হাত-পা-মুখ বাঁধা ছাত্রদল নেতা উদ্ধারের ভিডিওকে নিহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা উদ্ধার দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, “গন্ডা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম দিদারকে বড় কালিয়ান মেইন রাস্তার পাশে বাদল ভূঁইয়া ইটখলায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মৃত পাওয়া গেছে” শিরোনামে ঐ ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য দাবি করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাত-পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া এই ব্যক্তি ছাত্রলীগ নেতা নন। প্রকৃতপক্ষে, নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় হাত-পা-মুখ বাঁধা অচেতন অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামে এক ছাত্রদল নেতাকে উদ্ধারের ভিডিওকে নিহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা উদ্ধার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Musarof Hosen Siyam’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২১ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৫১ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই ভিডিওটির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিকে জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামে সম্বোধন করা হয় এবং ঐ ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও গন্ডা ইউনিয়ন  ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি অর্থাৎ জাহাঙ্গীর আলম দিদার চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানানো হয়। 

এছাড়া, ‘রসের মিষ্টি আঠার বাড়ী’ নামক আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই তারিখে আলোচিত ঘটনায় ভিডিও প্রচার হতে দেখা গেছে। যেখানে, জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামক ঐ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। 

পাশাপাশি, ‘Musarof Hosen Siyam’ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জাহাঙ্গীর আলম দিদার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে, দিদারকে ঘটনার বর্ণনা দিতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ২১ অক্টোবরে আলোচিত বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে, হাত-পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিকে (জাহাঙ্গীর আলম দিদার) ছাত্রদল নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়া,আলোচিত বিষয়ে দেশিয় মূলধারার গণমাধ্যমের একাধিক (এক, দুই) প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেও জাহাঙ্গীর আলম দিদারের সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি এবং তার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো তথ্যের প্রমাণ মেলেনি। 

সুতরাং, নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় হাত-পা-মুখ বাঁধা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া জাহাঙ্গীর আলম দিদার নামে এক ছাত্রদল নেতাকে ছাত্রলীগ নেতা দাবি করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img