Home Blog Page 12

চট্টগ্রামে বাসে ছিনতাইয়ের ভিডিওকে সন্ত্রাসী হামলায় একজন নিহত দাবিতে প্রচার

অতি সম্প্রতি, “এইমাত্র চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে ছু/রি দিয়ে কু/পি/য়ে একজনকে হত্যা করল দু/র্বৃ/ত্ত স/ন্ত্রা/সী/রা… দেশে কোন নিরাপত্তা নেই/অভিভাবকহীন রাষ্ট্র…. দেখে যাও বিশ্ব আমরা কত অগ্রগতি করছি।” শীর্ষক ক্যাপশন এবং ক্যাপশনে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরকে ট্যাগে রেখে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে একজনকে হত্যার দাবিটি সঠিক নয় বরং ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এই ঘটনায় কেউ মারা যায়নি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম এখন টিভির ফেসবুক পেজে ২৮ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের সময়ের দৃশ্য এটি। এই ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। 

জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, চলন্ত বাসে মুঠোফোন ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়েন যাত্রী বেশে ওঠা এক ছিনতাইকারী। এরপর নেমে যেতে চেষ্টা করেন তিনি, ছুরিকাঘাত করেন চালকের সহকারীকে। তবে তাকেসহ চালক বাস চালিয়ে নিয়ে যান নিকটবর্তী থানায়। সেখানে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

চট্টগ্রাম নগরের কাস্টমস মোড় এলাকায় গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার ছিনতাইকারীর নাম আকবর হোসেন (২৪)। এ ঘটনায় আকবরের তিন সহযোগী বাসের জানালা দিয়ে পালিয়ে যান। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদনসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই ঘটনায় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।  

সুতরাং, চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনার ভিডিওকে সন্ত্রাসী হামলায় একজন নিহত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মেট্রোরেলের রাডার ভেঙে পড়ার দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

গত ২৬ অক্টোবর ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়লে এর আঘাতে মারা যান আবুল কালাম নামের শরীয়তপুরের এক ব্যক্তি। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি ‘মেট্রো রেলের রাডার ভেঙে পড়ার দৃশ্য’। এছাড়াও, এসব পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘ফার্মগেট এ মেট্রোরেলের রাডার ভেঙে পড়ে একজন নিহত হয়।’

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।


একই দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মেট্রোরেলের রাডার ভেঙে পড়ার কোনো আসল দৃশ্য নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)  দিয়ে তৈরি এই ভুয়া ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘JD+’ নামক এক ফেসবুক পেজে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সম্ভাব্য মূল ভিডিওটি গত ২৫ অক্টোবরে প্রচার হতে দেখা যায়। পেজটি পর্যবেক্ষণ করলে পেজের বায়োতে লেখা দেখতে পাওয়া যায়, ‘এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও, তাই বুঝেশুনে বিশ্বাস করো’। এছাড়াও, সম্ভাব্য মূল ভিডিওটির ক্যাপশনেও এআই টুল ‘Sora’ এর হ্যাশট্যাগ পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

পাশাপাশি, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে রেলের চলাচল, ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা, ক্যামেরা অ্যঙ্গেলসহ পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়। এছাড়াও, অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি আসল হওয়ার সপক্ষে মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে এভাবে মেট্রোরেলের অবকাঠামোর কোনো অংশ ভেঙ্গে পড়লে তা মূলধারার গণমাধ্যমে ব্যপকভাবে প্রচার করা হতো।

Screenshot : DeepFake-O-Meter

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘AVSRDD’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ভিডিওটি ভুয়া বা এআই তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ। এছাড়াও, এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা সিংহভাগ বলে জানা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে মেট্রোরেলের রাডার ভেঙে পড়ার আসল দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইরাকের অনাথ মেয়ে মায়ের ছবি এঁকেছে দাবিতে আর্ট ওয়ার্কের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ইরাকের এক অনাথ মেয়ে মাকে এতটাই মিস করছিল যে, কাছে পাওয়ার নিজের মতো এক পথ খুঁজে নিল। হাতে ছিল শুধু একটা খড়ি—তাতেই মাটিতে আঁকল মায়ের ছবি। তারপর আস্তে করে ছবির ভেতরে শুয়ে পড়ল, যেন মায়ের কোলে আছে, আর তাতেই ঘুমিয়ে গেল।

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

একই দাবির ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখুন এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ছবিটি আসল নয় বরং ২০১২ সালে আঁকা একটি আর্টওয়ার্কের ছবির সাথে কাল্পনিক গল্প জুড়ে দিয়ে ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাহারেহ বিশেহ নামের একজন ইরানি শিল্পীর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ছবিটির সন্ধান পাওয়া যায়। ছবিটি অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল ছবি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। একই ছবি তিনি তার ফ্লিকার অ্যাকাউন্টেও ২০১২ সালের ১৫ জুলাই পোস্ট করেন।

Screenshot: Flicker 

ফ্লিকারের পোস্টটির কমেন্ট সেকশনে তিনি জানান যে মেয়েটি তার চাচাতো বোন এবং এর পিছনে কোনও মর্মান্তিক গল্প নেই। 

বাহারেহ বিশেহ বলছেন, “এই ছোট্ট মেয়েটি আমার কাজিন এবং সে আসলে আমার বাড়ির ঠিক বাইরের ডামারের উপর ঘুমিয়ে পড়েছিল। সে নিশ্চয়ই কিছুক্ষণ খেলছিল এবং বিশ্রামের জন্য মিথ্যা বলে ঘুমিয়ে পড়েছিল। এই ছবি তোলার জন্য আমি একটি চেয়ারে দাঁড়িয়েছিলাম। এর সাথে কোনো এতিমখানাও জড়িত নয় এবং এর পিছনে কোনও মর্মান্তিক গল্প নেই। আমি এই সুযোগটি সৃজনশীল হওয়ার জন্য নিয়েছি। এটি ফটোগ্রাফির একটি ধরণ।”

অর্থাৎ, ছবিটির সাথে প্রচলিত কাহিনীটির কোনো সম্পর্ক নেই৷ 

সুতরাং, ইরাকের অনাথ মেয়ে তার মায়ের ছবি এঁকেছে দাবিতে আর্ট ওয়ার্কের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হাত-পা-মুখ বাঁধা ছাত্রদল নেতা উদ্ধারের ভিডিওকে নিহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা উদ্ধার দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, “গন্ডা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম দিদারকে বড় কালিয়ান মেইন রাস্তার পাশে বাদল ভূঁইয়া ইটখলায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মৃত পাওয়া গেছে” শিরোনামে ঐ ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাত-পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া এই ব্যক্তি ছাত্রলীগ নেতা নন। প্রকৃতপক্ষে, নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় হাত-পা-মুখ বাঁধা অচেতন অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামে এক ছাত্রদল নেতাকে উদ্ধারের ভিডিওকে নিহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা উদ্ধার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Musarof Hosen Siyam’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২১ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৫১ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই ভিডিওটির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিকে জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামে সম্বোধন করা হয় এবং ঐ ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও গন্ডা ইউনিয়ন  ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি অর্থাৎ জাহাঙ্গীর আলম দিদার চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানানো হয়। 

এছাড়া, ‘রসের মিষ্টি আঠার বাড়ী’ নামক আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই তারিখে আলোচিত ঘটনায় ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে। যেখানে, জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামক ঐ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। 

পাশাপাশি, ‘Musarof Hosen Siyam’ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জাহাঙ্গীর আলম দিদার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে, দিদারকে ঘটনার বর্ণনা দিতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ২১ অক্টোবরে আলোচিত বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে, হাত-পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিকে (জাহাঙ্গীর আলম দিদার) ছাত্রদল নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়া,আলোচিত বিষয়ে দেশিয় মূলধারার গণমাধ্যমের একাধিক (এক, দুই) প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেও জাহাঙ্গীর আলম দিদারের সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি এবং তার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্যের প্রমাণ মেলেনি। 

সুতরাং, নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় হাত-পা-মুখ বাঁধা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামে এক ছাত্রদল নেতাকে ছাত্রলীগ নেতা দাবি করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পুরোনো ভিডিও ছড়িয়ে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের দাবি

সম্প্রতি, শেখ হাসিনার সরাসরি বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ লাখ  ৪১ হাজার বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি ঢাকায় ফেরা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সময়ের বক্তব্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভারতকে দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Republic World’ ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি “Bangladesh PM Sheikh Hasina says, ‘India is our trusted friend’” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘NDTV’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৭ জানুয়ারি (২০২৪) বাংলাদেশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় – এ সময় ভারতের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের উদ্দেশে দেওয়া বার্তায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা খুবই সৌভাগ্যবান… ভারত আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা আমাদের সমর্থন দিয়েছে… ১৯৭৫ সালে যখন আমরা আমাদের পুরো পরিবার হারিয়েছিলাম, তখন তারা আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল। তাই ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা।” (অনূদিত) 

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার সরাসরি বক্তব্যের নয়।

তাছাড়া, ভিডিওতে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে শোনা যায় নি।

সুতরাং, ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভারতকে দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তার ভিডিওকে  সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় ফেরা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনার সরাসরি বক্তব্যের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পাহাড়ি সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে সেনা কর্মকর্তার মন্তব্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে ‘আমরা পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমি এটা স্পষ্ট করে বলছি। কোন সন্ত্রাসী থাকতে পারবে না। কারণ সেখানে সেনাবাহিনী রয়েছে। সেনাবাহিনী যেখানে থাকবে সেখানে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী উৎপন্ন হতে পারবে না।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ভিডিওটিতে তাকে এমন মন্তব্য করতে দেখা যায়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত ভিডিও প্রায় ৪৮ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ৩ হাজারের অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটিতে ২০৯টি মন্তব্য করা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৭০০ বার ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে আলোচিত মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, একটি ভিন্ন ঘটনার সংবাদ সম্মেলনে ধারণ অরা তার ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় ভিডিওতে রূপান্তর করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামানের পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে আলোচিত মন্তব্যটি করার সত্যতা মেলেনি। 

পরবর্তীতে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখে রিউমর স্ক্যানার। পর্যালোচনায় মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামানের কথা বলার ধরনের ক্ষেত্রে কিছুটা অসাঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়। তার কথা বলার মধ্যে কিছুটা কৃত্রিমতা লক্ষ্য করা যায়, যা সাধারণত এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ডিপফেক-ও-মিটারের ‘DSP-FWA (2019)’ মডেলের সহয়তায় ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৭৮ শতাংশ।

Screenshot: Deepfake-O-Meter

ভিডিওটি তৈরিতে ব্যবহৃত সম্ভাব্য ছবি বা ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধানে, গত ১১ অক্টোবর যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের ফিচার ইমেজে ব্যবহৃত মো. হাকিমুজ্জামানের ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে। ফলে প্রতীয়মান হয়, তার এই ছবিটি ব্যবহার করেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি গত ১১ অক্টোবর সেনাসদরের অফিসার্স মেসে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিষয়ে দেওয়া এক ব্রিফিংয়ের সময় ধারণ করা। সেদিনের ব্রিফিংয়ের ভিডিও ও এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তাকে সেদিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয়ে আলোচিত মন্তব্য কিংবা প্রাসঙ্গিক কোনো আলাপ করতেও শোনা যায়নি।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামানের পাহাড়ি সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে  বক্তব্য প্রদানের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনা ও আ. লীগের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে পুতুলের মন্তব্য দাবিতে ডিপফেক ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘মাকে খারাপ বানানোর জন্য আমাদের দলীয় অনেক নেতাকর্মী দায়ী’ শিরোনামে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রচারিত ভিডিওর বক্তব্যটি দেননি। প্রকৃতপক্ষে, ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে BD Doctor’s Talk নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাথে আলোচিত ভিডিওটির উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটিতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পোশাক-অনুষঙ্গ, তার পেছনে থাকা ব্যানার-সদৃশ বস্তু, তার কথা বলার ধরণের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে গণমাধ্যম বায়ান্ন টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ‘পরিবার থেকেই পরিবর্তন আনতে হবে : পুতুল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর ও পারিপার্শ্বিকতার সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক ও এ বিষয়ে সচেতনতা নিয়ে কথা বলেছেন। তার উক্ত বক্তব্যে ‘মাকে খারাপ বানানোর জন্য আমাদের দলীয় অনেক নেতাকর্মী দায়ী। তারা সবসময় মাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। আজকে তাদের জন্য আমাদের এই অবস্থা। পুরো দলটাই আজ শেষ হবার পথে।’ সূচক কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ‘মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে পরিবার থেকেই পরিবর্তন আনতে হবে: সায়মা ওয়াজেদ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল পরিকল্পনা ২০২০-৩০ এর অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পিকার হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বক্তব্য দেন। 

উক্ত প্রতিবেদনে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বক্তব্যে ‘মাকে খারাপ বানানোর জন্য আমাদের দলীয় অনেক নেতাকর্মী দায়ী। তারা সবসময় মাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। আজকে তাদের জন্য আমাদের এই অবস্থা। পুরো দলটাই আজ শেষ হবার পথে।’ সূচক কোনো মন্তব্য থাকার তথ্য পাওয়া যায়নি।

উক্ত ভিডিওটির বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘DeepFake-O-Meter’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

Screenshot: DeepFake-O-Meter Website

অর্থাৎ, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল পরিকল্পনা অনুষ্ঠানে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বক্তব্যের ভিডিও দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নড়াইলে আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে বগুড়ার পুরোনো মিছিলের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয় সাম্প্রতিক সময়ে নড়াইলে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং মিছিলটিতে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে সাবেক সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজাও স্লোগান দিয়েছেন।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সময়ের কোনো বিক্ষোভ মিছিলের নয় এবং নড়াইলেরও নয়। এছাড়া, মিছিলে মাশরাফি বিন মর্তুজার উপস্থিতির দাবিও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিলের পুরোনো ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ | Bogura Zila Awami League শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওর সাথে উক্ত বিক্ষোভ মিছিলের সামনের সারিতে থাকা ব্যক্তি এবং মিছিলের ব্যানারের ‍হুবহু মিল রয়েছে। উক্ত ভিডিওর ব্যানার এবং শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও। ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, সেদিন ‘বিএনপি সংঘটিত অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে। 

উক্ত ভিডিওটি ছাড়াও রফি নেওয়াজ খান রবিনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে সেদিনের মিছিলের কয়েকটি ছবিসহ প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

এছাড়াও ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া ‘মরিয়ম ফল ভান্ডার’ নামের দোকানটি সূত্র ধরে গুগল ম্যাপের সহায়তায় জিওলোকেশন বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা যায়, প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় ধারণ করা হয়েছিল। 

Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়া, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করেও কোথাও মাশরাফি বিন মর্তুজার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।

সুতরাং, নড়াইলে আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও দাবিতে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের পুরোনো মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

কালের কণ্ঠের নামে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে খালেদ মুহিউদ্দীনের নামে অপপ্রচার 

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দৈনিক কালের কণ্ঠ এর লোগো ব্যবহার করে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে একাধিক ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

একটি ফটোকার্ডের শিরোনামে দাবি করা হয়, জার্মান নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ডয়চে ভেলের চাকরি হারিয়েছিলেন খালেদ মুহিউদ্দীন। আরেকটি ফটোকার্ডে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির কথিত সহকর্মীর বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে খালেদ মুহিউদ্দীন জড়িত।

ফ্যাক্টচেক


রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে কালের কণ্ঠ উল্লিখিত ফটোকার্ডগুলো প্রচার করেনি। এছাড়া, ফটোকার্ডগুলোতে যেসব দাবি প্রচার করা হয়েছে সেগুলোর সপক্ষেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার করে আলোচিত ভুয়া ফটোকার্ডগুলো তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।


প্রথম ফটোকার্ড যাচাই

Screenshot: Facebook

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কালের কণ্ঠের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়। 

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ২৬ অক্টোবর খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে দুইটি (,) ফটেকার্ড প্রচার করা হয়েছে। তবে আলোচিত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতেও খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে প্রচারিত এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২১ মে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন খালেদ মুহিউদ্দীন। চুক্তি শেষ হওয়ায় পর ২০২৪ জুলাইয়ে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিনি। একই বছরের আগস্ট মাসে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র ঠিকানা’র সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি।

দ্বিতীয় ফটোকার্ড যাচাই

Screenshot: Facebook

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কালেরক ণ্ঠের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়। 

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কালেরকণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ২৬ অক্টোবর খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে দুইটি (,) ফটেকার্ড প্রচার করা হয়েছে। তবে আলোচিত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতেও খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে প্রচারিত এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় সেসময় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র‍্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে একযুগেও র‍্যাব তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় এই হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর মামলার আগের তদন্ত সংস্থা র‍্যাবের কাছ থেকে মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। সর্বশেষ গত ১১ আগস্ট আদালতে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থাকলেও পিবিআই এর পক্ষ থেকে তা জমা দেওয়া হয়নি। এনিয়ে এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১২০ বার পেছানো হলো।

সুতরাং, সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে কালেরকণ্ঠের নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ড দুইটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের নয়, প্রকাশ্যে নারীর ওপর হামলার এই ভিডিও ভারতের কর্ণাটকের 

সম্প্রতি ‘২৪ এর স্বাধীন বাংলাদেশে আমার বোনদের নিরাপদ নেই ইউনুস এর শাসন আমল কেমন জনগণ দেখুন।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে জনসমক্ষে একজন পুরুষকে এক নারীর ওপর ধারালো অস্ত্র দ্বারা হামলা করতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ফেসবুকে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ৪২ হাজার বার দেখা হয়েছে, এটিতে প্রায় ১ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি ৫ শত বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকাশ্যে এক নারীর ওপর হামলা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হামলার শিকার হওয়ার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Karnataka portfolio নামক ফেসবুক পেজে গত ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত পোস্টে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর কিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওর ঘটনাটি বিজয়পুরার সিন্দাগি শহরে ঘটেছে, যেখানে যমনাপ্পা মাদার নামক ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি প্রকাশ্য দিবালোকে তার ৫০ বছর বয়সী স্ত্রী অনসূয়া মাদারকে চাপাতি দিয়ে আক্রমণ করেন। পারিবারিক কলহের জেরে এই আক্রমণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ 

উল্লিখিত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ অক্টোবর ‘Man, 60, Attacks Wife With Machete On A Busy Road In Karnataka’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner.

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের কর্ণাটকের বিজয়পুর জেলার সিন্দাগি শহরে ৬০ বছর বয়সী যমনাপ্পা মাদার তার ৫০ বছর বয়সী স্ত্রী অনুসুয়া মাদারের উপর একটি ব্যস্ত রাস্তায় মাচেট (ধারালো হাতিয়ার) দিয়ে হামলা চালান। ভিডিওতে দেখা যায়, শাড়ি পরা অনুসুয়াকে যমনাপ্পা তাড়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার আঘাত করছেন। এক পর্যায়ে অনুসুয়া রাস্তায় পড়ে গেলেও হামলা চালানো বন্ধ হয়নি। পরে অন্য একজন ব্যক্তি যমনাপ্পাকে কাঠের লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। উভয়কে সিন্দাগি তালুক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

এ বিষয়ে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম NEWS9 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ অক্টোবর ‘Vijayapura Man Brutally Assaults Wife With Machete’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি। 

সুতরাং, বাংলাদেশে প্রকাশ্যে এক নারীর ওপর হামলার ভিডিও দাবিতে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর ওপর হামলার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র