রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো তাসনিয়া ফারিনের নয় বরং, ইন্টারনেট থেকে ভিন্ন আরেক বাংলাদেশি নারীর ছবি সংগ্রহ করে সেগুলোতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাসনিয়া তারিনের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।
পরবর্তীতে, Tania Tithi নামক ফেসবুক প্রোফাইলে গত ১৪ জুন প্রকাশিত একটি পোস্টে কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ছবিগুলোর আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রচারিত ছবির সাথে এসব ছবিতে থাকা ব্যক্তির পোশাক, অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক সবকিছুর মিল রয়েছে কিন্তু উভয় ছবিতে থাকা নারীদের চেহারা ভিন্ন।
ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রতীয়মান হয়, তানিয়া তিথি নামক নারীর ছবিগুলোতে তার মুখমণ্ডলের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তাসনিয়া ফারিনের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া, Tania Tithi নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুন প্রকাশিত পোস্টেও একই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতরাং, অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিনের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত।
সম্প্রতি, বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের সাথে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনকারী নাফসিন মেহনাজের দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ছবি দুটির একটিতে সৈয়দ আহমেদ মারুফ পাঞ্জাবি এবং সাদা পায়জামা পরে আছেন। তার পাশে নাফসিন মেহনাজ একটি টপ এবং নীল ডেনিম শর্টস পরে আছেন।
অন্য ছবিতে, সৈয়দ আহমেদ মারুফের পরনে পাঞ্জাবি থাকলেও, তার পায়জামার বদলে লাল রঙের একটি হাফ প্যান্ট দেখা যাচ্ছে। নাফসিন মেহনাজের পোশাক প্রায় একই দেখা যাচ্ছে – টপ, ডেনিম শর্টস এবং সাদা স্নিকার্স।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাকিস্তানের সাবেক হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের সাথে জুলাই আন্দোলনকারী নাফসিন মেহনাজের এই ছবি দুটি আসল নয়। বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৈয়দ আহমেদ মারুফের সাথে নাফসিন মেহনাজের ভিন্ন একটি ছবি সম্পাদনা করে এই ছবি দুটি তৈরি করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে নাফসিন মেহনাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে গত ২ এপ্রিল প্রকাশিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। এই পোস্টে প্রচারিত ছবি ও ভিডিওর মধ্যে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি দুটির সাথে অনেকটাই সাদৃশ্য আছে এমন একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ঈদের দ্বিতীয় দিনে, ঢাকার পাকিস্তান হাউসে পাকিস্তান হাই কমিশনার জনাব সৈয়দ মারুফের আমন্ত্রণে নাফসিন মেহনাজ একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে তৎকালীন হাই কমিশনার নিজে, হাই কমিশনের প্রথম সচিব, বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং পাকিস্তানি শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে, সেই ছবিতে নাফসিন মেহনাজের পরনে টপ, ডেনিম শর্টস এবং পায়ে সাদা স্নিকার্স ছিল না, এমনকি চুলের ধরন এবং দাঁড়ানোর ভঙ্গির মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে। তার পাশে সৈয়দ আহমেদ মারুফকে পাঞ্জাবি এবং সাদা পায়জামা পরা অবস্থায় দেখা গেলেও লাল হাফ প্যান্টে দেখা যায়নি।
তাছাড়া, নাফসিন মেহনাজের ফেসবুক পোস্টটিতে প্রচারিত ছবি ও ভিডিওতে তাকে টপ, ডেনিম শর্টস এবং পায়ে সাদা স্নিকার্স পড়তে দেখা যায়নি।
বর্তমানে বিভিন্ন এআই টুলের মাধ্যমে ছবির প্রেক্ষাপট অপরিবর্তিত রেখে পোশাক বা নির্দিষ্ট উপাদান সহজেই পরিবর্তন করা সম্ভব। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে ভাইরাল ছবি দুটিও এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পাদিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
সুতরাং, পাকিস্তানের সাবেক হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফের সাথে জুলাই আন্দোলনকারী নাফসিন মেহনাজের আলোচিত এই ছবি দুটি সম্পাদিত।
সম্প্রতি, “এই দেশটা বসবাসে অযোগ্য হয়ে পড়েছে মনে হচ্ছে দেশে গুম,খুন, হত্যা, ধর্ষণের প্রতিযোগিতা চলছে। সবাই দ্রুত পোস্টটি শেয়ার করে দিন” ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওতে প্রকাশ্যে এক যুবক কর্তৃক আরেক যুবককে কোপাতে দেখা যায়।
উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকাশ্যে যুবককে কোপানোর এই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, এটি ভারতের মুম্বাইয়ের ঘটনা।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে ভারতের মুম্বাইয়ের স্থানীয় গণমাধ্যম ‘gallinews_com’ এর ফেসবুক পেজে ২০২৫ সালের ২ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।
Comparison: Rumor Scanner
উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, “অ্যান্টপ হিলের ফাল্গুনি বিল্ডিংয়ের ভেতরে ছুরিকাঘাতের একটি ঘটনা ঘটে। দুই বন্ধুর মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে তর্ক হয়, যার একপর্যায়ে একজন অন্যজনের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। আহত অবস্থায় ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।” (অনূদিত)।
পরবর্তীতে, ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Times Now’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ৩রা জুলাই আলোচিত ঘটনার বিষয়ে “’Sleeping With My Woman?’ Mumbai Man Attacked With Sword-Like Weapon Over Relationship Dispute” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “মুম্বইয়ের ওয়াডলা (ইস্ট) এলাকায় ২ জুলাই একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। প্রেমঘটিত সম্পর্ক নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে তলোয়ার সদৃশ ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে আক্রমণ করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুক্তভোগীর কাছে গিয়ে উত্তেজিতভাবে জিজ্ঞাসা করে, “তুই কি আমার বউয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছিস?” এর কিছুক্ষণ পরেই সে হঠাৎ করে ভয়ঙ্কর হামলা চালায়। হামলার ফলে ভুক্তভোগীর গলা, মুখ, ডান হাত এবং পিঠে গভীর আঘাত লাগে।”
এ বিষয়ে ভারতের অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন (১,২) থেকে একই তথ্য জানা যায়।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীর নাম ভারতের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে শাহরুখ বলে উল্লেখ হলেও স্থানীয় গণমাধ্যমে তার নাম শ্রাবন বলা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় গণমাধ্যমটি ভুক্তভোগী ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করলেও মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে ভুক্তভোগী ব্যক্তি নিহত হওয়ার দাবির সপক্ষে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তার নিহতের বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা না গেলেও এটি নিশ্চিত যে ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়।
সুতরাং, ভারতের মুম্বাইয়ে প্রকাশ্যে যুবককে কোপানোর ঘটনাকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এক বৃদ্ধ কর্তৃক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনার এই ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার এমন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।।এছাড়া, রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে লোকটির ভয়েস,
ভিডিওর ধরন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বলেই প্রতীয়মান হয়। এ বিষয় সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়।
পাশাপশি ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।
Indicated by Rumor Scanner
পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ক্যান্টিলাক্সে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯১ শতাংশ বলে ফলাফল আসে।
Screenshot From Cantilux
সুতরাং, এক বৃদ্ধের ‘ইউনূস সরকারকে সরাও, দেশ বাঁচাও’ শীর্ষক বক্তব্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
সম্প্রতি, “বিকাশের ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে সবাই পাচ্ছেন ১৩০০ টাকা বোনাস একদম ফ্রি! যাদের বিকাশ আছে তারা সবাই পাবেন এই বোনাস!” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া, মেটা এড লাইব্রেরিতে অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার মূহুর্তে আলোচিত দাবিতে প্রায় ৫৬০টি এড বা বিজ্ঞাপন চলমান আছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিকাশের পক্ষ থেকে সবাইকে ১৩০০ টাকা বোনাস দেওয়ার কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি বরং, ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বোনাসের এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে থাকা ওয়েবসাইট লিংকে প্রবেশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করলে উপরে বিকাশের লোগো এবং “১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ বোনাস | বিকাশের অসাধারণ মাইলফলক উদ্যাপনে প্রতি গ্রাহক পাচ্ছেন ১৩০০ টাকা ফ্রি বোনাস—অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন বা কোনও চার্জ ছাড়াই!” শীর্ষক একটি লেখা পাওয়া যায়। এরপর অফারের বিস্তারিত অংশে বলা হয়, “অফারটি শুধুমাত্র বৈধ ও সক্রিয় বিকাশ অ্যাকাউন্টধারীদের জন্য। প্রতি মোবাইল নম্বর-এ একবারই ১৩০০ টাকা যুক্ত হবে “বোনাস ব্যালেন্স” হিসেবে। বোনাস ক্লেইম করার পর সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা মধ্যে টাকা জমা হবে। এই বোনাস দিয়ে সেন্ড মানি, মোবাইল রিচার্জ ও বিল পেমেন্ট করা যাবে। অভিযুক্ত বা সন্দেহজনক লেনদেন মিললে বিকাশ যে কোনও সময় অফার স্থগিত করতে পারে।”
Screenshot: Scamming website
অফারটির বিস্তারিত অংশের খানিকটা ওপরে ‘বোনাস পেতে ক্লিক করুন’ নামক একটি শব্দগুচ্ছ হাইপারলিঙ্কড হিসেবে থাকতে দেখা যায়। উক্ত ওয়েবপেজের আরেকটু নিচে স্ক্রল করলে ‘ব্যবহারকারীদের মন্তব্য’ দাবিতে একাধিক ব্যক্তির মন্তব্য দেখতে পাওয়া যায় যারা টাকা পেয়েছেন বলে স্বীকার করছেন।
Screenshot : Scamming website
‘বোনাস পেতে ক্লিক করুন’ নামক হাইপারলিঙ্কড শব্দগুচ্ছে ক্লিক করলে এটি আরেকটি নতুন পেজে নিয়ে যায়। উক্ত পেজটিতে বলা হয়, “অভিনন্দন প্রিয় গ্রাহক! সঠিক তথ্য দিয়ে নিচের ফরমটি পূরণ করুন। আপনি যে বিকাশে টাকা উত্তোলন করতে চান সেই বিকাশ নম্বরটি অবশ্যই সচল থাকতে হবে, ভেরিফিকেশনের জন্য আপনার বিকাশ নম্বরে কোড পাঠানো হবে।” এরপর বিকাশ নম্বর এবং পিন চাওয়া হয়৷ এ পর্যায়ে নিজের বিকাশ নাম্বার, তবে ভুল পিন দিলে এটি নতুন আরেকটি পেজে নিয়ে যায়।
Screenshot : Bkash payment page, redirected from Scamming website
উক্ত নতুন পেজটিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করে রিউমর স্ক্যানার টিম। নতুন পেজের ইন্টারফেসটি হুবহু বিকাশে পেমেন্ট করার ইন্টারফেসের মতো। তাছাড়া, দাবি অনুসারে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারীর ১,৩০০ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও নতুন ইন্টারফেসটি হচ্ছে কাউকে টাকা পেমেন্ট করার ইন্টারফেস। অধিকন্তু, এখানে পেমেন্ট গেটওয়ের জায়গায় বিকাশ কর্তৃপক্ষের কোনো কিছুর বদলে “Rubel Telecom” নামটি দেখা যায়৷
Screenshot : Bkash payment page, redirected from Scamming website
এরপর নাম্বার কনফার্ম করলে ওটিপি আসে এবং ওটিপি চাওয়া হয়। কিন্তু, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারী এর পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন করেন নি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে, ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিকাশের পক্ষ থেকে সবাইকে ১৩০০ টাকা বোনাস দেওয়ার কোনো ঘোষণা বিকাশ দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড সার্চ করলে বিকাশের ওয়েবসাইট, বিকাশের ফেসবুক পেজ বা বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ১৩ কোটি গ্রাহক পূর্তি উপলক্ষে বিকাশের পক্ষ থেকে সবাইকে ১৩০০ টাকা বোনাস দিচ্ছে বিকাশ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।
গত ৯ জুলাই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি তাদের ইউটিউব চ্যানেল ‘BBC World Service’ এ ‘The Battle for Bangladesh: Fall of Sheikh Hasina – BBC World Service Documentaries’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ডকুমেন্টারি প্রকাশ করে। উক্ত ডকুমেন্টারিতে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকাসহ নানা তথ্য ও ঘটনা তুলে ধরা হয়। এছাড়াও, বিবিসির ওয়েবসাইটে একইদিনে ‘Ex-Bangladesh leader authorised deadly crackdown, leaked audio suggests’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছে। উক্ত ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনার একটি অডিও বা কল রেকর্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেটির অথেন্টিসিটি বিবিসি যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে বলে উল্লেখ/দাবি করেছে। ওই রেকর্ডে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়— “আমি ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিসি। এখন লেথাল ওয়েপন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে।”
ডকুমেন্টারিটির একদম শেষের দিকে একটি স্লাইডে শেখ হাসিনার ছবিসহ “Sheikh Hasina | Awami League Party’ লিখে দেখানো হয়, “We cannot confirm whether the tape recording referenced by the BBC is authentic, but in any case it does not demonstrate any unlawful intention on the part of Sheikh Hasina”. এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, ‘ডকুমেন্টারিতে সংযুক্ত শেখ হাসিনার কল রেকর্ডটির সত্যতা বিবিসি যাচাই করতে পারিনি বলে স্বয়ং বিবিসি ডকুমেন্টারিতে উল্লেখ করেছে।’
উল্লেখ্য, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কিছু পোস্টে বিবিসির উক্ত ডকুমেন্টারির বাংলা অনুবাদের ভিডিওটিতে প্রদর্শিত একই স্লাইডের বাংলা অনুবাদের স্ক্রিনশটও সংযুক্ত করা হয়েছে যেখানে লেখা রয়েছে, “বিবিসি (শেখ হাসিনার কথোপকথনের) যে টেপ রেকর্ডিংটির কথা বলেছে, সেটা আসল কি-না তা আমরা নিশ্চিত নই। তবে কোনও অবস্থাতেই উক্ত রেকর্ডিংটি শেখ হাসিনার বেআইনি কোনও উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটায় না”।
এছাড়াও, বিবিসির ডকুমেন্টারিটি প্রশ্নবিদ্ধ করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তার এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন। উক্ত পোস্টটির রিপ্লাই/রিটুইটেও আলোচিত স্লাইডটি প্রচার করতে দেখা যায়। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলির নির্দেশনা নিয়ে শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করতে না পারার বিষয়ে আলোচিত মন্তব্যটি বৃটিশ গণমাধ্যম বিবিসি নিউজ করেনি বরং, বিবিসির দাবি অনুযায়ী মন্তব্যটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, হাসিনার কল রেকর্ডটির বিষয়ে বিবিসি স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে বলে বিবিসি দাবি করেছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ৯ জুলাইয়ে বিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেল ‘BBC World Service’ এর ‘The Battle for Bangladesh: Fall of Sheikh Hasina – BBC World Service Documentaries’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত উক্ত ডকুমেন্টারিটি পাওয়া যায়।
উক্ত ডকুমেন্টারিতে শেখ হাসিনার একটি অডিও বা কল রেকর্ড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওই রেকর্ডে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়— “আমি ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিসি। এখন লেথাল ওয়েপন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে।” এবং উক্ত ডকুমেন্টারিটির একদম শেষের দিকে ৩৪ মিনিট ৪০ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার ছবিসহ “Sheikh Hasina | Awami League Party’ লিখে পরপর তিনটি স্লাইড দেখানো হয়। যার প্রথম স্লাইডে “An Awami League spokesperson told us…” দিয়ে শুরু করে একটি বক্তব্য দেখানো হয় যেখানে বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে সহ দলের কিছু সিনিয়র নেতা ব্যক্তিগতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের জন্য দায়ী ছিলেন বা নির্দেশনা দিয়েছিলেন কিংবা আটককৃতদের ওপর নিপীড়নে জড়িত ছিলেন বা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন, এমন দাবি আওয়ামী লীগ অত্যন্ত স্পষ্টভাষায় অস্বীকার এবং প্রত্যাখ্যান করছে।” (অনূদিত)
Comparison Image : Rumor Scanner
প্রথম স্লাইডের পর পরবর্তী দুই স্লাইডে ‘An Awami League spokesperson’ আর উল্লেখ করা হয়নি তবে প্রথম স্লাইডের মতোই শেখ হাসিনার ছবিসহ “Sheikh Hasina | Awami League Party’ লিখাটি বিদ্যমান ছিল যা বোঝায় পরবর্তী স্লাইডের বক্তব্যও আগের স্লাইডে বলা শেখ হাসিনার পক্ষের আওয়ামী লীগের মুখপাত্রের বক্তব্য। কার বক্তব্য তা বুঝাতে এমন পদ্ধতি ডকুমেন্টারিটিতে এর আগে বাংলাদেশ পুলিশের বক্তব্য বুঝাতেও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। আওয়ামী লীগের উক্ত মুখপাত্রের বক্তব্যের তৃতীয় স্লাইডে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত স্লাইডটি দেখানো হয় যেখানে লেখা আছে “We cannot confirm whether the tape recording referenced by the BBC is authentic, but in any case it does not demonstrate any unlawful intention on the part of Sheikh Hasina”.
Screenshot taken from BBC’s Website
এছাড়াও, ‘Ex-Bangladesh leader authorised deadly crackdown, leaked audio suggests’ শীর্ষক শিরোনামে এ বিষয়ে বিবিসির ওয়েবসাইটে ৯ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের এক পর্যায়ে বলা হয়, “An Awami League spokesperson said: “We cannot confirm whether the tape recording referenced by the BBC is authentic.”” এ থেকে আরো পরিষ্কারভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত টেপ রেকর্ডিংটির সত্যতা নিশ্চিত করতে না পারার বক্তব্যটি আওয়ামী লীগের মুখপাত্রের। একই প্রতিবেদনে এও বলা হয় যে, বিবিসি স্বতন্ত্রভাবে শেখ হাসিনার উক্ত কল রেকর্ডটি যাচাই করেছে এবং তারা কোনো প্রমাণ পাননি যে শেখ হাসিনার কল রেকর্ডটি সম্পাদিত বা বিকৃত করা হয়েছে, এবং তাদের মতে এটি কৃত্রিমভাবে (সিনথেটিকভাবে) তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও অত্যন্ত কম। তারা আরও জানান, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে নেওয়া হয়েছে যেখানে ফোন কলটি স্পিকারে চালানো হচ্ছিল, কারণ এতে স্পষ্ট টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও পেছনের শব্দ শোনা যায়। অর্থাৎ, বিবিসি উক্ত কল রেকর্ডটি শেখ হাসিনারই তা নিশ্চিত হয়েছে
Image : Rumor Scanner, Screenshots taken from BBC’s YouTube channels
এছাড়াও, “বিবিসির অনুসন্ধান: ৫ই অগাস্টের যাত্রাবাড়ী, শেখ হাসিনার ফোনরেকর্ড” শীর্ষক শিরোনামে বিবিসি নিউজ বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে গত ৯ জুলাইয়ে বিবিসি উক্ত ডকুমেন্টারি বাংলা অনুবাদে প্রচার করে। উক্ত ডকুমেন্টারির ৩৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ে আলোচিত স্লাইডটি বাংলা অনুবাদেও পাওয়া যায় যেখানে বলা হয়, “বিবিসি (শেখ হাসিনার কথোপকথনের) যে টেপ রেকর্ডিংটির কথা বলেছে, সেটা আসল কি-না তা আমরা নিশ্চিত নই। তবে কোনও অবস্থাতেই উক্ত রেকর্ডিংটি শেখ হাসিনার বেআইনি কোনও উদ্দেশ্যের প্রতিফলন ঘটায় না”। উক্ত স্লাইডটির ওপরের অংশ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় তাতে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বক্তব্য”। যা আরো স্পষ্টভাবে বলে যে উক্ত বক্তব্যটি বিবিসির নয় বরং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।
সুতরাং, শেখ হাসিনার ফাঁস হওয়া অডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করতে না পারার বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্রের করা মন্তব্যকে বিবিসির করা মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের কোনো ঘটনার নয় এবং ঘটনাটি রংপুরেরও নয়। বরং, এটি গত ২৫ জুনে বগুড়া সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মণ্ডলধরণ গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্যকে গ্রেফতারের ঘটনার ভিডিও।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে থাকা ‘NCN’ নামক লোগোর সূত্র ধরে NCN- North Capital News নামক ফেসবুক পেজে গত ২৫ জুনে “বগুড়া রাজাপুরের মন্ডলধরন এলাকায় রাতভর সেনাবাহিনীর অ’ভিযানে বিপুল পরিমান দেশীয় অ’স্ত্র উ’দ্ধার; আ*টক ৩” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা দৃশ্যাবলীর মিল রয়েছে।
Image Comparison by Rumor Scanner
পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় মুলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজের ওয়েবসাইটে গত ২৫ জুনে “বগুড়ায় রাতভর সেনা অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক ২” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৪ জুন দিবাগত রাতে বগুড়ার রাজাপুর ইউনিয়নের মণ্ডলধরন এলাকায় রাতভর অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। অভিযানে ২৬টি দেশীয় অস্ত্র ও ১৬টি ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ কিশোর গ্যাংয়ের দুইজন সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয়।
পাশাপাশি, আলোচ্য বিষয়ে অনুসন্ধানে একই তারিখে অর্থাৎ গত ২৫ জুন সময় টিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায় এবং গ্রেফতার হওয়া দুই কিশোর গ্যাং সদস্য শাওন ও আসিফ সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া ও তেঁতুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বলেও জানা যায়।
উল্লিখিত প্রতিবেদনগুলোর কোথাও আটককৃত কিশোরদের পরিচয় এনসিপি নেতা বলে উল্লেখ করা হয়নি। তাদেরকে কিশোর গ্যাং বলে সম্বোধন করা হয়েছে।
অর্থাৎ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উক্ত অভিযানের এই ভিডিওটি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো নেতা বা কর্মীর বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নয়।
সুতরাং, বগুড়ার রাজাপুর ইউনিয়নের মণ্ডলধরন এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ দুই কিশোর গ্যাং সদস্যকে গ্রেফতারের ঘটনার ভিডিওকে রংপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মূলধারার গণমাধ্যম ‘যমুনা টিভি’র নাম ও লোগো সংযুক্ত করে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। উক্ত সংবাদে দাবি করা হয়েছে, “..মহেশখালী ও কুতুবদিয়া আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর এমডি মাহমুদুল্লাহ মাহফুজ ফরিদকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটি এসেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিক থেকে তিনি দলীয় ফোরামের একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বলেন। মহেশখালী কুতুবদিয়া জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক আলমগীর ফরিদ। তিনি আবারও ধানের শীষ নিয়ে মাঠে থাকবেন, জনগণের রায় নিয়ে আসবেন। মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার রাজনীতিতে এ খবরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ফিরে এসেছে নতুন আশার আলো। যমুনা টিভি সমাচার বাংলাদেশ।”
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তারেক রহমানের নির্দেশে কক্সবাজার-২ আসনে আলমগীর ফরিদকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি ভিডিওকে যমুনা টিভির আসল সংবাদ প্রতিবেদন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে যমুনা টিভি বা মূলধারার গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। যমুনা টিভির ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলেও আলোচিত সংবাদ প্রতিবেদনটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে এখন পর্যন্ত কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে কাউকে মনোনীত করার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে সংবাদ উপস্থাপকের অঙ্গভঙ্গি, কথা বলার ধরণ ও সংবাদ উপস্থাপনার ধরণে বেশ অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।
এছাড়া অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে যমুনা টিভির শিফট ইনচার্জ মিশুক নাজিবের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৮ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে তিনি বলেন, “যমুনা টেলিভিশনের লোগো ব্যবহার, প্রেজেন্টারের ছবি ভার্চুয়ালি উপস্থাপন এবং Tarique Rahman এর নাম ব্যবহার করে বিএনপি নেতা আলমগীর ফরিদ কক্সবাজার-২ আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন দাবি করে যে ভিডিওটি ছড়ানো হচ্ছে তা এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি। ন্যূনতম কাণ্ডজ্ঞান থাকলেই বুঝা যাবে, এআই কনটেন্টটি যে ভুয়া।”
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে তারেক রহমানের নির্দেশে কক্সবাজার-২ আসনে আলমগীর ফরিদকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দাবিতে মূলধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির আসল সংবাদ প্রতিবেদন দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।
সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারার ছবি দাবিতে একটি অর্ধনগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ছবিটিতে তাকে একট সমুদ্র(সদৃশ) উপকূলে পানির ওপর থাকা একটি পাথরে হেলান দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি ডা. তাসনিম জারার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন একজন নারীর ছবিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তার মুখমণ্ডল বসিয়ে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পিন্টারেস্ট-এ প্রচারিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
Image Comparison by Rumor Scanner
উক্ত ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ছবিতে থাকা তাসনিম জারার চেহারা ব্যতীত উভয় ছবির বাকি সকল উপাদানের হুবহু মিল রয়েছে।
এছাড়াও উক্ত পিন্টারেস্ট অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে একই পোশাকে ওই নারীর আরও দুটি ছবির সন্ধান পাওয়া যায়। ছবিগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, Glendydelvalle নামের পিন্টারেস্ট অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত নারীর ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত নারীর মুখমণ্ডলের জায়গায় তাসনিম জারার মুখমণ্ডল বসিয়ে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারার ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত।
সম্প্রতি ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতাল(Karnaphuli EPZ Hospital) চাকরির সুযোগ!’ দাবিতে ‘BEPZA’ ও ‘EPZ Hospital’ এর লোগো যুক্ত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির ছবির ক্যাপশন বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, যোগ্য ও আগ্রহী প্রার্থীদের নিকট থেকে আবেদন আহ্বান করা যাচ্ছে।✅ আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন:
পূর্ণ জীবনবৃত্তান্ত (CV) শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সনদপত্র সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি আবেদন যেভাবে করবেন: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ আবেদন পাঠান এই ইমেইলে — 📧 [email protected] 🕒 আবেদনের সময়সীমা: আবেদন শুরু: এখনই শুরু হয়েছে আবেদন শেষ: ১০ জুলাই ২০২৫, দুপুর ১:০০ টা পর্যন্ত বিঃদ্রঃ: সময়মতো আবেদন করুন। অসম্পূর্ণ বা বিলম্বিত আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। 📌 একটি সুশৃঙ্খল পেশাগত পরিবেশে কাজ করার দারুণ সুযোগ!
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, Bangladesh Export Processing Zones Authority (BEPZA) এর লোগো সম্বলিত প্রচারিত কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি BEPZA কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেনি বরং, আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতালের নাম ব্যবহার করে প্রচার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশের সময় হিসেবে ০১ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে এবং ছবির উপরে ‘BEPZA’ ও ‘EPZ Hospital’ এরর লোগো যুক্ত আছে।
এছাড়াও, আগ্রহী প্রার্থীদের ১০ জুলাই ২০২৫ এর মধ্যে পূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত, শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদপত্র ও সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবিসহ কর্ণফুলী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বরাবর ‘[email protected]’ জিমেইল আবেদন করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি Bangladesh Export Processing Zones Authority (BEPZA) এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে কিনা তা জানতে BEPZA এর ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে হেল্প ডেস্ক/তথ্য প্রদানকারী, রিপোর্ট ডেলিভারী কাউন্টার, ফ্রন্ট ডেস্ক অফিসার ও রিসিপশন/অনুসন্ধানে নিয়োগের কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির সন্ধান মেলেনি।
তবে, BEPZA এর ওয়েবসাইটে Karnaphuli Export Processing Zone এ গত ০৩ জুন প্রকাশিত ও আগামী ১০ জুলাই আবেদনের শেষ সময়েরএকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে এটি চুক্তিভিত্তিক প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ও গাইনোকোলজিষ্ট ও অবস নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি।
Screenshot: BEPZA Website
উক্ত বিজ্ঞপ্তি ও প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উভয় বিজ্ঞপ্তিতে ‘সূত্রঃ ০৩.০৬.১৫৬৫.৩৩৫.১১.০০১,২৫/৩৪০৯’, আবেদন আহ্বান ও শর্তাবলীর কিছু তথ্য এবং কথিত বিজ্ঞপ্তিতে ভিন্ন জায়গায় থাকা কর্ণফুলী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মসিহউদ্দিন বিন মেসবাহ এর স্বাক্ষরে মিল রয়েছে। মূলত, এই বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য ও স্বাক্ষর সংগ্রহ করে করে আলোচিত কথিত বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, ‘কর্ণফুলী ইপিজেড হাসপাতালহাসপাতালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ দাবিতে ‘BEPZA’ ও ‘EPZ Hospital’ এর লোগো সম্বলিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ বানোয়াট।
তথ্যসূত্র
Bangladesh Export Processing Zones Authority (BEPZA) – Website