Home Blog Page 18

মুরাদনগরে সাম্প্রতিক ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার ভুক্তভোগীর বক্তব্য দাবিতে পুরোনো ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই প্রেক্ষিতে অন্তত আজ (২৯ জুন) থেকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী মেয়ের বিএনপি নেতা জয়নাল মোল্লাকে দায়ী করে বক্তব্য দেওয়ার ভিডিও। উল্লেখ্য যে, উক্ত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত মেয়েকে জয়নাল মোল্লার নাম উল্লেখসহ কীভাবে যোগাযোগে এসেছেন তাও বলতে শোনা যায়।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মুরাদনগরের গত ২৬ জুনের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীর বক্তব্যের নয় বরং, উক্ত ঘটনা ঘটার অন্তত ২৪ দিন আগে গত ০১ জুন থেকেই উক্ত ভিডিওটি অনলাইনে বিদ্যমান আছে। এবং আলোচিত জয়নাল মোল্লার বিরুদ্ধে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত ভুক্তভোগী শান্তা দেবনাথ ২০২৪ সালে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘স্টার মুরাদনগর’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ০১ জুনে “জয়নাল মোল্লা এই হিন্দু মেয়েটাকে কি করতে চেয়েছিল তার নিজ মুখ থেকে শুনুন -জয়নাল মোল্লা হচ্ছে মাসুদ গ্রুপের লোক বাংগরা থানা” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি মুরাদনগরের সাম্প্রতিক ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনা ঘটার অন্তত ২৪ দিন আগের। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি মুরাদনগরের সাম্প্রতিক ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়।

পরবর্তীতে ভিডিওতে উল্লিখিত জয়নাল মোল্লা এবং শান্তার নামের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ‘আমোদ’ নামক একটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে “স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার নারীকে উত্যক্তের ভিডিও আলোচনায়” শীর্ষক শিরোনামে গত ১৭ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার এক নারীকে  শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মুরাদনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জয়নাল মোল্লার বিরুদ্ধে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করা হয়। … মামলার অভিযোগে জানানো হয়, ভুক্তভোগী নারী গত দুই বছর যাবত তাঁর বাবার বাড়ি মুরাদনগরে থাকেন। গেলো দুই তিন মাস যাবত একটি পার্লার দিয়ে তিনি ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। এদিকে জয়নাল মোল্লা বিভিন্ন সময় ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দেয়। গেলো ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯ টার দিকে জয়নাল মোল্লা  শোবার রুমে প্রবেশ করে নারীকে ধর্ষণের  চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে  আহত হন। এ সময় তার মা এসে পড়লে জয়নাল মোল্লা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ওই নারী ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে জয়নাল মোল্লাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়ে জয়নাল মোল্লা বলেন, তিনি দলীয় কোন্দলের শিকার। এমন ঘটনার সাথে তিনি সম্পৃক্ত না।”

এছাড়াও, ‘ভোরের সূর্যোদয়’ নামে আরেকটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটেও এ বিষয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, জয়নাল মোল্লার বিরুদ্ধের মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দাবি করে গত ২০ সেপ্টেম্বর এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। এসময় “মানববন্ধনের বক্তারা অভিযােগ করে বলেন, নিখিল দেবনাথের স্ত্রী মঞ্জুর রানী দেবনাথ ও মেয়ে শান্তা দেবনাথ খারাপ চরিত্রের মানুষ। এরা এর আগেও বিভিন্ন লোকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় তাদের ধর্ষনের মিথ্যা অভিযোগ করতেন এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পতিপক্ষ মুরাদনগর উপজেলার সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জয়নাল মোল্লার বিরুদ্ধে ধষর্নের চেষ্ঠার মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।”

এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জয়নাল মোল্লাকে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রাথমিক সদস্য সচিব পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে দাবিতেও ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে জয়নাল মোল্লার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের মুরাদনগরের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনারও আগেকার সময়ের। এছাড়াও, সাম্প্রতিক মুরাদনগরের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত মূল আসামীর নাম ফজর আলী যাকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও, মুরাদনগরের ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মো. সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোথাও জয়নাল মোল্লার নাম পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, কুমিল্লার মুরাদনগরে গত ২৬ জুনের ধর্ষনের অভিযোগের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীর বক্তব্যের ভিডিও দাবিতে পুরোনো ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সিরাজগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় গণধোলাইয়ের শিকার ব্যক্তি বিএনপি নেতার ছেলে নয়

সম্প্রতি, ‘বিএনপির সংসদ সদস্যের ছেলে ধর্ষণ করতে গিয়ে কট খাইছে সিরাজগঞ্জ’- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

প্রচারিত পোস্টগুলোতে গণধোলাইয়ের শিকার হওয়া এক ব্যক্তির ছবিও যুক্ত রয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ধর্ষণ করতে গিয়ে জনতার হাতে গণধোলাই খাওয়া ব্যক্তি বিএনপির কোনো সাবেক সংসদ সদস্যের ছেলে নয়। বরং, গণধোলাই খাওয়া ব্যক্তির বাবা প্রয়াত আনোয়ার হোসেন। তিনি কখনো বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন না। 

অনুসন্ধানে দেশ বুলেটিন নামক একটি সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইটে গত ২৭ এপ্রিল ‘বেলকুচি উপজেলায় ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী’- শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবির সাথে প্রচারিত পোস্টগুলোতে থাকা গণধোলাইয়ের শিকার ব্যক্তির ছবি ও আশেপাশের ব্যক্তির ছবির মিল রয়েছে। 

Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল সকাল ৮ টায় বেলকুচি উপজেলার চালা বানিয়াপাড়া গ্রামের ৫ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে গাছ থেকে আম পেড়ে দেওয়ার কথা বলে নদীর ধারে কাশবনের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন উপজেলার চালা সাত রাস্তার মোড় এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ আজমীর (২৫)। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে মোঃ আজমীরকে এলাকাবাসী ধরে গণধোলাই দেয়। 

অর্থাৎ, ধর্ষণের চেষ্টাকারী মোঃ আজমীরের বাবা প্রয়াত আনোয়ার হোসেন। 

এছাড়া একাধিক গণমাধ্যমেও ধর্ষণের চেষ্টাকারী মোঃ আজমীরের বাবা প্রয়াত আনোয়ার হোসেন বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলো পড়ুন- বিডিনিউজ২৪, ঢাকা পোস্ট এবং দেশ রূপান্তর। 

প্রতিবেদনগুলোতে আনোয়ার হোসেনের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

অন্যদিকে আনোয়ার হোসেন নামের কোনো ব্যক্তি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি এলাকায় বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন কিনা তা জানতে অনুসন্ধান করে আলোচিত দাবির সত্যতা মেলেনি। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, পঞ্চমষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিদুল্লাহ খান এবং অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এম মোজাম্মেল হক বেলকুচি তথা সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর দুইজনের বাহিরে কেউ বেলকুচি উপজেলায় বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হননি।

সুতরাং, সিরাজগঞ্জের বিএনপির সংসদ সদস্যের ছেলে ধর্ষণ করতে গিয়ে গণধোলাই খেয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আমেরিকার সাবমেরিন ইরানের হাতে বন্দী দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

ইরান-ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাতের প্রেক্ষিতে, যুদ্ধ থামানোর নাম করে আমেরিকার সাবমেরিন ইরানের সীমানায় ঢুকে পড়েছিল এবং সেটি এখন ইরানের হাতে বন্দী শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাত সংশ্লিষ্ট নয় বরং, ২০১৯ সালে মার্কিন কোস্ট গার্ড কর্তৃক একটি মাদকবাহী সাবমেরিন আটক করার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে নিউ ইয়র্ক সিটির স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ‘FOX 5 New York’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই প্রচারিত ‘Coast Guard Intercepts Drug-Smuggling Submarine’ শীর্ষক ক্যাপশনের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড কাটার মুনরো (Coast Guard Cutter Munro)- -এর সদস্য কর্তৃক ২০১৯ সালের জুনে হাজার হাজার পাউন্ড কোকেন বহনকারী একটি সাবমেরিন আটক করার দৃশ্য।

এছাড়াও সেসময় একই দাবিতে দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন – এখানে, এখানে, এখানে

অর্থাৎ, এই ভিডিওটির সাথে সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কোনো সম্পর্ক নেই।

সুতরাং, ২০১৯ সালে মার্কিন কোস্ট গার্ড কর্তৃক একটি মাদকবাহী সাবমেরিন আটক করার ভিডিওকে সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইরানের সীমানা থেকে ইরান কর্তৃক আমেরিকার সাবমেরিন আটক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলের আবাসিক এলাকায় ইরানের হামলার ভিডিওকে নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টারে হামলা দাবিতে প্রচার

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে “ব্রেকিং নিউজ: অকল্পনীয় কিছু ঘটে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজ জানাচ্ছে ইরান মিসাইল হামলা চালিয়ে তে*ল *আ*বিবের কিরিয়া নিউক্লিয়ার রিসার্স সেন্টার পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। এটাকে আ*মে*রিকার প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পে*ন্টা*গণের সমতুল্য মনে করা হয়। এখন পর্যন্ত মিসাইল হামলায় হি*জরাই-লের নেভি চিফ কমান্ডার জেনারেল হালেভি অলিভ এবং কয়েক ডজন হিজ-রে*লী সৈন্য নিহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বেশি করে শেয়ার করে ইসলামের বিজয় জানিয়ে দেন।”  ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটিতে প্রদর্শিত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের দৃশ্যটি ইসরায়েলের তেল আবিবের নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টারের নয় বরং, ইসরায়েলের আবাসিক এলাকায় হামলার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি কিছু কী-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চে ‘A.Z’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৫ জুন “دنیا کے اندر سب سے مضبوط اور محفوظ سمجھے جانے والے اسرائیلی شہر تل ابیب کے اب سے تھوڑی دیر قبل کے” শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম “NEWS9 Live” এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৫ জুন “Israel’s Attack on Iran Escalates: Missile Strikes Kill 4, Dozens Injured in Bat Yam & Tamra | News9” শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি একই ঘটনায় ধারণকৃত ভিন্ন ফ্রেমের ভিডিও। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম “The New York Times” এর ওয়েবসাইটে গত ১৫ জুন “Israel Wakes Up to More Casualties After Second Night of Fighting” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “১৫ জুন ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ধ্বংসাবশেষে রবিবার সকালে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় শহর রেহোভোটের রাস্তাগুলো ভরে যায়। দেশজুড়ে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে, এবং অনেকেই আহত হয়েছে, কারণ কিছু ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে রেহোভোট, তেল আবিবের দক্ষিণে বাট ইয়াম এবং উত্তরের আরব শহর তামরায় আঘাত হানে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শক্তিশালী বিস্ফোরণের ফলে বহু মানুষ আহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই হালকাভাবে আহত। বাট ইয়ামে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধ্বংস হয়ে যায়, যেখানে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং অনেক আহত হয়েছে বলে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।”

এ বিষয়ে সেসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম একই তথ্যসংবলিত সংবাদ (,,) প্রচার করেছে।

সুতরাং, ইসরায়েলের আবাসিক এলাকায় ইরানের হামলার ঘটনাকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলের তেল আবিবের নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টারে হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

ফিনল্যান্ডের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি দল জুলাই আন্দোলনকে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা বলে মন্তব্য করেননি

0

সম্প্রতি, ফিনল্যান্ডের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ জুলাই আন্দোলন এবং পাঁচ আগস্টের তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জুলাই আন্দোলনকে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা বলে মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিসহ কিছু তথ্য সম্বলিত একটি পোস্ট  ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে এবং উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে ফেসবুকের একাধিক গ্রুপে তা শেয়ার করা হয়েছে। 

পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে

“ব্রেকিং নিউজ
বাংলাদেশ জুলাই আন্দোলন এবং পাঁচ আগস্টের তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জুলাই আন্দোলনকে পরিকল্পিত  সন্ত্রাসী হামলা বলে মন্তব্য করেছেন ফিনল্যান্ড গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিনিধি দল।
ইরানের এসেম্বলিতে এক বৈঠক চলাকালে এই মন্তব্য করেন প্রতিনিধি দলটি।
আমি টেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছি
আমরা একটি রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ সুপরিকল্পিত বৈঠক করতে সক্ষম হয়েছি” (বানান অপরিবর্তিত) 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত আরও কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিনল্যান্ডের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনকে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা বলে মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, চলতি বছরের মার্চ মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচএইচ শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদের সুইডেন সফর ও শীর্ষ মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া দাবি প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, ছবিতে থাকা নারীর নাম তামান্না আক্তার ইয়াসমান নয়, তিনি হলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমি। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ১৩ মার্চে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত দাবিতে থাকা প্রথম ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from X by Rumor Scanner

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ ও সুইডেনের মন্ত্রী বেঞ্জামিন ডুসা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করছেন। 

পরবর্তীতে, উক্ত বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরের ভেরিফাইড ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একই তারিখে অর্থাৎ গত ১৩ মার্চে প্রকাশিত পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত বৈঠকের একাধিক ছবি শেয়ার করা হয়েছে। 

Screenshot from Instagram by Rumor Scanner

উক্ত পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ সুইডেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পল জনসনের সঙ্গে বৈঠক করে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করছেন। 

এছাড়া, আবুধাবিস্থ সুইডেন দূতাবাদের অফিশিয়াল ফেসবুক একাউন্ট থেকে উক্ত বৈঠকের বিষয়ে একাধিক ছবি পোস্ট করা হয়। যেখানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোও দেখতে পাওয়া যায় এবং ক্যাপশন থেকে একই তথ্য জানা যায়। 

এই প্রতিবেদনগুলোর কোথাও কথিত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টের কথিত দাবির বিষয়ে গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, আলোচিত ছবিতে থাকা নারীর নাম রিম আল হাশিমি। তিনি বর্তমানে আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির ছবি ব্যবহার করে ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আ. লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। যে বিষয়ে ফ্যাক্ট-স্টোরি প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

সুতরাং, চলতি বছরের মার্চ মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচএইচ শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদের সুইডেন সফরের ছবিকে সাম্প্রতিক সময়ে ফিনল্যান্ডের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলন এবং তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনা সংক্রান্ত বৈঠকের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ইরানের হামলার ভয়ে ইসরায়েলিদের পালানোর দৃশ্য দাবিতে গাজার ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাতের প্রেক্ষিতে ইরানের হামলার ভয়ে ইসরায়েলের মানুষজন পালিয়ে যাচ্ছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের হামলার ভয়ে ইসরায়েলের মানুষদের পালানোর ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফায় অবস্থিত ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রে ফিলিস্তিনিদের ছুটে যাওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার ভিডিওটিতে @ibrahim.st7 শীর্ষক একটি ওয়াটার মার্ক দেখতে পায়। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে  ibrahim.st7 ইউজারনেমের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১২ জুন প্রচারিত প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও উভয় ভিডিওতেই একই ওয়াটার মার্ক দেখতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি ভিডিওর শিরোনাম ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওটি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফা অঞ্চলে ধারণ করা হয়েছে। এতে গাজাবাসীকে ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রে ছুটে যেতে দেখা যাচ্ছে বলেও শিরোনামে উল্লেখ করা হয়। তবে পাশাপাশি এটিও বলা হয় যে, সহায়তা কেন্দ্রে পৌঁছানোর প্রতিটি মুহুর্তে তাদের মৃত্যুর সম্মুখিন হতে হচ্ছে।

পরবর্তীতে উক্ত ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, এটি ইব্রাহিম আলসালআউত নামের একজন ফিলিস্তিনি ভিডিওগ্রাফারের অ্যাকাউন্ট। উক্ত অ্যাকাউন্টের প্রোফাইলে গণমাধ্যমের ভেস্ট পরিহিত তার একটি ছবিও দেখতে পাওয়া যায়।

অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে সেদিন প্রচারিত একই স্থানের আরও দুটি ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। ভিডিওগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। ভিডিওগুলোর শিরোনাম ইংরেজিতে অনুবাদের মাধ্যমে জানা যায়, সেদিন ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায়। ভিডিওগুলোতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিও দেখতে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিবিসি এর ওয়েবসাইটে গত ১২ জুন Gaza: Dozens killed while seeking aid in Gaza, hospitals say শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে রাফায় অবস্থিত সহায়তা কেন্দ্রের কাছেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১৪ জন নিহত হয়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের হামলার ভয়ে ইসরায়েলিদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার নয়।

সুতরাং, গাজার রাফায় ত্রাণ সহায়তা নেওয়া জন্যে ফিলিস্তিনিদের ছুটে যাওয়া ভিডিওকে ইরানের হামলার ভয়ে ইসরায়েলিদের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মোসাদের গুপ্তচরকে বিস্ফোরক ট্রাকসহ গ্রেফতারের দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে “তে*হ*রান-কোম হাইওয়েতে পিকআপ ট্রাকে বি*স্ফো*রক বহনকারী একজন মো*সা*দ এজেন্টকে ধাওয়া করে আটক করছে ই*রা*নি নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী।” ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক ইসরায়েলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গুপ্তচরকে গ্রেফতারের কোনো ঘটনার নয় বরং, ইরানি পুলিশের মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি কিছু কী-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চে “police.1400iran” নামক ইনস্টাগ্রাম এ্যাকাউন্টে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি “৫০০ কেজি মাদক উদ্ধার হল আপেলের বোঝার নিচ থেকে… #উদ্ধার #ক্ষমতাবান_পুলিশ #এপ্রিকট #ফল #নিসান”” (অনূদিত) শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত   ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় ইরানি গণমাধ্যম “Vista” এর ওয়েবসাইটে “ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে বিস্তারিত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় নি।  তবে ক্যাপশনে বলা হয়, “পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার চাপযুক্ত কিছু দৃশ্য; ৫০০ কেজি মাদক জব্দ করা হয়েছে যার উপর ছিল এপ্রিকটের বোঝা” (অনূদিত)

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীর মোসাদ গুপ্তচরকে গ্রেফতারের নয়।

সুতরাং, ইরানি পুলিশের মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ভিডিওকে মোসাদ গুপ্তচরকে বিস্ফোরক ট্রাকসহ গ্রেফতারের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরব সাগরে মার্কিন সেনাসহ যুদ্ধজাহাজ আটক দাবিতে ৯ বছরের পুরোনো ভিডিও প্রচার 

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাতের প্রেক্ষিতে হুতিরা আরব সাগরে সৈন্যসহ আমেরিকান যুদ্ধ জাহাজ আটক করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হুতিরা আরব সাগরে সৈন্যসহ আমেরিকান যুদ্ধ জাহাজ আটক করেছে শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং, ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ভুল করে ইরানের জলসীমায় ঢুকে পড়লে ইরানি টহল বাহিনী কর্তৃক জাহাজসহ মার্কিন সেনাদের আটকের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘CNN’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি “Video shows American sailor apologizing for Iran incident” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে একটি মার্কিন নৌবাহিনীর দল ভুলবশত ইরানের জলসীমায় ঢুকে পড়লে, ইরানি বাহিনী তাদের আটক করে। ইরানি টিভিতে একজন নৌ সেনার পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশের ভিডিও দেখানো হলেও, মার্কিন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে এই ঘটনার ভিডিও ও বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, উভয় পক্ষের কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে নৌ-সেনারা দ্রুত মুক্তি পায়। 

উপরোক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় দুইটি (CNN, CBS News) সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। ভিডিও প্রতিবেদন দুইটিতে ব্যবহৃত দৃশ্যের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা দৃশ্যের মিল রয়েছে।

এছাড়া, প্রতিবেদন দুইটির বিস্তারিত বিবরণীতেও একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের নয়।

সুতরাং, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাতের মধ্যে হুতিরা আরব সাগরে সৈন্যসহ আমেরিকান যুদ্ধ জাহাজ আটক করেছে দাবিতে প্রায় নয় বছর পূর্বের ভিন্ন ঘটনায় ধারণ করা একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

ইরানের হামলায় ইসরায়েলি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য দাবিতে ইরাকের পুরোনো ভিডিও প্রচার

ইরান-ইসরায়েল সাম্প্রতিক সময়ের সংঘাতের প্রেক্ষিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে একদল দমকল বাহিনীকে ওই ভবনের আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের হামলায় ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ভবনের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত এপ্রিল মাসে ইরাকের তিকরিত শহরের একটি বাণিজ্যিক ভবনের অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইরাকের মসুল শহর ভিত্তিক একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর গণমাধ্যম mosul insta এর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২৬ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিও এবং আলোচিত ভিডিওটি হুবহু একই না হলেও উভয় ভিডিওতে দেখতে পাওয়া আগুন লাগা ভবনের মিল রয়েছে। একইসাথে উক্ত ভিডিওতেও দমকল বাহিনীকে ভবনের আগুন নেভাতে দেখা যাচ্ছে। তবে উক্ত ভিডিওটি আলোচিত ভিডিওর থেকে কিছুটা দূর থেকে ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে জানা যায়, এটি তিকরিতের আল-জোহর নামের এলাকায় অবস্থিত একটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও। উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভবনের ভেতরে আটকা পড়ে ৪ জন মারা যাওয়ার সংবাদও পাওয়া গিয়েছে বলে পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়। তিকরিত ইরাকের একটি শহর।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে samarratv1 ইউজারনেমের আরেকটি ইরাকি গণমাধ্যমের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২৬ এপ্রিল একই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রকাশিত আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওটিও ভিন্ন আরেকটি এঙ্গেল থেকে ধারণ করা হয়েছে। তবে এখানেও আলোচিত ভিডিওর ভবনের সাথে উক্ত ভবনের মিল দেখতে পাওয়া যায়।

এছাড়া, ইরাকি গণমাধ্যম 984media এর ওয়েবসাইটে একই ঘটনায় Fire at Tikrit furniture shops kills three, injures six শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল শুক্রবার রাতে মধ্য তিকরিতের আল-জোহর সড়কের আল-আমিন ফার্নিচারের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যাতে তিনজন নিহতসহ ছয়জন আহত হন। উক্ত অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের বিষয়ে দমকল বাহিনী নিশ্চিত হতে পারেনি বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওর সাথে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কোনো সম্পর্ক নেই।

সুতরাং, ইরাকে অগ্নিকাণ্ডের ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিওকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ইরানের পাহাড়ের ভেতর থেকে মিসাইল বের করার দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে পাহাড়ের ভেতর থেকে ট্রাকে করে মিসাইল বের করছে ইরান এমন একটি দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইরানের পতাকাবাহী কিছু ট্রাক মিসাইল নিয়ে পাহাড়ের ভেতর থেকে বের হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন নয়া দিগন্ত (ফেসবুক)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাহাড়ের ভেতর থেকে ট্রাকে করে ইরানের মিসাইল বের করার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে কিছু অসঙ্গতি নজরে পড়ে। ট্রাকে উপরের পতাকাগুলো অস্বাভাবিকভাবে উড়ছে। রাস্তায় এবং পাহাড়ের বুক ঘেঁষে থাকা ঘাসগুলোও অবাস্তব মনে হচ্ছে। পাশাপাশি, ট্রাকগুলোতে চালকের অস্তিত্ব নেই।

Screenshot: Facebook  

এছাড়া, ভিডিওটি Cantilux.com নামক এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) দ্বারা তৈরি ছবি ও ভিডিও শনাক্তকরণ ওয়েবসাইটে যাচাই করা হলে ৮৪% এআই দ্বারা তৈরি বলে মত দিয়েছে।   

Screenshot: Cantilux.com

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে পাহাড়ের ভেতর থেকে ট্রাকে করে ইরানের মিসাইল বের করার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

  • Cantilux.com- Website 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

হালনাগাদ/ Update

২৯ জুন, ২০২৫ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে উক্ত দাবিতে কতিপয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত প্রতিবেদনকে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।