Home Blog Page 70

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের গোল্ডেন ভিসা দেওয়ার ভুয়া দাবিতে সয়লাব গণমাধ্যম

সম্প্রতি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি এবং ভারতীয়দের জন্য নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা চালু হচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য দেশিয় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রচারিত এসব প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, এই ভিসা হবে মনোনয়ন-ভিত্তিক। যার ফলে ভিসা পেতে ব্যবসা বা সম্পত্তিতে আর বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এনটিভি, কালের কণ্ঠ, আরটিভি, আজকের পত্রিকা, দৈনিক যুগান্তর, কালবেলা, এটিএন নিউজ, ঢাকা পোস্ট, বার্তা বাজার, সময় টিভি, ঢাকা ট্রিবিউন, অর্থ সংবাদ এবং কালবেলা

এছাড়াও একই দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশি এবং ভারতীয়দের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা চালু হয়নি। আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইমিরেটস নিউজ এজেন্সি আরব আমিরাতের পরিচয়, নাগরিকত্ব, শুল্ক এবং বন্দর নিরাপত্তা বিষয়ক ফেডারেল কর্তৃপক্ষের (আইসিপি) বরাতে উক্ত দাবিটি মিথ্যা বলে জানিয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনগুলোতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে দাবি করা হয়, রায়াদ গ্রুপ নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে মনোনয়ন-ভিত্তিক গোল্ডেন ভিসার প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচয়ধারী রায়াদ কামাল আইয়ুব নামে এক ব্যক্তির বক্তব্যও প্রতিবেদনগুলোতে তুলে ধরা হয়।

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে Rayad Group নামক ওই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের সন্ধান পাওয়া যায়। পোর্টফোলিও থেকে জানা যায় প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সেক্টর নিয়ে কাজ করে থাকে। তবে এর সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা Emirates News Agency-এর ওয়েবসাইটে গত ৮ জুলাই প্রকাশিত গোল্ডেন ভিসা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

Screenshot: Emirates News Agency 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, আমিরাতের পরিচয়, নাগরিকত্ব, শুল্ক ও বন্দর নিরাপত্তা বিষয়ক ফেডারেল কর্তৃপক্ষ (আইসিপি) একটি বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, কিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও ওয়েবসাইটে সংযুক্ত আরব আমিরাত নির্দিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য আজীবন গোল্ডেন ভিসা দেওয়ার বিষয়ে যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, তা সঠিক নয়। গোল্ডেন ভিসার বিভিন্ন শ্রেণি, শর্তাবলী ও বিধিবিধান সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারিভাবে প্রণীত আইন, বিধান ও মন্ত্রীপরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত।

আইসিপি আরও জানিয়েছে, গোল্ডেন ভিসার সব আবেদন শুধুমাত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারী চ্যানেলের মাধ্যমেই প্রক্রিয়াকরণ হয়, এবং কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক পরামর্শ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে এই প্রক্রিয়ার জন্য অনুমোদিত হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

এছাড়াও মার্কিন গণমাধ্যম CNBC এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন টিকিট সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্যে রায়াদ গ্রুপ প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছে।

সুতরাং, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা চালু হয়েছে দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংঘাতের দৃশ্য দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সংগঠিত সংঘাতের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে একটি ফসলী জমিতে কয়েকজন নারী পুরুষকে ধস্তাধস্তি করতে দেখা যায়। যার এক পর্যায়ে এক ব্যক্তি আরেক ব্যক্তির মাথায় কোদাল দিয়ে আঘাত করেন। 

সংঘাতের দৃশ্য

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত সংঘাতের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের প্রতাপগড় এলাকার জমি নিয়ে দুই পরিবারের বিরোধের জেরে হওয়া সংঘাতের ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Ldutva Knight commentory নামের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে গত ২৯ জুন প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির শিরোনামটি ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওটি ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড়ে জমি নিয়ে বিরোধের জেড়ে দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া সংঘাতের ঘটনার। উক্ত ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও পোস্টটিতে দাবি করা হয়। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম দৈনিক ভাস্কর-এর ওয়েবসাইটে একই ঘটনায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সন্ধান পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিও সংযুক্ত রয়েছে।

Screenshot : Bhaskar

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে প্রতাপগড় জেলার আসপুর দেবসারা থানার অন্তর্গত বিজলা গ্রামে, হীরা যাদব ও তার প্রতিবেশী বীরেন্দ্র যাদবের মধ্যে চলমান জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে। সংঘাতের সময় বীরেন্দ্র যাদবের পক্ষের লোকজন কোদাল দিয়ে হীরা যাদবের ওপর আঘাত করে। যার ফলে তার মাথা ফেটে যায় এবং তিনি ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। 

এছাড়া, উক্ত ভিডিওর ঘটনার বিষয়ে পরবর্তীতে অনুসন্ধানে একাধিক ভারতীয় অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন Hindustan, IBC24 Jankarwan

সুতরাং, ভারতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হওয়া সংঘাতের ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংঘাতের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

কুমিল্লায় বিএনপির কার্যালয়ে এনসিপি ও জামায়াতের আগুন দেওয়ার দাবিটি গুজব

সম্প্রতি, কুমিল্লায় বিএনপি অফিসে আগুন দিয়েছে এনসিপি ও জামায়াত-শিবির – এই দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লায় বিএনপির কার্যালয়ে এনসিপি ও জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা আগুন দেয়নি। তাছাড়া, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়েরও নয়। প্রকৃতপক্ষে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে গত ১৭ ই মে সংগঠনটির পদবঞ্চিতরা শহরের বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দেয়। এটি সেই ঘটনারই দৃশ্য।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ মে প্রচারিত ‘কুমিল্লায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাদের বিক্ষোভ, দলীয় কার্যালয়ে আগুন | Comilla | Chatradol | Jamuna TV’ ক্যাপশনের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওরও প্রথম ক্লিপের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, সেই সময় কুমিল্লায় ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের ঘটনা এটি।

এই বিষয়ে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ১৭ মে ‘কুমিল্লায় এবার বিএনপির অব্যবহৃত কার্যালয়ে আগুন দিলেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,  গত ১৭ মে সন্ধ্যায় কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার ভিক্টোরিয়া কলেজ সড়কে অবস্থিত বিএনপির কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগরের অব্যবহৃত কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। 

তাছাড়া, যুগান্তর এর ওয়েবসাইটে গত ১৯ মে প্রকাশিত ‘কুমিল্লায় বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর-অগ্নিকাণ্ডে ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “কুমিল্লায় বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল হামলার ঘটনার দুই দিন পর পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিরা ছাত্রদলের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে। সোমবার [১৯ মে] রাতে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার [১৮] রাতে তিনি বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- মো. মহসিন (৩২), সালাহ উদ্দিন রকি (৩০), মো. সোহাগ হোসেন (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫) ও মারুফ আহমেদ (২৪)। তারা সবাই কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।”

অর্থাৎ, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি গত মে মাসের ১৭ তারিখের। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের গত ১৫ মে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় ঘটেছিল। এর সাথে এনসিপি বা জামায়াত শিবেরর সংশ্লিষ্টতা নেই। তাছাড়া, সম্প্রতি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এমন কোনো তথ্য গনমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে খুঁজে পাওযা যায়নি।

এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে কুমিল্লার স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথেও কথা বলে রিউমর স্ক্যানার টিম।

বাংলা ট্রিবিউন-এর কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, প্রচারিত ভিডিওর ঘটনার সাথে এনসিপি ও জামায়াত-শিবিরের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি গত ১৫ মে ছাত্রদলের ঘোষিত দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কমিটির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের একটি গ্রুপ দ্বারা গত ১৭ মে নগরের কান্দিরপাড় এলাকায় অবস্থিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনার।

প্রথম আলোর কুমিল্লা প্রতিনিধি আবদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। দৃশ্যটি ছিল বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল কর্তৃক বিএনপি অফিসে আগুন দেওয়ার ঘটনা।

সুতরাং, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের গত ১৫ মে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় ১৭ মে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে সম্প্রতি কুমিল্লায় বিএনপির কার্যালয়ে এনসিপি ও জামায়াত-শিবির আগুন দিয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আবরার ফাহাদ ও মহিলা সমন্বয়কদের জড়িয়ে নুসরাত তাবাসসুমের নামে বিকৃত মন্তব্য প্রচার

0

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম ‘মহিলা সমন্বয়কদের ঘরে প্রতি মাসে একটা করে আবরার ফাহাদ জন্ম নেবে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই ফটোকার্ডটি একজন গণমাধ্যমকর্মীও তার ফেসবুক প্রোফাইলেও প্রচার করতে দেখা যায়। এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত একই ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এনসিপি নেত্রী নুসরাত তাবাসসুম আবরার ফাহাদকে জড়িয়ে মহিলা সমন্বয়কদের নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেননি। প্রকৃতপক্ষে, ‘কুষ্টিয়ার ঘরে ঘরে আবরার ফাহাদ জন্ম নেবে: নুসরাত তাবাসসুম’ শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে বিকৃত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে গুগলে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে নুসরাত তাবাসসুমের ‘মহিলা সমন্বয়কদের ঘরে প্রতি মাসে একটা করে আবরার ফাহাদ জন্ম নেবে’ শীর্ষক মন্তব্য করার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে দৈনিক জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজে গত ৯ জুলাই কুষ্টিয়ার ঘরে ঘরে আবরার ফাহাদ জন্ম নেবে: নুসরাত তাবাসসুম শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে উক্ত ফটোকার্ডের ডিজাইন, ছবি এবং প্রকাশের তারিখ অর্থাৎ, ৯ ‍জুলাই, ২০২৫-এর মিল রয়েছে। তবে ফটোকার্ড দুটির শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃত এবং দৈনিক জনকণ্ঠের লোগো মুছে দিয়ে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে জনকণ্ঠের পোস্টটির মন্তব্যের ঘরে প্রাপ্ত মূল প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নুসরাত তাবাসসুম তার এক বক্তব্যে বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে দোয়া চেয়ে এসেছেন। এছাড়াও সেসময় তাদেরকে কুষ্টিয়ার ঘরে ঘরে একেকজন আবরার ফাহাদের মতো সাহসী দেশপ্রেমিক জন্ম নেবে বলে কথাও দিয়ে এসেছেন বলে তিনি জানান। 

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে পরবর্তীতে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম ডিবিসি নিউজের ফেসবুক পেজে প্রচারিত নুসরাত তাবাসসুমের ওই বক্তব্য প্রদানের ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে তাকে আলোচিত দাবি সম্বলিত মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

সুতরাং, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম ‘মহিলা সমন্বয়কদের ঘরে প্রতি মাসে একটা করে আবরার ফাহাদ জন্ম নেবে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

খিলগাঁও থানা বিএনপি নেতার নারী নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “রাজ*ধানীর খিলগাঁও থানা বি’এন’পির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল। স্ত্রীকে সন্তানদের সামনে নিয়মিত যৌ’তুকের দাবিতে নি’র্যাতন করে। যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি” শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে। 

একই দাবিতে ইন্সাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

অনুরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো অন্তত ১ কোটি বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে প্রদর্শিত যুবক খিলগাঁও থানা বিএনপির নেতা নন এবংকি ঘটনাটি বাংলাদেশেরই কোনো স্থানের নয়। বরং, এটি ভারতের বিহারে জনকপুর এলাকায় এক স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে মারধরের ঘটনার ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিও থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Govind Pratap Singh | GPS’ নামক এক্স একাউন্টে চলতি বছরের ২১ জুনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, বিহারের গয়া এলাকায় এক নারীকে বর্বরোচিত নির্যাতনের দৃশ্য এটি। নির্যাতনের শিকার নারী মারা গেছেন।এ ঘটনায় স্বামীর পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘The Economic Times’ এর ওয়েবসাইটে গত ২২ জুন “Papa please, mummy ko chod do”: Woman dies by suicide after dowry assault in Bihar, shocking video emerges শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনের বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, বিহারের গয়ার জানকপুর এলাকায় বসবাসকারী ঐ দম্পতির নাম অভিষেক কুমার ও নিশা কুমারী। নিশার স্বামী অভিষেক কুমার তাকে নির্দয়ভাবে মারধর করেছে। ঘটনার কিছুদিন পর নিশার মৃত্যু হয়। পরিবার দাবি করেছে, এটা একটা পরিকল্পিত হত্যা। যদিও অভিযুক্ত অভিষেক দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং বিষ সেবনের কারণে নিশার মৃত্যু হয়েছে। 

এছাড়া, আলোচ্য বিষয়ে ভারতীয় অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন (News Karnataka, BollywoodShaadis) থেকে একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে ভিডিওতে প্রদর্শিত যুবক খিলগাঁও থানা বিএনপি নেতা নন এবং ঘটনাটি বাংলাদেশেরও নয়। 

উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওতাধীন বিএনপির খিলগাঁও থানার কোনো কমিটি নেই। ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আওতাধীন সকল থানা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

সুতরাং, ভারতের বিহারে  স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে মারধরের ভিডিওকে বাংলাদেশে খিলগাঁও থানা বিএনপির কথিত নেতা তরিকুলের নারী নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ডিয়োগো জোটার সমাধিতে ফুল দিয়ে রোনালদোর বিদায় জানানোর ছবি দাবিতে এআই ছবি প্রচার

0

গত ০৩ জুলাই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান পর্তুগাল ও লিভারপুলের তারকা ফুটবলার ডিয়োগো জোটা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা। এরপর গত ০৫ জুলাই জোটা ও তার ভাই আন্দ্রের শেষকৃত্য পর্তুগালের গন্ডোমারে সম্পন্ন হয়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি চারটি ছবির একটি কোলাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “দিয়াগো জোটা কে ফুল দিয়ে শেষ বারের মতো বিদায় জানাচ্ছেন তার সবচেয়ে কাছের মানুষ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো”।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিয়েগো জোটার শেষকৃত্য বা সমাধিক্ষেত্রে রোনালদোর ফুল দেওয়ার এই ছবিগুলো আসল নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি ছবি আলোচিত আসল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ডিয়োগো জোটার শেষকৃত্যে রোনালদো উপস্থিত ছিলেন না।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে উক্ত ছবিটির সম্ভাব্য মূল ছবিটি ‘Yalico Manuel’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ০৫ জুলাইয়ে প্রচার হতে দেখা যায়। উল্লেখ্য যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিতেও ‘Yalico Manuel’ নামক জলছাপ পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, প্রচারিত ছবিতে মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ‘মেটা এআই’ এর জলছাপও পাওয়া যায় যা প্রমাণ করে আলোচিত ছবিটি মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ‘মেটা এআই’ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

Image of Claimed Post

তাছাড়া, অনুসন্ধানে জানা যায় ডিয়োগো জোটার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে পর্তুগিজ ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো অনুপস্থিত ছিলেন। তাই, ডিয়োগো জোটার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের দিনে তার সমাধিতে রোনালদোর উপস্থিত থাকার দাবিটি যৌক্তিক নয়।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কোলাজ ছবির চারটি ছবির বিষয়ে আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম “Cantilux” এ ছবিগুলো পরীক্ষা করলে দেখা যায়, ছবিগুলো এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৭৪-৯২ শতাংশ।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি চারটি ছবির একটি কোলাজ ছবিকে ডিয়েগো জোটার শেষকৃত্য বা সমাধিক্ষেত্রে রোনালদোর ফুল দেওয়ার আসল ছবি দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

২০০ বছর বয়সী মানুষের ভিডিও দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে ২০০ বছর বয়সী মানুষ দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানেএখানেএখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০ বছর বয়সী বৃদ্ধ লোক দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Latentcore নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ২৮ জুনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সদৃশ্যতা লক্ষ্য করা যায়।

উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে এআই দিয়ে তৈরি একাধিক ভিডিও নানাসময়ে প্রচার হতে দেখা যায়। পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়।

এছাড়া, উক্ত অ্যাকাউন্টে প্রচারিত ভিডিওটির বিস্তারিত অংশেও ভিডিওটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে নির্মিত তা উল্লেখ (এআই লেবেল) করা হয়েছে।

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এ ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ।

সুতরাং, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহারে তৈরি করা একটি ভিডিওকে ২০০ বছর বয়সী বৃদ্ধ মানুষ দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ঢাবির কথিত মুখ্য সমন্বয়ক জুবাইদা জাহান কলির এডাল্ট ভিডিও দাবিতে ভারতীয় মডেলের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ এর লাল যোদ্ধা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সমন্বয়ক বিশিষ্ট শাহাবাগি জুবাইদা জাহান কলির চিত্র দেখুন’ ক্যাপশনে একজন নারীর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওতে থাকা নারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী। তার নাম জুবাইদা জাহান কলি।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওর নারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অন্য কোনো স্থানের সমন্বয়ক নন। বরং, ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় এক মডেলের ভিডিও সংগ্রহ করে তা আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Sneha Biswas’ নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২৪ মার্চ প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

পরবর্তীতে ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওর নারীর নাম স্নেহা বিশ্বাস। তিনি একজন মডেল। পাশাপাশি তার অ্যাকাউন্টে প্রচারিত একাধিক ভিডিও পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, তিনি একজন ভারতীয়।

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো নারী সমন্বয়কের নয়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুবাইদা জাহান কলি নামের কোনো নারী সমন্বয়ক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী সমন্বয়কের এডাল্ট দৃশ্য দাবিতে ভারতীয় নারীর এডাল্ট ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নাই বলে মন্তব্য করেননি ড. মোশাররফ হোসেন, প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মন্তব্য দাবিতে “বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নাই, জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারলে জাতীয় নিরাপত্তা সহজ হয়ে যাবে, বিএনপির একক ভাবে খমতায় যাওয়া সম্ভব না” শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম একাত্তর এর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানেএখানেএখানেএখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, “বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নাই, বিএনপির একক ভাবে খমতায় যাওয়া সম্ভব না” শিরোনামে একাত্তর টিভি কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি এবং খন্দকার মোশাররফ হোসেনও এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, “জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারলে জাতীয় নিরাপত্তা সহজ হয়ে যাবে” শিরোনামে ‘একাত্তর’ এর একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘একাত্তর’ এর লোগো ও ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ‘০৬ জুলাই, ২০২৫’ উল্লেখ থাকতে দেখা যায়।

উক্ত তথ্যগুলোর সূত্র ধরে একাত্তর টিভির ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, ‘একাত্তর’ এর ফেসবুক পেজে গত ০৬ জুলাই “জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারলে জাতীয় নিরাপত্তা সহজ হয়ে যাবে” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের সাথে উক্ত ফটোকার্ডের লোগো, ছবি, তারিখ ও তারিখের ফন্টের মিল রয়েছে। তবে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত লেখা ও লেখার ফন্টের বৈসাদৃশ্য পাওয়া যায়। একাত্তর এর উক্ত মূল ফটোকার্ডটিতে “জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারলে জাতীয় নিরাপত্তা সহজ হয়ে যাবে” শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর সঙ্গে ‘বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নাই’ এবং ‘বিএনপির একক ভাবে খমতায় যাওয়া সম্ভব না’ শীর্ষক বাক্য যুক্ত করা হয়েছে।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় একাত্তর টিভির এই ফটোকার্ডটি সম্পাদনা (এডিট) করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যমে (প্রথম আলোযুগান্তরনয়া দিগন্ত) আলোচ্য বিষয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্য সম্বলিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনগুলোতে কোথাও ‘বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নাই’ এবং ‘বিএনপির একক ভাবে খমতায় যাওয়া সম্ভব না’ শীর্ষক কোনো মন্তব্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন “বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নাই, জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারলে জাতীয় নিরাপত্তা সহজ হয়ে যাবে, বিএনপির একক ভাবে খমতায় যাওয়া সম্ভব না” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে শিরোনামে একাত্তর টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

ফিলিস্তিনের স্কার্ফ গলায় রোনালদোর খাবার সদৃশ বস্তু বিতরণের ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

0

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনের পতাকার রঙ সদৃশ স্কার্ফ গায়ে পর্তুগিজ তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, কয়েকটি ছোট বাচ্চাকে খাবার সদৃশ বস্তু বিতরণ করছেন রোনালদো। উক্ত ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “মানুষ হতে গেলে মনুষ্যত্বের প্রয়োজন যেটা রোনালদোর আছে” শীর্ষক ক্যাপশনে ব্যাপকভাবে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ছবিটি আসল।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টগুলোতে সম্মিলিতভাবে প্রায় ১ লক্ষ ১৬ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের স্কার্ফ গায়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর এই ছবিটি আসল নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ছবি।

ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ছবিটি আসল হলে তা আন্তর্জাতিক নানা গণমাধ্যমে প্রচার হতো।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে রোনালদোর গায়ে থাকা স্কার্ফ ও সামনে থাকা ছোট বাচ্চাদের হাতে বেশ অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম “হাইভ মডারেশন” এ ছবিটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ছবিকে ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের স্কার্ফ গায়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আসল ছবি দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র