কালের কণ্ঠের নামে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে খালেদ মুহিউদ্দীনের নামে অপপ্রচার 

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দৈনিক কালের কণ্ঠ এর লোগো ব্যবহার করে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে একাধিক ফটোকার্ড প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

একটি ফটোকার্ডের শিরোনামে দাবি করা হয়, জার্মান নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ডয়চে ভেলের চাকরি হারিয়েছিলেন খালেদ মুহিউদ্দীন। আরেকটি ফটোকার্ডে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির কথিত সহকর্মীর বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে খালেদ মুহিউদ্দীন জড়িত।

ফ্যাক্টচেক


রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে কালের কণ্ঠ উল্লিখিত ফটোকার্ডগুলো প্রচার করেনি। এছাড়া, ফটোকার্ডগুলোতে যেসব দাবি প্রচার করা হয়েছে সেগুলোর সপক্ষেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার করে আলোচিত ভুয়া ফটোকার্ডগুলো তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ফটোকার্ড দুইটি পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।


প্রথম ফটোকার্ড যাচাই

Screenshot: Facebook

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কালের কণ্ঠের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়। 

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ২৬ অক্টোবর খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে দুইটি (,) ফটেকার্ড প্রচার করা হয়েছে। তবে আলোচিত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতেও খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে প্রচারিত এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২১ মে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন খালেদ মুহিউদ্দীন। চুক্তি শেষ হওয়ায় পর ২০২৪ জুলাইয়ে এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিনি। একই বছরের আগস্ট মাসে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র ঠিকানা’র সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি।

দ্বিতীয় ফটোকার্ড যাচাই

Screenshot: Facebook

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কালেরক ণ্ঠের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়। 

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কালেরকণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ২৬ অক্টোবর খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে দুইটি (,) ফটেকার্ড প্রচার করা হয়েছে। তবে আলোচিত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতেও খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে প্রচারিত এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় সেসময় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র‍্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে একযুগেও র‍্যাব তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় এই হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর মামলার আগের তদন্ত সংস্থা র‍্যাবের কাছ থেকে মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। সর্বশেষ গত ১১ আগস্ট আদালতে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থাকলেও পিবিআই এর পক্ষ থেকে তা জমা দেওয়া হয়নি। এনিয়ে এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১২০ বার পেছানো হলো।

সুতরাং, সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনকে জড়িয়ে কালেরকণ্ঠের নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ড দুইটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img