ব্রুনেই নেই। কিন্তু জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণের ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের আসনের পিছনেই ব্রুনেই এর আসন রয়েছে। 

উল্লেখ্য যে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত নানা পোস্টে ড. ইউনূস ও তার সফরসঙ্গীর বসে থাকার একটি ছবি ২০২৫ সালের জাতিসংঘের অধিবেশনের আসল ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। অনুসন্ধানে এই ছবিটি প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে গত ২৬ সেপ্টেম্বরে পোস্ট হতে দেখা যায়। পোস্টটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ছবিটি ২৬ সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের আগের ছবি যেখানে ড. ইউনূস তার নিজের বক্তব্য প্রদানের অপেক্ষায় রয়েছেন।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের হলে উপস্থিত থাকার দাবির বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, ২০২৫ সালে জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে নেতানিয়াহুর ভাষণের ছবিকে ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নেতানিয়াহুর ভাষণের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হিন্দু হওয়ার কারণে নয়, চোটের কারণে খেলতে পারেননি লিটন দাস 

0

সম্প্রতি,‘Just Because He’s Hindu, He’s Dropped From The Squad And Jaker Ali Replaces Him As Captain Against India’ অর্থাৎ, ‘সে শুধু হিন্দু বলে তাকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আর ভারতের বিপক্ষে জাকের আলী আবার অধিনায়ক হয়েছেন।’ শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় লিটন কুমার দাসকে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর দুইদিন আগে অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর অনুশীলনের সময় পাঁজরে চোট পান লিটন দাস। সেই চোটের কারণে একাদশে জায়গা পাননি লিটন কুমার দাস। 

অনুসন্ধানে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে “ভারতের ম্যাচের আগে অনুশীলনে চোট লিটনের”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ব্যাটিং অনুশীলনের সময় পাঁজরে চোট পান লিটন দাস। 

এছাড়া, ২৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও এই চোটের কারণে খেলতে পারেননি লিটন দাস। আর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে এবং ২৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচগুলোতে অধিনায়কত্ব করেন জাকের আলী অনিক। 

এই চোটের কারণে গত ০২ অক্টোবর থেকে অনুষ্ঠিতব্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও অংশগ্রহণ করতে পারছেন না লিটন কুমার দাস। অন্তত তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান জাতীয় দলের কর্মকর্তা৷ 

অর্থাৎ, চোটের কারণে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের শেঅ দুই ম্যাচ এবং চলমান আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না লিটন কুমার দাস। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় লিটন দাসকে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার দৃশ্য দাবিতে গণমাধ্যমে এআই ছবি প্রচার

গাজায় চলমান ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। পরবর্তীতে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি দ্বীপ ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে আরও কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সুমুদ ফ্লোটিলা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উক্ত নৌবহরের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি প্রচার করা হয়।  

গণমাধ্যমে প্রচারিত এমন প্রতিবেদন দেখুন ইত্তেফাক, ডেইলি সান, দ্য ডেইলি স্টার, কালবেলা, যুগান্তর, বাংলাদেশ প্রতিদিন, খোলা কাগজ, আমার দেশ, মানবকণ্ঠ, সময়ের কণ্ঠস্বর, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, মানবজমিন, ঢাকা মেইল, জনকণ্ঠ, বিডি২৪রিপোর্ট, ডিবিসি নিউজ, একাত্তর টিভি, দেশ টিভি, চ্যানেল২৪, যমুনা টিভি, একুশে টিভি, এখন টিভি, এসএ টিভি, এটিএন নিউজ, এটিএন বাংলা, চ্যানেল ওয়ান, ঢাকা জার্নাল, দৈনিক সংগ্রাম, সংবাদ প্রকাশ, একুশে সংবাদ, দৈনিক আজাদী, শেয়ার নিউজ২৪, নিউজ৭১, দৈনিক সারাদেশ, ডেল্টা টাইমস এবং বিডি টুডে। 

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে। 

গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সুমুদ ফ্লোটিলার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, আলোচিত ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে যা কোনোরূপ সতর্ক বার্তা ব্যতিত গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে cybertechweb ইউজারনেমের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৩ সেপ্টেম্বর সুমুদ ফ্লোটিলা সংক্রান্ত করা একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। 

Screenshot: Instagram 

পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশীয় গণমাধ্যমগুলোতে সুমুদ ফ্লোটিলার ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাথে উক্ত পোস্টে ব্যবহৃত সুমুদ ফ্লোটিলার ছবির মিল রয়েছে। তবে ছবিটি সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করলে, এর নিচের ডান কোণে গুগলের জেমিনি এআইয়ের জলছাপও লক্ষ্য করা যায়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৬ আগস্ট গুগল ডিপমাইন্ড ‘ন্যানো বানানা’ নামে একটি উন্নত ইমেজ এডিটিং মডেল উন্মোচন করেছে, যা বর্তমানে গুগলের এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট জেমিনির মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। এই মডেল ব্যবহারকারীদের উন্নত ও সৃজনশীলভাবে ছবি সম্পাদনার সুযোগ প্রদান করে।

পরবর্তীতে আলোচিত এই ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Deepfake-O-Meter এ ছবিটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৭৫ শতাংশ।

Screenshot: Deepfake-O-Meter 

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, আলোচিত ছবিটি গুগলের এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট জেমিনি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

এখানে উল্লেখ্য যে, দেশীয় গণমাধ্যমগুলো উক্ত ছবিটি কোনোরূপ এআই সতর্কতা ব্যতীত ছবির সূত্র ব্যবহার ব্যতিত তাদের প্রতিবেদনে ফিচার ইমেজ এবং ইউটিউব-ফেসবুকের থাম্বনেইল হিসেবে ব্যবহার করেছে। তাই উক্ত প্রতিবেদনগুলোকেও এই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে ক্লেইম হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

সুতরাং, সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের ছবি দাবিতে গণমাধ্যমে এআই দিয়ে তৈরি একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Cybertechweb Instagram Post
  • Deepfake-O-Meter
  • Rumor Scanner’s Analysis

ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ছাঁটাই নিয়ে আমার দেশের নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, ‘ইসলামী ব্যাংকের ৫২০০ কর্মকর্তা কে বহিষ্কার করে জামায়াত ইসলামের কর্মীদের নিউগ’ শিরোনামে আমার দেশ এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘ইসলামী ব্যাংকের ৫২০০ কর্মকর্তা কে বহিষ্কার করে জামায়াত ইসলামের কর্মীদের নিউগ’ শিরোনামে আমার দেশ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে গণমাধ্যমটির ডিজাইন নকল করে ফটোকার্ডটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে আমার দেশের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে আমার দেশের ফেসবুক পেজে সেসময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “ইসলামী ব্যাংকে এস আলমপন্থি ২০০ কর্মকর্তা বরখাস্ত, ওএসডি ৫ হাজার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। আমার দেশের মূল ফটোকার্ডটিতে “ইসলামী ব্যাংকে এস আলমপন্থি ২০০ কর্মকর্তা বরখাস্ত, ওএসডি ৫ হাজার” শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে “ইসলামী ব্যাংকের ৫২০০ কর্মকর্তা কে বহিষ্কার করে জামায়াত ইসলামের কর্মীদের নিউগ’’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner

অর্থাৎ, আমার দেশের এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত আমার দেশের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল উদ্দিন জসিম এর বরাতে বলা হয়, যেসব কর্মকর্তা মূল্যায়ন পরীক্ষায় আসেননি, তাদের ওএসডি করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে প্রায় ২০০ জনকে টার্মিনেশন করা হয়। টার্মিনেশনের ক্ষেত্রে কোনো কারণ দরকার হয় না। কোম্পানি আগামী তিন মাসের বেতন দিয়ে টার্মিনেশন করতে পারে। তবুও ইসলামী ব্যাংক মানবিক দিক চিন্তা করেছে। এস আলমের আমলের ১১ হাজার নিয়োগের প্রায় ১০ হাজার এখনো ব্যাংকে রয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নিয়োগপ্রক্রিয়া ছিল অস্বচ্ছ। নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বিজ্ঞপ্তি হয়নি। যাদের ওএসডি করা হয়েছে, তাদের বিষয়েও দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ‘ইসলামী ব্যাংকের ৫২০০ কর্মকর্তা কে বহিষ্কার করে জামায়াত ইসলামের কর্মীদের নিউগ’ শিরোনামে আমার দেশ এর নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

নৌবহর নিয়ে গাজার নিকটে ৪৪ দেশের প্রতিনিধিরা দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা হিসেবে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামের একটি নৌবহর গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে। নৌযানগুলো ক্রমশই গাজার দিকে এগিয়ে চলেছে। এরই প্রেক্ষিতে নৌবহর নিয়ে গাজার নিকটে ৪৪ দেশের প্রতিনিধিরা দাবিতে সমুদ্রে নৌবহরের যাত্রার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবির গণমাধ্যমের সংবাদ দেখুন গ্লোবাল টিভি (ফেসবুক), বাংলাদেশ গার্ডিয়ান (ফেসবুক)।

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে 

একই দাবির ইউটিউব ভিডিও দেখুন এখানে। 

টিকটকে ভিডিও দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত নৌবহরের ফুটেজটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং গত মে মাসে গ্যালাতাসারে সকার ক্লাব তার্কিশ সুপার লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সমর্থকদের উদযাপনের দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে টিকটকে batu kaya 21 নামের অ্যাকাউন্টে গত ২৬ মে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। অথচ, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার যাত্রা শুরুই হয়েছে এর তিন মাস পরে। তাই ভিডিওটি কোনোভাবেই গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার হওয়া সম্ভব নয়। টিকটকের ভিডিওটির ক্যাপশনে keşfet, İstanbul, şampiyon Galatasaray এ জাতীয় শব্দদ্বয়ের হ্যাশট্যাগের ব্যবহার দেখা গেছে। এখানে şampiyon Galatasaray বলতে গ্যালাতাসারে নামের কোনো দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়া বোঝাচ্ছে।

Comparison: Rumor Scanner 

গ্যালাতাসারে একটি সকার ক্লাব। ক্লাবটি গত ১৮ মে তার্কিশ সুপার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়। ক্লাবটির এক্স অ্যাকাউন্টে ২৫ মে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বোট নিয়ে সমুদ্রে উদযাপন করছে সমর্থকরা। 

বিবিসি বলছে, আলোচিত ভিডিওটি এই উদযাপনেরই দৃশ্য।

সুতরাং, নৌবহর নিয়ে গাজার নিকটে ৪৪ দেশের প্রতিনিধিরা দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র