অতি সম্প্রতি, “রাজধানীর ফার্মগেট মেট্রো স্টেশন এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে, শত শত মানুষের সামনে, সন্ত্রাসী জঙ্গি বাহিনী হাত পায়ের রগ কেটে. ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করে. লাশ পড়ে আছে কেউ এগিয়েও আসছে না। পরিচয় জানা যায়নি… জানিনা কোন আওয়ামী পরিবারের সন্তান হবে…. নাকি সাধারণ কোন মায়ের বুক খালি হলো।” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে সন্ত্রাসী জঙ্গি হামলার কোনো সম্পর্ক নেই বরং ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের লাইনের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারী নিহতের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম এখন টিভির ফেসবুক পেজে ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
Comparison: Rumor Scanner
ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এটি ঘটনাস্থলের দৃশ্য।
জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে যায় ২৬ অক্টোবর দুপুরে। এ ঘটনায় নিচে থাকা একজন পথচারী নিহত হন। নিহত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তাতে নাম আবুল কালাম ও বাড়ি শরীয়তপুর লেখা। জন্মসাল ১৯৯০।
অর্থাৎ, এটি কোনো জঙ্গি হামলার ঘটনা নয়।
সুতরাং, রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের লাইনের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারী নিহতের ভিডিওকে সন্ত্রাসী জঙ্গি হামলা একজন নিহত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি ‘গত মাসের মাঠ জরিপে বিএনপির চেয়ে ৭.২% এগিয়ে জামায়াত’ শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি এবং ‘ক্ষমতার দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছে জামায়াত ৪১.৭% ভোটারের পছন্দের শীর্ষে’’ শিরোনামে আমার দেশ এর লোগো ও ডিজাইন সংবলিত দুটি পৃথক ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
এসব ফটোকার্ডে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে ভোটারদের পছন্দের ভিত্তিতে একটি জরিপের বার চার্টের ছবি যুক্ত করা হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত যমুনা টিভির ফটোকার্ডের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফেসবুকে প্রচারিত আমার দেশের ফটোকার্ডের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-বিএনপি-এনসিপির মধ্যকার কথিত জরিপের বার চার্টের ছবি যুক্ত করে যমুনা টিভি ও আমার দেশ এরূপ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রচার করেনি। প্রকৃতপক্ষে, এসব গণমাধ্যমের প্রচলিত ফটোকার্ডের আদলে আলোচিত ভুয়া ফটোকার্ডগুলো তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।
যমুনা টিভির ফটোকার্ড যাচাই:
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির লোগো ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ‘২২ অক্টোবর ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উল্লিখিত তারিখে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, যমুনা টিভির ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, যমুনা টিভির প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।
অর্থাৎ, জামায়াত-বিএনপি-এনসিপিকে জড়িয়ে কথিত জরিপের তথ্য যুক্ত করে যমুনা টিভির লোগো ও ডিজাইন সংবলিত ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে।
আমার দেশের ফটোকার্ড যাচাই:
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে আমার দেশের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ‘২২ অক্টোবর ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে আমার দেশের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, আমার দেশের ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ
তাছাড়া, আমার দেশের প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর ২৯ বছর পর গত ২১ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছেন তার মামা আলমগীর হোসেন। এজাহারে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হককে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডনসহ আরও কয়েকজনের নাম রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে, চলচ্চিত্র তারকা ডনকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে বিমানবন্দরে গ্রেফতার হয়েছেন ডন। একই সঙ্গে দাবি করা হয়, সামিরাও গ্রেফতার হয়েছেন।
টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে। ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৭১ হাজার বার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, ডন এবং সামিরা গ্রেফতার হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। জাতীয় দৈনিক সমকালকে গত ২৫ অক্টোবর দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, গুরুত্ব সহকারে মামলার তদন্ত চলছে। তবে এখনও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আসামিদের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
রমনা থানার ওসি আরও বলেন, মামলার তদন্তে কোনো ধরনের চাপ নেই। শিগগির আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
অর্থাৎ, ডন গ্রেফতার হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়।
পরবর্তীতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে এর পারিপার্শ্বিক উপাদানেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।
ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় নির্মিত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।
তাছাড়া, ভিডিওটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে দেখা যায়, Rh Juel নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি প্রথম প্রচার করা হয়। এই অ্যাকাউন্টে নিয়মিতই এমন এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। এসব ভিডিওতে এআই লেভেল উল্লেখ না থাকায় অসংখ্য নেটিজেন ভিডিওগুলোকে সত্য হিসেবে ধরে নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র তারকা ডনের গ্রেফতারের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
সম্প্রতি অনলাইনে এক কাপড়ের দোকানে মারামারির একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘নরসিংদীতে বিএনপি’র এক নেতার দোকানে কিছু বোনেরা বোরকা কিনতে গিয়েছিলেন। ওই নেতা বোরকার দাম বলেছেন ৩,২০০ টাকা। কাস্টমার মহিলারা দাম বলেছিলেন ১,৩০০ টাকা। এতে ওই নেতা রেগে গিয়ে বলেন,ওরা জামায়াতে ইসলামী’র মহিলা কর্মী,বলে তাদের উপর হামলা শুরু করে দেন।’
আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ১০ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ১০ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
এছাড়াও, একই ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘নরসিংদীতে জামায়াতের এক নেতার দোকানে কিছু বোনেরা বোরকা কিনতে গিয়েছিলেন। ওই নেতা বোরকার দাম বলেছেন ৩,২০০ টাকা। কাস্টমার মহিলারা দাম বলেছিলেন ১,৩০০ টাকা। এতে ওই নেতা রেগে গিয়ে বলেন,ওরা বিএনপির মহিলা দলের কর্মী। এরপর তাদের উপর হামলা শুরু করে দেন’।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে দেখা মারামারির সঙ্গে বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামী কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা নেই। মারামারিতে জড়িত দুই দোকানির কেউই এসব দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। প্রকৃতপক্ষে, দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকে ১৯ অক্টোবর তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘hello narsingdi’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৯ অক্টোবরে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, ‘নরসিংদী কালিবাজারে মারামারি’।
এছাড়াও, অনুসন্ধানে ‘Channel A1’ নামের একটি ফেসবুক পেজেও এ বিষয়ে গত ২১ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, নরসিংদী শহরের কালিবাজারে কথা কাটাকাটির জেরে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বিসমিল্লাহ মার্কেটের তানহা ফ্যাশনের মালিক বাবু জানান, ‘হিজাব হ্যাভেন’ দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা মিলে তাকে পিটিয়ে আহত করেছেন।
এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম ‘কালবেলা’র ওয়েবসাইটে গত ২৪ অক্টোবরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও থেকে নেওয়া একটি স্থিরচিত্র বা স্ক্রিনশটেরও সংযুক্তি পাওয়া যায়।
Comparison : Rumor Scanner
আলোচিত ভিডিওতে প্রদর্শিত মারামারির প্রেক্ষাপটের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, নরসিংদীতে ব্যবসায়ী প্রতিহিংসার জেরে খাদিজা আক্তার (৪২) নামে এক মহিলা ব্যবসায়ীর উপর প্রকাশ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে খাদিজা সহ চারজন আহত হন। তানহা ফ্যাশনের মালিক সোহাগ হোসেন বাবু সরকার, যার দোকানের চেয়ে খাদিজার হিজাব হ্যাভেনে ক্রেতার ভিড় বেশি হওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন, এই হামলার জন্য দায়ী। গত ১৯ অক্টোবর দুপুরে খাদিজার দোকানের এক কর্মচারীর হাসিকে কেন্দ্র করে বাবু সরকার লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। হামলার সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হলেও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটিকে ‘বিএনপি নেতার হামলায় জামায়াতের মহিলা কর্মী আহত’ বলে ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে। খাদিজা ও নরসিংদী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বাবুল সরকার উভয়েই কালবেলাকে জানিয়েছেন যে ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, এটি সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিহিংসা জনিত। অভিযুক্তের ভাই দাবি করেছেন যে খাদিজার কর্মচারী তার মাকে গালি দেওয়ায় তার ভাই উত্তেজিত হয়ে হামলা করে। বাজার কমিটি দ্রুত বিষয়টি সমাধানের জন্য বসবে এবং উভয় পক্ষ সমঝোতার চেষ্টা করছে। বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় নেতারাও অনলাইনে প্রচারিত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্যকে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা বলে জানিয়েছেন।
এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত ঘটনাটি প্রকৃতপক্ষে অরাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্রিক।
সুতরাং, নরসিংদীতে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ঘটনাকে জামায়াত-বিএনপির রাজনৈতিক সংঘর্ষ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।
সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ পুতুলের কথিত একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওটিতে পুতুলকে বলতে শোনা যায়, “আপনাদের সকলের জন্য এর চেয়ে বড় আর কোনো খবর হতে পারে না যে, আমরা দেশে ফিরে আসছি। প্রস্তুত হন সবাই, আমরা আসছি।”
ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল তাদের দেশে ফিরে আসা প্রসঙ্গে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহারে ভুয়া ভিডিওটি প্রচার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দেশে ফিরে আসা প্রসঙ্গে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক কোনো ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রেও এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। পুতুলের লিংকডইন এবং এক্স অ্যাকাউন্টেও এমন ভিডিওর অস্তিত্ব মেলেনি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওটির উপাদানগুলোতে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি, কথা বলার সময় তার মুখের মুভমেন্টসহ পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলোয় অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়।
পরবর্তীতে, বিস্তর অনুসন্ধানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর Regional Director Saima Wazed’s remarks at Regional Commemoration of #WorldDiabetes Day 2024 শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য রয়েছে।
Video Comparison by Rumor Scanner
ভিডিও দুইটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উভয় ভিডিওতে সায়মা ওয়াজেদের পোশাক, অনুষঙ্গ ও পারিপার্শ্বিকতার মধ্যে মিল রয়েছে।
তবে উভয় ভিডিওতে থাকা অডিও ক্লিপের বিষয়বস্তু ভিন্ন লক্ষ্যণীয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভিডিওটিতে সায়মা ওয়াজেদ সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান হিসেবে ২০২৪ সালে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে তার বক্তব্য প্রদান করেছে। স্বাভাবিকই, উক্ত ভিডিওতে তাকে তাদের দেশে ফেরার বিষয়ে কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি।
পরবর্তীতে, ভিডিওটি এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) দিয়ে তৈরি কিনা তা যাচাই করতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ডিপফেক-ও-মিটারে ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ।
অর্থাৎ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বক্তব্যের ভিডিও ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল দেশে ফেরা প্রসঙ্গে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
World Health Organization South-East Asia Region – WHO SEARO: Youtube Video
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এটি চকবাজার নামে কোনো স্থানে আগুন লাগার দৃশ্যও নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত জুলাইতে নরসিংদীর মাধবদী বাজারে অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য এটি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে ‘Tahseen Mia’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৪ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর উপাদানের সাথে আলোচিত ভিডিওর উপাদানের মিল রয়েছে।
Video Comparison By Rumor Scanner
পোস্টটিতে দাবি করা হয়, মাধবদী বাজারে আগুন লেগেছে। সেই দৃশ্য এটি।
সেদিন একাধিক ফেসবুক ভিডিওতেও (১, ২) এই ঘটনার দৃশ্য দেখা যায়।
উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে একই দিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নরসিংদীর মাধবদী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটে ৪ জুলাই ভোরে। মাধবদী বাজারের মুড়িপট্টি এলাকায় এ ঘটনায় অন্তত ৪২টি দোকান পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল সাড়ে ৬টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সুতরাং, গত জুলাইতে নরসিংদীর মাধবদী বাজারে আগুন লাগার দৃশ্যকে সম্প্রতি চকবাজারে আগুন লাগার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গত ২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিছিলের একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘আলহামদুলিল্লাহ আজকে জুমার নামাজের পর গাজীপুর এ আওয়ামীলীগ এর এক বিশাল জনসভায় গাজীপুর এখন আওয়ামীলীগ এর দখলে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’।
এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের আলোচিত মিছিলের ভিডিওটি গত ২৪ অক্টোবরের বা গাজীপুরের নয়। বরং, গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাবিস্কো এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে হওয়া মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাক-এর ইউটিউব চ্যানেলে ‘নি/ষি/দ্ধ থাকা আ. লীগের মিছিল থেকে গ্রেপ্তার ৭’ শিরোনামে গত ৫ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
Comparison : Rumor Scanner
প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত প্রতিবেদনে উল্লিখিত আওয়ামী লীগের মিছিলের ভিডিওর সাথে গত ২৪ অক্টোবরের মিছিলের দাবিতে প্রচারিত মিছিলের ফুটেজের মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতে ‘ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ’-এর একই ব্যানারে একই স্থানে মিছিলটিকে দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) জুম্মার নামাজের পর তেজগাঁওয়ের নাবিস্কো এলাকায় মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি থেকে সাতজনকে আটক করা হয় বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়।
উক্ত মিছিলের বিষয়ে সেসময় অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।
সুতরাং, গত ২৪ অক্টোবরে গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মিছিলের ভিডিও দাবিতে ৫ সেপ্টেম্বরে তেজগাঁওয়ে হওয়া আ.লীগের মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে উদ্ধৃত করে ‘বিএনপির চেয়ে জামায়াতের সম্ভাবনা বেশি জামায়াত সরকার গঠন করতে পারে’ শিরোনামে সংবাদমাধ্যম আমার দেশের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
অর্থাৎ, দাবি প্রচার করা হয়েছে, সারজিস আলম বলেছেন ‘বিএনপির চেয়ে জামায়াতের সম্ভাবনা বেশি জামায়াত সরকার গঠন করতে পারে’।
উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘বিএনপির চেয়ে জামায়াতের সম্ভাবনা বেশি জামায়াত সরকার গঠন করতে পারে’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি এনসিপি নেতা সারজিস আলম এবং আমার দেশও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আমার দেশের একটি ফটোকার্ড নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে আমার আমার দেশের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ০৭ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়।
উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আমার দেশের ফেসবুক পেজে গত ০৭ অক্টোবর ‘মৃ’ত্যু ছাড়া কিছু উপদেষ্টার কোনো সেফ এক্সিট নেই: সারজিস’ শিরোনামে একটি ফটেকার্ড প্রচার করা হয়েছে। তবে আলোচিত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত সারজিসের আলমের ছবির সাথে আমার দেশের ফেসবুক পেজে সারজিস আলমের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য নিয়ে ১১, ১২ এবং ১৪ অক্টোবর প্রকাশিত পৃথক তিনটি ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির মিল রয়েছে।
আলোচিত ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজের ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির বাক্যে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল পরিলক্ষিত হয়।
Photocard Comparison by Rumor Scanner
পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও সারজিস আলমের উক্ত মন্তব্য সম্বলিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি৷ তিনি এরূপ কোনো মন্তব্য করে থাকলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।
সুতরাং, এনসিপি নেতা সারজিস আলম ‘বিএনপির চেয়ে জামায়াতের সম্ভাবনা বেশি জামায়াত সরকার গঠন করতে পারে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে আমার দেশের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।
সম্প্রতি, ৭ ডিসেম্বর দেশে ফেরা নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। উক্ত ভিডিওতে পুতুলকে ‘কলকাতার কিছু চ্যানেল আমার সব খবর মানুষের কাছে জানাচ্ছে এবং পৌঁছে দিচ্ছে তারা আমাদের পক্ষে আছে। ৭ ডিসেম্বর আমাদের দেশে আগমন নিয়ে অনেক চ্যানেল কভারেজ দিয়েছে আমি দেখেছি। আপনারা ভিডিও শেয়ারিং এর মাধ্যমে এই তথ্যটি সবার কাছে পৌঁছে দিন। আমাদের দেশের চ্যানেলগুলো আমাদের আসার খবর এগুলো প্রচার করবে না। তারা এখন অন্য দলের হয়ে গেছে। আপনারা সবাই আমার এ ভিডিওটি শেয়ার করুন ও সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন আমরা ডিসেম্বরের ৭ তারিখে আসছি আমার প্রিয় দেশে’ বলতে দেখা যায়।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুতুলের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। পুতুলের লিংকডইন এবং এক্স অ্যাকাউন্টে এমন ভিডিওর অস্তিত্ব মেলেনি।
পরবর্তীতে, ভিডিওটির সূত্রপাত অনুসন্ধানে ‘Mitol Ahmed Sabuj’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২১ অক্টোবর একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
Screenshot: Facebook
তবে ভিডিওটিতে পুতুলের বলা বক্তব্য কবের বা কোথাকার এরূপ কোনো প্রেক্ষাপট উল্লেখ করা হয়নি। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুল জানালেন, কলকাতার নিউজ চ্যানেলগুলা ৭ই ডিসেম্বর শেখ পরিবারের দেশে আসা নিয়ে নিউজ করছে, কিন্তু দেশের চ্যানেলগুলা এসব নিউজ করছে না৷ তাই তার ভিডিওটি শেয়ার করে সবার কাছে পৌছে দিতে বললেন। শেখ হাসিনা এবং তার পরিবার সহ ৭ই ডিসেম্বর দেশে আসতে যাচ্ছে৷ Source-0 Television’
উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় এটি থেকে আরও অসংখ্য এ ধরনের ভিডিও (১, ২, ৩) প্রচার করা হয়ে হয়েছে।
এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওতে থাকা পুতুল সদৃশ ব্যক্তির মুখাবয়বের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।
অনুসন্ধানে, ‘Press Xpress’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর ‘A Deeper Look into Autism & Related Disorders with Saima Wazed Putul’ শীর্ষক ভিডিওতে একই পোশাকে পুতুলকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওর বিবরণী থেকে জানা যায়, ভিডিওতে তিনি অটিজম নিয়ে কথা বলেন।
Comparison: Rumor Scanner
অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৯ শতাংশ।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ডিপফেক ভিডিওকে ৭ ডিসেম্বর দেশে ফেরা সম্পর্কে পুতুলের বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
গত ২১ অক্টোবর থেকে ‘আজকে বিকালে ৪:৩০ ঢাকা শাহাবাগের জয় বাংলা এক বিশাল মিছিল ঢাকা শাহবাগ এখন আওয়ামী লীগ এর দখলে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
দাবি করা হচ্ছে- গত ২১ অক্টোবর বিকেলে সাড়ে চারটায় শাহবাগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিলের দৃশ্য এটি।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ২১ অক্টোবর শাহবাগে আওয়ামী লীগের মিছিলের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ১৫ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের তিন দফা দাবিতে আয়োজিত আন্দোলনের দৃশ্য।
অনুসন্ধানে এটিএন বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
Video Comparison By Rumor Scanner
এটিএন বাংলার ক্যাপশনেল থেকে জানা, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের যাওয়ার দৃশ্য এটি।
একই দিনে একই ভিডিও মেহেদি হাসান নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও পোস্ট করতে দেখা যায়। সেখানেও তিনি শিক্ষকদের আন্দোলনের দৃশ্য উল্লেখ করেছেন।
উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৫ অক্টোবর নিজেদের তিন দফা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সকাল ১১ টায় আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন। পরবর্তীতে ওইদিন বেলা দুইটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বড় মিছিল নিয়ে শিক্ষক–কর্মচারীরা শাহবাগ মোড়ের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে শাহবাগের প্রবেশমুখে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। তবে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে সেই প্রতিবন্ধক ভেঙে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তাঁরা।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিলের নয়।
সুতরাং, গত ১৫ অক্টোবর তিন দফা দাবি নিয় আন্দোলনতর শিক্ষক-কর্মচারীদের পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ভিডিওকে শাহবাগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।