Home Blog Page 14

শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসির বৈঠক নয়, ভিডিওটি ইপি প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আইসিসি পরিদর্শনের

0

সম্প্রতি ‘জুলাই আন্দোলন এবং ৫ আগস্টের সন্ত্রাসী হত্যা হামলা সহ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মামলা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি বৈঠকে বসেছেন নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট…..’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বৈঠকের নয় বরং, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) এ আইসিসির প্রেসিডেন্ট বিচারক পিওতর হফমান্সকি এর সাথে সাক্ষাতের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত ভিডিওটির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ICC-এর প্রেসিডেন্ট বিচারক পিওতর হফমান্সকি এবং ICC প্রসিকিউটর করিম এএ খান কেসির সাথে দেখা করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এক্স হ্যান্ডেলে ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও ও এর ক্যাপশন থেকেও একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়৷ 

অন্যদিকে, পূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশেমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের এক নারীর আওয়ামী লীগের হয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রভাবশালী ভূমিকা পালনের ভুয়া দাবি করা হলে এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে।

সুতরাং, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বৈঠকের ভিডিও দাবিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পরিদর্শনের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • European Parliament – Website
  • International Criminal Court – X Post 

প্রচারিত ছবিগুলো ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণের দৃশ্যের নয়

0

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশে কোনো একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মদদে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে বলে সরাসরি মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ন্যাটো…..’ ক্যাপশনে ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণ দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণের নয় বরং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের প্যারিসে ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী রচিদা দাতির সাথে সাক্ষাতের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর পক্ষ ‘বাংলাদেশে কোনো একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মদদে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে’ বলে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদ সংস্থা WAM এর ওয়েবসাইটে গত ১০ মার্চ ‘Abdullah bin Zayed meets with French Minister of Culture and attends signing of memorandum of understanding between the two countries’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাথে প্রচারিত ছবিগুলোর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদন সূত্র জানা যায়, গত ১০ মার্চ ফ্রান্সের প্যারিসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী রচিদা দাতির মধ্যে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করতে বৈঠক হয়। বৈঠকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী রিম বিনতে ইব্রাহিম আল হাশিমি; প্রতিমন্ত্রী নৌরা বিনতে মোহাম্মদ আল কাবি; অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ক মন্ত্রীর সহকারী সাইদ মুবারক আল হাজারি; ফাহাদ সাইদ আল রাকবানি; এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং ভ্যাটিকানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনাবাসী রাষ্ট্রদূত ওমর সাইফ ঘোবাশ উপস্থিত ছিলেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ১০ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রেস রিলিজেও একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিগুলো ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকের নয়। 

এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নন্যাটোর ওয়েবসাইটে ‘বাংলাদেশে কোনো একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার মদদে সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে’ শীর্ষক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

অন্যদিকে, পূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রীম আল হাশেমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের এক নারীর আওয়ামী লীগের হয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রভাবশালী ভূমিকা পালনের ভুয়া দাবি করা হলে এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে প্রকাশ করে।

সুতরাং, ইরানে আয়োজিত রাজনৈতিক ফোরামে বৈঠকে অংশগ্রহণের ছবি দাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের প্যারিসে ফরাসি সংস্কৃতিমন্ত্রী রচিদা দাতির সাথে সাক্ষাতের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Emirates News Agency-WAM – Website
  • United Arab Emirates Ministry of Foreign Affairs – Website 

দিনাজপুরের কথিত মুখ্য সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা উপমার ভিডিও দাবিতে ভিন্ন নারীর এডাল্ট ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুরের মুখ্য সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা উপমার ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুর কিংবা অন্য কোনো এলাকার নারী সমন্বয়কের নয়। এছাড়া ভিডিওর নারীর নাম সাদিয়া সুলতানা উপমা নয়। প্রকৃতপক্ষে, ফারহু জারা নামের আরেক বাংলাদেশি নারীর এডাল্ট ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে zaf_zara00 ইউজারনেমের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৯ মে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে থাকা ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতেই একই নারীকে একই পোশাক ও অঙ্গভঙ্গিতে আয়নার সামনে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও ভিডিওটি ব্যতীত পোস্টটিতে থাকা ছবিগুলোতেও ওই নারীকে একই শাড়িতে দেখতে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওর নারীর নাম ফারহু জারা। এছাড়াও তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি থেকে প্রাপ্ত তার ফেসবুক আইডি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, তিনি একজন বাংলাদেশি।

এছাড়াও অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে জুলাই আন্দোলনের সময় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করতে দেখা যায়। উক্ত শেয়ার পোস্ট ব্যতীত আন্দোলন সংক্রান্ত আর কোনো পোস্ট বা এক্টিভিটি তার প্রোফাইল লক্ষ্য করা যায়নি। পাশাপাশি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এই নারীর সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য প্রমান মেলেনি।

এছাড়া, অনুসন্ধানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাদিয়া সুলতানা উপমা নামের কোনো নারী সমন্বয়ক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুরের কথিত মুখ্য সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা উপমার ভিডিও দাবিতে ভিন্ন আরেক নারীর এডাল্ট ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Farhu Zara Instagram Account Post
  • Farhu Zara Facebook Account
  • Rumor Scanner’s Analysis

মুরাদনগরের ঘটনাকে সরকারের ব্যর্থতা বলে পুলিশ সদস্য মন্তব্য করেছেন দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই প্রেক্ষিতে কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনাকে এক পুলিশ সদস্য সরকারের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুরাদনগরের ঘটনাকে সরকারের ব্যর্থতা বলে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পুলিশ কর্মকর্তার আলোচিত এই ভিডিওর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়াও রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওতে একাধিক এআই-জনিত অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। যেমন পুলিশের ব্যাজ, মাইক্রোফোনে থাকা অজ্ঞাত গণমাধ্যমের লোগো এবং স্ক্রিনের বামপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের অস্বাভাবিক নাড়াচাড়া। 

পাশাপশি ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

Screenshot: Facebook 

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Cantilux এ ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৭৪ শতাংশ।

Screenshot: Cantilux 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে কুমিল্লার মুরাদনগরের ঘটনাকে এক পুলিশ সদস্য সরকারের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Cantilux 
  • Rumor Scanner’s Analysis

ধর্ষণের শিকার মেয়ের জন্য বাবার আর্তনাদের ঘটনা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাজানো

সম্প্রতি “আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে!!” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার মেয়ের জন্য বাবার আর্তনাদের দৃশ্যের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য কোনো ঘটনার নয় বরং, স্ক্রিপ্টেড বা অভিনীত ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২৫ সালের ২০ জুন “মৌসুমীর সাথে কি হলো” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে৷ 

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রচারকারী পেজটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এটি একটি কনটেন্ট ক্রিয়েশন এ্যাকাউন্ট। তারা বিভিন্ন ধরণের বিনোদনমূলক ভিডিও (,,) বানিয়ে থাকেন। আলোচিত ভিডিওটিও নাটকের জন্য ধারণকৃত অভিনয়ের অংশ।

সুতরাং, ধর্ষণের শিকার মেয়ের জন্য বাবার আর্তনাদের বাস্তব ঘটনা দাবিতে একটি স্ক্রিপ্টেড বা সাজানো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটা নৃশংস হত্যার ভিডিও দাবিতে কলম্বিয়ার ২০২৪ সালের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি নৃশংসভাবে এক ব্যক্তিকে কোপানোর ভিডিও “দেশটাকে যেন নরকে পরিণত করেছে ইউনূস সরকার” শীর্ষক ক্যাপশনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে প্রচারিত ভিডিওটি সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটা নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভিডিও।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটা কোনো নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভিডিও নয় বরং, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কলম্বিয়ার কুকুতায় আন্দ্রেস আলবার্তো সোসা পেরদোমো নামক এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘Tu Nota’ নামক হন্ডুরাস ও মধ্য আমেরিকা ভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১২ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে দুইটি ফ্রেমের কোলাজ একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয় যেগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “”বিশ্বাসঘাতক বন্ধু” — এমনই শিরোনামের একটি ভয়াবহ ভিডিও টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে, যা অনলাইন জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ভিডিওতে আন্দ্রেস আলবার্তো সোসা পেরদোমো নামের এক যুবককে কলম্বিয়ার কুকুতা শহরের একটি সেতুর নিচে একদল ব্যক্তি আক্রমণ করছে — সেই মুহূর্তটি স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।… ছবিতে দেখা যায়, আন্দ্রেসকে তিনজন ব্যক্তি ঘিরে ফেলেছে — যাদের একজনের হাতে ছুরি। মনে হচ্ছে, তারা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। আক্রমণকারীদের ব্যবহার ছিল নির্মম এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা অত্যন্ত হিংস্রভাবে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আন্দ্রেস আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও আক্রমণকারীদের সহিংসতায় তিনি দ্রুত পরাজিত হন। এই মর্মান্তিক ঘটনার পরিণতিতে আন্দ্রেস আলবার্তোর দেহে ৫০টিরও বেশি ছুরিকাঘাত করা হয়। তার মাথা, বুক, পেট ও পিঠে গুরুতর আঘাত লাগে, যা তার প্রাণহানির কারণ হয়। এই করুণ ঘটনা ২১ জানুয়ারি, নোরতে দে সান্তান্দার বিভাগের কুকুতা শহরে ঘটে।” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

এছাড়াও, প্রচারিত উক্ত ভিডিওর সংযুক্তিসহ ‘La Opinión Cúcuta’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলেও ২০২৪ সালের ২৩ জানুয়ারিতে “বিশেষ প্রতিবেদন | রাস্তায় বসবাসকারী এক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে হত্যা করার ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটির বর্ণনা অংশে বলা হয়, “কুকুতায় চলমান সহিংসতা এখন আর কোনো নিয়ম বা সীমার মধ্যে নেই। সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে এটি স্পষ্টভাবে দেখা যায়, যেখানে এক যুবককে ইউস্তোরজিও কোলমেনারেস ব্যাপটিস্তা সেতুর নিচে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেতুটি লাতিনো পাড়ায় অবস্থিত, পরিবহন কেন্দ্রের একদম কাছেই। এই ঘটনাটি নাগরিকদের মধ্যে চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে, কারণ এটি কুকুতায় অপরাধ কতটা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

এছাড়াও, ভেনেজুয়েলা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘El Clarin’ এর ওয়েবসাইটেও উক্ত ভিডিও থেকে ধারণকৃত স্ক্রিনশটের সংযুক্তিসহ ২০২৪ সালের ২৬ জানুয়ারিতে প্রচারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এটি কলম্বিয়ার কুকুতার ঘটনা এবং ঘটনাটি ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ও ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ এর মধ্যকার সময়ে ঘটেছে।

সুতরাং, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কলম্বিয়ায় এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করার ভিডিওকে সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটা নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মুরাদনগরের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার ভুক্তভোগীর বক্তব্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

মুরাদনগরের ঘটনার প্রেক্ষিতে এক্সেও ভিডিওটি প্রচার হতে দেখা যায়।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মুরাদনগরের গত ২৬ জুনের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীর বক্তব্যের নয় বরং, অন্তত ২০২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান ভিন্ন আরেকটি ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘@k36077’ নামক এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর প্রচারিত একটি পোস্টে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একটি দীর্ঘতম সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: @k36077 (X)

পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, গত ২৫শে সেপ্টেম্বর রাতে নাটোর জেলার ছোট চৌগ্রামের হালদার পাড়া এলাকায় স্থানীয় মুসলিম ও বিএনপি নেতা রবিউল ইসলাম স্বপ্না হালদার নামে এক হিন্দু গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এছাড়া ভিডিওতে ভুক্তভোগী নারীর মুখেও আসামি হিসেবে ‘রবিউল’ নাম নিতে শোনা যায়।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রচারিত ‘ঘরে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘নাটোরের সিংড়ায় এক গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী যুবক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। বুধবার [২৫ সেপ্টেম্বর] ভোররাতে স্বামী মাছ ধরতে যাওয়ার সুযোগে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক ওই হিন্দু নারীকে ধর্ষণ করা হয় বলে জানা গেছে।’ 

এছাড়ও বেসরকারি টেলিভিশন সংবাদ চ্যানেল নিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, ২০২৪ সালেরর ভিন্ন আরেকটি ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার ভুক্তভোগীর বক্তব্যের ভিডিও দিয়ে কুমিল্লার মুরাদনগরে গত ২৬ জুনের ধর্ষনের অভিযোগের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীর বক্তব্যের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গ্রীন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ভিডিও দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই তরুণ-তরুণীর অন্তরঙ্গ মূহুর্তের একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি “গ্রীন ইউনিভার্সিটির মেধাবী শিক্ষার্থীরা বাসের মধ্যেই রোমাঞ্চকর মুহূর্তে!!”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের বা গ্রীন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নয় বরং, ভারতের নভি মুম্বাইয়ে গত ২০ এপ্রিলে ধারণকৃত ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া নিউজ’ এর ওয়েবসাইটে উক্ত ভিডিওর স্ক্রিনশটের সংযুক্তিসহ গত ২৮ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘটনাটি ভারতের নভি মুম্বাইয়ের।

Comparison : Rumor Scanner

পাশাপাশি, এ বিষয়ে ‘পর্দা ফাঁস’ নামক ভারতভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমেও উক্ত ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে আলোচিত ভিডিওটিরও সংযুক্তি পাওয়া যায়।

এছাড়াও, ভারতের মূলধারার গণমাধ্যম ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ ও ‘নিউজ১৮’ এর ওয়েবসাইটেও এ বিষয়ে সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। জানা যায়, ভিডিওটিতে প্রদর্শিত ঘটনাটি গত ২০ এপ্রিলের। প্রতিবেদনগুলো থেকে আরও জানা যায়, ‘একটি চলন্ত এসি বাসে এক তরুণ যুগল যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হওয়ার ভিডিও প্রচার হওয়ার প্রেক্ষিতে নভি মুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (NMMC) এক বাস কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। হস্তক্ষেপ না করায় কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে তদন্ত চলছে। ঘটনাটি পানভেল থেকে কাল্যানগামী একটি বাসে ঘটেছিল এবং ভিডিওটি এক মোটরচালক ধারণ করেন।” (অনূদিত) তবে কোথাও বাংলাদেশের গ্রীন ইউনিভার্সিটির নাম উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, বাসটির পেছনের দিকে লাইসেন্স নাম্বারে ‘MH 43’ দেখতে পাওয়া যায় যা ভারতীয় একাধিক ওয়েবসাইটের তথ্যমতে মূলত ভারতের মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বাইয়ের আঞ্চলিক পরিবহন অফিসের (RTO) অধীনে রেজিস্ট্রেশন করা পরিবহন বুঝায়।

সুতরাং, বাংলাদেশের গ্রীন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের দৃশ্যের ভিডিও দাবিতে ভারতের নভি মুম্বাইয়ের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাৎসরিক ফান্ড প্রদান উপলক্ষে বিকাশের ২০০০ টাকা নগদ উপহারের ভুয়া প্রচারণা

0

সম্প্রতি ‘শীর্ষ ১০০০ জন ব্যবহারকারীকে দেওয়া হচ্ছে বার্ষিক নগদ পুরস্কার!’ দাবিতে ‘bKash তার সকল ব্যবহারকারীদের ৳২০০০ বার্ষিকী ফান্ড দিচ্ছে।’ শিরোনামে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান ‘bKash’ এর লোগো যুক্ত একটি ওয়েবসাইটের লিংক বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষত মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত লিংক দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাৎসরিক ফান্ড প্রদান উপলক্ষে বিকাশ ৳২০০০ নগদে জেতার সুযোগ দিচ্ছে দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি সত্য নয়। প্রতারকরা নগদ ২০০০ টাকার লোভ দেখিয়ে ব্যবহারকারীদের বিকাশের লোগো সম্বলিত ভুয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করিয়ে ওই ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন প্রতারণামূলক লিংকে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, ক্ষতিকর সফটওয়্যার সংক্রমণ এবং আর্থিক প্রতারণার ঝুঁকি রয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে প্রচার করা লিংকের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর ব্যবহারকারীকে প্রথমেই একটি বার্তা দেখানো হয়, যেখানে জানানো হয় যে ‘GET ৳২০০০’ লিখা বোতামে ক্লিক করে এবং মোবাইল নম্বর লিখে ৳২০০০ বার্ষিক উপহার জেতার সুযোগ পাবেন। ‘GET ৳২০০০’ লিখা বোতামে ক্লিক করার পর মোবাইল নম্বর প্রদান করতে বলা হয়। এসব ধাপ অনুসরণ করার পর ব্যবহারকারীকে জানানো হয় ‘অভিনন্দন, আপনি bKash থেকে ৳2000 জন্মদিন ক্যাশ উপহারের জন্য যোগ্য।’।

এরপর ব্যবহারকারীর সামনে কিছু শর্ত দেওয়া হয়। তাকে জানানো হয়, পুরস্কার পেতে হলে অবশ্যই এই প্রচারণার লিংক মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম মেসেঞ্জারে ৫টি গ্রুপে বা ১৫ জন বন্ধুর কাছে পাঠাতে হবে। এরপর তাকে বলা হয় যে শর্তটি পূরণ হলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েবসাইটটির “PAYMENT FORM” পেজে রিডিরেক্ট হবেন এবং সফলভাবে আবেদন করার পর ব্যবহারকারী তার  bKash ড্যাশবোর্ডে ৳2000 পেয়ে যাবেন।

অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার পুরো ধাপটি সম্পন্ন করার পর আরও একটি বার্তা প্রদর্শিত হয়, যেখানে জানানো হয় যে ব্যবহারকারীর জন্য ৳2000 জন্মদিন ফান্ড অনুমোদিত হয়েছে। এরপর ব্যবহারকারীকে বলা হয়, তার bKash অ্যাকাউন্টে টাকা পেতে একটি যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এতে বলা হয়, যাচাইকরণ সম্পন্ন করতে নিচের যেকোনো একটি বা একাধিক ধাপ অনুসরণ করতে হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাপ ডাউনলোড করা, ফোন নম্বর যোগ করা, নির্দিষ্ট কোনো অ্যাপ ইনস্টল করা, একটি সার্ভে সম্পন্ন করা।

যাচাইকরণের জন্য দেওয়া অপশনে ক্লিক করলে ব্যবহারকারীকে ‘Dangerous site’ শিরোনামে সতর্কবার্তা প্রদান করে। এ ধরনের ফিশিং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হ্যাকাররা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্যান্য ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারে, ফলে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং আর্থিক প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। বিশেষ করে, ফোন নম্বর প্রদান করলে ব্যবহারকারী প্রিমিয়াম এসএমএস চার্জের ফাঁদে পড়তে পারেন, যা অজান্তেই মোবাইল ব্যালান্স কেটে নিতে পারে।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে বিকাশের ফেসবুক পেজ বা ওয়েবসাইটে এ ধরনের কোনো অফারের প্রচারণা খুঁজে পাওয়া যায়নি, এবং গণমাধ্যমেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

সুতরাং, বাৎসরিক ফান্ড প্রদান উপলক্ষে বিকাশ ৳২০০০ নগদে জেতার সুযোগ দিচ্ছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জড়িয়ে পত্রিকাটির নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “গুরুতর অসুস্থ মাহমুদুর রহমান রক্তাক্ত পায়ুপথে লাল গুড়াকৃমির অস্তিত্ব” শিরোনামে জাতীয় দৈনিক আমার দেশ এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানেএখানেএখানেএখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “গুরুতর অসুস্থ মাহমুদুর রহমান রক্তাক্ত পায়ুপথে লাল গুড়াকৃমির অস্তিত্ব” শিরোনামে দৈনিক আমার দেশ এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আমার দেশের প্রচলিত ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিতে আমার দেশ পত্রিকার লোগো রয়েছে এবং ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৯ জুন, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া ফটোকার্ডটির একপাশে (বামে কোণায়) ওয়েবসাইটের ঠিকানার স্থলে dailymollardesh.com লিখা রয়েছে। তবে আমার দেশের মূল ওয়েবসাইটের নাম dailyamardesh.com

উক্ত ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ এবং লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দৈনিক আমাদের দেশের ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড পাওয়া যায়নি। এছাড়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও এ বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়নি।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের সাথে দৈনিক আমার দেশের প্রচলিত ফটোকার্ডের সঙ্গে গ্রাফিক্যাল মিল খুঁজে পাওয়া গেলেও ফটোকার্ড দুটির শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্ট ডিজাইনের অমিল রয়েছে।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্য কোনো গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে নিয়ে গণমাধ্যমটির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Daily Amar Desh: Facebook Page
  • Daily Amar Desh: Website 
  • Daily Amar Desh: YouTube Channel
  • Rumor Scanner’s analysis