Home Blog Page 68

ছাত্রদল ও যুবদলকে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেননি সারজিস আলম

0

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ছাত্রদল ও যুবদলকে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ফটোকার্ডটিতে ‘ব্যক্তির দায় দল নেবে না, দল শুধু চাঁদার ভাগ নেবে। এই চাঁদা আবার লন্ডন থেকে রেমিট্যান্স হয়ে বাংলাদেশে আসবে। আমাদের এখন একটাই দাবি ছাত্রদল ও যুবদলকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’ শীর্ষক কথাগুলোকে তার মন্তব্য দাবিতে উপস্থাপন করা হয়। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সারজিস আলম ছাত্রদল ও যুবদলকে নিষিদ্ধ করতে হবে জানিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, গত ০৮ জুলাই চট্টগ্রামের পটিয়া থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় এনসিপির ফেসবুক পেজে প্রচারিত সারজিস আলমের বক্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিটি সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সারজিস আলমের ছাত্রদল কিংবা যুবদলকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে মন্তব্য করার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সারজিস আলমের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং পেজ পর্যালোচনা করেও এমন কোনো পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার এতে এনসিপির লোগো দেখতে পায়। তাই ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির অফিসিয়াল পেজটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। অনুসন্ধানে এনসিপির ফেসবুক পেজে গত ২ জুলাই সারজিস আলমের বক্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের সারজিস আলমের বক্তব্য ব্যতীত বাকি সকল উপাদানের হুবহু মিল রয়েছে। উভয় ফটোকার্ডে পটিয়া থানার নেমপ্লেটের জলছাপও দেখতে পাওয়া যায়। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এনসিপির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের ‘ইউনিফর্মধারী হোক কিংবা সিভিল; খুনিদের খুনের বিচার না হলে সব থানা ধীরে ধীরে পটিয়া হয়ে উঠছে এবং উঠবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই খুনিদের বিচার করতে হবে।’ শীর্ষক বক্তব্য পরিবর্তন করে এর স্থলে আলোচিত বক্তব্যটি যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতারের ইস্যুকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের পটিয়ায় থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। যাতে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। 

সুতরাং, ছাত্রদল ও যুবদলকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে সারজিস আলমের মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র

  • National Citizen Party – NCP Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া হাজিদের উদ্বৃত্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার ঘটনা দেশে এই প্রথম নয়

0

গত ১৩ জুলাই (২০২৫) সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২০২৫ সালের হজ ব্যবস্থাপনা, অর্জন ও আগামী হজ মৌসুমের পরিকল্পনা ইস্যুতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া ৪ হাজার ৯৭৮ জন হাজিকে তাদের হজ প্যাকেজের বেঁচে যাওয়া ৮ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ১৮৩ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তার এই ঘোষণা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়।

উক্ত বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রচারিত সংবাদের ফটোকার্ড শেয়ার করে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা দাবি করছেন, হাজিদের বেঁচে যাওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে এটিই প্রথম।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া হাজিদের উদ্বৃত্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও ২০২২ ও ২০২৩ সালে সরকারের পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

এই বিষয়ে জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে কালবেলার ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট ‘বেঁচে যাওয়া টাকা হাজিদের ফেরত দিচ্ছে সরকার’ শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাতে জানা যায়, ২০২৩ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পবিত্র হজ পালনকারী হাজিদের বেঁচে যাওয়া সর্বমোট ৪৬ হাজার ৭২৫ টাকা ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। সেসময়ে অনেক হাজি এ টাকা উত্তোলন করেছেন বলেও জানানো হয়।

বাংলানিউজ২৪.কম, কালের কন্ঠ ওয়েবসাইটেও ২০২৩ সালে হাজিদের টাকা ফেরত দেওয়ার ঘোষণার তথ্য পাওয়া যায়।

এছাড়াও, জাগোনিউজ২৪.কম এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ‘হজে বেঁচে যাওয়া অর্থ ফেরত পাবেন সরকারি হাজিরা’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে থেকে জানা যায়, ২০২২ সালেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া হাজিদের বেঁচে যাওয়া অর্থ প্যাকেজ অনুযায়ী ফেরতের ঘোষণা দিয়েছিল সরকার।

এছাড়াও, বাংলা ট্রিবিউন, ডেইলি স্টার, ঢাকা মেইল এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালে হাজিদের টাকা ফেরত দেওয়ার ঘোষণার তথ্য পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়াদের বেঁচে যাওয়া টাকা ফেরত দেওয়া এই প্রথম নয়। 

সুতরাং, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়া হাজিদের উদ্বৃত্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার ঘটনা দেশে এই প্রথম দাবিতে সামজিক মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা নন

0

গত ১০ জুলাই সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় নরসিংদীর নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস এর ৩২০ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছেন। 

এরই প্রেক্ষিতে, উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লা- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শতভাগ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত নরসিংদির নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা নন বরং, প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা থার্মেক্স গ্রুপের কর্ণধার ব্যবসায়ী আবদুল কাদির মোল্লা। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নন। 

অনুসন্ধানের শুরুতে শতভাগ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত নরসিংদির নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস স্কুলটির ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত স্কুলের ওয়েবসাইটে থাকা স্কুলটির চেয়ারম্যানের চেহারার সাথে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার চেহারার মধ্যে অমিল দেখা যায়। 

Photo Comparison By Rumor Scanner 

এছাড়া, স্কুল টির প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদির মোল্লার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, জামায়াতের নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০ টা ০১ মিনিটে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। অন্যদিকে, নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল কাদির মোল্লা এখনো বেঁচে আছেন এবং সম্প্রতি স্কুলের শিক্ষার্থীদের শতভাগ জিপিএ-৫ পাওয়া নিয়ে তিনি গণমাধ্যমে মন্তব্যও করেছেন।

উল্লেখ্য, থার্মেক্স গ্রুপের কর্ণধার আবদুল কাদির মোল্লার নরসিংদিতে নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস স্কুল এবং আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ নামক দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। 

সুতরাং, ২০২৫ সালের অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত নরসিংদির নাছিমা কাদির মোল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড হোমস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বিএনপিকে চাঁদা না দেয়ার কারণে নয়, ভিডিওর ব্যক্তিকে মারধর করা হয়েছে মোবাইল চুরির দায়ে

সম্প্রতি, “পিরোজপুরে বিএনপিকে চাঁদা না দেয়ায় দোকানদারকে দোকান থেকে বের করে এনে বর্বরোচিত ভাবে নির্যাতন করা হয়। বর্তমানে এটাই বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র” শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ৬ লক্ষবার দেখা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিএনপিকে চাঁদা না দেওয়ায় পিরোজপুরে এক ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের এই দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওতে প্রদর্শিত মারধরের শিকার ব্যক্তি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার পুরাতন পরিবহন বাস কাউন্টারের পাশে অবস্থিত এক ব্যক্তির দোকানে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লে তাকে মারধর করা হয়। আলোচিত ভিডিওটি সেই মুহূর্তেই ধারণ করা। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গার প্রেসক্লাবের সদস্য শেখ রাজুর  ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৩০ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর শুরুর কিছু অংশের হুবহু মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতেই একই ব্যক্তিকে মারধর করতে দেখা যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভার পুরাতন পরিবহন বাস কাউন্টারের পাশে অবস্থিত আলম নামের এক ব্যক্তির দোকানে চুরি করতে গিয়ে ভিডিওর ব্যক্তি হাতানাতে ধরা পড়েন। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে Mehedi Hasan নামের আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ভিন্ন কোণ থেকে ধারণ করা একই ঘটনার আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতেও চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। 

একই ভিডিওটি চলতি বছরের মে মাসে ‘পিরোজপুরের চাঁদা না দেওয়ায় একজন হিন্দু ব্যবসায়ীকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মারধর করছে’ দাবিতেও প্রচার করা হয়েছিল। সে সময়ে বিষয়টিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো রিউমর স্ক্যানার। 

বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে সেসময় আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত শামীমের সাথে যোগাযোগ করেছিল রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রতিত্তোরে তিনি জানিয়েছিলেন, ভিডিওতে প্রদর্শিত ব্যক্তির নাম মোঃ দ্বীন ইসলাম ঘরামী। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল দ্বীন ইসলাম ঘরামী ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আলম মিঞার দোকান থেকে মোবাইল চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন। তখন দোকানের মালিক আলম মিঞা অভিযুক্ত দ্বীন ইসলাম ঘরামীকে মারধর করেন। তবে পরবর্তীতে স্থানীয়দের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি। 

অর্থাৎ, চাঁদার দাবিতে নয় বরং মোবাইল চুরির দায়ে মোঃ দ্বীন ইসলাম ঘরামী নামক উক্ত ব্যক্তিকে মারধর করা হয়েছে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। 

সুতরাং, বিএনপিকে চাঁদা না দেওয়ায় পিরোজপুরে এক ব্যবসায়ীকে নির্যাতন করা হয়েছে দাবিতে চুরির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মারধরের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • SK Raju: Facebook Video 
  • Mehedi Hasan: Facebook Video  
  • Yasin Arafat Shamim: Statement 
  • Rumor Scanner’s Previous Fact-check

মিটফোর্ডে খুনের শিকার ইসলাম ধর্মাবলম্বী সোহাগকে হিন্দু দাবিতে অপপ্রচার

0

গত ৯ জুলাই মিটফোর্ডে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক আঙ্গিকে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন।

এএরূপ দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন: এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টাইমস, ইন্ডিয়া টিভি নিউজ, ইন্ডিয়া টুডে, উইয়ন, নিউজ১৮, টিভি৯ বাংলা, এবিপি লাইভ, মিরর নাও, ইটি নাও, ভাস্কর, জি নিউজ, এনটিভি তেলেগু, ইটিভি ভারত, ওয়ান ইন্ডিয়া, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড, কলকাতা টিভি, কলকাতা ২৪×৭, জুম নিউজ, লাইভ হিন্দুস্তান, হিন্দু পোস্ট, এনটি নিউজ, জাগরণ, নিউজ২৪ অনলাইন, পাঁচজন্য, জনসত্ত, পাঞ্জাব কেসারি

এছাড়া, ধর্ম অবমাননার দায়ে জামাত কর্মীদের দ্বারা হিন্দু ব্যবসায়ী সোহাগকে খুন করা হয়েছে দাবিও এক্সে প্রচার করা হয়েছে। এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৯ জুলাই মিটফোর্ডে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হওয়া ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বী নন বরং, তার পুরো পরিবারসমেত তিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘দ্য ডেইলি স্টার’ এর ওয়েবসাইটে “Sohag laid to rest beside his mother’s grave in Barguna” শীর্ষক শিরোনামে গত ১২ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সোহাগকে বরগুনার ঢালুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুরে তার মায়ের পাশে গত ১১ জুলাইয়ে দাফন করা হয়েছে। তার মায়ের নাম আলেয়া বেগম, বাবার নাম আইয়ুব আলী৷ সোহাগের এক বোনের নাম ফাতেমা এবং তার স্ত্রীর নাম লাকি বেগম। এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ভিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যুগান্তর’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সোহাগের মেয়ের নাম সোহানা। 

এছাড়া, মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘সময় নিউজ’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায়, সোহাগের ছেলে সন্তানের নাম সোহান। অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘রাইজিংবিডি’ এর ওয়েবসাইটে গত ১২ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে তড়িঘড়ি করে ছোট পরিসরে সোহাগের জানাজা নামাজ আদায় করা হয়।

অর্থাৎ, নিহত হওয়া ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ ও তার পরিবারের সদস্যের নাম পর্যবেক্ষণ করে তাদের সকলেই মুসলিম বলে প্রতীয়মান হয়। পাশাপাশি, দাফনের আগে সোহাগের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং জানাজার নামাজ শেষে মুসলিম রীতির অনুরূপ সোহাগকে তার মা আলেয়া বেগমের কবরের পাশে দাফন করা হয়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সোহাগ মুসলিম ও মুসলিম পরিবারের সন্তান ছিলেন। 

এছাড়া, ধর্ম অবমাননার দায়ে জামাত কর্মীদের দ্বারা হিন্দু ব্যবসায়ী সোহাগকে খুন করা হয়েছে এরূপ দাবি এক্সে প্রচার করা হলেও মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদনের সূত্রে এ ঘটনায় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ততার কথা জানা গেছে। মামলার তদন্তকারী ও স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল কারণ চাঁদাবাজি। নিহত লাল চাঁদ একসময় যুবদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

সুতরাং, গত ৯ জুলাই মিটফোর্ডে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হওয়া ভাঙারি ব্যবসায়ী ইসলাম ধর্মাবলম্বী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে ভারতীয় গণমাধ্যমে হিন্দু ধর্মাবলম্বী দাবি করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নাটোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারিকে ফেন্সিডিলসহ আটকের দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি ‘নাটোর জেলা জামাতের সহ সেক্রেটারি, মধু নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশের হাতে কট।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে ফেন্সিডিল বহনের অভিযোগে আটককৃত ব্যক্তি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নাটোর জেলার সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল হাকিম নন। প্রকৃতপক্ষে, উল্লিখিত অভিযোগে আটককৃত ভিন্ন একজন ব্যক্তির ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে ‘নাটোর সময়’ শীর্ষক একটি লোগো লক্ষ্য করা যায়। 

এই তথ্যের সূত্র ধরে ‘নাটোর সময়’ নামক নাটোর ভিত্তিক একটি ফেসবুক পেজে গত ০৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি ক্যাপশনে ‘একজন হালাল ব্যবসায়ী!ফে’ন্সিডিল বহনকালে আ’ট’ক।’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভিডিওতে বা ক্যাপশনে কোথাও আটককৃত ব্যক্তিকে নাটোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি বলে দাবি করা হয়নি এবং আটককৃত ব্যক্তির কোনো পরিচয়ও তুলে ধরা হয়নি। 

বরং, পোস্টটির মন্তব্যের ঘরে পেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘এই ভিডিও নিয়ে কিছু অসাধু ব্যাক্তি জেলা জামায়াতের সেক্রেটারির নাম লিখে ফেসবুকে অপপ্রচার করছে। নাটোর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারির নামে এমন কোন নিউজ তো করা হয়নি। আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।’ একই তথ্য গত ০৫ ফেব্রুয়ারি একটি ফটোকার্ড পোস্টের মাধ্যমেও জানানো হয়। 

পরবর্তীতে, নাটোর সময়আজকের দিগন্ত নামক ফেসবুক পেজে নাটোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হাকিমের সম্প্রতি একটি সমাবেশে বক্তব্য প্রদানের ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেছে। ভিডিওগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রতীয়মান হয় যে, আলোচিত ভিডিওটিতে ফেন্সিডিল বহনের অভিযোগে আটককৃত ব্যক্তি এবং নাটোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি দুজন ভিন্ন ব্যক্তি। 

Comparison: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, মাদকসহ আটক এই ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া গেলেও এটি নিশ্চিত যে, এই ব্যক্তি নাটোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হাকিম নন।

সুতরাং, ফেন্সিডিল বহনের অভিযোগে নাটোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আটক হওয়ার দাবিটি মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে নতুন সেনাপ্রধানের বার্তা দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “মুদির কোলে বসে ডায়লগ দেয়া হাসু আপাকে নতুন সেনাপ্রধানের নতুন বার্তা”। ভিডিওটিতে সেনা সদস্য সদৃশ একজন ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “যিনি মোদির কোলে বসে বলেন টুপ করে দেশে ঢুকবেন। আপনি আসেন, পিলখানা, শাপলা, জুলাইয়ের হিসেব পই পই করে হবে। We stand United to defend our nation’s sovereignty, prepared for any challenge that may arise”। উল্লেখ্য যে, ৮ সেকেন্ড পর ভিন্ন ফ্রেমে একজন ব্যক্তিকে কথা বলতে শোনা যায়।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ দেওয়া হয়নি। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানই এখনো সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আছেন। এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি কোনো সেনাকর্মকর্তার বক্তব্যের আসল ভিডিও নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি ভুয়া ভিডিওকে আসল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামানের পর নতুন করে কোনো সেনাপ্রধান নিযুক্ত হওয়ার বিষয়েও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে এরূপ কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।

পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস, সেনাবাহিনীর পোশাক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

Screenshot of Claimed Video

এছাড়া, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ ও এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টের লেবেল দেখতে পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ১৬ সেকেন্ড এবং ৮ সেকেন্ড পর ফ্রেম পরিবর্তন হতে দেখা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য নতুন সেনাপ্রধানের নতুন বার্তার দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Veo 
  • Rumor Scanner’s analysis

খিলক্ষেতে বিএনপি কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার ভিডিওটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের, জামায়াত কিংবা এনসিপির হামলার নয়

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজধানীর খিলক্ষেতে বিএনপির কার্যালয় অফিস গুঁড়িয়ে দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটি প্রচার করে কিছু ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, সাধারণ জনতা অফিসটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আবার কিছু কিছু ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, জামায়াত ও এনসিপি অফিসটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

সাধারণ জনতা গুড়িয়ে দিয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

জামায়াত-এনসিপি গুড়িয়ে দিয়েছে দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

জামায়াত-এনসিপি গুড়িয়ে দিয়েছে দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর খিলক্ষেতে বিএনপির কার্যালয় অফিস গুঁড়িয়ে দেওয়ার সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি কিংবা সাধারণ জনতার সম্পৃক্ততা নেই। প্রকৃতপক্ষে, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে গত জুন মাসে বিএনপির এই কার্যালয়টি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪.কম -এর লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৬ জুন ‘খিলক্ষেতে বিএনপির অফিস গুড়িয়ে দিলো যৌথবাহিনী’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর নির্দিষ্ট অংশের মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি সান পত্রিকার বাংলা সংস্করণের ইউটিউব চ্যানেলেও গত ২৬ জুনখিলক্ষেতে বিএনপির অফিস গুড়িয়ে দিলো যৌথবাহিনী’ শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওতেও একই ঘটনার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে প্রথম আলো এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত ‘রাজধানীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দখলমুক্ত হলো রেলের ৫ একর জমি’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে খিলক্ষেত রেলগেট পর্যন্ত রেললাইনের দুপাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠা দুই শর মতো স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত এই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে রেলওয়ের পাঁচ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।’

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ‘উচ্ছেদ অভিযান তদারককারী বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে খিলক্ষেত রেলগেট পর্যন্ত রেললাইনের দুপাশ ঘেঁষে টিন, বাঁশ ও কাঠ দিয়ে আশপাশে দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছিল। ট্রেন চলার সময় মনে হতো এই বুঝি অবৈধ স্থাপনার সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা লাগছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রেললাইনের দুই পাশের স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করা হয়।বিকেল পৌনে চারটা পর্যন্ত চলা এই উচ্ছেদ অভিযানে সেনাবাহিনী, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ও পুলিশ অংশ নেয়। রেলওয়ের বুলডোজার এ সময় একের পর এক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়। উচ্ছেদ হওয়া স্থাপনার মধ্যে একটি স্থানীয় বিএনপি ও একটি জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয় ছিল। এ ছাড়া রেলের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একটি মন্দিরও রয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের পর রেলের জমি অবৈধভাবে দখল করে টিন ও বাঁশ দিয়ে একটি মন্দির গড়ে তোলা হয়। কিছুদিন ধরে সেটি পাকা করার কাজ শুরু করা হয়েছিল।’

অর্থাৎ, খিলক্ষেতে বিএনপির কার্যালয় গুড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাধারণ জনতা, জামায়াত কিংবা এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। 

সুতরাং, গত জুন মাসের শেষের দিকে খিলক্ষেতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে স্থানীয় বিএনপি কার্যালয় গুড়িয়ে দেওয়ার ভিডিওকে সম্প্রতি বিএনপির প্রতি ক্ষোভ থেকে জামায়াত, এনসিপি ও সাধারণ জনতা খিলক্ষেতের বিএনপির কার্যালয় গুড়িয়ে দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যশোরে বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে লালমনিরহাটের পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ৯ জুলাই রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে হত্যা করার ঘটনায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের দলের সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জায়গা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন বিরোধী কর্মসূচি পালিত হতে দেখা যায়। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, যশোরে বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, যশোরে বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে লালমনিরহাট জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে যশোরের বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার ফুটেজটির ১৬ সেকেন্ডে LALMONIRHAT শীর্ষক লেখা দেখতে পায়।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Lalmoni POST নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।  

ভিডিওটি বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার এই ভিডিওটি লালমনিরহাটের। ভিডিওটি ৮ নভেম্বর প্রচার করা হলেও ঘটনাটি সেবছরের ২৯ অক্টোবর ঘটে। বিবরণীতে দাবি করা হয়, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে শ্রমিক লীগের এক নেতা নিহত হলে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেয়। উক্ত ভিডিওটি ছাড়াও চ্যানেলটিতে সেদিনের ঘটনার আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটে বিএনপির কার্যালয়, কেন্দ্রীয় নেতার বাসভবনে হামলা-ভাঙচুর, আগুন শীর্ষক শিরোনামে একই ঘটনায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেদিন সকালে বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে শ্রমিক ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর আলম নামের এক নেতা মারা যান। পরবর্তীতে বিকেলের দিকে একদল লোক জেলা বিএনপির কার্যালয়, দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের বাসভবন ও শ্রমিক দলের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, এ ঘটনায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান অভিযোগ অস্বীকার করেন।

সুতরাং, ২০২৩ সালে লালমনিরহাট বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে যশোরে বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চাঁদাবাজি কাণ্ডে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতির পদত্যাগের দাবিটি ভুয়া

0

আজ ১৩ জুলাই, “চাদাবাজি কান্ডে এবার পদত্যাগ করলেন কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি” ক্যাপশনে একটি দাবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ রানা পদত্যাগ করেননি। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি জানান, আলোচিত দাবিটি ভুয়া।

এছাড়াও, এ বিষয়ে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও আলোচিত দাবিটি ভুয়া নিশ্চিত করে বলেন, “আমি পদেই আছি।”

সুতরাং, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ রানা পদত্যাগ করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Statement of Abdullah Al Maruf, Comilla Correspondent, Bangla Tribune
  • Statement of Nahid Rana, President, Comilla Metropolitan Chhatradal
  • Rumor Scanner’s analysis