Home Blog Page 17

ইসলামী ব্যাংকের কর্মী ছাঁটাই প্রসঙ্গে প্রথম আলোর নামে প্রচারিত এই প্রতিবেদনটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, বেসরকারি আল-আরাফাহ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামীসহ কিছু ব্যাংকের কয়েকশো কর্মী চাকরিচ্যুত হন। ২০২১ সাল থেকে ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে বেশ কিছু অনিয়ম রয়েছে অভিযোগ করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়, যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে তাদের রেগুলাইজ করার জন্যে পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু তাতে যারা অনুত্তীর্ণ হয় শুধু তাদেরই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ‘ইসলামী ব্যাংকে বড় ধরনের ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দাবিতে এমন একটি প্রতিবেদনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে (আইবিবিএল) বড় ধরনের ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ২৯ আগস্ট ২০২৫ তারিখে অভ্যন্তরীণভাবে একটি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে মূলত ২০১৭ সালের পর নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের চাকরি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এ পরীক্ষার ভিত্তিতে অন্তত ৬ হাজার কর্মকর্তা ছাঁটাইয়ের মুখে পড়তে পারেন। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো এমন কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, প্রথম আলোর লোগো ব্যবহার করে তৈরি করা ভুয়া এই প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটটি ফেসবুক প্রচার করা হয়েছে। তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্যে ইসলামী ব্যাংকের আগামী ২৯ তারিখে পরীক্ষা নেওয়ার একটি তথ্য গণমাধ্যমে পাওয়া যায়। 

অনুসন্ধানের ‍শুরুতে আলোচিত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার। পর্যালোচনায় দেখা যায়, এতে প্রতিবেদনটি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ নেই। প্রথম আলোর ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ বা ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো প্রতিবেদনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত প্রতিবেদনের বেশ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত প্রতিবেদনের ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে। পাশাপাশি উভয় প্রতিবেদন প্রকাশের প্যার্টানও ভিন্ন।

Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে ইসলামী ব্যাংকের পরীক্ষার বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খবরের কাগজের ফেসবুক পেজে গত ২০ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে তাদেরকে কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে একটি চিঠি জারি করা হয়েছে। যাতে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ‘কনডাকশন অফ স্পেশাল কম্পিটেন্সি অ্যাসেসমেন্ট ফর এমপ্লয়িজ অফ দ্য ব্যাংক’ শীর্ষক একটি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়। উক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি বলেও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়। এছাড়াও প্রতিবেদনটি বলা হয়, আগামী ২৯ আগস্ট পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। 

অর্থাৎ, ইসলামী ব্যাংকের কর্মী ছাঁটাই দাবিতে প্রথম আলো এমন কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, ‘ইসলামী ব্যাংকে বড় ধরনের ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি’ শিরোনামে প্রথম আলোর নামে প্রচারিত প্রতিবেদনটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসকে অবৈধ ঘোষণা করে কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা গ্রহণের দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার উজ জামান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবৈধ ঘোষণা করে কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেছে দাবিতে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবৈধ ঘোষণা করে সেনাপ্রধান কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেননি। প্রকৃতপক্ষে, সাংবাদিক মাসুদ কামাল ও কাজী রুনার ভিডিওর সাথে ভারতীয় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মনজ দাসের অপ্রাসঙ্গিক একটি ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার এতে মোট তিনজন ব্যক্তির ভিডিও ক্লিপ দেখতে পায়। যার একটি সাংবাদিক মাসুদ কামালের, আরেকটি সাংবাদিক কাজি রুনার এবং অপরটি মনজ দাস নামের একজন ভারতীয় ব্যক্তির। ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া মাসুদ কামালের ক্লিপটিতে পুরো ভিডিও জুড়ে কোনো অডিও নেই। তাই সেটি এই দাবির সাথে প্রাসঙ্গিক নয়। কাজী রুনা ২৬ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানির বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করেন। তিনি জানান যদি শুনানি পক্ষে যায় তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফেরার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তিনি তার বক্তব্যের কোথাও সেনাপ্রধানের ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবৈধ ঘোষণা করা কিংবা কোর্ট মার্শাল করে ক্ষমতা গ্রহণ করার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। অপরদিকে মনজ দাসকে ভারত, পাকিস্তান, চীন এবং বাংলাদেশের ভৌগোলিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করতে শোনা যায়। যার সাথে আলোচিত দাবি সম্পর্কিত নয়। 

ভিডিও যাচাই ১

ভিডিওর শুরুতে দেখতে পাওয়া কাজী রুনার ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে News Analysis by Kazi Runa নামের তার ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যালোচনা করে গত ২১ আগস্ট কে হচ্ছেন পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ? ইউনূসকে কি বিদায় নিতেই হচ্ছে ? শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত কাজী রুনার ফুটেজের সাথে উক্ত ভিডিওর বক্তব্য ও তার পোশাকের হুবহু মিল রয়েছে। মূলত, ডিজিটাল প্রযুক্তি সহায়তায় এই ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে তা আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে তাকে ২৬ আগস্ট ৬ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানির বিষয় নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করতে শোনা যায়। তবে তার সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

ভিডিও যাচাই ২

পরবর্তীতে ভিডিওতে দেখতে পাওয়া মনজ দাস নামের ব্যক্তির ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে তার নামের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে CALCUTTA DIALOGUES নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের সন্ধান পাওয়া যায়। উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটির বিবরণী থেকে জানা যায়, চ্যানেলটি মনজ দাস নামের ওই ব্যক্তির।

Screenshot: Youtube 

পরবর্তীতে চ্যানেলটি পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ২২ আগস্ট চ্যানেলটিতে Rangpur in the north, Chittagong in the south: Ready forces শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর বক্তব্য ও মনজ দাসের পোশাকের সাথে আলোচিত ভিডিওতে তার ব্যবহৃত ফুটেজের বক্তব্য ও পোশাকের হুবহু মিল রয়েছে। আলোটিত ভিডিওটিতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে আগের ভিডিওর মত এটির ব্যাকগ্রাউন্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় পরিবর্তন করা হয়েছে। ভিডিওটিতে তাকে ভারত, পাকিস্তান, চীন এবং বাংলাদেশের ভৌগোলিক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করতে শোনা গেলেও আলোচিত দাবির বিষয়ে কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি।

সেনাপ্রধান প্রধান উপদেষ্টার বৈধতা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করলে কিংবা কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা গ্রহণের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হতো। তবে গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, কয়েকটি অপ্রাসঙ্গিক ফুটেজ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে আলোটিক ভিডিওটি তৈরি করে অধিকতর ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল ও শিরোনাম ব্যবহার করে কোনোপ্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টাকে অবৈধ ঘোষণা করে সেনাপ্রধান কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চট্টগ্রামে টানেলের ভেতর থেকে ১৩৯ টি লাশ পাওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে দাবি প্রচার করা হয়েছে, “চট্টগ্রাম ট্যানেলের ভিতরে ভয়াবহ অবস্থা… ট্যানেল খুলে দেওয়ার সাথে সাথে ১৩৯ টি লাশ উদ্ধার করা হয়… আরো অনেকগুলো নাকি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তেছে! সকল রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের দিকে রওনা দিয়েছে”।

এরূপ দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টটি ১ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে টানেলের ভেতর থেকে ১৩৯টি লাশ পাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে এত বেশি পরিমাণে লাশ পাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচারিত হতো।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলের নিকটবর্তী আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, টানেলে সম্প্রতি একটি লাশ পাওয়ার বিষয়েও তিনি কোনো খবর পাননি।

এছাড়াও, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ নুরুল আলম আশেকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও নিশ্চিত করেন সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে একসাথে এত পরিমাণ লাশ বা মুমূর্ষু ব্যক্তি আসার দাবি সত্য নয়।

উল্লেখ্য যে, পোস্টটিতে একটি ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে তবে ভিডিওটিতেও কোনো লাশ বা উল্লেখযোগ্য কিছু দেখা যায়নি এবং ভিডিওটি ভ্রমণের সময় ধারণ করা বলে প্রতীয়মান হয়।

সুতরাং, সম্প্রতি চট্টগ্রামে ট্যানেলে ১৩৯ টি লাশ পাওয়ার দাবিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Statement of Md Monir Hosen, OC, Anowara Police Station, Chittagong
  • Statement of Nurul Alam Ashek, In-charge, Chittagong Medical College Police outpost
  • Rumor Scanner’s analysis

মাহফুজা খানম ডাকসুর প্রথম ও একমাত্র নারী ভিপি নন

নানা সময়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর প্রথম বা একমাত্র নারী ভিপি মাহফুজা খানম। গত ১২ আগস্ট মাহফুজা খানমের মৃত্যুর খবরে আলোচিত দাবিটি ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন : সময় টিভি, ইনডিপেনডেন্ট টিভি, চ্যানেল আই, আরটিভি, এখন টিভি, দেশ টিভি (ইউটিউব), দীপ্ত টিভি, বাংলা ভিশন, ডিবিসি নিউজ, প্রথম আলো, কালবেলা, যুগান্তর, সমকাল, নয়া দিগন্ত, মানবজমিন, কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, আজকের পত্রিকা, ইত্তেফাক, ইনকিলাব, দেশ রূপান্তর, ডেইলি সান, মানবকণ্ঠ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, ঢাকা পোস্ট, ঢাকা ট্রিবিউন, বাংলাদেশ জার্নাল, দ্য রিপোর্ট লাইভ, ডেইলি অবজারভার, দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক আজাদী, রূপালী বাংলাদেশ, ঢাকা প্রকাশ, ভিউজ বাংলাদেশ, সারাবাংলা, খবর সংযোগ, অর্থসূচক, বাহান্ন নিউজ, ক্যাম্পাস টাইমস, ডেল্টা টাইমস, সংবাদ অনলাইন, বাংলাদেশ টাইমস, দৈনিক করতোয়া, একুশে সংবাদ, সময়ের খবর, সময়ের আলো, প্রবাস খবর, বৈশাখী নিউজ২৪, বিডিলাইভ২৪, নিউজনাও২৪, নিউজজোন বিডি, বিডি টুডে, প্রতিদিনের বাংলা, ভোরের চেতনা, সকাল সন্ধ্যা, আলোকিত বাংলাদেশ, বার্তা২৪, বিবার্তা২৪, নাগরিক নিউজ, ভিওডি বাংলা, স্বপ্নের বাংলাদেশ, বাংলাদেশের আলো, রেড টাইমস, দৈনিক পরিবার, দৈনিক দিগন্তর, সংবাদ জমিন, আদালত বার্তা, বাংলাদেশ চিত্র, অনন্যা

আলোচিত দাবিতে ২০২১ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন : দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের এক্স অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের টিকটক অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ইউটিউব অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও, মাহফুজা খানম নিজেও আলোচিত দাবিটি একাধিকবার করেছেন। দেখুন এখানে এবং এখানে

গণমাধ্যম ছাড়াও নানা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজ থেকেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

গণমাধ্যম ছাড়াও নানা এক্স অ্যাকাউন্ট থেকেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

গণমাধ্যম ছাড়াও নানা টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এরূপ দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহফুজা খানম ডাকসুর প্রথম বা একমাত্র নারী ভিপি বা সহ-সভাপতি নন। প্রকৃতপক্ষে মাহফুজা খানমের আগে ১৯৬০-৬১ শিক্ষাবর্ষে বেগম জাহানারা আখতার ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

অনুসন্ধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে স্থাপিত একটি অনার বোর্ডের বিষয়ে খোঁজ পাওয়া যায় যেখানে এযাবতকালের ডাকসুতে নির্বাচিত সব ভিপি (সহ-সভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) এর নাম ও তাদের নির্বাচিত হওয়া শিক্ষাবর্ষের উল্লেখ রয়েছে। পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানারের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির সহায়তায় উক্ত অনার বোর্ডের ছবি সংগ্রহ করা হয়।

Source : DUCSU Building 

বোর্ডটিতে থাকা তালিকাতে দেখা যায়, ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মাহফুজা খানম এবং সেসময় তার সাথে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মোরশেদ আলী। তালিকাটি পর্যবেক্ষণ করলে জানা যায়, মাহফুজা খানমের আগে ১৯৬০-৬১ শিক্ষাবর্ষে আরেকজন নারী ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। মাহফুজা খানমের আগে নির্বাচিত হওয়া সেই নারী ভিপির নাম বেগম জাহানারা আখতার এবং সেসময় তার সাথে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন অমূল্য কুমার।

পাশাপাশি, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘জাগোনিউজ২৪’ এর ওয়েবসাইটে ‘ডাকসুর ভিপি-জিএস হয়েছিলেন যারা’ শিরোনামে ২০১৯ সালের ১১ মার্চে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতেও ১৯৬০-৬১ শিক্ষাবর্ষে ভিপি হিসেবে ‘বেগম জাহানারা আক্তার’ এর নাম পাওয়া যায়। 

Courtesy : Songramer Notebook

এছাড়া, পুরোনো পত্রিকার অনলাইন সংরক্ষণাগার সংগ্রামের নোটবুক এর ওয়েবসাইটে ১৯৮৫ সালের ১৩ ডিসেম্বরে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বিচিত্রার একটি পেপার কাটিংয়ের ছবি পাওয়া যায়। ছবিটিতে ১৯২৪ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ডাকসুর ভিপি ও জিএসের তালিকা পাওয়া যায়। তালিকাটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মাহফুজা খানম এবং তার আগে ১৯৬০-৬১ শিক্ষাবর্ষে ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম জাহানারা আখতার।

উল্লিখিত তথ্যপ্রমাণ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে মাহফুজা খানম ডাকসুর একমাত্র বা প্রথম নারী ভিপি ছিলেন না।

সুতরাং, মাহফুজা খানম ডাকসুর একমাত্র এবং প্রথম নারী ভিপি ছিলেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জনগণকে ডাকাত অভিহিত করে পুলিশ সদস্যের বক্তব্যের প্রদানের এই ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি

সম্প্রতি, কথিত এক পুলিশ কর্মকর্তা একটি আলোচনা সভায় জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ের সাথে শ্রীলঙ্কার বিপ্লব পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনা করে, ‘শ্রীলংকায় বিপ্লবের পর দুর্নীতি গায়েব। আর বাংলাদেশে বিপ্লবের পর বিপ্লব নিজেই গায়েব। শ্রীলংকার সরকার ছিল চোর। আর জনগণ ছিল ভালো। তাই তারা অল্প সময়ের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াইছে। অপরদিকে বাংলাদেশের সরকার ছিল চোর। আর জনগণ হচ্ছে ডাকাত। তাই এদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর কোন চান্সই নেই।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ের সাথে শ্রীলঙ্কার তুলনা করে কথিত পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য প্রদানের ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম বা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো পুলিশ কর্মকর্তার এমন বক্তব্য প্রদানের তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এরূপ বক্তব্য প্রদান করলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার কথা। 

পরবর্তীতে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে PIAL HASAN POLASH নামের একটি টিকটক আইডিতে গত ১২ আগস্ট আলোচিত ভিডিওটি প্রচারিত হতে দেখা যায়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রচারকারী ভিডিওটিকে এআই জেনারেটেড কনটেন্ট বলে লেভেল করেছেন। অর্থাৎ, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

Screenshot: Tiktok

উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনা করে এতে একই ধরনের বেশকিছু ভিডিও দেখতে পাওয়া। এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। এছাড়াও অ্যাকাউন্টটির (polash___ai) ইউজারনেমেও এআই শব্দটি উল্লেখ রয়েছে। 

Screenshot: Tiktok 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা ভিডিওকে কথিত পুলিশ কর্মকর্তার জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ের সাথে শ্রীলঙ্কার তুলনা করে বক্তব্য প্রদানের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • PIAL HASAN POLASH Tiktok Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ দাবিতে কোটা আন্দোলনের পুরোনো ভিডিও প্রচার 

গতকাল ২৪ আগস্ট (রবিবার) সংসদীয় এলাকার সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তির শুনানিতে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ-র হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে “এই মুহুর্তে ইসিতে রুমিন ফারহানাকে হেনস্থা করায়, ঢাকায় প্রতিবাদ মিছিলে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর পুলিশের ব‍্যপক লাঠিচার্জ এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ” শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Rashed Khan’ নামক এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে থাকা দৃশ্যের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ভিডিওটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি যৌথভাবে হামলা চালানোর দৃশ্যের।

উল্লিখিত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ‘Admission Informer’ নামক ফেসবুক পেজে একই তারিখে অর্থাৎ গত বছরের ১৭ জুলাই আলোচিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই পোস্টটি থেকেও একই তথ্য জানা যায় এবং স্থান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল রোডের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। 

সুতরাং, ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

তৌহিদ আফ্রিদির পুরোনো ভিডিওকে সম্প্রতি তার বাবার গ্রেফতারের পর কান্নার দৃশ্য দাবিতে প্রচার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও আন্দোলনকারীদের হত্যার অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার এক মামলায় গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান ও আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির বাবা মো. নাসির উদ্দিন সাথী গ্রেফতার হয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে ‘বাবাকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় তৌহিদ আফ্রিদি কাঁদছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এই প্রতিবেদন লেখা অবধি আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি ৮০ লক্ষ বারের বেশি দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২৪ হাজার জন এতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। 

এছাড়া অনুরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে এবং এখানে। 

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনসুন্ধানে জানা যায়, মাইটিভির চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন সাথী গ্রেফতার হওয়ার পর তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি কান্নাকাটি করে কোনো ভিডিও বার্তা দেননি। প্রকৃতপক্ষে, এটি ২০২২ সালে তৌহিদ আফ্রিদির করা একটি লাইভ ভিডিও ফুটেজের অংশ।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির বেশকিছু কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রিয়ারি তারিখে ‘Laika’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির ৭ মিনিট সময় হতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে জানা যায়, ‘লাইকা’ ছিল তাদের বাসায় পালিত একটি কুকুর। সেসময়ে কুকুরটির অসুস্থতা এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি লাইভ ভিডিও প্রচার করেন তৌহিদ আফ্রিদি। 

এছাড়া, মো. নাসির উদ্দিন সাথী গ্রেফতার হওয়ার পরে তৌহিদ আফ্রিদির এরূপ কোনো ভিডিও প্রকাশ করলে দেশিয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হতো। তবে, গণমাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ দেখা যায়নি। 

উল্লেখ্য, গতকাল ২৪ আগস্ট কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে বরিশাল থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সুতরাং, মো. নাসির উদ্দিন সাথী গ্রেফতার হওয়ার পর তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি কান্নাকাটি করছেন দাবিতে ২০২২ সালের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

ভারত থেকে শেখ হাসিনার সরাসরি ভাষণের দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, ভারত থেকে শেখ হাসিনা এই প্রথম সরাসরি কথা বলেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “প্রিয় দেশবাসী ও আমার বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে যারা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন এবং আমাদের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মী এবং দেশবাসী আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আমি শ্রদ্ধা জানাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, শ্রদ্ধা জানাই জাতীয় চার নেতার প্রতি, ৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষ মা-বোনের প্রতি”

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও এখানে (আর্কাইভ)। এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজারের ও অধিক বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০১৭ সালে ভারত সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল “PM Modi & Bangladesh PM Sheikh Hasina at the Joint Press Statements in New Delhi” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। ভিডিওটি দুইটি বিশ্লেষণে দৃশ্যের মিল পাওয়া গেলেও ভিডিওটি দুইটির অডিওতে অমিল পরিলক্ষিত হয়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে শেখ হাসিনাকে দুইদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। তবে ভিডিওর কোথাও শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আলোচিত ভাষণ দিতে দেখা যায়নি।

অর্থাৎ, প্রযুক্তির সহায়তায় শেখ হাসিনার প্রেস ব্রিফিংয়ের এই ভিডিওটির অডিও পরিবর্তন করেই আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল “India – Bangladesh Joint Statement during the State Visit of Prime Minister of Bangladesh to India (April 8, 2017)’ শিরোনামে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত বিবৃতি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, জ্বালানি, পরিবহন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি–সংক্রান্ত একাধিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

পরবর্তীতে, অন্তর্জাতিক গণমাধ্যম DW বাংলার ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল ‘দিল্লিতে পৌঁছেছেন শেখ হাসিনা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের এপ্রিলে তিনদিনের সরকারি সফরে ভারত যান বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনা ভারত থেকে ভাষণ দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

ঢাকাস্থ পাকিস্তানের দূতাবাসে হামলার নয়, এই ভিডিওটি সিলেটে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার

গত ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে সরকারি সফরে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার। ২৪ আগস্ট (রোববার) দিবাগত রাতে তিনি ঢাকা ছাড়েন। ২৩ আগস্ট রাত থেকে ‘এই মুহূর্তে পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফরের প্রতিবাদে, ঢাকায় হাজার হাজার সাধারণ জনগণ পাকিস্তানি দূতাবাসে হামলা ও ঘেরাও করেছে। পাকিস্তানের হাইকমিশনার অবরুদ্ধ।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দারের ঢাকা সফরের প্রতিবাদে ঢাকায় পাকিস্তানের দূতাবাসে হামলা কিংবা ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটেনি। পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে অবরুদ্ধও করে রাখা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, সিলেটে গত ১৫ আগস্ট যাত্রীছাউনি ভাঙা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Giyas Sany II নামক ফেসবুক প্রোফাইলে গত ১৫ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সেদিন সন্ধ্যা থেকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে পাপড়ি রেস্টুরেন্ট এলাকায় যাত্রী ছাউনি নিয়ে কথা কাটাকাটি জের ধরে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। ভিডিওটি উক্ত ঘটনার চিত্র। 

পরবর্তীতে, মূলধারার গণমাধ্যম আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে গত ১৬ আগস্ট ‘যাত্রীছাউনি ভাঙা নিয়ে সিলেটে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট রাতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে যাত্রীছাউনি ভাঙা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই পক্ষ। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের লালাবাজার এলাকায় এই সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে একটি রেস্তোরাঁ ভাঙচুর করা হয়।

জানা গেছে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে নর্দমার নির্মাণকাজ চলছে। বাজারের মসজিদের পাশে থাকা একটি যাত্রীছাউনি ভাঙা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ছাউনি ভেঙে নর্দমা নির্মাণের পক্ষে ছিলেন লালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান চৌধুরী ও তাঁর সমর্থকেরা। আর ছাউনি রেখে কাজ করার পক্ষে বাজারের ব্যবসায়ী ও মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ জুবায়ের আহমদ ও তাঁর পক্ষের লোকজন। জুবায়ের আহমদ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হলেও তাঁর কোনো পদপদবি নেই। বাজারে তাঁর ‘পাপড়ি রেস্টুরেন্ট’ নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমিনুর রহমান ও জুবায়ের আহমদ দুজনই আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। এ কারণে তাঁদের আগে থেকেই রেষারেষির সম্পর্ক ছিল। গতকাল (১৫ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে ছাউনি ভাঙা নিয়ে দুই পক্ষের বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন আহত হন। এ সময় জুবায়ের আহমদের রেস্টুরেন্টটি ভাঙচুর করা হয়।

সুতরাং, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরের প্রতিবাদে পাকিস্তানের দূতাবাসে হামলা ও ঘেরাও করা হয়েছে দাবিতে সিলেটের লালাবাজারে যাত্রী ছাউনি ভাঙা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

পক্ষে নয়, জুমার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের ভিডিওটি ছাত্রলীগকে উপহাস করে তৈরি

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন ফাতিমা তাসনিম জুমা। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাতিমা তাসনিমের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে ফাতিমাকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। ভিডিওটি প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে “শিবিরের গুপ্ত নেত্রী ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ফাতেমা তাসনিম জুমা। শিবিরের উন্নতি দেখে ভালো লাগলো। যাহাই শিবির তাহাই লীগ, শিবির ডাকসুতেও লীগ পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে।” 

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, ফাতিমা তাসনিম জুমা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী এবং ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটিও সেই ছাত্রলীগ সমর্থনের প্রেক্ষাপটের।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফাতিমা তাসনিম জুমার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের ভিডিওটির সাথে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রকৃতপক্ষে, জুমা গত ১৪ জুলাই ছাত্রলীগকে ব্যঙ্গ বা বিদ্রুপের উদ্দেশ্যে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ফাতিমা তাসনিম জুমার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া একটি ভিডিওরও সংযুক্তি পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে জুমা লিখেন, “একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক নিজেকে সার্কাজম বা আইরনি করেও কখনো রাজাকার দাবী করতে পারে না। যারা আজকে এইসব স্লোগান দিচ্ছে তাদের চিনে রাখুন। দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, পিন্ডি যাবে রাজাকার। পরের লাইন ভিডিওতে।” এছাড়াও, পোস্টটির মন্তব্য বিভাগে তিনি মন্তব্য করেন, “আমারে বোম মারলেও মুখ দিয়ে একটা স্লোগান বের করাইতে পারে না সবাই মিলে। আর একমাত্র যে স্লোগান বের হইসে সেটা হইলো এটা। সো আমি নিজেকে নিঃসংকোচে সাচ্চা দেশপ্রেমিক দাবী করতে পারি।”

অর্থাৎ, এ থেকে বুঝা যায় যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি তিনি ছাত্রলীগের সমর্থনে দেননি বরং সংগঠনকে ব্যঙ্গ করে স্লোগানটি দিয়েছিলেন।

এছাড়া, তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে  বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষে কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি। বরং, গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগের ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তাকে ক্যাম্পেইন করতে দেখা যায়। ফাতিমা তাসনিম জুমা বর্তমানে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ নামের একটি সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব পদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইনকিলাব মঞ্চ ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান অনুপ্রাণিত একটি সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম যে অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।

এছাড়া, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে ফেসবুক কাভার ফটো দিতে দেখা যায়।

সুতরাং, ছাত্রলীগকে ব্যঙ্গ বা বিদ্রুপ করে দেওয়া ফাতিমা তাসনিম জুমার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের ভিডিওকে ছাত্রলীগের সমর্থনে দেওয়া স্লোগানের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র