Home Blog Page 16

ইকুয়েডরে এক নিরাপত্তা প্রহরীকে গুলি করে হত্যার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, “না এটা আফ্রিকার কোন দৃশ্য নয়,এটা নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ,যেখানে সন্ত্রাসীরা মন চাইলেই অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে, এটাই লাল বদরদের স্বাধীন বাংলাদেশ” শিরোনামে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইকুয়েডরের উত্তর গুয়ায়াকুইল শহরের সিডেলা এল কন্ডর এলাকায় এক নিরাপত্তা প্রহরীকে গুলি করে হত্যার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Zaracay Televisión’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২৮ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুক পোস্টে সংযুক্ত ২০ সেকেন্ডের ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ইকুয়েডরের শহর উত্তর গুয়ায়াকুইলের সিডেলা এল কন্ডরে এক নিরাপত্তা প্রহরীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে ভ্যাকসিন প্রদানকারীদের অর্থ গ্রহণ করতে বাধা দিয়েছিলেন।   

পাশাপাশি, ইকুয়েডরের কুইটো-ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘Minuto & Medio’ এর এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৭ জুলাই স্প্যানিশ ভাষায় প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ক্যাপশনেও এটিকে ইকুয়েডরের শহর উত্তর গুয়ায়াকুইলে ঘটা ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, এটি বাংলাদেশের কোনো স্থানে সংঘটিত ঘটনা নয় বলে নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

সুতরাং, ইকুয়েডরের এক নিরাপত্তা প্রহরীকে গুলি করে হত্যার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থনে সমাবেশ দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, রাজধানী ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থনে বিশাল সমাবেশ ও স্লোগান হয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ভিডিওটি রাজধানী ঢাকার কথা উল্লেখ ব্যতীতও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে দেখা যায়। এমন দাবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং  এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি রাজধানী ঢাকায় সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সমর্থনে আয়োজিত কোনো সমাবেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে উদ্ভূত একদফা আন্দোলনের সময় পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়ায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার। পর্যালোচনায় সমাবেশের পেছনে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের বোর্ড দেখতে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে MB tv নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট প্রচারিত একই দিনের ভিন্ন আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটিতেও একই ব্যক্তিকে মঠবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যায়। ভিডিওটির শিরোনাম ও বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট ধারণ করা হয়েছে। দেশব্যাপী চলা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো সেদিন মঠবাড়িয়ায় প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেন। এছাড়াও শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওতে বক্তব্য প্রদানকারী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ওই প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশের একাধিক ছবি সংবলিত একটি ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়। এছাড়া, আরেকটি পোস্টে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই সূত্রগুলো থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়াও অনুসন্ধানে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগের বিশাল জনসমাবেশ করার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ২০২৪ সালের পুরোনো সমাবেশের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

২০২৬ সালে প্রথমবারে মতো ডিভি লটারিতে বাংলাদেশের নাম না থাকার দাবিটি সত্য নয়

সম্প্রতি ‘২০২৬ সালের ডিভি লটারি: দুঃসংবাদ, তালিকায় নেই বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিরোনামে একটি দাবি গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন জনকণ্ঠ৷  

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) প্রোগ্রামের সুযোগ সাম্প্রতিক সময়ে স্থগিত করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ডিভি ভিসা প্রোগ্রাম ২০১২ সালে শেষ হয়ে গেলেও এটিকে সাম্প্রতিক দাবিতে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গণমাধ্যম জনকণ্ঠের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ২০২৬ সালের ডিভি লটারির তালিকাতে বাংলাদেশের নাম না থাকার বিষয়টিকে ‘দুঃসংবাদ’ বলে অবহিত করা হয়েছে। তবে, উক্ত প্রতিবেদনে ২০১২ সাল থেকে বিগত ১৩ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ডিভি লটারির তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকার কথাটি উল্লেখ করা হয়নি, যা এ বিষয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে৷ 

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টসমূহের মন্তব্যের ঘর পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এটিকে ২০২৬ সালের প্রথমবার ঘটতে যাওয়া ঘটনা অনুমান করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করছেন। 

Screenshot: Facebook 

অনুসন্ধানে গণমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ০৮ ডিসেম্বর হালনাগাদকৃত ‘বাংলাদেশিদের জন্য আর ডিভি লটারি নয়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) প্রোগ্রাম বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হয়ে গেছে। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে এই পাঁচ বছরে ৫০ হাজারেরও বেশি অভিবাসী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের বরাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে পাঁচ বছরে কোনো দেশ থেকে যদি ৫০ হাজারের বেশি অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে, তাহলে সে দেশ আর ডিভি প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারে না। একারণে বাংলাদেশ ডিভি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আর যোগ্য নয়।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ‘ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি)’ শিরোনামে একটি ঘোষণা অনুযায়ী, “২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি এই ভিসার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছে বলে বাংলাদেশ এই যোগ্যতা হারিয়েছে। কারণ ডিভি কর্মসূচি সেই দেশগুলোর জন্য যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের হার তুলনামূলকভাবে কম।”

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ডিভি লটারি-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে কোন কোন দেশ আবেদন করতে পারবে- এই তালিকা প্রকাশ করা হয় এবং শেষে কারা আবেদন করতে পারবে না সেটিও উল্লেখ রয়েছে। আবেদনের অযোগ্যদের সেই তালিকায় ২০১২ সাল থেকে শুরু হয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে (২০২৩, ২০২৪, ২০২৫) অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, ২০১২ সালের পর থেকে বাংলাদেশের জন্য ডিভি লটারি কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়নি।

সুতরাং, ডিভি লটারি কার্যক্রমে ২০১২ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিকদের বাদ পড়ার বিষয়টিকে সাম্প্রতিক ঘোষণা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

গেল ২৪ অক্টোবরে আ.লীগ নেতা-কর্মীদের স্লোগান দাবিতে ২০২৪ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) অন্তত বিকেল থেকে স্লোগানের একটি ভিডিও অনলাইনে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ‘জুম্মার নামাজ শেষে ধানমন্ডির সামনে জয় বাংলা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত শেখ হাসিনা সরকার বারবার দরকার জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি গত ২৪ অক্টোবরে ধানমন্ডির সামনে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের স্লোগানের নয় বরং, ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবরে মতিয়া চৌধুরীর জানাজায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের স্লোগানের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক যায়যায়দিনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর “মতিয়া চৌধুরী জানাজায় হঠাৎ জয় বাংলা স্লোগান” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর প্রায় ৩ মিনিট পরবর্তী সময়ের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘কালের কণ্ঠ’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর প্রথম জানাজা রমনা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে তার বাসভবনে সামনে সম্পন্ন হয়। এছাড়া, জানাজার সময় সমবেতদের ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়, শেখ হাসিনার সরকার, বার বার দরকার’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়েছিল বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। 

অর্থাৎ, ভিডিওটি গত ২৪ অক্টোবরে আওয়ামী লীগের স্লোগানের নয়, ২০২৪ সালের।

উল্লেখ্য, আলোচিত ঘটনার ভিডিওটি এর আগে গেল ৫ সেপ্টেম্বর আ.লীগ নেতা-কর্মীদের স্লোগান দাবিতে প্রচার করা হলে সেসময় এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, ২০২৪ সালে মতিয়া চৌধুরীর জানাজায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের স্লোগানের দৃশ্যকে গত ২৪ অক্টোবরে ধানমন্ডির সামনে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের স্লোগানের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সড়ক দুর্ঘটনায় বাসে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দিয়ে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার

সম্প্রতি, চাঁদা না দেওয়ায় ঢাকা-বরিশালগামী সাকুরা বাসে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগুন দিয়েছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ভিডিওটি জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের চাঁদা না দেওয়ায় তারা বাসটিতে আগুন দিয়েছে দাবিতেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি চাঁদা না দেওয়ার কারণে কোনো বাসে অগ্নিসংযোগের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ৬ অক্টোবর সাকুরা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে একটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর বাসটিতে আগুন লেগে যায়। ওই ঘটনার ভিডিও ব্যবহার করেই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে ভুয়া দাবি ছড়ানো হচ্ছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি বা জামায়াত-শিবিরকে চাঁদা না দেওয়ার কারণে সাকুরা পরিবহনের কোনো বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে এটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Buses of Bakerganj নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে Md Sojib Foraji নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৭ অক্টোবর প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ অক্টোবর বরিশাল-ঝালকাঠি সড়কের প্রতাপ বাজার এলাকায় সাকুরা পরিবহনের একটি বাসের সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় প্রথমে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনে আগুন লাগে পরবর্তীতে তা বাসেও ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মোটরাসাইকেল আরোহীকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি মেডিকেলে নেওয়া হয় বলেও পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর উক্ত সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে। এসময় বাস যাত্রীদের দ্রুত বাস থেকে নামিয়ে আনায় মোটরসাইকেল আরোহী ব্যতীত আর কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মোটরসাইকেল আরোহীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলেও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়। তবে উক্ত প্রতিবেদনের প্রায় ২ ঘণ্টা পর প্রকাশিত আরেকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গুরুতর আহত মোটরসাইকেল আরোহী পরবর্তীতে মারা যান। নিহত ব্যক্তির নাম মো. তোফাজ্জল হোসেন। তিনি ঝালকাঠি সদরের নথুল্লাহবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

কিন্তু প্রতিবেদন দুটির কোনোটিতেই কোনো রাজনৈতিক দলকে চাঁদা না দেওয়ার বাসে আগুন দেওয়ার অভিযোগ করা হয়নি। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, আলোচিত দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

সুতরাং, চাঁদা না দেওয়ার কারণে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা সাকুরা পরিবহনের বাসে আগুন দিয়েছে শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

২৪ অক্টোবরে এনসিপির সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ভুয়া দাবি প্রচার 

গতকাল (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন হলের দ্বিতীয় তলায় পূর্ববিরোধের জের ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি সমন্বয় সভা চলাকালে দলটির নেতা-কর্মীদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। 

উক্ত ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গতকাল এনসিপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হলেও কেউ নিহত হননি। প্রকৃতপক্ষে, ওই সংঘর্ষের একটি ভিডিও ব্যবহার করে সূত্রহীনভাবে একজন নিহত হওয়ার মিথ্যা দাবি প্রচার করা হচ্ছে।

শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটিতে জাতীয় দৈনিক সমকালের লোগো রয়েছে। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দৈনিক সমকালের ইউটিউব চ্যানেলে গতকাল (২৪ অক্টোবর) প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

সমকাল কর্তৃপক্ষ তাদের ভিডিওর ক্যাপশনে উল্লেখ করেছে, সংঘর্ষের ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন।

এরপর প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গতকাল (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন হলে এনসিপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বংশাল থানার কর্মী মোহাম্মদ ইউসুফ আহত হন।

দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এনসিপির উক্ত সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত দুইজন আহতের তথ্য উল্লেখ করেছে। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে নিহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, গণমাধ্যমে গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহতের তথ্য পাওয়া গেলেও নিহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, গতকাল এনসিপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

চাকসু নির্বাচনে বোরকা পরা শিবির কর্মী আটক দাবিতে কক্সবাজারের ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর গত ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে, চাকসু নির্বাচনে শিবিরের এক কর্মী বোরকা পরে মেয়ে সেজে জাল ভোট দিতে গিয়ে ধরা পড়েছে।

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি চাকসু নির্বাচনের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৩ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে শালবাগান পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশির সময় বোরকা পরিহিত অবস্থায় একজন রোহিঙ্গা শরনার্থী যুবককে আটক করা হয়। ওই ঘটনার ভিডিওকেই আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গত ২৪ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ওই ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়, “বোরকা পরে অভিনব কৌশলে ক্যাম্পে ঢোকার সময় চেকপোস্টে রোহিঙ্গা যুবক আটক।” যমুনা টেলিভিশনের প্রকাশিত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা মেইলে ২৪ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় কক্সবাজারের টেকনাফে শালবাগান পুলিশ চেকপোস্ট থেকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় রশিদ আহমদ (২৭) নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তিনি ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফরিদ আহমদের ছেলে। পুলিশ ধারণা করছে, রশিদ নারী সেজে বোরকা ও মোজা পরে ক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন, যার উদ্দেশ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দেওয়া এবং সম্ভাব্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া।

এছাড়া, মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে চাকসু নির্বাচনে বোরকা পরে নারী সেজে শিবির কর্মীর জাল ভোট দেওয়ার ঘটনা সম্পর্কিত কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।

সুতরাং, তিন মাস আগের কক্সবাজারের ঘটনাকে চাকসু নির্বাচনে শিবির কর্মীর জাল ভোট দেওয়ার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে ; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের পুরোনো ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। এরই মধ্যে ‘এবার ট্রেনে আগুন’ দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি টিকটকে ভিডিওটি প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজারবার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৪৯০০ জন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের এই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের আহমেদনগর জেলার নারায়নদোহ স্টেশন পার্শ্ববর্তী একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও’র একাধিক কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘The Tribune’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবরে প্রচার হওয়া একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও’র দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ভারতের মহারাষ্ট্রে আহমেদনগর জেলার নারায়নদোহ স্টেশনের কাছে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগিতে আগুন লাগে। তবে আগুন লাগার সময় বগিগুলোতে অল্পসংখ্যক যাত্রী থাকায় সবাই নিরাপদে নেমে যান। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় আরেক সংবাদমাধ্যম ‘Republic TV’ এর ওয়েবসাইটে একই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Republic TV website 

উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে সংযুক্ত ছবি এবং ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায় এবং এই প্রতিবেদনটি থেকেও একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের এই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে সম্প্রতি বাংলাদেশে ট্রেনে কোনো অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ২০২৩ সালে ভারতের একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুনের ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ধানমন্ডিতে আ.লীগের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গতকাল (২৪ অক্টোবর) ‘জুম্মার নামাজ শেষে ,,,ধানমন্ডিতে লাঠি’সোটা হাতে পুলিশের সাথে আঃলীগের ত্রিমুখী সং*ঘর্ষ; ভয়ে দৌড়ে পালালো #পুলিশ’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ধানমন্ডিতে গতকাল আওয়ামী লীগের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে পিরোজপুরে বিএনপির সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই ‘পিরোজপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে আহত অনেকে; আটক ৬’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন পিরোজপুরে জেলা বিএনপির পদযাত্রায় বাধা দেওয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছিল। এতে পিরোজপুর সদর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহ নয়জন পুলিশ সদস্য ও বারোজন বিএনপি নেতা-কর্মী আহত হন। ঘটনায় পুলিশ বিএনপির ছয় নেতা-কর্মীকে আটক করে। দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে জেলা বিএনপি পদযাত্রার আয়োজন করেছিল। জেলা স্টেডিয়ামের সামনের সড়ক থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রাটি কিছু দূর যাওয়ার পর হুলারহাট সড়কের ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়ের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে নেতা-কর্মীরা সামনে এগোতে চাইলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

অর্থাৎ, ভিডিওটি ২০২৩ সালের পিরোজপুরের বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার।

সুতরাং, ২০২৩ সালে পিরোজপুরে বিএনপির সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ভিডিওকে ২৪ অক্টোবরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বিএনপি ও জামায়াতকে জড়িয়ে আসিফ নজরুলের মন্তব্য দাবিতে আমার দেশের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের একটি ছবি যুক্ত করে ‘দেশের শান্তি নষ্ট করতেছে বিএনপি, জামায়াতের থেকে তাদের রাজনীতি শিখা উচিত’ শিরোনামে দৈনিক আমার দেশের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, দাবি প্রচার করা হয়েছে, আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘দেশের শান্তি নষ্ট করতেছে বিএনপি, জামায়াতের থেকে তাদের রাজনীতি শিখা উচিত’।

উল্লিখিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘দেশের শান্তি নষ্ট করতেছে বিএনপি, জামায়াতের থেকে তাদের রাজনীতি শিখা উচিত’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং আমার দেশও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আমার দেশের ফটোকার্ড ডিজাইনের আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুতে ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে আমার আমার দেশের লোগো এবং ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২২ অক্টোবর, ২০২৫ লেখা উল্লেখ পাওয়া যায়। 

উক্ত সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আমার দেশের ফেসবুক পেজে গত ২২ অক্টোবর আসিফ নজরুলের বক্তব্য সংবলিত তিনটি (,,) ফটেকার্ড প্রচার করা হয়েছে। তবে আলোচিত দাবি সংবলিত কোনো ফটোকার্ডের সন্ধান মেলেনি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজের ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির বাক্যে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল পরিলক্ষিত হয়।

Comparison: Rumor Scanner

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নামে প্রচারিত এই মন্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আসিফ নজরুলের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো পোস্টের সন্ধান মেলেনি।

সুতরাং, অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে উদ্ধৃত করে ‘দেশের শান্তি নষ্ট করতেছে বিএনপি, জামায়াতের থেকে তাদের রাজনীতি শিখা উচিত’ শিরোনামে আমার দেশের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র