Home Blog Page 13

বাংলাদেশের নয়, প্রকাশ্যে নারীর ওপর হামলার এই ভিডিও ভারতের কর্ণাটকের 

সম্প্রতি ‘২৪ এর স্বাধীন বাংলাদেশে আমার বোনদের নিরাপদ নেই ইউনুস এর শাসন আমল কেমন জনগণ দেখুন।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে জনসমক্ষে একজন পুরুষকে এক নারীর ওপর ধারালো অস্ত্র দ্বারা হামলা করতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ফেসবুকে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় ৪২ হাজার বার দেখা হয়েছে, এটিতে প্রায় ১ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি ৫ শত বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকাশ্যে এক নারীর ওপর হামলা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হামলার শিকার হওয়ার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Karnataka portfolio নামক ফেসবুক পেজে গত ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত পোস্টে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর কিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওর ঘটনাটি বিজয়পুরার সিন্দাগি শহরে ঘটেছে, যেখানে যমনাপ্পা মাদার নামক ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি প্রকাশ্য দিবালোকে তার ৫০ বছর বয়সী স্ত্রী অনসূয়া মাদারকে চাপাতি দিয়ে আক্রমণ করেন। পারিবারিক কলহের জেরে এই আক্রমণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ 

উল্লিখিত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম NDTV এর ওয়েবসাইটে গত ২৪ অক্টোবর ‘Man, 60, Attacks Wife With Machete On A Busy Road In Karnataka’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner.

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের কর্ণাটকের বিজয়পুর জেলার সিন্দাগি শহরে ৬০ বছর বয়সী যমনাপ্পা মাদার তার ৫০ বছর বয়সী স্ত্রী অনুসুয়া মাদারের উপর একটি ব্যস্ত রাস্তায় মাচেট (ধারালো হাতিয়ার) দিয়ে হামলা চালান। ভিডিওতে দেখা যায়, শাড়ি পরা অনুসুয়াকে যমনাপ্পা তাড়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার আঘাত করছেন। এক পর্যায়ে অনুসুয়া রাস্তায় পড়ে গেলেও হামলা চালানো বন্ধ হয়নি। পরে অন্য একজন ব্যক্তি যমনাপ্পাকে কাঠের লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। উভয়কে সিন্দাগি তালুক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

এ বিষয়ে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম NEWS9 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ অক্টোবর ‘Vijayapura Man Brutally Assaults Wife With Machete’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি। 

সুতরাং, বাংলাদেশে প্রকাশ্যে এক নারীর ওপর হামলার ভিডিও দাবিতে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর ওপর হামলার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অবদান স্বীকার করে শেখ হাসিনার মন্তব্য দাবিতে ভুয়া পেজের পোস্ট ভাইরাল 

0

২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতেই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে গত ১৪ অক্টোবরে “আওয়ামীলীগের রাজনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে ১০০% অবদান অনলাইন যোদ্ধাদের” শিরোনামে শেখ হাসিনার মন্তব্য দাবিতে একটি পোস্ট ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত পোস্টটি দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অবদান স্বীকার করে আলোচিত মন্তব্যটি শেখ হাসিনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, শেখ হাসিনার নামে তৈরিকৃত একটি ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে শেখ হাসিনার মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, শেখ হাসিনার নামে কোনো অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ২০২৪ সালের নভেম্বরে শেখ হাসিনার নামে একটি এক্স অ্যাকাউন্টের বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম আওয়ামী লীগের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ করলে দলটি নিশ্চিত করে যে, শেখ হাসিনার ফেসবুক, এক্স বা অন্য কোনো সামাজিক মাধ্যমে কোনো অফিসিয়াল হ্যান্ডেল নেই। 

যদিও সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনা ফেসবুকে নতুন কোনো অ্যাকাউন্ট বা পেজ খুলে থাকতেন, তবে তা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারের কথা ছিল। এর আগে, ২০২৪ সালের মার্চে মাসে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন একটি নতুন ফেসবুক পেজ খুলে ভিডিও বার্তা প্রকাশ করলে তা আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা হয়েছিল। তবে এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে, আলোচিত ফেসবুক পেজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, পেজটি বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট ‘জয় বাংলা’ নামে এটি খোলা হয়। এরপর একাধিকবার পেজের নাম পরিবর্তন করে সর্বশেষ চলতি বছরের ২৮ এপ্রিলে ‘Sheikh Hasina’ নাম দেয়া হয়। 

Screenshot from Facebook 

তাছাড়া, শেখ হাসিনা সম্প্রতি এমন মন্তব্যের বিষয়ে দেশিয় গণমাধ্যমে কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, শেখ হাসিনা অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের অবদান স্বীকার করে ফেসবুকে বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • Bangladesh Awami League: Facebook 
  • Rumor Scanner’s analysis 

আ.লীগপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও দাবিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পুরোনো কর্মসূচির ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন এবং আদালতে বিচারপতিদের বিতর্কিত ফরমায়েশি রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা বিশাল বিক্ষোভ মিছিল’ করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভ মিছিল করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দুটি ভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচির ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার। পর্যালোচনায় ভিডিওটির শুরুতে যমুনা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদনের সংবাদপাঠিকার ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ কর্মসূচির একাধিক ফুটেজও ভিডিওটিতে দেখানো হয়। তাই অনুসন্ধানে প্রতিটি ভিডিও আলাদাভাবে যাচাই করে দেখে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে দেখতে পাওয়া যমুনা টেলিভিশনের সংবাদপাঠিকার ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সংবাদপাঠিকার ফুটেজ ও আইনজীবীদের বিক্ষোভের বেশকিছু ফুটেজের সাথে প্রাপ্ত ভিডিওর ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। তবে আলোচিত ভিডিওতে দেখা আইনজীবীদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার দৃশ্য ও বিক্ষোভ মিছিলের একটি অংশ ওই প্রতিবেদনে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেদিন সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতারের’ প্রতিবাদে পদযাত্রা করেন। প্রতিবেদনে দেখতে পাওয়া ভিডিও ফুটেজগুলো আইনজীবীদের সেই পদযাত্রা কর্মসূচির।

ভিডিও যাচাই ২

আলোচিত ভিডিওতে দেখতে পাওয়া আইনজীবীদের বিক্ষোভ মিছিলের আরেকটি ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে VOICE OF KALURGHAT নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে দেখতে পাওয়া আইনজীবীদের বিক্ষোভ কর্মসূচির একটি ফুটেজের সাথে হুবহু মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটির শিরোনাম ও বিস্তারিত বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, ভিডিওটি সেবছরের ২ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে ধারণ করা। সেদিন সুপ্রিমকোর্টের বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ততকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার একদফা দাবিতে দেশব্যাপী চলমান সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ করেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি দেশব্যাপী গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দেয়। 

ভিডিও যাচাই ৩

আলোচিত ভিডিওতে সর্বশেষে দেখতে পাওয়া আইনজীবীদের গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক  ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি ভিডিও যাচাই ১-এ উল্লেখিত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের একই কর্মসূচির দৃশ্য।

অর্থাৎ, সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দুটি পৃথক কর্মসূচির ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, সুপ্রিম কোর্টের বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পুরোনো কর্মসূচির ভিডিওকে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের সাম্প্রতিক সময়ে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে জয়ের বক্তব্য দাবিতে ডিপফেক ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত ভিডিওতে জয়কে ‘এখন থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিব আমি ও পুতুল। মা আর রাজনীতিতে থাকবেন না। এই দলটাকে আমি নতুন করে সাজাবো। যেসকল হাইব্রিড নেতার কারণে এই দলের ক্ষতি হয়েছে তাদেরকে আর রাখবো না’ বলতে দেখা যায়। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জয়ের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। 

পরবর্তীতে প্রচারিত ভিডিওটির রিভার্স সার্চ করে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ এর ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ৭ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে সজীব ওয়াজেদ সাধারণ মানুষ, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। ভিডিওটিতে প্রদর্শিত সজীব ওয়াজেদ ও তার পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত সজীব ওয়াজেদের দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। তবে ভিডিওটিতে সজীব ওয়াজেদকে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কথাগুলো বলতে শোনা যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে সজীব ওয়াজেদের বক্তব্য, অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থায় খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০০ শতাংশ।

Screenshot: DeepFake-O-Meter

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ডিপফেক ভিডিওকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে জয়ের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

সুনামগঞ্জে আ.লীগ-পুলিশের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের মিছিলে পুলিশের বাধা; পুলিশের সাথে চলে আঃলীগের ধাওয়া পালটা ধাওয়া’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের কোনো মিছিলে পুলিশের বাধা ও উভয় পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে মানিকগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর ‘মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীর মিছিলে পুলিশের বাধা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের মিছিলে পুলিশের বাধা ও বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের দৃশ্য এটি। 

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে সময় টিভির ওয়েবসাইটে একই দিনে ‘মানিকগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, আটক ৩’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দিকে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রউফ জানান, সেদিন সকালে অবরোধের নামে একটি মিছিল মহাসড়কের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। প্রতিবেদনে যুক্ত ছবিটি উক্ত মিছিলে পুলিশের বাধা দেওয়ার চিত্র। 

এ বিষয়ে মানবজমিনের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০১ নভেম্বর ‘মানিকগঞ্জে বিএনপি-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আটক ৫’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের মিছিলে পুলিশের বাধা ও সংঘর্ষের ভিডিও দাবিতে মানিকগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

তারেক রহমানকে কড়া জবাব দিয়েছেন দাবিতে সায়মা ওয়াজেদের ডিপফেক ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের একটি ভিডিও প্রচারিত হয়েছে। ভিডিওটিতে তাকে বলতে শোনা যায়, “আমাকে নাকি তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পুতুল বানিয়ে শোকেসে রাখতে চান, সে কারণেই তারা আমাকে দেশে আসতে বলছেন।” তিনি আরও বলেন, যখন তিনি দেশে ফিরবেন, তখন দেশের মানুষ তাকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেবে এবং রানি বানিয়ে চেয়ারে বসাবে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুতুলের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। পুতুলের লিংকডইন এবং এক্স অ্যাকাউন্টে এমন ভিডিওর অস্তিত্ব মেলেনি। 

পরবর্তী সময়ে, ভিডিওটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে ‘Mitol Ahmed Sabuj’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২০ অক্টোবর একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘বিদেশের মাটিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুল সমাবেশ করলেন, তিনি কড়া জবাব দিলেন তারেক জিয়াকে। পুতুল কে পুতুল বানিয়ে শোকেসে রাখতে চেয়েছেন তারেক জিয়া। সে কথার জবাব দিলেন পুতুল, নেতাকর্মীকে ভিডিও শেয়ার করে পৌছে দিতে বললেন সবার কাছে, যাতে করে তার বার্তা সবাই শুনতে এবং জানতে পারে। এমন নেত্রীই তো সবাই চেয়েছিলো, অসাধারণ!’

উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় এটি থেকে আরও অসংখ্য এ ধরনের ভিডিও (, , ) প্রচার করা হয়ে হয়েছে। 

এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওতে থাকা পুতুল সদৃশ ব্যক্তির মুখাবয়বের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। 

অনুসন্ধানে, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডিএমপি নিউজে ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পুতুলের একই পোশাকে বক্তব্য প্রদানরত একটি ছবি পাওয়া যায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও (,,) একই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৯ শতাংশ।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ডিপফেক ভিডিওকে পুতুলের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ নিয়ে মোদী সরকারের বৈঠকের দাবিতে চীনের এসসিও সম্মেলনের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “বিশ্বের যতগুলো বড়দেশ আছে সব মিলে মিটিং করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার জন্য” এবং “শেখ হাসিনা কিভাবে নির্বাচন করতে পারবে সেটা নিয়ে মিটিং করেছেন মোদি সরকার” শিরোনামে একটি ভিডিও টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটি দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটিতে দেশিয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘SATV’ এর লোগো দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ‘SATV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ সেপ্টেম্বরে “মোদি, পুতিন ও শির আলোচনায় বার্তা কী? | India-China-Russia Closeness” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

৩ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে জানা যায়, চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাম্প্রতিক সময়ে আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি প্রসঙ্গে আলাপ করছেন। 

পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এর ইউটিউব চ্যানেলে একই তারিখে আলোচিত বিষয়ে আরেকটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রচার হতে দেখা যায়। ৫৯ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই প্রতিবেদনটির বিবরণী থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত এসসিও সম্মেলনের, তবে এই সম্মেলনে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা কিংবা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোনো আলাপের তথ্য বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এ সম্মেলন ঘিরে দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন (এক, দুই) বিশ্লেষণ করেও আলোচিত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যের হদিস পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, চীনের এসসিওসম্মেলনের ভিডিওকে বিশ্বের বড় দেশগুলো শেখ হাসিনাকে ঘিরে বৈঠক করেছে এবং মোদি সরকার শেখ হাসিনার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা করেছে শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

উত্তরায় আ.লীগের সাম্প্রতিক মিছিলের দৃশ্য দাবিতে ২০২৩ সালের ভিডিও প্রচার  

সম্প্রতি, ‘১৫/৯/২০২৫/ তাং:-এবার কাপালো উত্তরা ঢাকা সিটি জয় বাংলা স্লোগানে হাজার হাজার জনতা এবার আমাদেরকে সামলাতে পারবেন তো জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে– গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার উত্তরায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিলের দৃশ্য এটি। 

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিলের নয় বরং ২০২৩ সালে দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে News21 Live নামক একটি ইউটিউব চ্যানেল ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি যুব মহিলা লীগ ও আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের। 

একই ভিডিও তৎকালীন আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের দাবিতে যুব মহিলা লীগের এক নেত্রীকেও পোস্ট করতে দেখা। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

সুতরাং, ২০২৩ সালে বিএনপি জামায়াতের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিলের ভিডিওকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

ভারতীয় যাত্রীবাহী বিমান সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি অনলাইনে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে চারপাশে পানির মধ্যে কথিত এক বিমানের ভেতর হিন্দি ভাষায় এক নারীকে বলতে শোনা যায়, ‘জানি না বিমান কোন সমুদ্রের মধ্যে ক্র্যাশ (দুর্ঘটনার শিকার) করেছে। কেউ যদি এই ভিডিওটি দেখছেন তাহলে প্লিজ সব জায়গায় শেয়ার করে দাও।’ উক্ত ভিডিওটি ভারতীয় যাত্রীদের নিয়ে সমুদ্রে বিমানের তলিয়ে যাওয়ার আসল ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত দাবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ভারতীয় যাত্রীদের নিয়ে সমুদ্রে বিমানের তলিয়ে যাওয়ার আসল ভিডিও নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ভুয়া এই ভিডিওকে আসল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করলে দেশি বা বিদেশি (বিশেষত ভারতীয়) মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত ভিডিওটি আসল হওয়ার সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে এভাবে কোনো বিমান দুর্ঘটনা হলে ও যাত্রীদের ধারণকৃত এরূপ কোনো আসল ভিডিও থাকলে তা দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে ব্যপকভাবে প্রচার করা হতো।

তাছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে পানি ও বিমানের ভেতরের মানুষের নড়াচড়া, বিমানের পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি ভিডিওতে দেখা যায়।

ভিডিওটি আরও পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে ‘Sora’ লেখা একটি জলছাপ রয়েছে। ‘সোরা’ হলো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও চ্যাটজিপিটির মালিকানাধীন কোম্পানি ওপেনএআইয়ের তৈরি ভিডিও এবং অডিও জেনারেশন মডেল। এই মডেলটি বাস্তবসম্মত, শারীরিকভাবে সঠিক এবং শব্দসমন্বিত দৃশ্য তৈরি করতে সক্ষম। ২০২৪ সালের মূল সোরা মডেলের ভিত্তিতে তৈরি উন্নত সংস্করণ ‘সোরা ২’ ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয়।

Collage : Rumor Scanner/Hive Moderation, DeepFake-O-Meter

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘AVSRDD’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ভিডিওটি ভুয়া বা এআই তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ। এছাড়াও, এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৯.৯ শতাংশ বলে জানা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে ভারতীয় যাত্রীদের নিয়ে সমুদ্রে বিমানের তলিয়ে যাওয়ার আসল ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র