Home Blog Page 72

ছাত্রদের গায়ে হাত তোলা প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে ইনডিপেনডেন্ট টিভির সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “ছাত্ররা চাইলে যে কারো গায়ে হাত দিতে পারবে” তবে কেউ ছাত্রদের গায়ে হাত দিয়ে পারবে না” শীর্ষক শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট টিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে  (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রদের গায়ে কেউ হাত তুলতে পারবে না প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের মন্তব্য দাবিতে ইনডিপেনডেন্ট টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ইনডিপেনডেন্ট টিভির ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ইনডিপেনডেন্ট টিভির লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

ইনডিপেনডেন্ট টিভির লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ইনডিপেনডেন্ট টিভির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ২ জুলাই গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে “ছাত্রদের গায়ে হাত দেওয়ার পরিণতি ভালো হবে না: নাহিদ ইসলাম” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির হুবহু মিল রয়েছে। ইনডিপেনডেন্ট টিভির মূল ফটোকার্ডটিতে ‘ছাত্রদের গায়ে হাত দেওয়ার পরিণতি ভালো হবে না: নাহিদ ইসলাম’ শীর্ষক বাক্য থাকলেও প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এর পরিবর্তে ‘ছাত্ররা চাইলে যে কারো গায়ে হাত দিতে পারবে” তবে কেউ ছাত্রদের গায়ে হাত দিয়ে পারবে না’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner

অর্থাৎ, ইনডিপেনডেন্ট টিভির এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ইনডিপেনডেন্ট টিভির পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়া ও রাজারহাটের পথসভায় বক্তব্যে চট্টগ্রামের পটিয়ার ঘটনার উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ‘চট্টগ্রামের পটিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের সৈনিকদের ওপর পুলিশ যে হামলা করেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা পুলিশের সংস্কার চাই, পুলিশ কারো গায়ে হাত তুলবে না সেটা চাই। আমরা হানাহানি চাই না। তবে শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে কেউ আঘাত করলে তার পরিণতি ভালো হবে না।’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।”

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “ছাত্ররা চাইলে যে কারো গায়ে হাত দিতে পারবে” তবে কেউ ছাত্রদের গায়ে হাত দিয়ে পারবে না” শিরোনামে ইনডিপেনডেন্ট টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

পিএসজির সাথে হওয়া ৫ জুলাইয়ের ম্যাচে চোট পাওয়ার পর মুসিয়ালার পায়ের ছবি দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

0

গত ৫ জুলাই ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজির সাথে হওয়া ম্যাচে পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইসি ডোনারুম্মার সাথে সংঘর্ষে পায়ে গুরুতর চোট পান বায়ার্ন মিউনিখ তারকা জামাল মুসিয়ালা। এরই প্রেক্ষিতে এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি চোট পাওয়া পায়ের ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ছবিটি গত ৫ জুলাইয়ে চোট পাওয়ার পর জামাল মুসিয়ালার পায়ের ছবি।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত একটি পোস্টে এককভাবে প্রায় ৪০ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জামাল মুসিয়ালার পায়ের এই ছবিটি গত ৫ জুলাইয়ে পিএসজির বিপক্ষে হওয়া ম্যাচে চোট পাওয়ার পরবর্তী সময়ের নয় বরং, প্রচারিত ছবিটি অন্তত ২০১৮ সাল থেকেই অনলাইনে বিদ্যমান আছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘@Hawes_squad’ ইউজারনেমের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে “Rt or bad things will happen” শীর্ষক ক্যাপশনে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বরে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টটিতে দুইটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ছবিটি ২০১৯ সালে তৎকালীন এভারটন ফুটবলার আন্দ্রে গোমেজের চোট পাওয়া পায়ের ছবি দাবিতেও প্রচার করা হয়েছে। তবে ছবিটি কার পায়ের তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, উক্ত ছবিটি যে সাম্প্রতিক সময়ের নয় এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। অপরদিকে জামাল মুসিয়ালা গত ৫ জুলাই তার পা ও গোড়ালিতে চোট পান।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়া, জামাল মুসিয়ালা বাম পায়ে চোট পেলেও প্রচারিত ছবিটি ডান পায়ের ছবি বলে প্রতীয়মান হয়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, জামাল মুসিয়ালার পায়ের এই ছবিটি গত ৫ জুলাইয়ে পিএসজির বিপক্ষে হওয়া ম্যাচে চোট পাওয়ার পরবর্তী সময়ের নয়।

সুতরাং, গত ৫ জুলাইয়ে পিএসজির বিপক্ষে হওয়া ম্যাচে চোট পাওয়ার পর জামাল মুসিয়ালার পায়ের ছবি দাবিতে অন্তত ৬ বছর পুরোনো একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গাইবান্ধায় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার চার ব্যক্তি জামায়াত কিংবা বৈছাআর সদস্য নয় 

সম্প্রতি, গোবিন্দগঞ্জে জামায়াত নেতার বাড়িতে যৌথ বাহিনীর সারারাত অভিযান, দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার চার জন – এই দাবিতে মোহনা টিভির লোগো যুক্ত একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

Sujan Datta’ ও ‘Abdur Razzak’ নামের দুটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে একই ভিডিওটি প্রচার করে ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, ‘গোবিন্দগঞ্জে সারা রাত যৌথবাহিনীর অভিযান চালিয়ে জুলাই সন্ত্রাসে ব্যবহৃত এবং বিভিন্ন সময়ে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এবং হত্যা সহ বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত হওয়া বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র এবং মাদকদ্রব্য সহ স্থানীয় জামায়াত নেতা এবং স্থানীয় সমন্বয়ককে গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনীর একটি দল।’ (বানান অপরিবর্তিত)

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার চারজন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী কিংবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নয় এবং অভিযান এই দুই সংগঠনের কোনো সদস্য্যের বাড়িতে হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, গ্রেফতারকৃতদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটিতে থাকা মোহনা টিভির লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ৫ জুলাই ‘যৌথ বাহিনীর সারারাত অভিযান, গোবিন্দগঞ্জে দেশীয় অ’স্ত্র মা’দকসহ গ্রেফতার চার’ ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

তবে প্রতিবেদনে গ্রেফতাকৃত ব্যক্তিদের কোনো  রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি এবং  অভিযানটি জামায়াত কিংবা সমন্বয়কদের বাড়িতে হয়েছে এমন তথ্যেরও উল্লেখ নেই।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে একাত্তর টিভির ওয়েবসাইটে গত ৫ জুলাই ‘সেনা অভিযানে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ চার সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ চার চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সেনা ক্যাম্পের মেজর ইনজামামুল আলম। এর আগে শুক্রবার (৪ জুলাই) দিনগত রাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেপ্তার সন্ত্রাসীরা হলেন- আজাদ মিয়া, আসাদ আলী, মোশাররফ হোসেস ও ছোটন ছোটন মিয়া।’

এছাড়াও বলা হয়, ‘সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দিনগত রাতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় জব্দ করা হয়‎ ইয়াবা, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও একটি খেলনা পিস্তল। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ’

এছাড়াও, বাংলাভিশন, এনটিভি, দেশ টিভি এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

 দৈনিক দেশ রূপান্তরের ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত ‘গাইবান্ধায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৪’ শিরোনামের প্রতিদেনে শেষের দিকে বলা হয়, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। একাধিক ব্যক্তি জানান, আজাদ মন্ডল ও তার লোকজন বিগত আওয়ামী লীগের সরকারের ছত্রছায়ায় ছিলেন। উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার অপরাধীদের গডফাদার ছিল তারা। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলত না।’

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টাতার বিষয়ে জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সাথে জামায়াত বা সমন্বয়কদের সংশ্লিষ্টতা নেই।”

সুতরাং, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার চারজন জামায়াত কিংবা বৈছাআর সদস্য শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শবনম ফারিয়া দাবিতে ভারতীয় ডিজিটাল ক্রিয়েটরের সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি বাংলাদেশী অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া দাবিতে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো শবনম ফারিয়ার নয় বরং, একজন ভারতীয় ডিজিটাল ক্রিয়েটরের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার  ফেসবুক পেজইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট যাচাই করে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, arjohi নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২৪ জুন থেকে ০২ জুলাই প্রকাশিত একাধিক পোস্টে কিছু ছবি (, , ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ছবিগুলোর আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রচারিত ছবির সাথে এসব ছবিতে থাকা ব্যক্তির পোশাক, অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক সবকিছুর মিল রয়েছে কিন্তু উভয় ছবিতে থাকা নারীদের চেহারা ভিন্ন। 

Comparison: Rumor Scanner 

ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রতীয়মান হয়, আর্জহী নামক নারীর ছবিগুলোতে তার মুখমণ্ডলের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় শবনম ফারিয়ার মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

তাছাড়া, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া তার ফেসবুক পেজে গত ০৩ জুলাই একটি পোস্টের মাধ্যমে জানান, প্রচারিত ছবিগুলোতে থাকা ব্যক্তি তিনি নন, ছবিগুলো সম্পাদিত। উক্ত পোস্টে তিনি ভারতের কলকাতা ভিত্তিক ডিজিটাল ক্রিয়েটর আর্জহীর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টের লিংক যুক্ত করেন দেন। 

Screenshot: Facebook 

সুতরাং, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক সংঘাতের দৃশ্য দাবিতে ভারতের শুটিংয়ের ভিডিও প্রচার

সাম্প্রতিক সময়ে  ‘এভাবে চলছে বিএনপি, এনসিপি শিবিরের রাজনীতি।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তির কাঁধে কোদাল দিয়ে কেউ একজন আঘাত করেছেন। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক সংঘাতের ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতীয় একটি পাঞ্জাবি গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটি বিষয়ে অনুসন্ধানে এটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Kashyap up35k নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এটি নিশ্চিত যে এটি আলোচিত ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণ।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম এবং হ্যাশট্যাগ থেকে জানা যায়, এটি ভারতীয় একটি পাঞ্জাবি গানের মিউজিক ভিডিওর অ্যাকশন সিনের শুটিংয়ের সময় ধারণ করা দৃশ্য। এছাড়াও ভিডিওটির লোকেশন ট্যাগ থেকে জানা যায়, এটি ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের রাজধানী চণ্ডীগড়ে ধারণ করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, চ্যানেলটিতে মূলত পাঞ্জাবি মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের দৃশ্য প্রচার করা হয়। চ্যানেলটিতে প্রচারিত এমন কিছু শুটিংয়ের ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। তবে চ্যানেলটির বিস্তারিত বিবরণীতে চ্যানেলটি পরিচালনকারীর সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য না থাকায় তার বিষয়ে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি। 

উল্লেখ্য, মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)-এর তথ্য মতে, দেশে গত ৬ মাসে কমপক্ষে ৫২৯টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ৭৯ জন নিহত এবং অন্তত ৪ হাজার ১২৪ জন  আহত হয়েছেন।

সুতরাং, ভারতীয় মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ের দৃশ্যকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংঘাতের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে মারধরের ভিডিও দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “বাংলাদেশের সর্বসাধারণের কাছে একটি প্রশ্ন এর নামি”ই কি দেশ চালানো👇” ক্যাপশনসহ ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে এক বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে মারধরের সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে মারধরের ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়। বরং, ২০২১ সালে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে প্রকাশ্যে এক বৃদ্ধকে মারধরের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম India Today এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর “TDP worker thrashed on camera, party blames ruling YSRCP” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় অন্ধ্র প্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি (ওয়াইএসআরসিপি) সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছে তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। টিডিপি দাবি করেছে , মারধরের শিকার ব্যক্তি তাদের দলের (টিডিপি) কর্মী, ওয়াইএসআরসিপি সদস্যরা তাকে মারধর করেছে। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই তারিখে আলোচিত বিষয়ে Ashish নামক ভারতীয় এক সাংবাদিকের এক্স পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। একই ভিডিও প্রকাশ করে তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন, “ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে সাঈদা নামে এক ব্যক্তিকে শিবা রেড্ডি ও অন্যরা নির্মমভাবে মারধর করছে—এমন একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। বিরোধী দল তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) অভিযোগ করেছে, হামলাকারীরা ওয়াইএসআরসিপি দলের সঙ্গে যুক্ত। তবে পুলিশ বলেছে, এটি একটি জমি-সংক্রান্ত বিরোধ। অভিযুক্ত সবাই পলাতক রয়েছে।” (অনূদিত) 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে একই বিষয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাড়ু জেলা পুলিশের এক্স একাউন্টে প্রকাশিত পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম। পালনাড়ু জেলা পুলিশের বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তুম্মলচেরুভু টোল প্লাজার কাছে সাঈদার ওপর হামলার ঘটনায় FIR নম্বর 651/21 অনুযায়ী সেসময় মামলা রুজু করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত যে এটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার ভিডিও নয়। 

সুতরাং, ২০২১ সালে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে প্রকাশ্যে এক বৃদ্ধকে মারধরের দৃশ্যকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে ঘটনা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • India Today: Website News 
  • Ashish: X Post 
  • PALNADU DISTRICT POLICE: X Post 

কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর মব দমনের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লায় সমন্বয়করা মব সৃষ্টি করতে গেলে সেনাবাহিনী তাদের ধরে ফেলে এবং কড়া ডোজের থেরাপি দেয়’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মুখে মাস্ক পরিহিত কিছু ব্যক্তি একটি ব্রীজের উপর গড়াগড়ি খাচ্ছে, এবং তাদের কয়েকজনকে সেনাসদস্য পেটাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক মারধরের কোনো ঘটনার নয়। বরং, অন্তত ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘ABIDUR ISLAM SHAJIB’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল ‘Bangladesh Army Punishment // বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শাস্তি’ ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়াও, ‘TV TIME Live’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের ১ জুলাই ‘একটু লকডাউন দেখতে বের হয়েছে-যশোর। ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন’ ক্যাপশনে ভিডিওটি  প্রচার করতে দেখা যায়।

এছাড়াও, একই বছরের জুলাইয়ের ১ তারিখ ‘Jm Khan’ নামক ফেসবুক পেজ থেকে ‘শার্টডাউন হচ্ছে টেলার নাম বাবাজি… তেমন কিছু না বন্ধুরা মিলে একটু ঘুরতে বের হয়েছিলাম’ (বানান অপরিবর্তিত) এবং ‘ফ্রুটিকাツ’ নামক পেজ থেকে ‘বন্ধুরা মিলে সবাই ঘুরতে গেছিলো , বাকিটা ইতিহাস’ ক্যাপশনে প্রচার করতে  দেখা যায়।

উল্লিখিত সূত্রগুলোর কোনোটিতেই ভিডিওটি সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই। ভিডিও আপলোডের সময়কাল ও ক্যাপশনগুলো পর্যবেক্ষণ করে ধারণা করা যায় যে, ভিডিওগুলো ২০২১ সালে করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ের। ভিডিওটি কোন স্থানের কিংবা কবে ধারণ করা তা নিশ্চিত না হওয়া গেলেও এটি নিশ্চিত যে এটি একটি পুরোনো ভিডিও। স্বাভাবিকভাবেই ভিডিওটির সাথে জুলাই আন্দোলন কিংবা বর্তমান সময়ের সম্পৃক্ততা নেই।

সুতরাং, অন্তত ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে সম্প্রতি কুমিল্লায় সমন্বয়করা মব সৃষ্টি করতে গেলে সেনাবাহিনী তাদের ধরে কঠোর শাস্তি দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীকে জড়িয়ে চ্যানেল২৪ এর নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি ‘শেখ হাসিনাকে নির্দোষ প্রমান করতে যত মিথ্যা বলা দরকার আমি বলবো’ শিরোনামে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের ছবি যুক্ত করে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আইনজীবী আমির হোসেনকে উদ্ধৃত করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং আমির হোসেনও এমন কোনো মন্তব্য করেননি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ভিন্ন একটি ফটোকার্ড সম্পাদনা করে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের লোগো রয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির সাথে প্রচারিত ফটোকার্ডের চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের লোগো এবং আইনজীবী আমির হোসেনের ছবির মিল রয়েছে, তবে উভয়ের শিরোনামে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, এই ফটোকার্ডটির ‘শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বলেননি, অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন’ শীর্ষক শিরোনামের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ‘শেখ হাসিনাকে নির্দোষ প্রমান করতে যত মিথ্যা বলা দরকার আমি বলবো’ শিরোনাম প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।’ সম্পাদিত ফটোকার্ডে ‘শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন’ অংশটি অপরিবর্তিত রয়েছে। তাছাড়া, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘জুলাই – আগস্ট গণহত্যায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেয়া প্রতিবেদন থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। গত ৭ জুলাই বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে এ আবেদন করেন তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের “রাজাকারের বাচ্চা” বলেননি। অপব্যখ্যা করা হয়েছে।’

চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ব্যতীত অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিকে সমর্থন করে এমন কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷

সুতরাং, শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন ‘শেখ হাসিনাকে নির্দোষ প্রমান করতে যত মিথ্যা বলা দরকার আমি বলবো’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

‘বিএনপির গুণ, নয় মাসে দেড়শ খুন” সাধারণ জনগণ বলছেন দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও প্রচার করে ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণের বক্তব্য শুনুন বাস্তব ও সত্য কথা।”

ভিডিওটিতে একজন ব্যক্তির “চাচা, বিএনপির গুণ কী কী” প্রশ্নের জবাবে একজন ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “বিএনপির অনেক গুণ, নয় মাসে দেড়শ খুন৷ চাঁদা তুলে পল্টনে, ভাগ যায় লন্ডনে।”

উল্লেখ্য যে, উক্ত ব্যক্তির উত্তরটি ক্যাপশনে সংযুক্ত করেও উক্ত ভিডিওটি সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নামে পরিচালিত ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ নানা ফেসবুক পেজ থেকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটি আসল নাকি নকল এরূপ কোনো সতর্কতা না থাকায় অনেকেই এটি আসল সাক্ষাৎকার ধরে নানা মন্তব্য করেছেন।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাধারণ জনগণের ‘বিএনপির অনেক গুণ, নয় মাসে দেড়শ খুন৷ চাঁদা তুলে পল্টনে, ভাগ যায় লন্ডনে।’ বলার কোনো আসল দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে উক্ত ভিডিওটির সম্ভাব্য মূল ভিডিওটি “Ai Manob” নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে গত ০১ জুলাইয়ে প্রচার হতে দেখা যায়। উল্লেখ্য যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতেও ‘AI Manob’ এর জলছাপ পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে এআই দিয়ে তৈরি একাধিক ভিডিও নানাসময়ে প্রচার হতে দেখা যায়। পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়।

Collage: Rumor Scanner/Cantilux,Hive Moderation

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম “Cantilux” এ ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৫ শতাংশ। এছাড়াও, এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম “হাইভ মডারেশন” এ ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৭ শতাংশ।

উল্লেখ্য, গত মে মাসে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পাঁচই অগাস্ট পরবর্তী সময়ে বিএনপির অন্তর্কোন্দলে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৭ জুন পর্যন্ত ১০ মাসে বিএনপি নেতাকর্মীদের হাতে ১২৩ জন খুন হয়েছেন—এমন অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতা। তবে উক্ত দাবির প্রেক্ষিতে করা একটি প্রতিবেদন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করে অভিযোগটির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করা হয়।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে সাধারণ জনগণের ‘বিএনপির অনেক গুণ, নয় মাসে দেড়শ খুন৷ চাঁদা তুলে পল্টনে, ভাগ যায় লন্ডনে।’ বলার আসল দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Ai Manob – TikTok Post 
  • Cantilux
  • Hive Moderation
  • Rumor Scanners’ analysis

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাম হাত দিয়ে হ্যান্ডশেক করার ভিডিওটি সম্পাদিত

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে বাম হাত দিয়ে হ্যান্ডশেক করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, তিনি গাড়ি থেকে বের হয়ে তার জন্যে অপেক্ষমান কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তির সাথে বাম হাত দিয়ে হ্যান্ডশেক করেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাম হাত দিয়ে হ্যান্ডশেক করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ময়মনসিংহ ডিভিশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‍উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ পৌঁছে সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের সাথে তার ডান দিয়ে হ্যান্ডশেক করার ভিডিও ডিজিটাল প্রযুুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে মিরর করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম Dhaka Talk-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৭ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। ভিডিওটিতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে অপেক্ষমান প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে ডান হাত দিয়েই হ্যান্ডশেক করতে দেখা যায়। মূলত, এই ভিডিওটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মিরর করায় সেখানে আসিফ মাহমুদকে ডান হাতের জায়গায় বাম হাতে হ্যান্ডশেক করতে দেখা যায়। 

উক্ত গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেল পর্যালোচনার মাধ্যমে সেদিনের আরও কয়েকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যা থেকে জানা যায়, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সেদিন ময়মনসিংহ ডিভিশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করতে যান। 

পরবর্তীতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একইদিন অর্থাৎ ২৭ জুন প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহ ডিভিশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ঢাকায় অবস্থিত জাতীয় টেনিস ফেডারেশনে হয়। যেখানে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

সুতরাং, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে বাম হাত দিয়ে হ্যান্ডশেক করার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র