Home Blog Page 15

ঢাকায় আ.লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে চকরিয়ার পুরোনো মিছিলের ভিডিও প্রচার

0

গত ৯ সেপ্টেম্বর, “আজকে ঢাকা শহরে বিক্ষোভ মিছিল আওয়ামী লীগের হইতাছে” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।   

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় পঁচানব্বই হাজার বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কোনো বিক্ষোভ মিছিলের নয় বরং ২০২৪ সালে চকরিয়ায় প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে সাবেক এমপি জাফরের নেতৃত্বে স্বাগত মিছিলের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে সাবেক এমপি জাফর আলমের অফিশিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ৬ জুন তারিখে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওর বিবরণীতে বলা হয়, মহান জাতীয় সংসদে সময়োপযোগী, গণমুখী ও জনবান্ধব বাজেট (২০২৪-২৫) পেশ করায় তৎকালীন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে চকরিয়া উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের স্বাগত মিছিলের দৃশ্য এটি।

চকরিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যম চকরিয়া নিউজের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৬ জুন প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ চকরিয়া উপজেলা ও চকরিয়া পৌরসভা শাখার উদ্যোগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া সিস্টেম কমপ্লেক্স থেকে আনন্দ মিছিল করে। তাৎক্ষনিক আনন্দ মিছিল ও শোভাযাত্রা গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন শেষে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম।

অর্থাৎ, সম্প্রতি ঢাকায় আওয়ামী লীগের মিছিলের নয়।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার–১ (চকরিয়া–পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাফর আলম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। 

সুতরাং, ২০২৪ সালে চকরিয়ায় আওয়ামী লীগের মিছিলের দৃশ্যকে সম্প্রতি ঢাকায় মিছিলের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

খাগড়াছড়ির সহিংসতায় আহত পাহাড়ি কিশোরী উহ্লামে মারা যাননি

0

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জুম্ম ছাত্র জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া, ১৩ সেনাসদস্য ও ৩ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এরই প্রেক্ষিতে এক উহ্লামে নামে এক কিশোরীর রক্তমাখা একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়, সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত হয়ে বাবার কোলে চিৎকার করে বাঁচতে চাওয়া উহ্লামে মারমা মারা গেছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।  

থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত উহ্লামে মারা যাওয়ার দাবিটা সঠিক নয়। তিনি বেঁচে আছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে Sushanta Tanchangya নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, ‘খাগড়াছড়ি গুইমারাতে সেনাবাহিনী গুলিতে আহত উহ্লামে মারমা মাটিরাঙ্গা হসপিটালে চিকিৎসা ধীন অবস্থায় আছে!  সকল আদিবাসী পাহাড়ি ভাই বোনদের নিকট  বিনীত অনুরোধ রইলো উহ্লামে মারমা দ্রুত  সুস্থতার জন্য সবাই  মন থেকে আর্শীবাদ করুন সকল আদিবাসী পাহাড়ি দের আর্শীবাদে সুস্ত হয়ে ফিরে আসুক আমাদের আদিবাসী পাহাড়ি ছোট্ট নিষ্পাপ উহ্লামে মারমা! আমি আর্শীবাদ করছি আমার জীবনের সমস্ত পূর্ণ রাশি তাকে দান করে দিয়ে তার সুস্থতা কামনা করছি! আপনাদের সবার আর্শীবাদে আমাদের  আদিবাসী বোন উহ্লামে মারমা সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক সেই কামনা রইলো!’

পরবর্তীতে এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিক উচিংছা রাখাইন কায়েসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

ফেসবুক পোস্টে উহ্লামের পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি জানান, খাগড়াছড়ি গুইমারা বাজারে কাপড় ব্যবসায়ী আপ্রমং রাখাইন মেয়ে, আহত উহ্লামে রাখাইন চিকিৎসার পর সুস্থ আছেন। পোস্ট তিনি তার জন্য প্রার্থনার পাশাপাশি গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনায় নিহত তিনজন হলেন- আথুই মারমা (২১), আথ্রাউ মারমা (২২) ও তৈইচিং মারমা (২০)। 

সুতরাং, খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে আহত কিশোরী উহ্লামের মারা যাওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

Sushanta Tanchangya: Facebook Post

Uchingcha Kayes Rakhain: Facebook Post

Prothom Alo: খাগড়াছড়িতে গুলিতে নিহত তিনজনের পরিচয় শনাক্ত, দুই সড়কে অবরোধ শিথিল

শাকিব খানের মৃত্যুর ভুয়া দাবি টিকটকে

0

চিত্রনায়ক শাকিব খান মারা গেছেন দাবিতে লাশবাহী একটি গাড়ি ঘিরে জনতার ঢলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবির টিকটক ভিডিও দেখুন এখানে

গত ১৩ সেপ্টেম্বর টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখা হয়েছে অন্তত ১৩ লক্ষাধিক বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শাকিব খান মারা গেছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়। বরং, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা কর্নেল (অব:) এম আনোয়ারুল আজিমের লাশবাহী গাড়ির ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে MD Samsur Rahman নামের একটি অ্যাকাউন্টে গত ০১ জুন প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, লাকসাম মনোহরগন্জের নেতা আজিমের মরদেহবাহী গাড়ির ভিডিও এটি।

অনলাইন সংবাদমাধ্যম সকালের খবর এর সে সময়ের এক প্রতিবেদনেও একই দৃশ্যের সন্ধান মেলে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লা -৯ (লাকসাম -মনোহরগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কর্নেল (অব:) এম আনোয়ারুল আজিমের লাশবাহী গাড়ির দৃশ্য এটি। 

৩১ মে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

অর্থাৎ, ভিডিওটির সাথে শাকিব খানের কোনো সম্পর্ক নেই। 

তাছাড়া, শাকিব খানের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে স্বাভাবিকভাবেই সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে খবর প্রচার হতো। তবে এক্ষেত্রে দেশীয় সংবাদমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি। শাকিব খানের ফেসবুক পেজে তাকে নিয়মিত পোস্ট করতে দেখা যাচ্ছে।

সুতরাং, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা কর্নেল (অব:) এম আনোয়ারুল আজিমের লাশবাহী গাড়ির ভিডিওকে শাকিব খান মারা গেছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের নয়, নাচের অনুশীলন থেকে নারীকে অপহরণের ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের

0

সম্প্রতি ‘ধর্ষণের উদ্দ্যেশ্যে নাচের ক্লাস থেকে প্রকাশ্যে এক নারীকে অপহরণ করা হয়েছে’ দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রচারিত পোস্টগুলোতে ‘বিএনপি’র জামাতের ক্যাডাররা নাচের ক্লাস থেকে প্রকাশ্যে নারীকে অপহরণ – ইউনূসের শাসন!!!!’, ‘ধর্ষণের জন্য নাচের ক্লাস থেকে প্রকাশ্যে নারীকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ইউনূসের সন্ত্রাস বাহিনী…’ ইত্যাদি ক্যাপশন ব্যবহারের মাধ্যমে ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেছে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এছাড়া, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে ড. ইউনূসের কথিত সন্ত্রাসী বাহিনী অপহরণটি করেছে বলে দাবি করা হয়। অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা উক্ত কাজটি করেছে বলেও কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নারীকে নাচের ক্লাস থেকে অপহরণের ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি এবং অপহরণটির সাথে বিএনপি কিংবা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো কর্মী জড়িত নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের মধ্যপ্রদেশে পারিবারিক বিরোধের সূত্রে এক নারীকে তার পরিবারের লোকজন অপহরণ করার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম সি নিউজ ভারতের মধ্যপ্রদেশ ছত্তিশগড়ের আঞ্চলিক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির অনুরূপ একটি শর্টস খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভারতের মধ্যপ্রদেশের মান্দসৌরে ‘গারবা’ নৃত্যের অনুশীলন থেকে এক নারীকে অপহরণ করা হয়। এটি সে ঘটনার দৃশ্য। 

উক্ত সূত্র ধরে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম দ্যা নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২২ সেপ্টেম্বর ‘MP family abducts estranged woman at gunpoint from Garba session’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর ভারতের মধ্যপ্রদেশের মান্দসৌরের ভাবসার ধর্মশালায় ‘গারবা’ নৃত্যের অনুশীলন থেকে এক নারীকে অপহরণ করা হয়। ওই নারীর পরিবারের সাতজন সদস্য ধর্মশালায় পৌঁছে তাকে জনসমক্ষে টেনে নিয়ে যায় এবং আশেপাশের লোকজনকে ভয় দেখানোর জন্য একটি পিস্তল ব্যবহার করে।

এই পুরো ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে যা পরবর্তীতে ভাইরাল হয়। ঘটনাটি ঘটার কয়েক ঘন্টার মধ্যে পুলিশ অভিযুক্তদের  গ্রেপ্তার করে এবং ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। সেই সাথে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল এবং গাড়ি জব্দ করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এটি একটি পারিবারিক বিরোধের বিষয়৷ ২৩ বছর বয়সী ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীর মদ্যপানের অভ্যাস এবং শারীরিক নির্যাতনের কারণে তার স্বামীর থেকে আলাদা থাকছিলেন। ওই রাজস্থান থেকে এক যুবকের সাথে মান্দসৌরে এসেছিলেন এবং গত কয়েক মাস ধরে এই এলাকায় লিভ-ইনে বসবাস করছিলেন। তিনি ইতিমধ্যেই বিবাহিত এবং পরিবার থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত তার আত্মীয়দের ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল।

পরবর্তীতে, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডি টিভির ওয়েবসাইটে গত ২২ সেপ্টেম্বর ‘On Camera, Madhya Pradesh Woman Practising Garba Kidnapped By Family Over Marital Dispute’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

সুতরাং, ভারতের এক নারীকে অপহরণের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে অপহরণের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বিএনপি কর্তৃক মারধরের দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার  

0

সম্প্রতি, “কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বেধড়ক মারধর করলো মবের সম্রাট বিএনপির লোকজন। বাড়ি থেকে ধরে এনে তাকে মা-বাবার সামনে মারধর করছে ইউনুছ বাহিনী” দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বিএনপি কর্তৃক মারধরের ঘটনার নয় বরং, চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জে ভাতিজাকে খুনের দায়ে ক্ষুব্ধ জনতার হাতে চাচাকে গণধোলাইয়ের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের ‘jibon_j2’ নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১২ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি ফরিদগঞ্জে ভাতিজা হত্যাকারী চাচাকে পুলিশের হাত থেকে নিয়ে সাধারণ মানুষের গণধোলাইয় দেওয়ার ভিডিও।

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ১২ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১১ আগস্ট চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বিদেশ পাঠানোর টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে চাচার হাতে ভাতিজা খুন হয়েছেন। নিহতের নাম বাহার হোসেন বাবু। আর ঘাতক চাচার নাম হাসান। হামলায় বাবুর বাবা রওশন আলী ও ভাই আরমান হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরমানের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ঘাতকের বাড়ি ঘিরে রাখে। স্থানীয়দের সহায়তায় ঘাতক হাসান ও সহযোগী সাকিলকে আটক করেছে পুলিশ।

চাঁদপুরের স্থানীয় গণমাধ্যম দৈনিক চাঁদপুর খবরের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাবু মারা যাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ঘাতক হাসানকে আটক করে অবরুদ্ধ রাখে এবং তাৎক্ষণিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় প্রেরণ করেন। এরপর শাকিলকে মুন্দির হাট এলাকা থেকে আটক করে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসলে ক্ষুব্ধ জনতা গণধোলাই দেয়। পুলিশ শাকিলকে গণধোলাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করে পাশের একটি পাকা ভবনে আটক রাখে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম অবস্থায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাকিল ও তার স্ত্রী সুমাইয়াকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

সেসময় এ বিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমও সংবাদ (,,)  প্রচার করে।

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শাহ আলম জানান উক্ত ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে তিনি অবগত নন। পরবর্তীতে, এখন টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি তালহা যুবায়েরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি মূলত আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত, এ বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, ভিডিওটি কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের নয়। 

সুতরাং, চাঁদপুরে ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বিএনপি কর্তৃক মারধরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনা দেশে ফিরছেন দাবিতে ২০২৩ সালের ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

0

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরছেন দাবিতে সম্প্রতি বিমানবন্দর সদৃশ একটি স্থানে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্ত্থনা জানানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবির টিকটক ভিডিও দেখুন এখানে।

টিকটকে ভিডিওটি দেখা হয়েছে অন্তত ১০ হাজার বার। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনা দেশে ফিরছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং, ২০২৩ সালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। এটি সে সময়েরই ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে Mohammod Ali Sumon নামের একটি অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ০৭ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সেদিন শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনালে প্রবেশের পর তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। ভিডিওটি সে সময়ের।

জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর সে সময়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন উদ্বোধন করা হয় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল।

অর্থাৎ, ভিডিওটি প্রায় দুই বছরের পুরোনো।

তাছাড়া, শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ০৫ আগস্টের পর থেকে ভারতে আত্মগোপনে রয়েছেন। এরপর থেকে তার কোনো ছবি বা ভিডিও জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়নি। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে স্বাভাবিকভাবেই দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে খবর প্রচার হতো। তবে এক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০২৩ সালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধনের সময়ের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে তার দেশে ফেরার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আ.লীগ-বিএনপি জোট করে মাঠে নামলেও জামায়াত-শিবিরের সামনে দাঁড়াতে পারবে না শীর্ষক মন্তব্য করেননি মাহমুদুর রহমান

0

সম্প্রতি, ‘আঃলীগ ও বিএনপি জোট হয়ে এক সঙ্গে মাঠে নামলেও ও জামাত শিবিরের সামনে দাড়াতে পারবে না, ধুলার মতো উড়ে যাবে’ শীর্ষক মন্তব্যটির সাথে জাতীয় দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ছবি যুক্ত করে উক্ত মন্তব্যটি তারই দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি জোট করে মাঠে নামলেও জামায়াত শিবিরের সামনে দাঁড়াতে পারবে না সংক্রান্ত মন্তব্য আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান করেননি। প্রকৃতপক্ষে, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত মন্তব্যটি তার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

এরপর উক্ত দাবিটির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত ২ টা ২৫ মিনিটে উক্ত দাবিতে প্রচারিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

তবে, উক্ত পোস্টেও কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। 

সুতরাং, মাহমুদুর রহমানের নামে আ.লীগ ও বিএনপি জোট করে মাঠে নামলেও জামায়াত শিবিরের সামনে দাঁড়াতে পারবে না শীর্ষক মন্তব্য প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার জন্মদিনে পুতুল মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন দাবিতে ডিপফেক ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল তার মাকে পাশে রেখে তার মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে। 

এ সংক্রান্ত ভিডিওগুলো ফেসবুকেই দেখা হয়েছে অন্তত এক লক্ষাধিক বার। 

একই ভিডিও টিকটকে দেখুন এখানে। এই ভিডিওটিও দেখা হয়েছে অন্তত চার লক্ষাধিক বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার জন্মদিনে পুতুল মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহারে ভুয়া ভিডিওটি প্রচার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে সায়মা ওয়াজেদ শেখ হাসিনার জন্মদিনে মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন দাবিতে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক কোনো ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রেও এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। পুতুলের লিংকডইন এবং এক্স অ্যাকাউন্টেও এমন ভিডিওর অস্তিত্ব মেলেনি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওটির উপাদানগুলোতে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। 

পুতুলের কথা বলার সময় তার এবং পাশে থাকা শেখ হাসিনার মুখের মুভমেন্টসহ পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলোয় অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়।  

তাছাড়া, রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেশীয় গণমাধ্যমেের ২০২১ সালের প্রতিবেদনে ব্যবহৃত পুতুল ও শেখ হাসিনার ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে এবং প্রাপ্ত ছবিতে পুতুল ও শেখ হাসিনাকে একই পোশাকে, একই স্থানে এবং একই ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। 

অর্থাৎ, অন্তত ২০২১ সাল থেকে অনলাইনে থাকা একটি ছবি ব্যবহার করে ডিপফেক প্রযুক্তিতে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

সুতরাং, শেখ হাসিনার জন্মদিনে মেয়ে পুতুল মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভুয়া। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s own analysis

ইন্দোনেশিয়ায় দুর্নীতিবাজ নেতাদের ময়লা পানিতে ডুবানোর দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি অনলাইনে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘সীমাহীন দুৃর্নীতি ও অনিয়ম করায় নেতাদের ময়লা পানিতে ডুবানো হচ্ছে। প্রথমে তাদের লোহার একটি খাঁচায় ঢুকানো হয়। স্থানীয় ভাষায় লেখা একটি ব্যানার লাগানো হয়। এরপর নর্দমার পানিতে ডুবানো হয় তাদের। এসময় আশেপাশে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। আলোচিত এই ঘটনা ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ায়। ইতোমধ্যে এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।’

এই দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন: কালবেলা (ফেসবুক), গ্লোবাল টিভি (ইউটিউব)।

একই দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি দুর্নীতিবাজ নেতাদের শাস্তি দেওয়ার কোনো আসল ঘটনার দৃশ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চে ‘Pembasmi Tikus Kantor’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ আগস্টে প্রচারিত সম্ভাব্য মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিতিওটির শিরোনামে বলা হয়, ‘প্রথমে আমরা এটি তুলব, তারপর আমরা প্রক্রিয়া করব’ (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

Comparison : Rumor Scanner


ভিডিওটির বর্ণনা অংশে ‘Altered or synthetic content’ এর লেবেল দেখতে পাওয়া যায় যেখানে বলা হয়, ‘শব্দ বা ভিজ্যুয়ালগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে সম্পাদিত বা ডিজিটালি তৈরি করা হয়েছে’। (অনূদিত)

Screenshot : Youtube (Auto Translated)

এছাড়া, ইউটিউব চ্যানেলটির বায়ো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে লেখা পাওয়া যায়, এই চ্যানেলের সব ভিডিও এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি। এছাড়াও, প্রচারিত ভিডিওটির সদৃশ আরো একাধিক ভিডিও চ্যানেলটিতে পাওয়া যায়।

পাশাপাশি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে মানুষের অঙ্গভঙ্গি, পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে, এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ দেখা যায়।

Screenshot : Hive Moderation

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি। 

সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ায় দুর্নীতিবাজ নেতাদের ময়লা পানিতে ডুবানোর আসল ঘটনার দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

খাগড়াছড়ির সংঘর্ষে রিকন চাকমা নামের যুবকের মৃত্যুর দাবি মিথ্যা

0

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বাঙালিদের সঙ্গে জুম্ম ছাত্র জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে, রিকন চাকমা নামের আহত এক যুবকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে সেদিনের সংঘর্ষে তিনিও নিহত হয়েছেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে রিকন চাকমা নামের ওই যুবক গুরুতরভাবে আহত হলেও মারা যাননি। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Jeet Chakma এবং ‍Suman Chakma নামের দুজন ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৭ সেপ্টেম্বর করা দুটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। পোস্টগুলোর মাধ্যমে জানানো হয়, খাগড়াছড়ির সংঘর্ষে রিকন চাকমা গুরুতর আহত হলেও মারা যাননি। এছাড়াও পোস্টগুলোতে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিকন চাকমার চিকিৎসার জন্যে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানো হয়।

Collage by Rumor Scanner

পরবর্তীতে রিকন চাকমার বিষয়ে অনুসন্ধানে Dewan Sunil নামের একজন ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মেলে। সুনীলের ফেসবুক প্রোফাইল পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখা যায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত থেকে তিনি সশরীরে রিকন চাকমার সঙ্গে থেকে তার শারীরিক অবস্থার হালনাগাদ জানিয়ে একাধিক পোস্ট করছেন। রিকন চাকমার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তার করা পোস্টগুলো পাওয়া যাবে – এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

Collage by Rumor Scanner

পোস্টগুলো থেকে জানা যায়, গুরুতর আহত অবস্থায় রিকনকে খাগড়াছড়ির পার্কসাইড হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে চট্টগ্রামে নেওয়া হলে ডাক্তাররা জানান, মাথায় আঘাত পাওয়া কারণে রিকনের মস্কিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছে। সকলের সহযোগিতায় পরবর্তীতে রিকনের মস্কিষ্কের অপারেশন করে জমাট বাঁধার রক্ত অপসারণ করা হয়। বর্তমানে রিকন চাকমার জ্ঞান ফিরেছে এবং তিনি কথা বলতে পারছেন জানিয়ে সুনীল তার সর্বশেষ পোস্টটি করেন। এছাড়া তার পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত ছবি থেকে জানা যায়, রিকন চট্টগ্রাম স্পেশিয়ালাইজড ট্রিটমেন্ট এন্ড ট্রামা সেন্টার নামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পরবর্তীতে খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষে নিহত তিনজনের পরিচয়ের বিষয়ে জানতে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে গুলিতে নিহত তিনজনের পরিচয় শনাক্ত, দুই সড়কে অবরোধ শিথিল শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত তিনজন হলেন, গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের দেবলছড়ি চেয়ারম্যান পাড়ার আথুই মারমা (২১), হাফছড়ি ইউনিয়নের সাং চেং গুলিপাড়ার আথ্রাউ মারমা (২২) ও রামসু বাজার বটতলার তৈইচিং মারমা (২০)। নিহতরা প্রত্যেকে গুলিতে নিহত হয়েছেন বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। 

সুতরাং, খাগড়াছড়িতে স্কুলশিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জুম্ম জনতার সংঘর্ষে রিকন চাকমা নামের যুবক মারা গিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র