শিবির সভাপতি কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের কথিত অভিযোগের প্রতিবাদের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লা মহানগর শিবিরের সভাপতি কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন’- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনী এবং পুলিশ মিলে ছত্রভঙ্গ করতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনটি ইসলামী ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগর সভাপতি হাসান আহমেদের বিরুদ্ধে নয়। সম্প্রতি শিবিরের এই নেতার বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগও পাওয়া যায়নি। প্রকৃত পক্ষে প্রচারিত ভিডিওটি গত এপ্রিল মাসে কুমিল্লার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের দৃশ্যের। 

অনুসন্ধানে জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

মাছরাঙা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, কুমিল্লায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক ছত্রভঙ্গ করার দৃশ্য এটি। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে দৈনিক আমার দেশের ফেসবুক পেজে একই ঘটনার আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে সাংবাদিককে বলতে শোনা যায়, কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী। উক্ত ঘটনার দৃশ্য এটি। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক ইনকিলাবের ওয়েবসাইটে গত ১৬ এপ্রিল “সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে মহাসড়ক ছাড়লো পলিটেকনিকের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা ১২ টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে অবরোধ সরিয়ে নিতে বললে শিক্ষার্থীরা তা না মেনে অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মিলে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে সম্প্রতি কুমিল্লা মহানগর শিবির সভাপতির বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, কুমিল্লা মহানগর শিবির সভাপতি কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের কথিত অভিযোগের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দৃশ্য দাবিতে গত এপ্রিল মাসে কুমিল্লার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দৃশ্য প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img