Home Blog Page 54

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠিত হয়নি, প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

 রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছাত্রদলের নতুন কমিটি দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ফেসবুক পেজ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ফেসবুক পেজ এবং বিএনপি মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে নতুন এই কমিটি সংক্রান্ত বিষয়ে ফেসবুকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আমানউল্লাহ আমানের একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ‘বটবাহিনীর গুজব থেকে সতর্ক থাকুন’ শিরোনামের উক্ত পোস্টটিতে তিনি আলোচিত বিজ্ঞপ্তিকে ভুয়া হিসেবে নিশ্চিত করেছেন। 

Screenshot: Rumor Scanner 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে ২৭ জুলাই “ভুয়া: কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ৫ সদস্যের নতুন কমিটি ফেসবুকে” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের বরাতে ছাত্রদলের নতুন কমিটির বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও গুজব বলে জানানো হয়। 

সুতরাং, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন কমিটি দাবিতে বিএনপির নামে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় গত ২১ জুলাই বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন অবধি অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। এছাড়া, আহত ও দগ্ধ হয়েছে অন্তত শতাধিক, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, ‘উত্তরা ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা মাইলস্টোন স্কুল কলেজ’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ )।

এই প্রতিবেদন লেখা অবধি টিকটকে ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৬ লক্ষ বারেরও বেশি। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ৪ লক্ষ ৫২ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ২১ হাজারেরও বেশি শেয়ার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার আসল দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিওর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওটিতে বিমানে আগুন জ্বলার দৃশ্য এবং দৃশ্য পরিবর্তনের সাথে সাথে বিল্ডিং ও বিমানের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়া, মানুষের অঙ্গভঙ্গি, হাঁটার ধরণ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

Indicated by Rumor Scanner

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে ভিডিওটি এআই (AI) কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল ‘Cantilux’ দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯২ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়।

Screenshot From Cantilux

গণমাধ্যমে প্রচারিত বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের মডেলের ছবি দেখুন –

Collage by Rumor Scanner

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার আসল দৃশ্য দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

উত্তরায় বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট তৌকিরের স্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিও দাবিতে একাধিক এআই ভিডিও প্রচার

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল এলাকায় গত ২১ জুলাই বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনায় অন্যান্যদের পাশাপাশি বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম ওরফে সাগর যিনি নিজেও প্রাণ হারিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে অনলাইনে দুইটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওগুলোতে নিহত পাইলট তৌকিরের স্ত্রী কথা বলছেন। যার মধ্যে একটি ভিডিওতে একজন নারীকে বলতে শোনা যায়, “আমি কখনও ভাবিনি, এত তাড়াতাড়ি আমার স্বামীকে হারাবো। ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। তৌকিরকে আপনারা ক্ষমা করে দিন। আই নেভার থট ইন মাই ড্রিম আই উড লুজ মাই হাজব্যান্ড সো কুইকলি। উই হেড মেনি ড্রিমস। প্লিজ এভ্রিওয়ান, ফরগিভ তৌকির।” এসময় পাইলট তৌকির ও তার স্ত্রীর নানা ছবিও প্রচার করা হয়।

আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত কথাসম্বলিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওটি এককভাবে প্রায় ৭০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ৮২ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

আলোচিত দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

আলোচিত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও পাইলট তৌকিরের স্ত্রীর ভিডিও দাবিতে আরেকটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে একজন নারীকে বলতে দেখা যায়, “আমি পাইলট তৌকিরের স্ত্রী। আমাদের বিয়ের কেবল ৬ মাস হয়েছে। সংসার কি তা বুঝার আগেই তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। আপনারাও তাকে ক্ষমা করে দিবেন৷ সে আমাকে অনেক ভালোবাসতো। এভাবে তার বিদায় নেওয়াটা মেনে নিচ্ছি না। সে খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আপনারা কেউ তাকে ভুল বুঝে গালি দিবেন না ফেসবুকে। তাকে নিয়ে ট্রল করবেন না।”

আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত কথাসম্বলিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওটি এককভাবে প্রায় ৬৫ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ৬৩ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

আলোচিত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওগুলো উত্তরায় বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম ওরফে সাগরের স্ত্রীর বক্তব্যের দৃশ্যের নয় বরং, এগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ভুয়া ভিডিও।

আলোচিত প্রথম ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত নারীর অঙ্গভঙ্গি, মুখমণ্ডলের গঠন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘আরটিভি’র ওয়েবসাইটে “৬ মাস আগে বিয়ে করেন বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট তৌকির” শীর্ষক শিরোনামে গত ২২ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে “নিহত পাইলট তৌফিক ইসলাম সাগর ও তার স্ত্রী” এর ছবি দাবিতে একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে। তৌকির ইসলামের স্ত্রীর উক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত নারীর কাপড়, গয়না, কাপড় ও গয়নার রঙ ও ডিজাইনের বৃহৎ মিল পাওয়া যায় যা থেকে বুঝা যায় যে পাইলট তৌকিরের স্ত্রীর পুরোনো ছবির প্রেক্ষিতে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

প্রচারিত দ্বিতীয় ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধান করলেও কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত নারীর অঙ্গভঙ্গি, মুখমণ্ডলের গঠন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দুইটিই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে উত্তরায় বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম ওরফে সাগরের স্ত্রীর কথা বলার আসল দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় ২৪৬ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেনি মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ

0

গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে যে, এঘটনায় ২৪৬ জন নিহত এবং ৫২২ জন আহত হয়েছে বলে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাইলস্টোনে হওয়া বিমান দুর্ঘটনায় ২৪৬ জন নিহত ও ৫২২ আহত হয়েছে দাবি করে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ কোনো বিবৃতি দেয়নি।  প্রকৃতপক্ষে, মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক সমকালের ওয়েবসাইটে গত ২৬ জুলাই মাইলস্টোনে দগ্ধ অফিস সহকারী মাসুমার মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩৫ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, উক্ত দুর্ঘটনায় দগ্ধ জারিফ ফারহান ও মাইলস্টোনের অফিস সহকারী মাসুমা গত ২৬ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করেন। যাতে সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত মাইলস্টোনের বিমান দুর্ঘটনায় ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। 

এছাড়াও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, উক্ত ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা প্রকাশ করে গত ২৪ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতি প্রকাশ করে। যেখানে এ ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থী, দুই শিক্ষক ও দু’জন অভিভাবকের নিহতের তথ্য জানানো হয়।

পরবর্তীতে Milestone School and College এর ফেসবুক পেজে গত ২৪ জুলাই প্রচারিত ওই বিবৃতিটির সন্ধান পাওয়া যায়। বিবৃতিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ ২৪ জনের নিহতের তথ্যের পাশাপাশি ৫ জনের নিখোঁজ থাকার তথ্যও পাওয়া যায়। এছাড়াও বিবৃতিতে বলা হয় এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ৪৮ জন গুরুতর আহত অবস্থায় রয়েছে। 

Screenshot: Facebook 

মাইলস্টোনের পক্ষ থেকে দেওয়া এই বিবৃতিতে মূলত গত ২৪ তারিখ বিকেল ৬ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত হওয়া নিহতের তথ্যগুলোই উঠে এসেছে। তাছাড়াও বিবৃতিতে শুধু প্রতিষ্ঠানটির সাথে সম্পৃক্ত মানুষের তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে।  

পরবর্তীতে মাইলস্টোন কলেজের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ২৬ জুলাই বিকেল ৫ টা ৩৩ মিনিটে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটির মাধ্যমে ওই সময় পর্যন্ত উক্ত দুর্ঘটনায় স্কুলটির শিক্ষার্থীসহ অন্যান্যদের হতাহতের সর্বশেষ তালিকা প্রদান করে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ। 

এতে দেখা যায়, ২৬ জুলাই বিকেল পর্যন্ত স্কুলটির ২৬ জন শিক্ষার্থী, ৪ জন অভিভাবক, ২ জন শিক্ষিকা ও ১ জন স্টাফ মিলিয়ে মোট ৩৩ মারা যান। 

উক্ত তালিকা সম্বলিত পোস্টটির পর মাইলস্টোন কলেজের ফেসবুক পেজে আর কোনো পোস্ট করা হয়নি। এছাড়াও পরবর্তীতে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আর কোনো বিবৃতি প্রকাশ করার তথ্যও পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের বরাতে এ ঘটনায় ২৪৬ জন নিহত ও ৫২২ আহত হওয়ার দাবিটি সত্য নয়। 

উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রচারিত তথ্যে উক্ত বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের সংখ্যায় পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আগে প্রচারিত আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে নিহতের সংখ্যা ৩১ জন এবং আহতের সংখ্যা ১৬৫ জন বলা হলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে তা নিহত ২৭ জন এবং আহতের সংখ্যা ৭০ জন বলা হয়।

সুতরাং, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় ২৪৬ জন নিহত এবং ৫২২ জন আহত হয়েছে দাবিতে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ধর্মের কারণে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ৯ হিন্দুকে সরকারের স্বীকৃতি না দেওয়ার দাবিটি ভুয়া 

0

২০২৪ সালে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৯ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি, ধর্মের কারণে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ৯ হিন্দুকে সরকার স্বীকৃতি দেয়নি শীর্ষক দাবিতে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ধর্মের কারণে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ৯ হিন্দু ব্যক্তিকে সরকার থেকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি দাবি করা হলেও উক্ত ব্যক্তিদের নাম সরকার কর্তৃক প্রণীত  জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এর শহীদদের তালিকায় রয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত জুলাই গণ–অভ্যুত্থান ২০২৪–এ শহীদদের তালিকার গেজেট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত গেজেটে আলোচিত পোস্টে উল্লেখিত হিন্দু ব্যক্তিদের নাম রয়েছে। উক্ত হিন্দু ব্যক্তিদের নামের তালিকা নিম্নরূপঃ

১৩২ – শ্রী শুভ শীল
১৪৫ – রাখিন বিশ্বাস 
১৪৯ – রিয়া গোপ
১৫০ – হৃদয় চন্দ্র তরুয়া 
৩৯৬ – সৈকত চন্দ্র দে
৪৮৭ – তনয় চন্দ্র দাশ
৪৯৫ – রিপন চন্দ্র শীল 
৫৮২ – রুদ্র সেন 
৫৯৫ – দীপ্ত দে 

Collage: Rumor Scanner 

এছাড়া, আলোচিত দাবি সম্বলিত পোস্টটি সরকারের নজরে আসলে গত ০৯ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এর পক্ষ থেকে এক্সে এক বিবৃতির মাধ্যমে দাবিটিকে মিথ্যা বলে জানানো হয়।

সুতরাং, ধর্মের কারণে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ৯ হিন্দু ব্যক্তিকে সরকার থেকে স্বীকৃতি না দেওয়ার দাবিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র 

সেফায়েত উল্লাহ ওরফে সেফুদার মৃত্যুর দাবিটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রিয়া প্রবাসী “সেফায়েত উল্লাহ ওরফে সেফুদার মৃত্যু হয়েছে” শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেফায়েত উল্লাহ ওরফে সেফুদার মারা যাননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই অনুমান নির্ভর হয়ে আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকের উক্ত দাবির পোস্টে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ করা হয়নি। 

অনুসন্ধানের শুরুতে সেফায়েত উল্লাহ ওরফে সেফুদার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে সেফুদা’কে বলতে শোনা যায়, “আমার মৃত্যুর বিষয়টি গুজব এবং দেশের এক শ্রেণির নব্য রাজাকার ও আলবদররা এই ধরণের মিথ্যা প্রচার করছে।” 

পাশাপাশি, সেফায়েত উল্লাহ ওরফে সেফুদা তার সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেসবুকে একটি পোস্টও শেয়ার করেছেন। 

এছাড়া, জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে গত ২৪ জুলাই “নব্য রাজাকার-আলবদররা আমার মৃত্যুর গুজব রটাচ্ছে: সেফুদা” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে সেফুদার আত্মীয়স্বজন ও চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বরাতে তার মৃত্যুর দাবিটি গুজব বলে জানানো হয়। তিনি সুস্থ আছেন এবং বর্তমানে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় তার বাসভবনে অবস্থান করছেন বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়।

সুতরাং, আলোচিত সেফায়েত উল্লাহ ওরফে সেফুদার মৃত্যুর দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • Ittefaq: Website News 
  • Sefet Ullah: Facebook Live 
  • Sefat Ullah: Facebook Post 

ঢাবির উপাচার্য হিজাব বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দেননি 

0

সম্প্রতি, “ব্রেকিং নিউজ হিজাব বাধ্যতামূলক করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি! আলহামদুলিল্লাহ” দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বর্তমান উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব বাধ্যতামূলক করেছেন শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও এমন কোনো তথ্য মেলেনি। 

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং একটি জাতীয় দৈনিকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির সাথেও কথা বলে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রফিকুল ইসলাম পান্না বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় হিজাব সংক্রান্ত কোনো বাধ্যতামূলক নির্দেশনা দেয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।”

দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আশিকুল হক রিফাত জানান, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিজাব বাধ্যতামূলক করার কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।”

গত ০৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিনস কমিটির একটি সভায় নিকাব ও হিজাব পরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তের জন্য প্রয়োজনে নারী সহকারী প্রক্টরের সহযোগিতা নেয়া হবে। এ ছাড়া পরিচয় শনাক্তের জন্য বায়োমেট্রিক সিস্টেম চালুর সম্ভাব্যতার বিষয়টি যথাসময়ে যাচাই করা হবে বলেও জানানো হয়।

একই দাবিটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এমন কোনো মন্তব্য বা ঘোষণা দেননি বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছিলেন।

সুতরাং, ঢাবির বর্তমান উপাচার্য ক্যাম্পাসে হিজাব বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘আল হুতাইব’ নামক গ্রামে কখনো বৃষ্টি হয়না শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা 

0

সম্প্রতি, “ইয়েমেনের রাজধানী সানার পশ্চিমে অবস্থিত ‘আল হুতাইব’ নামক গ্রাম, যেখানে কখনো বৃষ্টি হয়না” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি আরও দাবি করা হচ্ছে যে, আকাশে মেঘ জমে সমতল থেকে ২০০০ মিটার উপরে কিন্তু ‘আল হুতাইব’ নামক স্থানটি মাটি থেকে ৩২০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে কোনো বৃষ্টি হয়না। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন জি নিউজ (আর্কাইভ)। 

এছাড়া, অনুরূপ দাবিতে প্যাপাইরাস নামক একটি ওয়েবসাইটে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইয়েমনের ‘আল হুতাইব’ নামক স্থানটিতে কোনোদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ার দাবিটি সত্য নয় বরং বিভিন্ন আবহাওয়া বিষয়ক ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী উক্ত স্থানটিতে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। 

প্রকৃতপক্ষে, বিগত কয়েক বছর যাবত ইয়েমেনের ‘আল হুতাইব’ নামক স্থানে কখনো বৃষ্টি হয় না দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচার হয়ে আসছে। তবে, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, আল হুতাইব নামক স্থানটি মোটেও বৃষ্টিপাতহীন শুষ্ক এলাকা নয় বরং, এপ্রিল এবং আগস্ট মাসে সেখানে গড়ে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

একই পরিবারের তিন ব্যক্তির হিন্দু ধর্ম পরিবর্তনের ঘটনাটি পুরোনো এবং স্বেচ্ছামূলক

0

সম্প্রতি, কুমিল্লার বাদল চন্দ্র শীল তার স্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে চাপে পড়ে সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন – এই দাবিতে তিনজনের ছবিসহ একটি হলফনামার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

Voice of Bangladeshi Hindus’ নামক এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়, ‘বাংলাদেশে বসবাস করতে হলে আপনাকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হবে। কুমিল্লার বাদল চন্দ্র শীল তার স্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে চাপে পড়ে সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন’

Pakistan Untold’ নামক এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়, ‘আমার স্ত্রী ও সন্তানের জীবন বাঁচাতে, আমাকে জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত হতে এবং আমার ধর্ম ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল…। ইসলামপন্থীদের চাপে বাংলাদেশি হিন্দু বাদল চন্দ্র শীল তার সমগ্র হিন্দু পরিবারসহ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কুমিল্লার বাদল চন্দ্র শীল তার স্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে চাপে পড়ে সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন দাবিটি সত্য নয়। বরং, ২০২১ সালে বাদল চন্দ্রশীল, তাঁর স্ত্রী শীপ্রা রানী শীল, ছেলে অর্ক চন্দ্র শীল স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ঘটনাকে সম্প্রতি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে কুমিল্লার স্থানীয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ডেইলি কুমিল্লা নিউজ -এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল ‘কুমিল্লা বুড়িচংয়ে একই পরিবারের ৩ জনের ইসলাম ধর্ম গ্রহন’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রাতিবেদনে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউয়িনের মোকাম গ্রামে একই পরিবারের ৩ সদস্য হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বুধবার (২০২১ সালের ২৮ এপ্রিল) কুমিল্লার বিজ্ঞ রোটারী কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে হলফনামার মাধ্যমে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তাঁরা। তাঁদের পূর্বের নাম ছিলো বাদল চন্দ্রশীল, তাঁর স্ত্রী শীপ্রা রানী শীল, ছেলে অর্ক চন্দ্র শীল। বর্তমান নাম রাখা হয়েছে মোঃ আল আমিন, জান্নাতুল ফেরদৌস, মেহেদী হাসান। ইসলাম ধর্ম গ্রহন শেষে মোঃ আল-আমিন বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, আর এ ধর্মে রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণকর জীবন ব্যবস্থা। এমন আত্ম-উপলব্ধি থেকে পবিত্র মাহে রমজানে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। পবিত্র মাহে রমজানে একই পরিবারের ৩ সদস্য সেচ্ছায় ইসলাম ধর্মগ্রহণ করায় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সু-স্বাগতম জানিয়েছে।’ 

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে স্থানীয় পত্রিকা ‘কুমিল্লার কাগজ’ এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

এছাড়া, জাতীয় গণমাধ্যম  ইউএনবি, বাংলাদেশ প্রতিদিন, নিউজ ২৪ -এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, কুমিল্লায় বাদল চন্দ্র শীল ও তার পরিবারের আরও দুই সদস্যের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের এই ঘটনাটি পুরোনো। সেই সময় তারা স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সাথে কোনো হুমকি বা জোরজবরদস্তি ছিল না।

সুতরাং, কুমিল্লায় ২০২১ সালে একই পরিবারের তিন ব্যক্তির স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ঘটনাকে সম্প্রতি কুমিল্লার বাদল চন্দ্র শীল তার স্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে চাপে পড়ে সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

টেকনাফে পুলিশ চেকপোস্টে বোরকা পরিহিত অবস্থায় আটক যুবক ছাত্রলীগ কর্মী নন, রোহিঙ্গা শরনার্থী

সম্প্রতি, বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ কর্মী – এই দাবিতে একটি ভিডিও গণমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: জনকন্ঠ, বৈশাখী টিভি। 

এছাড়া, ইত্তেফাকও একই দাবিতে ভিডিওটি পোস্ট করে তা পরবর্তীতে সরিয়ে নেয়। তবে ইত্তেফাকের ভিডিওটি এর মধ্যেই ফেসবুকের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়িয়ে পড়ে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ইনস্টগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

এক্সে ‘Voice of Bangladeshi Hindus’ নামক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি প্রচার করে দাবি করা হয়, একজন রোহিঙ্গা মুসলিম একটি হিন্দু বাড়িতে চুরি করার সময় ধরা পড়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চেকপোস্টে বোরকা পরিহিত অবস্থায় পুলিশের হাতে আটক এই যুবক ছাত্রলীগ কর্মী নন। প্রকৃতপক্ষে, গত ২৩ জুলাই রাতে টেকনাফের হ্নীলার শালবাগান পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে তল্লাশি কার্যক্রমের সময় এই যুবককে বোরকা পরিহিত অবস্থায় আটক করা হয়। আটক এই যুবক একজন রোহিঙ্গা শরনার্থী। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৪ তারিখ ‘মাথায় হিজাব, গায়ে বোরকা, তল্লাশিতে ধরা পড়ল তিনি পুরুষ’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমের মিল রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মাথায় কালো হিজাব, হাতে-পায়ে মোজা, গায়ে বোরকা—এমন বেশভূষায় থাকা এক যুবককে আটক করে পুলিশ।  নজরদারি এড়িয়ে শিবির থেকে বেরিয়ে আবার ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। বুধবার [২৩ জুলাই] রাতে টেকনাফের হ্নীলার শালবাগান পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে (চেকপোস্টে) ঘটে এ ঘটনা। নারীর ছদ্মবেশ ধরে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ঢুকতে চেয়েছিলেন তিনি। ওই ব্যক্তি শিবিরেরই রোহিঙ্গা বাসিন্দা। নাম রশিদ আহমদ (২৭)। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলার ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ফরিদ আহমেদের ছেলে।

প্রতিবেদনটিতে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, ওই রোহিঙ্গা যুবক আশ্রয়শিবির থেকে বের হয়ে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন বলে পুলিশের সন্দেহ। এ কারণে আশ্রয়শিবির থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে বের হয়েছিলেন। আবার ছদ্মবেশ ধারণ করে আশ্রয়শিবিরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বোরকা পরা ওই যুবক পায়ে হেঁটেই তল্লাশিচৌকি পার হচ্ছিল। তাঁর হাঁটাচলা দেখে সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে কথার ঠিকঠাকমতো উত্তর দিতে পারেনি। পরে তাঁকে আটক করা হয়। কী কারণে বোরকা পরে বের হয়েছিলেন, এসব বিষয়ে জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

এছাড়া, জাতীয় দৈনিক যুগান্তর, সমকাল এবং চট্টগ্রামের স্থানীয় গণমাধ্যম দৈনিক আজাদী এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

এসকল প্রতিবেদনে এই যুবককে রোহিঙ্গা শরনার্থী বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে টেকনাফের স্থানীয় সংবাদকর্মী ও টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) -এর সাথেও কথা বলে রিউমর স্ক্যানার টিম।

প্রথম আলোর টেকনাফ প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দিন জানান, আটককৃত ব্যক্তি রোহিঙ্গা। তাঁর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনও আটককৃত ব্যক্তি রোহিঙ্গা শরনার্থী বলে নিশ্চিত করেন। 

সুতরাং, কক্সবাজারের টেকনাফে তল্লাশি কার্যক্রমের সময় বোরকা পড়ে নারী ছদ্মবেশে থাকা রোহিঙ্গা যুবক আটকের ঘটনাকে বোরকা পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেফতার দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র