Home Blog Page 69

শিবির সভাপতি কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের কথিত অভিযোগের প্রতিবাদের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লা মহানগর শিবিরের সভাপতি কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন’- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনী এবং পুলিশ মিলে ছত্রভঙ্গ করতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনটি ইসলামী ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগর সভাপতি হাসান আহমেদের বিরুদ্ধে নয়। সম্প্রতি শিবিরের এই নেতার বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগও পাওয়া যায়নি। প্রকৃত পক্ষে প্রচারিত ভিডিওটি গত এপ্রিল মাসে কুমিল্লার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের দৃশ্যের। 

অনুসন্ধানে জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

মাছরাঙা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, কুমিল্লায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক ছত্রভঙ্গ করার দৃশ্য এটি। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দৈনিক আমার দেশের ফেসবুক পেজে একই ঘটনার আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে সাংবাদিককে বলতে শোনা যায়, কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী। উক্ত ঘটনার দৃশ্য এটি। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক ইনকিলাবের ওয়েবসাইটে গত ১৬ এপ্রিল “সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে মহাসড়ক ছাড়লো পলিটেকনিকের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা ১২ টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে অবরোধ সরিয়ে নিতে বললে শিক্ষার্থীরা তা না মেনে অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মিলে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে সম্প্রতি কুমিল্লা মহানগর শিবির সভাপতির বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, কুমিল্লা মহানগর শিবির সভাপতি কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের কথিত অভিযোগের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দৃশ্য দাবিতে গত এপ্রিল মাসে কুমিল্লার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দৃশ্য প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বিএনপির প্রতি ক্ষোভ থেকে ফেস্টুন ছেঁড়ার ভিডিও দাবিতে ছাত্রদলের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ব্যানার-ফেস্টুন সরানোর ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক, বিজ্ঞাপনীসহ সকল ধরণের ব্যানার সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। উক্ত ভিডিওটি প্রচার পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, “বিএনপির পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছে! কিছু জায়গায় বিএনপির পার্টি অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে! সারাদেশে বিএনপির বিরুদ্ধে ছাত্রদের বিক্ষোভ জামাত শিবিরের বিক্ষোভ!”

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত ভিডিওটি ২০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটিতে বিএনপির প্রতি ক্ষোভ থেকে ব্যানার ছেঁড়া হয়নি বরং, গত ২২ জুন সিলেটের বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজে বিএনপির সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে নিজেরাই  ব্যানারগুলো সরিয়েছেন। যেখানে দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক সবরকম ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সিলেট ভিত্তিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘লোকাল টাইমস’ এর ফেসবুক পেজে “ছাত্রদলের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বদলে যাচ্ছে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসের চিত্র” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ২৪ জুনে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির নানা দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ শাখার উদ্যোগে ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখসহ আশেপাশের দেয়াল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। অপসারণ করা হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং বিজ্ঞাপনী ব্যানার-ফেস্টুন। এছাড়া, রাস্তার সামনের ফুটপাতের অংশে যারা হকার বসতেন তাদেরকে অপসারণ করা হয়েছে।… রোববার (২২ জুন) দুপুরে ছাত্রদলের কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন।” উল্লেখ্য যে, প্রচারিত ভিডিওটিতে কারো কারো পরনে ছাত্রদলের টি-শার্টও দেখা যায়।

পাশাপাশি অনুসন্ধানে বিয়ানীবাজার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘স্কাই২৪ টিভি’ এর ফেসবুক পেজেও গত ২৩ জুনে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হতে দেখা যায়। 

এছাড়াও, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাহিম হোসেনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনটি ছবির সংযুক্তিসহ গত ২২ জুনে এ বিষয়ে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে তিনি বলেন, “আজকে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে কলেজ প্রাঙ্গনের ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করা হয়। আসুন সচেতনতার পরিচয় দিয়ে আমরা সকলেই কলেজ প্রাঙ্গনে রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যাবসায়িক ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানো থেকে বিরত থাকি।” 

রাহিম হোসেনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের পরিচ্ছন্নতা অভিযানের একটি ভিডিওও পোস্ট গত ১২ জুলাইয়ে প্রচার হতে দেখা যায়। পোস্টটিতে তিনি বলেন, “বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে কলেজ প্রাঙ্গনের ব্যানার অপসারণ করা হয়। তারিখ ২২ জুন ২০২৫ ইংঃ। এখানে দলমত নির্বিশেষে সকল ধরনের রাজনৈতিক, ব্যাবসায়িক ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করা হয়। এই কাজটি করার প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ হচ্ছে কলেজ প্রাঙ্গনের পরিষ্কার – পরিচ্ছন্নতা। বর্তমানে লক্ষ করছি এই কাজের কৃতিত্ব নানা সংগঠন নিতে চাচ্ছে। নানাভাবে ভিন্ন ভিন্ন পেইজ থেকে আইডি থেকে ভিডিও সংগ্রহ করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাই আমি সবাইকে অনুরোধ করবো কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।”

পরবর্তীতে, ভিডিওটি সম্পর্কে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাহিম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি ভিডিওটি সম্পর্কে বলেন, “বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে কলেজ প্রাঙ্গনের ব্যানার অপসারণ করা হয়। তারিখ ২২ জুন ২০২৫ ইংঃ।  এখানে দলমত নির্বিশেষে সকল ধরনের রাজনৈতিক, ব্যাবসায়িক ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করা হয়। ব্যানার অপসারণের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে কলেজ প্রাঙ্গন পরিষ্কার – পরিচ্ছন্ন করা। এখানে বিএনপি, জামাত, গনঅধিকার পরিষদ ইত্যাদি নানা সংগঠনের ব্যানার ছিল। এবং নানা কোচিং সেন্টার, ব্যাবসায়িক ব্যানার ইত্যাদি। বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদল এগুলো নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করে।”

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি গত ২২ জুনের এবং ভিডিওটিতে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে হওয়া পরিচ্ছন্নতা অভিযানের দৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে।

সুতরাং, গত ২২ জুন সিলেটের বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে হওয়া পরিচ্ছন্নতা অভিযানের ভিডিওকে বিএনপির প্রতি ক্ষোভ থেকে ফেস্টুন ছেঁড়ার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নারায়নগঞ্জে বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়

সম্প্রতি, ’নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে বিএনপি অফিসে আগুন’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই পোস্টটি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সিলেট মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমদের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে  ২০২৪ সালের অক্টোবরে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপি কার্যালয়ে দুর্বৃত্তের অগ্নিসংযোগের ঘটনা নিয়ে একাত্তর টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদের একটি অংশ কাট করে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওতে থাকা বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম একাত্তর টিভির লোগোর সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যমটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর ‘মুড়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা | News | Ekattor TV’ শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ১৮ সেকেন্ড অংশ থেকে ২৪ সেকেন্ড অংশের সাথে সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪ ডটকমের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর “রূপগঞ্জে মধ্যরাতে বিএনপি কার্যালয়ে আগুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ০৬ অক্টোবর মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া মঠেরঘাট এলাকায় অবস্থিত মুড়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সেসসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম ইমন গণমাধ্যমে বলেন, রাত আনুমানিক ২টার দিকে দুর্বৃত্তরা কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। এতে কার্যালয়ে থাকা চেয়ার-টেবিলসহ ফ্যান পুড়ে গিয়েছিল। খবর পেয়ে ভোর ৪টার দিকে নেতাকর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন।

সুতরাং, ২০২৪ সালে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

লোহাগড়ায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি জামায়াত নেতা নন, ঢাকা পোস্টের সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জামায়াত নেতা গ্রেফতার” শিরোনামে দেশিয় মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জামায়াত নেতা গ্রেফতার” শিরোনামে ঢাকা পোস্ট কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা পোস্টের ভিন্ন একটি ফটোকার্ড সম্পাদনা করে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ঢাকা পোস্টের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১২ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। 

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে ঢাকা পোস্টের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, ঢাকা পোস্টের ফেসবুক পেজে গতকাল অর্থাৎ ১২ জুলাই প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় যেটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডের তারিখ ও ঢাকা পোস্টের লোগো এবং প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির মিল থাকলেও উভয়ের শিরোনামে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, আসল ফটোকার্ডটির ‘লোহাগাড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার’ শিরোনামের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জামায়াত নেতা গ্রেফতার’ শীর্ষক বাক্য প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, ঢাকা পোস্টের প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্ট ও কালারের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়। 

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ঢাকা পোস্টের ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে  বেলাল উদ্দিন নামক এক মাদরাসা শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১২ জুলাই (শনিবার) ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গতকাল ১৩ জুলাই (রবিবার) একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ঢাকা পোস্ট “লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জামায়াত নেতা গ্রেফতার” শিরোনামে গণমাধ্যমটির আদলে তৈরি ফটোকার্ডটিকে শিরোনাম বিকৃত ও ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে। 

ঢাকা পোস্ট ব্যতীত অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিকে সমর্থন করে এমন কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং গ্রেফতারকৃত ঐ ব্যক্তির কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “লোহাগড়ায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জামায়াত নেতা গ্রেফতার” শিরোনামে ঢাকা পোস্টের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ফাইল জমাদানের দাবিটি  বানোয়াট

0

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলের অবসান ঘটে। সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা, লুটপাট ও সহিংসতা হয়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, “বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ৫ আগস্টের সন্ত্রাসী হামলার ফাইল স্মারক লিপি ফুটেস কপি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী চুং সাং মার্কোং এর হাতে তুলে দিলাম” দাবিতে Tamanna Akhter Yesman নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। পাশাপাশি, উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে ফেসবুকের একাধিক গ্রুপে পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পরবর্তীতে একই দাবি ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হয়। ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ০৫ আগস্টের কোনো ঘটনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রকৃতপক্ষে, চলতি বছরের ০৭ ফেব্রুয়ারি দুবাই এক্সপো পার্কে চীনা ও আমিরাতি তরুণদের মধ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড’ বিষয়ক সংলাপ ও সহযোগিতার লক্ষ্যে সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির সাক্ষাতের সময়ে ধারণকৃত কিছু ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে চীনের সংবাদমাধ্যম China Daily এর ওয়েবসাইটে চলতি বছরের ২১ ফেব্রিয়ারিতে ‘清华学子对话阿联酋国务部长:共话“一带一路”与青年未来’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

চীনা ভাষায় প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২৫ সালের ০৭ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস ‘সিংহুয়া ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ ডায়লগ’ এর অনুশীলন দলের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতের লক্ষ্য ছিল, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের তরুণদের মধ্যে পারস্পরিক সংলাপ ও সহযোগিতার বিষয়ে কাজ করা। এছাড়া, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের অধীনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং টেকসই উন্নয়নের বিষয়গুলো নিয়েও উক্ত সাক্ষাতে আলোচনা হয়েছে।

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিগুলো এবং ক্যাপশনের দাবির সঙ্গে বাংলাদেশ বিষয়ক অথবা ২০২৪ সালের ০৫ আগস্টের ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমান (Tamanna Akhter Yesman) নাম দাবি করে আলোচ্য ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ক্রমাগত ভুল তথ্য প্রচার করতে দেখা যায়। উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত গুজবের বিষয়ে গত ১৯ জুন ফ্যাক্ট-স্টোরি প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, ২০২৪ সালের ০৫ আগস্টের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী চুং সাং মার্কোং এর হাতে ফাইল পৌঁছে দেয়ার মুহূর্ত দাবিতে দুবাই এক্সপো পার্কে সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির সাক্ষাতের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • China Daily: Website News 
  • Rumor Scanner: Fact Story 
  • Rumor Scanner’s analysis  

চাঁদা না দেওয়ায় হাসপাতালে বিএনপির হামলায় জোড়া খুনের দাবিটি মিথ্যা, ভিডিওটি ভারতের

সম্প্রতি, ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে দু’জনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা – এই দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যনার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, এটি ভারতের পাঞ্জাবের একটি হাসপাতালের গত এপ্রিলের ঘটনা। রাজ্যটির মুকান্দপুর গ্রামে অবৈধ খননকে কেন্দ্র করে প্রথমে গ্রামে এবং পরে হাসপাতালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনাকে সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় বিএনপি কর্তৃক দু’জনকে হত্যা করার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, ঠাকুরগাঁওয়ে সম্প্রতি এমন কোনো ঘটনার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের পাতিয়ালা শহর ভিত্তিক একটি স্থানীয় অনলাইন সংবাদ প্ল্যাটফর্ম ‘Patiala City Live’ নামক ফেসবুক পেজে গত ১২ এপ্রিল আপলোডকৃত আলোচিত ভিডিওটির একটি দীর্ঘ সংষ্করণ খুঁজে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় সংবাদ চ্যানেল নিউজএক্স -এর ‘NewsX Live’ ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৩ এপ্রিল ‘Violence at Punjab Hospital: 11 Injured, Staff Attacked in Derabassi | NewsX Report’ ক্যাপশনে ঘটনাটির বিষয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, পাঞ্জাবের ডেরাবাসির মুকান্দপুর গ্রামে অবৈধ খনন বা খনিজ উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে উভয়পক্ষের লোকজন আহত হন। আহতদের চিকিৎসার জন্য ডেরাবাসি সিভিল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে, হাসপাতালের ভেতরেই উভয় পক্ষ আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, এমনকি চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে একে অপরকে আক্রমণ করে।

এছাড়া, ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এর ইউটিউব চ্যানেল ও দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

তাছাড়া, সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে হাসপাতালে  চাঁদা না পেয়ে বিএনপি কর্তৃক দুইজনকে খুন করার দাবির সপক্ষে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভারতের পাঞ্জাবের একটি হাসপাতালের সংঘর্ষের পুরোনো ঘটনাকে সম্প্রতি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁওয়ে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাঁদা না পেয়ে বিএনপি কর্তৃক দু’জনকে হত্যা করা হয়েছে  দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের নয়, এটি নরেন্দ্র মোদীর জাপান সফরের পুরোনো ভিডিও 

0

সম্প্রতি ‘গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে ভারত সরকারের বিশেষ নিরাপত্তায় আগ্রাবাদে আনা হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ত্যাগের পর তাকে নিয়ে এইটি প্রথম বৈঠক করছে ভারত সরকার।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ভারত সরকারের সাথে বৈঠকের জন্য ভারতে আশ্রয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে জি ৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাপানে পৌঁছানোর ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের গুজরাট ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম DeshGujarat এর ইউটিউব চ্যানেলে  ২০২৩ সালের ১৯ মে ‘PM Narendra Modi arrives at Hiroshima Airport for G7 Summit in Japan’ শিরোনাম প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রায় ২১ মিনিট দৈর্ঘ্যের মূল ভিডিওটির ০৩:৫৬ থেকে ০৬:১৫ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে অবতরণ করে থাকা একটি বিমানের দিকে বোর্ডিং সিঁড়ি বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। 

একই বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম Voice of America এর বাংলা সংস্করণের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ২০ মে ‘জি ৭ সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানে পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই ভিডিওচিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোর ক্যাপশনে শেখ হাসিনাকে ‘আগ্রাবাদ’ নামক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আগ্রাবাদ নামে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় একটি গ্রাম রয়েছে, তবে এই জায়গার নিকটবর্তী কোনো বিমানবন্দর নেই। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ‘আগ্রাবাদ’ নামক একটি এলাকা রয়েছে৷ শেখ হাসিনাকে এরমধ্যে কোনো স্থানে নিয়ে যাওয়া হলে তা নিয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে সংবাদ প্রচারিত হওয়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট সূত্রে আলোচিত দাবিতে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, ভারত সরকারের সাথে বৈঠকের জন্য শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানের ভিডিও দাবিতে জি ৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাপান সফরের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভারতীয় শিশু ইকরা খাতুনকে বাংলাদেশি শিশু দাবি করে আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রতারণা

0

সম্প্রতি হার্টের সমস্যাজনিত কারণে একটি বাংলাদেশি শিশু রাজশাহী সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে দাবিতে আর্থিক সাহায্য চেয়ে বিকাশ ও নগদ নাম্বার যুক্ত করে একটি শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী সদর হাসপাতালে ভর্তি বাংলাদেশি শিশু দাবিতে প্রচারিত ছবিটি কোনো বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং, যকৃতের রোগাক্রান্ত একজন ভারতীয় শিশুর ছবি ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া পোস্টের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম Impact Guru এর ফেসবুক পেজে গত ৩০ জুন প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে যুক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত শিশুর ছবিগুলোর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবির শিশুটির নাম ইকরা খাতুন। সে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়, এটি থেকে তার যকৃত অকেজো হয়ে যায়। কেবল জরুরী ভিত্তিতে যকৃত প্রতিস্থাপন তাকে সুস্থ করে তুলতে পারে। তার দরিদ্র বাবা-মায়ের পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে Impact Guru প্লাটফর্মটির মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য চেয়ে তহবিল সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

পরবর্তীতে, Impact Guru এর ওয়েবসাইটে ৮ মাস বয়সী শিশু ইকরার চিকিৎসা জন্য পরিচালিত ডোনেশন ক্যাম্পেইন থেকেও একই ধরণের চিত্র ও  তথ্য পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিগুলো ভারতীয় শিশু ইকরা খাতুনের।

সুতরাং, বাংলাদেশের কথিত হৃদরোগ আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক এবং মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চাঁদপুরে হামলার শিকার খতিবের মৃত্যুর গুজব

0

গতকাল (১১ জুলাই) চাঁদপুর শহরের প্রসেসরপাড়ায় স্থানীয় এক মসজিদের খতিবকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এক ব্যক্তি। হামলার শিকার খতিব মাওলানা নূরুর রহমানকে পরবর্তীতে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার করা হয়। এরই মধ্যে, হামলার শিকার খতিব মাওলানা নূরুর রহমান মারা গেছেন- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁদপুরে নৃশংস হামলার শিকার মসজিদের খতিব মাওলানা নূরুর রহমান মারা যাননি বরং, তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে।

অনুসন্ধানে অনলাইন গণমাধ্যম ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে গতকাল (১১ জুলাই) “পছন্দ হয়নি খতিবের বক্তব্য, মসজিদে ঢুকে কোপাল মুসল্লী”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল (১১ জুলাই) চাঁদপুর সদর উপজেলার প্রফেসর পাড়ায় মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আ. ন. ম. নূরুর রহমান মাদানীকে চাপাতি দিয়ে হামলা করে এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে আহত খতিবকে দ্রুত উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সৈয়দ আহমদ কাজল জানান, আহত স্থানে ১০ থেকে ১২টি সেলাই লেগেছে। তাকে বর্তমানে ওসেক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাখার পর কিছুক্ষণ আগে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

এছাড়া, একই বিষয়ে দেশ টিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গতকাল (১১ জুলাই) চাঁদপুরে হামলার শিকার খতিবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হয়েছে।

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য হামলার শিকার খতিব নূরুর রহমানের ছেলে আফনান তাকির সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। আফনান তাকি জানান, তার বাবা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সুতরাং, চাঁদপুরে হামলার শিকার মসজিদের খতিব নূরুর রহমান মারা যাওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রবিবার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয় 

0

সম্প্রতি, “রবিবার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে এবং সর্বস্তরের জনগণ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করবে সকাল ১১ টায়” শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগামীকাল (রবিবার) দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার সিরাজ উদ-দৌলা খান রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া, দেশব্যাপী খুন ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও এমন কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

অনুসন্ধানে শুরুতে দেশিয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার জনাব সিরাজ উদ-দৌলা খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানার টিমকে জানান, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি গুজব।” 

প্রকৃতপক্ষে, রাজধানীর পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং সারাদেশে চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গতকাল রাত থেকে বিক্ষোভ মিছিল করছে দেচের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তবে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আগামীকাল (রবিবার) দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। 

সুতরাং, রবিবার দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র